Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

রানী জেনোবিয়া: একইসাথে নিন্দিত ও নন্দিত এক ঐতিহাসিক চরিত্র

পালমিরা সিরিয়ার সেই শহর যা বহু বছর ধরে প্রাচীনকালের অপূর্ব সব নিদর্শন বহন করে আসছিল। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড পটার যার সম্পর্কে বলেছেন, “যে শহরে প্রাচ্য মিলিত হয় পাশ্চাত্যের সঙ্গে”। কারণ এই শহরের উপর দিয়েই বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের লোকজন রোমান উপনিবেশগুলোয় প্রবেশ করত। শহরটি আরেকটি যে কারণে ইতিহাসে প্রসিদ্ধ তিনি হলেন রানী জেনোবিয়া। তিনি জয় করেছিলেন মিশর, দখল করেছিলেন রোমের উপনিবেশ, আর নিজ রাজত্ব প্রায় রোমান সাম্রাজ্যের সমান বড় করে তুলেছিলেন।

২০১৪ সালে তোলা ঐতিহ্যবাহী পালমিরা শহরের একাংশের ছবি; source: wikimedia commons

ইতিহাসের পাতায় রানী জেনোবিয়া চরিত্রটি কখনো নির্ভীক দুর্ধর্ষ যোদ্ধার, কখনো ষড়যন্ত্রকারী খলনায়িকার, কখনো বিচক্ষণ ও সংস্কৃতি অনুরাগী এক শাসক, আবার কখনো বিবেচনাহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য হারানোর এক উদাহরণ। যেমনই হোক, জেনোবিয়া ইতিহাসের পাতায় তাঁর শক্ত জায়গা ঠিকই করে নিয়েছিলেন। সেই সময়ে কোনো নারী অন্তঃপুর থেকে বের হয়ে এসে নিজ যোগ্যতায় নিজের এক আলাদা পরিচয় সৃষ্টি করেছেন- এটাও খুব কম কিছু না

“তাঁর চেহারায় ছিল গাঢ় এক কৃষ্ণকায় আভা, প্রচলিত স্বাভাবিকতার চেয়েও বেশি শক্তিশালী ও কালো ছিল তাঁর চোখ, ছিল ঐশ্বরিক মহানুভবতায় ভরা আত্মা ও অসাধারণ সৌন্দর্য। এতই সাদা ছিল তাঁর দাঁত যে অনেকেই মুক্তো ভেবে ভুল করত”- অগাস্টান ইতিহাসে এভাবেই বর্ণনা দেয়া হয় জেনোবিয়ার (রোমান সম্রাটদের জীবন-চরিতের সংগ্রহকে বলা হয় ‘অগাস্টান হিস্টোরি‘)।

অগাস্টান হিস্টোরির প্রথম খন্ডের অনুবাদ; source: britannica.com

পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে তাঁর জীবনের মূল পাঁচটি ঐতিহাসিক বছরের ইতিহাসও তাঁর প্রকৃত রূপ ও চরিত্র বুঝতে খুব একটা সাহায্য করে না। এমনকি তাঁর সেই পাঁচ বছরের রাজত্বের ঘটনাও একেক জায়গায় একেকভাবে বর্ণনা দেয়া, কেননা সেই ইতিহাস লিখেছিল রোমানরা, জেনোবিয়ার সাথে যাদের চিরকাল বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক।

ভ্যাটিকান মিউজিয়ামে রাখা রানী জেনোবিয়ার আবক্ষ মূর্তি; source: britannica.com

২৪০ খ্রিস্টাব্দের দিকে সিরিয়ার সম্ভ্রান্ত পালমিরীয় পরিবারে জন্ম নেয় জেনোবিয়া। তাঁর জন্মগত পালমিরীয় নাম ছিল ব্যাট-জাব্বাই। পালমিরিয়ার কূটনৈতিক ও দ্বিতীয় প্রধান ভাষা গ্রিকে রাখা নাম জেনোবিয়াই তিনি ব্যবহার করতেন। জেনোবিয়া শব্দের অর্থ যার জীবন জিউস থেকে পাওয়া।

