Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও নর্দান আয়ারল্যান্ড যেভাবে যুক্তরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল

যুক্তরাজ্য তথা ইউনাইটেড কিংডম গঠিত চারটি সম-মর্যাদার জাতি তথা ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ড মিলে। সবগুলো দেশ আলাদাভাবে সার্বভৌম না হলেও পুরো যুক্তরাজ্যকে সার্বভৌম অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। লন্ডন ইংল্যান্ডের রাজধানী, আবার সমগ্র যুক্তরাজ্যের রাজধানীও। কিন্তু মজার বিষয় হলো, ইংল্যান্ডের মতো অন্য তিনটি দেশের আলাদা জাতীয় পতাকা, সরকার ব্যবস্থা এবং রাজধানী রয়েছে। যদিও চারটি দেশের নাগরিকদের আলাদা আলাদা কোনো পাসপোর্ট নেই। ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে সবাই একই রকম ব্রিটিশ পাসপোর্টের অধিকারী হয় নাগরিকরা।

ইউনাইটেড কিংডমের চার দেশের পতাকা; Image Source: Metro.Uk.com

নিজস্ব গঠনতন্ত্র, প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ড ক্রমান্বয়ে ইংল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্য গঠনের ইতিহাস বেশ পুরোনো। সেক্ষেত্রে অবশ্য ইংরেজ রাজপরিবার এবং একাধিক উত্তরসূরী কর্তৃক বিভিন্ন সময় ক্ষমতা দখল ও নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রাখার ইচ্ছাকেই দায়ী করেন ইতিহাসবিদেরা। তবে এই একটি কারণে যুক্তরাজ্য গঠিত হয়নি। দেশ তিনটি যেসব কারণে ইংল্যান্ডের অংশে পরিণত হয়েছে, তা নিয়েই আজ বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ইংল্যান্ড প্রথমে ওয়েলসকে যুক্ত করলেও স্কটল্যান্ডের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়

৯২৭ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম ইংল্যান্ডের রাজত্ব শুরু হয়। অ্যাংলো স্যাক্সন উপজাতিসমূহ একতাবদ্ধ হয়ে কিংডম অব ইংল্যান্ড প্রতিষ্ঠা করে। অতঃপর, ১৩ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইংল্যান্ডের তৎকালীন রাজা প্রথম এডওয়ার্ড ওয়েলসের পশ্চিম অঞ্চলে অভিযান শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে দখলকৃত অঞ্চলসমূহকে তিনি ইংল্যান্ডের অংশ হিসেবে ঘোষণা দেন। তখন ওয়েলসের শাসক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন ডেফিড এপি গ্রুফেইড।

তাকে বলা হয় স্বাধীন ওয়েলসের সর্বশেষ শাসনকর্তা। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের মধ্যকার সশস্ত্র যুদ্ধ ১২৭৭ সাল থেকে ১২৮৩ সাল পর্যন্ত চলেছিল। ১২৮৩ সালের ৩ অক্টোবর, ওয়েলসের প্রিন্স ডেভিড এপির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মাধ্যমে ওয়েলস দখল করেন রাজা এডওয়ার্ড।

রাজা প্রথম এডওয়ার্ড; Image Source: Thoughtco.com

ওয়েলস দখলের এক যুগ পর রাজা এডওয়ার্ড স্কটল্যান্ড অভিমুখে অভিযান পরিচালনা করেন। স্কটল্যান্ডের ভূমিতে ইংল্যান্ডের সশস্ত্র আক্রমণের মধ্য দিয়ে প্রথম স্কটিশ স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। ঐতিহাসিকরা অবশ্য এই যুদ্ধকে অ্যাংলো-স্কটিশ যুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে স্কটল্যান্ডের রাজা ছিলেন রবার্ট ব্রুস। তার নেতৃত্বে ১৩২৮ সালে সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রেখে এডওয়ার্ড বাহিনীকে পরাজিত করতে সক্ষম হয় স্কটিশরা। এর পরের বছর মৃত্যুবরণ করেন রাজা রবার্ট ব্রুস

যুদ্ধে স্কটল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রবার্ট ব্রুস; Image Source: Culture Club

