Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ঠিক কতগুলো ভাষা টিকে থাকবে পৃথিবীতে?

আচমকা শুনলে প্রশ্নটি হয়তো অবান্তর শোনায়। কারণ আস্ত একটি ভাষা হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আমাদের খুব একটা মাথাব্যথা নেই। বাস্তবতা হলো, প্রতি ১৪ দিনে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে একটি করে ভাষা। অর্থাৎ চলতি বছরেই অস্তিত্বের শংকায় পড়বে আরো ২৬টি মাতৃভাষা। ধীরে ধীরে অস্তিত্বের শংকায় পড়া এসব ভাষার শব্দভাণ্ডারের প্রয়োজন ফুরাবে। কথা বলার কেউ থাকবে না। হবে না কখনো আর কবিতা বা গান লেখা। এটাও সম্ভব!

লিলি টমলিনের মতে, মানুষ তার গভীরতম প্রয়োজন ও অভিযোগ জানানোর আকুলতায় ভাষার জন্ম দিয়েছিলো। সেই সাথে বিস্তৃত হয়েছিলো সংস্কৃতির শেকড়। বৈচিত্র্যে ভরপুর সেই পৃথিবী খুব দ্রুতই সংকুচিত হচ্ছে। কারণ, পুঁজিবাদী সভ্যতার দ্রুত বিকাশ ও আগ্রাসন।

ল্যাংগুয়েজ ট্রি বা ভাষা বৃক্ষ।
ল্যাংগুয়েজ ট্রি বা ভাষা বৃক্ষ; Image Source: Minna Sundberg

ভাষার আবিষ্কার বিজ্ঞানের অন্যতম অমীমাংসিত রহস্য। গবেষকদের মতে, সভ্যতার ভিত গড়ার আগেই জন্ম হয়েছিলো ভাষার, ন্যূনতম ১ লক্ষ বছর আগে। হোমো সেপিয়েন্স বা বুদ্ধিমান মানুষদের সময়কালে ভাষা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আরো সুসংহত হয়। এ পর্যন্ত পৃথিবীতে ঠিক কতটি ভাষার জন্ম হয়েছে ও হারিয়ে গেছে, তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। বর্তমানে প্রচলিত বেশিরভাগ ভাষাই ইন্দো-ইউরোপীয়ান ভাষা গোষ্ঠীর সদস্য। হিব্রু, তামিল, পার্সিয়ান, লিথুনিয়ান, চীনা, বাস্ক, অ্যারাবিক, আইরিশ, গ্রিক, ফিনিশ, মেসিডোনিয়ান ইত্যাদি ভাষাগুলো জনসংখ্যার হিসেব, বিভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রয়োজনের তাগিদেই হাজার হাজার বছর ধরে টিকে আছে।

ভাষার বিস্তৃতি।
ভাষার বিস্তৃতি; Image source: South China Morning Post

ভাষা বিষয়ক তথ্য সরবরাহকারী ওয়েবসাইট এথনোলগ (Ethnologue) এর মতে, বর্তমান পৃথিবীতে আনুমানিক ৭,০৯৭টি ভাষা জীবিত রয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ভাষায় কথা বলা লোকের সংখ্যা ১ হাজারেরও কম। এছাড়া, মোট ভাষার মাত্র অর্ধেকের আছে লিখিত প্রক্রিয়া। এসব ভাষায় ব্যবহার করা হয় ৪৬ ধরনের বর্ণমালা। বাকিগুলো শুধু মৌখিকভাবেই প্রচলিত। পরিসংখ্যান অনুসারে, গোটা দুনিয়ার অর্ধেকের বেশি মানুষ ব্যবহার করে মাত্র ২৩টি ভাষা। বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি মানুষের ভাষাগুলো যথাক্রমে- চীনা ১.২ বিলিয়ন, স্প্যানিশ ৪০০ মিলিয়ন, ইংরেজি ৩৬০ মিলিয়ন, হিন্দি ২৬০ মিলিয়ন, আরবি ২৫০ মিলিয়ন, পর্তুগিজ ২১৫ মিলিয়ন, বাংলা ১৮০ মিলিয়ন, রাশিয়ান ১৬৬ মিলিয়ন, জাপানিজ ১৩০ মিলিয়ন, পাঞ্জাবি/লাহান্দা ১০০ মিলিয়ন প্রভৃতি।

