Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

যেভাবে বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রির জন্ম হলো

বৈদ্যুতিক বাতি যেখানে, সেখানেই যেন মিশে আছে টমাস আলভা এডিসনের নাম। বৈদ্যুতিক বাল্বের এই আবিষ্কারক তার আবিষ্কারের মাধ্যমে জড়িয়ে গেছেন ইতিহাসের অনেক ‘প্রথম’ কিছুর সাথে। তেমনি প্রথম বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস বাতির সাথেও মিশে আছে টমাস আলভা এডিসনের নাম। ১৮৮০ সালে বড়দিনের মৌসুমে এডিসন তার মেনলো পার্ক ল্যাবরেটরির বাইরে বৈদ্যুতিক তারের মাধ্যমে অনেকগুলো বাতি যুক্ত করে ঝুলিয়েছিলেন। ঠিক তার আগের বছরই তিনি এই বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করে গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন।

বৈদ্যুতিক বাতির জনক টমাস আলভা এডিসন; Image Source: indiatoday

১৮৮০ সালের বড়দিনের ৪ দিন আগে, ২১ ডিসেম্বর, নিউ ইয়র্ক টাইমসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেই প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক সিটি সরকারের কয়েকজন কর্মকর্তার মেনলো পার্ক ল্যাবরেটরি সফরের বর্ণনা করা হয়েছে। বর্ণনায় বলা হয়েছিল, ট্রেন স্টেশন থেকে এডিসনের বাড়ি পর্যন্ত ২৯০টি বৈদ্যুতিক বাল্ব সারিবদ্ধভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছিল। ফলে মৃদু বৈদ্যুতিক আলোয় পুরোটা পথ উদ্ভাসিত হয়ে গিয়েছিল।

যদিও প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়নি যে, এডিসন ক্রিসমাস ট্রি লাইট চালু করেছিলেন। কিন্তু ক্রিসমাস উপলক্ষে যে এই আলোকসজ্জার আয়োজন করা হয়েছিল তা অনুমেয়। তখনকার দিনে ক্রিসমাস ট্রি’র আলোকসজ্জায় মোমবাতি ব্যবহার করা হতো, যা ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ মোমের আগুনে যেকোনো সময়ে অগ্নিকান্ড ঘটার সম্ভাবনা থাকতো।

বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহার করে বড়দিনের আলোকসজ্জা তৈরি এবং উদযাপনের প্রথম উদ্দেশ্যমূলক উদ্যোগ নিয়েছিলেন এডিসনের ল্যাবরেটরির একজন কর্মচারী। ১৮৮২ সালের বড়দিনে তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এরপর এডিসনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও তার কোম্পানির প্রেসিডেন্ট, এডওয়ার্ড এইচ জনসন সর্বপ্রথম ক্রিসমাস ট্রির আলোকসজ্জায় বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহার করেছিলেন।

এডওয়ার্ড এইচ জনসন। যার হাতে জ্বলেছিল ইতিহাসের প্রথম বৈদ্যুতিক ক্রসমাস ট্রি লাইট; Image Source: history.com

জনসনের প্রথম বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি লাইট তৈরি

একটি ক্রিসমাস ট্রি পুরোপুরিভাবে বৈদ্যুতিক বাতি দিয়ে সজ্জিত করে, এডওয়ার্ড জনসন এডিসনের ইলেকট্রিক লাইট কোম্পানিকে একেবারে লাইম লাইটে নিয়ে আসেন। ১৮৮২ সালে ডেট্রয়েট পোস্ট অ্যান্ড ট্রিবিউন থেকে একজন রিপোর্টার জনসনের বাড়িতে সফর করেন। তিনিই প্রথম বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন। এর একমাস পর, সেই সময়ের বিখ্যাত ম্যাগাজিন ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্ল্ড জনসনের বৈদ্যুতিক বাতির ক্রিসমাস ট্রি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। প্রতিবেদনে জনসনের ক্রিসমাস ট্রিকে বলা হয়েছিল, আমেরিকার সবচাইতে সুদর্শন ক্রিসমাস ট্রি!

এর দুই বছর পর, ১৮৮৪ সালের বড়দিনের আগে, নিউ ইয়র্ক টাইমস জনসনের ম্যানহাটনের বাড়িতে একজন রিপোর্টার পাঠায়। তিনি বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রির উপর একটি বিস্ময়কর ও বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছিলেন। যা ১৮৮৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর, নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত হয়েছিল। এই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল-

একটি উজ্জ্বল ক্রিসমাস ট্রি: সন্তানদের জন্য একজন ইলেকট্রিশিয়ান বাবার চমক!

