৪৯০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কথা। বিশ্বের পরাশক্তি হিসেবে তখন আবির্ভূত হয়েছে পারস্য সাম্রাজ্য। আকেমেনিদ সাম্রাজ্য (প্রথম পারস্য সাম্রাজ্য) তখন ক্রমশই বিস্তার লাভ করছে। এর মাত্র ৬০ বছর আগে, ৫৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে, সাইরাস দ্য গ্রেটের হাত ধরে প্রথম পার্সিয়ান সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন ঘটে। আকেমেনিদ রাজবংশের তৃতীয় সম্রাট প্রথম দারিয়ুস (রাজত্বকাল: ৫২২-৪৮৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) তখন পরাক্রমশালী পারস্য সাম্রাজ্যের অধিপতি। দারিয়ুস তার সাম্রাজ্যকে তুরস্ক থেকে ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। উচ্চাভিলাষী দারিয়ুস চেয়েছিলেন এজিয়ান সাগর এবং গ্রিস নিয়ন্ত্রণ করতে।
তখন পার্সিয়ান অধিকৃত আইওনিয়াতে (বর্তমান পশ্চিম তুরস্কের একটি উপকূলীয় এলাকা) বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইতিহাসে এটি আইওনিয়ান রিভল্ট (৪৯৯-৪৯৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) নামে পরিচিত। সেই বিদ্রোহীদের সমর্থন ও সহযোগিতা করে কয়েকটি গ্রিক নগররাষ্ট্র। গ্রিকদের সমর্থনের খবরে সম্রাট দারিয়ুস অত্যন্ত ক্ষেপে যান। দারিয়ুস শেষপর্যন্ত আইওনিয়ান বিদ্রোহীদের দমন করতে সক্ষম হন, কিন্তু বিদ্রোহীদের সমর্থনকারী গ্রিকদের ডানা ছেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পার্সিয়ান বিরোধী গ্রীক নগররাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিশোধের জন্য ৪৯২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে একটি নৌ অভিযান প্রেরণ করেন দারিয়ুস। কিন্তু ঝড়ের কবলে পড়ে সেই অভিযান ব্যর্থ হয়।
গ্রিস বিজয়ের লক্ষ্যে দারিয়ুস এবার আরো বিস্তৃত পরিকল্পনা শুরু করেন। ৪৯০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের গ্রীষ্মে তিনি গ্রিস বিজয়ের উদ্দেশ্যে এজিয়ান সাগরে প্রায় ২৬,০০০ সৈন্যসহ ৬০০টি জাহাজ প্রেরণ করেন। এই বিশাল নৌবহরের নেতৃত্বে ছিলেন মিডিয়ান অ্যাডমিরাল দাতিস। সেই বছরের আগস্ট অথবা সেপ্টেম্বরে পার্সিয়ান নৌবহর এথেন্স থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে গ্রিস উপকূলবর্তী ম্যারাথনের সৈকতে উপস্থিত হয়।
এদিকে পার্সিয়ান বাহিনীর আসার খবর অ্যাথেন্সে পৌঁছাতে দেরি হয়নি। পার্সিয়ানদের আসার প্রেক্ষিতে অ্যাথেন্সে জরুরি সমাবেশ ডাকা হয়। গ্রিক বাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অ্যাথেনিয়ানরা তাদের দশটি উপজাতি থেকে দশজন জেনারেলকে নির্বাচিত করে। তবে প্রধান সেনাপতি হিসেবে সামগ্রিক কমান্ডের দায়িত্ব ছিলেন ক্যালিমেকাস। অ্যাথেনিয়ানরা প্রভাবশালী দশ জেনারেলের নেতৃত্বে ম্যারাথনে তাদের ৯,০০০ সৈন্য পাঠিয়ে সেখানেই পার্সিয়ান বাহিনীকে আটকে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এত কম সৈন্য নিয়ে শক্তিশালী পার্সিয়ান বাহিনীর মোকাবিলা করা ছিল কঠিন। এমতাবস্থায় অ্যাথেনিয়রা তাদের মিত্রদের কাছে সাহায্য চেয়ে পাঠায়।
