Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

স্বাধীনতা সংগ্রামের সেক্টরগুলো: ৩ নং সেক্টর

আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ কোনো সামরিক অভিযান ছিল না; ছিল সাধারণ শোষিত মানুষের মুক্তির অকুতোভয় অসম সংগ্রাম।ধাপে ধাপে দখল হতে থাকা এই দেশকে মুক্ত করার প্রয়াসে এদেশের অগণিত নিষ্পেষিত প্রাণ চালিয়ে যাচ্ছিলো তাঁদের দুর্বার মুক্তিসংগ্রাম। কিন্তু ২৫ মার্চ থেকে চালানো পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নির্মম নৃশংসতার বিপরীতে সেগুলো ছিল অসংগঠিত ও বিচ্ছিন্ন কিছু ‘ব্যর্থ’ প্রতিরোধ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিরোধযুদ্ধগুলো হচ্ছিলো সমন্বয়হীনভাবে আর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। এমতাবস্থায় এসব স্বাধীনতাকামী, সাধারণ জনগণ, বাঙালি ইউনিট আর ‘বিদ্রোহী’ সামরিক সদস্যদের মধ্যে সমন্বয় সৃষ্টি করাটা জরুরি হয়ে পড়ে।

সেই লক্ষ্যে ৪ এপ্রিল সিলেটের হবিগঞ্জ মহকুমার সীমান্ত সংলগ্ন তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ডাক বাংলোয় কর্নেল এম.এ.জি. ওসমানীর সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানকে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট ও যশোর- এই চারটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়। পরবর্তীতে অবশ্য এই চার অঞ্চল বিভক্তি থেকে সরে আসে নীতিনির্ধারকেরা। ১১ এপ্রিল শিলিগুড়ি বেতারকেন্দ্র থেকে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ সমগ্র দেশকে আটটি সামরিক অঞ্চলে বিভক্ত করে আটজন সেক্টর কমান্ডার নিয়োগের ঘোষণা দেন।

অবশেষে ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে বৃষ্টিস্নাত কলকাতার ৮নং থিয়েটার রোডে তাজউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক কনফারেন্সে সারা দেশকে সামরিকভাবে এগারোটি সেক্টরে ভাগ করা হয়। মূলত মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার পর এটিই ছিল সেক্টর কমান্ডারদের প্রথম কনফারেন্স। সভায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) এম এ রবকে বাংলাদেশ ফোর্সেস-এর চিফ অব স্টাফ ও গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারকে ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর রণাঙ্গনের প্রধান সেনাপতি হিসেবে কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে মনোনীত করা হয়।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো; বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস-সেক্টর এক, পৃষ্ঠা ৩৩

কলকাতায় সেক্টর কমান্ডারদের সভায় কর্নেল ওসমানীর সাথে সেক্টর কমান্ডারগণ; © মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র

মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে এগারোটি (প্রধানত) সেক্টরে ভাগ ছিল আমাদের রণাঙ্গন; © banglapedia.org

৩ নং সেক্টরের ভূ-প্রকৃতি যেমন বৈচিত্র্যময়, তেমনি ছিল এখানকার রণাঙ্গনগুলোও। এই সেক্টরে যেমন ছিল ছোট ছোট পাহাড় ও টিলা, তেমনি ছিল সমতল ভূমি। আরো ছিল চা বাগান, নদ-নদী, খাল-বিল এবং হাওর-বাওর। সার্বিকভাবে এই সেক্টরের অধিকাংশ এলাকা বর্ষা আর শীতকালে প্রথাগত যুদ্ধের জন্য অনুপযোগী ছিল। অন্যদিকে এই ভূ-প্রকৃতি ও জলবায়ু গেরিলা যুদ্ধের জন্য বেশ অনুকূল ছিল যেটা একাত্তর সালের নয় মাসে এই সেক্টরে সত্যে পরিণত হয়েছিল। চলুন, ইতিহাসের পথ ধরে ঘুরে আসি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সেই উত্তাল ৩ নং সেক্টর থেকে।

