Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

পুরাণ সবিশেষ ১০: এবার পালা দক্ষযজ্ঞের

পুরাণগুলো রচিত হয়েছিল আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে। সেই যুগে সাহিত্যের মুখ্যধারা বলতে যা ছিল, তা এই পুরাণই। তাই, তখনকার সভ্যতা-সংস্কৃতির ব্যাপারে জানতে হলে পুরাণে মুখ গুঁজতেই হবে। পুরাণ রচয়িতাগণ ঠিক যে পুরাণ রচনা করেছিলেন, আজকের পুরাণগুলো একদম সে অবস্থায় নেই। যুগান্তরে সেগুলো পরিবর্তিত, পরিমার্জিত, পরিবর্ধিত হয়ে আজকের রূপ পরিগ্রহ করেছে। অনুবাদের খাতিরেও পুরাণের বিভিন্ন সংস্করণ ভূ তথা ভারতের একেক অঞ্চলে একেক ভাষায় প্রচারিত হয়েছে। সেজন্যে একই প্রসঙ্গে একাধিক পৌরাণিক ঘটনা বা প্রেক্ষাপট বা চরিত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। যারা প্রকৃত রসবোদ্ধা, তারা এ বিষয়গুলো মেনে নিয়েই পুরাণ থেকে রসাহরণ করেন।

‘দক্ষযজ্ঞ’ বাংলা ভাষায় একটি বহুল প্রচলিত বাগধারা। এর অর্থ প্রলয়কাণ্ড বা তুমুল হট্টগোল। বাগধারাটির উৎস সরাসরি পুরাণ। পুরাণের দক্ষযজ্ঞের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই যেকোনো বিপুল আয়োজন, যেখানে হৈ হট্টগোল অনিবার্য- তাকে দক্ষযজ্ঞ বলা হয়। পুরাণে প্রজাপতি দক্ষও একটি প্রলয়কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। ঘটনাটির উপক্রমণিকা আরো আগের।

দক্ষ ছিলেন ব্রহ্মার মানসপুত্রগণের অন্যতম। স্বয়ং ব্রহ্মার সন্তান তাই অহংকারও একটু বেশি অন্য সবার চেয়ে। দক্ষের সাথে ব্রহ্মা স্বায়ম্ভুব মনুর কন্যা প্রসূতির বিয়ে দেন। পত্নীকে সাথে নিয়ে খুব সুখে দিনাতিপাত করতে থাকেন দক্ষ। সৃষ্টির প্রবাহ সচল রাখতে ব্রহ্মা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেন। ত্রিমূর্তির মধ্যে শিব ছিলেন মহাযোগী। শিবের বিয়ে দিতে না পারলে সংসারে সচলতা আসবে না। তাই ব্রহ্মা দক্ষ ও প্রসূতিকে দেখা দিয়ে বললেন,

“তোমরা দেবী আদিশক্তির তপস্যা করে তাকে সন্তুষ্ট করো। দেবীকে তোমাদের কন্যা হয়ে জন্মাতে অনুরোধ করো। দেবী তোমাদের ঘরে জন্মালে তার সাথে শিবের বিয়ে হবে।”

ব্রহ্মার উপদেশে দক্ষ দেবী আদিশক্তির তপ করলেন। প্রসূতি ব্রত পালন করলেন। দীর্ঘদিনের তপের ফলে দেবী দক্ষের সামনে প্রকট হলে তিনি বললেন,

“মা, তোমার এ অধম সন্তানের শুধু একটি প্রার্থনা স্বীকার করো – তুমি আমার কন্যা হয়ে জন্মে মহাযোগী শিবকে সংসারী করো।”

দেবী হেসে বললেন,

“তাই হবে, পুত্র। আমি সময় হলে তোমার ঘরে জন্ম নেব। তবে, তুমি যদি কোনোদিন আমায় অপমান করো তখনই আমি দেহ ত্যাগ করে তোমার গৃহ থেকে বিদায় নেব।”

সতীর সাথে বিয়ের পরে মহাদেবের সংসারী জীবনের সূত্রপাত হয়; Image Source : dribbble.com

