Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

কয়েকজন এশীয় সিন্ডেরেলার গল্প

ছোটবেলায় সিন্ডেরেলা’র গল্প শোনেনি এমন কাউকে নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে না। বিশ্ব জুড়ে এর কয়েকশো সংস্করণ রয়েছে। ধারণা করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ অব্দের আগে প্রথম এ ধরনের র‍্যাগস টু রিচেস এর গল্প শোনা যেত। অর্থাৎ, যেখানে ভাগ্যের জোরে একজন অতি দুঃখী মানুষ (সাধারণত মেয়ে) পরবর্তীতে সুখ-সমৃদ্ধি অর্জন করে।

রডোপিস

রডোপিস; Source: popsugar.com

সবচেয়ে প্রাচীন সংস্করণটি গ্রিক রডোপিসের। গল্পটি গ্রিক হলেও এর পটভূমি সাজানো হয়েছে মিশরকে ঘিরে। গল্প মতে, একদিন রডোপিস নীল নদীতে স্নান করছিলেন। তখন দেবতা জিউস একটি ঈগলকে পাঠান রডোপিসের জুতো নিয়ে যাবার জন্য। আকাশে উড়তে থাকা সে ঈগল ছোঁ মেরে তার একটি জুতো মিশরের মেমফিস নগরীতে নিয়ে যায়।

সেখানেই খোলা আকাশের নিচে মিশরের ফারাও বৈঠক করছিলেন। জুতোখানি উড়ে ঠিক তার কোলে পড়ে যায়। তিনি এই জুতোর অনন্যতা দেখে মনে করেন, এর আসল মালিককে খুঁজে পেতেই হবে। আর পরে কী হয়েছে তা তো পাঠকরা আন্দাজ করতেই পেরেছেন। রডোপিস বলতে ইতিহাসে সত্যি একজন ছিলেন বলেও জানা যায়। তবে তার জীবন গল্পের রডোপিসের মতো ছিল না। তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষের কাছে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি হয়েছেন। মিশরের সম্রাজ্ঞী হননি।

এ তো গেল সিন্ডেরেলার সবচেয়ে প্রাচীন সংস্করণের কথা। ছাপার অক্ষরে প্রথম সিন্ডেরেলা গল্পটি প্রকাশিত হয় ১৬৩৭ সালে। ন্যাপলসের একজন সৈনিক, কবি, কথাসাহিত্যিক গিয়ামবাটিসটা বেসিল প্যানটামেরন নামের একটি বই প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন লোকগাথা লিপিবদ্ধ রাখতেন। সেখানে সিন্ডেরেলা’র নাম ছিল সেনেরেনটোলা।

দ্য লিটল গ্লাস স্লিপারস

সিন্ডেরেলা বললে আমাদের চোখে কী ভাসে? একটি কাঁচের জুতো, কুমড়োর গাড়ি, ইঁদুর থেকে সুদর্শন ঘোড়া বনে যাওয়া সিন্ডেরেলার বন্ধুরা প্রভৃতি। ওয়াল্ট ডিজনির সুবাদে আমরা সবচেয়ে বেশি পরিচিত এই সংস্করণটির সাথে। এটি বেসিলের সেনেরেনটোলা থেকেই নেয়া। তবে এখানে লেখক চার্লস পেরল্ট সিন্ডেরেলার নাম দেন সেনড্রেলিয়ন। তিনিই বেসিলের গল্পের সাথে যোগ করেন বিখ্যাত গ্লাস স্লিপারস, পাম্পকিন ক্যারেজ এবং ফেইরি গড মাদার (১৬৯৭)।

কাহিনী গড়পড়তা সব প্রায় একই রকম হলেও প্রতিটি সংস্করণে তাদের নিজস্ব ‘টুইস্ট’ আনা হয়েছে। সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের কারণে ইউরোপীয় সিন্ডেরেলাকে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে দেখে। আর যেহেতু এটি লোকগাথা বা ফেইরি টেইল, তাই লোকমুখে স্থান-কালভেদে এদের পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক। আসুন জেনে নিই কয়েকজন এশীয় সিন্ডেরেলার গল্প।

ইয়ে সান: চীনা সিন্ডেরেলা

৮৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে লেখা ইয়ে সানকে বলা হয় ‘প্রাচীনতম’ সিন্ডেরেলা।