৩ নং সেক্টরের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন

সেক্টর এলাকা: বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহকুমা, বৃহত্তর সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমা, ঢাকা জেলার গাজীপুর ও নরসিংদী মহকুমা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উত্তরাংশ ও নারায়ণগঞ্জের একাংশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল এই ৩ নং সেক্টর। এটি ভৌগোলিকভাবে ২৩°৯০′ থেকে ২৪°৬০′ উত্তর অক্ষরেখা এবং ৯০° থেকে ৯১°৯০′ পূর্ব দ্রাঘিমা রেখার মধ্যে অবস্থিত। ৩ নং সেক্টরের উত্তরে ১১ নং সেক্টরের ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জের অবস্থান, দক্ষিণে ২ নং সেক্টরের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লার অবস্থান, পশ্চিমে টাঙ্গাইল ও মানিকগঞ্জ আর পূর্বে সিলেটের মৌলভীবাজার ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। ৩ নং সেক্টরের আয়তন ছিল প্রায় ৯, ৮০০ বর্গ কিলোমিটার।

প্রধান প্রধান নদ-নদী: এই সেক্টর ছিল নদীবহুল। জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল এই সেক্টরের নদ-নদী আর তাদের শাখা-প্রশাখাগুলো। মেঘনা ছিল এই অঞ্চলের প্রধান নদী। একাত্তরে এই নদী ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। কারণ, পূর্বদিক থেকে ঢাকা প্রবেশের ক্ষেত্রে হানাদার বাহিনীর জন্য এই নদী ছিল প্রথম ও প্রধান বাধা। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নদীর মধ্যে শীতলক্ষ্যা, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর নিম্নভাগ ছিল অন্যতম। এই সেক্টরের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদের নাম পুরাতন ব্রহ্মপুত্র। এছাড়াও কালনী, তিতাস, খোয়াই, গোপালা, সুতাং, রাঙ্গী, রত্না, কালিশিরি, কলকলিয়া, বুড়ি, পাগলা, আড়িয়াল খাঁ, কলাগাছিয়া, তুরাগ, বংশী, বালু, পিয়াইন ছিল এই সেক্টরের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া আরো কিছু নদ-নদী।

বিল ও হাওর: এই সেক্টরে ছিল অসংখ্য বিল, হাওর, খাল ও জলাশয়। গুপ্ত ও গেরিলা আক্রমণের জন্য এই ধরনের জলভাগ ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খুবই কার্যকর। কুকি, তেঘরিয়া, ঘোড়া, ধীঘা, বাঘা, ঘনিয়াভাঙ্গা, গাঞ্জুয়া, বড়ডালা, হাউসা, বাদি, ডনকা, কালেশ্বর, চেলওয়াল, দুয়াসুরা, মারিয়া, বাফলার বিল ইত্যাদি ছিল এই সেক্টরের উল্লেখযোগ্য বিল। হাওরের মধ্যে ছিল- হুমাইপুর, সোমাই, তল্লার, সুরমা বাউলা, ইত্যাদি।

যোগাযোগ ব্যবস্থা: জলপথ ছিল এই সেক্টরের অন্যতম প্রধান একটি যোগাযোগ মাধ্যম। রেলপথের কিছু র‍্যুট ছিল এই সেক্টরে। ঢাকা থেকে রেলপথের একটি শাখা সোজা উত্তরে গাজীপুর মহকুমার উপর দিয়ে ময়মনসিংহ হয়ে জামালপুর, নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। রেলপথের আরেকটি শাখা ঢাকা থেকে টঙ্গী হয়ে নরসিংদীর উপর দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঢাকা-সিলেট রেলপথের সাথে মিলিত হয়। সেক্টর এলাকার অপর রেলপথটি চট্টগ্রাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌঁছে; সেখান থেকে একটি শাখা হবিগঞ্জ মহকুমা সদরে, একটি শাখা দক্ষিণদিকে বাল্লা সীমান্তে চলে গেছে এবং প্রধান পথটি মৌলভীবাজার হয়ে বৃহত্তর সিলেট পৌঁছে। আখাউড়া-শায়েস্তাগঞ্জ রেলপথটি সীমান্তের বেশ কাছাকাছি হওয়ায় পাক হানাদার বাহিনীর জন্য বেশ প্রতিকূল একটি এলাকা ছিল। এই সেক্টরে বেশ কিছু ছোট-বড় রেলসেতু ছিল। ভৈরব সেতু ছিল এরকমই একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।

