ভাবুন তো একবার, আপনার মাথার উপর দিয়ে ৭ হাজার কেজি ওজনের কামানের গোলা সাই সাই উড়ে যাচ্ছে! কামান দাগানোর শব্দে ১৪ কি.মি. দূর থেকেও কানে তালা লেগে যাওয়ার জোগাড়। আপনি হয়তো বলবেন, এমনও কি সম্ভব? এত ভারী কামানের গোলা হয় নাকি? আর কামানই বা কত বড়? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানি যে প্রযুক্তির দিক দিয়ে কতটা এগিয়ে ছিল তা অনেকেরই জানা। তাদের তৈরি কিছু সমরাস্ত্র আজও বিস্ময় হিসেবে রয়ে গেছে। আজ আপনাদের শোনানো হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কামানের গল্প। এটি রেললাইনের উপর আস্ত ট্রেনের উপর বসানো থাকতো বিধায় একে 'রেলওয়ে গান' নামেও ডাকা হয়।
রেলওয়ে গান
রেলওয়ে গান বা রেইলরোড গান (আরো সংক্ষেপে রেল গান) বলতে লার্জ ক্যালিবার আর্টিলারি সিস্টেমকে বোঝায় (ক্যালিবার = কামানের ব্যাস)। পুরো সিস্টেমটি একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রেনে স্থাপন করা হয়। পুরো ট্রেনে ৩ বা ততোধিক আর্টিলারি ওয়াগন যুক্ত করা থাকে। এর সাথে 'আর্মার্ড ট্রেন'কে গুলিয়ে ফেলবেন না আবার। সেসব ট্রেনে নিজের নিরাপত্তার জন্য সামনে-পেছনে ছোট ক্যালিবারের কামান ও এন্টি-এয়ারক্রাফট মেশিনগান থাকে। অন্যদিকে রেলওয়ে গানে থাকে বিশাল আকৃতির কামান যা শত্রুপক্ষের উপর হামলা করতে ব্যবহার করা হত।
১৮৪৭ সালে রেলগানের আইডিয়া প্রকাশ করেন রাশিয়ার গুস্তাভ কোরি নামক এক ব্যক্তি। এর উপর ভিত্তি করে পিওতর লেভেদেভ নামক এক ইঞ্জিনিয়ার ১৮৫৭ সালে এর ডিজাইন করেন। পরে ১৮৬০ সালে পি. ফমিন নামের আরেকজন আর্টিলারি ক্যানন বিশেষজ্ঞ রেলগানকে বাস্তবে রূপ দেন। এটি সর্বপ্রথম আমেরিকান গৃহযুদ্ধে ব্যবহৃত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকে পরাশক্তিগুলো রেলগান বানানোর জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু করে। জার্মানির ক্রুপ ইন্ডাস্ট্রি ছিল ছিল এই টেকনোলজির কামান বানানোর সবচেয়ে বড় কোম্পানি। তাদের তৈরি কামান প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।
শোয়েরার গোস্তাভ
হিটলার জার্মানির চ্যান্সেলর নির্বাচিত হওয়ার পর জেনারেলগণ উদ্বিগ্ন হন এজন্য যে যদি ফ্রান্সের সাথে আবার যুদ্ধ হয় তবে তাদের দুর্ভেদ্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে জার্মানির অনেক বেগ পেতে হবে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্স জার্মানির সীমান্তে রিএনফোর্সড কংক্রিট বাংকার, হেভি আর্টিলারি, মেশিনগান পোস্ট, এন্টি ট্যাংক ও এন্টি পার্সোনেল মাইন পেতে বিশাল এক প্রতিরক্ষা লাইন তৈরি করে, যা ইতিহাসে ম্যাজিনো লাইন (Maginot Line) নামে পরিচিত। