“মনে হচ্ছিলো কোনো জেট বিমান ছুটে যাচ্ছে। এমন জোরালো শব্দ শুনে আকাশের দিকে তাকালাম। তারপর চোখে পড়লো সেই ভয়াবহ দৃশ্য। আকাশ থেকে এক বিধ্বস্ত বিমান মাটির দিকে পতিত হচ্ছে। বিমানের ভাঙা অংশ, স্যুটকেস, এমনকি জীবন্ত মানুষ প্যারাসুট ছাড়াই পৃথিবীতে পতিত হচ্ছে প্রবলবেগে।”
১৯৭২ সালের আলোচিত যুগোস্লাভিয়ান ডিসি-৯ বিমান দূর্ঘটনার কথা এভাবে স্মরণ করছিলেন দমকল কর্মী ডেঙ্কো কুভিচ। এত উচ্চতা থেকে পতনের পর কেউ জীবিত থাকতে পারেন এমন ধারণা তিনি করেননি। আসলে সেদিন কেউ এক মুহূর্তের জন্যেও ভাবেনি কেউ ৩৩ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে পতনের পর বেঁচে থাকতে পারেন। ব্রুনো হঙ্ক নামক স্থানীয় এক কাঠুরে বিমান পতনের পর দ্রুত ঘটনাস্থলে দৌড়ে যান। সেখানে তিনি ধ্বংসস্তূপের মাঝে এক নারীর আর্তচিৎকার শুনে এগিয়ে যান। আবিষ্কার করেন গুরুতর আহত ভেসনা ভুলোভিচকে। মুমূর্ষু ভেসনাকে দ্রুত হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। দেহের একাধিক অঙ্গে মারাত্মক আঘাত পাওয়া, ভগ্ন মেরুদণ্ড এবং করোটিতে ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় তাকে বাঁচানো যাবে এমন আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকগণ। বিমানের ২৮ জনের মধ্যে ২৭ জনই সে যাত্রায় প্রাণ হারালেন। কিন্তু অলৌকিকভাবে এক বছর চিকিৎসাধীন থাকার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন ভেসনা। আর সেই সাথে গড়ে ফেলেন প্যারাসুট ব্যতীত সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে পতনের এক অনন্য বিশ্বরেকর্ড।
কে এই ভেসনা ভুলোভিচ?
ভেসনা ভুলোভিচ পেশায় ছিলেন একজন সার্ব বিমানবালা। ১৯৫০ সালের ৩ জানুয়ারি তিনি তৎকালীন যুগোস্লাভিয়ার (বর্তমান সার্বিয়ার রাজধানী) বেলগ্রেডে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট থেকে তিনি ভ্রমণ করতে পছন্দ করতেন। দ্য বিটলস ব্যান্ডের প্রতি ভালোবাসা থেকে তিনি স্বপ্ন দেখতেন যুক্তরাজ্য ভ্রমণ করবেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম বছরে তিনি যুক্তরাজ্য পাড়ি দেন। তার উদ্দেশ্য ছিল ঘুরে বেড়ানো আর ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করা। বছরখানেক পর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং সিদ্ধান্ত নেন একজন বিমানবালা হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলবেন। মূলত তার এক বিমানবালা বান্ধবীকে দেখে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন,
“ওকে (বান্ধবী) বিমানবালার পোশাকে দারুণ লাগছিলো। সবেমাত্র সে লন্ডনে এসেছে। আমি ভাবলাম, তাহলে আমি কেন বিমানবালা হতে পারবো না? আমিও হয়তো মাসে একবার লন্ডনে আসতে পারবো তাহলে।”
লন্ডনপ্রেমী ভেসনা ১৯৭১ সালে যুগোস্লাভিয়ার বৃহত্তম বিমান সংস্থা JAT Airways এ বিমানবালা হিসেবে যোগদান করেন। তিনি তার নতুন চাকরি নিয়ে বেশ উত্তেজিত ছিলেন। চাকরির মাত্র ৮ মাসের মাথায় তিনি সেই আলোচিত বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়েন এবং এক অনাকাঙ্ক্ষিত বিশ্বরেকর্ডের অংশীদার বনে যান।
‘ভেসনা’ বিভ্রান্তি এবং ফ্লাইট ৩৬৭
