Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

কেন নারীদের তুলনায় পুরুষরা আত্মহত্যা করে বেশি?

কোনো রোগে ভুগে, কিংবা বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হলে, সেটিকে আমরা বলি স্বাভাবিক মৃত্যু। কোনো দুর্ঘটনা, দুর্যোগ কিংবা হামলায় মৃত্যু হলে, সেটিকে আখ্যায়িত করা হয় অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে। তবে সবচেয়ে বেশি অস্বাভাবিক মৃত্যু বলা হয় সেটিকে, যেক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছে, অর্থাৎ নিজের হাতে নিজের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

তবে মৃত্যুর এই বিশেষ ধরনটি যতই ‘অতি অস্বাভাবিক; হোক না কেন, বিরল কিন্তু নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সর্বশেষ ২০১৬ সালের আত্মহত্যার পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হচ্ছে, ২০১৬ সালে নাকি বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার মাধ্যমে মৃত্যু হয়েছে ৭,৯৩,০০০ মানুষের। এবং আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, আত্মহত্যার ফলে মৃত্যু হওয়া অধিকাংশ ব্যক্তিই পুরুষ।

এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে ১৯৮১ সালের পর এবারই পুরুষদের আত্মহত্যার হার সবচেয়ে কম– লাখে মাত্র ১৫.৫। কিন্তু তারপরও, ৪৫ বছরের কম বয়েসীদের মৃত্যুর প্রধান কারণই হলো আত্মহত্যা। আর এক্ষেত্রে লিঙ্গের ব্যবধানটি চোখে পড়ার মতো। নারীদের মৃত্যুর হার পুরুষদের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ; লাখে মাত্র ৪.৯! 

একই চিত্র বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বিদ্যমান। অস্ট্রেলিয়াতেও নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার মাধ্যমে মৃত্যুর হার তিনগুণ বেশি। অস্ট্রেলিয়ায় আত্মহত্যায় পুরুষদের মৃত্যুর হার বেশি- সাড়ে তিনগুণ, আর রাশিয়া ও আর্জেন্টিনায় পুরো চারগুণ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই পরিসংখ্যান আরো বলছে, বিশ্বের ৪০% দেশেই পুরুষদের আত্মহত্যার হার লাখে ১৫ এর বেশি; অথচ মাত্র ১.৫% দেশে নারীদের আত্মহত্যায় মৃত্যুর হার পুরুষদের চেয়ে বেশি।

নারীদের তুলনায় পুরুষদের আত্মহত্যার প্রবণতা সবসময়ই বেশি; Image Source: Getty Images

নারীদের তুলনায় পুরুষদের আত্মহত্যার হার এত বেশি হওয়ার বিষয়টি নতুন কোনো ঘটনা নয়। যখন থেকে আত্মহত্যার হার রেকর্ড করা শুরু হয়েছে, তখন থেকেই দেখা যাচ্ছে নারীদের চেয়ে পুরুষরাই আত্মহত্যা করে মারা যাচ্ছে বেশি।

এখন আরেকটি চমকপ্রদ তথ্য দিই। আত্মহত্যার প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় যে ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতাকে, সেটিতে কিন্তু পুরুষদের চেয়ে নারীরাই বেশি ভোগে। এমনকি পুরুষদের তুলনায় নারীদের আত্মহত্যার প্রবণতা বা ঝোঁকও কিন্তু বেশি থাকে। যেমন, আমরা যদি উদাহরণস্বরূপ যুক্তরাষ্ট্রের কথাই চিন্তা করি, সেখানে কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা পুরুষদের তুলনায় আত্মহত্যার চেষ্টা করে ১.২ গুণ বেশি।

তারপরও শেষপর্যন্ত নারীদের চেয়ে পুরুষরাই কেন আত্মহত্যা করে মারা যাচ্ছে বেশি? এক্ষেত্রে প্রধান কারণ হলো, পুরুষদের আত্মহত্যার পদ্ধতি নারীদের তুলনায় অনেক বেশি সহিংস, যার ফলে তাদের ক্ষেত্রে আত্মহত্যার প্রচেষ্টা সফল তথা মৃত্যুতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। সহিংস আত্মহত্যার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রের নাগাল প্রাপ্তিও একটি বড় কারণ। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০ জন বন্দুকের মালিকের মধ্যে ছয়জনই পুরুষ, আর দেশটিতে অর্ধেকের বেশি সফল আত্মহত্যাই হয় আগ্নেয়াস্ত্রের মাধ্যমে

পুরুষদের মাঝে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি; Image Source: Medscape

