Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বাংলার নতুন সুবাদার শাহবাজ খান কাম্বো

বাংলায় মোতায়েন করা মুঘল সৈন্যদের বিদ্রোহ মসনদ-ই-আলা ঈশা খানকে বেশ স্বস্তি এনে দিল।

জমির পুনর্বন্টন, নতুন রাজস্ব নীতি এবং সামরিক নানা সংস্কারের কারণে মুঘল সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কিছু অফিসার ও একটি প্রভাবশালী মহল এমনিতেই সম্রাট আকবরের উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তার উপর ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রতি সম্রাটের বিরূপ মনোভাব সাধারণ সৈন্যদেরও মনঃকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এসব নানাবিধ সমীকরণ একসাথে মিলিয়ে শেষপর্যন্ত বাংলা আর বিহারের মুঘল সৈন্যরা ১৫৭৯ সালের মাঝের দিকে সম্রাট আকবরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্রোহ ঘোষণা করল।

সম্রাট আকবর: Image Source: Wikimedia Commons

১৫৮০ সালের ১৯ এপ্রিল বিদ্রোহীরা সুবাদার মুজাফফর খান তুরবাতিকে হত্যা করে প্রাদেশিক রাজধানী তান্ডা দখল করে নেয়। তারপর সেখানেই সম্রাট আকবরকে বাদ দিয়ে নতুন মুঘল সম্রাট হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় আকবরের বৈমাত্রেয় ভাই মির্জা মুহাম্মদ হাকিমকে। মির্জা মুহাম্মদ হাকিম ছিলেন কাবুলের গভর্নর। তিনি তখন কাবুলেই অবস্থান করছিলেন। এই কারণে মাসুম খান কাবুলিকে মির্জা মুহাম্মদ হাকিমের প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। পাঠক, মাসুম খান কাবুলিকে আমাদের মনে রাখতে হবে।

বাংলার এই বিদ্রোহের ফলে সুবাদার খান জাহানের ব্যর্থতার পর ভাটি অঞ্চলে নতুন করে অভিযান চালানো তো দূরের কথা, খোদ বাংলার যতটুকুই মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল, তাও বিদ্রোহীদের হাতে চলে যায়। আকবর তাই এই বিদ্রোহ দমনে মনোযোগ দিলেন আগে। ১৫৮০ সালের মে মাস নাগাদ মুঘল সেনাবাহিনী মুঙ্গেরে এসে ঘাটি গাড়লো। বিদ্রোহীদের সাথে এখানে মুঘল সেনাবাহিনীর প্রচণ্ড সংঘর্ষ হলো। সংঘর্ষে বিদ্রোহীরা পরাজিত হয়ে পিছু হটলো।

এদিকে ১৫৮১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি স্বয়ং সম্রাট আকবর কাবুলের পথ ধরলেন। উদ্দেশ্য মির্জা মুহাম্মদ হাকিমকে দমন করা। আগস্ট মাস নাগাদ তিনি কাবুলে পৌঁছে গেলেন। মির্জা মুহাম্মদ হাকিম বাধ্য হলেন কাবুল ত্যাগ করতে।

একদিকে কাবুলে মির্জা হাকিমের পতন, অন্যদিকে বিদ্রোহীদের মূল নেতা কাকশাল গোত্রের বাবা খান কাকশাল মারা যাওয়ায় বিদ্রোহীরা একেবারে চুপসে গেল। বিদ্রোহীদের একাংশ মুঙ্গেরে শোচনীয় পরাজয় বরণ করার পর তাদের যুদ্ধ করার ইচ্ছাও উবে গেল। তারা ভেতরে ভেতরে সম্রাট আকবরের সাথে সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে উদ্যমী হলো। তারপরেও মাসুম খান কাবুলি নিজের জায়গায় অনড় রইলেন। তিনি বিদ্রোহ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।