অপরদিকে, ভাষা বৈচিত্র্যে সবচেয়ে সমৃদ্ধ দেশ ওশেনিয়া অঞ্চলের পাপুয়া নিউগিনি। আয়তনে ৪৬২,৮৪০ বর্গ কিলোমিটার ও ৮ মিলিয়ন জনসংখ্যার এই দেশটির অধিবাসীরা কৃষি, বনায়ন ও মাছ ধরার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। অসংখ্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও বর্ণাঢ্য সংস্কৃতির এই দেশটি, পৃথিবীর মোট ভাষার প্রায় ১২ শতাংশের মালিক, মোট ভাষার ৮৫৬টি। অর্থাৎ জনসংখ্যার হিসেব করলে প্রতি ৯,৩৪৫ জনের জন্য একটি করে ভিন্ন ভাষা রয়েছে দেশটিতে।  

পাপুয়া নিউগিনির ছেলেমেয়েরা।
পাপুয়া নিউগিনির ছেলেমেয়েরা; Images Source: South Pacific Tourism Organisation
মানচিত্রে পাপুয়া নিউগিনি।
মানচিত্রে পাপুয়া নিউগিনি; Image source: Operation World

পাপুয়া নিউগিনির আনুষ্ঠানিক ভাষা ৩টি: ইংরেজি, হিরি মতু ও টক পিজিন। অপর একটি ব্যবহৃত ভাষা হচ্ছে তাদের সাংকেতিক ভাষা। দেশটির অধিকাংশ ভাষা বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। ইতোমধ্যে ১২টি ভাষা হারিয়ে গেছে ও বেশিরভাগ ভাষায় কথা বলার লোকের সংখ্যা ১ হাজারেরও কম।

এছাড়া ভাষা সমৃদ্ধ আরো কিছু রাষ্ট্রের মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া (৭৪২টি), নাইজেরিয়া (৫১৬টি), ভারত (৪২৭টি), যুক্তরাষ্ট্র (৩১১টি), মেক্সিকো (২৯৭টি), ক্যামেরুন (২৮০টি), অস্ট্রেলিয়া (২৭৫টি), চায়না (২৪১টি), কঙ্গো (২১৬টি) ইত্যাদি।

ভাষা হারিয়ে যায় কেন?

ভাষা সভ্যতার মতোই জীবন্ত ও ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল। ভাষার রয়েছে ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক প্রভাব রয়েছে। তাই কোনো ভাষার গুরুত্ব সাদামাটাভাবে নির্ণয় করা সম্ভব নয়।  

জনসংখ্যার তুলনা করলে পর্তুগিজ ভাষায় কথা বলা শতকরা মাত্র ৫ ভাগ লোক পর্তুগালে বাস করে। বাকি বেশিরভাগই বসবাস করে ব্রাজিলে। ঠিক তেমনি, স্পেনের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলা লোকের সংখ্যাও বেশি। ঔপনিবেশিক শাসন ও অভিবাসন ভাষা বিস্তারের একটি অন্যতম উপায়।

সে কারণেই পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই ইংরেজি, স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, জার্মান প্রভৃতি ভাষাভাষী সম্প্রদায় চাকরি-বাকরি, জীবনযাপন ইত্যাদি অর্থে বেশি সুবিধা ভোগ করে। ভাষা যেমন যোগাযোগের মাধ্যম, তেমনি সেসব দেশের বিজ্ঞাপনও। এ কথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, চীন মান্দারিন ভাষা শেখার জন্য আমেরিকায় প্রচুর আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এমনকি আমেরিকান বিলিয়নিয়াররাও তাদের সন্তানদের এ ভাষা শিখতে উৎসাহিত করছেন। এর একমাত্র কারণ চীনের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক উত্থান ও ভবিষ্যত সম্ভাবনা।

ভাষা হারিয়ে যায় নানা কারণে। যুদ্ধ-বিগ্রহ বা আকস্মিক কোনো প্রাকৃতিক দুর্ঘটনায় ভাষাভাষী জনসংখ্যার অস্তিত্ব বিপন্ন হলে ভাষা হারিয়ে যায়। আবার উপরের উদাহরণগুলোর মতো, কোনো জাতির উপর দীর্ঘমেয়াদী সাংস্কৃতিক নিপীড়ন ও আগ্রাসনেও ভাষার ক্রম বিলুপ্তি ঘটাতে পারে। যেমনটি ১৯৫২ সালের ২১ ফ্রেব্রুয়ারি, বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য ছিলো অগ্নিপরীক্ষা!