পুরুষেরা কেন আত্মহত্যা করতে বেশি সহিংস হয়, এর পেছনে আবার প্রধান কারণ হলো তাদের দৃঢ় অভিপ্রায় বা মরিয়া ভাব। নারীরা আত্মহত্যার প্রচেষ্টার সময় সফল হওয়ার জন্য যতটা না মরিয়া থাকে, পুরুষরা তার তুলনায় অনেক বেশি মরিয়া থাকে। নিজের ক্ষতির চেষ্টা করেছে এমন চার হাজারের বেশি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর উপর গবেষণা করে দেখা গেছে, নারীদের তুলনায় পুরুষরা আত্মহত্যার প্রচেষ্টা সফল করতে বেশি মরিয়া থাকে।

এছাড়াও পুরুষদের আত্মহত্যার মাধ্যমে মৃত্যুর হার বেশি হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকে। চলুন একে একে জেনে নিই কী সেসব কারণ।

খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো যোগাযোগ। অনেকের কাছেই হয়তো একে অধিক সাধারণীকরণ বলে মনে হবে, যদি বলা হয় যে নারীরা তাদের সমস্যার কথা অন্যের সাথে বেশি ভাগ করে নিতে চায়, আর পুরুষরা মনের কথা নিজের মাঝেই লুকিয়ে রাখে বেশি। কিন্ত এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অধিকাংশ সমাজেই পুরুষদেরকে উৎসাহিত করা হয়েছে ‘শক্ত’ হতে, যে কারণে তারা তাদের সমস্যার কথা সহজে কারো সামনে প্রকাশ করে না।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই বিষয়টির সূচনা হয় সেই ছেলেবেলা থেকেই। কোনো বাচ্চা ছেলে যদি কাঁদতে থাকে, তাকে সামলানোর জন্য সবচেয়ে বেশি যে কথাটি বলা হয় তা হলো, “ছি ছি! পুরুষ লোকের কী কাঁদতে আছে! কাঁদবে তো মেয়েরা।” সেই ছোটবেলা থেকেই একটি বাচ্চা ছেলের কাছে মেয়েলি স্বভাব প্রকাশের মতো লজ্জার কাজ দ্বিতীয়টি নেই। তাই তো তাদের মধ্যে এমন একটি ধারণা পাকাপোক্ত হয়ে যায় যে, যত যা-ই হয়ে যাক না কেন, ‘মেয়েদের মতো’ কাঁদা যাবে না, কিংবা নিজের মানসিক দুর্বলতার কথা কারো সামনে প্রকাশ করা যাবে না।

ছোটবেলা থেকেই ছেলেদের কান্নাকে বিবেচনা করা হয় তার দুর্বলতা হিসেবে; Image Source: Getty Images

মায়ের সাথে ছেলেদের কথা কম হওয়াও একটি বড় কারণ। যে কারো জীবনে মা হলো সবচেয়ে বড় নির্ভরতার প্রতীক। যেকোনো মানসিক উদ্বেগের সময় মায়ের সাথে কথা বলতে পারলে তা কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কিন্তু সমস্যা হলো, যত সময় যেতে থাকে, মায়ের সাথে পুত্র সন্তানের কথাবার্তার পরিমাণ কমতে থাকে। মেয়েরা বড় হয়ে যাওয়ার পরও মায়ের সাথে তাদের ঘনিষ্ঠতা বজায় থাকে। তাই যেকোনো ছোট-বড় সমস্যাতেই তারা মায়ের কাছে নিজেদেরকে উজাড় করে দিতে পারে। কিন্তু ছেলেরা বড় হওয়ার সাথে সাথে মায়ের সাথে তাদের দূরত্ব বাড়তে থাকে। একটা সময় পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, মায়ের কাছে ব্যক্তিগত সমস্যার কথা তারা প্রায় বলে না বললেই চলে।

তবে শুধু মা কেন, ছেলেরা তাদের সমস্যার কথা বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন বা প্রেমিকা, কারো কাছেই খুব সহজে প্রকাশ করে না। এমনকি মানসিক সমস্যায় ভুগতে থাকলেও তারা চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে চায় না। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, নারীদের তুলনায় পুরুষরা প্রাথমিক মানসিক সমস্যায় চিকিৎসকের কাছে যায় ৩২% কম। আর বিষণ্ণতায় ভুগে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট কেনার পরামর্শ পাওয়া পুরুষদের সংখ্যাও নারীদের চেয়ে ৮% কম, যা থেকে প্রমাণিত হয় বিষণ্ণতায় ভুগে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রবণতা নারীদের তুলনায় পুরুষদের মাঝে অনেক কম।

