Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

চাঁদ কি কারো ব্যক্তিগত সম্পদ?

এই রাত তোমার আমার
ঐ চাঁদ তোমার আমার
শুধু দু’জনের।

চাঁদ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার নেই কোনো শেষ; Image Source: Getty Images

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের একটি বিখ্যাত গানের কিছু লাইন। কিন্তু আসলেই কি চাঁদ আমাদের কারো ব্যক্তিগত সম্পদ হতে পারে? চলুন জেনে আসা যাক এই মজার প্রশ্নের কোনো উত্তর আছে কি না। 

পৃথিবীর প্রথম মানুষ হিসেবে প্রায় ৫০ বছর আগে নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে পা রাখেন। এরপর তার বিখ্যাত বক্তব্যটি ছিল- 

মানুষের এই ক্ষুদ্র পদক্ষেপটি মানব সভ্যতাকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেল।

স্নায়ুযুদ্ধের সময় মহাকাশ অভিযান শুরুর পর পরই মহাকাশের নানা বস্তুর মালিকানার বিষয়টি একটি ইস্যু হয়ে ওঠে। যখন নাসা তাদের প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশযান চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করে, তখন জাতিসংঘে ‘বহির্জগতের মহাকাশ চুক্তি’ বা ‘দ্য আউটার স্পেস ট্রিটি’ নামের একটি চুক্তিপত্র গ্রহণ করা হয়। ১৯৬৭ সালের সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য। সেখানে বলা হয়, পৃথিবীর বাইরের মহাশূন্যে, চাঁদ এবং অন্যান্য যেসব বস্তু রয়েছে, সেখানে কোনো দেশ দখল বা অন্য কোনোভাবে নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করতে পারবে না।

প্রাচীনকালের জমির মালিকানা দাবি নিয়ে মজাদার কিছু নিয়ম ছিল। তখন এরকম সমতল ভূমি ছিল না, ছিল শুধু পাহাড় আর ঘন বন-জঙ্গল। তো নিয়মটা ছিল এমন, যে ব্যক্তি একটা জঙ্গলের যতটুকু জায়গা পরিষ্কার করে চাষযোগ্য করে তুলতে পারবে, ততটুকু পরিমাণ জায়গার মালিকানা সে পাবে। কারণ, তখন মানুষের তুলনায় ভূমির পরিমাণ অনেক বেশি ছিল।   

একবার চিন্তা করে দেখুন, যদি এই চুক্তি স্বাক্ষরিত না হতো, তাহলে কী হতো? প্রাচীনকালের জমির মালিকানা দখলের মতো আমেরিকা কি চাঁদকে নিজের সম্পদ বলে দাবি করত? বলাই যায় না, বিশ্বের অন্যতম পরাক্রমশালী এই দেশটির পক্ষে কোনোকিছুই অসম্ভব নয়।

মহাকাশ বিষয়ক কোম্পানি অলডেন অ্যাডভাইজারসের পরিচালক জোয়ানা হোয়েলার বলেছেন,

”ঐ চুক্তিটি হচ্ছে মহাকাশের ম্যাগনাকার্টার মতো। এর ফলে আর্মস্টং এবং অন্যরা চাঁদে যে পতাকা পুতে রেখে এসেছিলেন, সেটি অর্থহীন হয়ে পড়ে, যেহেতু চাঁদে কোনো ব্যক্তি, কোম্পানি বা দেশের মালিকানা নাকচ হয়ে গেছে।”

১৯৭৯ সালে চাঁদ ও মহাশূন্যের অন্যান্য বস্তুতে বিভিন্ন রাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সমঝোতা প্রস্তাব আনে জাতিসংঘ, যেটি ‘মুন এগ্রিমেন্ট’ নামে বেশি পরিচিত। সেখানে মূল বিষয়গুলো ছিল, এসব কর্মকাণ্ড হতে হবে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে এবং কোনো মহাকাশ স্টেশন বানাতে হলে আগে জাতিসংঘকে অবশ্যই জানাতে হবে- কেন এবং কোথায় তারা সেটি বানাতে চায়।

আপনি কি চাঁদে জমি কিনতে পারবেন?

আসলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে চাঁদ হলো মহাসাগরের মতো। সবাই একে ব্যবহার করতে পারবে, কিন্তু কেউ এর মালিকানা দাবি করতে পারবে না।

১৯৬৭ সালের মহাকাশ চুক্তির পর থেকে কোনো রাষ্ট্র চাঁদকে নিজেদের সম্পদ বলে দাবি করতে পারছে না। আপনি চাঁদে যেতে পারবেন, এমনকি সেখান থেকে মাটিও আনতে পারবেন; কিন্তু মালিকানা দাবি করতে পারবেন না।

কিন্তু এই চুক্তিতে একটা বড় ভুল ছিল। সেখানে লেখা ছিল, কোনো রাষ্ট্র চাঁদের মালিকানা দাবি করতে পারবে না; কিন্তু কোথাও এটা বলা নেই যে, কোনো সাধারণ মানুষ মালিকানা দাবি করতে পারবে কি না! 

ব্যস! কিছু লোক উঠে পড়ে লাগলেন চাঁদকে নিজের সম্পদ বানানোর জন্যে। দ্য স্পেস সেটলমেন্ট ইনস্টিটিউট তো এয়ারলাইনের আদলে ‘স্পেসলাইন’ চালু করতে চাইল। কিন্তু সব ছাপিয়ে যে ব্যক্তির নামটি না বললেই নয়, তিনি ডেনিস হোপ।

ডেনিস হোপ; Image Source: Daily Mail

আশির দশক। স্নায়ুযুদ্ধে পুরো পৃথিবী যখন পারমাণবিক বোমা থেকে বাঁচার উপায় খুঁজছিল, তখন ডেনিস হোপ নামের এক ব্যক্তি চাঁদে বসতি গড়ে তোলার কথা ভাবলেন।

ডেনিস হোপ ছিলেন একজন জুতা বিক্রেতা। বিবাহ বিচ্ছেদের পর তার দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম। এমতাবস্থায় তাকে নতুন কিছু শুরু করার কথা ভাবতে হচ্ছিল। তখন তিনি সম্পত্তি বিক্রির কথা ভাবছিলেন। ভাবতে ভাবতে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই তিনি চাঁদ দেখতে পেলেন। তখন তার মাথায় এলো, চাঁদের চেয়ে বড় সম্পদ তো আর হয় না!

এরপর তিনি স্থানীয় গ্রন্থাগার ও বিভিন্ন জায়গা থেকে মহাকাশ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন শুরু করলেন এবং ১৯৬৭ সালের মহাকাশ চুক্তির ভুলটি খুঁজে পেলেন।

আমেরিকান আইন অনু্যায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি মালিকবিহীন সম্পদের মালিকানা দাবি করে, অন্য কোনো ব্যক্তি সে সম্পদে দাবি না রাখে এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তার স্বাক্ষর করাতে পারে, তাহলে সে উক্ত সম্পদের মালিক হয়ে যাবে। হোপ অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে একটি ডকুমেন্ট তৈরি করেন এবং স্থানীয় মেয়রের অফিস থেকে তা স্বাক্ষর করিয়ে নেন। সেই স্বাক্ষরিত কাগজের দুটি কপি তিনি যথাক্রমে রাশিয়া ও জাতিসংঘে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এই চিঠি কেউ না পড়ার ফলে আমেরিকার নিয়ম অনুযায়ী ডেনিস হোপ হয়ে যান চাঁদের মালিক।

ডেনিস হোপ চাঁদের মালিক হয়েই থেমে থাকেননি। তিনি পত্রিকায় চাঁদ কিংবা চাদের জমি বিক্রির বিজ্ঞাপনও দেন। তিনি চাঁদে প্রতি একর জমি ২০ ডলার হিসেবে বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দেন। আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রপতি জিমি কার্টারও তার কাছ থেকে চাঁদে জমি কিনেছেন বলে জানা যায়। তার ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত তার কাছ থেকে সর্বমোট ৬১১ মিলিয়ন একর জমি মানুষ কিনেছে। কিন্তু আসলেই কি তা-ই? তাহলে তো তার নাম পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ধনীদের তালিকায় থাকার কথা।