চিন ও হান সাম্রাজ্যেরও তখন জন্ম হয়নি। সকলে তখন বাস করত গুহায়। এমনি একজন গুহা দলনেতা ছিলেন, নাম ছিল উ। উয়ের দুজন স্ত্রী ছিলেন। এই দুই স্ত্রী উকে দুটি কন্যাসন্তান উপহার দেন। কিন্তু জন্মের পরই ইয়ে সানের মা মারা যান। এর কয়েকদিন পর পিতা উ-ও শয্যাশায়ী হন এবং তিনিও মারা যান।

ইয়ে সান বড় হতে থাকে তার সৎ মা ও বোনের সাথে। ইয়ে সান রূপে-গুণে তার সৎ বোনের চেয়ে ছিল এগিয়ে। তাই ঈর্ষাভরে ইয়ে সানের সৎ মা তাকে দিয়ে ঘরের সবচেয়ে কঠিন কাজগুলো করাত।

ইয়ে সান; Source: languagelizard.com

কাজের ফাঁকে একমাত্র অবসর ইয়ে সানের কাটতো তাদের গুহার পেছনের পুকুরে একটি মাছের সাথে কথা বলে। সোনারঙ চোখের মাছটিকে ইয়ে সানের বড় ভালো লাগত। নিজে সামান্য যা খাবার পেত, মাছটির সাথে সে ভাগ করে খেত।

একদিন সৎ মা মাছটির কথা জেনে যায়। ইয়ে সানকে ঘরের বাইরে যেতে বলে, ইয়ে সানের কোটটি গায়ে জড়িয়ে মা যায় মাছটির কাছে। ইয়ে সান ভেবে মাছটি যখন কাছে আসে, কোটের ভিতরে লুকিয়ে রাখা ছোরা দিয়ে অমনি মেরে ফেলে সৎ মা সুন্দর মাছটিকে, নিয়ে যায় রান্না করার জন্য।

বিকেলে কাজ সেরে ইয়ে সান যায় তার প্রিয় মাছের কাছে। কিন্তু মাছটিকে আর কোথাও খুঁজে পায় না। কষ্টে পুকুর ধারেই সে কাঁদতে থাকে। তার চোখের পানি পুকুরে পড়তেই পানির ভিতর থেকে বুড়ো এক লোক উঠে আসে। সে ইয়ে সানকে জানায় যে, ওর প্রিয় মাছটি সাধারণ মাছ নয়, তার আছে অলৌকিক ক্ষমতা। এটাও জানায় যে, ইয়ে সানের মা-ই মাছটিকে মেরে নিয়ে গেছে রান্না করার জন্য।

বুড়ো লোকটি ইয়ে সানকে শান্ত করার জন্য বলে, “মাছের হাড়গুলো ফেলে দিও না। যখনই তোমার কিছু দরকার হবে, হাড়গুলোর কাছে চাইবে।খবরদার! মাছের দেয়া উপহার অবজ্ঞা করো না”।  ইয়ে সান লোকটির কথামতো কাজ করে। দেখতে দেখতে নতুন বছরের অনুষ্ঠান এসে যায়।

এরপর থেকে গল্প ইউরোপীয় সিন্ডেরেলার মতোই থাকে। সৎ মা ইয়ে সানকে নতুন বছরের অনুষ্ঠানে যেতে দেয় না, পাছে তার নিজের মেয়ের জন্য পাত্র খুঁজে না পায়, সেই ভয়ে। ইয়ে সান মাছের হাড়গুলোর কাছে অনুষ্ঠানে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করলে নিমেষেই তার জরাজীর্ণ কাপড়গুলো জমজমাট গাউনে পরিণত হয়। পায়ে চড়ে সেই বিখ্যাত গ্লাস স্লিপার। যখন সে অনুষ্ঠানে পৌঁছে তখন সৎ মা ও বোন তাকে চিনে ফেলে। পর্বত থেকে দৌড়ে নামতে গিয়ে একটি জুতো রয়ে যায় সেখানেই।

এখানে পার্থক্য আছে অবশ্য। হারানো স্লিপারটি রাজপুত্র খুঁজে পায় না, বরং একজন বণিক খুঁজে পায়। সে স্লিপারটি একটি দ্বীপরাজ্যের রাজার কাছে বিক্রি করে। এরপরে রাজা সেই স্লিপার দেখে তার মালিককে খোঁজার চেষ্টা করে।

