দ্বিতীয় মেসিডোনিয়ান যুদ্ধের পর ইটালিয়ান লিগের আশা ছিল, রোম মেসিডোনিয়া ধ্বংস করে দেবে এবং পঞ্চম ফিলিপকে হত্যা বা বন্দি করবে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, মেসিডোনিয়ার অনুপস্থিতিতে গ্রিসে যে ক্ষমতার শূন্যতা তৈরি হবে, তা কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ পূরণ করা। কিন্তু ফ্ল্যামিনিনাস মেসিডোনিয়াকে বহাল তবিয়তে রেখে দিলেন। শুধু তা-ই না, তিনি গ্রিসে শান্তি স্থাপনের জোরদার প্রচেষ্টা চালালেন এবং এর অংশ হিসেবে গ্রিস থেকে রোমান সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে নেন। ইটালিয়ান লিগের জন্য এই অবস্থা ভালো ছিল না, তাই তারা রোমের সাথে সিরিয়ার সেলুসিড সম্রাট তৃতীয় অ্যান্টিওকাসের বিবাদ লাগানোর ফিকির করতে লাগল।
ওদিকে ১৯৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে অ্যান্টিওকাসের সিরিয়ার নিম্নাঞ্চল জয় করেন। তার চোখে তখন এশিয়া মাইনর আর থ্রেস দখল করে সেলুসিড সাম্রাজ্যের হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন। ১৯৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি থ্রেসে অভিযান শুরু করলেন। এদিকে রোমান সিনেটের সাথে তার দেনদরবার চলতে থাকে। তাদের মধ্যে এরকম একটা মতৈক্য হয় যে, অ্যান্টিওকাস এশিয়া মাইনরে নিজের রাজ্যবিস্তার সীমাবদ্ধ রাখবেন এবং ইউরোপের দিকে হাত বাড়াবেন না।
গ্রিসে অ্যান্টিওকাস
এদিকে ১৯২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ইটালিয়ান লিগ থেসালিতে ডেমেট্রিয়াস নগর দখল করে অ্যান্টিওকাসকে গ্রিসে এসে রোম ও তাদের মধ্যে মধ্যস্ততা করতে বলে। অ্যান্টিওকাস ১০০ জাহাজ আর প্রায় ১০,০০০ সৈন্য নিয়ে গ্রিসে এসে পৌঁছলেন। তার সাথে ছিলেন রোমের এককালের নেমেসিস, হ্যানিবাল। কার্থেজ থেকে শত্রুদের ষড়যন্ত্রে তিনি নির্বাসিত হ্যানিবাল কাজ করছিলেন অ্যান্টিওকাসের যুদ্ধ উপদেষ্টা হিসাবে। ওদিকে রোমান সিনেট গ্রিসের ঘটনাবলি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছিল। তারা ২৫,০০০ সেনার এক বাহিনী অ্যাপোলনিয়াতে প্রেরণ করল।
হ্যানিবাল অ্যান্টিওকাসকে পরামর্শ দিলেন ইতালিতে সরাসরি আক্রমণ করতে। কিন্তু অ্যান্টিওকাস তার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। ইতালি আক্রমণের উপযুক্ত সংখ্যক সেনা নিয়ে সাগর পার হবার ক্ষমতা তার ছিল না। তার পরিবর্তে তিনি ইটালিয়ান লিগের সাথে যৌথভাবে থেসালি, বোটিয়া আর ইবোয়া অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করলেন। কাজেই ১৯২ খ্রিস্টপূর্বাব্দের শেষদিকে রোম তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল।