এভাবেই নারীদের তুলনায় পুরুষরা মানসিক সমস্যায় প্রয়োজনীয় মেডিকেল সাহায্য অনেক কম প্রহণ করে। বিষয়টি এমন নয় যে নারীদের তুলনায় তাদের সমস্যা কম। মূল বিষয়টি হলো, তারা তাদের সমস্যা কারো সামনে প্রকাশ করতে চায় না। তাই তো দেখা যায় যে, আত্মহত্যা করেছে এমন প্রতি তিনজন পুরুষের মধ্যে মাত্র একজন জীবনের কোনো একপর্যায়ে মনোচিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েছে।

এখন আরেকটি ভয়ংকর ব্যাপার হলো, মানসিক সমস্যায় পুরুষরা বিশেষায়িত চিকিৎসকের কাছে যায় না তো কী হয়েছে, তারা নিজেরাই নিজেদের ‘চিকিৎসা’র চেষ্টা কিন্তু ঠিকই করে। সেটি কীভাবে? অ্যালকোহলের মাধ্যমে। একজন পুরুষ যখন মানসিক সমস্যায় ডুবে যায়, তখন সে পালাবার পথ খোঁজে অ্যালকোহলে। বাস্তবিকই, পুরুষদের ভেতর অ্যালকোহল নির্ভরতার হার নারীদের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি। কিন্তু সমস্যা হলো, অ্যালকোহল সাময়িকভাবে মানুষকে মানসিক প্রশান্তি দেয় বটে, কিন্তু ঝাঁঝ কেটে যাওয়া মাত্রই সেটি মানুষকে আরো বেশি বিষণ্ণ করে দেয়। ফলে অ্যালকোহল গ্রহণকারী মানুষটির মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা আরো বেড়ে যায়।

মানসিক সমস্যায় ভোগা পুরুষেরা আশ্রয় খোঁজে অ্যালকোহলে; Image Source: Live Science

পুরুষদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি হওয়ার সাথে সম্পর্কিত আরেকটি বড় কারণ হলো তাদের কর্মজীবন ও অর্থনৈতিক অবস্থা। যখনই বেকারত্ব, ব্যবসায়ে ক্ষতি প্রভৃতি সমস্যার আবির্ভাব ঘটে, এবং তার ফলে অর্থনৈতিক দৈন্যদশার সৃষ্টি হয়, তখন পুরুষদের মাঝে আত্মহত্যার প্রতি ঝোঁক বেড়ে যায়। সাধারণত অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হওয়ার ১৮ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে পুরুষদের আত্মহত্যার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। ২০১৫ সালে করা এক গবেষণার ফল বলছে, প্রতি ১% বেকারত্ব বা চাকরিহীনতা বৃদ্ধির কারণে ০.৭৯% আত্মহত্যার হার বৃদ্ধি পায়।

ক্রমাগত টাকা-পয়সার চিন্তা করতে করতে, কিংবা চাকরি খুঁজতে খুঁজতে গলদ্ঘর্ম হয়ে, একজন পুরুষের মানসিক অবস্থা আরো শোচনীয় পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায়। আর এর সাথে যোগ হয় সামাজিক চাপ ও আত্মপরিচয়হীনতাও। যখন একজন পুরুষ কর্মজীবনে ব্যর্থ হয় এবং তার অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা সুবিধাজনক থাকে না, তখন ক্রমাগত সে নিজের সমতুল্য অন্যদের সাথে নিজের তুলনা করতে থাকে। তাছাড়া সে নিজে না চাইলেও, সমাজ তাকে ঠিকই বাধ্য করে। ফলে সে আরো বেশি হতাশায় নিমজ্জিত হয়, যা তাকে আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিকে ঠেলে দেয়।

পুরুষদের বিচ্ছিন্নতাবোধকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না। একজন পুরুষ যখন নিজেকে অন্যদের চেয়ে বিচ্ছিন্ন বলে মনে করে, তখন তার মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা অনেকাংশে বেড়ে যায়। তবে এই বিচ্ছিন্নতাবোধের বিশেষ দিকটি হলো, যেকোনো পুরুষই এর সম্মুখীন হতে পারে। ধরা যাক, একজন পুরুষ কর্মজীবনে ব্যর্থ বলে, অন্যদের থেকে সে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। কিংবা অন্য যেকোনো কারণে সে তার সঙ্গী-সাথী ও বন্ধু-বান্ধবদের হারিয়ে একা হয়ে যেতে পারে। সামাজিক সম্পর্কগুলো থেকে অনেক দূরে চলে যেতে পারে। আবার কোনো ব্যক্তি কর্মজীবনে অনেক বেশি সফল হলেও, সেই সফলতা তাকে অন্যদের থেকে দূরে ঠেলে দিতে পারে। তার চারপাশে একটি অদৃশ্য দেয়াল তৈরি হয়ে যেতে পারে, যা ভেঙে তার কাছে পৌঁছাতে পারে খুব কম মানুষই। মূল কারণ যা-ই হোক না কেন, বিচ্ছিন্নতাবোধ থেকে আগত একাকিত্বের প্রাণঘাতি রূপ ধারণ করাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