ঐদিকে জুতো হারানোর পর থেকে মাছের হাড়গুলো চুপ হয়ে যায়। ইয়ে সান দিনরাত অশ্রু বিসর্জন করে যে সে তার একমাত্র বন্ধুকেও হারিয়ে ফেলল।

ডিজনি সংস্করণে যেমনটি ছিল, এখানে তেমনভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মেয়েদের পায়ে জুতো সাঁটানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। রাজা বুঝতে পেরেছিলেন এভাবে তার সারাজীবন লেগে যাবে। বুদ্ধি আঁটেন রাজা।

যেখানে জুতোটি পাওয়া গিয়েছিল ঠিক সেখানে জুতটিকে স্থাপন করেন তিনি। ঘোষণা দেন এর আসল মালিক এসে যদি জুতোটির সত্ত্ব যাচাই করতে পারে তাহলে তাকেই বিয়ে করবেন রাজা। সারাদিন দূর-দূরান্ত থেকে মেয়েরা এসে জুতোটি পরার চেষ্টা করেও পারে না।রাত যখন গভীর হয়, তখন ইয়ে সান তার হারানো জুতোটি নিতে আসে। এই জুতো না পেলে তার মাছ আর তার সাথে কথা বলবে না। রাজা নির্জনে জুতোর পাশে দুজন রক্ষী নিয়োগ করে রেখেছিলেন। পরে যা হওয়ার তা-ই হলো! রাজা ইয়ে সানের বাড়ি গিয়ে তাকে জুতো পরিয়ে বুঝে নিল যে এ আর কেউই নয়, অনন্য সুন্দর মেয়েটিই তার হবু রানী।

আবাদেহা: ফিলিপিনো সিন্ডেরেলা

অন্য সব সিন্ডেরেলার মতো ফিলিপিনো সিন্ডেরেলা আবাদেহারও ছোটবেলায় মা মারা যায়। সে বড় হয় দুষ্টু সৎ মায়ের শাসনে। একদিন একটি পুকুরের কাছে সে মনের দুঃখে কান্না করছিল। ঠিক তখনই পানি থেকে উঠে আসেন একজন ফেইরি গড মাদার। গড মাদার আবাদেহাকে দেন একটি মুরগি। আবাদেহা উপহার পেয়ে খুশি হয়ে মুরগিটি বাসায় নিয়ে যায়।

আবাদেহা; Source: leeandlow.com

মুরগি দেখে লোভ হয় সৎ মায়ের। দুষ্টু মহিলা রান্না করে ফেলে মুরগিকে। আবাদেহা জানতে পেরে ছুটে যায় সেই পুকুর ধারে। বলে তার দুঃখের কথা ফেয়েরি গড মাদারকে। গড মাদার বলেন, “তুমি কষ্ট পেও না। মুরগির হাড়গুলোকে জঙ্গলে পুঁতে রাখো”। আবাদেহা তা-ই করলো।

একমাস পর যখন সে জঙ্গলে গেল, দেখল তার পুঁতে রাখা মুরগির হাড়গুলো মাটি ফুঁড়ে বের হয়েছে। তাতে ঝুলছে সোনা, মণি, মুক্তো! আবাদেহা কাউকে এই জঙ্গল সম্পর্কে বলল না।

একদিন খুব ধনী পরিবারের এক ছেলে জঙ্গল দিয়ে যাচ্ছিল। হাড়গুলো থেকে ঝরে পড়া একটি হীরার আংটি সে হাতে পরে নিল। কিন্তু বাড়ি ফেরার পর তার আঙ্গুলটি ফুলে উঠতে শুরু করলো! আংটি কিছুতেই খোলা গেল না।

ছেলের বাবা ঘোষণা দিলেন, যে মেয়ে তার ছেলের হাত থেকে আংটিটি খুলে দিতে পারবে, তার সাথেই বিয়ে দিবেন ছেলের। শহরের প্রতিটি মেয়ে চেষ্টা করেও আংটি খুলতে পারলো না। অবশেষে আবাদেহা যখন চেষ্টা করলো, সে-ই আংটিটি খুলতে পারলো এবং শহরের সবচেয়ে ধনী পরিবারের পুত্রবধূ বনে গেল।