দুর্গম তেলিয়াগড় গিরিপথ; Image Source: bl.uk

১৫৮০ সালে সুবাদার মুজাফফর খান তুরবাতীর মৃত্যুর পর প্রায় দুই বছর বাংলায় কোনো মুঘল সুবাদার ছিলেন না। ১৫৮২ সালের শুরুর দিকে মুঘল সম্রাট আকবর তার দুধ ভাই মির্জা আজিজ কোকাকে বাংলার নতুন সুবাদার হিসেবে দায়িত্ব দিলেন। আজিজ কোকাকে তিনি ৫ হাজার সৈন্যের মনসবদার হিসেবে উন্নীত করলেন। বাংলার নতুন এই সুবাদারকে ‘খান-ই-আযম’ উপাধি দেওয়া হলো। দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর সুবাদার মির্জা আজিজ কোকার নেতৃত্বে তেলিয়াগিড়িতে যুদ্ধ চলতে লাগলো। বিদ্রোহীদের অবস্থা আরও শোচনীয় হতে লাগলো। মুঘল সাম্রাজ্যের আনুগত্য স্বীকার করতে বিদ্রোহীদের মাঝে ঢল পড়ে গেল। মাসুম খান কাবুলি দেখলেন পরিস্থিতি খারাপ।

আর কিছুদিন পরেই নিজের পরিবার নিয়ে তিনি বাংলার আরও গভীরে প্রবেশ করবেন। তার গন্তব্য হবে ভাটির রাজা মসনদ-ই-আলা ঈশা খান!

১৫৭৮ সালে কাস্তুলের যুদ্ধে ঈশা খান জিতে গেলেও তিনি জানতেন মুঘল নৌবহর আবারও ভাটি অঞ্চলে নোঙ্গর করবে। কাজেই তিনি শক্তিশালী একজন মিত্রের খোঁজে ছিলেন। তেমন একজন পেয়েও গেলেন। ঈশা খান তার ভবিষ্যৎ সম্ভাব্য মিত্র হিসেবে ত্রিপুরার রাজা অমর মাণিক্যের কথা ভাবছিলেন।

কিন্তু, রাজা অমর মাণিক্য অযথা মুঘল সাম্রাজ্যের বিরাগভাজন হতে চাইছিলেন না। তিনি ঈশা খানকে ফিরিয়ে দিলেন। রাজার কাছ থেকে খালি হাতে ফিরে ঈশা খান অমর মাণিক্যের স্ত্রী রানী অমরাবতীর সাথে দেখা করলেন। তিনি রানীর মন জয় করতে পারলেন। রানী অমরাবতী ঈশা খানের হয়ে অমর মাণিক্যকে বুঝালে তিনি ঈশা খানকে সহায়তা করতে রাজি হলেন।

তবে অল্প কিছুদিনের জন্য হলেও এই সাহায্যের বিনিময়ে রাজা অমর মাণিক্য ঈশা খানের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিলেন। তারই ফলশ্রুতিতে ১৫৮০ সালে তিনি তরফের জমিদার ফতেহ খানের বিরুদ্ধে ত্রিপুরার রাজা অমর মাণিক্যের হয়ে একটি অন্যায় যুদ্ধাভিযান পরিচালনা করেন। আবার এর কিছুদিন পরেই অমর মাণিক্যের কাজে বেশ কিছুদিন চট্টগ্রামের উত্তরাংশে অবস্থান করেন। অবশ্য সেই যাত্রায় ঈশা খানের লাভই হয়েছিল বেশি। চট্টগ্রামে তিনি বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন।

ঈশা খানের ৩৯৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯২ সালে এই পোস্টেজ স্ট্যাম্পটি প্রকাশ করেছিলো; Image Source: Quora

চট্টগ্রামে কাজ শেষ করে ঈশা খান নিজের অঞ্চলে ফেরত গেলেন। আসন্ন লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন তিনি। কিছুদিনের ভেতরেই তিনি বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলেন পরাজিত অনেক বিদ্রোহী মুঘল সৈন্য ভাটি অঞ্চলের দিকে চলে আসছে। এমনকি মুঘল সামরিক বাহিনীর অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও এই দলে ছিল। পালিয়ে আসা বিদ্রোহী মুঘল সৈন্য আর সেনাবাহিনীর অফিসাররা ঈশা খানের আশ্রয়ে থেকে তার হাতকে আরও শক্তিশালী করলো।