বিচ্ছিন্নতাবোধ আত্মহত্যার পেছনে বড় কারণ; Image Source: Getty Images

মূলত এসব কারণেই একজন পুরুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দিতে পারে, এবং শেষপর্যন্ত সে আত্মহত্যায় সফলও হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এর কি কোনো প্রতিকার নেই? নিশ্চয়ই আছে।

মানসিক সহায়তা প্রদান হলো সবচেয়ে বড় পথ একজন আত্মহত্যাপ্রবণ পুরুষের জীবন রক্ষায়। একজন পুরুষ বিভিন্ন কারণেই আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠতে পারে, জীবনের প্রতি তার বিতৃষ্ণা চলে আসতে পারে। কিন্তু এ সময় সে যদি যথাযথ সঙ্গ পায়, যে সঙ্গ তাকে মানসিকভাবে সমর্থন যোগাতে সক্ষম, তাহলে তার নিজেকে ধ্বংসের প্রবণতা অবশ্যই কমে যাবে। তাছাড়া যদি কোনোভাবে তাকে মনোচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া যায়, এবং সেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ানো যায় ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে বাধ্য করা যায়, তাহলেও তার প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।

হতাশাগ্রস্ত পুরুষের দরকার কারো বাড়িয়ে দেওয়া সাহায্যের হাত; Image Source: Getty Images

বিভিন্ন দেশে আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তিদের জন্য আলাদা গ্রুপ আছে, যেখানে গিয়ে তারা একে অপরের সাথে নিজেদের মনের অনুভূতি ভাগ করে নিতে পারে। এভাবে নিজেদের মন হালকা করা এবং অন্যের সমস্যার কথা জানা অনেক কাজে দেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এভাবে তারা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তাছাড়া যারা এ ধরনের সরাসরি আন্তঃমানবিক যোগাযোগ বা মিথস্ক্রিয়ায় আগ্রহী নয়, তাদের জন্য রয়েছে উন্নত প্রযুক্তিও। আজকাল অনেকেই চ্যাটবটের সাথে কথা বলে বিষণ্ণতাবোধ বা আত্মহত্যার প্রবণতা থেকে মুক্তি পাচ্ছে। অনলাইন কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সুফল পাওয়া পুরুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়।

তবে একজন পুরুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন যেটি, তা হলো কোনো প্রিয়জন। সেই প্রিয়জনটি হতে পারে তার মা, বাবা, বন্ধু, ভাই, বোন, প্রেমিকা কিংবা স্ত্রী। সম্পর্কের ধরন যেমনই হোক না কেন, একজন পুরুষের যদি নির্ভরযোগ্য কোনো প্রিয়জন থাকে, যে সবসময় তাকে সঙ্গ দেবে, তার পাশে থাকবে, তাহলে ওই পুরুষের অধিকাংশ মানসিক সমস্যাই দূর হয়ে যেতে বাধ্য।

একজন প্রিয়জনের কোনো বিকল্প নেই; Images Source: Getty Images

নারীরা যেমন নিজে থেকেই মনের কথা অন্য কারো কাছে খুলে বলে নির্ভার হতে পারে, পুরুষরা তা পারে না। তাই একজন পুরুষের দরকার এমন কোনো প্রিয়জন, যে নিজে থেকেই তাকে বুঝবে, তার মনের অপ্রকাশিত কথাকে বের করে আনতে পারবে। একজন পুরুষ যদি এমন কারো সন্ধান পায়, তাহলে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে সে আত্মহত্যা করবে না। যতদিন নিরুপায়, হতাশাগ্রস্ত পুরুষেরা এমন কোনো প্রিয়জনের সন্ধান না পাবে, কিংবা কেউ নিজে থেকে সেই পুরুষদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে, ততদিন পুরুষদের আত্মহত্যার প্রবণতা ও আত্মহত্যার ফলে মৃত্যুর হার উর্ধ্বমুখীই থাকবে।

চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: roar.media/contribute/

This article is in Bengali language. It is about why are men more likely than women to take their own lives. Necessary references have been hyperlinked inside. 

Featured Image © Everyday Health

Related Articles