১৯৭২ সালের ২৫ জানুয়ারি ভেসনা ভুলোভিচকে ফ্লাইট ৩৬৭-এ বিমানবালা হিসেবে ভ্রমণ করার জন্য তলব করা হয়। কিন্তু সেদিন তার কর্মবিরতি ছিল। ভেসনা নামক আরেক বিমানবালার সাথে তার নাম নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ায় ভুলে তাকে তলব করা হয়েছিল সেদিন। ফ্লাইট ৩৬৭ এর যাত্রাপথ ছিল স্টকহোম থেকে বেলগ্রেড। মাঝপথে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে যাত্রাবিরতি। ভেসনা এর আগে কখনো ডেনমার্ক ভ্রমণ করেননি। তাই এই সুযোগে ডেনমার্ক দেখে আসার লোভ সামলাতে পারলেন না। রাজি হয়ে গেলেন সেই ফ্লাইটে ভ্রমণ করার প্রস্তাবে। ডিসি-৯ বিমানে চড়ে ভেসনা পাড়ি জমালেন কোপেনহেগেনে। যাত্রাবিরতির সময় তিনি খানিকটা শহর ঘুরে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। পরদিন বেলা ৩:৪৫ মিনিটে কোপেনহেগেন বিমানবন্দরে পুনরায় উড্ডয়ন করে ডিসি-৯।
সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু ৪৬ মিনিটের মাথায় বিমানের ব্যাগেজ কম্পার্টমেন্টে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। সেই বিস্ফোরণে ডিসি-৯ বিমান আকাশে প্রায় ৩৩,৩৩০ ফুট উচ্চতায় উড্ডয়নরত অবস্থায় বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এরপর ভগ্ন বিমান প্রায় ২৮ জন যাত্রীসমেত ভূমির দিকে প্রচণ্ড বেগে পতিত হতে থাকে। তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার স্রস্কা কামেনিচ নামক এক গ্রামে বিধ্বস্ত বিমানটি পতিত হয়। ঘটনাস্থলে ব্রুনো হঙ্ক নামক এক কাঠুরে ভেসনার আর্তচিৎকারে সাড়া দিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। পতনের ফলে তার দুই পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। মেরুদণ্ড ও পাঁজরের হাড় ভাঙা ছাড়াও তার করোটিতে ফাটল দেখা দিয়েছিল। তিনি মস্তিষ্কে বেশ গুরুতর আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। মুমূর্ষু ভেসনাকে দ্রুত প্রাগের একটি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে ১০ দিন কোমায় ছিলেন তিনি। ধীরে ধীরে তার অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। প্রায় এক মাস পর কথা বলার ক্ষমতা ফিরে পান তিনি। কিন্তু তাকে যখন ফ্লাইট সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলো, তিনি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলেন। ফ্লাইটে যাত্রীদের অভ্যর্থনা পর্বের পর থেকে তার কিছুই মনে নেই।
কীভাবে বেঁচে গেলেন ভেসনা?
হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর ডাক্তারদের আশঙ্কা ছিল ভেসনা মৃত্যুবরণ করতে পারেন। আর যদি সুস্থ হয়ে ওঠেন, সেক্ষেত্রে দেহ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারেন। কিন্তু অলৌকিকভাবে এক বছরের মাথায় ভেসনা ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করলেন। এই ঘটনাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম বিস্ময় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন চিকিৎসকগণ। তাদের মতে, ভেসনার জ্ঞান ফেরানোই ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু পুরো ফ্লাইটের ২৮ জনের মাঝে মাত্র একজনের বেঁচে যাওয়া নিয়ে উঠেছিল নানা প্রশ্ন। সরকারি তদন্ত কমিটির সদস্যরাও সেসব প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানে কাজ করেছিলেন। তাদের মতে, বিস্ফোরণের মুহূর্তে ভেসনা ভুলোভিচের অবস্থান তার জীবন রক্ষার পেছনে দায়ী। তিনি তখন বিমানের পেছনের অংশে অবস্থান করছিলেন। সেখানে বিমানের খাদ্যবহর ছিল। বিস্ফোরণের পর যখন সবাই নিচের দিকে পতিত হচ্ছিলো, তখন সেই খাদ্যবহরকে আঁকড়ে ধরেছিলেন তিনি। তাছাড়া তিনি সেই বহর নিয়ে এক ঘন জঙ্গলে পতিত হয়েছিলেন যেখানে ভূমি ঘন তুষারের স্তর দিয়ে আচ্ছাদিত ছিল।
