Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধান থেকে শুরু করে আজকের ‘উবার’

নিজস্ব গাড়ি নেই এমন যে কারো জন্য কর্মব্যস্ত শহরগুলোতে ভ্রমণের কাজটি বেশ কষ্টকর। স্বস্তিদায়ক ভ্রমণ, ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনো, কিংবা গোপনীয়তার ব্যাপারটি চিন্তা করলে গণপরিবহনগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনুপযুক্ত। আর চাইলেই গাড়ি পাওয়াটা যে কতটা দুষ্কর, তা শুধু জরুরি প্রয়োজনগুলোতেই অনুভব করা যায়। অবশ্য, এ ধরনের অবস্থায় বড় শহরগুলোতে ট্যাক্সি-ক্যাব ব্যাপকভাবে প্রচলিত একটি সমাধান।

এরপরেও পুরো ব্যাপারটির উপর যাত্রীদের আহামরি কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে; কেননা, যতক্ষণ না একটি খালি ট্যাক্সি দৃষ্টিগোচর হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত যাত্রীদের অপেক্ষা করা ছাড়া তেমন কোনো উপায় থাকে না। তাছাড়া, সেই খালি ট্যাক্সিটি নির্ধারিত গন্তব্যে যাবে কি না, তা নিয়েও বেশ অনিশ্চয়তায় ভুগতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছতে হবে, এমন যাত্রীদের জন্য যা বেশ দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থাই বলতে হয়। আর ঠিক এই সকল সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টাই মূলত উবারকে একটি পরিপূর্ণ ব্যবসায়িক মডেলে রূপান্তরিত করেছে, দাঁড় করিয়েছে প্রায় বাহাত্তর বিলিয়ন ডলারের বিশাল সাম্রাজ্যে।

ফ্ল্যাশব্যাক

কানাডিয়ান উদ্যোক্তা গ্যারেট ক্যাম্প সবে তার প্রথম কোম্পানি ডিসকভারি ইঞ্জিন ‘স্টাম্বলআপন’ ওয়েবসাইটটি পঁচাত্তর মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ইবে’র কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। অবসরটা উপভোগ করার অভিপ্রায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর পথে চলছিল তার নৈশ প্রমোদ।

যে দৃশ্যটি ক্যাম্পকে উবারের মডেলটি তৈরি করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল; Screenshot from Casino Royale

সাউথ পার্কের পাশে অবস্থিত নিজের অ্যাপার্টমেন্টে বসে একদিন তিনি ২০০৬ সালে মুক্তি পাওয়া জেমস বন্ড চরিত্রে ড্যানিয়েল ক্রেগের প্রথম মুভি ‘ক্যাসিনো রয়েল’ দেখছিলেন। সে সময়ই মুভির নির্দিষ্ট একটি দৃশ্য তার চিন্তা জগতে ঝড় তুলতে শুরু করে। ঐ দৃশ্যে জেমস বন্ড তার সিলভার ফোর্ড মনডিওতে করে বাহামাস হয়ে প্রতিপক্ষ ল্যী শেফরীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে ছুটছিল। ছুটতে ছুটতেই সে তার সনি এরিকসন ফোনের স্কিনে তাকায়, যেখানে একটি গ্রাফিক্যাল আইকন বন্ডের বর্তমান অবস্থানের সাথে সাথে গন্তব্যও নির্দেশ করে এবং গাড়িটির অবস্থানের যে পরিবর্তন হচ্ছে, তা-ও দেখায়। বর্তমানে এটি হয়তো বেশ প্রচলিত একটি ব্যাপার, এমনকি অগমেন্টেড রিয়েলিটির কল্যাণে আরো উন্নত। কিন্তু সেসময় কম্পিউটার প্রোগ্রামার, উদ্ভাবনী মস্তিষ্কের ক্যাম্পের জন্য এটি ছিল এমন একটি চমকপ্রদ আইডিয়া, যা উবারে ব্যবহারের আগপর্যন্ত তার মস্তিষ্কে আবদ্ধ হয়ে ছিল।

