Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

কেমন ছিল সম্রাট বাবরের হিন্দুস্তানের দিনগুলো?

১৫২৬ সালের ২১ এপ্রিলে পানিপথের প্রান্তরে ইব্রাহীম লোদির বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ, ১৫২৭ সালের ১৬ মার্চে রাজপুত রানা সংগ্রাম সিংহের বিরুদ্ধে খানুয়ার প্রন্তরের যুদ্ধে জয়লাভ আর ১৫২৯ সালের ৬ মে-তে পাঠান-আফগান সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে চূড়ান্তভাবে জয়লাভ করে সম্রাট বাবর হিন্দুস্তানে তার নবপ্রতিষ্ঠিত মুঘল সাম্রাজ্যের ভীত বেশ শক্তভাবে প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে সাম্রাজ্যকে সব দিক থেকেই নিরাপদ করেন। উল্লেখিত প্রতিটি যুদ্ধই ছিল অসম শক্তির যুদ্ধ। প্রতিটি যুদ্ধেই বাবরের সেনাবাহিনী প্রতিপক্ষের তুলনায় কয়েক গুণ ছোট ছিল। এ থেকেই ধারণা করা যায় যুদ্ধক্ষেত্রে বাবর কতটা দক্ষ জেনারেল ছিলেন।

বাবরের জীবনী ঘাটলে দেখা যায়, তার জীবনের প্রায় পুরোটাই যুদ্ধ আর সংঘাতে পূর্ণ ছিল। তার জীবনের বেশিরাভাগ সময়ই কেটেছে যুদ্ধক্ষেত্রে। প্রতিটি যুদ্ধই তাকে পরবর্তী যুদ্ধের জন্য আরো বেশি যোগ্য ও দক্ষ করে গড়ে তুলছিল। বাবরের এই জীবন সংগ্রাম শুরু হয় মাত্র ১২ বছর বয়স থেকে, যখন পিতার মৃত্যুর পর তিনি ছোট্ট রাজ্য ফারগানার সিংহাসনে বসেন। নিজের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধেই বারবার যুদ্ধ করতে বাধ্য হন তিনি। ছোটবেলা থেকেই বাবর বেশ উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলেন। আর এত সংঘাত আর অনিশ্চয়তার মাঝেও নিজের সেই উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে কখনো দ্বিধায় ভোগেননি তিনি।

তাইমূরের স্বপ্নের রাজধানী সমরকন্দের প্রতি তার আকর্ষণ ছিল দুর্নিবার। এই শহর তাকে মনেপ্রাণে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল আজীবন। এই শহরটি নিজের দখলে রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন তিনি। একে একে তিনবার শহরটি নিজের অধিকারে নিতে সক্ষমও হন তিনি। কিন্তু শক্তিশালী শত্রু উজবেক নেতা শায়বানী খানের সাথে কখনোই পেরে উঠেননি। তিনবারই সমরকন্দ তার হাতছাড়া হয়ে যায়। এদিকে সমরকন্দের মোহে যখন ফারগানাও হাতছাড়া হয়ে যায়, তখন কিছুদিন ভবঘুরের ন্যায় পথে পথে ঘুরতে হয় তাকে। জীবনের প্রতিকূলতা আর ভাগ্যের অনিশ্চয়তা এই তরুণকে যেন আগুনে পুড়িয়ে আরো বেশি বিশুদ্ধ করে তুলছিল।

একসময় বাবর প্রায় হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। সব ছেড়ে দিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়ার কথাও ভাবছিলেন। কিন্তু একসময় কাবুলে তারই চাচা উলুঘ বেগ মির্জার মৃত্যুর ফলে অপ্রত্যাশিতভাবে তিনি কাবুলের অধিকার নিজের হাতে পেয়ে গেলেন। আর এখান থেকেই বাবরের উত্থানের শুরু। ১৫০৪ সালের অক্টোবরের দিকে যখন বাবর কাবুল দখল করেন, তখন তার বয়স ছিল ২৩ বছর। তরুণ এই যুবকের কাবুল অধিকারের পর আর কোনোদিন তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

