Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

রবার্ট ব্রুস: অধ্যবসায়ের অবতার স্কটিশ স্বাধীনতার বীর

রবার্ট ব্রুসের কথা দেখলেই আপনার মনে চলে আসে মাকড়শার গল্প, তাই না? ছোটবেলায় পড়ে আসা গল্পটি দিয়ে আমরা চিনেছিলাম অধ্যবসায়ের অবতার হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখা স্কটিশ স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর রবার্ট ব্রুসের কথা। কিন্তু সে গল্পটি কতটা সত্য? সংক্ষেপে তার পুরো জীবনকাহিনী নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।

রবার্ট ব্রুস ভিক্টোরীয় শিল্পীর তুলিতে; Source: Wikimedia Commons

তার নাম কিন্তু ছিল শুধু রবার্ট, রাজা প্রথম রবার্ট (Robert I)। ব্রুস (The Bruce) তার উপাধি। ১৩০৬ সাল থেকে ১৩২৯ সালে মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি ছিলেন স্কটদের রাজা

তিনি যে কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেটা নিশ্চিত করে জানা যায় না, তবে প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী সেটি ছিল আয়রশায়ারের (Ayrshire) টার্নবেরি (Turnberry) দুর্গে। আর সেটা ছিল ১২৭৪ সালের কথা। তার বাবা ছিলেন রবার্ট দ্য ব্রুস (Brus), অ্যানানডেলের (Annandale) ষষ্ঠ লর্ড। দ্বাদশ শতকের স্কটিশ রাজা প্রথম ডেভিডের (David I) বংশধর বলে দাবি করতেন তিনি, অর্থাৎ স্কটিশ সিংহাসনের ওপর রয়েছে ব্রুসদের অধিকার।

টার্নবেরি দুর্গের ধ্বংসাবশেষ; Source: Wikimedia Commons

১৮ বছর বাদে, স্কটল্যান্ডের রাজা নির্বাচিত হন জন ব্যালিয়ল (John Balliol)। কিন্তু খোদ স্কটিশ লর্ডদের মাঝেই এ রাজা নির্বাচন নিয়ে ছিল দ্বন্দ্ব। তখন ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম এডওয়ার্ডের কাছে সালিশ দেয়া হলো, তিনি রায় দেবেন এ ব্যাপারে। রাজা এডওয়ার্ড ব্যালিয়লের ক্ষমতা এতই কমিয়ে দিলেন যে, স্কটল্যান্ড আদতে ইংল্যান্ডের প্রজা বা সামন্তে (vassal) পরিণত হল। আর সিংহাসনের দাবিদার হিসেবে ব্যালিয়লের প্রতিদ্বন্দ্বী যেহেতু রবার্ট ব্রুস ছিলেন, সেহেতু তিনি আর তার বাবা ১২৯৬ সালে ইংল্যান্ডের রাজার কাছে আনুগত্যের লিখিত অঙ্গীকার দিয়ে আসেন। আমাদের গল্পের নায়ক রবার্টের বয়স তখন ২২ বছর।

পরের বছর ইংলিশদের শাসনের বিরুদ্ধে স্কটিশদের বিদ্রোহ দানা বাঁধতে থাকে। সে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন বিখ্যাত উইলিয়াম ওয়ালেস (William Wallace), ব্রেভহার্ট ছবির ভক্তরা তাকে ভালো চিনে থাকবেন। ইংল্যান্ডের রাজা এডওয়ার্ড তখন ফ্রান্সে থাকায় তিনি রবার্ট ব্রুস ও অন্যান্য স্কটিশ লর্ডদের অনুরোধ করলেন এ বিদ্রোহ দমন করতে। তারাও এর সমর্থনেই ছিলেন, কারণ এতে করে ক্ষমতাসীন জন ব্যালিয়লের প্রতি বিরোধিতা দেখানো হয়।

ব্রেভহার্ট ছবিতে উইলিয়াম ওয়ালেসরূপী মেল গিবসন; Source: Couch Tomato

কিন্তু, ঘটনা ঘুরে গেল কিছু পরেই। রাজা এডওয়ার্ডের আদেশে রবার্ট দ্য ব্রুস যখন উত্তরের দিকে ডগলাসে ছুটে যাচ্ছিলেন, তখন মাঝপথেই তার হঠাৎ মনে হয় তিনি ভুল করছেন, তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, যোগ দেবেন স্কটিশ বিদ্রোহীদের সাথে। তিনি বলেন, এ সম্পর্কে, “নিজের রক্ত-মাংসকে কেউ ঘৃণা করে না, আমিও তার ব্যতিক্রম নই। যে জাতিতে আমার জন্ম, তাদের সাথে আমার অবশ্যই যোগ দিতে হবে।”