তার মৃত্যুর পর স্কটল্যান্ডের সিংহসানে বসেন পুত্র ডেভিড। তরুণ রাজাকে দুর্বল ভেবে ১৩৩৩ খ্রিস্টাব্দে আবারও স্কটল্যান্ড অভিমুখী অভিযান শুরু করেন তৎকালীন ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় এডওয়ার্ড। প্রথমবারের মতো দ্বিতীয়বারও ইংরেজদের পরাজিত করতে সক্ষম হয় স্কটিশরা। ১৩৫৭ সালে দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়লাভ করে রাজা ডেভিডের স্কটল্যান্ড। এতে করে রাজা প্রথম এডওয়ার্ড কর্তৃক দখলকৃত ওয়েলস নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে ইংল্যান্ডের রাজপরিবার।

প্রিন্সেস ডায়ানা এবং প্রিন্স চার্লস; Image Source: Tim Graham Photo Library via Getty Images

স্কটিশদের বিপক্ষে প্রথমবার পরাজয়ের পর ওয়েলসে নিজেদের পূর্ণক্ষমতা অর্জনের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন রাজপরিবারের সদস্যরা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ নিয়ম অনুসারে একজন করে রাজপরিবারের সদস্যকে প্রশাসনিক কাজে ওয়েলসে নিয়োগ দেয়া হতো। যিনি ওয়েলসের দায়িত্ব পেতেন, তাকে বলা হয় ‘প্রিন্স অব ওয়েলস’। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের পুত্র চার্লস এখন অবধি প্রিন্স অব ওয়েলস হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। এছাড়াও তার সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকার সুবাদে ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্যতম পরিচিত মুখ প্রয়াত লেডি ডায়ানাকে ‘প্রিন্সেস অব ওয়েলস’ বলা হতো।

ওয়েলসের পতাকা; Image Source: Matthew Horwood/Getty Images

১৫৩০ এর দশক পর্যন্ত ওয়েলস আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যের অংশ হতে পারেনি। ১৫৩৬ সালে তখনকার রাজা অষ্টম হেনরি নতুন ইউনিয়ন আইন পাস করে ওয়েলসকে ইংল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করে ইংল্যান্ডে প্রচলিত সকল আইন সেখানেও প্রবর্তন করেন। সেই হিসেবে বলা যায়, ইংল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রথম দেশ ওয়েলস। রাজা হেনরি প্রবর্তিত নতুন আইনের মধ্য দিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে ইউনাইটেড কিংডম বা যুক্তরাজ্যের পথচলা শুরু হয়।

ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড এক হয়ে গ্রেট ব্রিটেন গঠিত হয়

১৬০৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন রানী প্রথম এলিজাবেথ। তার মৃত্যুর পর ইংল্যান্ডের নতুন শাসক নির্বাচিত হন তার বোনের একমাত্র ছেলে জেমস। ইংল্যান্ডের সিংহাসনে আরোহণের পূর্বে জেমস স্কটল্যান্ডের রাজার দায়িত্ব পালন করেন। তার মা মেরি কুইন অভ স্কটস ছিলেন রানী এলিজাবেথের পর ইংরেজ সিংহসানের প্রথম উত্তরাধিকারী, যদিও তিনি রানী এলিজাবেথের পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেন। এতে করে নিয়মানুযায়ী, তার একমাত্র ছেলে স্কটল্যান্ডের রাজা ষষ্ঠ জেমস রাজমুকুট পরেন। পরে অবশ্য তিনি নিজেকে ইংল্যান্ডের প্রথম জেমস হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন।

রাজা প্রথম জেমস; Image Source: Royal.Uk

স্কটল্যান্ডের রাজা হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় তিনি ইংল্যান্ডের সাথে রাজনৈতিক সুসম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। সে সময় দুই দেশের মধ্যে একাধিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ক্ষেত্রে তার বিশেষ ভূমিকা ছিলো। মূলত তার কল্যাণে দেশ দুটির মধ্যে চলমান শত বছরের রাজনৈতিক সঙ্কট অনেকাংশে কমেছিল। তবে উভয় দেশের রাজা হওয়া সত্ত্বেও জেমস কোনোভাবেই রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে স্কটল্যান্ডকে ইংল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেননি। এর পরের একশো বছরে একাধিকবার চেষ্টা করেও স্কটল্যান্ডকে ইংল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেনি দুই দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ।

রানী অ্যানির সঙ্গে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের প্রতিনিধি দল; Image Source: The Print Collector/Getty Images