গ্রিসের সার্বিক কম্যান্ড নিয়ে কন্সাল গ্লাব্রিও ইলাইরিয়ামে এসে অবতরণ করলেন। তার সাথে ১০,০০০ পদাতিক ও ৪০০ অশ্বারোহী। এখান মিত্র মেসিডোনিয়া ও আকিয়ান লিগের সেনাদল তার সাথে যোগ দিল। গ্লাব্রিও অ্যান্টিওকাসের দখল করা সব অঞ্চল পুনর্দখল করতে লাগলেন।
ব্যাটল অফ থার্মোপাইলি (১৯১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
রোমানদের সম্মিলিত বাহিনীতে ছিল প্রায় ৩৩,০০০ যোদ্ধা। সেই তুলনায় অ্যান্টিওকাসের নিজের বাহিনীর সংখ্যা মাত্র ১০,০০০। ওদিকে ইটালিয়ান লিগ তখন তাদের এলাকাতে রোমের মিত্র আকিয়ানদের হামলা ঠেকাতে ব্যস্ত, তারা মাত্র ৪,০০০ সৈন্য পাঠাতে পারল।
অ্যান্টিওকাস পিছু হটে থার্মোপাইলিতে এসে তাঁবু গাঁথলেন। এই বিখ্যাত গিরিপথেই স্পার্টান সম্রাট লিওনিডাসের নেতৃত্বে স্বল্প সংখ্যক গ্রিক যোদ্ধা পার্সিয়ান সেনাবাহিনীকে অনেক সময় ঠেকিয়ে রেখে অন্যান্য গ্রিক সেনাদের নিরাপদে পিছিয়ে যাওয়ার রাস্তা করে দিয়েছিল। সংকীর্ণ এই গিরিপথ দিয়ে বিশাল বাহিনী একবারে আসা সম্ভব নয় বলে অ্যান্টিওকাস এখানেই রোমানদের মুখোমুখি হবার সংকল্প করলেন। তিনি কিছু সেনাকে পাঠালেন পাহাড়ের উপর দিয়ে থার্মোপাইলি অতিক্রম করার সব রাস্তার মুখে অবস্থান নেওয়ার জন্য, যাতে সেদিক দিয়ে রোমান সেনারা তাদের পেছন দিকে হামলা করতে না পারে।
নির্দিষ্ট দিনে অ্যান্টিওকাস সেনাসমাবেশ করলেন। গ্লাব্রিও তার কিছু সেনাকে দুই দলে বিভক্ত করে ইতোমধ্যে পাহাড়ের ওপরের রাস্তার দিকে পাঠিয়ে দিয়েছেন, যাতে তারা শত্রুবাহিনীর পেছনে চলে যেতে পারে। ইত্যোবসরে তিনি অ্যান্টিওকাসের ওপর সম্মুখ দিকে থেকে আক্রমণ করলেন। কিন্তু, সংকীর্ণ গিরিপথে অ্যান্টিওকাসের সেনারা সহজেই তার আক্রমণ প্রতিহত করে। এদিকে গ্লাব্রিওর পাঠানো সেনাদল দু'টির সাথে অ্যান্টিওকাসের পথ আটকানো সেনাদের সংঘর্ষ হয়। রোমানদের একটি দল পাহাড় পার হয়ে অ্যান্টিওকাসের পেছন দিকে এসে পড়তে সমর্থ হল। দু'দিকে রোমান সেনা দেখে অ্যান্টিওকাসের যোদ্ধারা রণে ভঙ্গ দেয়। সম্রাট একেবারে গ্রিস ছেড়ে পালিয়ে গেলেন।
সাগরপথের নিয়ন্ত্রণ
রোমান সিনেট অ্যান্টিওকাসকে চূড়ান্ত শিক্ষা দেবার সঙ্কল্প করল। সরাসরি তার দোরগোড়াতে এশিয়া মাইনরে অভিযান চালানর পরিকল্পনা স্থির হলো। এজন্য প্রয়োজন হেলেস্পন্টের উপর পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। এজন্য ইজিয়ান সাগরে লিভিয়াস স্যালিনেটরের অধীনে রোমান নৌবাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল। তাদের সাথে যোগ দিল পার্গামন ও রোডিয়ান জাহাজ। অ্যান্টিওকাসের অ্যাডমিরাল পলিক্সেন্ডিয়াস তাদের বাধা দিতে প্রস্তুত হলেন।
করিসাসের নৌযুদ্ধ (১৯১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