সবকিছুর শুরু হয়েছিল যেভাবে

ইবে’র কাছে কোম্পানিটি বিক্রি করে দেওয়ার পরেও ক্যাম্প স্টাম্বলআপনে সিইও হিসেবে বহাল থাকেন। ঠিক ঐ সময়ই অফিসে যাতায়াতকালে সান ফ্রান্সিসকোর দুর্দশাগ্রস্ত ট্যাক্সি ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা ক্যাম্পের লাইফস্টাইলের সাথে জড়িয়ে যায়। ২০১৭ সালের মে মাসের দিকে ক্যাম্পের কোম্পানিটি ইবে’র হস্তগত হওয়ার পরপরেই তিনি একটি মার্সিডিজ-বেঞ্জ সি-ক্লাস স্পোর্টস কার কিনলেও রাস্তার দুরবস্থা কারণে সেটি নিয়ে তেমন একটা বের হতো না। তাই ঘোরাফেরা থেকে শুরু করে প্রয়োজনের ভ্রমণগুলোর জন্য ট্যাক্সির উপর নির্ভর করতে হতো। কিন্তু, সমস্যাটা শুরু হয় যখন প্রয়োজনের সময় ট্যাক্সির সাক্ষাৎ পাওয়া যাচ্ছিলো না।

গ্যারেট ক্যাম্প; Photo by Daniel Zuchnik

সমস্যার সমাধান হিসেবে প্রথমাবস্থায় তিনি কয়েকজন ট্যাক্সি ড্রাইভারের নাম্বার সংগ্রহ করে রাখতেন এবং কোথাও যাওয়ার জন্য বের হওয়ার ঘণ্টাখানেক পূর্বে তাদের ফোন করে ডেকে আনতেন। কিন্তু এই পদ্ধতি আরো বেশি সময় এবং ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। প্রথমত, ঐ সকল ট্যাক্সি ড্রাইভারদের পৌঁছতে পৌঁছতে আরো অনেক খালি ট্যাক্সি পাশ কাটিয়ে চলে যেত, এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি তারা না আসতো, তাহলে পুনরায় তাদের ফোন করতে হতো। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই দেখা যেত ঐসব ট্যাক্সি ড্রাইভাররা তার কথা ভুলেই গেছে।

জিপসি-ক্যাব সমাধান

সে সময়ই ক্যাম্প টিভি প্রডিউসার মেলোডি ক্লোজকির প্রেমে পড়েন। ব্যাপারটা বেশ অদ্ভুত হলেও সত্য যে, তখনই তিনি ট্যাক্সির বিকল্প হিসেবে নতুন একটি সমাধান খুঁজে পান।

মেলোডির বাসা স্পেসিফিক হাইটসে হওয়ায় যানবাহন সমস্যার কারণে তাদের রাত্রিকালীন সাক্ষাৎ প্রায় হতো না বললেই চলে। ক্যাম্প তখন নতুন সমাধান হিসেবে জিপসিদের ক্যাবে চলাচল শুরু করে।

সাধারণত জিপসিরা নাম্বার প্লেটহীন কালো সেডান নিয়ে ঘোরাফেরা করতো এবং রাতে সম্ভাব্য যাত্রীদের উদ্দেশ্যে হেডলাইট জ্বালিয়ে নিজেদের ক্যাবগুলো ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানাত। কিন্তু অধিকাংশ যাত্রীই জিপসিদের কাছ থেকে দূরে থাকতো, কেননা নাম্বার প্লেটহীন গাড়িগুলোতে যাতায়াত করাটা তাদের কাছে অনিরাপদ মনে হতো। এছাড়াও, ক্যাবগুলোতে মিটার না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া চেয়ে বসতে পারে, এই ধারণা ছিল জিপসিদের ক্যাব এড়িয়ে চলার আরেকটি কারণ। কিন্তু ক্যাম্প দেখলেন, অধিকাংশ ড্রাইভারই বেশ বন্ধুভাবাপন্ন। এর কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি ১০-১৫ জন জিপসি ড্রাইভারের নাম্বার সংগ্রহ করে ফেলেন এবং প্রয়োজনে নিজের পছন্দের ড্রাইভারদের ফোন দিয়ে প্রাথমিকভাবে যাতায়াতের সমস্যার একটি ভালো সমাধানে পৌঁছান।

২০০৮ সালে ‘দ্য নেক্সট ওয়েব’ সম্মেলনে নিজের কোম্পানি ‘স্টাম্বলআপন’ নিয়ে কথা বলছেন গ্যারেট ক্যাম্প; Photo by The Next Web Conference