এই সেক্টরের প্রধান প্রধান সড়কপথের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ঢাকা-গাজীপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। গাজীপুর থেকে একটি শাখা সড়ক টাঙ্গাইলের দিকে চলে গেছে। যুদ্ধের সময় এই মহাসড়কটি উভয়পক্ষের জন্যেই বেশ গুরুত্ববহ ছিল। ময়মনসিংহ অঞ্চলে অস্ত্র-সৈন্য প্রেরণ করার জন্য পাক বাহিনী এই মহাসড়ক ব্যবহার করতো। অন্যদিকে ঢাকা দখলের সময় যৌথবাহিনীর একটি অংশ এই রুটেই রাজধানীতে প্রবেশ করে। এই সেক্টরের অপর গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ, ভৈরব, আশুগঞ্জ, মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জ হয়ে হবিগঞ্জে চলে গেছে। শায়েস্তাগঞ্জ থেকে প্রধান শাখাটি মৌলভীবাজার হয়ে সিলেট পৌঁছেছে। এছাড়াও বিভিন্ন আধাপাকা ও কাঁচা সড়ক ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল এই সেক্টরের পুরো এলাকা জুড়ে।

সদর দপ্তর: প্রথমে ছিল বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মনতলায়; পরবর্তীতে এটি স্থানান্তর করা হয় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের হোজামারা জেলার সিমনা এলাকায়।

সেক্টর কমান্ডার: মেজর কাজী মোহাম্মদ সফিউল্লাহ (এপ্রিল – ৩০ সেপ্টেম্বর); মেজর এ এন এম নূরুজ্জামান (১ অক্টোবর – ১৬ ডিসেম্বর)।

মেজর কাজী মোহাম্মদ সফিউল্লাহ; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ৩৯৩

মেজর এ এন এম নূরুজ্জামান; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ৩৯৩

সেক্টর এ্যাডজুটেন্ট: লেফটেন্যান্ট সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীম।

লেফটেন্যান্ট সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীম; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ৩৯৪

মেডিক্যাল অফিসার: লেফটেন্যান্ট আহমেদ আলী

সেক্টর বাহিনী ও প্রশিক্ষণ ক্যাম্প: ৩ নং সেক্টরে নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি ছিল ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর); তাদের সাথে যুক্ত হয় আনসার, মুজাহিদ ও বেসামরিক জনগণ। সেক্টর ট্রুপস ছিল দুই অংশে বিভক্ত; একটি অংশ ৬,৬৯৩ জনের নিয়মিত বাহিনী (মোট বাহিনীর প্রায় ২১ শতাংশ) আর অবশিষ্টাংশ গঠিত হয়েছিল প্রায় ২৫ হাজার গণবাহিনীর সদস্য (প্রায় ৭৯%) নিয়ে।

৩ নং সেক্টরে বিভিন্ন জায়গায় ছিল অসংখ্য প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। হবিগঞ্জ মহকুমার চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ ও বানিয়াচং; ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার নাসিরনগর, সরাইল, মুকুন্দপুর ও নবীনগর; কিশোরগঞ্জ মহকুমার কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, কটিয়াদী, পাকুন্দিয়া, হোসেনপুর ও কিশোরগঞ্জ সদর; ঢাকা জেলার রায়পুরা, শিবপুর, নরসিংদী, কাপাসিয়া, মনোহরদী, কালিয়াকৈর, জয়দেবপুর ও কালীগঞ্জ; ময়মনসিংহের গফরগাঁও এবং ভালুকাতে ছিল এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ।