আসলে পুরোটাই তার সাজানো। সাংবাদিকেরা তার কাছে চাঁদের দলিল দেখতে চাইলে তিনি নিজের বানানো একটি দলিল দেখান, যেখানে অনেক বানান ও ব্যাকরণগত ভুল রয়েছে। আসল দলিল তিনি সুরক্ষিত রেখেছেন বলে দাবি করেন। তার অঞ্চলের মেয়রের অফিসে জানতে চাওয়া হলে তারা এ সম্পর্কে কিছু জানে না বলে দাবি করেছেন। তবে হ্যাঁ, তার কাছ থেকে অনেকেই মজা করে কিংবা উপহার হিসেবে চাঁদের জমি ক্রয় করেছেন, যা থেকে তার বাৎসরিক ২৭ থেকে ৩০ হাজার ডলার আয় হচ্ছে। হোপ ১৯৯৫ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত নিজের বানানো এই স্ক্যাম থেকে আয় করছেন।

আমেরিকার পতাকা কি এখনও চাঁদে আছে?

নাসার মহাকাশযান থেকে তোলা কিছু ছবিতে দেখা যায়, অ্যাপোলো ১১ মিশনের সময় লাগানো পতাকাটি ছাড়া চাঁদের মাটিতে আমেরিকার লাগানো সবগুলো পতাকা এখনও দণ্ডায়মান।

পড়তে পারেন: মানুষ কি চাঁদে যায়নি? জেনে নিন সকল প্রশ্নের উত্তর!

চাঁদের মাটিতে নীল আর্মস্ট্রং; Image Source: irresistibletargets.blogspot.com

মুন রক

আপনি মুন রক কিনতে পারবেন না। চাঁদ থেকে সংগৃহীত প্রতিটি বস্তুই সেই দেশের জাতীয় সম্পদ। তাই কোনো দেশই এসব সম্পদ বিক্রি করে না। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কিছু জায়গায় নাসা তাদের সংগ্রহে থাকা কিছু মুন রক দর্শনার্থীদের দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে।

জাতিসংঘের গৃহীত চুক্তিটির গ্রহণযোগ্যতা

বর্তমান সময়ে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান চাঁদের মাটিতে খননকাজ চালাতে ইচ্ছুক। তাদের ধারণা, সেখানে মূল্যবান ধাতুর মজুদ থাকতে পারে। তবে জাতিসংঘের গৃহীত চুক্তিতে বলা হয়েছিল, চাঁদ এবং এর সকল প্রাকৃতিক সম্পত্তি মানবসভ্যতার সকলের সমান অধিকার থাকবে। যখন সেখান থেকে খনি আহরণ সম্ভব হবে, তখন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে, যারা সেই আহরণের বিষয়গুলো দেখভাল করবে।

তবে ওই চুক্তিটির সমস্যা হলো, মাত্র ১১টি দেশ সেটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স ও ভারত। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন এবং রাশিয়ার মতো মহাকাশ গবেষণার প্রধান দেশগুলো চুক্তিটি সমর্থন করেনি। কোনো চুক্তিতে উল্লেখ করা আইনগুলোর প্রয়োগ করা ততটা সহজ নয়। কারণ, এসব চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোকে সেটিকে তাদের আইনে পরিণত করতে হবে এবং কোম্পানি বা ব্যক্তিদের সেটা মেনে চলতে বাধ্য করতে হবে।

জার্নাল অভ স্পেস ল-এর সাবেক প্রধান সম্পাদক জোয়ান্নে ইরিনে গ্রাব্রিনোভিচের মতে, আসলে আন্তর্জাতিক সমঝোতা বাস্তবে কোনো নিশ্চয়তা দেয় না। কারণ, সেটি বাস্তবায়ন অনেক ক্ষেত্রে রাজনীতি, অর্থনীতি এবং গণ মতামতের ওপর নির্ভর করে।

আর মহাশূন্যের গ্রহ-উপগ্রহের ওপর মালিকানা না থাকার বর্তমান চুক্তিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে আরো বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

বহির্জগতের মহাকাশ চুক্তি; Image Source: Spaceflight.com

কিছু মজাদার তথ্য

  • প্রচলিত তত্ত্বানুযায়ী, আজ থেকে ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে, সোলার সিস্টেম গঠিত হওয়ার অল্প কিছুকাল পরে অনেকটা মঙ্গল গ্রহের মতো আকৃতির একটি শিলা/ভূত্বকের কঠিন অংশ পৃথিবীর সাথে সজোরে সংঘর্ষ হওয়ার ফলেই চাঁদের সৃষ্টি।