শহীদ মিনার বাংলা ভাষা সংগ্রামে ত্যাগের প্রতীক।

শহীদ মিনার বাংলা ভাষা সংগ্রামে ত্যাগের প্রতীক; Image source: Shampratikdeshkal

কোনো লুকোছাপা না রেখেই বলা যায় ডারউইনের কথাটি, “Survival of the fittest”; অর্থাৎ, পৃথিবী হলো যোগ্যতমদের টিকে থাকার লড়াই। ভাষার ক্ষেত্রেও এ কথাটি সমান সত্য। বৃহত্তর সংস্কৃতি ও বিশ্বায়নের কাঠামোয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক জাতিগোষ্ঠী তাদের সংস্কৃতি ও ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। ইউনেস্কোর মতে, এ শতাব্দীতেই পৃথিবীতে অর্ধেকের বেশি ভাষা বেঁচে থাকবে না। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণা, আগামী ২১১৫ সালে জীবিত তালিকায় নাম থাকবে মাত্র ৬০০টি ভাষার।

দুটি গল্প

তাসিরো ভাষা

ছবিতে পেরুর অধিবাসী আমেদেঁও গর্সিয়া গর্সিয়া। তার মৃত্যুর পর ‘তাসিরো’ ভাষায় কথা বলার লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না।
ছবিতে পেরুর অধিবাসী আমেদেঁও গর্সিয়া গর্সিয়া। তার মৃত্যুর পর ‘তাসিরো’ ভাষায় কথা বলার লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না; Image source: The new york times

আঁমেদেও পেরুর অধিবাসী। তার মাতৃভাষার নাম ‘তাসিরো’। এ ভাষাটি যে খুব বেশি মানুষের মুখের ভাষা ছিলো, তা নয়। তবু অ্যামাজন নদীর কিনারা ঘেঁষে ভাষাটি টিকে ছিলো শতাব্দীকাল। কিন্তু, এবার সময় ফুরিয়ে এলো। আমেদেঁওর মৃত্যুর পর তাসিরো ভাষার মৃত্যু ঘটবে। তার পরিবারের সদস্যরা নানা অসুখে মারা গিয়েছে অনেক আগেই। সর্বশেষ, ভাই মারা যাওয়ার পর আর কারো সাথে  তার ‘তাসিরো’ ভাষায় কথা বলা হয়নি। আমেঁদেওর সন্তানেরা বহু দূরে শহরের বাসিন্দা। ওরা স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত। তাই বংশপরম্পরা হয়ে ‘তাসিরো’ ভাষাটি টিকে থাকারও আর কোনো সম্ভাবনা নেই।

তাসিরো ভাষার পান্ডুলিপি।
তাসিরো ভাষার পান্ডুলিপি। Image source : The new york times
তার ভাষার মতোই বিচ্ছিন্ন ও একা আমেঁদেও।
তার ভাষার মতোই বিচ্ছিন্ন ও একা আমেঁদেও; Image source: The new york times

আমেদেঁও মনে করেন, তাসিরো ভাষাটি আরও আগে থেকেই বেঁচে নেই। কারণ, কথার বলার মতো মানুষ না থাকলে ভাষার যৌক্তিকতা এমনিতেই শেষ হয়ে যায়। তবে আঁমেদেওর ইচ্ছা, এই পৃথিবী তাকে মনে রাখবে।

পেরুর সরকার, ১,৫০০ তাসিরো শব্দ, ২৭টি গল্প, ৩টি গান ও আমেদেঁওর তাসিরো ভাষায় কথা বলা কিছু রেকর্ড সংগ্রহ করার উদ্যোগ নিয়েছে।

কুসুন্দা ভাষা

কুসুন্দা স্বকীয় ও স্বয়ংসম্পূর্ণ নেপালি ভাষা। ভাষাবিজ্ঞানীদের মতে, রহস্যময় এই ভাষাটির সাথে পৃথিবীর অন্য কোনো ভাষার মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই ভাষাতাত্ত্বিক দিক থেকেও এর গুরুত্ব অপরিসীম।

সবুজ বন-পাহাড় ও বনের গহীন জঙ্গলে থাকতে অভ্যস্ত করা কুসুন্দারা নিজেদের ‘বনের রাজা’ বলেই পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তাদের জীবনরীতি ও সামাজিক চরিত্রের সাথেও রয়েছে ভাষাটির একাত্মতা। কুসুন্দা ভাষায় সবুজ রংটির জন্য আলাদা কোনো শব্দ সংরক্ষিত নেই। কারণ রং বলতে তারা সবুজই ভেবে থাকেন!

ছবিতে জ্ঞানী মায়া সেন।
ছবিতে জ্ঞানী মায়া সেন; Image Source: Gayatri Parameswaran

কুসুন্দা ভাষার একমাত্র প্রতিনিধি জ্ঞানী মায়া সেন বলেন, এখানে অল্প কিছু আমাদের সম্প্রদায়ের লোকেরা থাকে, তবে কেউই এখন আর নিজেদের ভাষায় কথা বলে না। নতুন প্রজন্মেরও ভাষাটির প্রতি আগ্রহ নেই। বরং তারা ভাষাটি নিয়ে শুধুই মজা করতেই পছন্দ করে। ওরা ভাবে, এটি শেখার আর কোনো প্রয়োজন নেই!

