Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ম্যাগিনদানাও হত্যাকাণ্ড: সাংবাদিকতার ইতিহাসে নৃশংসতম দিন

গভর্নর নির্বাচনের জন্য প্রার্থীতার সার্টিফিকেট (সার্টিফিকেট অব ক্যান্ডিডেসি) জমা দিতে গেলেই কেটে টুকরো করবে বিরোধী পক্ষ, ভাইস মেয়র ইসমায়েল টোটো মাঙ্গুদাদাতুর কাছে এরকম হুমকি আসছিল ঘনঘনই। এসব হুমকি তিনি অবশ্য খুব একটা গা করেননি। ভেবেছিলেন যত গর্জে, তত বর্ষে না। তথাপি ঘনঘন হুমকির মুখে কিছুটা সতর্কতা তো অবলম্বন করতেই হয়। সেই সতর্কতা হিসেবে তিনি বেছে নিলেন মিডিয়াকে।

মিডিয়ার সামনে তো আর প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে সাহস পাবে না, এই ভেবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ৩৭ জন সাংবাদিককে নিজের প্রার্থীতা জমা দেয়ার খবর সংগ্রহের জন্য আহ্বান জানান। অথচ মাঙ্গুদাদাতু তো বটেই, পুরো ফিলিপাইন, তথা পুরো বিশ্বকে বিস্ময়ে বিমূঢ় করে দিয়ে সেদিন রাজনৈতিক জিঘাংসার চূড়ান্ত পর্যায়ে অবতীর্ণ হয়েছিল তার প্রতিপক্ষ। আর তাতেই ঘটে গিয়েছিল সাংবাদিকতার ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রাণঘাতী এক ঘটনা।

আম্পাতুয়ান সিনিয়র; Image Source: cnnphilippines.com

ঘটনার সূত্রপাত হয় স্থানীয় গভর্নর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। দক্ষিণ ফিলিপাইনের সর্ববৃহত দ্বীপ মিন্দানাওয়ের একটি প্রদেশ ম্যাগিনদানাও। সেখানকার পৌরসভার নাম আম্পাতুয়ান। এই অঞ্চলটিতে গডফাদার সিনেমার মতোই শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে অত্যন্ত প্রভাবশালী হয়ে ওঠে একটি রাজনৈতিক পরিবার। আন্দাল আম্পাতুয়ান সিনিয়র ছিলেন সেই পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। ৮০’র দশকে প্রথম দৃশ্যপটে আসেন আম্পাতুয়ান সিনিয়র। ‘পিপলস পাওয়ার রেভ্যুলুশন’ নামে পরিচিত ১৯৮৬ সালের গণ আন্দোলনের অন্যতম পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে খোদ ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি তাকে আম্পাতুয়ানের পৌরসভা (শারীফ আগুয়াক নামে পরিচিত ফিলিপাইনে) অফিসে প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করেন। সেই থেকে ক্রমাগত নিজের অঞ্চলে প্রভাব বৃদ্ধি করতে থাকেন আম্পাতুয়ান সিনিয়র।

মারিয়া গ্লোরিয়া অরোয়ো; Image Source: tagalog-translator.blogspot.com

১৯৮৮ সালে স্থানীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে ১০ বছর পৌরসভার মেম্বার হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯৮ সালে গভর্নর পদের জন্য নির্বাচনে দাঁড়ান এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করেন আম্পাতুয়ান সিনিয়র! এটি ছিল মিন্দানাওয়ে প্রভাব প্রতিপত্তির সর্বোচ্চ আসনে আসীন হবার মতোই। এই নির্বাচন পরবর্তী সময়ে পরপর আরো দুটি গভর্নর নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সাহস হয়নি কারো! ফিলিপাইনের ডানপন্থী রাজনৈতিক দল লাকাস-ক্যাম্পির সদস্য মারিয়া গ্লোরিয়া ম্যাকপেগাল অরোয়ো ২০০১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে প্রথমেই তাই বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছিলেন আম্পাতুয়ান সিনিয়রের প্রতি, যার সাথে বন্ধুত্ব থাকা মানে পুরো মিন্দানাওয়ে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির সাথে বন্ধুত্বে আম্পাতুয়ান সিনিয়রের ক্ষমতা আকাশ ছুঁয়ে গেল। পুরো ম্যাগিনদানাও প্রদেশের ১৮ জন মেয়রই তিনি তার প্রভাব কাজে লাগিয়ে নিজের পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচিত করলেন। তবে এসবের মাঝেই লাকাস-ক্যাম্পির আরেক প্রভাবশালী সদস্য মাঙ্গুদাদাতু ম্যাগিনদানাও অঞ্চলে জনমত নিয়ে কাজ শুরু করলেন। ১৯৯৮ সালে গভর্নর নির্বাচিত হবার পর থেকেই আম্পাতুয়ান সিনিয়রের ক্ষমতার অপব্যবহার আর পারিবারতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা মানুষের মন বিষিয়ে তুলছিল। মাঙ্গুদাদাতু এ ব্যাপারটাই কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন। টানা চারবার গভর্নর হওয়া যায় না বলে ২০০৯ সালের নির্বাচনে নিজের ছোট ছেলে আম্পাতুয়ান জুনিয়রকে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