  • পৃথিবী থেকে আমরা সবসময়ই চাঁদের একই ‘চেহারা’ দেখে থাকি। যদিও পৃথিবী ও চাঁদ উভয়ই নিজ নিজ কক্ষপথে ঘুরছে, তবুও চাঁদ (যতটুকুই দেখা যায়) সবসময় একইরকম, কারণ, অনেক আগেই পৃথিবীর মহাকর্ষীয় প্রভাব চাঁদের নিজস্ব কক্ষপথের ঘূর্ণনকে ধীরগতির করে দিয়েছে। তাই এর অরবিটাল পিরিয়ড ও রোটেশন পৃথিবীর সাথে মোটামুটি মিলে যাওয়ায় চাঁদের ‘ছবি’ (অমাবস্যা/পূর্ণিমার ব্যাপার ভিন্ন) আর পরিবর্তিত হয় না।

  • পৃথিবীর বুকে থাকা চারশো’র বেশি গাছ এসেছে চাঁদের মাটি থেকে (!); আসলে ব্যাপারটি হচ্ছে, ১৯৭১ সালে অ্যাপোলো ১৪ মিশনে নভোচারী স্টুয়ার্ট রোসা প্রায় পাঁচশো’র মতো উদ্ভিদ-বীজ সাথে করে চাঁদে নিয়ে যান এবং চন্দ্রপৃষ্ঠে রোপণ করেন। পরে সেগুলো পৃথিবীতে ফিরিয়ে এনে অঙ্কুরিত করা হয়। গাছগুলো এখনও বেঁচে আছে। এগুলো ‘মুন ট্রি’ নামে পরিচিত।

  • আমরা অনেকেই হয়তো ভেবে থাকি, চাঁদ হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ (ন্যাচারাল স্যাটেলাইট); কিন্তু ১৯৯৯ সালে বিজ্ঞানীরা একটি পাঁচ কিলোমিটার প্রশস্ত গ্রহাণু আবিষ্কার করেন, যেটি পৃথিবীর মহাকর্ষীয় আকর্ষণে ধৃত হয়ে আরেকটি ‘চাঁদ’-এ রূপ নিতে পারে।

  • চাঁদকে আমরা গোল থালার মতো দেখলেও এর গঠন ডিম্বাকৃতির।

  • চাঁদের ভরকেন্দ্র গ্রহটির জ্যামিতিক কেন্দ্রে অবস্থিত নয়। এর অবস্থান চাঁদের কেন্দ্র থেকে দুই কিলোমিটার বাইরে।

  • চাঁদকে আমরা অনেকে স্বপ্নের জগৎ ভেবে থাকলেও এখানেও প্রাকৃতিক বিরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। চাঁদে মাঝে মাঝে ভূমিকম্প হয়। এগুলো ‘মুনকোয়েক’ নামে পরিচিত।

চন্দ্রগ্রহণ; Image Source: European Space Agency
  • ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নুৎপাতের পর ১৮৮৩ সালে ‘ব্লু মুন’ পরিভাষার জন্ম হয় বলে ধারণা করা হয়। সেসময় অগ্নুৎপাতের ফলে বায়ুমণ্ডলে এত বেশি ধুলো ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছিল, যে মানুষ যখন পৃথিবী থেকে চাঁদের থেকে তাকিয়েছিল, তখন তাকে দেখতে নীল মনে হয়েছিল। আর এ থেকেই তৈরি হয়েছে ‘ওয়ান্স ইন অ্যা ব্লু মুন’ কথাটি। বিরল কোনো ঘটনা বলতে এই বাক্যটি ব্যবহার করা হয়।

  • যুক্তরাষ্ট্র একবার সত্যি সত্যিই চাঁদের উপর পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণের কথা চিন্তা করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করা। বিশেষ করে রাশিয়াকে ভয় দেখানো। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার অত্যন্ত গোপনীয় এই পরিকল্পনার নাম ছিল ‘অ্যা স্টাডি অফ লুনার রিসার্চ ফ্লাইটস’ অথবা ‘প্রজেক্ট এ১১৯’।