তবে, তখনো ক্যাম্পের উদ্ভাবনী মস্তিষ্ক আরো সহজ এবং কার্যকরী কোনো সমাধান খুঁজছিলো। স্পষ্টতই তার চোখে পড়েছিল যে, সমস্যাটি শুধু তার নয়। সান ফ্রান্সিস্কো সহ পুরো পৃথিবীব্যাপী একই সমস্যা কম-বেশি সব জায়গাতেই রয়েছে। আর সেই সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য মডেলটিই যে ক্যাম্পের চিন্তাজগত জুড়ে সারা সময় বিচরণ করতো, তার প্রমাণ পাওয়া যায় কিছুদিন পরেই।

দ্য উবার (Über) স্টোরি

একদিন সন্ধ্যায় ক্যাম্প তার বন্ধুদের সাথে রাতে ঘুরে বেড়ানোর অভিপ্রায়ে শহরের রেন্ট-এ-কার থেকে একজন ড্রাইভার সহ গাড়ি ভাড়া নেন। রাতভর শহরব্যাপী ঘুরে বেড়িয়ে প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসায় পৌঁছে দিয়ে প্রচণ্ড মাথাব্যথা নিয়ে নিজের বাড়ি পৌঁছতে পৌঁছতে হঠাৎ করেই ক্যাসিনো রয়েলের জেমস বন্ডের ফোন-স্ক্রিনের দৃশ্যটা মাথার ভেতরে টোকা মারতে থাকে। সেই সাথেই জন্ম নেয় এমন একটি আইডিয়ার, যেটি কিছুদিন পরেই সবার জন্য সবচাইতে উপযুক্ত সমাধানের সাথে বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক মডেলে পরিণত হতে যাচ্ছে।

ম্যাপে উবার ক্যাব; Image Source: flickr/ubercab

প্রাথমিকভাবে ক্যাম্প এমন একটি মডেল দাঁড় করান, যেখানে যাত্রীরা নিজের ফোনের ম্যাপে নির্দিষ্ট কিছু গাড়ির অবস্থান চিহ্নিত করতে পারবেন এবং চাহিদানুযায়ী সবচাইতে কাছের ড্রাইভারকে ম্যাসেজ করে যাতায়াত সেবা নিতে পারবেন। আইডিয়াটি আসার পরপরই পরিকল্পনা মোতাবেক নোটবুকে কোম্পানিটির নাম হিসেবে ইউবার (Über) শব্দটি ব্যবহার করেন। এমনকি, ২০০৮ সালের আগস্টের দিকে UberCab.com নামের একটি ডোমেনও রেজিস্টার করে ফেলেন, যেটি বেশ কিছুদিন যাবত কোম্পানিটির মূল নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল।

বাস্তবায়নের দিকে আরো এক ধাপ

ক্যাসিনো রয়েলে দেখা সেই অ্যাপ্লিকেশন মডেলটিকে কীভাবে প্রায়োগিক করে তুলবেন, তা নিয়ে তেমন ধারণা না থাকলেও, সেই বছর গ্রীষ্মে বের হওয়া আইফোনের অ্যাপ স্টোর সম্পর্কে ক্যাম্প অবগত ছিলেন। তিনি খুব ভালো করেই জানতেন যে, মাত্র এক বছর পূর্বে বাজারে আসা আইফোনে রয়েছে অ্যাক্সেলেরোমিটারের সুবিধা, যা স্মার্টফোনটিকে এত বেশি কার্যক্ষম করে তুলেছে যে, যদি ব্যবহারকারী জিপিএস অন করে নিজের অবস্থানের পরিবর্তন করে, তাহলে তা ম্যাপে দেখা দেখা যাবে। অর্থাৎ, এই সুবিধা ব্যবহার করে এমন একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা সম্ভব, যেটি দূরত্ব এবং মিনিটের হিসেবে ভাড়া কত হলো তা নির্ধারণ করতে পারবে।

প্রথমদিকে ক্যাম্প তার মডেলটি সান ফ্রান্সিস্কোতে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করতে চাইছিলেন। নিজের গাঁটের টাকা খরচ করে কিছু কালো মার্সিডিজ রাস্তায় ছাড়া এবং উপরোক্ত অ্যাপ্লিকেশনের মডেলটি ব্যবহার করে সেগুলো পরিচালনা করাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য। পরিকল্পনার প্রথম ধাপ হিসেবে, নভেম্বরের দিকে সীমিত দায়ের কোম্পানি হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ায় ‘UberCab’ এর রেজিস্ট্রেশন করা হয় এবং ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে পাঁচটি নতুন গাড়ি নিয়ে কোম্পানিটি শুরুর ঘোষণা দেয়।