আম্পাতুয়ান জুনিয়র; image source: planetphilippines.com

কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো আম্পাতুয়ান পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিযোগীতা করার সিদ্ধান্ত নেয় মাঙ্গুদাদাতু পরিবার। আর তাতেই ক্রোধে ফেটে পড়েন আম্পাতুয়ান পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয় রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠে। তবে নির্বাচন কেন্দ্র করে নিজেদের দলেরই দুই পক্ষের কোনোরূপ সংঘাত চাননি রাষ্ট্রপতি অরোয়ো এবং লাকাস-ক্যাম্পির দলীয় চেয়ারম্যান গিলবার্তো থিওডোরো। তারা মাঙ্গুদাদাতু এবং আম্পাতুয়ানকে নিয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনায় বসেন শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছুতে। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। কেননা, আম্পাতুয়ানের দাবি ছিল একটাই, মিন্দানাওয়ের গভর্নর পদের জন্য তার পরিবারের বিপক্ষে কোনো প্রতিযোগী থাকবে না।

নির্বাচন যত এগিয়ে আসতে থাকে, পরিস্থিতি তত ঘোলাটে হতে থাকে। বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষও ঘটতে থাকে দুই রাজনৈতিক পরিবারের সমর্থকদের মাঝে। এরই মাঝে অব্যহত হুমকি উপেক্ষা করেই ২০১০ সালের গভর্নর নির্বাচনের জন্য ২৩ নভেম্বর প্রার্থীতা জমা দেয়ার দিন ঠিক করেন মাঙ্গুদাদাতু। সেদিন সকাল থেকেই তার বাড়িতে মানুষের ঢল নামে। তার সমর্থকদের পাশাপাশি তার নিমন্ত্রণে উপস্থিত হন তার আত্মীয়স্বজনেরাও। ছিল ৩৫ জনের মতো সাংবাদিক। মাঙ্গুদাদাতু মেয়র হিসেবে অফিশিয়াল কাজকর্মের জন্য প্রথমেই পৌরসভা অফিসে ছিলেন। বিকালে তার পরিবার, আত্মীয়স্বজন, আইনজীবী আর সাংবাদিকদের নিয়ে ৬টি গাড়ির একটি গাড়িবহর মাঙ্গুদাদাতুর বাড়ি থেকে পৌরসভা অফিসের দিকে যাত্রা শুরু করে।

ইসমায়েল মাঙ্গুদাদাতু; Image Source: planetphilippines.com

গাড়িবহরের অগ্রভাগে ছিল চারটি টয়োটা গ্রান্ডিয়া মাইক্রো ভ্যান, যেগুলোতে মাঙ্গুদাদাতুর লোকজন ছিল। এই চারটি গাড়ির পেছনে ছিল দুটি সংবাদকর্মীদের গাড়ি। এই গাড়িবহরের একটু পেছনেই ছিল আরো একটি সংবাদকর্মীদের গাড়ি, যেটা কিছুটা দেরিতে রওনা হয়েছিল। একটু দেরি করে ফেলাই তাদের জীবন রক্ষা করেছিল। কারণ, পেছনে দূর থেকে তারা যখন দেখতে পেল মাঙ্গুদাদাতুর গাড়িবহরে কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে, তখন তারা গাড়ি ঘুরিয়ে নিল এবং পুলিশে ফোন দিল।

