Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশ: দেশের ডাকে আট নৌসেনা যেভাবে এসেছিলেন পালিয়ে 

১৯৭০ এর মাঝামাঝি সময়। ফ্রান্সের কাছ থেকে ‘PNS Mangro’ নামের এক সাবমেরিন কিনল পাকিস্তান। এক বছর পর, ১৯৭১ সালের মার্চ মাস। ফ্রান্সের তুলোঁঁ সামরিক বন্দরে ম্যানগ্রো নামের সেই সাবমেরিনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর কয়েকজন সাবমেরিনারকে।

ম্যানগ্রোতে মোট পঁয়তাল্লিশ জন নাবিকের মধ্যে তেরো জন ছিলেন বাঙালি। পত্রিকা মারফত তারা খবর পেলেন, দেশে শুরু হয়ে গেছে মুক্তি সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে হাজারো মুক্তিসেনা ঝাঁপিয়ে পড়েছে যুদ্ধে। তবে পত্র-পত্রিকায় খবরকে গুজব বলেই উড়িয়ে দিলেন তাদের সহকর্মীরা। তারা বোঝাতে লাগলেন, পূর্ব পাকিস্তানের অল্প কিছু মানুষ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করেছে। তবে পূর্ব পাকিস্তানীদের উপর দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বৈষম্যের খবর তো তাদের অজানা নেই, তাই তারা পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনার দিকে নজর রাখা শুরু করলেন। অন্যদিকে পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষও এই তেরো জন বাঙালির উপর নজরদারি বাড়িয়ে দিলো। কারণ, বাঙালি সেনারা সুযোগ পেলেই তখন পালিয়ে গিয়ে পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিসংগ্রামে যোগ দিচ্ছে।

পঁচিশে মার্চ, ১৯৭১। অপারেশন সার্চলাইটের খবর সারা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। তুলোঁঁর সামরিক বন্দরে বাঙালি নাবিকদের কাছেও পৌঁছে যায় এই খবর। ট্রেনিং শেষ করে পহেলা এপ্রিল পাকিস্তানে ফেরত যাবার কথা নাবিকদের। কিন্তু দুঃসাহসী বাঙালি নাবিকেরা সিদ্ধান্ত নিলেন, তারা দেশে ফিরে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেবেন। আর তা সম্ভব একমাত্র ফ্রান্স থেকে পালাতে পারলেই। একবার পাকিস্তানে পৌঁছে গেলে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যাবে। কিন্তু একদিকে যেমন বাঙালিদের উপর অতিরিক্ত নজরদারি করা হচ্ছে, পাশাপাশি তাদের সবার পাসপোর্ট জমা ছিল কর্তৃপক্ষের কাছে।

ফ্রান্সের তুলোঁঁ সামরিক বন্দর; Source: commons.wikimedia.org

সবার চোখের আড়ালে তেরো জন বাঙালি তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন। পঁচিশে মার্চের ভয়ঙ্কর গণহত্যার খবর পেয়ে তারা প্রথমে সিদ্ধান্ত নিলেন, তুলোঁঁ বন্দরেই পাকিস্তান সাবমেরিনটিকে বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেবেন। কিন্তু পরে তারা এই সিদ্ধান্ত থেকে কয়েকটি কারণে সরে আসেন। প্রথমত, সাবমেরিন ধ্বংস করতে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দরকার। কিন্তু তুলোঁঁ সামরিক বন্দরের কড়া নজরদারির মধ্যে অল্প সময়ে এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক যোগাড় করা রীতিমতো অসম্ভব ব্যাপার। দ্বিতীয়ত, যদি তারা এই কাজে সফল হয়েও যান, তাহলে ফ্রান্সের মাটিতে পাকিস্তানী সাবমেরিন বিস্ফোরণের ঘটনায় বিশ্ব জনমত বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনতার বিরুদ্ধে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর বিস্ফোরণ হলে তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আবার বেঁচে গেলেও, পাকিস্তানের সামরিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড সময়ের ব্যাপার মাত্র। 1