‘উবারক্যাব’ অ্যাপ; Image Source: thecarconnection.com

ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়া উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক এবং উচ্চপদস্থ প্রযুক্তিবিদদের মিলনমেলা লে-ওয়েবে যোগদানের জন্য প্যারিসে যাওয়ার পূর্বে, ক্যাম্প নিউ ইয়র্কে থামেন এবং পুরনো মেক্সিকান বন্ধু অস্কার সালাযারের সাথে সাক্ষাৎ করেন। ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার অস্কার এবং ক্যাম্প একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। সেই সুবাদে ক্যাম্প তার পরিকল্পনাটি অস্কারকে শোনানোর সাথে সাথে আইওএস অ্যাপ্লিকেশনের জন্য তৈরি মক-আপটি দেখান। অস্কার জানান, তিনিও কানাডা, ফ্রান্স, এমনকি তার দেশ মেক্সিকোতে যাতায়াতের সময় একই সমস্যার সম্মুখীন হন। অস্কার আরো জানান, ক্যাম্পের আইডিয়াটি বিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে রূপ নিতে পারবে কি না, সে ব্যাপারে তার ধারণা না থাকলেও, আইডিয়াটি যে আসলেই বিলিয়ন ডলারের, তাতে সন্দেহ নেই।

পরিকল্পনানুযায়ী, উবারক্যাব অ্যাপ্লিকেশনটি প্রোটোটাইপ ডেভেলপমেন্টের কাজটি অস্কারকে দিয়ে ক্যাম্প প্যারিসের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান।

প্যারিস, বর্তমান উবারের ধারণাটির বীজ যেখানে প্রোথিত হয়েছিল

প্রত্যেকটি সফল কোম্পানির শুরু নিয়ে প্রচলিত জনশ্রুতিগুলো কোম্পানিটির দিকে ভোক্তাদের আগ্রহ জন্মাতে সাহায্য করে, সাধারণের মাঝে কোম্পানিটির কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি স্পষ্ট চিত্র ফুটিয়ে তোলে। এমনকি এর মাধ্যমে কোম্পানিটির সাথে সংযুক্ত ব্যক্তি এবং ঘটনাগুলোকে সামনে নিয়ে আসে এবং যে ভিত্তির উপর নির্ভর করে কোম্পানিটি আজ এ পর্যায়ে এসেছে, তা ফুটিয়ে তোলে। আর উবার নিয়ে জনশ্রুতিগুলোর মূল উৎস প্যারিসে।

সাপ্তাহিক প্রকাশনা ‘দ্য ইকোনোমিস্ট’ এর মতে, প্যারিসে অনুষ্ঠিত ‘লে-ওয়েব’ হচ্ছে এমন একটি ইভেন্ট, যেখানে প্রযুক্তি-বিপ্লবীরা ভবিষ্যতের নকশা তৈরি করে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের উবারের আইডিয়াটি লে-ওয়েবে উপস্থাপনের জন্য ক্যাম্প তার বান্ধবী মেলোডিকে সাথে নিয়ে প্যারিসে আসেন। সেখানে আরেক উদ্যোক্তা বন্ধু, Red Swoosh এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ট্রাভিস কালানিক তাদের সাথে যোগ দেন। কালানিকও কিছুদিন আগে তার ভিডিও স্ট্রিমিং কোম্পানিটি সতেরো মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে নতুন একটি আইডিয়া নিয়ে কাজ করছিলেন।

প্যারিসে উবারের দুই সহ-প্রতিষ্ঠাতা গ্যারেট ক্যাম্প এবং ট্রাভিস কালানিক (বাঁ থেকে); Photo By CNW Group/Uber Canada

প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে ক্যাম্প তার পুরো আইডিয়াটি বারবার কালানিককে শোনান এবং একসাথে কাজ করার জন্য প্ররোচিত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কালানিক সে সময় অনেকটা AirBnB’র মতো একটি আইডিয়া নিয়ে কাজ করছিলেন। তার মতে, শুধুমাত্র ফোনের বাটন প্রেস করে গাড়ি রাইডের ব্যাপারটি বেশ আকর্ষণীয়। তবে অন্য আরেকটি আইডিয়া নিয়ে কাজ করায় তিনি ক্যাম্পের সাথে পুরোপুরি জড়িত না হয়ে সহযোগিতা করে যাবার চিন্তা করছিলেন। কিন্তু, তখনও কালানিক জানতেন না, লে-ওয়েব সম্মেলনে যোগদান করার পূর্বেই তিনি পুরো ব্যাপারটির সাথে জড়িয়ে যাবেন এবং বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী যে কারণে উবার জনপ্রিয়, অর্থাৎ ‘যেকোনো মানুষ তাদের ব্যবহৃত গাড়ির মাধ্যমে রাইড শেয়ার করতে পারবে’ মডেলটি তার মাথা থেকেই আসবে।