কাবুল পদানত করার পর বেশ কিছুদিন নির্বিঘ্নে কাবুল শাসন করেছেন। কিন্তু যার দৃষ্টি অনেক বিশাল, তার কি আর এক জায়গায় চুপচাপ বসে থাকা চলে? বাবর তার পূর্বপুরুষ তাইমূরের মতোই হিন্দুস্তানের দিকে নজর দিলেন। তাইমূর ১৩৯৭ সালে হিন্দুস্তান অধিকার করেছিলেন। পরে নিজের অনুগত খিজির খানকে হিন্দুস্তানের দায়িত্ব দিয়ে সমরকন্দ ফিরে যান। খিজির খান তাইমূরের অধীনস্ত হিসেবেই হিন্দুস্তান শাসন করেছিলেন।

বাবর যেহেতু তাইমূরের সরাসরি বংশধর ছিলেন, তাই তিনি হিন্দুস্তানকে নিজের বৈধ অধিকার মনে করতেন। কাজেই নিজের অধিকার বুঝে নিতে তিনি হিন্দুস্তান অভিযান চালানোর ব্যপারে ভাবতে লাগলেন। প্রাথমিকভাবে বেশ কিছু অভিযান চালান তিনি। এসব অভিযানে তেমন সফলতা অর্জন করতে না পারলেও কাবুলে নিজের রাজ্যের সীমানা বৃদ্ধি করতে পেরেছিলেন। একে একে ১৫০৫, ১৫০৭, ১৫১৯এবং ১৫২৩ সালে হিন্দুস্তানে মোট চারটি অভিযান চালান তিনি। কিন্তু কোনো অভিযানেই তেমন উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসেনি। তবে বাবরের অভিযানের ধরন দেখে বোঝা যায়, সেসব অভিযানে তিনি নিজেও সাফল্য আশা করেননি। যা-ই হোক, অবশেষে ১৫২৬ সালের ২১ এপ্রিল পানিপথের প্রান্তরে ইব্রাহীম লোদির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত এক যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে তিনি দিল্লি আর আগ্রার শাসনাধিকার অর্জন করতে সক্ষম হন। অবশেষে বাবরের বহুদিনের স্বপ্ন হিন্দুস্তান তার কাছে মাথানত করে।

নিজের জন্মভূমি ফারগানা থেকে প্রায় ১,৪০০ কিলোমিটার দূরবর্তী দিল্লি জয় করে নিলেও হিন্দুস্তান বাবরের নিকট একেবারেই ভাল লাগেনি। যদিও হিন্দুস্তান বিজয় করার জন্য তিনি তার জীবনের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ যুদ্ধক্ষেত্রে কাটিয়েছিলেন। বাবরের হিন্দুস্তানকে অপছন্দ করার মূল কারণ হলো সেখানকার উষ্ণ আবহাওয়া। বাবর জন্মেছিলেন মধ্য শীতল আবহাওয়াযুক্ত পরিবেশে। জীবনের বেশিরভাগ সময়ই তিনি এই পরিবেশে কাটিয়েছিলেন। এই পরিবেশেই তিনি অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু হিন্দুস্তান মধ্য এশিয়ার মতো শীতল আবহাওয়াযুক্ত অঞ্চলের মতো না। অল্প কিছু অঞ্চল ছাড়া হিন্দুস্তানের বেশিরভাগ অঞ্চলই উষ্ণ আবহাওয়ার। এই বিরুপ আবহাওয়া বাবর কিংবা তার সেনাবাহিনী, কারোই তেমন ভালো লাগেনি। এ কারণেই হিন্দুস্তান বিজয়ের পরপরই বাবরের রাজকীয় মুঘল সেনাবাহিনী দ্রুত হিন্দুস্তান ত্যাগ করতে উৎসাহী ছিল।

হিন্দুস্তানে সম্রাট বাবরের দরবার; Source: Pinterest

আবহাওয়ার সমস্যার পর বাবর পড়েছিলেন খাওয়া-দাওয়ার সমস্যায়। মধ্য এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলই সে সময় লোভনীয় সব ফলমূল উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। বাবর সেসব খেতেই বেশি অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু হিন্দুস্তানের রুক্ষ ভূমিতে বাবরের পছন্দনীয় কোনো ফলমূল তখন পর্যন্ত ফলতো না। সত্যিকার অর্থে সেসব ফলমূল হিন্দুস্তান তখন পর্যন্ত চোখেই দেখেনি! বাবরনামাতে বাবর আবেগের সাথে লিখেছেন,

“এখানে (হিন্দুস্তানে) কোনো আঙ্গুর বা তরমুজ নেই। কোনো সুস্বাদু ফল নেই, কোনো বরফ বা ঠাণ্ডা পানি নেই। কোনো ভালো খাবার বা রুটিও নেই!”