বাঙালির মুক্তিসংগ্রামে তখন ধ্রুবতারার মতো পথ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া সৈনিকের বড়ই অভাব। এই অবস্থায় নিজেদের মূল্যবান প্রাণের অপচয় না করে দেশমাতৃকার কল্যাণে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিলেন অকুতোভয় এই নাবিকেরা। ‘ধরা পড়লে নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড’ এমন খড়গ মাথায় নিয়েই পাকিস্তানী সাবমেরিন থেকে পালিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেবেন, এমন সিদ্ধান্তই গৃহীত হয়েছিল সেদিন। তারা তখনও জানতেন না, এই একটি সিদ্ধান্তই হয়তো অনেকখানি বদলে দেবে মুক্তিযুদ্ধের গতিপথ। ফ্রান্স থেকে পালিয়ে আসা এই নৌ সেনাদের ঘিরে বাংলার মাটিতেই গড়ে উঠবে পাঁচশত নৌ কমান্ডোর এক চৌকষ দল, যাদের হাতে রচিত হবে ‘অপারেশন জ্যাকপটে’র সোনালী ইতিহাস।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবার পরে দেখা গেল, তেরো জন বাঙালি নাবিকের চারজনের পরিবার পশ্চিম পাকিস্তানে। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তারা বাকি নয়জনের সাথে যোগ দিতে পারলেন না। তবে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন যে, পালিয়ে যাওয়া বাঙালি সেনাদের ব্যাপারে তারা কিছুতেই মুখ খুলবেন না। বিদেশে থাকা পাকিস্তান সামরিক বাহিনী থেকে দলত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়া এই দলটিই ছিল মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রথম বড় এবং সংগঠিত সামরিক দল। আর এই দলের সংগঠক এবং অন্যতম দলনেতা ছিলেন চিফ রেডিও আর্টিফিসার গাজী মো. রহমতউল্লাহ, তার সাথে আরো ছিলেন ইঞ্জিনরুম আর্টিফিসার সৈয়দ মো. মোশাররফ হোসেন, ইলেকট্রিক আর্টিফিসার আমিন উল্লাহ শেখ, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দায়িত্বে থাকা বদিউল আলম, আব্দুর রকিব মিয়া আর আহসানউল্লাহ, রেডিও অপারেটর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী, আবিদুর রহমান আর আবদুল মান্নান।2

ফ্রান্স থেকে পালিয়ে আসা নাবিকদের একজন, আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী; Source: Sk Enamul Haq

অনেকবার পরিকল্পনা বদলের পর সিদ্ধান্ত হয়, ৩১শে মার্চ রাতের ট্রেনে তারা তুলোঁঁ সামরিক ঘাঁটি ত্যাগ করবেন। যেহেতু পরদিনই ফ্রান্স ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিলো পাকিস্তানী সাবমেরিনের, সুতরাং সেদিন কেনাকাটার উদ্দেশ্যে নয়জন বাঙ্গালী সেনা ছুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। তুলোঁঁ ত্যাগের পূর্বে তারা তাদের সিদ্ধান্ত কয়েকজন প্রশিক্ষণরত দক্ষিণ আফ্রিকান সেনাকে জানালেন। দক্ষিণ আফ্রিকান সেনারা তাদের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিলেন। বাঙালি সেনাদের অল্প কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যাগটি তারা একটি নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিলেন। তুলোঁঁ থেকে একশ’ কিলোমিটার দূরের শহর মারশেঁঁ ব্যাগ পৌঁছে দেন দক্ষিণ আফ্রিকান সেনারা। পাশাপাশি তারা পরামর্শ দেন, সুইজারল্যান্ডের জেনেভার দিকে রওনা দেওয়ার জন্য। কারণ, সেখানে গেলে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার এবং দেশে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা বহুলাংশে বেড়ে যাবে।

মারশেঁঁ রেল স্টেশন থেকেই তাদের অনিশ্চিত যাত্রা শুরু হয়; Source: www.corsematin.com

রাত এগারোটার ট্রেন। ট্রেনের হুইসেল জানান দিলো, বেশি সময় বাকি নেই। তুলোঁঁ বন্দর থেকে একেকজন একেক রাস্তায় বেরিয়ে শেষ পর্যন্ত মারশেঁঁ রেল স্টেশনে পৌঁছার কথা। কিন্তু দলের নয় জনের মধ্যে আটজন উপস্থিত। আব্দুল মান্নান তখনো এসে পৌঁছাননি। তবে কি মান্নান ধরা পড়ে গেল? এই চিন্তায় দলের বাকি সবাই অস্থির, কিন্তু অপেক্ষা করার সময় আর নেই, খোঁজ নেওয়ার সকল রাস্তাও তখন বন্ধ। ইতোমধ্যে পাকিস্তানী শিবিরে হয়তো তাদের দলত্যাগের কথা প্রচার হয়ে গেছে। তাই পালাতে হবে তাদের।

