Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

পরিচ্ছন্নতা, সজীবতা ও সৌন্দর্যের ধারণা: মেরিলের অনন্য উদ্যোগ

পৃথিবী বিভিন্ন সময়ে আক্রান্ত হয়েছে বিভিন্ন মহামারিতে। দুনিয়া কাঁপানো প্লেগ রোগের কথা আমরা সবাই শুনেছি। একশ বছর আগের স্প্যানিশ ফ্লুয়ের কথাও এখন কারো অজানা নয়। এসব রোগে জীবনহানি ঘটেছে কোটি কোটি মানুষের। আশার কথা হচ্ছে, কালে কালে সেসব মহামারিকে পেছনে ফেলে জয় হয়েছে মানুষেরই। তবে বিজয় অতটা সহজে আসেনি। এর পেছনে রয়েছে অনেক মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমের গল্প; যেসব গল্প অনেক সময় রয়ে যায় আমাদের দৃষ্টির অগোচরে।

একসময় ডায়রিয়ার কোনো চিকিৎসা ছিল না। কলেরা রোগের ক্ষেত্রেও আক্রান্ত মানে নির্ঘাত মৃত্যুর মতো অবস্থা ছিল। অথচ এখন আমরা জানি, খুব সামান্য কিছু সচেতনতার মাধ্যমেই এসব রোগকে এড়ানো যায়। ইউনিসেফের গবেষণা অনুযায়ী, শুধুমাত্র মলত্যাগ করার পর সাবান দিয়ে হাত ধোয়া ডায়রিয়ার সম্ভাবনা ৪০% কমিয়ে আনে। এছাড়া যেকোনো কাজের শেষেই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেললে বিভিন্ন জীবাণু থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব; যা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ থেকে আমাদেরকে সুরক্ষিত রাখে। তাই এধরনের রোগ থেকে নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে নিরাপদ রাখতে সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত পরিষ্কার করার বিকল্প নেই।

হাত ধোয়ার সময় মানতে হবে কয়েকটি পদ্ধতি; Image Source: loyalhygiene.com

সম্প্রতি করোনাভাইরাস সারাবিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করার ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। অথচ একটু সচেতনতাই এই ভাইরাস থেকে মানুষকে বাঁচাতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়ার কথা বলেছে। তাদের মতে, প্রতিবার সাবান দিয়ে অন্তত ২০-৩০ সেকেন্ড ধরে হাত পরিষ্কার করতে হবে। এবং এই ২০-৩০ সেকেন্ডের পরিষ্কারের কাজ হবে কয়েকটি ধাপে। হুটহাট হাতে সাবান মেখে ধুয়ে ফেললে তা করোনাভাইরাসকে মারতে পারবে না।

সঠিকভাবে হাত ধোয়ার জন্য প্রথমে প্রবাহমান পানিতে হাত ভিজিয়ে নিতে হবে। তারপর ভেজা হাতের পুরোটায় সাবান মেখে নিতে হবে। পরের ধাপে ২০-৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাতের সামনে ও পেছনের ভাগ, আঙুলের মাঝের অংশ, নখের নিচের অংশ, হাতের তালু ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর প্রবাহমান পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে টিস্যু বা তোয়ালে দিয়ে হাত মুছে ফেলতে হবে। সাধারণভাবে আমরা যেসব সময়ে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে থাকি সেসব সময় ছাড়াও করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতার। তাই বাইরে থেকে এসে এবং বাইরের কোনোকিছু স্পর্শ করার পরপরই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা উত্তম।

Image Source: Meril

বিভিন্ন সংকটের সময়ে দেখা যায়, সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্য বা পণ্যগুলো দাম বেড়ে যায়। অসাধু কিছু ব্যবসায়ী মানুষের জানমালকে জিম্মি করে সেসময় বাড়তি মুনাফা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিপদের সময়ে কেউ কেউ নিজেদের চেনায় বন্ধু হিসেবেই। বর্তমানে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সাবান দিয়ে হাত ধোয়া যখন প্রতিরোধের অন্যতম উপায়, তখন মেরিল মিল্ক সোপ বারের ভোক্তাদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে শুরু হয়েছে বিশেষ প্রচারণা। করোনার প্রাদুর্ভাব কমাতে বারবার হাত ধোয়ার ফলে ত্বকের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে। সেদিক বিবেচনায় মেরিল মিল্ক সোপ বার দিচ্ছে ছয় গুন বেশি ময়েশ্চারযুক্ত সাবান, যা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি ত্বককেও রাখবে কোমল এবং মসৃণ।

বারবার হাত ধুতে হওয়ার কারণে সাবানের ব্যবহারও বেড়ে যাচ্ছে, এতে করে বিপুল অঙ্কের অর্থও খরচ করতে হচ্ছে। লকডাউনের ফলে সারাবিশ্বেই একধরনের অর্থনৈতিক মন্দাভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে অনেকেই আগের সচ্ছল-স্বাভাবিক অবস্থা ধরে রাখতে পারছে না। বাংলাদেশেও এই মন্দার প্রভাব পড়েছে বেশ জোরেসোরেই। তাই বাংলাদেশি ভোক্তাদের কথা মাথায় রেখে মেরিল মিল্ক সোপ বার এখন পাওয়া যাচ্ছে আগের চেয়ে আরও দুই টাকা কম দামে। স্কয়ার টয়লেট্রিজের এই উদ্যোগ করোনা জয়ে মানুষের পক্ষেই কাজ করবে; যা সাবানের সহজলভ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষকে রাখবে সুরক্ষিত।