সম্রাট আকবরের বৈমাত্রেয় ভাই কাবুলের গভর্নর মির্জা মুহাম্মদ হাকিমের দুধভাই মাসুম খান কাবুলির আসল নাম হলো আবুল ফতেহ মুহাম্মদ মাসুম খান। ব্যক্তিজীবনে অত্যন্ত সৎ, নিষ্ঠাবান ও কর্মঠ এই ব্যক্তিটি যুদ্ধক্ষেত্রেও ছিলেন অপ্রতিরোধ্য।

মির্জা মুহাম্মদ হাকিমের খুবই ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন হওয়ার পরেও একটি ভুল বোঝাবুঝির ঘটনায় তিনি কাবুল ছেড়ে সম্রাট আকবরের দরবারে চলে আসেন। সম্রাট আকবর তাকে বিহারের পাটনায় ৫০০ অশ্বারোহীর মনসবদারের মর্যাদা প্রদান করে জায়গীর দান করলেন। পরবর্তীতে আফগান আমির বিখ্যাত কালাপাহাড়কে পরাজিত করতে পারায় আকবর তাকে এক হাজার অশ্বারোহীর মনসবদারি দান করলেন।

১৫৭৯ সালে বাংলায় গণ্ডগোলের সময় তিনি বিদ্রোহীদের পক্ষ নেন এবং একপর্যায়ে বিদ্রোহের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। মাসুম খান কাবুলির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নেই বিহার আর বাংলার বিদ্রোহীরা একজোট হয়ে সম্মিলিতভাবে বিদ্রোহ চালিয়ে চাচ্ছিল। কাকশালদের সাথেও তিনি সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন।

বিদ্রোহীরা যখন আকবরকে সম্রাট হিসেবে অস্বীকার করে কাবুলের মির্জা মুহাম্মদ হাকিমকে সম্রাট হিসেবে ঘোষণা দেয়, তখন নতুন সম্রাটের অনুপস্থিতিতে মাসুম খান কাবুলিকেই সম্রাটের সমতুল্য ক্ষমতা প্রদান করা হয়। এ থেকেই মাসুম খান কাবুলির প্রভাব ও গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়।

১৫৮০ সালের শেষের দিকে বিদ্রোহীদের মূল নেতা বাবা খান কাকশাল ইন্তেকাল করলে এই বিদ্রোহের মূল নেতৃত্ব চলে যায় মাসুম খান কাবুলির হাতে।

এদিকে ঈশা খান নিজেও এখন আগের চেয়ে শক্তিশালী। তার সেনাবাহিনীও আগের চেয়ে অনেক বেশি দক্ষতা ও সক্ষমতা অর্জন করেছে। কাজেই তিনি নিজের আয়ত্তাধীন এলাকার নিরাপত্তার পাশাপাশি এলাকা বিস্তারের দিকেও মনোযোগ দিলেন। পরবর্তী কিছুদিনে তিনি সোনারগাঁ, কতরাব, মহেশ্বরদী প্রভৃতি এলাকায় নিজের প্রভাব বিস্তার করলেন।

১৫৮৪ সাল নাগাদ ঢাকার অর্ধাংশসহ পুরো ময়মনসিংহ নিজের অধিকারে নিয়ে আসেন তিনি। ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা, বানার আর শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে, খিজিরপুর, সোনারগাঁও, কতরাব, এগারসিন্দুর, বাজিতপুরে শক্তিশালী অনেকগুলো দুর্গ গড়ে তুললেন। এর ভেতরেই ঈশা খান তার রাজধানী সরাইল থেকে সোনারগাঁওয়ে সরিয়ে এনেছেন। এরপর তিনি রাজধানী সোনারগাঁওকে কেন্দ্র করে নিজের প্রতিরক্ষা বুহ্য তৈরির কাজে হাত দিলেন।

ভালো কথা, আগামী কয়েকবছরে ঈশা খান পাবনা আর রংপুরের অধিকাংশই নিজের অধীনে নিয়ে আসবেন।