প্রথকদিকে বাবর ও তার সেনাবাহিনীর এই অসুবিধা কাটানো হয়েছিল কাবুল থেকে প্রয়োজনীয় ফলমূল আমদানী করে। পরে মুঘলদের একান্ত প্রচেষ্টায় এসব প্রয়োজনীয় সুস্বাদু ফলমূল হিন্দুস্তানের মাটিতেই জন্মানোর ব্যবস্থা করা হয়।

কাবুলের ‘বাগ-ই-বাবর’ তৈরির কাজ বাবর নিজে পরিদর্শন করছেন। বাগান তৈরি পুরো মুঘল রাজপরিবারেরই এক বিচিত্র শখ ছিল; Source: Pinterest

ঐতিহ্যগতভাবেই মুঘলদের বাগান বা উদ্যানপ্রীতি সারা বিশ্বে অনন্য এক বিষয়। বাবর যুদ্ধের জন্য সেনাবাহিনী নিয়ে অগ্রসর হওয়ার সময়ও সুযোগ পেলে নিজের পছন্দের জায়াগায় উদ্যান তৈরি করে আসতেন। হিন্দুস্তানের অসহনীয় আবহাওয়ায় নিজেদের মানিয়ে নিতে বাবর তার নিজের এই শখটিই কাজে লাগান। বাবর হিন্দুস্তান বিজয় করার পর একে একে বিভিন্ন স্থানে উদ্যান, কৃত্রিম ঝর্ণা, মর্মর পাথরের তৈরি হাম্মামখানা বা গোসলখানা তৈরি করাতেন। হিন্দুস্তানে নিজের অধিকারকৃত ভূখন্ডের নানা স্থানে প্রচুর গাছপালা রোপণ করা হতো শুধুমাত্র এই আশায় যে, আবহাওয়া যেন মুঘলদের সহনীয় অবস্থায় আসে। কিন্তু এত কিছুর পরও হিন্দুস্তানের এই নতুন আবহাওয়ায় মুঘলরা নিজেদের মানিয়ে নিতে পারলেন না। তারা হিন্দুস্তানের এই বিরূপ আবহাওয়াকে অপছন্দ করতেন। এ কারণেই সুযোগ পেলেই মুঘলরা কাশ্মীরে অবসরযাপন করতে চলে যেতেন!

বাগান তৈরির সময় বাবর নিজে খোঁজখবর নিচ্ছেন; Source: Wikimedia Commons

হিন্দুস্তান নিয়ে বাবরের নিজের মতামত বাবরনামায় বেশ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে গেছেন। বাবর লিখেছেন,

“হিন্দুস্তান এমন একটি দেশ যেখানে প্রশংসা করার মতো ব্যপার খুবই সামান্য। এখানের লোকজন দেখতে তেমন সুশ্রী নয়। বন্ধুত্বপূর্ণ সমাজ, আন্তরিকভাবে একত্রে মেলামেশা করার মতো অথবা পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ আদান-প্রদানের সাধারণ ব্যপারাগুলো সম্পর্কেও তাদের তেমন ধারণা নেই। তাদের তেমন মেধাশক্তি নেই, বোধশক্তি নেই, আচার-আচরণেও সৌজন্যতা নেই। নেই তেমন দয়া-মায়া কিংবা সহানুভূতি। কোনো যান্ত্রিক আবিষ্কার অথবা কলা-কৌশল সম্পর্কে তাদের তেমন ধারণা নেই, নেই স্থাপত্য সম্পর্কে তেমন কোন জ্ঞান। তাদের উন্নত জাতের কোনো ঘোড়া নেই, ভালো বাড়ি নেই, টাটকা মাংস নেই, আঙ্গুর-তরমুজ নেই, সুস্বাদু ফল নেই, কোনো বরফ বা ঠাণ্ডা পানি নেই, ভালো কোনো খাবার বা রুটি নেই, কোনো গোসলখানা বা শিক্ষালয় নেই।”

কে জানে, হয়তো বাবর তার নতুন অধিকৃত এই এলাকাটির আসল রূপ দেখে হতাশ হয়েছিলেন কিনা!