সাব-সেক্টরের সংখ্যা: ৭টি; এখানকার কিছু কিছু সাব-সেক্টরকে ভিন্ন নামেও ডাকা হতো। সাব-সেক্টরগুলো ছিল- আশ্রমবাড়ি বা বাঘাইবাড়ি, হাতকাটা, সিমনা, পঞ্চবটী, মনতলা বা বিজয়নগর, কালাছড়া, কলকলিয়া বা বামুটিয়া। তবে এই সেক্টরে বিশাল এলাকা সাব-সেক্টর বহির্ভূত ছিল। কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর মহকুমা, হবিগঞ্জ মহকুমার লাখাই, বাহুবল, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ থানা, নারায়ণগঞ্জ মহকুমার আড়াইহাজার ও রূপগঞ্জ থানা ছিল ৩ নং সেক্টরের সাব-সেক্টর বহির্ভূত অঞ্চল।

সাব-সেক্টরসমূহ

পঞ্চবটী সাব-সেক্টর:

পঞ্চবটী সাব-সেক্টর; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ১৭৯

এই সাব-সেক্টরের উত্তর ও পূর্বে হবিগঞ্জ এবং পশ্চিম ও দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমানা। এই অঞ্চলের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের একটি ছোট্ট অংশ ভারত সীমান্তের সাথে যুক্ত ছিল। এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়া থেকে সিলেটগামী রেলপথ চলে গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সিলেটগামী মহাসড়কটিও এই অঞ্চলের ভিতর দিয়ে গেছে।

সাব-সেক্টর কমান্ডার: ক্যাপ্টেন এএসএম নাসিম।

দায়িত্বপূর্ণ এলাকা: হবিগঞ্জের মাধবপুর, চান্দুরা, হরষপুর, নোয়াপাড়া, ইসলামপুর ও তিতাস নদীর পাড় ঘেঁষে শাহবাজপুর পর্যন্ত।

উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ, অভিযান ও অ্যামবুশ: হরষপুর রেলসেতুতে যুদ্ধ (আগস্টের প্রথম সপ্তাহ), আশুগঞ্জে মেঘনা ব্রিজ ধ্বংস (নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ), চান্দুরার যুদ্ধ (৬ ডিসেম্বর), ভৈরব ও আশুগঞ্জ মুক্তকরণ (৮ থেকে ১১ ডিসেম্বর), ইত্যাদি।

ভৈরব ও আশুগঞ্জের যুদ্ধ; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ১৯১

কালাছড়া সাব-সেক্টর:

কালাছড়া সাব-সেক্টর; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ২০৩

এই সেক্টরের ছিল একাত্তরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রণাঙ্গন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া এলাকা। সামরিক কৌশলের দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল ত্রিপুরা রাজ্য থেকে মাত্র মাইল তিনেক দূরে অবস্থিত আখাউড়া। ঢাকা-সিলেট রেলপথ এই আখাউড়ার উপর দিয়ে চলে গেছে। এই সাব-সেক্টরের পূর্ব সীমান্তের সাথে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের যোগাযোগ ছিল। পাক বাহিনী তাদের শক্তিশালী ২৭ পদাতিক ব্রিগেডের একটি অংশ ১২ ফ্রন্টিয়ার্স ফোর্স রেজিমেন্টকে দুটি ট্যাংক ট্রুপ সমেত এই এলাকার প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত রেখেছিল।

আখাউড়ার এই কুখ্যাত গুদাম ঘরে ছিল পাক বাহিনীর অস্ত্রের মজুদ; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ৪০৫

সাব-সেক্টর কমান্ডার: লেফটেন্যান্ট মনসুরুল ইসলাম মজুমদার

দায়িত্বপূর্ণ এলাকা: মূলত ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার আখাউড়া থানা।

উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ, অভিযান ও অ্যামবু: কালাছড়া চা বাগান অপারেশন (অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ) ও আখাউড়ার যুদ্ধ (৩০ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর) বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য।