রোম, পার্গামন ও রোডিয়ান নৌবহর যখন করিসাসের বন্দরে ঢুকতে যাবে, তখন পলিক্সেন্ডিয়াস আচানক হামলা করলেন। রোমান নৌবহর লম্বা কনভয়ের আকারে সাগরে চলছিল। পলিক্সেনিডাসের পরিকল্পনা ছিল, দ্রুত কনভয়ের সামনের জাহাজগুলোকে আক্রমণ করা, যাতে পেছনের সারির জাহাজগুলী এগিয়ে আসার আগেই তাদের ধ্বংস করে দেয়া যায়। পরিকল্পনা কার্যকর করার জন্য তার কাছে ছিল ৭০টির মতো ভারি জাহাজ আর ১৩০টি হালকা জাহাজ।
স্যালিনেটরের সাথে ভারি জাহাজ ছিল ১৩০টি, কিন্তু হালকা জাহাজ ছিল কম। তিনি পলিক্সেন্ডিয়াসের চাল আঁচ করতে পারলেন। তার নির্দেশে নৌবহর দ্রুত খোলা সাগরের দিকে সরে এসে যুদ্ধসজ্জায় দাঁড়াল। রোমানদের ভারি জাহাজের আঘাতে পলিক্সেন্ডিয়াসের জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। তদুপরি রোমান জাহাজ কাছাকাছি এসে সেলুসিড জাহাজে তাদের মেরিন সেনা নামিয়ে দিতে থাকে, যাদের মোকাবেলা করার দক্ষতা পলিক্সেনিডাসের সেনাদের ছিল না। ওদিকে রোডিয়ান জাহাজ তার বাহিনীর ডান অংশ খানখান করে দিচ্ছিল। পলিক্সেনিডাস পিছু হটে গেলেন। তার ১০টি জাহাজ ডুবে যায় এবং ১৩টি জাহাজ শত্রুদের হস্তগত হয়।
এই যুদ্ধের পর পলিক্সেনিডাস এফেসাসে শীতকালীন ক্যাম্প করেন। রোমানরা পার্গামমে শীত কাটিয়ে আবার যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়। এ সময়ের মধ্যে অ্যান্টিওকাস নতুন জাহাজ তৈরি করে তার নৌবাহিনী দুই ভাগে ভাগ করলেন। একভাগের নেতৃত্ব নিলেন হ্যানিবাল, অন্যভাগের পলিক্সেনিডাস।
ইউরাইমেডনের লড়াই (১৯০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
এশিয়া মাইনরের দক্ষিণ উপকূলে ইউরাইমেডন নদীর মুখে হ্যানিবালের অধীনে ৪৭ টি জাহাজ নিয়ে সেলুসিডরা রোডিয়ান নৌবহরের ৩৮ টি জাহাজের মুখোমুখি হলো। প্রথমে কিছুটা বিশৃঙ্খল অবস্থায় থাকলেও দ্রুতই রোডিয়ানরা নিজেদের গুছিয়ে নেয়। তাদের নৌযুদ্ধের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা হ্যানিবালের সেনাদের থেকে ছিল অনেক বেশি। তাদের জাহাজের ধাক্কায় সেলুসিড অনেক জাহাজ ভেঙে যায় এবং অনেক জাহাজের দাঁড় ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেলুসিডরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
ব্যাটল অফ মায়োনেসাস (১৯০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
হ্যানিবালের পরাজয়ের পর রোমের পথে একমাত্র কাঁটা ছিলেন পলিক্সেনিডাস। তাকে পরাস্ত করতে পারলেই হেলেস্পন্ট রোমের সামনে উম্মুক্ত হয়ে যাবে। তাই রোমান কম্যান্ডার অ্যামেলিয়াস ৫৮টি রোমান আর ২২টি রোডিয়ান জাহাজ নিয়ে তিওসের বন্দর থেকে বের হয়ে মায়োনেসাসের কাছে পলিক্সেনিডাস ৮৯ জাহাজের বহরের সম্মুখীন হলেন।