আদিশক্তির আশীর্বাদ পেয়ে দক্ষ বড়ই আনন্দিত হলেন। তারপর এক এক করে প্রসূতি অনেকগুলো কন্যার জন্ম দিলেও দেবী আদিশক্তি জন্মালেন না। দক্ষ ও প্রসূতি হতাশায় নিমজ্জিত হলেন। শেষে দক্ষের কনিষ্ঠ কন্যা হয়ে দেবীর আগমন ঘটল। দক্ষ সে কন্যার নাম রাখলেন সতী। সতীর আগমনে চারদিকে ধন্য ধন্য পড়ে গেল। দেবতারা এসে সতীকে আশীর্বাদ দিয়ে গেলেন। সতী দক্ষের সবচেয়ে প্রিয় পুত্রীতে পরিণত হলো। দক্ষকে ব্রহ্মা প্রজাপতি নিযুক্ত করেছিলেন বিধায় দক্ষ ছিলেন রাজা ও আইনপ্রণেতা।

সতী দক্ষের বাড়িতে কড়া অনুশাসনের ভেতর দিয়ে বেড়ে উঠতে লাগল। আকাশের চাঁদ, রুদ্রাক্ষ, ত্রিশূল এসব তার মনে দাগ কাটা শুরু করল। শিবের প্রতি আকৃষ্ট হতে শুরু করল সতী। শিবভক্তগণের নিকট শিবের কথা শুনতে শুনতে শিবের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত হলো সে। দক্ষ সতীর শিবের প্রতি প্রেমকে খুব ভালো চোখে দেখেননি। শিবের যোগীভাব, সাজ-সঙ্গী দক্ষ একদম পছন্দ করতেন না। শিবকে অহংকারী ও ভণ্ড ভাবতেন তিনি। একবার যখন শিব ব্রহ্মার পঞ্চম মস্তক খণ্ডন করলেন, তখন থেকেই দক্ষের শিবের প্রতি আক্রোশ সপ্তমে গিয়ে ঠেকল।

শিব-সতীর মিলনে আপত্তি করার কারণে ব্রহ্মা এসে দক্ষকে তার প্রথমজীবনে করা তপস্যার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন যে, আদিশক্তি ও শিবের মিলন অনিবার্য। দেবতাদের কথায় দক্ষ বিয়েতে রাজি হন। মহা ধুমধামে শিব-সতীর বিবাহ সম্পন্ন হল। স্বয়ং ভগবান ব্রহ্মা বিয়ের পৌরোহিত্য করলেন। নন্দীর পিঠে চড়ে শিব-সতী কৈলাসে ফিরে গেলেন। শিবের যোগী জীবনের সমাপ্তি ঘটে সংসারী জীবনের সূত্রপাত ঘটল।

প্রথম ছবিতে শিবের অপমানে দক্ষ ক্রোধিত, পরের ছবিতে শিব-সতীর প্রেম প্রকাশিত, শেষ ছবিতে সতীর অগ্নিতে আত্মাহুতি দেখা যাচ্ছে; Image Source : khestrapurans.com

বিয়ের কিছুদিন পর ব্রহ্মা একটি যজ্ঞের আয়োজন করলেন। যজ্ঞে ত্রিভুবনের সকল প্রজাতির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিমন্ত্রণ করা হলো। সবাই এলেন। সবার জন্য আসন প্রস্তুত করা হলো। প্রজাপতি দক্ষ যখন যজ্ঞস্থলে প্রবেশ করলেন, তখন ব্রহ্মা ও শিব ব্যতীত সবাই উঠে দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান জানাল। ব্রহ্মা দক্ষের পিতা তথা জগতের সৃষ্টিকর্তা। তিনি দাঁড়াবেন না, এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু শিব তো দক্ষের মেয়ের জামাই। সে হিসেবেও তো তার দাঁড়ানো উচিত ছিল। দক্ষ শিবের এ আচরণে প্রচণ্ড ক্ষেপে গেলেন।

ব্রহ্মার যজ্ঞের কিছুকাল পরে দক্ষ একটি যজ্ঞের আয়োজন করলেন। সেই মহাযজ্ঞের নাম বৃহস্পতিস্তব যজ্ঞ। মহর্ষি ভৃগু উপর তার পৌরোহিত্য করার দায়িত্ব পড়ল। ত্রিলোকের সকল জীবকে যজ্ঞে নিমন্ত্রণ করা হলো। শুধু কৈলাসে কোনো নিমন্ত্রণ পাঠানো হলো না। দেবতারা যজ্ঞে উপস্থিত হয়ে যখন জানতে পারলেন এ যজ্ঞ শিবহীন, তখন দক্ষের প্রতি ভয় থেকে কেউ কিছু বললেন না। শিবভক্ত ঋষি দধীচি প্রতিবাদ করলেন। তিনি দক্ষকে বললেন,