একদিন রাতে ক্যাম্প, মেলোডি এবং কালানিক কিছু রেস্টুরেন্ট ও বারে প্রায় দুটো পর্যন্ত সময় কাটিয়ে হোটেলে ফেরার জন্য ক্যাবে উঠে বেশ উৎফুল্ল হয়েই কোনো একটা ব্যাপারে উচ্চস্বরে কথা বলছিল। অন্যদিকে ক্যাবের পেছনের সিটে বসে পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চি উচ্চতার মেলোডি তার হাই-হিল পরা পাগুলো আরামের জন্য সামনের দুই সিটের মাঝখানের তাকিয়ায় ঠেস দিয়ে রাখেন। সে সময় হঠাৎ করেই ক্যাব ড্রাইভার তাদের উদ্দেশ্য ফ্রেঞ্চে চিৎকার করে কিছু বলতে থাকে। মেলোডি অনুবাদ করে জানায়, এভাবে হইচই করলে এবং মেলোডির পাগুলো তাকিয়া থেকে না নামালে যেন এখনই ক্যাব থেকে নেমে যায়। ড্রাইভারের এ কথায় কালানিক বেশ খেপে যায় এবং ক্যাব থেকে সবাইকে নেমে যেতে বলে। এরপর ট্যাক্সিক্যাব না পেয়ে বেশ কিছুক্ষণ তুষারাবৃত প্যারিসের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাদের।

উবারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক সিইও ট্রাভিস কালানিক; Image By Danish Siddiqui/Reuters

পুরো ঘটনাটি কালানিককে নতুন করে ভাবতে সাহায্য করে। এই ক্যাব-সমস্যা যে শুধুমাত্র প্যারিস কিংবা সান ফ্রান্সিসকোতে না, বরং পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি দেশে রয়েছে, তিনিও তা খুব ভালো করেই অনুভব করতে পারছিলেন। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন ক্যাম্পের সাথে কাজ করবেন। তবে, কালানিক চাইছিলেন নিজেদের মার্সিডিজ রাস্তায় নামানোর মতো ব্যয়বহুল এবং সীমিত এলাকা নিয়ে কাজটি না করে, শুধুমাত্র অ্যাপ্লিকেশনটিকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে, যেটি অনেকটা AirBnB’র মতো। ক্যাম্পেরও আইডিয়াটি পছন্দ হয় এবং সেভাবেই তারা কাজ শুরু করে। কালানিকের আইডিয়াটিই উবারের মূল ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, উবারের এই বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হয়ে ওঠার পেছনেও তার আইডিয়াটিই কাজ করেছিল সবচাইতে বেশি।

উবারক্যাবের প্রাথমিক কার্যক্রম

২০০৯ এর শুরু দিকে স্টাম্বলআপন’ এর সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ক্যাম্প তার নিজস্ব সাইড প্রজেক্ট হিসেবে উবারক্যাবের কার্যক্রম শুরু করেন। ২০১০ সালে কোম্পানিটি মাত্র তিনটি গাড়ি নিয়ে নিউ ইয়র্কে তাদের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করে এবং মে মাসে একটি পরিপূর্ণ কোম্পানি হিসেবে সান ফ্রান্সিসকোতে যাত্রা শুরু করে। প্রথমাবস্থায় উবারক্যাব ‘উবারব্লাক’ নামের একটি সার্ভিসের আওতায় ছিল, যেখানে উবারক্যাবের কোনো মালিকানাধীন গাড়ি না থাকলেও ক্যাম্পের প্রথমাবস্থায় করা পরিকল্পনা অনুযায়ী নিবন্ধিত লাক্সারি ব্লাক-সেডানগুলো উবারক্যাব অ্যাপের মাধ্যমে যে কেউ ভাড়া নিতে পারতো।

আগস্টে উবারক্যাবের জেনারেল ম্যানেজার, রায়ান গ্রেবসকে চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ডিসেম্বরের দিকে তাকে সিইও পদে স্থানান্তরিত করে ট্রাভিস কালানিককে গুরুত্বপূর্ণ পদটিতে বসানো হয়। ২০১৭ সালে কালানিকের পদত্যাগের পর আমেরিকায় অবস্থানরত ইরানি বংশোদ্ভূত দারা খসরোশাহী উবারের সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন।

