Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ভ্যালেন্টাইনস ডে: অদ্ভুত, নিষিদ্ধ এবং বাণিজ্যিক ভালোবাসা

ভ্যালেন্টাইনস ডে’কে ঘিরে আমাদের মনে যতই রোমান্টিকতা বা ভালোবাসা থাকুক না কেন, আমরা এ দিবসটির যে বর্তমান রূপ দেখতে পাই তা সৃষ্টি হয়েছে বাণিজ্যিকীকরণের ফলে। এককথায় বলতে গেলে, দিবসটির বাণিজ্যিক রূপ দেখছি আমরা। মানুষের ভালোবাসা-ভালোলাগার অনুভূতিকে পুঁজি করে চলছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। কিন্তু তাতে তো আর মানুষের অনুভূতি ফুরিয়ে যায়নি, মানুষ নতুন নতুন অদ্ভুত সব উপায় বের করছে ভালোবাসা প্রকাশের। কিন্তু সব দেশেই কি পালিত হয় এই দিবসটি? এসব আলোচনা থাকছে এ লেখাটিতে।

ভালোবাসা না বাণিজ্য?

প্রাচীন লুপাকেলিয়ায় (ধারণা করা হয় এ প্রথা বা উৎসব থেকে ভ্যালেন্টাইন ডে-এর আবিষ্কার) যে নারীদের ছাগলের চামড়া দিয়ে পেটানো হতো, সেই নারীদেরই ভ্যালেন্টাইনস ডে তে ফুল, চকলেট, কার্ড ইত্যাদি উপহার দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করছে এই যুগের পুরুষেরা। আমাদের চাহিদা বড়ই বিচিত্র ও অদ্ভুত!

মধ্যযুগ থেকেই ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে সঙ্গীকে উপহার দেওয়ার প্রথা চলে আসছে, তবে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা আর ভোক্তা সমাজের ফলে ভালোবাসার মাপকাঠি অনেক ক্ষেত্রেই হয়ে দাঁড়িয়েছে দামী উপহার। একটি ভ্রান্ত ধারণা অনেকের মাঝেই বিরাজ করে যে, যার উপহার যত দামী, তার ভালোবাসার গভীরতা তত বেশি। পশ্চিমা বিশ্বে বড় দিনের পরে সবচেয়ে বেশি কার্ড ও উপহার যে দিনটিতে বিক্রি হয়, তা হলো ভ্যালেন্টাইনস ডে। প্রিটিং কার্ড এসোসিয়েশন এর এক হিসাবে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর এ দিন গড়ে এক বিলিয়ন কার্ড পাঠায় মানুষ। এ দিনটিকে কেন্দ্র করে ২২০ মিলিয়ন গোলাপ উৎপাদন করা হয়।

আমেরিকানরা জনপ্রতি ১৩০ ডলার করে গড়ে সম্মিলিতভাবে ২০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। আমাদের দেশেও ভ্যালেন্টাইন ডে-কে কেন্দ্র করে নানা রকমের বাণিজ্য চলে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকান, হোটেল, রেস্তোরাঁ, গিফট শপ, অনলাইন স্টোর ইত্যাদিতে থাকে বিশেষ অফার। ফুলের বেশ ভালো চাহিদা থাকে এই দিনে, তাই দ্বিগুণ দামে ফুল বিক্রি করে বিক্রেতারা।

এমনই নানা ধরনের অফার থাকে দিনটিকে কেন্দ্র করে © শারাবান তাহুরা আলী ‍শারীন

শাহবাগের ফুল বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২১ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগতভাবে মানুষ ফুল কেনে বলে সেদিন প্রচুর ফুল বিক্রি হয়। তবে মানুষ এককভাবে ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে সবচেয়ে বেশি ফুল কিনে থাকে। তাদের কাছ থেকে আরো জানা যায়, দাম বেশি থাকলেও চাহিদার কোনো কমতি দেখা যায় না মানুষের মাঝে। এই দিনকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশেও যে ভালো ব্যবসা হয়, তা বোঝা যায় বিভিন্ন বিজ্ঞাপন ও অফারে সবার সাড়া দেখে।

