Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

খাইবার পাখতুনখোয়ার পাকিস্তানে যোগদান: স্বেচ্ছায় নাকি কংগ্রেসের অবহেলায়?

বর্তমানে ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ইমরান খানের সুবাদে অনেকে খাইবার পাখতুনখোয়াকে চেনেন। এ প্রদেশে তার তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির সরকারই ক্ষমতায়। আজ তারা পাকিস্তানের হিস্যা, অথচ ৪৭ এর দেশবিভাগের সময় দু-একটা ব্যাপার হেরফের হলেই হয়ত তা সম্ভব হত না! কংগ্রেস নেতাদের প্রতি তাদের মহান নেতা বাচা খানের শেষ উক্তি ছিলো-

আপনারা আমাদের নেকড়ের মুখে ছুঁড়ে মারলেন!

কী এমন ঘটেছিল প্রদেশটির সাথে? কী করেছিল কংগ্রেস? কেনই বা নেতা বাচা খানের অনিচ্ছা সত্ত্বেও খাইবার পাখতুনখোয়া যোগ দিয়েছিল পাকিস্তানে? তার উত্তর খোঁজা হবে এখানে।

আজকের খাইবার পাখতুনখোয়া বলতে আমরা যে অঞ্চল চিনি, তা ছিল সিন্ধুর পশ্চিম অববাহিকার হিন্দুকুশ পর্বতমালা ঘেঁষা পশতুভাষীদের বিস্তীর্ণ ভূমি। এই পশতুভাষীদের পশতুন, পাখতুন বা পাঠান বলা হয়।

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ থেকে প্রথম শতকে অঞ্চলটি ছিল বৈদিক গন্ধরণ সভ্যতার সূতিকাগার। পালাক্রমে সেখানে শাসন করেছেন আলেকজান্ডার, মৌর্য, মাহমুদ গজনি, চেঙ্গিস খান ও মোঘলরা। ১৮ শতকে পাঞ্জাবি ও পাখতুনদের এলাকাগুলো ছিল শিখ রাজাদের দখলে। ১৮৪৯ সালে পাঞ্জাব ও ১৮৭৮-৮০’র যুদ্ধে আফগানিস্তান দখল করে নেয় ব্রিটিশরা। আফগানিস্তানের পাখতুন এলাকা আর আজকের খাইবার পাখতুনখোয়া তখন ছিল মিলেমিশে একাকার।

ওয়াজিরিস্তানে অস্থিতিশীলতা ও দুই যুদ্ধের পর ১৮৯৩ সালে ব্রিটিশ-ভারত থেকে আফগানিস্তানকে আলাদা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২ নভেম্বর স্যার মর্টিমার ডুরান্ড ও আফগান আমির আবদুর রহমান খানের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে সাক্ষরিত হয় এক চুক্তি। সেই থেকে আফগানিস্তান ও ব্রিটিশ-ভারতের মধ্যকার বিভাজনরেখার নাম- ডুরান্ড লাইন।

এই এলাকায় পূর্বে মূলত বাস করত পাখতুন ও পাঞ্জাবিরা। কিন্তু এই ডুরান্ড লাইনের বিভাজন নৃতাত্ত্বিক উপায়ে টানা হয়নি। সিন্ধু নদের অববাহিকা ও হিন্দুকুশ পর্বতমালার অবস্থানের ভিত্তিতে হয়েছিল। ফলে পাখতুন অধ্যুষিত পেশোয়ার, অ্যাবোটাবাদ, সোয়াত উপত্যকা ইত্যাদি রয়ে যায় ব্রিটিশ-ভারতে এবং পাখতুনদের বাকি এলাকা চলে যায় আফগানিস্তানে।

Imge Source: Young Diplomt

পাখতুনিস্তানের ব্রিটিশ-ভারতীয় অংশটির নাম দেয়া হলো উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সংক্ষেপে NWFP.  আফগানিস্তানের পাখতুনরা এই অংশটিকে ফিরে পেতে চাইত, এমনকি এপারের অনেক পাখতুনও চাইত আফগানিস্তানে যোগ দিতে। এতদসত্ত্বেও NWFP-র বেশিরভাগ মানুষ বৃহত্তর ভারতীয় জাতীয়তাবাদকেই গ্রহণ করেছিল। ১৯৩৭ সালে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার পায় প্রদেশটি।