তখন অ্যাথেন্সের অন্যতম মিত্র ছিল প্রতিবেশী নগররাষ্ট্র প্লাটিয়া এবং স্পার্টা। অ্যাথেনীয় বাহিনীকে সাহায্যের জন্য প্লাটিয়া প্রায় ১,০০০ সৈন্য প্রেরণ করে। এই একই সময়ে, অ্যাথেন্সের একজন প্রতিনিধিকে (হেরোডোটাসের মতে, তৎকালীন অ্যাথেন্সের শ্রেষ্ঠ দৌড়বিদ ফেইডিপিডিসকে) স্পার্টায় পাঠানো হয় সাহায্যের আবেদন করার জন্য। কিন্তু সেই সময় স্পার্টায় একটি পবিত্র ধর্মীয় উৎসব চলছিল। সেই উৎসবের সময় যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ থাকায় পরবর্তী পূর্ণিমার আগে স্পার্টান বাহিনী কোনো যুদ্ধে যেতে ইচ্ছুক ছিল না। পরবর্তী পূর্ণিমা তখনো দশ দিনের বেশি সময় বাকি ছিল। ফলে গ্রিক সেনাপতিরা প্রায় ১০,০০০ অ্যাথেনিয়ান ও প্লাটিয়ান সৈন্য নিয়েই যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে।
পার্সিয়ান সেনাবাহিনীর সামগ্রিক কমান্ডের দায়িত্ব ছিল অ্যাডমিরাল দাতিসের হাতে। বাহিনীর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছিলেন আর্টাফেরনেস, সেই সঙ্গে তিনি অশ্বারোহী বাহিনীর নেতৃত্বেও ছিলেন। তিনি ছিলেন সম্রাট দারিয়ুসের ভাগ্নে। পার্সিয়ান বাহিনীর প্রকৃত সৈন্যসংখ্যা নিয়ে অবশ্য ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। জাহাজের সংখ্যা বিবেচনা করলে সেখানে প্রায় ৯০,০০০ সৈন্য থাকার সম্ভাবনার কথা বলেন অনেকে। আবার অনেকে সেই সৈন্যসংখ্যা ৩০,০০০ এর বেশি হবে না বলে ধারণা করেন। তবে প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী- পার্সিয়ান বাহিনীর সৈন্যসংখ্যা ছিল প্রায় ২৬,০০০।
অ্যাথেনিয়ান ও পার্সিয়ানরা আলাদা দুটি পদ্ধতিতে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। দুই বাহিনীর রণকৌশল ও যুদ্ধ সরঞ্জাম ছিল আলাদা ধরনের। পার্সিয়ান বাহিনীর অধিকাংশ ছিল তীরন্দাজ, এবং প্রায় এক হাজার অশ্বারোহী। পার্সিয়ানরা তীরন্দাজ বাহিনীর সাহায্যে দূর পাল্লার আক্রমণ করতে চেয়েছিল। পার্সিয়ান পদাতিক বাহিনী একটি হালকা ওজনের ঢালের সঙ্গে একটি বাঁকা তলোয়ার, একটি ছোট বর্শা এবং ধনুক দিয়ে সজ্জিত ছিল। পার্সিয়ান বাহিনী হালকা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা সজ্জিত ছিল। অন্যদিকে অ্যাথেনিয়ান বাহিনীর প্রায় সবাই ছিল ভারী সাঁজোয়া হোপলাইট। হোপলাইটরা একটি ভারী ব্রোঞ্জের ঢালের সঙ্গে বর্শা ও তলোয়ার ব্যবহার করে কাছাকাছি অবস্থানে যুদ্ধ করতে পারদর্শী ছিল। গ্রিক বাহিনী ভারী ও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা সজ্জিত ছিল।
একে তো গ্রিক বাহিনীর সৈন্যসংখ্যা কম, উপরন্তু অভিজাত পার্সিয়ান অশ্বারোহী বাহিনী ও শক্তিশালী তীরন্দাজ বাহিনী অ্যাথেনিয়ানদের জন্য মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে ছিল। ফলে অ্যাথেনিয়ান সেনাপতি মিল্টিয়াডিস বেশ সতর্কতার সঙ্গে রণকৌশল তৈরি করেন। মিল্টিয়াডিস ছিলেন অ্যাথেনিয়ান সেনাপতিদের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী। পার্সিয়ানদের সম্পর্কে তার প্রভূত জ্ঞানের ফলে তিনি এই যুদ্ধে গ্রিক বাহিনীর প্রধান কুশীলব হয়ে ওঠেন। গ্রিকরা প্রথমে আক্রমণ না করে স্পার্টান বাহিনীর আসার অপেক্ষা করছিল। এমতাবস্থায় ম্যারাথনের সমতল ভূমি থেকে অ্যাথেন্সে যাওয়ার যে রাস্তা ছিল, তা অবরোধ করে রাখে গ্রিক বাহিনী।