তাঁর পরিবার সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না। আর যেগুলো জানা যায় তা-ও কতটা নির্ভরযোগ্য তাতে সন্দেহ আছে। তবে এ ব্যাপারে সবচেয়ে জনপ্রিয় যে গল্প আছে তা হলো জেনোবিয়ার বাবা ছিলেন বেশ স্বনামধন্য ব্যক্তি, গোত্র-প্রধান। অর্থাৎ বেশ নামীদামী পরিবারেই জন্ম জেনোবিয়ার। তবে তাঁর বাবার ছিল বেশ কয়েকজন স্ত্রী ও অনেক সন্তান। যদিও সময়ে সময়ে তাঁর প্রয়োজন হত কন্যাসন্তানের, যাতে সেই কন্যাকে বিয়ে দেয়ার মাধ্যমে প্রতিবেশী গোত্রের সাথে সন্ধি স্থাপন করা যায়। সেই পরিণতি যখন জেনোবিয়ার ভাগ্যে এসে হাজির হয়, তাকে অস্বীকার করে লুকিয়ে পড়েন জেনোবিয়া এবং বড় হতে থাকেন আরো অনেক ছেলের সাথে। তাই সমাজের চোখে যেগুলো পুরুষালি বৈশিষ্ট্য, যেমন শিকার করা বা শারীরিক কষ্ট সহ্য করা, এগুলো সবই জেনোবিয়ার চরিত্রে বিদ্যমান ছিল।

‘অরেলিয়াস জেনোবিয়াস’ নামে একজনের সম্মানে লেখা শিলালিপি, যা পালমিরায় পাওয়া গেছে, অনেকেই যাকে জেনোবিয়ার পিতা মনে করেন; source: wikimedia commons

ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ এডওয়ার্ড গিবন তাঁর ‘দ্য হিস্টোরি অফ দ্য ডিক্লাইন এন্ড ফল অফ দ্য রোমান এম্পায়ার’ বইতে জেনোবিয়া সম্পর্কে লেখেন, “জেনোবিয়া তাঁর লিঙ্গের সবচেয়ে অপূর্ব ও একই সাথে পরাক্রমশালী হিসেবে সম্মানিত।” তিনি তাঁর বইতে আরো লেখেন, “জেনোবিয়া নিজেকে মিশরের মেসিডোনীয় রাজাদের বংশধর দাবী করেন; সৌন্দর্যে তাঁর পূর্বপুরুষ ক্লিওপেট্রার সমান এবং শুদ্ধতা ও সাহসিকতায় রাজকুমারীকেও ছাড়িয়ে যান।” তবে নিজেকে ক্লিওপেট্রা ও টলেমীর উত্তরসূরী দাবী করার পেছনে জেনোবিয়ার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল বলেই ইতিহাসবিদদের ধারণা, কেননা তাতে মিশর ও টলেমীর সিংহাসনের সাথে তাঁর সরাসরি যোগসূত্র তৈরি হত।

জেনোবিয়ার প্রতিকৃতির যে একমাত্র চিহ্ন পাওয়া যায় তা হলো সে সময়কার প্রচলিত একটি মুদ্রা যার উপর তাঁর ছবি মুদ্রণ করা। যদিও গিবন ও অন্যান্য ইতিহাসবিদগণ তাদের লেখায় জেনোবিয়ার রূপের বেশ ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, কিন্তু মুদ্রায় খচিত আদলে বেশ ভিন্ন রূপই দেখা যায়। হতে পারে তখনকার সময়ের অপটু চিত্রাঙ্কন বা মুদ্রা ক্ষয়প্রাপ্ত হবার কারণে ছবি পরিবর্তিত হয়ে আসল জৌলুশ হারিয়ে ফেলেছিল।

জেনোবিয়ার প্রতিকৃতি খচিত মুদ্রা; source: wikimedia commons

জেনোবিয়ার রানী হবার প্রথম অধ্যায় ছিল পালমিরার নগরাধ্যক্ষ সেপ্টিমিয়াস অডিনেথাসের সাথে বিয়ে হওয়া। জেনোবিয়া হন অডিনেথাসের দ্বিতীয় স্ত্রী। জেনোবিয়াকে বিয়ের আগেই প্রথম স্ত্রী থেকে তাঁর এক পুত্রসন্তান ছিল, হিরোডাস, যে ছিল তাঁর সিংহাসনের সম্ভাব্য উত্তরাধিকার। পরবর্তীতে জেনোবিয়ারও এক ছেলে হয়, যার নাম রাখা হয় ভ্যাবলেথাস।

তৎকালীন (২৫৩ থেকে ২৬০ খ্রিস্টাব্দ) রোম সম্রাট ভ্যালেরিয়ান, পার্সিয়ানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরাজিত ও বন্দী হন। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে পার্সিয়ান রাজা প্রথম সাপুর। ভ্যালেরিয়ানের পুত্র গ্যালিনিয়াস যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, তখন অডিনেথাস এগিয়ে আসেন এবং যুদ্ধে সাপুরকে পরাজিত ও হত্যা করেন। এরই পুরষ্কার স্বরূপ রোম সাম্রাজ্যের পূর্বভাগের পুরোটার নগরাধ্যক্ষের দায়িত্ব পান তিনি। দিন দিন তাঁর ক্ষমতা বাড়তে থাকে। ২৬১ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় এক বিদ্রোহীকে দমনের মাধ্যমে তিনি পুরোপুরি পালমিরার ক্ষমতা হাতে পান, নিজেকে পালমিরার রাজা ঘোষণা করেন।