মারশেঁঁ থেকে সুইজারল্যান্ড পাড়ি দেয় আটজনের দল; Source: World Atlas

ট্রেনে চেপে আট বাঙালি সেনা পাড়ি দিলেন জেনেভার দিকে। ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট থাকায় সাহস সঞ্চয় করে তারা সুইজারল্যান্ডের ইমিগ্রেশন দপ্তরের দিকে পা বাড়ান। কিন্তু ভিসা না থাকায় তখন তাদেরেকে সুইজারল্যান্ডে প্রবেশের অনুমতি দিতে নারাজ ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘসময় পাসপোর্ট জমা নিয়ে বাঙালি নাবিকদের একটি কক্ষে অবস্থানের জন্য অনুরোধ করা হয়। তাদের মনে তখন ভয় আর শঙ্কা, যদি পাকিস্তান দূতাবাসকে খবর দেওয়া হয়, তাহলে তাদের ধরে নির্ঘাত পাকিস্তান ফেরত পাঠানো হবে। এমতাবস্থায় কী করা যায়, এ নিয়ে চিন্তা করছিলেন তারা। পরে আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী ইমিগ্রেশন অফিসে দায়িত্বরতদের কাছে নিজেদের পরিচয় গোপন করে বলেন যে, তারা ছুটি কাটাতে সুইজারল্যান্ড যাচ্ছিলেন এবং তাড়াহুড়োয় ভিসা আনার কথা ভুলে গেছেন এবং যদি তাদেরকে ফ্রান্সে ফিরে যাওয়ার সু্যোগ দেওয়া হয় তবে তারা ভিসা নিয়ে আবার আসতে পারবেন।

এপ্রিলের ১ তারিখ তারা প্যারিসে ফিরে এলেন। গোপনে খবর নিয়ে জানতে পারলেন, প্যারিসের পাকিস্তান দূতাবাসে সবাই সাবমেরিনকে বিদায় জানাতে গেছে। রাতেই পাকিস্তান দূতাবাসের সবাই বাঙালি নাবিকদের পলায়নের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু এই ঘটনার কথা শুনলে ফ্রান্স সরকার যদি সাবমেরিনটি আটকে দিতে পারে, এই ভয়ে তারা ব্যাপারটি প্রকাশ করেননি। কিন্তু যেহেতু সাবমেরিনটি ইতোমধ্যে ছেড়ে গেছে সুতরাং এই ফ্রান্স সরকার এবং পাকিস্তান দূতাবাস একসাথে তাদের খোঁজা শুরু করবে। তাই প্যারিস মোটেও নিরাপদ নয় তাদের জন্য। ভারত দূতাবাসেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তারা ফ্রান্সের আরেক শহর লিয়নের দিকে যাত্রা করেন।3

লিয়ন পৌঁছেই তারা খবর পেলেন, নয়জন বাঙালি নাবিকের নিখোঁজ সংবাদ ইউরোপ জুড়ে চাউর হয়ে গেছে। ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড সহ বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থাকেও দায়িত্ব দেওয়া হয় এই নাবিকদের খোঁজ বের করার জন্য। লিয়নে তারা ভারতীয় পর্যটক হিসেবে পরিচয় দিয়ে হোটেল ভাড়া নেন। কিন্তু পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়ে যাওয়ার কারণে হোটেল মালিকের কাছে পরিচয়পত্র দেখাতে না পারায় তাদের হোটেল ছাড়তে বলা হয়। অনেক দৌড়ঝাঁপের পর বেশি টাকার বিনিময়ে তাদের পরিচয় গোপন রেখে মাথা গোঁজার ঠাঁই দেয় এক হোটেল কর্তৃপক্ষ। গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে বেশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে তারা বিভিন্ন ট্যুরিস্ট এজেন্সি সহ নানা জায়গায় খোঁজ নিতে থাকেন। গাজী মো. রহমতউল্লাহ লিয়নের এক ট্যুরিস্ট এজেন্সি থেকে খবর পেলেন, স্পেন সরকার তিন মাসের জন্য পাকিস্তানের নাগরিকদেরকে বিনা ভিসায় স্পেনে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। এমন তথ্য জানার পর যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেলেন দলের সদস্যরা।