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ট্যাংক বিধ্বংসী কামান ও লং রেঞ্জ আর্টিলারিগুলো স্টিল প্লেটেড রিএনফোর্সড কংক্রিট দ্বারা সুরক্ষিত ছিল যা সাধারণ কামান বা বিমান হামলা করে ধ্বংস করা বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। তাই জার্মান আর্মি হাই কমান্ড ক্রুপকে এমন একধরনের কামান বানানোর জন্য নির্দেশ দেয় যা ম্যাজিনো লাইনের শক্তিশালী দুর্গগুলোকে ফরাসি কামানের রেঞ্জের বাইরে থেকে ধ্বংস করতে পারবে।
ক্রুপের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এরিখ মুলার হিসাব করে দেখলেন, কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার দূর থেকে শেল ফায়ার করে ৭ মিটার পুরু কংক্রিট বা ১ মিটার পুরু স্টিল প্লেট ভেদ করতে হলে ৭ টন ওজনের গোলা নিক্ষেপ করতে হবে। এত বড় শেলের জন্য কামানের ব্যাস হতে হবে কমপক্ষে ৮০ সেন্টিমিটার ও ব্যারেল হতে হবে কমপক্ষে ৩০ মিটার লম্বা! এত বড় আর্টিলারি সিস্টেম দুই সেট রেললাইনের উপর বসাতে হবে যার আনুমানিক ওজন হবে ১০০০ টন! এজন্য ক্রুপ ইন্ডাস্ট্রি ৭০, ৮০, ৮৫ ও ১০০ সেন্টিমিটার ব্যাসের কামানের ডিজাইন প্রস্তুত করে। ১৯৩৬ সালে এসব কারখানা পরিদর্শনে এসে বেশ আগ্রহ নিয়ে প্রোটোটাইপ পরিদর্শন করেন হিটলার। কিন্তু তিনি সরাসরি কোনো মডেলকে চূড়ান্ত বলে ঘোষণা দেননি। পরে ৮০ সেন্টিমিটার ব্যাসের মডেলটি চূড়ান্ত করেন জার্মান জেনারেলগণ। জার্মান ভাষায় এর নাম দেয়া হয় Schwerer Gustav (ইংরেজিতে Heavy Gustav)।
১৯৩৭ সালে এর বানানোর কাজ শুরু হলেও প্রয়োজনীয় স্টিলের সংকটে কাজ কিছুদিন বন্ধ থাকে। ১৯৩৯ সালে প্রোটোটাইপটি সফলভাবে ৩৭ কি.মি. দূর থেকে গোলা নিক্ষেপ করে ৭ মিটার পুরু কংক্রিট ও ১ মিটার পুরু স্টিল প্লেটের আর্মার ভেদ করতে সক্ষম হওয়ায় আলফ্রিড ক্রুপ এবার তার বাবার নামে নির্মিত কামানের কার্যকারিতা দেখাতে ১৯৪১ সালের শুরুতে হিটলারকে আমন্ত্রণ জানান। ততদিনে হিটলার তার নিনজা টেকনিক ব্যবহার করে ম্যাজিনো লাইন পাশ কাটিয়ে ফ্রান্সকে পরাজিত করে বসে আছেন! তিনি বেলজিয়াম ঘুরে ফ্রান্সে আক্রমণ করেন এবং উক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বল অংশ দিয়ে সেনাবাহিনী পাঠান। সেই আলোচনা না হয় আরেকদিনের জন্য তোলা থাক। শোয়েরার গোস্তাভের কার্যকারিতা দেখে হিটলার সন্তুষ্ট হন। তিনি একে আসন্ন অপারেশন বারবারোসা বা রাশিয়ায় হামলা চালানোর জন্য তৈরি করতে নির্দেশ দেন।
কার্যকারিতা
শোয়েরার গোস্তাভ আজ অবধি নির্মিত সবচেয়ে বড় কামান। তবে এটি ক্যালিবারের দিক দিয়ে ব্রিটিশ ম্যালেট মর্টার ও লিটল ডেভিড মর্টারের দিক দিয়ে পিছিয়ে ছিল। উক্ত মর্টার দুটো ছিল ৩৬ ইঞ্চি বা ৯১.৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের। তবে এরা ছিল প্রোটোটাইপ, কোনোদিন যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়নি বিধায় সবচেয়ে বড় কামানের মর্যাদা পায়নি।