এদিকে বিদ্রোহ দমনে প্রাথমিক সাফল্য পেলেও সুবাদার খান-ই-আযম মির্জা আজিজ কোকা বাংলার গভীরে ঢুকতে আগ্রহী ছিলেন না। আগের তিনজন সুবাদারই বাংলার মাটিতে প্রাণত্যাগ করেছিলেন। বাংলার ব্যাপারে তার ভেতরে একটা অজানা আশঙ্কা কাজ করতো। তাই তিনি সম্রাট আকবরকে অনুরোধ করেন তার বদলে অন্য কাউকে বাংলার দায়িত্ব দিতে।

আকবর সুবাদার মির্জা আজিজ কোকার এই অনূর্ধ্ব রেখেছিলেন। বাংলা, বিহার আর উড়িষ্যার নতুন সুবাদার হিসেবে শাহবাজ খান কাম্বোকে তিনি দায়িত্ব দিলেন। ১৫৮৩ সালের মে মাসের ১৮ তারিখে নতুন সুবাদার তার দায়িত্ব বুঝে নিলেন। বাংলার সুবাদারির দায়িত্ব পেয়েই শাহবাজ খান করিৎকর্মা হয়ে উঠলেন। দ্রুত সেনাবাহিনী নিয়ে তিনি উত্তরবঙ্গের দিকে এগোতে লাগলেন।

মুঘল দরবারে শাহবাজ খান কাম্বোর শুরুটা ছিল মাত্র ১০০ সৈন্যের মনসবের অধিকারী হিসেবে। এরপর ধীরে ধীরে নিজের যোগ্যতার সিঁড়ি বেয়ে ৫,০০০ অশ্বারোহীর মনসবদার হতে পেরেছিলেন। সম্রাট আকবরের শাসনামলে ৫,০০০ অশ্বারোহীর মনসবদার মানে খুবই উঁচু শ্রেণির কর্মকর্তা। কেবল যুবরাজরাই এর উপরে, অর্থাৎ ৭০০০ মনসবের অধিকারী হতে পারতেন। শাহবাজ খান কাম্বো ছিলেন সম্রাট আকবরের তুরুপের তাস। অনেকেই যেসব অভিযানে বিফল হতেন, শাহবাজ খান নিজের দক্ষতা, প্রজ্ঞা আর সাহসিকতার সাহায্যে সেসব অভিযানে সফল হতেন।

আকবর শাহবাজ খান কাম্বোকে বিশ্বাস করতেন, ভরসা করতেন। আপাদমস্তক নিষ্ঠাবান ধার্মিক এই মানুষটি ছিলেন সম্রাটের দ্বীন-ই-ইলাহির অন্যতম সমালোচক ও বিরোধী। কিন্তু তবুও তাকে আকবরের রোষানলে পড়তে হয়নি। আকবর জানতেন, শাহবাজ খান কাম্বোকে বিশ্বাস করা যায়। এ কারণে যখন তিনি মির্জা মুহাম্মদ হাকিমের বিরুদ্ধে কাবুলে অভিযান পরিচালনা করেন, তখন শাহবাজ খান কাম্বোকে ডেকে রাজধানী ফতেহপুর সিক্রির দায়িত্ব তুলে দিয়ে যান।

ফতেহপুর সিক্রির একাংশ; Image Source: Wikimedia Commons

সম্রাট আকবরের বিশ্বাসের মর্যাদা আজীবন দিয়েছিলেন শাহবাজ খান কাম্বো। সুদীর্ঘ ২৭ বছর তিনি মুঘল সালতানাতের সেবা করেছেন। তার দুই পুত্র আর দুই ভাইও মুঘল সালতানাতের কর্মচারী ছিলেন। এছাড়াও, তার পরিবারের আরও কিছু সদস্য মুঘল সাম্রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে যোগ্যতার দিক দিয়ে শাহবাজ খান কাম্বোর মতো না হওয়ায় তারা কেউ উঁচু পদে উঠতে পারেনি।