“দক্ষ, আপনি প্রজাপতি। আপনার এ অহংকার মানায় না। শিবই সকল শক্তির আধার। তিনি মহাকাল। তাকে ফেলে কোনো যজ্ঞ সম্পন্ন হলে তা হবে মহাপাপ। এর সাথে যুক্ত সবাই মহাপাতকী হবে। আপনি যজ্ঞ সফল করতে চাইলে অতিসত্ত্বর কৈলাসে খবর পাঠান।”

দক্ষ দধীচির কথা অগ্রাহ্য করে তার মতে অটল থাকলেন। দধীচি তার শিষ্যদের নিয়ে তখনই যজ্ঞস্থল ত্যাগ করলেন।

শিবের জটা থেকে বীরভদ্র ও মহাকালীর উদ্ভব হয়; Image Source : brainstudy.info

এদিকে কৈলাসে দক্ষের যজ্ঞে গমন নিয়ে শিব-সতীর বাকবিতণ্ডা চলছে। “যজ্ঞের নিমন্ত্রণ যখন আসেনি, তখন সেখানে কীভাবে যাওয়া যায়?” শিবের এ কথায় সতী বললেন, “বাবার বাড়ি যাব, এতে আবার নিমন্ত্রণ লাগবে কেন! এত বড় যজ্ঞের আয়োজন করতে গিয়ে বাবা হয়তো ভুলবশত আমাদের নিমন্ত্রণ করতে ভুলে গেছেন। চলুন না, স্বামী।” সতীর অনেক সাধাসাধির পরে শিব তাকে যাওয়ার অনুমতি দিলেন, কিন্তু নিজে কৈলাসে বসে রইলেন। সতীর সাথে তিনি নন্দী আর গণদের পাঠালেন। যজ্ঞের দ্বারে সতী ও নন্দীকে থামানো হলে দ্বাররক্ষীদের দু’কথা শুনিয়ে সতী ভেতরে প্রবেশ করলেন।

সতীকে দেখে দক্ষ বেদী থেকে উঠে সতীর দিকে এগিয়ে এলেন। সতী বাবার পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ চাইলে দক্ষ পা সরিয়ে নিয়ে বললেন, “যতদিন আমার কন্যা ছিলে ততদিন তোমার কোনোরূপ গুণের ক্ষয় হয়নি। যেদিন থেকে ঐ শিবকে বিয়ে করলে সেদিন থেকেই তোমার গুণ ও রুচি নষ্ট হওয়া শুরু হলো।” পিতার এ ধরনের কথা সতী একদম আশা করেনি। যে পিতা একদিন তাকে প্রাণাধিক ভালোবাসতেন, আজ সে পিতা তাকে কুবচন শোনাচ্ছেন! সতী পিতার এহেন আচরণে বড় মর্মাহত হলেন।

শিবদূতেরা এসে দক্ষের যজ্ঞ লণ্ডভণ্ড করেছিল; Image Source : sreenevasrao’s blog

“বিনা নিমন্ত্রণে কারো নিবাসে তো ঐ শিব আর তার ভূতেরা যায়। এখন তুমিও আসলে। তুমি প্রকৃতই শিবের পত্নী।”

“বাবা, আমি আপনার মেয়ে। কী বলছেন এসব! বাবার বাড়িতে আসব, তাতে আমন্ত্রণ-নিমন্ত্রণ লাগবে কেন!”

“যেদিন থেকে তুমি শিবকে বিয়ে করেছ, সেদিন থেকে তুমি আর আমার মেয়ে নও। ঐ শ্মশানবাসী, দুরাচারীর ভেতর তুমি কী দেখলে আমি জানি না। সভ্যতা-সংস্কৃতির বালাই নেই পাষণ্ডটার। সারাদিন নেশা করে ভূত নাচিয়ে বেড়ায় সে। ঐ মাতাল, গর্দভ, কপটী, শঠ শিবকে আমি আমার জামাই হিসেবে স্বীকার করি না।”

