Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

আমাদের অভ্যাস ও এয়ার ফ্রেশনার ফেব্রিজের মার্কে‌টিং কৌশল

“তুমি কী সিগারেট ছেড়ে দিয়েছ?” কাজ থেকে বাড়ি ফিরেই প্রশ্নটার মুখোমুখি হলেন তিনি। সন্দেহজনক দৃষ্টিতে স্ত্রী তাকিয়ে আছে তার দিকে। তিনি না সূচক জবাব দিয়েই প্রস্তুত হলেন স্ত্রীর বাক্যবাণের মুখোমুখি হওয়ার জন্য। ভদ্রলোক পিএন্ডজি’র একজন কেমিস্ট। পিএন্ডজি বলতে বহুজাতিক ভোক্তা-পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘প্রক্টর এন্ড গ্যাম্বল’কে বোঝানো হচ্ছে। অতিরিক্ত ধূমপানের বদঅভ্যাসটা তার হয়ে গিয়েছিল কোনোভাবে। এত বেশি ধূমপান করতেন যে, জামাকাপড় থেকে প্রায় অ্যাশট্রের মতো দুর্গন্ধ বের হতো।

আর খুব স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে স্ত্রীর কাছে প্রতিনিয়ত বকাঝকা হজম করতে হতো তাকে। বছরখানেক আগ থেকেই সিগারেট ছাড়ার জন্য তার স্ত্রী জোরাজুরি করে আসছিলেন। কিন্তু ছাড়তে সক্ষম হচ্ছিলেন না তিনি। আজকে হঠাৎ এ ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, হয়তো নতুন কোনোভাবে আক্রমণ শুরু হতে যাচ্ছে। কিন্তু স্ত্রী নির্বিকারভাবে জবাব দিলেন, “আজ তোমার পোশাক থেকে দুর্গন্ধ আসছে না তো, তাই জিজ্ঞেস করলাম”।

ধূমপান ছাড়ার পরিকল্পনা; Source: easyhealthoptions.com

একটু ধাঁধায় পড়ে গেলেন তিনি। আজকে হঠাৎ সব দুর্গন্ধ হারিয়ে যাওয়ার কারণ কী হতে পারে? মনে পড়লো, আজ ল্যাবে ‘হাইড্রোক্সি প্রোপাইল বিটা সাইক্লো ডেক্সট্রিন’ (HPBCD) নামের রাসায়নিক পদার্থটি নিয়ে কাজ করেছিলেন। তবে কি খটমটে নামের এই রাসায়নিক পদার্থটিই এ কাজ করেছে? পরদিন ল্যাবে হাজির হলেন এটি নিশ্চিত হবার জন্য।

সিগারেটের গন্ধযুক্ত কাপড়, ঘর্মাক্ত মোজা বা নোংরা তোয়ালে- এমন শ’খানেক বিভিন্ন গন্ধযুক্ত কাপড়ের ওপর পরীক্ষা চালালেন তিনি। HPBCD পানিতে মিশিয়ে সেগুলোতে স্প্রে করলেন। ফলাফল চমৎকার। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেগুলো থেকে সম্পূর্ণ দুর্গন্ধ দূর হয়ে গেলো। HPBCD সব দুর্গন্ধকে দ্রবীভূত করে নিতে সক্ষম হলো। এটি যে একটি অসাধারণ উদ্ভাবন এতে কোনো সন্দেহ নেই। তার উদ্ভাবন দেখেই লাফিয়ে উঠলেন পিএন্ডজি’র কর্মকর্তারা। তাদের মার্কেট-রিসার্চ অনুযায়ী দুর্গন্ধ দূর করার মতো কোনো পণ্যের চাহিদা তখন আকাশছোঁয়া।

চারপাশের সব দুর্গন্ধের হাত থেকে মুক্তি পেতে কে না চায়? সিগারেট, ঘর্মাক্ত জামাকাপড় বা অন্য যেকোনো দুর্গন্ধ নিয়ে চলাফেরা করা প্রচন্ড অস্বস্তিকর বিষয়। তাই  দুর্গন্ধ দূর করার কৌশল নিয়ে কোনো পণ্য বাজারে এলে সবাই যে হামলে পড়বে সেটাই স্বাভাবিক। পিএন্ডজি এতদিন ধরে সেটিই খুঁজছিল। অবশেষে এই গবেষকের কল্যাণে সন্ধান মিললো তার।