বিদ্রোহীরা স্টারলিং ব্রিজে প্রথমে জয়লাভ করেছিল। কিন্তু স্কটিশদের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে ১২৯৮ সালে ইংলিশদের হাতে পরাজিত হয় উইলিয়াম ওয়ালেসের দল। আর এ পরাজয়ের পর রবার্ট ব্রুস ইংলিশদের সাথে আবার চুক্তি স্বাক্ষর করেন, ফলে রাজা এডওয়ার্ডের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে তিনি নিজের জমিজমা রাখতে সমর্থ হন।

ওদিকে রাজা এডওয়ার্ড একটা চাল চাললেন, তিনি জন ব্যালিয়লের ভাগ্নে জন কমিন (John Comyn) আর এদিকে রবার্ট ব্রুস দুজনকেই স্কটল্যান্ডের রক্ষক (Guardian of Scotland) পদে ভূষিত করলেন। অথচ এ দুজন ছিলেন পরস্পরের জাতশত্রু। তাই যা হবার তা-ই হলো, দ্বন্দ্ব বেধে গেল দুজনের, আর সেটি ছিল ১৩০৬ সাল

রবার্ট দাবি করলেন, কমিন বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, কমিন সেটা অস্বীকার করলেন। ডামফ্রিজের চার্চে ঝগড়ার একপর্যায়ে রবার্ট ব্রুস কমিনকে নিজ হাতে ছুরিকাঘাতে হত্যা করলেন। এর ফলে যা হলো, রাজা এডওয়ার্ড স্কটল্যান্ডে রবার্ট ব্রুসের আধিপত্য বা শাসনকে অনাহূত বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন। এখানেই শেষ নয়, পোপও আরেক কাঠি সরেস, তিনি রবার্ট ব্রুসকে এক্সকমিউনিকেট (excommunication) করলেন, যার মানে খ্রিস্টান চার্চ তাকে হারাম ঘোষণা করল। তিনি আর কোনো খ্রিস্টীয় কার্যকলাপ করতে পারবেন না চার্চে।

কমিনকে খুন করলেন রবার্ট © Felix Philippoteaux

তবে রবার্ট ব্রুস কি আর তা মানেন? দূর দেশে বহিষ্কৃত হয়ে চার্চের এক্সকমিউনিকেশনের মুখোমুখি হবার চাইতে তিনি সিংহাসনের জন্য লড়াই করাকে বেশি ভালো মনে করলেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন নিজেকে স্কটল্যান্ডের রাজা ঘোষণা করবেন। সত্যি সত্যি, ১৩০৬ সালের ২৫ মার্চ, স্কোন অ্যাবিতে স্কটিশ চার্চ রবার্ট ব্রুসকে স্কটল্যান্ডের রাজা ঘোষণা করে।

রবার্টকে মুকুট পরানো হচ্ছে, মূর্তিটি এডিনবরা দুর্গে; Source: Wikimedia Commons

এডওয়ার্ডের কাছে মনে হলো এ যেন দুধকলা দিয়ে সাপ পোষা হয়েছে এতদিন। একটুও দেরি না করে তিনি আক্রমণ করলেন স্কটল্যান্ড। আর ইংল্যান্ডের সেনাবাহিনীর হাতে তুলোধুনো হলো রবার্ট ব্রুসের সেনাবাহিনী। রবার্ট কোনোমতে পালিয়ে উত্তর আয়ারল্যান্ডের অ্যান্টরিম তীরে (Coast of Antrim) চলে গেলেন। শীতকালটা ওখানেই কাটালেন।

পরের বছর তিনি স্কটল্যান্ডে ফিরে ইংলিশদের বিরুদ্ধে গেরিলা আক্রমণ করতে লাগলেন। ততদিনে রাজা প্রথম এডওয়ার্ড কিন্তু মারা গিয়েছেন (৭ জুলাই), আর ইংল্যান্ডের সিংহাসনে তখন তারই ছেলে দ্বিতীয় এডওয়ার্ড (Edward II)। এই এডওয়ার্ড ১৩০৬ সালেই নাইট হন এক রাজকীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু তার সেনাবাহিনী অনেক দিন ধরে চলে আসা রবার্ট ব্রুসের গেরিলা আক্রমণের চূড়ান্ত রূপের কাছে ব্যানকবার্ন যুদ্ধে হেরে যায় ১৩১৪ সালের জুনে। আবারও শুরু হলো স্বাধীন স্কটিশ রাজতন্ত্র।