কুসুন্দা ভাষা রক্ষায় এক হাজার শব্দের অভিধান তৈরি করা হয়েছে। 

৮০ বছর বয়সের এই বৃদ্ধা মারা গেলে  “কুসুন্দা ভাষায়” কথা বলার মতো কেউ থাকবে না।
৮০ বছর বয়সের এই বৃদ্ধা মারা গেলে ‘কুসুন্দা ভাষায়’ কথা বলার মতো কেউ থাকবে না; Image Source: The Epoch Times

ইউনোস্কোর হিসেব মতে, বর্তমানে বিপন্ন হবার ঝুঁকিতে থাকা ভাষার সংখ্যা ২,৪৬৪টি। এর মধ্যে মারাত্মকভাবে বিপন্ন ভাষার সংখ্যা ৫৭৭, যে ভাষাগুলো অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই হারিয়ে যাবে। বিভিন্ন মহাদেশে সবচেয়ে বেশি যেসব দেশে ভাষা হারিয়ে যাবার ঝুঁকিতে আছে, এর মধ্যে- 

১) এশিয়ায় ভারত (১৯৭), ইন্দোনেশিয়া (১৪৬), চীন (১৪৪), নেপাল (৭১), লাওস (৩২)।

২) আফ্রিকায় সুদান (৬৫), ক্যামেরুন (৩৬), চাঁদ (২৯), নাইজেরিয়া (২৯), ইথিওপিয়া (২৮)।

৩) ইউরোপে রাশিয়া (১৩১), ফ্রান্স ও এর নিয়ন্ত্রাধীন অঞ্চলে (৭৮), ইতালি (৩১), জার্মানি (১৩), যুক্তরাজ্য ও এর অঞ্চলসমূহে (২৩)। 

৪) উত্তর আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চল (৩৮৩), মেক্সিকো (১৪৩), কানাডা (৮৭), গুয়াতেমালা (২৩), নিকারাগুয়া (১১)।

৫) দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল (১৯০), কলম্বিয়া (৬৮), পেরু (৬২), বলিভিয়া (৩৯), ভেনিজুয়েলা (৩৪)।

৬) ওশেনিয়া অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়া ও এর অঞ্চলসমূহ (২১৭), পাপুয়া নিউগিনি (৬৮), ভানুয়াতু (৪৬), সলোমন দ্বীপপুঞ্জ (১৭), মাইক্রোনেশিয়া (১৩)।

ভাষা সংরক্ষণের উপায়

jose rizal ফিলিপিনো স্বাধীনতার অন্যতম পুরোধা পুরুষ

আধুনিক এই পৃথিবীতে শতকরা ৯৫ ভাগ ভাষার ইন্টারনেটে প্রতিনিধিত্ব নেই। ৮০ ভাগ আফ্রিকান ভাষার নেই কোনো লিখিত রূপ। স্পেনের উপকূলবর্তী লা গোমেরা অঞ্চলের একটি বিপন্ন ভাষা সিলবো গোমেরো। এ ভাষাটির সম্পূর্ণ যোগাযোগ হয়  হুইসেলের মাধ্যমে। আমরা হয়তো এই অদ্ভূত ভাষাটির নামই জানি না।

অথচ অদ্ভুত শুনালেও সত্য, লর্ড অব দ্য রিংস, স্টার ট্রেক ও অ্যাভাটারের মতো ছবিগুলোর জন্য কৃত্রিম ভাষা তৈরি করা হয়। পৃথিবীতে প্রায় এ রকম দু’শ নকল ভাষা রয়েছে। হারিয়ে যেতে থাকা ভাষাগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করা উচিত।

ভাষা সংরক্ষণের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব রাষ্ট্রের। যেমন, ভারতে ২৩টি ভাষার সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকায় যথাক্রমে ১৬ ও ১১টি করে ভাষাকে রাষ্ট্রের দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আফ্রিকানাস পৃথিবীর নবীনতম ও জাতীয় ভাষা।

আমাদের বাংলাদেশে বাংলা ছাড়াও ৪৫টি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর ভাষা রয়েছে। রাষ্ট্রের উচিত যতটুকু সম্ভব, এসব ভাষা যাতে হারিয়ে না যায়, সে ব্যাপারে যত্নবান হওয়া ও এই ভাষাগুলোর নিদর্শন সংরক্ষণে রাখা।

ফিচার ইমেজ: The Tower of Babel by Pieter Bruegel the Elder (1563)

Related Articles