প্রক্টর এন্ড গ্যাম্বল; Source: opportunitydiary.com

পিএন্ডজি’র নতুন প্রজেক্ট শুরু হলো, এর ফর্মুলাকে নিখুঁত করার কাজ। অবশেষে প্রায় মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে তারা একদম রঙহীন, গন্ধহীন নিখুঁত স্প্রে নিয়ে হাজির হলো যা যেকোনো কাপড় থেকে যেকোনো ধরনের গন্ধ দূর করে নিতে সক্ষম। এই স্প্রের পেছনের গবেষণা এতটাই উন্নত ছিল যে, নাসা তাদের মহাকাশ ফেরত যানগুলোর ভেতরের দেয়াল পরিষ্কারের জন্য এটি ব্যবহার করতে শুরু করে। এর উৎপাদন খরচও ছিল কম। তাই মানুষের সাধ্যের মধ্যেই দাম রাখাও সম্ভব ছিল।

এর উদ্ভাবনের পর পিএন্ডজি’র কোনো সন্দেহ রইলো না যে, ভবিষ্যতে বিলিয়ন ডলার আয় করার পণ্য এখন তাদের হাতের মুঠোয়। শুধু দরকার যথাযথ মার্কেটিংয়ের। মানুষকে বোঝাতে হবে যে, তাদের দৈনন্দিন জীবনে এটি একটি অপরিহার্য পণ্য। ফেব্রিক আর ব্রিজ দুই শব্দের সমন্বয় করে তারা পণ্যটির নাম স্থির করেন ‘ফেব্রিজ’। ফেব্রিজের মার্কেটিং টিমের দায়িত্ব দেয়া হলো তুখোড় এক্সিকিউটিভ স্টিমসনকে।

মানুষের মনস্তত্ত্ব ও গণিতে তুখোড় স্টিমসন এর আগেও পিএন্ডজি’র অনেক পণ্যের মার্কেটিং করেছেন। কিন্তু এবারের চ্যালেঞ্জটি ততটা সহজ নয়। কেননা ফেব্রিজ বাজারে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের একটি পণ্য। তাকে ভোক্তাদের বাজারের তালিকায় সম্পূর্ণ নতুন একটি পণ্য যোগ করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে যাতে এটির ব্যবহার অধিকাংশ মানুষের দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত হয়ে ওঠে।

স্টিমসন; Source: linkedin.com

মানুষে অভ্যাসের পুরো প্রক্রিয়াটিকে সাধারণভাবে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।  প্রথমত একটি কিউ দরকার হয়, যা তাকে একটি নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য তাড়না দিবে। এরপর তারা একটি নির্দিষ্ট রুটিন পালন করবে এবং সে এ রুটিন পালন করার পর একটি রিওয়ার্ড বা পুরস্কার পাবে। যেমন ধরুন, একজন ধূমপায়ীর অভ্যাসের কথা। সে যখন বিরক্ত বা উদ্বিগ্ন বোধ করতে শুরু করে তখন সে সিগারেট হাতে তুলে নেয়। এখানে এই বিরক্তি বা উদ্বেগ তার কিউ হিসেবে কাজ করে। এরপর ধূমপান শেষ করার পর নিকোটিনের শট কাজ করে তার জন্য পুরস্কার হিসেবে।

মানুষের অভ্যাসের এই কৌশলের কথা মাথায় রেখেই ফেব্রিজের মার্কেটিং টিম তাদের প্রচারণা শুরু করলেন। দুটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপন প্রচার করা হলো। যার একটিতে দেখা যাচ্ছে, একজন নারী রেস্টুরেন্টের স্মোকিং সেকশনে দাঁড়িয়ে তার ধূমপান নিয়ে সঙ্গীর সাথে কথা বলছে। তিনি জানাচ্ছেন, ধূমপানের ফলে তার জ্যাকেট কীভাবে দুর্গন্ধময় হয়ে ওঠে। এসময় তার সঙ্গী তাকে ফেব্রিজ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়, এতে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে। আরেকটিতে দেখা যায়, বিছানায় পোষা কুকুরের গন্ধ নিয়ে আরেকজন অভিযোগ করছেন। এরপর অন্য একজন পরামর্শ দেন ফেব্রিজ ব্যবহারের জন্য।