ফ্রান্স বিজয় হয়ে গেলেও সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণে ব্যাপক প্রতিরোধের সম্মুখীন হয় জার্মানি। ব্যাটল অফ সেভস্তাপুলের যুদ্ধে শোয়েরার গোস্তাভকে প্রথমবারের মতো ফ্রন্টলাইনে মোতায়েন করা হয়। ৮টি রেলওয়ে বগির সমন্বয়ে গঠিত এক স্পেশালাইজড চেসিসে এই কামানটি বসানো হয়। প্রতিটি বগিতে ছিল ৫ এক্সেল। অর্থাৎ মোট ৪০ এক্সেল বা ৮০ চাকার গাড়িতে কামানটি বহন করা হত। কামানটি ছিল লম্বায় ১৫৫.২ ফুট। এর মধ্যে শুধু ৮০ সেন্টিমিটার ব্যাসের কামানের নলের দৈর্ঘ্য ছিল ১০৬.৮ ফুট। সব মিলিয়ে এর ওজন হলো ১,৩৫০ টন! পুরো আর্টিলারি সিস্টেমকে অপারেশনাল করতে ২৫০ জন মানুষের ৫৪ ঘন্টা সময় লাগত! এছাড়া একে বিমান হামলা থেকে রক্ষা করতে ২ ব্যাটালিয়ন সৈন্য ও এন্টি-এয়ারক্রাফট মেশিনগান যুক্ত ছিল। এসব কারণে পুরো ট্রেনের দৈর্ঘ্য হতো দেড় কিলোমিটার, যেখানে বগি থাকতো ২৫টি। এটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিবহন করার জন্য বাড়তি ১৬ কি.মি. রেলপথ নির্মাণ করতে হয়।
কামানের সক্ষমতা
শোয়েরার গোস্তাভ সর্বোচ্চ ৪৮ ডিগ্রি কোণে গোলা নিক্ষেপ করতে পারত। ব্যারেল উপরে-নিচে নামানোর কাজ নিজে নিজেই করতে পারতো। তবে ডানে-বায়ে সরাতে হলে মূল রেল লাইনের বাইরে আলাদা অর্ধচন্দ্রাকার ট্র্যাক বসাতে হতো। ১ রাউন্ড গোলা ফায়ার করার পর পরবর্তী রাউন্ড ফায়ার করতে ৩০-৪৫ মিনিট সময় লাগত। এজন্য দিনে ১৪ রাউন্ডের বেশি ফায়ার করা সম্ভব হতো না। ৫০০ গান ক্রু এর ফায়ারিংয়ের কাজে সহায়তা করতেন। অন্যান্য আর্টিলারির মতো শোয়েরার গোস্তাভ দুই ধরনের গোলা ফায়ার করতো। ৭,১০০ কেজি ওজনের HE (হাই এক্সপ্লোসিভ) শেল ৪৮ কি.মি. দূরে এবং ৪,৮০০ কেজি ওজনের AP (আর্মার পিয়ারসিং) শেল ৩৮ কি.মি. দূরে ফায়ার করা যেত। এই ভয়ংকর গোলার বিস্ফোরণে দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে প্রায় ৩০×৩০ ফুট গর্ত সৃষ্টি হতো।
এছাড়া রকেট প্রজেক্টাইলগুলো ১৫০ কি.মি. দূরে ফায়ারের প্ল্যান ছিল। এ জন্য ব্যারেলকে ২৭৫ ফুটে বর্ধিত করতে হতো যা আর শেষপর্যন্ত করা হয়নি। এই সিরিজের দ্বিতীয় কামান ডোরা (Dora) চিফ ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রীর নামে নামকরণ করা হয়। একে ইতিহাস বিখ্যাত স্টালিনগ্রাদ যুদ্ধের সময় প্রস্তুত করা হলেও তীব্র শীতে জার্মানি আক্রমণ বন্ধ রাখলে শেষপর্যন্ত 'ডোরা' এক রাউন্ড গোলাবর্ষণও করেনি। এই সিরিজের তৃতীয় কামান ছিল কিছুটা ছোট, কিন্তু আরো আধুনিক। ল্যাঙ্গার গুস্তাভ নামের এই কামানের ব্যাস ছিল ৫২ সেন্টিমিটার এবং ব্যারেলের দৈর্ঘ্য ১৪১ ফুট। এটি রকেট অ্যাসিস্টেড প্রজেক্টাইল শেল ফায়ার করার জন্য বানানো, রেঞ্জ ১৯০ কি.