পাখতুনরা ছিল লড়াকু-বিদ্রোহী জাত। উত্তর-পশ্চিম ব্রিটিশ-ভারতে পাঞ্জাবি আধিপত্যবাদকে তারা দেখত ঘৃণার চোখে। সাংস্কৃতিকভাবে তারা ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এমনকি আজকের তালেবান অধ্যুষিত এই প্রদেশটিই ব্রিটিশ আমলে সবচেয়ে ধর্মনিরপেক্ষ প্রদেশের একটি ছিল। এসব কারণে সুন্নি-মুসলিম অধ্যুষিত প্রদেশ হয়েও ভারতবর্ষের হিন্দু-মুসলিম মেরুকরণে এখানকার মানুষের সমর্থন ছিল না। খিলাফত, হিজরত ইত্যাদি আন্দোলনেও সক্রিয় ছিল এই প্রদেশের মানুষ।

তাদের নেতা ছিলেন খান আবদুল গাফফার খান ওরফে বাচা খান। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে ভারত যখন উত্তাল, তখন তিনি ও তার ভাই ড. আবদুল জব্বার খান তাদের সাথীদের নিয়ে ‘খুদায়ি খিদমতগার‘ নামে এক অহিংস আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। গান্ধীর ‘সত্যাগ্রহ’ দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিল তা।

খুদায়ি খিদমতগার অরাজনৈতিক আন্দোলন হলেও বাচা খান রাজনৈতিক আদর্শের দিক থেকে ছিলেন কংগ্রেসপন্থী। ভারতবর্ষের অল্প কিছু নেতার মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন, যিনি জাতীয়-রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠতে পেরেছিলেন। কথিত আছে, খুদায়ি খিদমতগারই নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসকে আফগানিস্তান সীমান্ত হয়ে জার্মানি ও সর্বশেষ জাপানে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছিল। 

অহিংস আন্দোলনের বিপুলসংখ্যক কর্মীর সাথে বাচা খান (সাদা কাবুলি); Image Source: The Friday Times

এই বাচা খান যখন দেখলেন, তার সাথে আলোচনা না করেই কংগ্রেস-মুসলিম লীগ মিলে ভারতভাগের ছক কষে ফেলেছে, মর্মাহত হলেন তিনি। মনেপ্রাণে ভারতের অখণ্ডতা কামনা করতেন। এও জানতেন যে, ধর্মের আবেগকে পুঁজি করে সৃষ্ট বিভাজনকে তিনি বা তার সেকুলার খুদায়ি খিদমতগার কখনোই ঠেকাতে পারবে না। কিন্তু তিনিও অনড় ছিলেন, পাকিস্তানে যোগ দেবেন না। এজন্য তিনি চেয়েছিলেন প্রদেশটিকে নিয়ে পৃথক স্বাধীন দেশ ‘পাখতুনিস্তান’ গড়া হোক।

পাকিস্তানের মুসলিম লীগ যে এই দাবি মানবে না, তা ছিল স্বাভাবিক। তবে এর বাইরেও ছিল আরেকটি ব্যতিক্রমী কারণ। ইগো সমস্যা।

কংগ্রেসের ঐ অর্থে আপত্তি ছিল না NWFP-কে পাকিস্তানে দিয়ে দিতে। ফলে খান ভ্রাতৃদ্বয় যদি নিজ থেকেই পাকিস্তানে যোগ দিতে চাইতেন, তবে প্রদেশ অন্তর্ভূক্তির কৃতিত্ব মুসলিম লীগ পেতো না। তাই মুসলিম লীগ চেয়েছিল, তাদের দাবির প্রেক্ষিতে গণভোট হোক, NWFP পাকিস্তানে যোগ দিক এবং পাকিস্তানের গঠনের সবটুকু কৃতিত্ব তারাই একচ্ছত্রভাবে পাক!

গান্ধীর সাথে বাচা খান; Image Source: afghanistn times

NWFP এর প্রাদেশিক বিধানসভায় ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। হ্যাঁ, আফগানিস্তান সীমান্তলাগোয়া মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশে কংগ্রেস। ওদিকে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই নেতা বাচা খান ও তার ভাই ড. খানও পাকিস্তানের বিপক্ষশক্তি। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে ৩ জুন লর্ড মাউন্টব্যাটেন জিন্নাহ ও নেহরুর সম্মতিতে সিলেটের আসামের সঙ্গে NWFP-তেও গণভোটের সিদ্ধান্ত নিলেন। তবে গণভোটে রাখা হলো কেবল দুইটি পছন্দ- হয় ভারত, নয় পাকিস্তান; স্বাধীন পাখতুনিস্তানের কোনো সুযোগ নেই।

নির্বাচিত প্রাদেশিক মন্ত্রিসভা থাকার পরও প্রদেশের ব্যাপারে গণভোট নেওয়াই ছিল অযৌক্তিক। তাই গণভোটে রাজি হয়ে খান ভ্রাতৃদ্বয়কে হতবাক করল কংগ্রেস। শুধু তা-ই নয়। নেহরু জানতেন, তাদের মিত্র খান ভ্রাতৃদ্বয়ের ও প্রাদেশিক কংগ্রেসের দাবিই হল গণভোটে পাখতুনিস্তান চাইবার সুযোগও থাকুক। এ সত্ত্বেও নেহরু গণভোটে কেবল দু’টো অপশন রাখায় সমর্থন দিয়েছিলেন।  