ফেব্রিজ; Source: shopmyexchange.com

এ দুটি বিজ্ঞাপনেই অভ্যাস গড়ার জন্য পর্যাপ্ত রসদ ছিল। এখানে কিউ হলো, সিগারেট বা পোষা প্রাণীর গন্ধ। এরপর রুটিন হলো ফেব্রিজের ব্যবহার, আর রিওয়ার্ড হলো দুর্গন্ধমুক্ত পোষাক বা বিছানা। ১৯৯৬ সালের দিকে স্টিমসন ও তার দল কয়েকটি শহরে এ বিজ্ঞাপন প্রচার করা শুরু করেন, ফ্রি স্যাম্পল বিতরণ করেন, মুদি দোকানগুলোকে অর্থকড়ি দিয়ে ক্যাশ কাউন্টারের সামনে স্তুপ করে রাখেন ফেব্রিজ। তারপর তারা আয়েশ করে সাফল্যের অপেক্ষা করতে লাগলেন আর নিজেদের বোনাসের হিসেব কষতেও শুরু করে দিলেন।

কিন্তু বিষয়টি অতটা সহজে ঘটলো না। এক সপ্তাহ, দুই সপ্তাহ করে দুই মাস পেরিয়ে গেল। বিক্রি শুরু হয়েছিল খুব ছোট পরিসরে, সময়ের সাথে সেই হার আরো কমে গেল। আতঙ্কিত হয়ে পিএন্ডজি’র গবেষকদল ছুটলো বাজারে। কারণ খুঁজে বের হবে। দেখা গেল দোকানগুলোর তাকে ফেব্রিজের বোতলগুলো বহাল তবিয়তেই আছে, যেন কেউ ছুঁয়েও দেখেনি। এবার তারা সেসকল গৃহিণীর কাছে ছুটলেন, যাদের ফ্রি স্যাম্পল দেয়া হয়েছিল।

দেখা গেল, অধিকাংশ জন ফেব্রিজের বোতলটিই খুঁজে পাচ্ছেন না। কয়েকদিন ব্যবহারের পর কোথায় রেখে দিয়েছিলেন তা ভুলে বসে আছেন। এরকম অবস্থায় পড়ে স্টিমসন ও তার দলের মাথা ঘুরে গেল। তাদের এত কাঙ্খিত পণ্যের এমন ভরাডুবি হবে সেটি মেনে নিতে পারছিলেন না কেউ। উপরমহল থেকে চাপ আসতে শুরু করল, তাদের চাকরি নিয়েই টানাটানি অবস্থা। সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে ধরার জন্য, নতুন বিজ্ঞানীরা আসলেন দলে। তারপর তারা আবার ঘুরতে শুরু করলেন বাড়ি থেকে বাড়ি।

অভ্যাসের নকশা; Source: jeremyhendon.com

একটি বাড়িতে গিয়ে কিছুটা আলোর সন্ধান পেলেন। ভদ্রমহিলার নয়টি পোষা বেড়াল ছিল। গবেষকদল তার ঘরের বাইরে থেকেই বেড়ালের গন্ধ পেতে লাগলেন। এদিকে তিনি আবার একজন পরিচ্ছন্নতার বাতিকগ্রস্থ নারী। পুরো ঘর ঝকঝকে তকতকে, অথচ দুর্গন্ধ নিয়ে তার কোনো বিকার নেই। তার সাক্ষাতকার নিয়ে গবেষকদল সমস্যাটা বুঝতে পারলেন। যদিও তার ঘরে প্রচন্ড দুর্গন্ধ, কিন্তু তিনি এটি লক্ষ্যই করেন না। তিনি অভ্যস্ত হয়ে গেছেন এই দুর্গন্ধের সাথে। তাই এ দুর্গন্ধ দূর করার বা ফেব্রিজ ব্যবহারের কোনো তাগিদ নেই তার। নতুন কেউ আসলে তার নাকই কেবল এ গন্ধ টের পায়।

এ সমস্যাটিই হয়েছিলো অন্য সব ক্ষেত্রেও। গন্ধ কিছুটা অদ্ভুত জিনিস। লাগাতার কোনো গন্ধের সাথে বাস করলে, সবচেয়ে শক্তিশালী গন্ধটিও ধীরে ধীরে আবছা হয়ে যায়। যেমন দেখবেন, অধিকাংশ সময়ই ধূমপায়ীরা সিগারেটের দুর্গন্ধ টের পায় না। আর দুর্গন্ধ টের না পাওয়া মানে তাদের কিউটিই হারিয়ে যায়, যার জন্য তারা ফেব্রিজ ব্যবহার করবে। স্টিমসন ও তার দল হেড কোয়ার্টারে ফিরে গেলেন প্রচন্ড হতাশা নিয়ে। নয়টি বেড়ালের মালিকের কাছেই যদি তারা ফেব্রিজ বিক্রি করতে না পারেন, তবে কার কাছে পারবেন? নতুন পরিকল্পনা করতে বসতে হবে।