এই প্রতিবেদনে বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি’র বর্ণনা দেয়া হয়েছিল এভাবে-

এডিসন কোম্পানি ফর ইলেকট্রিক লাইটিং এর প্রেসিডেন্ট মিস্টার ই. এইচ. জনসনের ১৩৬ স্ট্রিটের বাসভবনে গতকাল সন্ধ্যায় একটি সুন্দর এবং অভিনব ক্রিসমাস ট্রির দেখা মেলে! সম্পূর্ণরূপে বৈদ্যুতিক বাতি দিয়ে সজ্জিত এই ক্রিসমাস ট্রিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার সাথে সাথে এতটাই উজ্জ্বল আলো নিয়ে ঘুরতে থাকে যে, তার সন্তানরা তন্ময় হয়ে দেখতে থাকে। তাদের চোখ আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। মিস্টার জনসন বিগত কয়েক বছর ধরেই বৈদ্যুতিক বাতি নিয়ে গবেষণা ও কাজ করে যাচ্ছেন। এই বছর বড়দিনে তিনি তার সন্তানদের জন্য একটি অভিনব উপহার দেয়ার কথা ঠিক করেন। সেই সুবাদেই তিনি এই বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি লাইট তৈরি করেন।

জনসনের তৈরি প্রথম বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি লাইট; Image Source: Pinterest

জনসনের তৈরি এই বৈদ্যুতিক আলো সমৃদ্ধ ক্রিসমাস ট্রির উচ্চতা ছিল প্রায় ছয় ফুট। এতে বিভিন্ন রঙের প্রায় ১২০টি বাতি যুক্ত করা হয়েছিল। তার বাড়িতে বড়দিনের সান্ধ্য আয়োজনে যারাই আমন্ত্রিত হয়েছিলেন, তারা সকলেই বৈদ্যুতিক বাতির এই আলোকচ্ছটায় বিমোহিত হবার সুযোগ লাভ করেছিলেন।

ক্রিসমাস ট্রির ঘূর্ণনে এডিসনের অবদান

নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনে ইতিহাসের প্রথম বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি নিয়ে আরো বিশদভাবে রিপোর্ট করা হয়েছিল। প্রতিবেদনের পরের অংশে বলা হয়েছিল কীভাবে এই ক্রসমাস ট্রি ঘূর্ণনরত অবস্থায় ছিল। গাছটির ঘূর্ণন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে যে প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া হয়েছিল, তাতেও রয়েছে টমাস এডিসনের ছোঁয়া। প্রতিবেদনে বলা হয়-

মিস্টার জনসন তার তৈরি বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রির পাদদেশে একটি ছোট এডিসন ডায়নামো যুক্ত করেছিলেন। তার বাড়ির মূল বৈদ্যুতিক সংযোগে অবস্থিত বড় একটি ডায়ানামোর সুইচে চাপ দিলে, গাছের পাদদেশে লাগানো ডায়নামোতে বিদ্যুৎ সঞ্চালিত হয় এবং এটি একটি ক্ষুদ্র মোটরে পরিণত হয়ে গাছসহ একটি নির্দিষ্ট বেগে ঘুরাতে থাকে।

গাছের গায়ে মোট ছয় সেট বৈদ্যুতিক বাতি যুক্ত করা হয়েছিল। এদের মধ্যে এক সেট সাদা আলোর বাতি গাছটি ঘুরতে থাকলে জ্বলে উঠতো। গাছের চারদিকে ৬ সারির তামার ব্যান্ড এবং সাথে একটি করে সুইচ যুক্ত করে বিভিন্ন সেটের বাতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান এবং বিচ্ছিন্ন করার একটি সহজ কৌশল অবলম্বন করেছিলেন তিনি। এতে নিয়মিত বিরতিতে বিভিন্ন সেটের বাতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ পেতো, আবার বিচ্ছিন্ন হতো।

প্রথম সেট ছিল সাদা বাতির সেট। এর পরের সেট ছিল লাল আলোর। লাল আলোর বাতির সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে হলুদ বাতি জ্বলে উঠতো। এভাবে অন্যান্য রঙের বাতিগুলোও নিয়মিত বিরতিতে সাদা আলোর সাথে মিশ্রিত হয়ে জ্বলতো-নিভতো। আবার বড় ডায়নামো থেকে ছোট ডায়নামো থেকে সংযোগ বিছিন্ন করার একটি পদ্ধতিও ছিল। এতে গাছ ঘূর্ণনরত অবস্থায় না থাকলেও এর বৈদ্যুতিক বাতিগুলো ঠিকই জ্বলতো।

বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি মোটরের সাহায্যে উলম্ব অক্ষকে কেন্দ্র করে ঘুরতে পারে; Image Source: fishwolfeboro.com

নিউ ইয়র্ক টাইস পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইতিহাসের প্রথম বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি নিয়ে আরো দুটো বিশদ অনুচ্ছেদ ছিল। অর্থাৎ এই কথা সহজেই অনুধাবন করা যায় যে, নিউ ইয়র্ক টাইমস জনসনের এই আবিষ্কারকে আক্ষরিক অর্থেই একটি মাইলফলক হিসেবে তাদের প্রতিবেদনে প্রচার করেছিল।

ব্যয়বহুল ও আভিজাত্যের প্রতীক

জনসনের তৈরি বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রির খবর ম্যাগাজিন এবং পত্রিকার পাতায় আসার বদৌলতে, তা বিস্ময়কর আবিষ্কার হিসেবে চারদিকে পরিচিতি পেতে থাকে। এডিসনের বৈদ্যুতিক বাতির কোম্পানিও একে বাণিজ্যিক উপায়ে বাজারজাত করার প্রচেষ্টা হাতে নিয়েছিল। কিন্তু প্রাথমিকভাবে লাভের মুখ দেখতে না দেখতেই ব্যবসা কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ে। এর প্রধান কারণ হলো তখনও বিদ্যুৎ জনসাধারণের মাঝে সহজলভ্য হয়ে ওঠেনি। বিদ্যুতের দাম, বৈদ্যুতিক বাতির দাম, ইলেকট্রিশিয়ানের সার্ভিস চার্জ- সব মিলিয়ে এই বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি’র ক্রয়ক্ষমতা খুব কম মানুষেরই ছিল।

তবে অভিজাত পরিবারের কেউ কেউ বড়দিনের উৎসবে আভিজাত্য প্রকাশের জন্য এই ইলেকেট্রিক ক্রিসমাস ট্রি রাখতেন। হোয়াইট হাউজের ইতিহাসে প্রথম ক্রিসমাস ট্রি এনেছিলেন বেঞ্জামিন হ্যারিসন, ১৮৮৯ সালে। তবে সেটি ছিল মোমবাতি সজ্জিত ক্রিসমাস ট্রি। এরপর আমেরিকার ২২তম প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ১৮৯৫ সালে হোয়াইট হাউজের জন্য প্রথমবারের মতো এডিসন বাল্বের তৈরি একটি বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি অর্ডার করেছিলেন।

 হোয়াইট হাউজের জন্য গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের অর্ডার করা এডিসন বাল্বের বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি; Image Source: theweek.com

তবে আগুন এবং আগুন থেকে সৃষ্ট দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখেও, ছোট ছোট মোমবাতি দিয়ে ক্রিসমাস ট্রির আলোকসজ্জা তৈরি করার প্রথাই বিংশ শতাব্দীতে পদার্পণের আগপর্যন্ত জনপ্রিয় ছিল।

তরুণ উদ্যোক্তার হাত ধরে জনপ্রিয়তা এবং বাণিজ্যিক প্রসার

১৯১৭ সালে মোমবাতি দিয়ে সজ্জিত ক্রিসমাস ট্রি থেকে অগ্নিকান্ডের একটি করুণ ঘটনা শোনার পর, আলবার্ট সাদাক্কা নামক এক তরুণ তার পরিবারকে সাশ্রয়ী মূল্যে বৈদ্যুতিক বাতি এবং তার প্রক্রিয়াজাত করার পরামর্শ দিয়েছিল। এই তরুণ ছিলেন আমেরিকার একটি ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান। তার পরিবার বৈদ্যুতিক তার এবং বাতি প্রস্তুত করার পরামর্শ বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করেছিলো এবং বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস বাতি বিক্রির পদক্ষেপও গ্রহণ করেছিলেন তিনি। যদিও প্রথমদিকে বিক্রির হার কিছুটা কম ছিল।

এরপর যতই সময় যেতে থাকলো, মানুষের ঘরে ঘরেও বিদ্যুৎ পৌঁছাতে শুরু করলো। বিদ্যুতের এই সহজলভ্যতার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘরে ঘরে বড়দিনে বৈদ্যুতিক ক্রসমাস ট্রি’র প্রচলন শুরু হলো। হঠাৎ করেই আলবার্ট সাদাক্কা মিলিয়ন ডলারের লাইটিং কোম্পানির মালিক হয়ে উঠলেন। তার দেখাদেখি আরো কিছু ইলেকট্রিক কোম্পানি যেমন জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানি বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি বাজারজাত করা শুরু করলো। ১৯৩০ সালের মধ্যে পুরো যুক্তরাষ্ট্রে বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি বড়দিনের ছুটিতে ঘর সাজানোর একটি আদর্শ অনুষঙ্গ হিসেবে বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল।

জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানির বিজ্ঞাপনে এডিসন ইলেকট্রিক ক্রিসমাস লাইট; Image Source: rhapsodyinbooks.com

জনসনের তৈরি ব্যক্তিগত বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি সামাজিকভাবে তো প্রচলন হলোই, বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে এটি জনসাধারণের জন্য রাষ্ট্রীয় আলোকসজ্জার পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। আমেরিকার ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় আলোকসজ্জার অনুষ্ঠান- ওয়াশিংটনের জাতীয় ক্রিসমাস ট্রি লাইটিং শুরু হয়েছিল ১৯২৩ সালে। এই বছরের বড়দিনের আগের সন্ধ্যায়, অর্থাৎ ২৪ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ হোয়াইট হাউজের দক্ষিণ প্রান্তে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি জাতীয় ক্রসমাস ট্রি প্রজ্বলন করেছিলেন।

হোয়াইট হাউজের লনে রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস বাতি প্রজ্বলন করেন প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ; Image Source: rhapsodyinbooks.com

নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে এই রাষ্ট্রীয় আনন্দঘন মুহূর্তের বর্ণনা করা হয়েছিল এভাবে-

শেষ বিকেলের সূর্য যখন প্যাটোমিক নদীর মাঝে ডুবে গেল, প্রেসিডেন্ট কুলিজ তার হাতের একটি সুইচ টিপে জাতীয় ক্রিসমাস ট্রি প্রজ্বলিত করে দিলেন। সাথে সাথেই ভরমন্টের একটি দেবদারু গাছ থেকে অগণিত ইলেকট্রিক বাল্বের আলোকচ্ছটা চারদিকে ছড়িয়ে গেল। লাল-নীল আলোয় ভেসে গেল সন্ধ্যার অন্ধকার। ছোট-বড় সকলে মিলে একসাথে গলা মিলিয়ে ক্রিসমাস ক্যারল গাইতে শুরু করলো। চারদিক থেকে গাড়িতে, পায়ে হেটে জনসাধারণ এই জাতীয় ক্রিসমাস ট্রির দিকে ভিড় করতে লাগলো। ঘন্টার পর ঘন্টা চললো উৎসব।

বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি লাইটিংয়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার কথা বলতে গেলে নিউ ইয়র্ক সিটির রকফেলার সেন্টারের কথা উল্লেখ করতেই হয়। ১৯৩১ সালের বড়দিনে রকফেলার সেন্টারের কন্সট্রাকশন কর্মীরা মিলে একটি বড় আকারের বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি সাজিয়েছিলেন। এর দুই বছর পর যখন রকফেলার সেন্টারের অফিস কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করা হয়েছিল, তখন থেকে ক্রিসমাস ট্রি লাইটিং এখানকার অফিসিয়াল ইভেন্টে পরিণত হয়েছে। এমনকি বর্তমান রকফেলার সেন্টারের এই অফিসিয়াল ইভেন্ট প্রতিবছরই টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়ে থাকে।

রকফেলার সেন্টারের অফিসিয়াল ক্রিসমাস ট্রি লাইটিং; Image Source: Winspire

এডিসনের বৈদ্যুতিক বাতির আবিষ্কারের সূত্র ধরে যে বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি লাইটের প্রবর্তন, তা কালের পরিক্রমায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছড়িয়ে গেছে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে। বড়দিনের উৎসব মানেই যেন বাহারি রঙের বৈদ্যুতিক বাতির আলোয় সুসজ্জিত ক্রিসমাস ট্রি। বর্তমানে ক্রিসমাস ট্রি’তে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন রঙের আধুনিক এলআইডি লাইট। অর্থাৎ এ কথা বলাই যায় যে, সময়ের সাথে সাথে বৈদ্যুতিক বাতির যত বিকাশ ঘটবে, তার সাথে বড়দিন উৎসবের এই অপরিহার্য অনুষঙ্গ বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস ট্রি-ও আরো বিকশিত হবে। 

This is the Bangla article about the invention of  electric Christmas lights and its history. 

All the sources are hyperlinked in the article. 

Feature Image: thoughtco.com 

Related Articles