লিয়নে সময় নষ্ট না করে তড়িঘড়ি করে তারা স্পেনের দিকে রওনা দেন। সীমান্তে পেরিয়ে স্পেনে পৌঁছে হাফ ছেড়ে বাঁচলেন দলের সদস্যরা। কিন্তু স্পেনেও ততদিনে পাকিস্তানী সেনা নিখোঁজের খবর প্রচার হয়ে গিয়েছে। তাই তারা উপায় না দেখে বার্সেলোনার দিকে রওনা দিলেন। সেখানেও তারা তল্লাশির সম্মুখীন হলেন। অল্পের জন্য পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে দেখা হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রেহাই পেলেন তারা। এরপর তারা বার্সেলোনা থেকে মাদ্রিদের ভারত দূতাবাসে যোগাযোগের চেষ্টাও শুরু করেন।4

মাদ্রিদে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস; Source: enacademic.com

মাদ্রিদে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস থেকে তাদের সহায়তার আশ্বাস সেওয়া হয় এবং তাদেরকে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করার জন্য বলা হয়। ভারতের রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার জন্য তারা তাদের পাকিস্তানী পাসপোর্ট জমা দিয়ে ভারতীয় পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন।  ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাঙালি সেনাদেরকে অবিলম্বে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। এই ঘটনা জানার পর পাকিস্তান দূতাবাস তাদের পাকিস্তানে ফিরিয়ে নেওয়ার কম চেষ্টা করেনি। যাত্রাপথে রোম আর জেনেভায় পাকিস্তান সরকারের তৎপরতা নাবিকদের জন্য তৈরি করে শতরকম বাধাবিপত্তি।

১৯৭১ সালের আট এপ্রিল সব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে বোম্বে (মুম্বাই) পৌঁছায় আট অকুতোভয় বাঙালি সেনার বিমানটি। পাকিস্তান সরকার বিদ্রোহী এই সেনাদেরকে তাদের অবর্তমানেই সামরিক আদালতে বিচার শুরু করে। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় দলের সব সদস্যকে। 5

প্রশিক্ষণ শেষে এই সেনারাই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিভিন্ন অপারেশনের। মৃত্যুর দরজা থেকে ফিরে এসে যেন আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন তারা। এই নৌসেনারাই অংশ নিয়েছিলেন অপারেশন জ্যাকপটের মতো সফল কিছু অপারেশনে।

অপারেশন জ্যাকপটের একটি দৃশ্য; Source: jagonews24.com

এই কমান্ডোরাই পরবর্তীতে সমুদ্রসীমায় নাকানি-চুবানি খাইয়েছেন পাকবাহিনীকে আর লিখে গেছেন নিজেদের বীরত্বগাথা। আটজন নৌসেনার মধ্যে আব্দুর রকিব মিয়া বীর বিক্রম মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। বাকিদের মধ্যে গাজী মো. রহমতউল্লাহ এবং আহসানউল্লাহকে ‘বীর প্রতীক’, আমিন উল্লাহ শেখ এবং আবিদুর রহমানকে ‘বীর বিক্রম’, বদিউল আলম এবং আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরীকে ‘বীর উত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। জীবন বাজি রেখে ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার ঘটনা পাকিস্তান সেবানাহিনীতে কর্মরত বাঙালি সেনাদের জুগিয়েছিল অসীম অনুপ্রেরণা। সেই অনুপ্রেরণার পদাঙ্ক ধরেই নয় মাসের যুদ্ধে জন্ম নিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ।

তথ্যসূত্র:

  1. খন্দকার,আবদুল করিম (২০১৪)। ১৯৭১: ভেতরে বাইরে (প্রথমা প্রকাশন); পৃষ্ঠা: ১৪৭
  2. খন্দকার,আবদুল করিম (২০১৪)। ১৯৭১: ভেতরে বাইরে (প্রথমা প্রকাশন); পৃষ্ঠা: ১৪৮
  3. খন্দকার,আবদুল করিম (২০১৪)। ১৯৭১: ভেতরে বাইরে (প্রথমা প্রকাশন); পৃষ্ঠা: ১৫১
  4. খন্দকার,আবদুল করিম (২০১৪)। ১৯৭১: ভেতরে বাইরে (প্রথমা প্রকাশন); পৃষ্ঠা: ১৫২-১৫৪
  5. খন্দকার,আবদুল করিম (২০১৪)। ১৯৭১: ভেতরে বাইরে (প্রথমা প্রকাশন); পৃষ্ঠা: ১৫৫

ফিচার ইমেজ: wikimedia commons

Related Articles