আমাদের দেশে এগুলো নিয়ে গবেষণা বা জরিপ হলে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের মতোই চমকপ্রদ ফলাফল বেরিয়ে আসত। আমাদের মতো দেশের মানুষ যখন ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষে খাবার, হেলিকপ্টার ভ্রমণ, রাজকীয় গাড়িতে ভ্রমণ ও আয়েসী রাত কাটানোর বিনিময়ে ৯ লাখের বেশি খরচ করতে আগ্রহী হতে পারে, তখন বিষয়টি কিছুটা হলেও ভেবে দেখার মতো।

ঢাকার একটি হোটেলের বিজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে ৯ লাখ+ টাকার ভ্যালেন্টাইনস প্যাকেজ; source: Dhaka Tribune

ভিক্টোরিয়ান যুগ থেকে ভ্যালেন্টাইনস ডে বাণিজ্যিক রূপ লাভ করতে শুরু করে। ১৮৪০ সালের দিকে, অনেকের মতে ১৮৪৮ সালে ২০ বছর বয়সের এস্টার হল্যান্ড আমেরিকায় প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভ্যালেন্টাইনস কার্ড বানাতে শুরু করে। তাকে আমেরিকায় মাদার অব ভ্যালেন্টাইন ডাকা হয়। তবে হলমার্ক ১৯১৩ সালের দিকে প্রথম ভ্যালেন্টাইনস কার্ড তৈরি শুরু করে। তখন হাতে তৈরি হতো কার্ডগুলো।

ভ্যালেন্টাইনস ডে-এর এ বিজ্ঞাপনটি কি বোঝাতে চাইছে, বৃক্কের চেয়ে হৃদয় সস্তা? source: Dhaka Tribune

প্রতি বছর ভ্যালেন্টাইনস ডে’তে দিনটিকে কেন্দ্র করে পত্র-পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হয়, পাঠকের চাহিদা থাকে বলে। তবে ১৮৪০ সালে আমেরিকান সংবাদ পত্র দ্য পাবলিক লেজার দিনটিকে এই বলে সমর্থন করে যে “মানুষের কম মাথা খাটানো আর আত্মার অধিক ক্রিয়া দরকার।” এবং “আরো বেশি উপলক্ষ প্রয়োজন অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য”। এরপর ক্রমেই ব্যক্তি (সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন) কেন্দ্রিক এ দিনটি বস্তু (উপহার) কেন্দ্রিক হয়ে পড়ে।

মাদার অব ভ্যালেন্টাইন খ্যাত এস্টার হল্যান্ড; source: legacy.wbur.org

মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিষয়টি এখন এতটাই বাণিজ্যিক হয়েছে যে, ভ্যালেন্টাইনস ডে এর আগের সাতদিন পালিত হচ্ছে ভ্যালেন্টাইন উইক (সপ্তাহ) হিসেবে। সাতদিন যথাক্রমে পালিত হয় রোজ ডে, প্রপোজ ডে, চকলেট ডে, টেডি ডে, প্রমিজ ডে, হাগ ডে ও কিস ডে। আরো মজার বিষয় হচ্ছে, যারা ভ্যালেন্টাইনস ডে সমর্থন করে না বা যাদের সঙ্গী নেই, তাদের জন্যও বিভিন্ন রকমের সামগ্রী পাওয়া যায় এদিন।

ভ্যালেন্টাইন ডে-তে এখন আয়োজন করা হয় সেমিনার; source: Facebook

অদ্ভুত যত ভ্যালেন্টাইনস ঐতিহ্য

জাপানে ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে প্রথম প্রয়াসটি হয় নারীদের। জাপানের নারীরা পুরুষদের চকলেট উপহার দেয়। তারা আশা করে যাদের উপহার দিয়েছে, পরবর্তী বছর তাদের কাছ থেকে উপহার পাবে।