মেরিল মানুষের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে কাজ করে গেছে সবসময়ই। বিভিন্ন সামাজিক সমস্যাকে চিহ্নিত করে সমাজের বদ্ধমূল, কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধারণাকে বদলে দিতে বিভিন্ন ক্যাম্পেইন করে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে তারা প্রতিনিয়ত। ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন চিত্র বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উন্মুক্ত করা হলে তা বেশ জনপ্রিয়তাও অর্জন করেছে। ২০১৪ সালে সুন্দরের ধারণা বদলে দিতে একটি বিজ্ঞাপন চিত্র তৈরি করে মেরিল। সেখানে দেখা যায়, একটি মেয়ে শিশুর গায়ের রং নিয়ে শুরুতেই একজন মন্তব্য করছেন যে, গায়ের রঙের কারণে মেয়েটিকে বিয়ে দেওয়া কঠিন হবে। স্কুলে ভর্তি হলে গায়ের রং কালো হবার কারণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রাজকুমারীর ভূমিকায় অভিনয় করতে দেওয়া হয় না তাকে। অর্থাৎ প্রতিনিয়ত সুন্দর বলতে আমাদের সমাজে ফর্সাকেই যে ধরে নেয়া হয় তারই একেকটি খণ্ডাংশ সেখানে ফুটে ওঠে। সেখানে শুটিংয়ের একটি অংশে জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাকে দেখা যায়। তিনি এই ফর্সার ধারণাকেই চ্যালেঞ্জ করে বলেন “সুন্দর মানে শুধুই ফর্সা নয়, সুন্দর কালো হয়, ফর্সা হয়, শ্যামলাও হয়।”

মেরিলের এই ক্যাম্পেইনে তারা বলার চেষ্টা করেন, সৌন্দর্যের ধারণা গায়ের রঙে নয় বরং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায়। বাংলাদেশের মতো দেশে এই ধরনের ক্যাম্পেইন সাধারণ মানুষের মাঝে সৌন্দর্যের ধারণা বদলে দিতে একদম অন্যরকম প্রভাব ফেলে, সেটা বলা বাহুল্য। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো যেখানে গ্ল্যামার আর ত্বকের রংকে সৌন্দর্য বলে আখ্যা দিয়ে আসছে দশকের পর দশক ধরে, সেখানে মেরিল শুরু থেকেই বলছে মানুষের অন্তরের সৌন্দর্যের কথা, ফ্রেশ তথা সজীবতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা। ধীরে ধীরে মানুষের মনস্তত্ত্বও পাল্টাচ্ছে। আধুনিক সময়ের শিক্ষিত মানুষের সামাজিক চাপের কারণে এখন রং ফর্সাকারী ক্রিমের প্রতিষ্ঠানগুলোও বাধ্য হচ্ছে তাদের পণ্যের নাম বদলে ফেলতে।

২০১৮ সালে নির্মিত মেরিলের আরেকটি বিজ্ঞাপন চিত্রে আমাদের দেশের পুরুষতান্ত্রিক চিন্তাধারার বিপরীতে আধুনিক চিন্তাধারার একজন পুরুষ তথা ভাই, স্বামীকে দেখা যায়। যিনি স্ত্রীকে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যান ঈদ করার জন্য। কারণ তিনি জানেন, তার বোনের মতো তার স্ত্রীও নিজের বাবা-মা, ভাই-বোনকে রেখে দূরে এসে বসবাস করছেন, তাদের ছাড়া অনেকগুলো ঈদ কাটাচ্ছেন। তাই গতানুগতিক চিন্তা ধারার বাইরে গিয়ে তিনি তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি নিয়ে যান ঈদ করতে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে নারীদের পাশে এভাবে দাঁড়াতে খুব কম প্রতিষ্ঠানকেই দেখা গেছে যেখানে মেরিল সত্যিই দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী। সৌন্দর্যের ধারণাকে বদলে দেওয়ার সাথে সাথে তারা কথা বলছে বহু মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির অসারতা নিয়ে; যেসব কথা কুঠারাঘাত করে সামাজিক সমস্যাগুলোর মূলে। মানুষকে তারা উৎসাহ দিয়েছে- শুধু শরীরে নয়, সাথে চিন্তাটাও ‘ফ্রেশ’ করতে।

পৃথিবীর এখনও যে অবস্থা, তাতে বোঝা যাচ্ছে, করোনাকে সাথে নিয়েই আমাদের জীবন ধারণ করা শিখতে হবে। তাই দৈনন্দিন কাজ শেষে ভালোভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাকে প্রাত্যহিক জীবনের অংশ করে তুলতে হবে। অতীতেও মানুষ অনেক কিছুর সাথেই নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। আগে যেখানে সামান্য ডায়রিয়াতেই মানুষের জীবন চলে যেত, সেখানে এখন মানুষ নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে ডায়রিয়াকে সাধারণ রোগের পর্যায় নামিয়ে এনেছে। এইচআইভির মতো মারণব্যাধী ভাইরাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করে সংক্রমণের হার অনেক কমিয়ে এনেছে। এখনও তেমনি মানুষ লড়ে যাচ্ছে। ঘরে থেকে কিংবা জরুরি প্রয়োজনে বাইরে গিয়ে, মানুষ সচেতন হচ্ছে বলেই এই মহামারিতে বাঁচতে শিখছে একটু একটু করে। আর এমন দুর্যোগে মানুষের পাশে থেকে কাজ করছে মেরিল। সংকট কিংবা সামাজিক সমস্যা, সবকিছুকে পেছনে ফেলে মানুষের জয়ের যে ইতিহাস রয়েছে, মেরিলের উদ্যোগগুলো তারই একেকটি গর্বিত অংশ।

Related Articles