মি.! অর্থাৎ এই কামানের গোলা ফায়ারের পর সেগুলোর সাথের বুস্টার রকেট ইঞ্জিন চালু হবে। এতে আর্টিলারির রেঞ্জ ২/৩ গুণ বাড়ানো যায়। হিটলার এই কামানটি নিয়ে বেশ আগ্রহী ছিলেন। তিনি দখলকৃত ফ্রান্সের 'ক্যালি' তে মোতায়েন করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই শহরটি ইংলিশ চ্যানেলের সবচেয়ে সরু অংশে অবস্থিত। মাত্র ৩৪ কি.মি. পাড়ি দিলেই ব্রিটেনে যাওয়া যায়। তিনি চেয়েছিলেন এখান থেকে এই সুপার ক্যানন দিয়ে ব্রিটেনের লন্ডনে সরাসরি কামান দাগানোর আয়োজন করতে।
তবে টেস্ট ফায়ারে এটি আশানুরূপ ফল দেখাতে পারেনি। এটি ১৩০ কি.মি. দূরে ফায়ার করেছিল। আর এই কারণেই শোয়েরার গোস্তাভ সিরিজের রেলগান আজ পর্যন্ত নির্মিত সর্বাধিক বেশি রেঞ্জের কামান। যুক্তরাষ্ট্র গত বছর ১৫.৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের কামান দিয়ে রকেট অ্যাসিস্টেড শেল ব্যবহার করে কেবলমাত্র ৭০ কি.মি. দূরে ফায়ার করেছে এবং ১০০ কি.মি. এর মাইলফলক ছোয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এত বছর পরও শোয়েরার গোস্তাভ বিশ্বের সবচেয়ে বড় কামান হিসেবে তার মর্যাদা ধরে রেখেছে। ক্রুপের একটি ঐতিহ্য হলো তারা প্রথম কামানের জন্য কোনোপ্রকার খরচ রাষ্ট্রের কাছ থেকে দাবি করত না। দ্বিতীয় কামানের জন্য তারা তৎকালীন হিসেবে ৭ মিলিয়ন রাইখমার্ক নেয় যা ২০১৫ সালের হিসেবে ২৪ মিলিয়ন ইউএস ডলারের সমতুল্য।
সেভস্তাপুলের যুদ্ধে শোয়েরার গোস্তাভ ৪৮ রাউন্ড ফায়ারের পরই এর ব্যারেল অকেজো হয়ে পড়ে। কেননা টেস্ট ফায়ারিংয়ের সময় ২৫০ রাউন্ড ফায়ার করা হয়েছিল। পরে এতে স্পেয়ার ব্যারেল লাগানো হয় এবং আসল ব্যারেল ক্রুপের কারখানায় মেরামত করতে পাঠানো হয়। বড় কামান হওয়ায় এর অ্যাকুরেসি ছিল খুবই বাজে, বড় আকারের টার্গেট না হলে শোয়েরার গোস্তাভ তেমন কার্যকর ছিল না। রাশিয়ার যুদ্ধে বড় বড় শহরগুলোতে এই কামান থেকে ভয়াবহ গোলাবর্ষণ করা হয়। এই যুদ্ধে শোয়েরার গোস্তাভ মোট ৩০ হাজার টনের গোলাবর্ষণ করে! স্টালিন দুর্গ, ম্যাক্সিম গোর্কি ১ ও ২ নাম্বার দুর্গ, ফোর্ট মলোটভ ও ফোর্ট সার্বিয়া এর গোলাবর্ষণে ধ্বংস/ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে শোয়েরার গোস্তাভের উল্লেখযোগ্য সফলতা হলো সেভস্তাপুলে সোভিয়েত ইউনিয়নের হোয়াইট ক্লিফ অস্ত্রাগার ধ্বংস করা। দ্য অ্যামুনিশন মাউন্টেন নামে পরিচিত উত্তর উপকূলে অবস্থিত পাহাড়ঘেরা এই অস্ত্রাগার সাগরের ৩০ মিটার গভীরে এবং ১০ মিটার পুরু কংক্রিট দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। শোয়েরার গোস্তাভ ৯ রাউন্ড গোলাবর্ষণ করে অস্ত্রাগারের মূল ম্যাগাজিন স্টেশন ধ্বংস করে দিয়ে তার সক্ষমতার প্রমাণ রাখে।