গেরিলা হামলায় বিধ্বস্ত রেলসেতু; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ৩৯৯

মনতলা সাব-সেক্টর:

মনতলা সাব-সেক্টর; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ২১৭

এই সাব-সেক্টরের পূর্বে ও দক্ষিণে ত্রিপুরা রাজ্য, পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আর উত্তরে মাধবপুর। এই অঞ্চলের ঠিক মাঝ বরাবর দিয়ে চলে গেছে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-সিলেট রেলপথ। এখানে পাক বাহিনী ১৪ পদাতিক ডিভিশনের ৩১৩ পদাতিক ব্রিগেডের একটি অংশকে প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত রেখেছিল।

সাব-সেক্টর কমান্ডার: ক্যাপ্টেন এম সুবিদ আলী ভূঁইয়া।

দায়িত্বপূর্ণ এলাকা: ধর্মগড়, বাহারা, আদাইর, চৌমুহনী, মাধবপুর থানার অংশবিশেষ।

ত্রিপুরার সীমান্ত সংলগ্ন মনতলা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাগণ মেজর সফিউল্লাহর নেতৃত্বে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ৩৯৯

উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ, অভিযান ও অ্যামবুশ: এই এলাকার উল্লেখযোগ্য যুদ্ধসমূহ মূলত সীমান্ত ঘেঁষা ধর্মগড় এলাকায় সংগঠিত হয়েছিল; অন্যতম ছিল ধর্মগড় বাজার (জুলাইয়ের শেষাশেষি) যুদ্ধ, সেপ্টেম্বরের ধর্মগড় বিওপি আক্রমণ ইত্যাদি।

ধর্মগড় বিওপি আক্রমণ; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ২২৩

সিমনা সাব-সেক্টর:

সিমনা সাব-সেক্টর; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ২২৭

সিমনা সাব-সেক্টরের সীমানা ঘেঁষে উত্তর-পশ্চিমে বয়ে গেছে মেঘনা নদী আর মাঝখান দিয়ে তিতাস। এছাড়াও এখানে ছিল নাসিরনগর ও সরাইলের মধ্যকার একটি সংযোগ সড়ক।

সাব-সেক্টর কমান্ডার: ক্যাপ্টেন আব্দুল মতিন।

ক্যাপ্টেন আব্দুল মতিন; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ৩৯৩

দায়িত্বপূর্ণ এলাকা: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানা, সরাইল থানার একাংশ এবং হবিগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত এলাকার নোয়াপাড়া পর্যন্ত।

উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ, অভিযান ও অ্যামবুশ: বিটঘর ও পানিশ্বরের যুদ্ধ (৬ ডিসেম্বর), সরাইল মুক্তকরণ (৮ ডিসেম্বর), ইত্যাদি।

হাতকাটা সাব-সেক্টর

হাতকাটা সাব-সেক্টর; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ২১১

এই সাব-সেক্টরটি চা বাগান সমৃদ্ধ একটি পাহাড়ি এলাকা। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে এই অঞ্চলের তেলিয়াপাড়াতে অবস্থিত এক চা বাগানের ডাক বাংলোতে সেই ঐতিহাসিক সম্মেলন (উপরে উল্লিখিত) অনুষ্ঠিত হয়। এই অঞ্চলের দক্ষিণপ্রান্ত দিয়ে চলে গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-আখাউড়া-সিলেট রেলপথ। চা বাগান, ছোট ছোট পাহাড়-টিলা দিয়ে গঠিত এই অঞ্চলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ছিল। হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়ক, শায়েস্তাগঞ্জ-ভাদেশ্বর হয়ে মৌলভীবাজারগামী জাতীয় সড়ক এই এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যোগাযোগ মাধ্যম।

সাব-সেক্টর কমান্ডার: ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান।

দায়িত্বপূর্ণ এলাকা: শায়েস্তাগঞ্জের নলুয়া চা বাগান, তেলিয়াপাড়া, পুটিজুরি, বাহুবল ইত্যাদি।

উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ, অভিযান ও অ্যামবুশ: নূরপুর আক্রমণ (২৯ আগস্ট), খোয়াই ব্রিজ আক্রমণ (৩ ডিসেম্বর), বাহুবল থানা মুক্তকরণ (৪ ডিসেম্বর) ইত্যাদি।

আশ্রমবাড়ি সাব-সেক্টর

আশ্রমবাড়ি সাব-সেক্টর; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ১৯৫

সুতাং ও খোয়াই (অথবা কাউওয়াই) এই দুটি নদী প্রায় সমান্তরালে বয়ে গেছে এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে। আর ঠিক মধ্যভাগ দিয়ে চলে গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-সিলেট রেলপথ। অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে একটি সড়ক পথ বৃত্তচাপ আকারে মাধবপুর-চুনারুঘাট হয়ে শায়েস্তাগঞ্জ ও হবিগঞ্জে পৌঁছেছে। এই সাব-সেক্টরের দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা সীমান্ত, উত্তরে হবিগঞ্জ সদর, পূর্বে মৌলভীবাজার এবং পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার সীমানা। পাক বাহিনীর ১৪ পদাতিক ডিভিশনের ইপিসিএএফ, ৩০ ফ্রন্টিয়ার্স ফোর্স এই অঞ্চলে মোতায়েন ছিল।

সাব-সেক্টর কমান্ডার: প্রথমে ক্যাপ্টেন আজিজুর রহমান ও পরে ক্যাপ্টেন এজাজ আহমেদ চৌধুরী।

দায়িত্বপূর্ণ এলাকা: কালেঙ্গা জঙ্গল, ধুপপাতিল, সীমান্ত এলাকার আসামপাড়া, লালচান্দ চা বাগান, হবিগঞ্জ মহকুমার চুনারুঘাট থানা।

উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ, অভিযান ও অ্যামবুশ: জুড়ি চা বাগানের যুদ্ধ (২১ আগস্ট), রানীগাঁও রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ (২৭ আগস্ট), মারুড়া ক্যাম্প আক্রমণ (আগস্ট), লালচান্দ চা বাগানের যুদ্ধ (আগস্ট), কালেঙ্গা জঙ্গলে অ্যামবুশ (২৪ সেপ্টেম্বর) ইত্যাদি।

কলকলিয়া সাব-সেক্টর

কলকলিয়া সাব-সেক্টর; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ১৬৩

এই সাব-সেক্টরের পূর্ব প্রান্তে ভারত সীমান্ত। এখানে পাক বাহিনীর ২৭ পদাতিক ব্রিগেড নিয়োজিত ছিল। অন্যান্য অঞ্চলের মতো এই সাব-সেক্টর অঞ্চলও ছিল “হিট অ্যান্ড রান” গেরিলা আক্রমণের জন্য উপযোগী।

সাব-সেক্টর কমান্ডার: লেফটেন্যান্ট হেলাল মোর্শেদ খান।

লেফটেন্যান্ট হেলাল মোর্শেদ খান; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ৩৯৪

দায়িত্বপূর্ণ এলাকা: মাধবপুরের অংশবিশেষ, মুকুন্দপুর, আমিরগঞ্জ, বামুটিয়া ইত্যাদি।

উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ, অভিযান ও অ্যামবুশ: মুকুন্দপুর ও আমিরগঞ্জ ব্রিজ ধ্বংস (২৯ জুলাই), ধনদইল গ্রামে অ্যামবুশ (২৫ আগস্ট), মুকুন্দপুর রেল লাইনের যুদ্ধ (১৯ সেপ্টেম্বর), মুকুন্দপুর বিওপি যুদ্ধ (১৮ নভেম্বর) ইত্যাদি।

মুকুন্দপুর বিওপির যুদ্ধ; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ১৭৩

৩ নং সেক্টরের সাব-সেক্টর বহির্ভূত অঞ্চলসমূহ

৩ নং সেক্টরের সাব-সেক্টর বহির্ভূত এলাকা আয়তনে অপেক্ষাকৃত বড় ছিল; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ২৩৫

