Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

হেলিওস ফ্লাইট ৫২২: ভুতূড়ে এক বিমানের গল্প

১৪ আগস্ট, ২০০৫; সকাল ন’টায় নিয়মিত রুটিন অনুযায়ী হেলিওস এয়ারওয়েজের ফ্লাইট ৫২২ সাইপ্রাস থেকে রওনা দেয় গ্রীসের রাজধানী এথেন্সের উদ্দেশ্যে। ৯টা ২০ মিনিটে শেষবারের মতো বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের (এটিসি) সাথে কথা হয় পাইলটদের। প্রায় আধঘন্টা পর এথেন্সের আকাশসীমায় প্রবেশের পর এথেন্স বিমানবন্দর থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় বিমানটির সাথে। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও পাইলটদের সাথে কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি এথেন্স এটিসি। সকাল পৌনে এগারোটায় যে বিমান পৌঁছানোর কথা, তার কোনো খবরই নেই! গ্রীসের বিমান বাহিনীর দু’টি এফ-১৬ ফাইটার প্লেন উড়ে যায় প্লেনটিকে যথাসম্ভব কাছ থেকে দেখার জন্য। প্রায় বিশ মিনিট পর আকাশেই খুঁজে পায় প্লেনটিকে। স্বাভাবিকভাবেই প্রথমে মনে হয়েছিল সন্ত্রাসীরা বিমান হাইজ্যাক করেছে। কিন্তু ফাইটার জেটের পাইলটরা নিশ্চিত করেন সেরকম কিছুই হয়নি। বরং ঘটে গেছে এক ভূতুড়ে ঘটনা। কী ছিল সেই ঘটনা? সেটা জানার আগে চলুন পেছনের কিছু কথা প্রথমে জেনে নেয়া যাক।

শুরুর কথা

বিখ্যাত বিমান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িং এর ৭৩৭ মডেলের বিমান ছিল সেদিনের ঘটনার বিমানটি। মাত্র আট বছর আগে, ১৯৯৭ সালে প্রথম আকাশে ওড়ে বিমানটি। ঘটনার আগের রাতে প্রায় দেড়টার দিকে লন্ডন থেকে যাত্রী নিয়ে সাইপ্রাসের লারনাকায় আসে বিমানটি। রুটিন অনুযায়ী পরের ফ্লাইটটি ছিল সকাল নয়টায়, গ্রীসের এথেন্সের উদ্দেশ্যে। ১১৫ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু নিয়ে সকাল ৯টা ৭ মিনিটে আকাশে উড়াল দেয় ফ্লাইট ৫২২। প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর উড্ডয়নের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ৫৮ বছর বয়সী জার্মান পাইলট হ্যান্স-জারগেইন মারটেইন ছিলেন সেদিনের ক্যাপ্টেন। তার সাথে কো-পাইলট হিসেবে ছিলেন প্যাম্পস ক্যারালাম্বাস।

হেলিওস কোম্পানির একটি বোয়িং ৭৩৭; Source: Wikimedia commons

আগের রাতে প্লেনটি লন্ডন থেকে আসার পর ফ্লাইট ক্রুরা প্লেনটির একটি দরজার সমস্যার কথা বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড ক্রুদের জানায়। বিমানবন্দরের একজন প্রকৌশলী পুরো দরজাটি ভালোমতো পরীক্ষা করার জন্য দরজার প্রেশারাইজেশন ব্যবস্থাটি ‘অটো’ থেকে ‘ম্যানুয়াল’ করে দেন। ইঞ্জিন বন্ধ থাকা অবস্থায় এটা ছাড়া অন্য উপায়ও ছিল না পরীক্ষা করার। কিন্তু পরীক্ষা শেষে ব্যবস্থাটি যে আবার ‘অটো’ করে দিতে হবে, তা ভুলে যান প্রকৌশলী। ফলে সবার অজান্তেই সেই দরজার প্রেশারাইজেশন ব্যবস্থাটি ‘ম্যানুয়াল’ হয়ে থাকে। এখানে একটি কথা বলে রাখা ভালো, বিমানের ভেতরের প্রেশারাইজেশন অর্থাৎ বাতাসের চাপ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ। বিমান সাধারণত যে উচ্চতায় ওড়ে, সেখানে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ বেশ কম। তাই বিমানের কেবিনে কৃত্রিমভাবে চাপ সৃষ্টি করে অক্সিজেন দেয়া হয়।