উবারের বর্তমান সিইও দারা খসরোশাহী; Photo by John Lee

গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য রাইড অর্ডারের এমন সহজ এবং নির্ঝঞ্ঝাট অ্যাপ্লিকেশন মাধ্যমটি অতি দ্রুত জনপ্রিয়তা পেতে শুরু থাকে। সে বছর অক্টোবরে উবারক্যাব ফার্স্ট রাউন্ড ক্যাপিটাল থেকে প্রথমবারের মতো ১.২৫ মিলিয়ন ডলারের তহবিল গ্রহণ করে।

উবারক্যাব থেকে উবারে স্থানান্তর

২০১০ এর অক্টোবরের দিকে সান ফ্রান্সিসকোর পৌর পরিবহন সংস্থা থেকে উবারক্যাবের নাম পরিবর্তনের জন্য একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, স্থানীয় গ্রাহকরা উবারক্যাবের পরিবর্তে শুধুমাত্র ‘ক্যাব’ শব্দটি ব্যবহার করছে, যা প্রচলিত ক্যাবের সাথে বেশ সাংঘর্ষিক। নোটিশ পাওয়ার সাথে সাথেই কোম্পানিটি উবারক্যাব থেকে উবার নামে স্থানান্তরিত হয় এবং ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপ থেকে Uber.com ডোমেইনটি কিনে নেয়।

লাভ, ক্ষতি এবং নতুনত্ব নিয়ে বেড়ে ওঠা

২০১১ সাল ছিল উবারের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ এক বছর। বছরের প্রথমদিকে কোম্পানিটি বেঞ্চমার্ক ক্যাপিটাল থেকে ১১ মিলিয়ন ডলারের তহবিল পায় এবং নিউ ইয়র্ক, সিয়াটল, বোস্টন, শিকাগো, ওয়াশিংটন ডিসি এবং প্যারিসে নিজেদের সাম্রাজ্য বৃদ্ধি করে। সে বছর ডিসেম্বরে লে-ওয়েব সম্মেলনে কালানিক জানান, উবার ‘সিরিজ বি’ ফান্ডিংয়ে মেনলো ভেঞ্চার, জেফ বেজোস এবং গোল্ডম্যান শ্যাস থেকে ৩৭ মিলিয়ন ডলার তহবিল উত্থাপিত করেছে। 

২০১০ সালের অক্টোবরে কোম্পানিটি উবারক্যাব থেকে উবারে স্থানান্তরিত হয়; Image Source: autoevolution.com

২০১২ সালে কোম্পানিটি নিজেদের সাম্রাজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং সাধারণের মাঝে সুলভ খরচের সেবা ছড়িয়ে দিতে বর্তমানে সবচাইতে প্রচলিত উবার সার্ভিস ‘উবারএক্স’ এর পরিচয় করিয়ে দেয়।

২০১৬ সালের জুনে সৌদি আরাবিয়ানস ওয়েলথ ফান্ড থেকে ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের বিশাল অংকের তহবিল গ্রহণ করে। তবে শীঘ্রই জানা যায়, উবার বড় অংকের লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে।

সাধারণত, উবার একটি ব্যক্তিগত কোম্পানি হওয়ায় জনসম্মুখে নিজেদের বাৎসরিক আয় সম্পর্কে কোনো বিবৃতি প্রকাশ করতে বাধ্য নয়। কিন্তু ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে ব্লুমবার্গের কাছে নিজেদের আর্থিক সংস্থানের অবস্থা তুলে ধরে তারা। কোম্পানিটি ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন ডলারের মতো ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এছাড়াও, নিয়মিত ক্ষতির পরিমাণও প্রায় ২.৮ বিলিয়ন ডলারের মতো। তবে, কোম্পানিটি আরো জানায়, উবারের নতুন সার্ভিস, ‘উবারপুল’ এর দিকে যত ঝুঁকছে, আয়ের পরিমাণও তত দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৬ সালের শেষের দিকে কোম্পানিটির আয়ের পরিমাণ বাড়ে প্রায় ৭৬ শতাংশ, যেখানে ক্ষতির পরিমাণ ৫ শতাংশ।