তার চিকিৎসক তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সাথে একমত পোষণ করেন। তিনি আরো যোগ করে জানিয়েছেন, ভেসনা ভুলোভিচ নিম্ন রক্তচাপের প্রভাবে জ্ঞান হারিয়ে ফেলায় তার হৃদপিণ্ড তাৎক্ষণিক ধকল সামলাতে সক্ষম হয়। ১৯৭২ সালের ১২ মার্চ তিনি কিছুটা সুস্থবোধ করায় তাকে প্রাগ থেকে বেলগ্রেড ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়া হয়। চিকিৎসক তাকে পুরো ফ্লাইট ইঞ্জেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভেসনা জানান, যেহেতু তার দুর্ঘটনার কিছুই মনে নেই, তাই তিনি ভয় পাচ্ছেন না। বেলগ্রেডে তিনি একাধিক সার্জারির মুখোমুখি হন। প্রথমে তিনি শুধু বাম পা ব্যবহার করতে পারতেন। দশ মাসের মাথায় তিনি পুনরায় দুই পা ব্যবহার করা শুরু করেন। কিন্তু তিনি আর কখনোই সোজা দাঁড়িয়ে হাঁটতে পারেননি। ডানদিকে কিছুটা খুঁড়িয়ে হাঁটতেন তিনি। কয়েকবছর পর সাংবাদিকগণ তাকে প্রশ্ন করেছিল যে, তিনি কীভাবে বেঁচে গেলেন? উত্তরে ভেসনা জানিয়েছিলেন, তিনি একজন সার্ব। আর সার্বদের বেঁচে থাকার জেদ তাকে এতদূর নিয়ে এসেছে।
গিনেস রেকর্ড এবং বিতর্ক
একদিকে যখন ভেসনা ভুলোভিচের চিকিৎসা চলছিল, অপরদিকে যুগোস্লাভিয়া সরকারের তদন্ত বিভাগ ব্যস্ত ছিল বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে। প্রাথমিকভাবে সরকার থেকে ঘোষণা করা হলো, বিস্ফোরণের কারণ ছিল বিমানে ট্রলির ভেতর স্থাপন করা বোমা। আর এর পেছনে দায়ী করা হয় তৎকালীন ক্রোয়েশিয়া জাতীয়তাবাদীদের। কিন্তু জাতীয়তাবাদের পক্ষ থেকে কোনো দায় স্বীকারোক্তি মেলেনি। এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি। এই ঘটনার ১৩ বছর পর ১৯৮৫ সালে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃক ভেসনা ভুলোভিচকে সম্মানিত করা হয়। তিনি পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্থান থেকে প্যারাসুট ছাড়া পতনের বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী হন। গিনেস বুকের হিসাব অনুযায়ী সেটা ছিল প্রায় ৩৩,৩৩০ ফুট (১০,১৬০ মিটার) উচ্চতা।
কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় ২০০৯ সালে। প্রাগের এক সাংবাদিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানতে পারেন, এই ঘটনার পেছনে ক্রোয়েশিয়া জাতীয়তাবাদীদের কোনো হাত নেই। বরং চেকোস্লোভাকিয়ান বিমান সেনাদের ভুল বুঝাবুঝির শিকার হয়েছিল ডিসি-৯। গুঞ্জন উঠে, বিমানটি মাত্র ২ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় চেকোস্লোভাকিয়ান বিমান বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভূপাতিত হয়। কিন্তু যুগোস্লাভিয়া সরকার এই তথ্য গোপন রাখার উদ্দেশ্যে ক্রোয়েশিয়ানদের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু শক্ত প্রমাণাদি না থাকায় এখন পর্যন্ত সেই বিমান দুর্ঘটনার পেছনে আসল কারণ সঠিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এ কথা স্পষ্ট করে বলা যায়, বিতর্কের তথ্য আমলে নিলেও ভেসনা ভুলোভিচের বেঁচে ওঠার কৃতিত্ব একটুও মলিন হচ্ছে না।
নতুন জীবন