জাহাজ যুদ্ধসজ্জায় সাজানোর পর অ্যামেলিয়াস দেখতে পেলেন যে, খোলা সাগরের দিকে পলিক্সেনিডাসের নৌ বহর রোমানদের সারি ছাড়িয়ে প্রসারিত হয়েছে। তার নির্দেশে রোডিয়ান জাহাজগুলো, যেগুলো ছিল সবথেকে দ্রুততম, সাথে সাথে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করে সেদিকে অগ্রসর হলো। এর ফলে খোলা সাগরের দিকে রোমান নৌবহরের সারি পলিক্সেনিডাসের বাহিনীকে অতিক্রম করে চলে গেল। রোডিয়ান জাহাজ তখন পাশ থেকে সেলুসিড বাহিনীকে চেপে ধরল, অন্যদিকে মধ্যভাগে রোমান জাহাজের চাপে পলিক্সেনিডাসের রণসজ্জা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ল। ২৯টি সেলুসিড জাহাজ ডুবে বা পুড়ে যায়, ১৩টি জাহাজ শত্রুরা দখল করে নেয়।
ব্যাটল অভ ম্যাগনেসিয়া (১৯০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
হেলেস্পন্টের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর রোমান বাহিনী এশিয়া মাইনরে অনুপ্রবেশ করল। তাদের সেনানায়কের নাম লুসিয়াস সিপিও। যামার যুদ্ধে জয়ী সিপিও আফ্রিকানাসের ভাই। আফ্রিকানাস নিজেও এই অভিযানে ছিলেন পরামর্শদাতা হিসাবে।
রোমের সাথে চূড়ান্ত লড়াইয়ের লক্ষ্যে অ্যান্টিওকাস ম্যাগনেসিয়ার প্রান্তরে সেনাসমাবেশ করেন। তার অধীনে ৫০,০০০-৭০,০০০ সেনা ছিল, বিপরীত সিপিওর নেতৃত্বে ৩০,০০০ এর মতো রোমান ও মিত্রবাহিনীর সেনা।
সিপিও বেশ কিছুদিন ফ্রাইগাস ও হারমাস নদীকে দুই পাশে রেখে সেনা সমাবেশ করলেন, তার উদ্দেশ্য ছিল রোমান বাহিনীর দুই বাহুকে নদীর ধারে রেখে সুরক্ষা দেওয়া। অ্যান্টিওকাস যুদ্ধ করছেন না দেখে তিনি কৌশল বদলালেন। সিপিও এমনভাবে এগিয়ে এলেন যে বামবাহু নদীর ধার ঘেঁষে থাকলেও ডানবাহুতে নদীর সুরক্ষা থাকলো না।
রোমান সেনাদের মধ্যভাগে পদাতিক আর দুই পাশে ছিল অশ্বারোহী ও হাল্কা অস্ত্রধারী সেনারা। ডানবাহুর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন পার্গামমের রাজা ইউমেনেস। এখানেই সিপিও বেশিরভাগ অশ্বারোহী সন্নিবেশ করলেন। ওদিকে অ্যান্টিওকাসের বাহিনীর ছিল বর্মাচ্ছাদিত ঘোড়া আর সওয়ারি। এদের বলা হত ক্যাটাফ্র্যাক্ট। অর্ধেক ক্যাটাফ্র্যাক্ট তিনি বাহিনীর সামনে রাখলেন, তাদের পেছনে ফ্যালানক্স আর দুই দলের মাঝে হাতিবাহিনী। অন্যদিকে বামবাহুতে অশ্বারোহী, ক্যাটাফ্র্যাক্ট আর চ্যারিয়ট রেখে অ্যান্টিওকাস নিজে ডানবাহুতে ৩,০০০ ক্যাটাফ্র্যাক্ট আর ১,০০০ অশ্বারোহী নিয়ে আক্রমণ করলেন।
অ্যান্টিওকাসের আক্রমণে রোমান বামবাহু বিশৃঙ্খলভাবে নিজেদের শিবিরের দিকে পালিয়ে যেতে থাকে। শিবিরের দায়িত্বে ছিলেন ট্রিবিউন লেপিডাস। তিনি আবার এদের সংগঠিত করে ঘুরে দাঁড়ান। ওদিকে অ্যান্টিওকাসের বামবাহু চ্যারিয়ট চার্জ করলে ইউমেনেস সেনাদের আদেশ দিলেন ঘোড়াগুলোকে লক্ষ্য করে টির, বর্শা আর পাথর ছুঁড়তে। ফলে আহত আতঙ্কিত ঘোড়াগুলো উল্টো ঘুরে নিজেদের দলের লোকের উপর দিয়েই চ্যারিয়ট চালিয়ে দিল।
এরপর ইউমেনেস নিজেই অশ্বারোহীদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। ক্যাটাফ্র্যাক্ট চার্জ করার জন্য ভালো হলেও সরাসরি যুদ্ধে এর কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। কাজেই ইউমেনেসের অশ্বারোহীদের আঘাতে অ্যান্টিওকাসের বামবাহু ভেঙে গেল।