২১ জুন বান্নুতে বাচা খান প্রাদেশিক পরিষদের সকল সদস্য, মির্জা আলি খান ও অন্যান্য আদিবাসী নেতাদের নিয়ে পাখতুনিস্তানের দাবিতে ঐক্যমতে আসেন এবং বান্নু চুক্তি সাক্ষরিত হয়। এরপর দিল্লিতে দফায় দফায় মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের নেতাদের সাথে সংলাপে বসেন তিনি। মুসলিম লীগ বান্নু চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে। ভেবেছিলেন কংগ্রেস অন্তত একটু দয়া করবে, দাম দেবে তার এতদিনের আনুগত্যের। কিন্তু মহাত্মা গান্ধী ছাড়া নেহরু, প্যাটেলসহ কোনো নেতাই চাননি পাখতুনিস্তান হোক।  

তাদের যুক্তি ছিল, পাখতুনিস্তানে সমর্থন দিতে গেলে দক্ষিণ ভারতের ত্রিবাঙ্কুরও বেঁকে বসবে স্বাধীনতার দাবিতে; তাই এক স্বাধীন দেশ বানাতে সম্মতি দিতে গিয়ে নিজ দেশে বিপদ ডেকে আনা হবে আত্মঘাতী কাজ। অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তান কায়দায় বিচ্ছিন্ন একটা ভূখণ্ডকে নিজেদের অংশ বানানোর ঝামেলায় যেতেও রাজি ছিল না কংগ্রেস। তখন বড় আক্ষেপভরা কণ্ঠে কংগ্রেসের সেই নেতাদের বাচা খান বলেছিলেন,

“আপনারা আমাদের নেকড়ের মুখে ছুঁড়ে মারলেন!”

বাচা খান ও জওহরলাল নেহরু; Image Ssource: The Pashtun Times

২৭ জুন বাচা খান তথা খুদায়ি খিদমতগার গণভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। তাদের যুক্তি ছিল, মাউন্টব্যাটেন যখন এতটাই উদার যে, আমাদের অধিকার দিচ্ছেন নিজস্ব দেশ বেছে নেবার, তখন সেই নীতিতেই তিনি কেন গণভোটের অপশনে পাখতুনিস্তানকে রাখছেন না?

কিন্তু লাটসাহেব ছিলেন অনড়। ব্রিটিশরা চায়নি আফগানিস্তান ও রাশিয়ার মদদপুষ্ট পাখতুন জাতীয়তাবাদকে উসকে দিয়ে এমন দেশের জন্ম দিতে, যারা দক্ষিণ এশিয়ায় রাশিয়ান বলয়কে শক্তিশালী করবে।

৪ জুলাই এক টেলিগ্রাম বিবৃতিতে আসে এক আকস্মিক ঘোষণা। ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছে নেহরুর কংগ্রেস। প্রদেশের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারত প্রাদেশিক পরিষদই, এর বদলে গণভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল নেহরুর সম্মতিতেই। এই নেহরুই কিনা বলছেন, ভোটেও অংশ নেব না!

বিবৃতি অনুযায়ী ‘ছোট ও দুর্বল’ একটি প্রদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে দেখতে চাননি নেহরু। কিন্তু নির্বাচনী মাঠে থেকে NWFP-কে ভারতে রাখার তৎপরতাও দেখালেন না তিনি।

এই গণভোটের গোড়াতেই ছিল গলদ। বিশ্বের নানা দেশ মিলিয়ে পাখতুন বা পাঠানরা সংখ্যায় প্রায় ৫ কোটি। এদের একটা বিশাল অংশকেই উপজাতি গণ্য করা হয়, কেননা রাজনৈতিকভাবে তারা পরিবার বা গোত্রভেদে পরিচালিত হয়। সে অনুযায়ী তারাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় উপজাতি। তৎকালীন NWFP-তে পঁয়ত্রিশ লাখ পাখতুনের মধ্যে সেই সংখ্যাগরিষ্ঠ উপজাতিদেরই বাদ দিয়ে মাত্র ৬ লাখকে ভোটাধিকার দেয়া হয়। প্রদেশটির সোয়াত উপত্যকা, দির, আম্ব ও চিত্রলের কাউকে দেয়া হয়নি ভোটাধিকার।

নির্বাচনের আগেই জওহরলাল নেহরু প্রদেশটির মুসলিম লীগপন্থী গভর্নর ওলাফ ক্যারোরের অপসারণের জোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন, সঙ্গী ছিলেন খান ভ্রাতৃদ্বয়। এর প্রেক্ষিতেই ক্যারোর অপসারিত হন, দায়িত্বে আসেন স্যার লব রোকহার্ট। নির্বাচন আয়োজনের ভার পড়ে তারই কাঁধে। নির্বাচনী মাঠে মুসলিম লীগ ছিল অতি-সক্রিয়। আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পর্যন্ত কর্মী ভাড়া করে আনা হয়েছিল প্রদেশটিতে প্রচারণার জন্য। এমন প্রচারণাও চালানো হলো, “যারা মুসলিম লীগে ভোট দেবে না তারা কাফের!”