ব্যানকবার্ন যুদ্ধক্ষেত্রে রবার্ট ব্রুসের মূর্তি; Source: Wikimedia Commons

এই ১৩০৬ সাল থেকে ১৩১৪ সালের মাঝেই তিনি অনেক অনেকবার আক্রমণ করেছিলেন, হেরেছেনও। আর এ পটভূমিটাই ব্যবহার করা হয় তার অধ্যবসায় আর মাকড়সার গল্পের কাহিনীর জন্য। তবে ১৩০৬-০৭ সালের মাঝেই গল্পের পটভূমি বেশি ফেলা হয়, বলা হয় এসময় তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডের র‍্যাথলিন দ্বীপে (Rathlin Island) ছিলেন। তখন তিনি একটি মাকড়সাকে বারবার চেষ্টা করতে দেখেন এক গুহার ছাদের এক পাশ থেকে আরেক পাশে জাল বুনে যাবার। দুবার ব্যর্থ হবার পর তৃতীয়বারে মাকড়সাটি সফল হয়। এরপরই উৎসাহিত ও উজ্জীবিত হয়ে রবার্ট আরো গেরিলা আক্রমণ করতে থাকেন, বারংবার।

আরেক সংস্করণে, গুহা নয়, বরং এক বাড়িতে এ ঘটনা দেখেন রবার্ট। কোনো কোনো গল্পে আবার সাতবারও বলা হয়! এই গল্পটি প্রথম পাওয়া যায় কয়েকশ বছর পরে স্যার ওয়াল্টার স্কটের ‘Tales of a Grandfather‘ বইতে। এ গল্পের কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই, পরবর্তী কোনো জীবনীকারের মস্তিষ্কপ্রসূতই ধরা হয় একে। ইহুদী উৎসে কিং ডেভিড এবং পারস্য উৎসে তৈমুর লং ও একটি পিঁপড়ার গল্পেও একই ধরন দেখতে পাওয়া যায়।

এই সেই র‍্যাথলিন দ্বীপ; Source: Irish News

ওদিকে রাজা দ্বিতীয় এডওয়ার্ড কিন্তু থেমে থাকেননি, চেষ্টা চালিয়ে যান স্কটল্যান্ড পুনরুদ্ধারের। কিন্তু বিরক্ত হয়ে ১৩২০ সালে স্কটিশ চার্চ ও লর্ডগণ আরব্রোথ ঘোষণার (Declaration of Arbroath) দ্বারা রবার্টকে স্কটল্যান্ডের ন্যায্য রাজা হিসেবে মেনে নেন। এমনকি পোপও তার এক্সকমিউনিকেশন ফিরিয়ে নিয়ে তাকে স্কটল্যান্ডের রাজা স্বীকৃতি দেন।

আরব্রোথ ঘোষণাপত্র; Source: Wikimedia Commons

হতে পারে যে স্কটল্যান্ডের চাইতে ফ্রান্সের সাথে সম্পর্ক ভালো করতে বা রাখতে বেশি মনোযোগ দেয়াতে রাজা এডওয়ার্ড হারান স্কটল্যান্ডকে। এমনকি ফ্রান্সের সাথে সম্পর্ক ভালো করতে তিনি ফ্রান্সের রাজা ফিলিপের কন্যা ইসাবেলাকে বিয়ে করেছিলেন। ১৩২২ সাল পর্যন্ত তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছিল বলে মনে হয়। কিন্তু এরপর ইসাবেলা চলে গেলেন ফ্রান্সে, আর ফেরার নাম নেই। তিনি নাকি অপমানিত ছিলেন যে তিন তিনবার স্কটিশদের থেকে তাকে পালাতে হয়েছে- অজুহাতের তালিকায় ছিল আরো অনেকগুলো কারণ। পরে দেখা গেলো বহিষ্কৃত লর্ড রজার মর্টিমারের সাথে চলছে ইসাবেলার রোম্যান্টিক সম্পর্ক।