অডিনেথাসের আবক্ষ মূর্তি; source: wikimedia commons

২৬৭ খ্রিস্টাব্দে অডিনেথাস ও তাঁর পুত্র হিরোডাস গুপ্তহত্যার শিকার হন। অগাস্টান ইতিহাস অনুযায়ী অডিনেথাসের চাচাতো ভাই মিয়োনিয়াস এই গুপ্তহত্যা ঘটান। কিন্তু অনেকেই বিশ্বাস করেন, রানী জেনোবিয়াও এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন। কারণ তিনি নিজ পুত্রকে উত্তরাধিকার হিসেবে দেখতে চাইতেন। এই বিশ্বাসের পক্ষে অবশ্য তেমন প্রমাণ পাওয়া যায় না।

ষড়যন্ত্র করুন বা না-ই করুন, এর পরবর্তী ঘটনাগুলো তাঁর অনুকূলেই ঘটেছিল। অডিনেথাসের পর তাঁর পুত্র ভ্যাবলেথাসের সিংহাসনে বসার কথা, কিন্তু সে সময়ে  তাঁর বয়স মাত্র ১০ বছর হওয়ায় জেনোবিয়াকে রাজপ্রতিনিধির দায়িত্ব দেয়া হয়। অর্থাৎ তিনি পুত্রের পক্ষ হতে রাজ্য সামলাবেন যতদিন না পুত্র প্রাপ্তবয়স্ক হয়।

মুদ্রায় খচিত ভ্যাবলেথাসের প্রতিকৃতি; source: wikimedia commons

জেনোবিয়া তাঁর রাজসভাকে মূলত শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেন, বিভিন্ন পন্ডিত ও দার্শনিক ছিলেন তাঁর সভাসদ। এদের মধ্যে দার্শনিক ক্যাসিয়াস লংগিনাস হন তাঁর সবচেয়ে ভরসাযোগ্য উপদেষ্টা। তবে ক্যাসিয়াসের ব্যাপারে শোনা যায় যে, তাঁর প্ররোচনাতেই রানী জেনোবিয়া রোমের বিরুদ্ধাচারণ করেছিলেন এবং নিজের পতন ডেকে এনেছিলেন।

রানী হিসেবে জেনোবিয়া তাঁর মৃত স্বামীর রাজ্যনীতি অনুসরণ করেন। ক্ষমতা পেয়েই ধীরে ধীরে তিনি পালমিরা বাদে বাকি সিরিয়াও নিজ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। ২৬৮ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিনিয়াসের হত্যার পর ক্লডিয়াস ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু তিনিও মৃত্যুবরণ করেন অসুস্থতায়। রানী জেনোবিয়া দেখলেন এই সুযোগ, রোম তার অন্তর্বর্তী সমস্যা নিয়েই ব্যাস্ত, এই ফাঁকে তিনি মিশরের যে অংশ রোমের দখলে ছিল সেখানে তাঁর সেনাপতি পাঠিয়ে সেটিকে নিজের দাবি করে বসেন। মিশর পেয়ে যাওয়ার পর জেনোবিয়া লেভান্ট ও এশিয়া মাইনরের এলাকাগুলোর সাথে কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা চালান এবং নিজের ক্রমবর্ধমান সাম্রাজ্যের মধ্যে যুক্ত করেন। যদিও জেনোবিয়া প্রকাশ্যে রোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াননি, কিন্তু এটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল যে রোমান সাম্রাজ্যের বিপক্ষে তিনি তাঁর নিজস্ব সাম্রাজ্য দাঁড় করাচ্ছেন।

অডিনেথাসের অধীনে রোমান অঞ্চল (হলুদ রঙ) এবং পালমিরীয় রাজ্য (সবুজ রঙ); source: wikimedia commons

এই সময়ের মধ্যে অরেলিয়ান রোমের রাজা হন। এর মধ্যে বিভিন্নভাবে জেনোবিয়া রোমের অসন্তোষের কারণ সৃষ্টি করেছে। যেমন, তাঁর পুত্র ও অরেলিয়ানের প্রতিকৃতি সম্বলিত মুদ্রার বদলে নিজের প্রতিকৃতি সম্বলিত মুদ্রা চালু করা, যে পার্সিয়ানদের সাথে রোমের চিরশত্রুতা তাদের সাথে বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি করা, রোমের অনুমতির তোয়াক্কা না করেই বিভিন্ন অঞ্চল নিজ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা, নিজের ও পুত্রের নামের সাথে সেই পদবি যুক্ত করা যার উপর কেবল রোমের রাজ পরিবারের সদস্যদের অধিকার আছে।