  • প্রাচীন চীনা বিশ্বাস অনুযায়ী, একটি ড্রাগন যখন সূর্যকে গিলে খেয়ে ফেলে, তখন সূর্যগ্রহণ হয়। তখন চীনারা তাদের পক্ষে যতটা সম্ভব আওয়াজ সৃষ্টি করতে থাকে, যাতে ড্রাগনটি ভয় পেয়ে দূরে চলে যায়। চীনারা একসময় আরো বিশ্বাস করত, চাঁদের গর্তের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ব্যাঙ বসবাস করে বা চারশো কোটি বছর আগে মহাকাশ থেকে ছুটে যাওয়া একটি পাথর চাঁদকে আঘাত করলে ওই গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল।

  • চাঁদকে আমরা যখন ক্রিসেন্টের আকারে বা অর্ধচন্দ্রাকৃতির মতো দেখি, তখন আমরা চাঁদ থেকে ছিটকে আসা সূর্যের আলোকেই দেখতে পাই। চাঁদের বাকি অংশটা খুব অস্পষ্ট দেখা যায়। সেটাও নির্ভর করে আবহাওয়ার উপরে। শিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চিই হলেন প্রথম কোনো ব্যক্তি, যিনি উপলব্ধি করতে পারেন যে চাঁদ আসলে সঙ্কুচিত ও প্রসারিত হচ্ছে না, বরং এর কিছু অংশ লুকানো থাকে।

  • চাঁদের আরো অনেক কিছুই আছে, যা এখনও আমাদের অজানা। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় এ নিয়ে একটি জরিপ চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেওয়া লোকজনের ১৩ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে, চাঁদ চীজ বা পনির দিয়ে তৈরি।

এ দৃশ্য নিছক কাল্পনিক; Image Source: Night Sky Gaze
  • সিনেমার দৃশ্যের কথা মনে পড়ে? যেখানে চাঁদের দিকে নেকড়ের ভীতিকর গর্জনে শেষ হয় হরর সিনেমা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, পূর্ণ জোছনা হলেও নেকড়ের কিছু যায় আসে না। এমনকি তারা সেদিকে তাকিয়ে গর্জনও দেয় না। তবে, রাতে নেকড়ের গর্জনের কারণে আমাদের পূর্বপুরুষেরা দুটোর সংযোগ ঘটিয়েছেন হয়তো।

  • এখন পর্যন্ত ১২ জন মানুষ চাঁদে হেঁটেছেন। নানা পেশা থেকে আসলেও কিছু ক্ষেত্রে মিল রয়েছে তাদের। মিলগুলো হচ্ছে- তারা সবাই আমেরিকান, সবাই শ্বেতাঙ্গ এবং সবাই পুরুষ। আমেরিকানদের বাইরে কিংবা নারীদের চাঁদে যাওয়ার জন্য আরো অনেক সময় অপেক্ষা করতে হবে বোধহয়।

  • থ্রি ইডিয়টস সিনেমায় প্রিন্সিপাল ভাইরাস প্রশ্ন করেছিলেন, যে চাঁদে পা রাখা দ্বিতীয় ব্যক্তি কে? উত্তর- বাজ অলড্রিন। 

  • যুক্তরাষ্ট্র একবার চাঁদে আন্ডারগ্রাউন্ড মিলিটারি বেস ক্যাম্প করার পরিকল্পনা করেছিল।

আপনি যতক্ষণে এই পোস্টটি পড়লেন, ততক্ষণে আমাদের পৃথিবী থেকে চাঁদ খানিকটা দূরে সরে গেছে। হ্যাঁ, প্রতি বছর পৃথিবী থেকে কিছুটা ঘূর্ণনশক্তি নিয়ে নেয় চাঁদ। ফলে নিজস্ব কক্ষপথে বছরে ৩.৮ সেন্টিমিটার উপরে চলে যাচ্ছে চাঁদ। গবেষকরা জানিয়েছেন, সৃষ্টিলগ্নে পৃথিবী থেকে ২২,৫৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল চাঁদ। কিন্তু এটি এখন ৪,৫০,০০০ কিলোমিটার দূরে চলে গেছে।

Related Articles