এদিকে ফ্যালানক্স প্রতিরক্ষাব্যূহ গঠন করল। রোমানদের ছুঁড়ে মারা অস্ত্রের আঘাতে অ্যান্টিওকাসের হাতিবাহিনী আহত হয়ে ফ্যালানক্সের উপর দিয়েই মাড়িয়ে চলে যায়। ফলে তারা উন্মুক্ত হয়ে পড়ে, যা রোমান ভারি পদাতিকদের সহজ শিকারে পরিণত হয়।
ওদিকে অ্যান্টিওকাস রোমান বামবাহুর চাপে ফিরে এসে দেখলেন যে, তার রেখে যাওয়া সেনারা হয় মারা যাচ্ছে, না হয় পালাচ্ছে। তিনি দ্রুত যুদ্ধক্ষেত্র থেকে চলে গেলেন। লিভি দাবি করেন, প্রায় ৫৩,০০০ এর মতো সেলুসিড যোদ্ধা এই সংঘর্ষে প্রাণ হারায়। অ্যান্টিওকাস শান্তিচুক্তি করতে বাধ্য হন। প্রায় ১৫,০০০ ট্যালেন্ট (প্রাচীন মুদ্রা) রোমকে তার পরিশোধ করতে হয় ক্ষতিপূরণ হিসেবে, সেইসাথে এশিয়া মাইনরের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে সেলুসিডদের কর্তৃত্ব নষ্ট হয়ে যায়। রোম এখানে প্রধান শক্তি হিসেবে জায়গা করে নেয়।
ইটালিয়ান লিগের দমন
অ্যান্টিওকাসের সাথে ষড়যন্ত্রের কারণে ১৯১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকেই রোম ইটালিয়ানদের আত্মসমর্পণ দাবি করে আসছিল। এসময় রোমের মিত্র মেসিডোনিয়াও তাদের উপর হামলা শুরু করে। ইটালিয়ানরা তাদের নগর রাষ্ট্রগুলিতে আবদ্ধ হয়ে যায়। অ্যান্টিওকাসের পরাজয়ের পর রোম জোরেশোরে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন কন্সাল নোবিলিয়র। ১৮৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি ইটালিয়ানদের প্রধান শহর, অ্যাম্ব্রশিয়া অবরোধ করলেন।
শেষপর্যন্ত অ্যাথেন্স ও অন্যান্য গ্রিক রাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় রোমের অনুকূলে ইটালিয়ানরা চুক্তি স্বাক্ষর করে। তাদের বিজিত বহু এলাকা হাতছাড়া হয়ে যায়। এছাড়াও ২০০ ট্যালেন্ট সাথে সাথে এবং আরো ৩০০ ট্যালেন্ট পরবর্তী ছয় বছরের মধ্যে রোমকে দিতে তাদের অঙ্গীকার করতে হয়। গ্রিসে তাদের ক্ষমতা একেবারে তলানিতে এসে ঠেকে।
This is a part of the series on the Rise of Rome. This article describes the events of Rome Seleucid war.
Reference
1. Erdkamp, P. (2017). The War against Antiochus III, 191–188 BC. In The “The Encyclopedia of Ancient Battles”, First Edition. Edited by Michael Whitby and Harry Sidebottom. John Wiley & Sons Ltd. doi: https://doi.org/10.1002/9781119099000.wbabat0370
2. Boak, A. E. R. (2010) History of Rome to 565 A. D. The Project Gutenberg EBook
3.Pennell, R. F. (2009). History of Rome from the Earliest times down to 476 Ad. Project Gutenberg.
Featured Image: reddit.com