টেকঅফ করার আগে পাইলটরা তিনবার সবগুলো দরজার প্রেশারাইজেশন ব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখেন। কিন্তু তিনবারের একবারও কেউ খেয়াল করেননি যে ব্যবস্থাটি ‘ম্যানুয়াল’ অবস্থায় রয়েছে। ফলে সেভাবেই সকাল ৯টা ৭ মিনিটে প্লেনটি আকাশে উড়াল দেয়। দরজা ‘ম্যানুয়াল’ অবস্থায় থাকায় ঠিকমতো লাগেনি এবং একটি ভালভ খোলাই থেকে যায়। সে অবস্থাতেই বিমানটি ধীরে ধীরে উঠে যায় ৩৪ হাজার ফুট উপরে। এর কিছুক্ষণ আগে, যখন বিমানটি প্রায় ২৯ হাজার ফুট উপরে ছিল, তখন শেষবারের মতো বিমানের ক্রুদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়েছিল। সাধারণত এত উপরে ওঠার পর পাইলটদের করার তেমন কিছুই থাকে না। ফলে বিমান চলে অটোপাইলটে।

বিভিন্ন উচ্চতায় কেবিনের চাপ এবং বাতাসের চাপ; Source: Aviation safety bureau

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

প্রায় আধঘন্টা পরেই সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে বিমানটি এথেন্সের রাডারের আওতায় এসে পড়ে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ কোনো যোগাযোগ না হওয়ায় এথেন্স এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে বিমানটির সাথে। কিন্তু কোনোবারই কোনোরকম সাড়া পাওয়া যায়নি বিমানটি থেকে। ১০টা ১২ মিনিট থেকে ১০টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায় এথেন্স বিমানবন্দর। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়, বিমানটি হাইজ্যাক হয়েছে এবং ৯/১১ এর মতো কোনো হামলা হতে পারে এথেন্সে কিংবা গ্রীসের অন্য কোথাও।

সকাল ১১টা ৫ মিনিটে হেলেনিক এয়ার ফোর্সের (গ্রীসের এয়ার ফোর্স) দু’টি এফ-১৬ রওনা দেয় বিমানটিকে কাছ থেকে দেখার জন্য। প্রায় ২০ মিনিট পর ফাইটার জেট দু’টি বিমানটি খুঁজে পায় এবং দু’পাশ থেকে অনুসরণ করতে থাকে। এফ-১৬ এর পাইলটরা তৎক্ষণাৎ জানায় যে, বিমানের সকল যাত্রী অক্সিজেন মাস্ক পরিহিত অবস্থায় ও ককপিটে একজন পাইলকে দেখে মৃত মনে হয়েছে এবং অক্সিজেন মাস্ক পরিহিত একজন বিমানটি নিজে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সেই ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি স্বাভাবিকভাবেই। সন্ত্রাসী হামলা ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নেয় এথেন্স, কর্তৃপক্ষ পড়ে যায় চাপে। তাদের হাতে দু’টি পথ খোলা ছিল- ফাইটার জেট দু’টি আকাশেই বিমানটিকে ১২১ জন যাত্রীসহ উড়িয়ে দিবে অথবা কী হয় তার অপেক্ষা করার।

এফ-১৬ দেখার চেষ্টা করছে বিমানটিকে, কম্পিউটার গ্রাফিক্সে তৈরি করা; Source: Wikimedia Commons

শেষ পরিণতি

কর্তৃপক্ষের হাতে সময়ও খুব বেশি ছিল না, কেননা বিমানটি জনবসতি পূর্ণ এলাকার দিকে দ্রুতই এগিয়ে যাচ্ছিল। যা করার দ্রুতই করতে হতো। তবে তাদের সিদ্ধান্ত নেয়াকে সহজ করতেই কিনা বিমানটির জ্বালানি শেষ হয়ে যায়! বাম ইঞ্জিনের জ্বালানি শেষ হতেই ভারসাম্য হারিয়ে বিমানটি অন্যদিকে যাওয়া শুরু করে। মাত্র ১০ মিনিট পর বন্ধ হয়ে যায় দ্বিতীয় ইঞ্জিনটিও। দ্বিতীয় ইঞ্জিন বন্ধ হবার মাত্র চার মিনিট পরেই গ্রীসের একটি পাহাড়ে ১২১ জন যাত্রী নিয়ে আছড়ে পরে বিমানটি। জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি কাউকেই, মারা যান ১২১ জন যাত্রীর সকলেই।