Lyft, মাঠে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী

২০১২ সালের জুনে লোগান গ্রিন এবং জন জিমারের হাত ধরে লিফটের কার্যক্রম শুরু হয় ঠিক সান ফ্রান্সিসকোতেই। মজার বিষয় হচ্ছে, লিফটও উবারের মতো একইভাবে সেবা দিয়ে থাকে। যেহেতু সেসময় উবার আহামরি বড় কোনো কোম্পানি হয়ে উঠতে পারেনি, তাই হুমকিটা ছিল বেশ স্পষ্ট। তবে বর্তমানে উবার যেখানে নিজেদের সাম্রাজ্য বাংলাদেশ সহ প্রায় পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছে, সেখানে লিফট এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্ভর; যদিও প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানিটি অতি শীঘ্রই কানাডাতে নিজেদের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। 

লস অ্যাঞ্জেলেসে উবারের সাথে সাথে একই গাড়িতে প্রতিদ্বন্দ্বী লিফটের স্টিকার; Image: AP Photo/Richard Vogel

ট্যাক্সি ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে ক্ষোভের সৃষ্টি এবং লন্ডনে উবারের লাইসেন্স বাতিল

২০১৪ সালে লন্ডন, বার্লিন, প্যারিস এবং মাদ্রিদের ট্যাক্সি ড্রাইভারেরা উবারের বিরুদ্ধে মাঠে নামে। ট্যাক্সি কোম্পানিগুলোর দাবি, পরিবহন ইন্ডাস্ট্রি হয়েও উবার বেশ ব্যয়বহুল লাইসেন্স ফি এড়িয়ে চলছে এবং স্থানীয় আইন ভঙ্গ করে ট্যাক্সি ইন্ডাস্ট্রিগুলোর সাথে অসাধু প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়েছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ইউরোপিয়ান কোর্টে উবারের বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়। সতেরো সালের অক্টোবরে ট্রান্সপোর্ট অফ লন্ডন “উবার নিজেদের লাইসেন্স ধরে রাখতে অক্ষম” বিবৃতি দিয়ে লন্ডনে উবার নিষিদ্ধ করে। সে সময় লন্ডনে প্রায় চল্লিশ হাজার নিবন্ধিত উবার ড্রাইভার ছিল। ২০১৮ সালের ২৬ জুন বেশ কিছু শর্তের উপর ভিত্তি করে মাত্র পনেরো মাসের মেয়াদে উবারকে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে অনুমতি দেওয়া হয়।

ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে অসন্তুষ্টি

উবার প্রায় প্রথম থেকেই এমন একটি স্ব-নিয়ন্ত্রিত অ্যালগরিদম ব্যবহার করে আসছে, যেটি চাহিদা এবং পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে ভাড়ার পরিমাপ বাড়াতে এবং কমাতে সক্ষম। এমনকি রাস্তায় উবারের নিবন্ধভুক্ত গাড়ির সংখ্যা কম হলে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ও ভাড়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

২০১১ সালের নিউ ইয়ার ইভে স্ট্যান্ডার্ড ভাড়ার প্রায় সাতগুণ বেশি বেড়ে যাওয়ায়, সাধারণের মাঝে বেশ ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। সে সময় উবার তাদের নিয়মিত গ্রাহকদের থেকে বেশ নেতিবাচক ফিডব্যাক পেতে থাকে। ২০১৩ সালের তুষার ঝড়ের পরও ভাড়ার এই উত্থান দেখা যায়, যা উবার বয়কটের রব তোলার কারণ হয়েও দাঁড়ায়।

উবারের বিরুদ্ধে গুগলের স্ব-নিয়ন্ত্রিত গাড়ির ডকুমেন্ট হাতানোর অভিযোগ 

গুগল, অ্যাপল এবং টেসলা মটোরসের মতো উবারও স্ব-নিয়ন্ত্রিত গাড়ি নিয়ে কাজ করার ব্যাপারে বেশ আগ্রহী ছিল প্রথম থেকেই। তবে উবারের পথ চলা শুরু হতে না হতেই গুগলের স্ব-নিয়ন্ত্রিত গাড়ি ‘উয়াইমু’র ডকুমেন্ট চুরির অভিযোগ চেপে বসে কোম্পানিটির ঘাড়ে।

অটোর আনমার্কড হেডকোয়ার্টারের সামনে উবারের স্ব-নিয়ন্ত্রিত গাড়ি ‘Volvo XC90’; Image Source: wikimedia.org