পার্সিয়ানরা সৈন্যবিন্যাসের কেন্দ্রভাগে তাদের সবচেয়ে অভিজাত ইউনিটগুলোকে মোতায়েন করে, বাকিদের সৈন্যবাহিনীর পার্শ্বভাগে মোতায়েন করে। অর্থাৎ পার্সিয়ান সৈন্যবাহিনীর মধ্যভাগ ছিল তাদের পার্শ্বভাগ থেকে শক্তিশালী। অন্যদিকে গ্রিকদের সৈন্যবিন্যাস ছিল আলাদা ধরনের। গ্রিক সেনাপতি মিল্টিয়াডিস তার কেন্দ্রীয় ইউনিটকে অপেক্ষাকৃত দুর্বল করে সাজান। কেন্দ্রকে দুর্বল করে পার্শ্বভাগকে শক্তিশালী করে গঠন করেন মিল্টিয়াডিস। কেন্দ্র থেকে পার্শ্বভাগ বা ডানাগুলো দিগুণ শক্তিশালী ছিল। গ্রিক সৈন্যবিন্যাসের ডান দিকে মোট ৪,০০০ সৈন্য মোতায়েন করা হয়। কেন্দ্রটি ২,০০০ সৈন্যের সমন্বয়ে গঠিত হয়, এবং বামপাশে মোট ৫,০০০ সৈন্য মোতায়েন করা হয়।
প্রায় পাঁচ দিন দুই শিবিরে নিষ্ক্রিয়তা বিরাজ করে। কেউ আগ বাড়িয়ে আক্রমণ করতে যায়নি। অ্যাথেনিয়ান সেনাপতিরা স্পার্টানদের আসার অপেক্ষায় ছিল, সেই সঙ্গে এই ভয়ে ছিল যে, তারা যদি পার্সিয়ান বাহিনীর দিকে ছুটে যায় তবে পার্সিয়ান অশ্বারোহী বাহিনী হঠাৎ করে এসে গ্রিক বাহিনীকে ছত্রভঙ্গ করে দিতে পারে। এজন্য তিনি সুযোগের অপেক্ষা করছিলেন। অবশেষে মিল্টিয়াডিস জানতে পারেন যে, পার্সিয়ান অশ্বারোহী বাহিনী রণক্ষেত্র থেকে দূরে রয়েছে। এই সুযোগে তিনি আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন।
অশ্বারোহী বাহিনী ছিল পার্সিয়ানদের বড় শক্তি। কিন্তু এই অশ্বারোহী বাহিনীই কেন দৃশ্যপটে ছিল না তা বেশ আশ্চর্যের বিষয়। এর কারণ হিসেবে এটা হতে পারে যে, যুদ্ধক্ষেত্রে বিক্ষিপ্ত কিছু গাছের কারণে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে সেনাপতি দাতিস অশ্বারোহী বাহিনীকে সেখানে ব্যবহার করেননি। আবার এটাও হতে পারে যে, দাতিস অশ্বারোহী বাহিনীকে অন্য সৈন্যদের সঙ্গে অ্যাথেন্সে পাঠানোর পরিকল্পনা করছিলেন শহরটি দখলের জন্য। অথবা স্পার্টানরা আসার আগেই গ্রীক সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করার জন্য সেনাপতি দাতিস তার অশ্বারোহী বাহিনীকে দৃশ্যপটে আনেননি।
যা-ই হোক, পার্সিয়ান অশ্বারোহী বাহিনীর অনুপস্থিতির সুযোগে মিল্টিয়াডিসের নির্দেশে দ্রুতগতিতে গ্রীক বাহিনী সমতল পেরিয়ে পারস্য শিবিরের দিকে অগ্রসর হয়। গ্রীকদের আক্রমণের প্রেক্ষিতে পার্সিয়ান তীরন্দাজ বাহিনী তীর ছুড়তে শুরু করে। পার্সিয়ানদের তীরের সীমার মধ্যে আসার পর গ্রিক বাহিনী আরো দ্রুত গতিতে এগিয়ে যায় যেন ক্ষয়ক্ষতি কম হয়। গ্রিকদের শক্তিশালী ঢাল ও দ্রুতগামী পদক্ষেপ তাদের পার্সিয়ান তীর থেকে রক্ষা করে।
দুই বাহিনী যখন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, তখন গ্রিক বাহিনীর কেন্দ্রীয় দলটি পিছিয়ে যেতে থাকে। তাদের এই পশ্চাদপসরণ ছিল সুশৃঙ্খল এবং সংগঠিত। এই পশ্চাদপসরণের সুবিধার জন্যই মূলত কেন্দ্রের দল দুর্বল করে বানানো হয়েছিল। পার্সিয়ান বাহিনী যখন গ্রীক বাহিনীর ভেতরে ঢুকে পড়ে, তখন দুই দিক থেকে গ্রিক বাহিনীর ডানাগুলো পার্সিয়ান বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। দুই পাশ থেকে এমন আক্রমণের ফলে পার্সিয়ান বাহিনী দিশেহারা হয়ে পড়ে।