এই প্রচেষ্টার সমাপ্তি ঘটে ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে। রানী অ্যানির তত্ত্বাবধানে স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ড এক হয়ে ‘গ্রেট ব্রিটেন’ প্রতিষ্ঠিত হয়। যদিও দেশ দুটির এক হওয়াকে ইংল্যান্ডের রাজপরিবার কর্তৃক কূটনৈতিক কিংবা সামরিক সফলতা হিসেবে দেখছেন না কয়েকজন ইতিহাসবিদ। তাদের মধ্যে একজন হলেন ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টোফার হোয়াটলি। তার মতে, স্কটিশ রাজনৈতিক ব্যক্তিরা আমেরিকা অঞ্চলে উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। কিন্তু সমুদ্র পাড়ি দিয়ে আমেরিকায় শক্ত অবস্থান পড়তে ইংরেজদের সাহায্য নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিলো দেশটি জন্য। হোয়াটলি বলেন,

বাস্তববাদী রাজনীতি এবং সমুদ্র পাড়ি দিয়ে আমেরিকায় বাজার প্রতিষ্ঠা, ব্যবসা-বাণিজ্য করার জন্য শক্তিশালী রাজনৈতিক পক্ষের সমর্থন দরকার ছিল। স্কটিশ রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বিশ্বাস করতেন, আর্থিক, সামরিক ও প্রশাসনিক সহায়তা দিয়ে তাদেরকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের চেয়ে শক্তিশালী দ্বিতীয় কোনো দেশ সেকালে পৃথিবীতে ছিল না।

স্কটল্যান্ডের পতাকা; Image Source: Adrian Dennis/AFP/Getty Images

তবে অনেক ইতিহাসবিদের মতে, প্রকৃত স্কটিশরা ক্যাথোলিক শাসকদের মেনে নিতে পারছিলো না। ফলে, ইংল্যান্ডের সঙ্গে একীভূত হলে ক্যাথোলিকদের একচ্ছত্র আধিপত্য কমবে বলেও ধারণা করেন স্কটিশরা। তবে সে সময় ইংল্যান্ড স্কটল্যান্ডকে নিজেদের সঙ্গে প্রশাসনিকভাবে একত্র করা আবশ্যক ছিলো। আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব রক্ষায় স্কটল্যান্ডকে দলে ভেড়াতে না পারলে স্প্যানিশ উত্তরাধিকারীদের মধ্যে চলমান যুদ্ধে তারাও হয়তো ফ্রান্সের মতো ইংল্যান্ডের বিরোধিতা করতো।

আর এ কারণে ইংল্যান্ড ১৭০৭ সালে স্কটল্যান্ডের সকল ঋণ পরিশোধ করতে সম্মত হওয়ায় দুই দেশের পার্লামেন্টে নতুন ইউনিয়ন বিল পাস করার মধ্য দিয়ে গ্রেট ব্রিটেন প্রতিষ্ঠিত হয়।

নর্দান আয়ারল্যান্ডের যোগদান

আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি যে, স্কটল্যান্ডের রাজা ষষ্ঠ জেমস পরে প্রথম জেমস হিসেবে ইংল্যান্ডের রাজা হিসেবে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিনি আয়ারল্যান্ডেরও রাজা ছিলেন। ১৫৪০ এর দশকে আয়ারল্যান্ড অঞ্চল ইংল্যান্ডের একটি নির্ভরশীল রাজ্যে পরিণত হয়। অতঃপর, ১৫৪২ সালে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী একটি আইন পাস করে। এই আইন অনুযায়ী, তখন থেকে ইংল্যান্ডের রাজাই হবেন আয়ারল্যান্ডের রাজা।

এই নিয়মানুযায়ী, আয়ারল্যান্ডের প্রথম রাজা ছিলেন রানী প্রথম এলিজাবেথ ও রানী মেরির পিতা অষ্টম হেনরি; সর্বশেষ রাজা ছিলেন তৃতীয় জর্জ। জর্জ ১৮০১ সালে গ্রেট ব্রিটেনের সঙ্গে আয়ারল্যান্ডকে একীভূত করে ইউনাউটেড কিংডম কিংবা যুক্তরাজ্য গঠন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক মানচিত্র; Image Source: Pop_jop/Getty Images