অন্যান্য সম্রাটদের চোখে জেনোবিয়ার এসব কাজের পেছনের উদ্দেশ্য ধরা না পড়লেও অরেলিয়ানের চোখ এড়ায়নি। অরেলিয়ান সেনাপ্রধান থেকে রাজ্যপ্রধান হয়েছিলেন, তাই তিনি প্রথমে একজন যোদ্ধা, এরপর রাজনীতিবিদ। তিনি জেনোবিয়ার কাজকর্মের ব্যাখ্যা চেয়ে কোনো দূতও পাঠাননি, অপেক্ষাও করেননি তার দিক থেকে আসা কোনো ব্যাখ্যার। তিনি সোজা তার সামরিক বাহিনী নিয়ে পালমিরীয় সাম্রাজ্যে হানা দেন জেনোবিয়ার কাছ থেকে পূর্ব-উপনিবেশ পুনরুদ্ধার করতে।

মুদ্রায় খচিত রাজা অরেলিয়ানের প্রতিকৃতি; source: britannica.com

এশিয়া মাইনর দিয়ে প্রবেশ করে অরেলিয়ান প্রত্যেকটি নগরীকে গুঁড়িয়ে দেন যারা জেনোবিয়ার পক্ষে ছিল। তবে একপর্যায়ে অরেলিয়ানের তীব্র আক্রোশের মুখে বাকি নগরীগুলো আত্মসমর্পণ করাকেই শ্রেয় মনে করে। অরেলিয়ান ও তাঁর যোদ্ধারা সিরিয়ায় প্রবেশ করে। এদিকে জেনোবিয়াও তাঁর সামরিক বাহিনীকে যুদ্ধের আদেশ দেন। ড্যাফনি নগরীতে দুই পক্ষ যুদ্ধে লিপ্ত হয়, যা ইম্মেইর যুদ্ধ নামে পরিচিত। সেই যুদ্ধে অরেলিয়ানের বাহিনী জয়লাভ করে। জেনোবিয়া তাঁর সেনাপ্রধান সহ পালিয়ে যান ইমেসা নগরীতে, যেখানে তাঁর আরো জনবল এবং লুকানো সম্পদ ছিল। ইমেসা নগরীর বাইরে অরেলিয়ান ও জেনোবিয়ার বাহিনীর মধ্যে পুনরায় যুদ্ধ হয় এবং অরেলিয়ান আবারো জয়ী হন। এবারও জেনোবিয়া পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

হার্বার্ট গুস্তাভ ১৮৮৮ সালে জেনোবিয়ার এই ছবিটি আঁকেন যেখানে আত্মসমর্পণের আগে শেষবারের মত পালমিরাকে দেখছেন তিনি; source: nationalgeographic.com

এবার তিনি পালিয়ে পালমিরায় যান এবং আত্মগোপন করে পার্সিয়ান সাহায্য আসার অপেক্ষা করেন। কিন্তু যখন সেই সাহায্য এসে পৌঁছুতে ব্যর্থ হয়, তিনি তাঁর পুত্রকে নিয়ে উটের পিঠে পার্সিয়াতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাকে ধরার জন্য অরেলিয়ান অশ্বারোহী বাহিনী পাঠান। তারা জেনোবিয়াকে ইউফ্রেটিস নদীর তীরে বন্দী করে অরেলিয়ানের সামনে পেশ করেন। জেনোবিয়া নিজেকে নির্দোষ দাবী করেন ও বলেন যে, তিনি তাঁর সভাসদদের প্ররোচনায় ওসব কাজ করেছেন, যার মধ্যে মুখ্য প্ররোচনাকারী হিসেবে ক্যাসিয়াস লংগিনাসের নাম উঠে আসে। ক্যাসিয়াসকে সাথে সাথেই মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। আর জেনোবিয়াকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রোমে।

পরাজিত জেনোবিয়াকে অরেলিয়ানের সামনে হাজির করার চিত্র শিল্পীর তুলিতে, যা প্রাডো মিউজিয়ামে সংরক্ষিত; source: ancient.eu

জেনোবিয়ার পরিণতি কী হয়েছিল তা নিয়ে আছে ভিন্ন মত। কোনো ইতিহাসবিদের মতে, তিনি রোমে যাওয়ার আগেই পুত্রসহ নদীতে ডুবে মারা গিয়েছিলেন। কারো মতে তাকে পায়ে শেকল পরিয়ে রোমের রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং পরবর্তীতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তবে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য যে ঘটনা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায় তা হলো তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয় এবং তিনি রোমেরই এক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিকে বিয়ে করে বাকি জীবন সুখেই পার করেন। তিনি যে বাড়িতে বাস করতেন বলে ধারণা করা হয় তা আজও রোমে পর্যটকদের জন্য দর্শনীয় স্থান হিসেবে সুপরিচিত।

ফিচার ইমেজ: nationalgeographic.com

Related Articles