অবশেষে যা হবার তা-ই হলো। ৫১ ভাগ ভোটারের উপস্থিতিতে ২,৮৯,২৪৪ ভোট পড়ল পাকিস্তানের পক্ষে, আর মাত্র ২,৮৭৪ ভোট পড়লো ভারতের পক্ষে। ব্যস, NWFP-পাকিস্তানের প্রদেশ হল।

গণভোটের পরদিন ডন পত্রিকার উচ্ছ্বসিত শিরোনাম; Image Source: Picbear

দেশভাগের পর খিদমতগার কংগ্রেসের সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে, তেরঙ্গার বদলে আনে লাল দলীয় পতাকা। ওদিকে প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ড. খান (বাচা খানের ভাই)-কে ছাঁটাই করে কাইয়ুম খানকে গদিতে বসান জিন্নাহ। পরের বছর ২ ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের প্রথম অধিবেশনেই বাচা খান, জিন্নাহ ও পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে নেন। এই বাচা খানই ১৯৪৮ সালের ৮ মে প্রতিষ্ঠা করেন পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় বিরোধী দল, পাকিস্তান আজাদ পার্টি।

এরপর থেকে ভেঙে ভেঙে জেলেই অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন ‘ফ্রন্টিয়ার্স গান্ধী’ খ্যাত এই নেতা। সময়ের হিসেবে মোট ২৭ বছর। ১৯৮২ সালের বিখ্যাত ‘গান্ধী’ সিনেমায় আছে বাচা খানের চরিত্রও, অভিনয় করেছেন দিলশের সিং। ১৯৮৮ সালে ৯৮ বছর বয়সে মারা যান তিনি। ২০১০ সালে প্রদেশটির নাম বদলে রাখা হয় খাইবার পাখতুনখোয়া।

খাইবার পাখতুনখোয়ার বিখ্যাত সাইফুল মুলুক লেক; Image Source: Monthly Brands

গণভোটের আগে দিল্লিস্থ মার্কিন দূতাবাসের হেনরি গ্রিডি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ও NWFP গভর্নর লব রোকহার্ট মাউন্টব্যাটেনকে গোপন প্রতিবেদনে জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের পক্ষেই রায় আসতে যাচ্ছে। ওদিকে কংগ্রেসের সভায় ফ্রন্টিয়ার কংগ্রেসের নেতারাও একরকম মেনেই নিয়েছিলেন যে, নির্বাচন নিরপেক্ষ হলেও হয়ত তারা জিততে পারবে না। সে হিসেবে হয়ত পাকিস্তানই ছিল খাইবার পাখতুনখোয়ার ভাগ্যে। কিন্তু এও ভুলে গেলে চলবে না যে, নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদ থাকার পরও গণভোটে সম্মত হয়ে জনমতকে পাশ কাটানোর সুযোগ কংগ্রেসই তৈরি করে। এও ভুলে গেলে চলবে না যে, গণভোটে অংশ না নিয়ে অখণ্ড ভারতপন্থী পাখতুনদেরও অকুল পাথারে ফেলে দেয় কংগ্রেসই।

পাঠানরা আজ পাকিস্তানের রাষ্ট্রকাঠামোর উল্লেখযোগ্য অংশ। সীমান্ত এলাকায় আফগানিস্তান ও রাশিয়ার প্রভাবে কিছুটা বিচ্ছিন্নতাবাদ থাকলেও সামগ্রিক বিবেচনায় তা প্রবল নয় মোটেই। বাচা খান সমাধিস্থ হয়েছিলেন আফগানিস্তানের জালালাবাদে। পাঠানদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাও যেন সেই সাথে পাড়ি জমিয়েছিল আফগানিস্তানে। যে কারণে বর্তমানে খাইবার পাখতুনখোয়ার চেয়ে আফগান পাঠানরাই বেশি উৎসাহী দুই প্রান্তের পাঠানদের মিলে যাবার ব্যাপারে, কাবুলের এককালের অংশ পেশোয়ারকে ফিরে পাবার ব্যাপারে। বেলায় বেলায় কম জল তো গড়ায়নি।

Featured Image from: deepaknatarajan.com

Related Articles