৩ নং সেক্টরের অধিকাংশ অঞ্চল ছিল গঠিত সাতটি সাব-সেক্টরের বাইরে। এই অঞ্চলগুলোতেও সংগঠিত হয়েছিল কিছু গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ। নিচে অঞ্চলভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধসমূহের উল্লেখ করা হল-

হবিগঞ্জ: বদলপুর ও আজমিরীগঞ্জের যুদ্ধ (১৬ নভেম্বর), বুল্লাবাজার অপারেশন (২৮ নভেম্বর), লাখাই বিজয় (২৮-২৯ নভেম্বর), পানিউমদা অপারেশন (ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ) ইত্যাদি।

কিশোরগঞ্জ: কটিয়াদি অ্যামবুশ (১৬ জুলাই ও ১৬ আগস্ট), রামনগর গ্যাস লাইন অপারেশন (৩০ জুলাই), কুলিয়ারচর থানা অপারেশন (১৪ আগস্ট), গুরুই গ্রামের যুদ্ধ (১৫ আগস্ট), ভৈরব থানা আক্রমণ, বগামারা যুদ্ধ (৮ অক্টোবর), তাড়াইল থানা আক্রমণ (১২ অক্টোবর), কুলিয়ারচর রেল সেতু ধ্বংস (অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ), নিকলী থানা আক্রমণ (১৫ থেকে ১৮ অক্টোবর), সরারচর রেলস্টেশনের যুদ্ধ (২০ থেকে ২২ অক্টোবর), বাজিতপুর থানা আক্রমণ (২১ অক্টোবর), সরারচর যুদ্ধ (২২ অক্টোবর), করিমগঞ্জ থানা আক্রমণ (৯ নভেম্বর), অষ্টগ্রাম থানা আক্রমণ (২৭ নভেম্বর), ভৈরব যুদ্ধ (১০ ডিসেম্বর) ইত্যাদি।

সরারচর রেলস্টেশনের যুদ্ধ; © বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর তিন, পৃষ্ঠা ২৭৫

গাজীপুর: ফুলবাড়িয়ার যুদ্ধ (জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ), দরদরিয়া-কাপাসিয়ার যুদ্ধ (সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ), তরগাঁও অ্যামবুশ (১১ অক্টোবর), মৌচাকের যুদ্ধ (১৫ অক্টোবর), কালিয়াকৈর বাজারের যুদ্ধ (২২ অক্টোবর), ধীরাশ্রমের যুদ্ধ (নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ), ন্যাশনাল জুট মিলের যুদ্ধ (ডিসেম্বর), কালিয়াকৈর বাজারের ত্রিমুখী যুদ্ধ (১০-১১ ডিসেম্বর), পুবাইল রেলসেতুর যুদ্ধ (১৩ ডিসেম্বর), গাজীপুর সমরাস্ত্র কারখানার যুদ্ধ (১৫ ডিসেম্বর), ছয়দানার যুদ্ধ (১৫ ডিসেম্বর) ইত্যাদি।

নরসিংদী: রামপুরের যুদ্ধ (১৬ জুলাই), হাতিরদিয়া অ্যামবুশ ও অপারেশন তালটিয়া (জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ), জিনারদি অপারেশন (১৩ আগস্ট), ব্রহ্মপুত্র সেতু অপারেশন (আগস্ট), হাটুভাঙ্গা যুদ্ধ (১৬ সেপ্টেম্বর), চন্দনদিয়া অপারেশন (সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ), অপারেশন বড়ৈবাড়ী (সেপ্টেম্বর), মনোহরদী অবরোধ (২১ অক্টোবর), নরসিংদী মুক্তকরণ (১১ থেকে ১৩ ডিসেম্বর) ইত্যাদি।