গ্রিক বাহিনীর শক্তিশালী ও ভারি সাঁজোয়া প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পার্সিয়ান আক্রমণ থেকে তাদেরকে রক্ষা করে। অন্যদিকে পার্সিয়ান বাহিনীর অপেক্ষাকৃত দুর্বল ও হালকা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তাদের ভুগিয়েছে। পার্সিয়ানদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে তাদের লাইন ভেঙে যেতে শুরু করে, এবং তারা তাদের জাহাজে ফিরে যেতে থাকে। পার্সিয়ান বাহিনীকে অনুসরণ করে গ্রীকরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকে। পার্সিয়ানদের অনুসরণ করতে গিয়ে গ্রিক বাহিনী সাতটি পার্সিয়ান জাহাজ দখল করতে সক্ষম হয়।
ম্যারাথন যুদ্ধে পার্সিয়ান বাহিনী লজ্জাজনকভাবে পরাজিত হয়। মাত্র তিন ঘন্টার এই যুদ্ধে প্রায় ৬,৪০০ পার্সিয়ান সৈন্য হতাহত হয়, বিপরীতে গ্রিক সৈন্য মারা গিয়েছিল মাত্র ১৯২ জন। তবে এই সংখ্যা অতিরঞ্জিত বলে অনেকেই মনে করেন। কিংবদন্তি আছে, পার্সিয়ান বাহিনীর উপর গ্রিক বাহিনীর এই বিজয়ের পর হেরাল্ড ফেইডিপিডিস নামক একজন অ্যাথেনিয়ানকে এই খবর জানানোর জন্য অ্যাথেন্সে পাঠানো হয়। তিনি ম্যারাথন থেকে অ্যাথেন্স পর্যন্ত প্রায় ৪২ কিলোমিটার দূরত্ব দৌড়ে অতিক্রম করেন। অ্যাথেনিয়ানদের কাছে খবরটি দেওয়ার পর পরই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। বর্তমান বিশ্বের ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা এখান থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
তৎকালীন অধিকাংশ ঘটনার মতোই এই যুদ্ধ সম্পর্কে খুব বেশি ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায়নি। এই যুদ্ধ সম্পর্কে জানার উপায় হচ্ছে গ্রিক জনশ্রুতি ও হেরোডোটাসের 'দ্য হিস্টোরিজ' বইটি। ম্যারাথনের যুদ্ধের মাত্র ৬০ বছর পর হেরোডোটাস এই তথ্য লিপিবদ্ধ করেন।
ম্যারাথনের যুদ্ধ ছিল পরাক্রমশালী পার্সিয়ানদের উপর পুঁচকে অ্যাথেন্সের প্রথম বড় বিজয়। এই বিজয় অ্যাথেন্স তথা গ্রিকদের আত্মবিশ্বাস ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেয়। এই যুদ্ধের ১০ বছর পর, ৪৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, সম্রাট জার্জিস তার পূর্বসূরির পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে আবারো গ্রিস আক্রমণ করেন।
This Bangla Content is about The Battle of Marathon which took place in 490 B.C. and was part of the Greco-Persian Wars. Featured Image Courtesy: Greek Boston
Information Sources:
1) Persian Wars: Battle of Marathon- ThoughtCo.
2) Battle of Marathon- World History Encyclopedia.
3) The Battle of Marathon- National Geographic.
4) Battle of Marathon- History.
5) Why Did the Greeks Defeat the Superior Persians?- The Collector.
6) The Battle of Marathon- History Cooperative.