জনসম্মুখে পিতার মুখে নিজের পতির নিন্দা শুনে সতী অত্যন্ত মর্মাহত হলেন। অপমান সইতে না পেরে যজ্ঞের আগুনে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ ত্যাগ করলেন। সতীর আহুতিতে ত্রিভুবন কেঁপে উঠল। কৈলাস জ্বলে উঠল। মহাদেব নিজের একটি জটা ছিঁড়ে ভূমিতে নিক্ষেপ করলেন। সেটি দু’ভাগ হয়ে দুই রুদ্রমূর্তি বীরভদ্র ও মহাকালীকে জন্ম দিল। মহাদেব তাদের আদেশ দিলেন,

“দক্ষ ও তার যজ্ঞের সর্বনাশ করো।”

গণের দল যজ্ঞের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। নন্দী দেবতাদের আক্রমণ করলেন। শিবের সকল দূতেরা এসে যজ্ঞ লণ্ডভণ্ড করল। ভূত-প্রেত, পিশাচ-ডাকিনীরা বিভীষিকা তৈরি করল। বীরভদ্র ও ভদ্রকালীকে আটকাতে দক্ষ তার বীর সেনানীদলকে পাঠালেন। ভৃগু ঋষি মন্ত্রবলে শৌর্যশালী যোদ্ধা উৎপন্ন করলেন। কেউই বীরভদ্র ও মহাকালীকে থামাতে পারল না। বীরভদ্র একদিকে খড়গ দিয়ে শত্রুর গলা কাটে, মহাকালী আরেকদিক থেকে তাদের রক্তপান করে। দেবতারা সবাই দক্ষের পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করল।

শিব সতীর দেহ কাঁধে নিয়ে তাণ্ডবলীলা শুরু করেন; Image Source : Pinterest

বিষ্ণুদূত ও শিবদূতদের ভীষণ যুদ্ধ শুরু হলো। দক্ষ যজ্ঞ শুরু করার আগে ভগবান বিষ্ণুর কাছ থেকে বচন নিয়েছিলেন যে, যেকোনো অবস্থায় বিষ্ণু দক্ষের যজ্ঞ সম্পন্ন করতে সর্বাত্মক সাহায্য করবেন। এবার সেই সাহায্যের পালা। বিষ্ণুকে গিয়ে দক্ষ অনুরোধ করলেন, যজ্ঞ রক্ষার জন্য। বিষ্ণু তাকে শিবনিন্দা করার জন্য তিরস্কার করলেন। কিন্তু দক্ষ তার পরমভক্ত। ভক্তকে বাঁচাতে তিনি বীরভদ্রের পথরোধ করে দাঁড়ালেন।

বিষ্ণু শঙ্খ বাজিয়ে যুদ্ধ শুরু করলেন। বিষ্ণুর শাঁখের শব্দ শুনে যে দেবতারা স্বর্গে পালিয়েছিলেন, তারা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলেন। তারাও পুনরায় যুদ্ধে যোগ দিলেন। ইন্দ্রের সাথে নন্দীর লড়াই হলো, যমের সাথে মহালোকের, কুবেরের সাথে কুষ্মাণ্ডপতির, অগ্নির সাথে অস্মানের, বরুণের সাথে মুণ্ডের, বায়ুর সাথে ভৃঙ্গির এবং চন্দ্রের সাথে নৈঋতের যুদ্ধ হলো। যুদ্ধে শিবদূতগণ দেবতাদের হারিয়ে দিলেন। দক্ষের পক্ষে অবস্থানকারী সকলকে তারা শাস্তি দিলেন। এদিকে, নারায়ণের সকল অস্ত্র ব্যর্থ হওয়ার পরে তিনি বীরভদ্রের দিকে অমোঘ সুদর্শন চক্র নিক্ষেপ করলেন। বীরভদ্র সুদর্শনকেও থামিয়ে দিলেন।

তখন আকাশ থেকে দৈববাণী হলো যে, শিবদূতেরা অপরাজেয়। বিষ্ণু তখন যুদ্ধ থামিয়ে বৈকুণ্ঠে ফিরে গেলেন। শিবদূতেরা ঋষি-মুনি-দেব কাউকেই রেহাই দিল না। কারো দাঁত উপড়ে ফেলা হলো, কারো চোখ উপড়ানো হলো, কারো হাড় ভাঙা হলো, দাড়ি ছিড়ে ফেলা হলো। অবশেষে, বীরভদ্র দক্ষের অন্দরমহলে প্রবেশ করলেন। তিনি দক্ষকে ধরে এনে খড়গ দিয়ে তার শিরশ্ছেদ করলেন। দক্ষের মাথাটি অগ্নিদেবের আহার হলো।