স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ (ডেনমার্ক ও নরওয়ে)- সেখানে ছেলেরা মেয়েদের বেনামী কবিতা পাঠায় এবং লেখার শেষে নামের বদলে থাকে কিছু ডট বা বিন্দু। প্রতিটি ডট কোনো একটি নামের অক্ষরের জন্য দেয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ নামে যতগুলো অক্ষর থাকবে ততগুলো ডট দেয়া হবে। যে মেয়েকে বেনামী কবিতাটি দেয়া হয়েছে, যদি সে ধরতে পারে কে সেই ছেলে, তাহলে সেই ছেলে ইস্টারে (খ্রিস্টানদের উৎসব) ঐ মেয়েকে একটি ডিম দিয়ে পুরস্কৃত করে। আর যদি ভুল করে, তবে ঐ মেয়ের কাছে ঐ ছেলের একটি ডিম পাওনা থাকবে, যা তাকে ইস্টারে দিতে হবে।

স্লোভেনিয়ানরা জমে যাওয়ার মতো ঠাণ্ডায় খালি পায়ে হেঁটে মাঠ পার হয়। সে বছরই পরবর্তী সময়ে ভালবাসার মানুষটির জন্য একটি ছুটির দিন কাটায়। এস্তোনিয়ায় ভ্যালেন্টাইনস ডে যেন বন্ধুদের জন্য। সঙ্গীকে উপহার দেওয়ার পরিবর্তে বন্ধুদের উপহার দিয়ে এস্তোনিয়ানরা বন্ধুত্ব উদযাপন করে। এদিকে আবার ফ্রেঞ্চরা সঙ্গীর খোঁজ করে এ দিনে। যেসব মেয়েরা তাদের পছন্দমতো সঙ্গী খুঁজে পায়নি তারা দিনের শেষে একত্রিত হতো এবং যেসব ছেলেরা তাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে, তাদের ছবি আগুনে পোড়াতো। তবে ফ্রেঞ্চ সরকার এ প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, কারণ এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিশৃঙ্খলাপূর্ণ হয়ে পড়েছিল।

জার্মানিতে মানুষ প্রচুর খাওয়া দাওয়া করে এ দিনটি কাটায়। সেখানে আরো যা করা হয় তা হলো, শূকরের মূর্তিকে ফুল ও ঐতিহ্যবাহী উপহার দিয়ে সাজানো হয় সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে। আপনি যদি ভাগ্যে বিশ্বাসী হন, তাহলে এ দিনটি ব্রাজিলিয়ানদের মতো উদযাপন করতে পারেন। তারা পছন্দের মানুষগুলোর নাম একটি টুপিতে রাখে এবং সেখান থেকে না দেখে একটি নাম তোলে। যার নাম ওঠে, তাকে বিয়ে করা পর্যন্তও গড়ায় এই ভাগ্যবিশ্বাস!

এতক্ষণ যে উদযাপন সম্পর্কে জেনেছেন, সেগুলো অবশ্যই অদ্ভুত। তবে এর চেয়েও অদ্ভুত উপায় আছে উদযাপনের। আপনি এমন কাণ্ড মাসে কয়দিনই বা করতে পারেন? কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ায় পুরো একটি বছর জুড়ে চলে ভালোবাসার এই পাগলামি। তাদের যেন প্রতিমাসেই নতুন করে ভালোবাসা উদযাপন করতে হয়। সারা বিশ্ব যখন ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন করে, সেখানে প্রতিমাসেই ভালোবাসাকে উৎসর্গ করে একটি দিন পালন করে দক্ষিণ কোরিয়ার অধিবাসীরা। আর এ দিনটি প্রতিমাসের ১৪ তারিখ।

দক্ষিণ কোরিয়ানদের ১২ মাসের ভ্যালেন্টাইনস

নিষিদ্ধ ভ্যালেন্টাইনস ডে

আমাদের দেশে আমরা যেমন স্বচ্ছন্দে ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন করতে পারি, সব দেশে বিষয়টি এমন নয়। কোথাও কোথাও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। মুসলিম কিছু দেশ, যেমন ইরান, সৌদি আরব, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ইত্যাদি দেশে রয়েছে এ দিবস না পালনের কড়াকড়ি নির্দেশ। ইরানের সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, এ দিবস উদযাপন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর কেউ এ দিবসকে কেন্দ্র করে ব্যবসা করলে, তাকে দোষী বলে গণ্য করা হবে। রোমান্টিক কবি রুমীর দেশে ভ্যালেন্টাইনস ডে কে পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ভাবে দেশটির সরকার। তবে ‘মেহেরগান’ নামক আদি উৎসব ভ্যালেন্টাইনস এর বদলে পুনরায় চালু করা হবে বলে শোনা যাচ্ছে।