ঝামেলাটি শুরু হয়, স্ব-নিয়ন্ত্রিত ট্রাক তৈরির স্টার্টআপ Otto উবারের হস্তগত হওয়ার পরপরেই। উয়াইমু টিমের মিডিয়ামে করা একটি ব্লগ-পোস্ট থেকে জানা যায়, অটোকে উবার কিনে নেওয়ার কিছুদিন পরেই কোম্পানিটি অপ্রত্যাশিতভাবে জানতে পারে, উয়াইমু’র ‘LiDAR’ সেন্সর নামের অতিগোপনীয় সেলফ-ড্রাইভিং প্রযুক্তি অটোর হস্তগত হয়েছে এবং সেটি দেখেই উবার কোম্পানিটি কিনে নেয় বলে তাদের বিশ্বাস।

ব্লগ-পোস্টটি থেকে আরো জানা যায়, অ্যান্থনি লেভানডৌসকি নামের একজন সাবেক উয়াইমু ইঞ্জিনিয়ার তার পদত্যাগের মাত্র ছয় সপ্তাহ পূর্বে প্রায় ১৪০০টি অতি গোপনীয় ডিজাইনের ফাইল সিস্টেম থেকে ডাউনলোড করেন এবং পরবর্তীতে অটোর প্রতিষ্ঠা করে প্রধান ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন। সেজন্য উয়াইমুর ধারণা, পুরো ব্যাপারটির পেছনে পূর্ব পরিকল্পনা ছিল, যার জন্য উবার দায়ী। কোম্পানিটি উবারকে ১.৪ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দেওয়ার সাথে সাথে জনসম্মুখে মাফ চাওয়ার আহ্বান জানায়। কিন্তু উবার আইনি লড়াই যাওয়ার ব্যাপারেই আগ্রহ প্রকাশ করে। গত ফেব্রুয়ারিতে আদালত মামলার রায় ঘোষণা করে, যেখানে উবারকে তার বর্তমান ৭২ বিলিয়ন ডলারের ০.৩৪ শতাংশ শেয়ার উয়াইমুকে ক্ষতি পূরণ হিসেবে দেওয়ার জন্য বলে, যার মূল্য প্রায় ২৪৫ মিলিয়ন ডলার।

উবারের বিভিন্ন সেবা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও অন্যান্য

উবার নিজেদের সাম্রাজ্য বৃদ্ধির সাথে সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সেক্টরগুলোতে বিভিন্ন সেবার পরিমাণও বাড়াতে থাকে। তার মধ্যে ফুড ডেলিভারি সার্ভিস, ‘উবারইটস’ এবং কুরিয়ার সার্ভিস ‘উবাররাশ’ বেশ জনপ্রিয়। অন্যদিকে ‘উবারপুল’ সার্ভিসটিতে উবার নিবন্ধিত চালকরা একই রাইডে একাধিক যাত্রী বহন করতে পারবে, যা চালক এবং আরোহী দু’দলের জন্যই লাভজনক। লাক্সারি রাইডের প্রয়োজন হলে ‘উবারসাব’ উবারব্লাকের মতো আরেকটি বিকল্প ব্যবস্থা।

উবারের ফুড ডেলিভারি সার্ভিস ‘উবারইটস’; Image Source: Getty Image

বর্তমানে উড়ন্ত-গাড়ির প্রোটোটাইপ নিয়ে প্রায় অনেকগুলো কোম্পানি কাজ করে যাচ্ছে, যদিও বাণিজ্যিক পরীক্ষার দৌড়ে অংশগ্রহণের জন্য আরো লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হবে। কোনোরকম ট্র্যাফিকের ঝামেলা ছাড়া সায়েন্স ফিকশনের উড়ন্ত গাড়িগুলোতে চড়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর দিবাস্বপ্ন সাধারণ মানুষের মতো প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো দেখে আসছে লম্বা সময় ধরে।

উবারও তার ব্যতিক্রম নয়। বর্তমানে কোম্পানিটি নিজেদের হস্তগত বোয়িং কো’র মতো সমৃদ্ধ এয়ারক্রাফট প্রস্ততকারক কোম্পানি সহ আরো চারটি কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ। তবে উবার নিজেদের এয়ার-কার তৈরির দিকে না গিয়ে, অন্যান্য কোম্পানির তৈরি যানগুলোর সেবা ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারেই বেশি আগ্রহী।

আরো পড়ুন: উবার সার্ভিসের আদ্যোপান্ত: উবার যেভাবে কাজ করে

This article is in Bangla. This is about the history of 'Uber' company.

All sources are hyperlinked inside the article.

Featured Image: independent.co.uk

Related Articles