শাহবাজ খান কাম্বো বাংলার দায়িত্ব নেওয়ার দিন কয়েক পরেই সন্তোষ, তান্ডা, তাজপুর, ঘোড়াঘাট, শেরপুরসহ মালদহ আর পূর্ণিয়ার বিস্তৃত ভূখণ্ডে মাসুম খান কাবুলীর সাথে মুঘল সেনাবাহিনীর ইউনিটগুলোর মধ্যে ছোটখাট সংঘর্ষ চলতে থাকে। মুহাম্মদ বেগ কাকশাল আর তরসুন খানের নেতৃত্বাধীন একটি ইউনিট মাসুম খান কাবুলির হাতে পরাজিত হয়ে তাজপুর দুর্গে যেয়ে ঘাটি গাড়ে। সুবাদার শাহবাজ খান এই সংবাদ শুনে উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর বরাবর অগ্রযাত্রা বজায় রাখলেন।

এদিকে মাসুম খান কাবুলিও মাহিসন্তোষে একটি মুঘল ঘাটিতে সফলভাবে আক্রমণ করে দিনাজপুরে যমুনার পূর্ব পাশে গিয়ে ঘাটি গাড়লেন। শাহবাজ খানও দ্রুত যমুনার পশ্চিমে নিজের তাঁবু ফেললেন। তিনি এই সমস্যা কূটনৈতিকভাবে সমাধানের প্রতি জোড় দিয়ে মাসুম খান কাবুলিকে আলোচনার টেবিলে বসালেন। শুরুতে সন্ধিতে আগ্রহী হলেও পরে মাসুম খান কাবুলি নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেললেন।

শাহবাজ খান কাম্বো এবার মাসুম খান কাবুলির উপর শক্ত আঘাত হানলেন। মাসুম খান পরাজিত হলেন। এ ধাক্কায় ঘোড়াঘাট পর্যন্ত সীমানা পুনরুদ্ধার করে ফেললেন শাহবাজ খান।

এদিকে ঘোড়াঘাটে মাসুম খান কাবুলির পরিবার অবস্থান করছিলেন। তিনি তাই দেরি না করে দ্রুত পরিবার নিয়ে বাংলার আরও ভেতরে ঢুকে গেলেন। তার গন্তব্য ভাটির রাজা মসনদ-ই-আলা ঈশা খান।

ঘোড়াঘাট পর্যন্ত শত্রুমুক্ত করার পর শাহবাজ খান কাম্বো এগিয়ে বগুড়া পর্যন্ত চলে আসলেন। বগুড়াতেও মুঘলরা শক্ত অবস্থান নিলেন। ১৫৮৩ সালের মাঝেই পুরো রংপুর আর রাজশাহী অঞ্চল মুঘল পতাকার অধীনে চলে আসলো। শাহবাজ খান কাম্বো আর সামনে না এগিয়ে তাণ্ডায় প্রাদেশিক রাজধানীতে ফিরে গেলেন। ভাটিতে অভিযান চালানোর জন্য তার কিছু প্রস্তুতি দরকার।

[এই সিরিজের পূর্বে প্রকাশিত পর্বটি পড়ুন এখানে। সিরিজের সবগুলো লেখা পড়তে চাইলে ক্লিক করুন এখানে।]

This article is written in the Bangla language. It discusses the new Subahdar Shahbaz Khan Kamboh of Subah Bengal and his battle preparation against Isa Khan. 

References:

1. বাংলার ইতিহাস (১২০০-১৮৫৭), আবদুল করিম, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ, আগস্ট ২০১২ (২য় মুদ্রণ)

2. বাংলার ইতিহাস (প্রাচীনকাল থেকে ১৭৬৫ সাল পর্যন্ত), ড সৈয়দ মাহমুদুল হাসান, নভেল পাবলিশিং হাউস, জুন ২০১৮ (তৃতীয় মুদ্রণ)

3. মসনদ-ই-আলা ঈশা খান, মাহবুব সিদ্দিকী, দিব্য প্রকাশ, ফেব্রুয়ারী ২০১৮

Featured Image: Wikimedia Commons

Related Articles