দক্ষকে শিব ক্ষমা করে দিয়ে তার ধড়ে একটি ছাগলের মাথা লাগিয়ে দিয়েছিলেন; Image Source : glorioushinduism.com

দক্ষের পতনের পরে শিবদূতেরা শান্ত হলো। দেবতারা গিয়ে মিনতি করায় শিব বীরভদ্র ও মহাকালীকে নিবৃত্ত করলেন। সবকিছু শেষ হয়ে গেলে সতীর দেহ নিতে শিব এলেন। প্রসূতির কাকুতি-মিনতিতে শিবের মন গলল। তিনি দক্ষের ধড়ে একটি ছাগলের মাথা লাগিয়ে দক্ষের প্রাণ ফিরিয়ে দিলেন। দক্ষ শিবের কাছে ক্ষমা চাইলে শিব তাকে ক্ষমা করে পরের জন্মে উন্নত জীবনের বর দিলেন।

এরপর শিব সতীর দেহ নিয়ে তাণ্ডবলীলা শুরু করলে সৃষ্টি আবার ধ্বংসের মুখে পতিত হলো। বিরহী শিবকে কর্মমুখর করতে এবং সৃষ্টি রক্ষার্থে ভগবান বিষ্ণু সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ ৫১টি খণ্ডে খণ্ডিত করলেন। সেই দেহখণ্ডগুলো পৃথিবীর উপর পতিত হলে একেকটি খণ্ডকে আশ্রয় করে একেকটি সতীপীঠ গড়ে উঠল। সেই গল্প আরেকদিন বলা যাবে। সতীকে হারিয়ে শিব আবার তপস্যায় লীন হয়ে গেলেন। আবার মহাদেবের যোগীজীবন শুরু হল। সতীর মৃত্যুর কিছুদিন পর দেবী আদিশক্তি পর্বতরাজ হিমালয়ের কন্যারূপে জন্মগ্রহণ করলেন। হিমালয়ের সেই কন্যা ও শিবের আবার বিয়ে হয়। সেই গল্প আরো রোমাঞ্চকর। সেটি বলা হয়েছে পরের পর্বে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এ গল্পগুলোর প্রেক্ষাপট, ঘটনাক্রম, চরিত্র, প্রতিবেশ প্রভৃতি বিষয়ে অল্পবিস্তর মতভেদ থাকতে পারে। তবে, গল্প বর্ণনার ক্ষেত্রে সর্বাধিক প্রচলিত কাহিনীই অনুসরণ করা হয়েছে। কোনো ধর্ম, বর্ণ এবং মতবাদকে কোনোরূপ কটূক্তি বা কটাক্ষ বা অপমান করার অভিপ্রায়ে এ লেখাটি রচিত হয়নি।

The article is in Bengali. It describes the story of daksha yagna from the realm of Hindu Mythology.

Some of the useful references are hyperlinked inside the article and here are some reference books: 

1. বৃহৎ, সটীক ও সচিত্র সপ্তকাণ্ড কৃত্তিবাসী রামায়ণ (মূল রামায়ণ থেকে কৃত্তিবাস পণ্ডিত কর্তৃক পয়ার ত্রিপদী ছন্দে অনুবাদিত). সম্পাদনা : শ্রী বেনীমাধব শীল, প্রকাশক : অক্ষয় লাইব্রেরি (কলকাতা).
2. মহাভারত. সারানুবাদ : রাজশেখর বসু (১৪১৭ বঙ্গাব্দ). মূল গ্রন্থ : কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস কৃত মহাভারত. প্রকাশক : এম. সি. সরকার অ্যান্ড সন্স প্রাইভেট লিমিটেড (কলকাতা – ৭৩)
3. সচিত্র কিশোর পুরাণ সমগ্র (২০১৫). দীন ভক্তদাস বিরচিত. প্রকাশক : অক্ষয় লাইব্রেরি (কলকাতা).
4. পুরাণের গল্প. লেখক : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী. মূল বই : উপেন্দ্রকিশোর সমগ্র (২০০৪). প্রকাশক : দে'জ পাবলিকেশন্স (কলকাতা, ৭০০ ০৭৩)

Featured Image: pixels.com

Related Articles