স্টালিনগ্রাদ আক্রমণের সময় একে শহর থেকে ৩০ কি.মি. দূরে টাইটসি রেলস্টেশনে মোতায়েন করা হয়। কামানটি যখন ফায়ারিংয়ের জন্য প্রস্তুত হয় তখনই তীব্র শীতের কারণে আক্রমণ বাতিল করা হয়। ফলে ১৯৪২-৪৩ সালের শীতকাল একে রেলস্টেশনেই কাটাতে হয়। শহরের পশ্চিমদিকে থাকা তার সঙ্গী ডোরাকে সোভিয়েত হামলার ভয়ে জার্মানিতে সরিয়ে নেয়া হয়। ১৪ এপ্রিল, ১৯৪৫ সালে মিত্রবাহিনীর সেনাদের আগমনের আগমুহূর্তে শোয়েরার গোস্তাভকে বিষ্ফোরক বসিয়ে উড়িয়ে দেয় জার্মান সেনারা। এর ধ্বংসাবশেষ সোভিয়েত ইউনিয়নের হাতে পড়ে এবং তারা এটি নিয়ে গবেষণা শুরু করে। অপর কামান ডোরাকে অক্ষত অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র হস্তগত করে। একমাত্র তৃতীয় কামানটি অক্ষত অবস্থায় ক্রুপের প্রোডাকশন ফ্যাসিলিটিতে পাওয়া গেছে যা বর্তমানে ড্রেসডেনে মিলিটারি হিস্টোরি মিউজিয়ামে সংরক্ষিত রয়েছে।
সব মিলিয়ে শোয়েরার গোস্তাভ ছিল এমন এক কিংবদন্তি যার জন্ম আর দ্বিতীয়বার হবে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে রকেট প্রযুক্তির উন্নতি শুরু হয়। ব্রিটেনে হামলার উপযোগী ভি-১, ভি-২ রকেট আবিষ্কার হওয়ায় এ ধরনের কামান নিয়ে হিটলার ও তার জেনারেলগণ আগ্রহ দেখাননি। ফলে Landkreuzer P 1500 Monster প্রজেক্টও মুখ থুবড়ে পড়ে। শোয়েরার গোস্তাভ রেললাইন ছাড়া চলতে পারত না বিধায় এর অফরোড সংস্করণ বানানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। গুজব রয়েছে যে এর প্রোটোটাইপ সোভিয়েত ইউনিয়ন হস্তগত করেছে। উন্নত রকেট ও মিসাইল টেকনোলজি চলে আসলেও লং রেঞ্জ কামানের চাহিদা এখনও আছে। বর্তমানে সর্বোচ্চ ১৫৫ এমএম কামান ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন দেশ এসব কামানের গোলায় বুস্টার রকেট লাগিয়ে রেঞ্জ বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যার শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জার্মান ইঞ্জিনিয়ারদের হাত ধরে।
This is a Bengali article about Schwerer gustav, largest artillery ever made.
Reference:
1. Schwerer Gustav – Hitler’s giant gun – How it worked and why it turned out to be a disaster
2. Gustav Gun
3. Krupp 80 cm Kanone Schwerer Gustav (Dora) Railway Gun
4. The Heavy Gustav, Hitler and generals inspecting the largest caliber rifled weapon ever used in combat, 1941