ফ্লাইট ৫২২ এর ফ্লাইট পাথ; Source: Wikimedia Commons

ধ্বংসাবশেষ; Source: BBC

তদন্ত

প্রাথমিকভাবে সন্ত্রাসী হামলার কথা ভাবা হলেও দ্রুতই তথ্য-প্রমাণ ভিন্ন কথা বলা শুরু করে। পাইলটসহ সকল যাত্রীকেই পাওয়া যায় অক্সিজেন মাস্ক পরা অবস্থায় কিংবা সিটের সামনে অক্সিজেন মাস্ক ঝুলন্ত অবস্থায়। এরকম অক্সিজেন মাস্ক পাওয়া তখনই সম্ভব যখন বিমানের কেবিনে অক্সিজেন কমে যায়। কিন্তু সমস্যা হলো মাত্র ১৫ মিনিট অক্সিজেন থাকে প্রতিটি মাস্কে। তাই পাইলটদের যা করার দ্রুতই করতে হতো। কিন্তু বাস্তবে পাইলটরা কিছু তো করেননি এবং তাদের সাথে যোগাযোগ পর্যন্ত করা সম্ভব হয়নি!

স্বাভাবিকভাবেই প্রথমেই পাইলটদের দোষারোপ শুরু হয়। তবে তদন্তের ভার নেয়া গ্রীক এয়ার সেফটি এবং ইনভেস্টিগেশন বোর্ড বিস্তারিত তদন্তের আগে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। খুব দ্রুতই বিমানের ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার হয় যাতে থাকে ফ্লাইড ডাটা রেকর্ডার (এফডিআর) এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর)। এফডিআরের সাহায্যে বিমানের প্রতি মুহূর্তের যান্ত্রিক তথ্য পাওয়া যায় আর সিভিআর থেকে পাওয়া যায় ককপিটের কথোপকথন। এই দুটি মিলিয়ে দাঁড় করানো হয় সম্ভাব্য পরিস্থিতি। গ্রীসে ব্ল্যাক বক্স পরীক্ষা করার যন্ত্র না থাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয় ফ্রান্সে।

ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার; Source: How Stuff Works

ব্ল্যাকবক্স পরীক্ষা করে সহজেই বোঝা যায় কীভাবে ঘটেছিল সেই ভুতূড়ে ঘটনাটি। এফডিআর থেকে পাওয়া তথ্য থেকে দেখা যায় বিমানের প্রেশারাইজেশন ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় বিমানটি কৃত্রিম অক্সিজেনের ব্যবস্থা না করেই আকাশে উড়াল দিয়েছিল। যত উপরের দিকে উঠছিল, বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ তত কমছিল। সিভিআর থেকে শোনা যায়, বাতাসের চাপ ঠিক না থাকায় ১০ হাজার ফুট উপরে ওঠার পরেই বিমানের কম্পিউটার পাইলটদের সতর্কও করেছিল। এরপর ২০ হাজারে একবার এবং ৩০ হাজারে আরও একবার বেজে উঠে সতর্কবার্তা। কিন্তু অভিজ্ঞ পাইলটরা সেই সতর্কবার্তাগুলোকে অন্য সতর্কবার্তা মনে করে ভুল করেছিলেন প্রতিবারই!