“আমাদেরকে আম্পাতুয়ান জুনিয়র ও তার লোকজন বন্দী করে নিয়ে যাচ্ছে। আম্পাতুয়ান আমাকে চড় মেরেছে।” গাড়িবহর ছেড়ে যাওয়ার ঘন্টাখানেক পরই মাঙ্গুদাদাতুর মোবাইলে এই খুদে বার্তা এসেছিল তার স্ত্রীর কাছ থেকে। তিনি তৎক্ষণাৎ প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নিতে কাজে নেমে পড়লেন, উদ্ধার অভিযানে বের হলো পুলিশ, সেনাবাহিনী। কিন্তু ততক্ষণে ওদিকে হত্যালীলায় মত্ত হয়ে উঠেছে আম্পাতুয়ান জুনিয়র ও তার লোকেরা। পৌরসভা অফিস থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে শতাধিক (কোনো কোনো পত্রিকার দাবি ২০০ জন) সশস্ত্র লোকজন নিয়ে মহাসড়কের উপর মাঙ্গুদাদাতুর গাড়িবহরের পথ রোধ করে আম্পাতুয়ান জুনিয়র। দুর্ভাগ্যক্রমে মহাসড়কে কাকতালীয়ভাবে ঠিক সেসময় উপস্থিত হয় আরো দুটি গাড়ি। গাড়ি দুটিতে মোট ৫ জন মানুষ ছিলেন, যাদের একজন স্ট্রোক করায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

গর্ত থেকে তোলা হচ্ছে গাড়িগুলো; Image Source: nytimes.com

হঠাৎ চলে আসা দুটি গাড়ি সহ ৮টি গাড়িই রাস্তা থেকে নামিয়ে কিছুটা ভেতর দিকে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে পূর্বেই খুঁড়ে রাখা হয়েছিল বিশাল বিশাল গর্ত। সেখানে পৌঁছে গাড়ি থেকে সব যাত্রী নামিয়ে গাড়িগুলো গর্তে ফেলে ভরাট করে ফেলা হয়। একই সময় চলতে থাকে হত্যাযজ্ঞ। প্রথমেই হত্যা করা হয় মাঙ্গুদাদাতুর পরিবার পরিজনকে। গণকবর থেকে তোলা লাশ দেখে নিষ্ঠুরতার মাত্রা কল্পনা করতেও গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। মাঙ্গুদাদাতুর গর্ভবতী ছোটবোন এবং মামীকে হত্যা করা হয়েছিল কেবল তাদের পেটে লম্বা ছুরি প্রবেশ করিয়ে দিয়ে, যা পেটের বাচ্চা পর্যন্ত পৌঁছে! আরো বেশি নৃশংসতা করা হয় সংবাদকর্মীদের সাথে। অন্তত ৫ জন নারীকে হত্যার পূর্বে ধর্ষণ করা হয়, যাদের মাঝে ৪ জনই সাংবাদিক।

ঘাতকরা আদিম বর্বর কায়দায় প্রতিটি নারীকে হত্যা করে (গর্ভবতী দুজন বাদ) তাদের যৌনাঙ্গে গুলি করে! এমনকি তাতেও তাদের ক্ষোভ মেটেনি। হত্যা করার পর কেটে ফেলা হয় প্রত্যেকের মাথা। আর পুরুষদের হত্যার পূর্বে এলোপাতাড়ি ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় এবং শেষে মুখে গুলি করে চেহারা বিকৃত করে দেয়া হয় অনেকের! মাত্র ১ ঘন্টার মধ্যেই অর্ধশতাধিক মানুষকে নির্দয়ভাবে হত্যা করে গণকবরে ফেলে দেয়া হয়। তবে সেই কবরটি পুরোপুরি ভরাট করার পূর্বেই সেনাবাহিনীর টহল হেলিকপ্টারের আগমন টের পেয়ে সেখান থেকে সরে যায় আম্পাতুয়ানের লোকজন।

পরদিন গণকবর খুঁড়ে লাশ তুলতে গিয়ে বর্বরতার মাত্রা দেখে বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে যায় সকলে। বেশ কিছু লাশের বিচ্ছিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আর টুকরো টুকরো দেহাবশেষ এমনভাবে জটা পাকিয়েছিল যে ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা নির্ণয় করতে একদিনের বেশি সময় লেগে যায়। প্রাথমিকভাবে ৪০টির মতো মোটামুটি অক্ষত লাশ পাওয়া গিয়েছিল। ২৫ নভেম্বর ফিলিপাইন পুলিশের প্রধান পরিদর্শক জোসেফিনো সর্বমোট ৫৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। প্রাথমিকভাবে একটি স্থানীয় সংবাদ সংস্থা ধারণা করে যে, সেখানে মোট ১২ জন সংবাদকর্মী ছিল। ফিলিপাইনের সাংবাদিক ইউনিয়ন ধারণা করে যে, অন্তত ২০ জন সাংবাদিক সেই হত্যাকাণ্ডে নিহত হয়েছেন। পরবর্তীতে নিশ্চিত করা হয় যে, ম্যাগিনদানাও হত্যাকাণ্ডে ৫৮ জনের ৩২ জনই ছিলেন সাংবাদিক।