ভ্যালেন্টাইনস ডের প্ল্যাকার্ড পোড়াচ্ছে ভ্যালেন্টাইনস ডে বিরোধীরা; source: AFP

ইন্দোনেশিয়ায় এ দিবসটি উদযাপন সরকারিভাবে বেআইনি না হলেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি মাদাগাস্কার শহরে পুলিশ কিছু দোকান থেকে এ দিবস উপলক্ষে আনা পণ্য জব্দ করে। তবে রাজধানীতে এখন ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ দিনটি।

ইন্দোনেশিয়ায় ভ্যালেন্টাইনস ডে বিরোধী ক্যাম্পেইনে স্কুল শিক্ষার্থীরা; source: AFP

মালয়েশিয়ায় মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশই মুসলিম। সেখানে এ দিবস পালনে ২০০৫ সালে ফতোয়া জারি করেছে বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠন। তাদের মতে, এ দিবস পালনে সমাজে বিপর্যয় ও তরুণদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটবে। ভ্যালেন্টাইনস ডে তে ২০১১ সালে ১০০টি ও ২০১৪ সালে ৮০টি অবিবাহিত যুগলকে আটক করে ইসলামিক নৈতিকতা রক্ষাকারী পুলিশ। অবিবাহিত হয়েও একসাথে ঘোরা ও অবস্থান করা ছিল তাদের অপরাধ।

ভ্যালেন্টাইনস ডে তে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জব্দ করা কিছু পণ্য; source: AFP

লাহোরে ভ্যালেন্টাইনস ডে বিরোধী মিছিল; source: AFP

পাকিস্তানের কিছু কিছু শহরে বিভিন্ন ইসলামপন্থী দল, যেমন জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলাম এ দিবসটি উদযাপনে বাধা দিয়ে আসছিল। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট মামনুন হোসাইন পাকিস্তানিদের এটি বর্জন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমাদের সংস্কৃতির সাথে ভ্যালেন্টাইনস ডে-এর কোনো সর্ম্পক নেই এবং এটি পরিহার করা উচিত।”

জামিয়াত-ই-উলেমা এর সদস্যরা করাচিতে ভ্যালেন্টাইনস ডে‘র কার্ডে আগুন দিচ্ছে; source: AFP

শুধু মুসলিম দেশগুলোতে নয়, এ দিবসটি নিষিদ্ধ হয়েছে আরো বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রে। রাশিয়ার বেলগ্রেডে ২০১০ সালে এটিকে স্থানীয় সরকার রাশিয়ার সংস্কৃতির পরিপন্থী বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে কয়েক বছর ধরেই ডানপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো দিবসটি উদযাপন করা বন্ধের চেষ্টা করছে। ২০১৫ সালে মহাসভা ঘোষণা দিয়েছিল, কোনো আবিবাহিত জুটিকে এদিন একসাথে দেখলে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। ২০০৯ সালে মিডিয়ায় ব্যাপক ঝড় উঠেছিল যখন শিবসেনা’র প্রমোদ মুথালিকের, এদিন অবিবাহিত জুটি দেখলে জোর করে বিয়ে দেয়া হবে- এমন বক্তব্য দেয়।

ভারতের ডানপন্থী হিন্দু সংগঠনের মিছিলে ভ্যালেন্টাইনস ডে‘র কার্ড পোড়ানো হচ্ছে; source: AFP

ভালোবাসা হয়তো মানুষের মাঝে থাকা সবচেয়ে সেরা এবং সুন্দরতম উপহার। একে বস্তুবাদী বা ভোগবাদী রূপ না দিয়ে অনুভব করাই শ্রেয়। শেষ করবো হেলেন কেলারের একটি বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করে-

source: compiled

ফিচার ইমেজ- Graffiti: Banksy’s Lovesick Puke Girl and unknown (Compiled); Pinterest

Related Articles