অক্সিজেনের অভাব হলে মানুষ হাইপোক্সিয়ায় ভুগতে শুরু করে। হাইপোক্সিয়া হলে মানুষ সাধারণ কর্মক্ষমতা খুব দ্রুত হারাতে থাকে। আর অধিক উচ্চতায় হাইপোক্সিয়া আরো দ্রুত চেপে ধরে মানুষকে, সামান্য ১০ এর ঘরের নামতাও হিসেব করতে পারে না মানুষ! আস্তে আস্তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে এরপর। দশ হাজার ফুট উপরে উঠার পর থেকেই অক্সিজেন কমতে থাকে, হাইপোক্সিয়া শুরু হয় পাইলটদের। কিন্তু তারা নিজেরাও বুঝতে পারেননি সেটা। ২০ হাজার ফুট উপরে উঠার পর ২৫% অক্সিজেন কমে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত যখন তারা ৩৪ হাজার ফুট উপরে ওঠেন, তখন খুব সম্ভবত দুইজন পাইলটই হাইপোক্সিয়ার শিকার হয়ে মারা গিয়েছিলেন। আর মারা যাবার আগে হাইপোক্সিয়ার কারণে ঠিকমতো কোনো সিদ্ধান্তও নিতে পারেননি।

অক্সিজেন কমে গেলে এভাবেই অক্সিজেন মাস্ক নেমে আসে বিমানে; Source: ABC.net

কিন্তু এই থিওরিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে পাইলটের ককপিটে পাওয়া মৃতদেহ। ৯/১১ এর পর থেকে নিরাপত্তার জন্য ককপিটের দরজা লাগানো হয় বিশেষ কোড দিয়ে যেন কেউ ঢুকতে না পারে। কিন্তু ককপিটে লাশ পাওয়া যায় তিনটি এবং ক্যাপ্টেনের লাশ পাওয়া যায় ককপিটের দরজার কাছে। দুই পাইলট যদি আগেই মারা গিয়ে থাকেন, তাহলে এফ-১৬ এর পাইলটরা কাকে দেখেছিল বিমানটি চালাতে? হাইপোক্সিয়া তো সবাইকেই কাবু করেছিল, তাহলে ককপিটে কে ছিল সেদিন? এই ভুতূড়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে আধুনিক বিজ্ঞান।

ককপিটের তিনটি লাশের একটি কো-পাইলটের শনাক্ত করা গেলেও বাকি দু’টি পুড়ে যাওয়ায় শনাক্ত করা যায়নি সহজে। সেগুলো শনাক্তের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করে তাদের পরিচয় বের করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় লাশ দু’টি ছিল ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট আন্দ্রেয়াস প্রোড্রোমু এবং তার প্রেমিকা হ্যারিসের, যিনিও সেদিন বিমানে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট হিসেবেই ছিলেন। ছোট থেকেই বিমানের প্রতি আগ্রহ ছিল আন্দ্রেয়াসের। ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট হবার পাশাপাশি বিমান চালানোও শিখছিলেন তিনি। সেদিন যখন সবাই মারা গিয়েছে কিংবা মারা যাবে অবস্থায়, তখন আন্দ্রেয়াস আর তার প্রেমিকা ককপিটে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা কীভাবে ঢুকেছিলেন, এই প্রশ্নের জবাব হয়তো কোনোদিনও পাওয়া যাবে না।

বিমান চালানো শেখা আন্দ্রেয়াস তার শেষ চেষ্টা করেছিলেন বিমানটি বাঁচানোর। দুই পাইলট মারা যাবার পর এফ-১৬ এর পাইলটরা তাকেই দেখেছিলেন কন্ট্রোল প্যানেল নিয়ে যুদ্ধ করতে। মূল অক্সিজেন মাস্কের অক্সিজেন শেষ হবার পর বিমানের পোর্টেবল অক্সিজেন মাস্ক নিয়ে তিনি শেষবারের মতো চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার চেষ্টা বিফলে যায় বিমানের জ্বালানি শেষ হয়ে যাবার কারণে। সেই সাথে উত্তর মেলে ভুতূড়ে প্রশ্নের, সেদিন শেষ মুহূর্তে কোনো ভূত নয়, বরং রক্ত-মাংসের একজন মানুষই চালাচ্ছিলেন বিমানটি।

ফুটনোট:

১. Final Report on Helios Flight 522 (2006). Hellenic Air Accident Investigation and Aviation Safety Board (AAIASB)

২. Air Crash Investigation: National Geographic Channel (Season 2 Episode 6)

ফিচার ইমেজ- Pinterest

Related Articles