তারা বুঝতে পারলেন, এটিকে মানুষের অভ্যাসে পরিণত করতে হলে ভিন্ন পথ অনুসরণ করতে হবে। মানুষের অভ্যাসের নকশাতে আরো একটি পয়েন্ট আছে, তা হচ্ছে রিওয়ার্ডের জন্য তাড়না বা ক্রেভিং তৈরি হওয়া। আবারো একজন ধূমপায়ীর উদাহরণ দেয়া যাক। কাউকে ধূমপান করতে দেখলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের মনের মধ্যেও নিকোটিনের জন্য তাড়না তৈরি হয়। এই ক্রেভিং তখন তাকে প্রলুব্ধ করে সিগারেট হাতে নেয়ার জন্য। স্টিমসন ও তার দল বুঝতে পারলেন, ফেব্রিজ বিক্রি করতে হলে তাদেরও এমন ক্রেভিং সৃষ্টি করতে হবে।

দ্য পাওয়ার অফ হ্যাবিট বইয়ের প্রচ্ছদ; Source: penguin.co

তাদের পরবর্তী প্রচারণায় দেখা গেল, তারা আগের বিজ্ঞাপনের পুরো ধরণই বদলে দিয়েছেন। নতুন বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, একজন গৃহিণী তার ঘর সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে, গোছগাছ শেষ করার পর মিষ্টি হেসে ফেব্রিজ স্প্রে করে দিচ্ছেন। তার মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠছে, যেন ফেব্রিজ স্প্রে করার পর তার কাজ সম্পূর্ণতা পেয়েছে। এ কৌশলের ফলে ফেব্রিজেও একটু বদল আনতে হয়েছে, আগের সম্পূর্ণ গন্ধহীন ফেব্রিজে যোগ করা হলো সুগন্ধ। সব সাজানো গোছানোর পর ফেব্রিজের মিষ্টি গন্ধ তাদের কাজের পূর্ণতা দেয়।

বিজ্ঞাপনের এ কৌশলের পর তারা ১৯৯৮ সালে তারা আবার কয়েকটি শহরে ফেব্রিজ ছাড়লেন। এবারে ফলাফল আশানুরূপ। হু হু করে বিক্রি হতে থাকলো পণ্যটি। দুই মাসের মধ্যে বিক্রি দ্বিগুণ হলো। এক বছরের মধ্যে ফেব্রিজ ক্রয় করেই ক্রেতারা ব্যয় করলেন প্রায় ২৩০ মিলিয়ন ডলার। এখনো ফেব্রিজের রাজত্ব চলছে, এটি এখন কেবল স্প্রেতে সীমাবদ্ধ নেই, আছে ফেব্রিজ মোমবাতি, লন্ড্রি ডিটারজেন্ট, এয়ার ফ্রেশনার, কিচেন স্প্রে ইত্যাদি। প্রতিবছরে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার মূল্যের ফেব্রিজ পণ্য বিক্রি হয় এখন।

বুঝতেই পারছেন, ফেব্রিজের সফলতার কারণ ছিলো মানুষের ক্রেভিং। কিছুদিন ফেব্রিজ ব্যবহারের পর এটি তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। তখন সব গোছানোর পর ফেব্রিজের মিষ্টি গন্ধ না হলে তাদের মনে হতো, তাদের কাজ সম্পূর্ণ হয় নি। এই সম্পূর্ণ করার তাড়নাতেই তারা ফেব্রিজ ব্যবহার শুরু করলেন নিয়মিত। বিষয়টা একটু অদ্ভুতুড়েও বলা যায়। যে পণ্যটি তৈরি করা হয়েছিল, যেকোনো গন্ধ দূর করার জন্য, তাই শেষতক একটি গন্ধযুক্ত পণ্যে তৈরি হলো, হোক না তা সুগন্ধ। পরে অবশ্য ফেব্রিজ যখন বাজারে সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন পিএন্ জি আবার প্রচার করা শুরু করে যে, এটি মূলত কোনো সুগন্ধি নয়, বরং এর আসল কাজ হচ্ছে সব ধরনের গন্ধ দূর করা।

তথ্যসূত্র: The Power of Habit by Charles Duhigg,  পৃষ্ঠা: ৩৭-৪৪, ৫২-৫৫

ফিচার ইমেজ: fromfoundertoceo.com

Related Articles