ভেসনা ভুলোভিচ রাতারাতি নিজ দেশে একজন তারকায় রূপান্তরিত হন। স্বয়ং যুগোস্লাভিয়া কমিউনিস্ট নেতা জোসেফ মার্শাল টিটো তাকে ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তাকে নিয়ে দেশের তারকা শিল্পীরা গানও লিখেছিলেন। দ্য বিটলস-এর ভক্ত ছিলেন তিনি। তাকে লন্ডন গালায় বিটলসের অনুষ্ঠানে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। সুস্থ হওয়ার পর তিনি পুনরায় কর্মক্ষেত্রে ফেরত যান। কিন্তু তাকে বিমানবালা হিসেবে পুনরায় কাজ করতে দিতে অসম্মতি জানায় বিমান সংস্থা। তাই তাকে দাপ্তরিক কাজেই সন্তুষ্ট হতে হলো।
১৯৯০ সালে সরকার বিরোধী আন্দোলনের জের ধরে তাকে বিমান সংস্থা থেকে বরখাস্ত করা হয়। এই ঘটনার পর তিনি সক্রিয় কর্মী হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশ নেয়া শুরু করেন। সার্বিয়ার বুলডোজার বিপ্লবের সক্রিয় কর্মী হিসেবে তিনি বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এরপর কিছুদিন সার্বিয়া ডেমোক্রেটিক পার্টির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন ভেসনা।
শেষ জীবন
“আমি সেদিনের কথা প্রতিদিন মনে করতাম, তা সত্য নয়। কিন্তু আমার ভেতর একধরনের অপরাধবোধ জন্মেছিল। সেটি বেঁচে থাকার অপরাধবোধ। আমি কাঁদতে কাঁদতে ভাবতাম, আমার একা বেঁচে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না।”
বেঁচে থাকার এই অপরাধবোধ থেকে পরিত্রাণের জন্য তাকে বেশ কয়েকবার মনস্তত্ত্ববিদের নিকট যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। তিনি সেই পরামর্শ গ্রাহ্য করেননি। একসময় মানসিক শান্তির উদ্দেশ্যে তিনি ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে মনোযোগী হয়ে ওঠেন। তিনি প্রায়ই বলতেন,
“কেউ যদি এ ধরনের বিপদ থেকে বেঁচে থাকতে পারে, তাহলে সে পৃথিবীর সবকিছু থেকে বেঁচে থাকার ক্ষমতা রাখে।”
শেষ জীবনে বেশ আর্থিক সমস্যায় ভুগছিলেন ভেসনা ভুলোভিচ। তার উপর শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতি হতে থাকে। তিনি বেলগ্রেডে নিজস্ব বাসভবনে একাকী বসবাস করতেন। শুধু দুই-তিনজন নিকটস্থ বন্ধু ছাড়া তার সাথে কারো যোগাযোগ ছিল না। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের দিকে একদিন বন্ধুরা তাকে ফোন দেওয়ার পরেও তিনি ফোন ধরেননি। তারা চিন্তিত হয়ে তার ভবনে খোঁজ নিয়ে ভেতর থেকে বন্ধ করা দরজা আবিষ্কার করে। শেষপর্যন্ত দরজা ভেঙে তারা ভেসনা ভুলোভিচের মরদেহ উদ্ধার করেন। চিকিৎসকের মতে, তিনি হৃদরোগজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন।
৩৩ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে পতনের পর বেঁচে থাকা ভাগ্যের ব্যাপার। এই দুর্ঘটনা তাকে তারকাখ্যাতি দিয়েছে। তাই ভেসনা ভুলোভিচকে অনেকে বলতো ভাগ্যবতী। কিন্তু তিনি এই উপাধি প্রত্যাখ্যান করতেন। তার উত্তর ছিল সোজাসাপ্টা-
“আমি যদি ভাগ্যবতী হতাম, তাহলে কখনোই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়তাম না। এই দুর্ঘটনা আমার পরিবারবর্গের জীবনে অনেক বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। হয়তো আমি ভুল সময়ে জন্মেছি, ভুল স্থানে জন্মেছি।”
শেষ জীবনের একাকিত্ব এবং পরিবার, প্রিয়জনের সাথে সম্পর্কহীনতা তাকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ব্যথা দিয়েছে, এই বক্তব্য তারই প্রতিফলন।
This is a Bangla article about Vesna Vulovic. She holds the record of highest free fall without parasute. She survived a 33,000 feet fall.
Reference: All the references are hyperlinked
Feature Image: Europics