নারায়ণগঞ্জ: রূপসীবাজার অপারেশন (২৩ আগস্ট), জাঙ্গীর অপারেশন (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর), কাঞ্চন বাজার অপারেশন (১০ অক্টোবর), বগাদী গ্রামের অ্যামবুশ (৭ নভেম্বর), কাঁচপুর ফেরিঘাট আক্রমণ (২৬ নভেম্বর), বানিয়াদী এলাইড জুট মিল অপারেশন (১২ ডিসেম্বর) ইত্যাদি।

৩ নং সেক্টরের খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাগণ

বীর উত্তম: তিনজন; মেজর কে এম সফিউল্লাহ, মেজর এ এন এম নূরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন আজিজুর রহমান।

বীর বিক্রম: ৬ জন। এরা হলেন- মেজর আবু সালেহ মোঃ নাসিম, মেজর মইনুল হোসেন চৌধুরী, লেফটেন্যান্ট হেলাল মোর্শেদ খান, সুবেদার আবদুল করিম, নায়েক সুবেদার আশরাফ আলী খান ও মুজাহিদ রমিজ উদ্দিন।

বীর প্রতীক: মোট ২৩ জন।

ফিচার ইমেজ: Edited by writer

তথ্যসূত্র

১. বাংলাদেশ ফোর্সেস হেডকোয়ার্টার, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ মুজিবনগর সরকার, Sector Boundaries সংক্রান্ত পত্র, এইচ.কিউ/এক্স/সেক্টর, তাং ১৮ জুলাই ‘৭১

২. বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস–সেক্টর এক ও সেক্টর তিন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত

৩. মুক্তিযুদ্ধে রাইফেল‌্স‌্ ও অন্যান্য বাহিনী, সুকুমার বিশ্বাস, মাওলা ব্রাদার্স, ১৯৯৯

৪. একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধঃ এগারটি সেক্টরের বিজয় কাহিনী, মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি সম্পাদিত, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড

৫. মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান, এ এস এম সামছুল আরেফিন, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, প্রথম প্রকাশ ১৯৯৮

৬. Bangladesh Fights for Independence, Lieutenant General ASM Nasim Bir Bikram, Columbia Prokashani, 2002

৭. সেক্টর কমান্ডারস এবং বেসামরিক বিষয়ক উপদেষ্টা মণ্ডলীর কনফারেন্স-এর মিনিটস, ১২-১৫ জুলাই ‘৭১, বাংলাদেশ ফোর্সেস হেডকোয়ার্টার

৮. লক্ষ প্রাণের বিনিমিয়ে, রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, অনন্যা প্রকাশনী, অষ্টম সংস্করণ

৯. বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র, নবম, দশম ও একাদশ খন্ড, হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত, প্রথম সংস্করণ নভেম্বর ১৯৮২

১০. মুক্তিযুদ্ধের দু’শো রণাঙ্গন, মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি সম্পাদিত, অনন্যা প্রকাশনী, প্রথম প্রকাশ ১৯৯৮

১১. আমি বিজয় দেখেছি, এম আর আখতার মুকুল, সাগর পাবলিশার্স, ২০০০

১২. মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ইতিহাস, আবু মোঃ দেলোয়ার হোসেন সম্পাদিত, সাহিত্য প্রকাশ, ১ম খন্ড (১৯৯৪) ও ২য় খন্ড (১৯৯৯)

১৩. মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ, মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ বীর উত্তম, আগামী প্রকাশনী, ডিসেম্বর ১৯৯৫

১৪. Witness to Surrender, Siddiq Salik, University Press Ltd., 1996

১৫. যুদ্ধে যুদ্ধে স্বাধীনতা, মেজর নাসির উদ্দিন, আগামী প্রকাশনী, ডিসেম্বর ১৯৯৯

***বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই লেখাটি পূর্ণরূপে সম্পূর্ণ হয়েছে এটা বলা অসমীচীন। বিজ্ঞ পাঠককুলের যেকোনো প্রামাণ্য দলিল ও তথ্য এখানে আপডেট করে দেওয়া হবে।

Related Articles