হিন্দুস্তানের আবহাওয়া দেখে বাবর হতাশ হলেও এখানকার বিভিন্ন পাখি দেখে বেশ বিস্মিত হয়েছিলেন। ‘বাবরনামা’-তে বাবর হিন্দুস্তানের বিভিন্ন পাখির বেশ কিছু চিত্রকর্ম অন্তর্ভূক্ত করেছেন; Source: art.thewalters.org

নিজেকে হিন্দুস্তানের শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হলেও বাবর হিন্দুস্তানের স্থানীয় অধিবাসীদের মনোভাব বেশ ভালোই বুঝতেন। তিনি জানতেন হিন্দুস্তান তাকে বিদেশি শাসক হিসেবেই গ্রহণ করা হয়েছে। আর ব্যাপারটি নিয়ে হিন্দুস্তানবাসীর বেশ অভিমানও ছিল। বাবর কোনো অত্যাচারী বা নির্দয় শাসক ছিলেন না। আর তাই তিনি হিন্দুস্তানবাসীর মন জয় করার সিদ্ধান্ত নিলেন। হিন্দুস্তানের ব্যপক উন্নয়ন পরিকল্পনায় হাত দিলেন। সুশাসনের জন্য তিনি তার প্রশাসন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর ব্যবস্থা করলেন। রাজধানী আগ্রাসহ হিন্দুস্তানে নিজের অধিকৃত সমস্ত এলাকা মনোরম প্রাসাদ, পানির কূপ, পুকুর, হাম্মামখানা দিয়ে ভরে তুললেন।

বাবরের আগ্রহে রাজধানী আগ্রায় জোহরাবাগ আর আরামবাগ নামে দুটি উদ্যান করে তোলা হলো। তিনি আগ্রা থেকে কাবুল পর্যন্ত রাস্তা জরিপ করালেন, ফলক বসিয়ে রাস্তা চিহ্নিত করার ব্যবস্থা করলেন, পথিকদের সুবিধার জন্য কিছু দূর পরপর সরাইখানা বা বিশ্রামাগার তৈরি করালেন। হিন্দুস্তানের বিপুল সংখ্যক মসজিদ ও অন্যান্য ভবন সংস্কার করালেন। কাবুলসহ হিন্দুস্তানের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে ভালো ও দ্রুত যোগাযোগ করার জন্য উৎকৃষ্ট যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুললেন। কিছু দূর পরপরই ডাকঘর আর চৌকি স্থাপন করলেন। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি সাধনের জন্য বিভিন্ন স্কুল প্রতিষ্ঠা করলেন।

এতসব কাজের মূল লক্ষ্য ছিল, হিন্দুস্তানবাসীর অভিমান প্রশমিত করা। কিছুক্ষেত্রে তিনি সফলও হয়েছিলেন। হিন্দুস্তানবাসী একসময় মুঘলদের স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করতে শুরু করে। এছাড়াও, ইব্রাহীম লোদির বিরুদ্ধে নিজের বিজয় উপলক্ষে ১৫২৭ সালে পানিপথে তৈরি করেন কাবুলি বাগ মসজিদ। এ মসজিদের নামকরণ করা হয়েছিলো সম্রাট বাবরেরই স্ত্রী কাবুলি বেগমের নামানুসারে।

কাবুলি বাগ মসজিদ; Source: haryanatourism.gov.in

এর কিছুদিন পূর্বেই দিল্লির প্রায় ১৪০ কিলোমিটার পূর্বে সম্ভলে নির্মাণ করেন সম্ভল জামে মসজিদ। ১৫২৮-২৯ সালের ভেতরে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয় বাবরের বিখ্যাত বাবরী মসজিদের। সম্রাট বাবর ছিলেন উচ্চ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন এবং হৃদয়বান একজন শাসক। যুদ্ধক্ষেত্রে যেমন তিনি নিপুণতার পরিচয় দিতেন, তেমনই প্রশাসন ব্যবস্থায় তার দক্ষতা ছিল প্রশ্নাতীত। তিনি সবসময়ই জনকল্যাণের কথা চিন্তা করতেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে তিনি ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