মূলত স্কটল্যান্ডের সঙ্গে ১৭০৭ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তিটিই আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ১৮০১ সালে একতাবদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল। যদিও পরে আইরিশ ইউনিয়ন বেশিদিন স্থায়িত্ব পায়নি। ১৯১৯ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সশস্ত্র যুদ্ধ পরিচালনা করে। ইংল্যান্ডের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে সংগঠিত সে যুদ্ধ ‘আইরিশ যুদ্ধ’ নামে পরিচিত। শেষপর্যন্ত আয়ারল্যান্ড বিভক্তির মাধ্যমে আইরিশ যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। যুদ্ধের পর নর্দান আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্যের সঙ্গে থেকে যায় এবং দক্ষিণ আয়ারল্যান্ড ইংল্যান্ডের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে জায়গা করে নেয়।

নর্দান আয়ারল্যান্ডের পতাকা; Image Source: Mike Kemp/In Pictures via Getty Images

দক্ষিণ আয়ারল্যান্ড সার্বভৌম হওয়া সত্ত্বেও বেশ কিছুদিন ব্রিটিশ কমনওয়েলথের সদস্য ছিলো। পরবর্তী সময়ে রিপাবলিক অভ আয়ারল্যান্ড নামে ১৯৭৩ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যোগদান করে দেশটি। আর এই রিপাবলিকান অভ আয়ারল্যান্ডই আজকের বিশ্বে আয়ারল্যান্ড নামে বিখ্যাত। দেশটির রাজধানী ডাবলিন। অন্যদিকে উত্তর আয়ারল্যান্ড এখনও যুক্তরাজ্যের অধীনে রয়ে গেছে।

জাতীয়তাবাদের উত্থান

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইংল্যান্ডের প্রতি স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের মনোভাবে অনেকাংশে পাল্টে যায়। মূলত জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উত্থান অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ী। তখন থেকেই দেশ তিনটিতে রাজনৈতিক সক্রিয়তা, সহিংসতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরিসংখ্যান বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই দেশগুলোতে গড়ে ওঠা নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর মূল ভিত্তি ছিল যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীনতা অর্জনের মনোভাব।

ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ায় সমর্থন জানানোর দৃশ্য; Image Source: History.com

২০১৪ সালে স্কটল্যান্ডে একটি গণভোট আয়োজন করা হয়েছিল। যুক্তরাজ্য থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে অনুষ্ঠিত গণভোটে অবশ্য একীভূত থাকার পক্ষেই রায় দেয় সেখানকার নাগরিকেরা। অতঃপর ২০১৯ সালে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা এবং দুই আয়ারল্যান্ডকে এক করার ব্যাপারে আলোচনা শুরু হয়। তখন একটি নির্বাচনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আসে রক্ষণশীল দলের নেতা বরিস জনসন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।

ব্রেক্সিট ইংল্যান্ডের তুলনায় স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডে কম জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। তবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের পর দুই আয়ারল্যান্ড আবারও একীভূত হতে পারে বলে ধারণা করেন অনেকে। ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি মধ্যরাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসে যুক্তরাজ্য।

ইউনাইটেড কিংডমের ভৌগোলিক মানচিত্র; Image Source: worldatlas.com

ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন সম্পন্ন হওয়ার পরেও স্কটল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ডের স্বাধীনতা নিয়ে বির্তকের শেষ এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। ২০১৪ সালের ৫৫ শতাংশ স্কটিশ নাগরিক যুক্তরাজ্যের সঙ্গে থাকার ব্যাপারে ভোট দিলেও এখনকার পরিস্থিতি আগের মতো নয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনের পর স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজন আবারও স্বাধীনতার জন্য গণভোটের আয়োজন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

তাই ধরেই নেওয়া যায়, বর্তমান সময়ে এসে ১৭০৭ সালে পাসকৃত চুক্তিটি শেষ হওয়ার সম্ভাবনা ইতিহাসের অন্য যেকোনো সময়ের থেকেও বেশি। যদি কখনও স্কটল্যান্ড যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হয় এবং দুই আয়ারল্যান্ড এক হয়ে যায়, তবে ‘ইউনাইটেড কিংডম’ বা যুক্তরাজ্যে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ওয়েলস ব্যতীত অন্য কোনো দেশই থাকবে না। হয়তো সেটিকে তখন যুক্তরাজ্যও বলা হবে না।

This article is in Bangla language. It is written about United Kingdom history. From this article, readers can know How Scotland, Wales and Northern Ireland Became a Part of the U.K.

Featured Image Source: Uk.news.yahoo.com

E: A

Related Articles