এডওয়ার্ডের শত্রুরা সবাই ইসাবেলা ও মর্টিমারকে ঘিরে ধরল। এডওয়ার্ড ক্রমেই আতংকিত হতে লাগলেন, পাছে মর্টিমার ইংল্যান্ড আক্রমণ করে বসে। সত্যি সত্যি, ইসাবেলা আর মর্টিমার ১৩২ জাহাজ আর ৮টি যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে ইংল্যান্ড আক্রমণে রওনা দেন। বিশাল নাটকীয় কাহিনীর পর অবরুদ্ধ হন রাজা এডওয়ার্ড নিজের দুর্গে। তিনি যে আসলে কীভাবে শেষপর্যন্ত মারা গেলেন সেটা একটা রহস্য, আসলেই তার মৃত্যু নিয়ে প্রচলিত তথ্য সঠিক কিনা তা জানা যায় না। ১৩২৭ সালে এ ঘটনা ঘটে।

এডওয়ার্ডের ‘প্রস্থানের’ পর ইসাবেলা ও মর্টিমার স্কটল্যান্ডের সাথে শান্তিচুক্তিতে যায়। ১৩২৮ সালের মে মাসে ইসাবেলা ও মর্টিমারের পুত্র রাজা তৃতীয় এডওয়ার্ড এডিনবরা-নর্দ্যাম্পটন চুক্তি সাক্ষর করেন, যার মধ্য দিয়ে স্কটল্যান্ড হয় একটি স্বাধীন রাজ্য।

প্রথম স্ত্রী ইসাবেলার মৃত্যুর পর এলিজাবেথ নামের আরেকজনকে বিয়ে করেছিলেন রবার্ট দ্য ব্রুস। রবার্ট মারা যান ১৩২৯ সালের ৭ জুন ডাম্বারটনের (Dumbarton) কাছে, নিজের ৫৫ তম জন্মদিনের মাসখানেক আগে। তার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যায় না। তাকে সমাহিত করা হয় ডানফার্মলাইন অ্যাবিতে। ১৮১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রবার্ট ব্রুসের কংকাল পুনরায় আবিষ্কৃত হয়। বর্তমানে তার খুলি থেকে তার চেহারা রিমডেলিং করা হয়েছে বেশ ক’বার।

ডানফার্মলাইন অ্যাবি, এখানে শায়িত রবার্ট ব্রুস; Source: Wikimedia Commons

তার বড় ছেলে দ্বিতীয় ডেভিড এরপর স্কটল্যান্ডের রাজা হয়েছিলেন। রবার্ট ব্রুস আমৃত্যু সেই কমিনকে হত্যা করার পাপ বয়ে বেড়ান। ক্রুসেডে যাবার পণ করেও যাননি- এ পাপের বোঝাও তিনি সহ্য করতে পারছিলেন না। এ কারণে মৃত্যুর আগে তিনি অনুরোধ করে যান, তার পাপের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে তার হৃৎপিণ্ডটাকে যেন মৃতদেহ থেকে আলাদা করে পবিত্র ভূমিতে নিয়ে যাওয়া হয়, জেরুজালেমের দিকে। চেষ্টা করাও হয়েছিল জেরুজালেম নিয়ে যাবার, কিন্তু স্পেন পর্যন্ত নিয়ে যাবার পর আর সম্ভব হয়নি এগোনো, নিহত হন হৃৎপিণ্ডবাহী বহরের বেশিরভাগ স্কট নাইটই। এরপর হৃৎপিণ্ডটিকে (ও সাথে তার হাড়গুলোও) ফিরিয়ে আনা হয় স্কটল্যান্ডে আর সমাহিত করা হয় মেলরোজ অ্যাবিতে। ১৯২০ সালে হৃৎপিণ্ডটি পুনরায় আবিষ্কৃত হয় এবং আবার সমাহিত করা হয়, তবে জায়গাটা চিহ্নিত করা হয়নি। ১৯৯৬ সালে হৃৎপিণ্ড রাখা সিন্দুকটি আবার পাওয়া যায় এবং পরীক্ষা করে নিশ্চিত করা হয় মানবটিস্যুর উপস্থিতি। ১৯৯৮ সালে মেলরোজ অ্যাবিতে আবারও সমাহিত করা হয় সেটি।

এই সেই মেলরোজ অ্যাবি, যেখানে রবার্ট ব্রুসের হৃৎপিণ্ড সমাহিত; Source: TripAdvisor

স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার জন্য রবার্ট ব্রুস এক অবিস্মরণীয় নাম। এজন্য উইলিয়াম ওয়ালেসের পাশাপাশি রবার্ট দ্য ব্রুসও আজ স্কটল্যান্ডের জাতীয় বীর।

ফিচার ইমেজ: YouTube

Related Articles