বাবরের বিখ্যাত বাবরি মসজিদ। হিন্দুস্তান বিজেতা প্রথম মুঘল সম্রাট জহির উদ-দিন মুহাম্মদ বাবরের স্মৃতিবিজড়িত এই মসজিদটি তার নিজের নামেই নামকরণ করা হয়েছিল; Source: outlookindia.com

বাবর অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে হিন্দুস্তান দখল করতে পারলেও শাসন করতে পেরেছিলেন খুব অল্প সময়ই। হিন্দুস্তান বিজয় করে যেটুকু সময় তিনি হিন্দুস্তানে কাটিয়েছিলেন, তার বেশিরভাগ সময়ই আবার ব্যয় করতে হয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে ঘোড়ার পিঠে চড়ে। তাই সত্যিকার অর্থে বাবরের শাসনামলে হিন্দুস্তান সত্যিকারের মুঘল ঐতিহ্য বা গৌরব দেখার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারেনি। তবে এই ব্যপারে নিঃসন্দেহে বলে দেয়া যায়, যদি বাবর আরো কিছু বছর হিন্দুস্তান শাসন করতে সক্ষম হতেন, তাহলে হিন্দুস্তানের ইতিহাসে শুধু বিজেতা হিসেবেই নয়, একজন দক্ষ প্রশাসক আর দয়ালু সম্রাট হিসেবেই তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে নিতে সক্ষম হতেন।

তথ্যসূত্র

১. মোগল সাম্রাজ্যের সোনালী অধ্যায়, সাহাদত হোসেন খান

২. বাবরনামা- জহির উদ দিন মুহাম্মদ বাবুর (অনুবাদ: মুহাম্মদ জালালউদ্দীন বিশ্বাস)

৩. হুমায়ুননামা- মূল গুলবদন বেগম (অনুবাদ: এ কে এম শাহনাওয়াজ)

৪. Medieval India: From Sultanat to the Mughals 

এই সিরিজের আগের পর্বসমূহ

১। প্রাক-মুঘল যুগে হিন্দুস্তানের রাজনৈতিক অবস্থা || ২। তরাইনের যুদ্ধ: হিন্দুস্তানের ইতিহাস পাল্টে দেওয়া দুই যুদ্ধ || ৩। দিল্লী সালতানাতের ইতিকথা: দাস শাসনামল || ৪। রাজিয়া সুলতানা: ভারতবর্ষের প্রথম নারী শাসক || ৫। দিল্লি সালতানাতের ইতিকথা: খিলজী শাসনামল || ৬। দিল্লি সালতানাতের ইতিকথা: তুঘলক শাসনামল || ৭। দিল্লি সালতানাতের ইতিকথা: তৈমুরের হিন্দুস্তান আক্রমণ ও সৈয়দ রাজবংশের শাসন || ৮। দিল্লী সালতানাতের ইতিকথা: লোদী সাম্রাজ্য || ৯। রাজকীয় মুঘল সেনাবাহিনীর গঠন এবং গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস || ১০। রাজকীয় মুঘল সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত কিছু অস্ত্রশস্ত্র || ১১। জহির উদ-দিন মুহাম্মদ বাবুর: ‘একজন’ বাঘের উত্থান || ১২। বাদশাহ বাবরের কাবুলের দিনগুলো || ১৩। বাদশাহ বাবর: হিন্দুস্তানের পথে || ১৪। বাদশাহ বাবরের হিন্দুস্তান অভিযান: চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি || ১৫। মুঘল সাম্রাজ্যের উত্থান: হিন্দুস্তানে বাবরের চূড়ান্ত লড়াই || ১৬। খানুয়ার যুদ্ধ: মুঘল বনাম রাজপুত সংঘাত || ১৭। ঘাঘরার যুদ্ধ: মুঘল বনাম আফগান লড়াই

ফিচার ইমেজ: Pixabay.com

Related Articles