এই ঘটনার পর পুরো ফিলিপাইন জুড়ে সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে, সরকার পক্ষ-বিরোধী পক্ষ সকলেই এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানায় এবং বিচার দাবি করে। লাকাস-ক্যাম্পি আম্পাতুয়ান সিনিয়র ও তার দুই ছেলেকে নিজেদের দল থেকে বহিষ্কার করে। নভেম্বরের ২৬ তারিখ আম্পাতুয়ান জুনিয়রকে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়। তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং একটি স্থানীয় উগ্রপন্থী ধর্মীয় সংগঠনের উপর দায় চাপিয়ে দেন।

বর্বর সেই হত্যাকাণ্ডে নিহত ৫৮ জনের তালিকা; Image Source: rmn.ph

প্রভাবশালী আম্পাতুয়ান পরিবার ম্যাগিনদানাওয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে এই আশংকায় সেখানে সামরিক আইন জারি করা হয় ডিসেম্বরের শুরু থেকে। তাছাড়া স্থানীয় আদালতে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে জামিনে বেরিয়ে যেতে পারতো আম্পাতুয়ান জুনিয়র। সামরিক আইন জারির ফলে ‘হিবিয়াস কর্পাস’ করার রাস্তাও বন্ধ হয়। ডিসেম্বরের ৪ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত মাত্র ৮ দিন সামরিক আইন জারি ছিল ম্যাগিনদানাওয়ে। এই ক’দিনেই পুরো ম্যাগিনদানাওয়ে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ, গ্রেফতার করে আম্পাতুয়ানের ভাড়াটে গুণ্ডাদের আর উদ্ধার করা হয়ে কয়েক লক্ষ রাউন্ড গুলি, মর্টার, একে-৪৭ সহ অন্যান্য অস্ত্র।

২০১০ সালের শুরুর দিকেই ১৯৮ জন সন্দেহভাজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে রাষ্ট্রপক্ষ, যেখানে আম্পাতুয়ান সিনিয়র, তার দুই ছেলে জালদি এবং জুনিয়র, তার নাতি আনোয়ারের নাম ছিল। ২০০ জনের মতো আসামী আর ৩ শতাধিক সাক্ষীর এই মামলা সম্পন্ন হতে ১০০ বছরেরও বেশি লেগে যাবে বলে হতাশা প্রকাশ করেন অনেকে। বিচারকাজ চলতে থাকে, দীর্ঘসূত্রিতা বাড়তে থাকে, দেখা দেয় তথ্য-প্রমাণের অভাব, রাষ্ট্রপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে লক্ষ লক্ষ ডলার ঘুষ গ্রহণের। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সেসব অভিযোগ উড়িয়ে দেন এবং সুষ্ঠু বিচারের নিশ্চয়তা দেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মুক্তি পায় ২৮ জন। আর ২০১৫ সালে জেলে বন্দী আম্পাতুয়ান সিনিয়র লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে তার মামলাটিও সমাপ্ত ঘোষিত হয়। তার দুই ছেলে, নাতি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে বিচারকাজ এখনো চলছে।

নিহতদের স্মরণে তৈরি ফলক; Image Source: newsinfo.inquirer.net

২০১৮ সালে নৃশংস ম্যাগিনদানাও হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর পূর্তি হবে। অথচ এখন পর্যন্ত একজন অপরাধীকেও দোষী সাব্যস্ত করতে পারেনি আদালত! এখনো তথ্য-প্রমাণ আর তর্কই চলছে। এরই মাঝে দুবার সরকার পরিবর্তিত হয়েছে এবং প্রতিটি সরকারই আশ্বাস দিয়েছে ন্যায়বিচারের। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ আসামিদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অভিযোগ গঠন করা হবে এবং ২০২০ সালের মধ্যে প্রকৃত অপরাধীদের অভিযুক্ত করা যাবে।

এদিকে, ফিলিপাইনে সাংবাদিক হত্যার তথ্য-উপাত্ত বলছে, মাত্র ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে অপরাধীর সাজা হয়! তাই কেবল ফিলিপাইনের সাংবাদিক কিংবা জনগণের নয়, পুরো বিশ্বের মানুষেরই আশা এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন হবে এবং সাংবাদিক হত্যার দায়মুক্তির অপবাদ ঘোচাবে ফিলিপাইন।

This article is in Bangla Language. It's about the cruel massacre of maguindanao. For references, please check the hyperlinks inside the article.

Featured Image: yahoo.com

Related Articles