দ্য স্টোরি অব টেম এন্ড ক্যাম: ভিয়েতনামী সিন্ডেরেলা

সিন্ডেরেলার অন্যান্য সংস্করণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বীভৎস হচ্ছে এই ভিয়েতনামী সংস্করণটি। প্রচলিত সিন্ডেরেলার গল্পে আমরা সিন্ডেরেলাকে প্রতিশোধ নিতে দেখি না, তবে এখানে বিষয়টি আলাদা।

টেম এন্ড ক্যাম Source: inovassee.com

অনেক আগে এক লোকের স্ত্রী মারা যান। রেখে যান ছোট্ট একটি কন্যাশিশু- টেম। স্ত্রীর মৃত্যুর পর লোকটি দ্বিতীয় বিয়ে করে যাকে ঘরে নিয়ে আসে, সে টেমকে একদমই পছন্দ করতো না। এমনকি বিয়ের পরদিন টেমকে একটি বন্ধ ঘরে আটকে রাখে তার মা। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে দেয় না।

কিছুদিন পর টেমের এক ছোট বোন হলো, নাম ক্যাম। ক্যাম যেন এখন তার বাবা-মায়ের চোখের মণি। অন্যদিকে সৎ মা দিনরাত টেমের বিরুদ্ধে তার বাবার কান ভারি করতে থাকে। বাবাও এখন টেমকে বিশেষ স্নেহ করেন না।

একদিন সৎ মা দেখল যে নোংরা অপরিষ্কার হলে কী হবে! টেম তার মেয়ে ক্যামের চেয়ে বহুগুণে সুন্দরী। এতে সৎ মা আরও বেশি ঈর্ষান্বিত হয়ে গেল। সৎ মা শুধু টেমের মৃত্যু কামনা করতো।

একদিন টেম-ক্যামকে ডেকে মা বলল, “যাও, নদী থেকে এক ঝুড়ি মাছ নিয়ে এসো। যত পারো, তত এনো। মনে রেখো, যার ঝুড়িতে মাছ কম থাকবে, তাকেই শাস্তি পেতে হবে এবং আজ রাতে সে খাবার পাবে না”। টেম জানতো কথাগুলো তাকেই উদ্দেশ্য করে বলা।

সারাদিন খেটে টেম নদী থেকে এক ঝুড়ি মাছ তুলল। আর অহংকারী ক্যাম সারাদিন শুধু সূর্যের নিচে নরম ঘাসে গড়াগড়ি দিয়েই পার করে দিল। যাওয়ার বেলায় দেখল যে টেম অনেক মাছ পেলেও তার ঝুড়ি শূন্য।

ক্যাম টেমকে বলল, “বোন, দেখো তোমার চুল কেমন উস্কোখুস্কো হয়ে আছে। নদীতে গিয়ে ধুয়ে আসো নাহলে মা রাগ করবেন”। টেম বোনের কথা মতো নদীতে গেল। অমনি সুযোগ পেয়ে ক্যাম টেমের ঝুড়ির মাছগুলো নিয়ে বাড়ির পথে রওনা হলো।

অসহায় টেম মাছ হারিয়ে নদীতে কান্না করতে লাগল। তখনই নদী থেকে নীলবসনা এক মায়ার দেবী উঠে এলেন। তিনি সান্ত্বনা দিলেন টেমকে এই বলে যে ঝুড়িতে এখনও একটি মাছ রয়েছে। টেম দেখল সুন্দর লাল রঙের একটি মাছ রয়েছে ঝুড়িতে। সে ওটা বাসায় নিয়ে বাড়ির পুকুরে ছেড়ে দিল আর মাছটির সাথে তার মনের কষ্ট ভাগ করতে লাগল।

একদিন সৎ মা দেখতে পেয়ে মাছটিকে মেরে রান্না করে ফেলল। ইয়ে সানের গল্পের মতোই। এখানেও মাছের হাড়গুলোকে সে তার ঘরের কার্পেটের নিচে পুঁতে রাখল। হেমন্তকাল এলো, সবাই রাজার বাড়ি নিমন্ত্রণ খেতে গেল, একা রয়ে গেল টেম। এর পরের কাহিনী ইউরোপের সিন্ডেরেলার মতোই। জুতো হারানো, রাজার জুতো পাওয়া, এর মালিককে খোঁজা ইত্যাদি।

পার্থক্য হলো, বিয়ের পর বাবার জন্মদিনে টেম তার মা-বাবার বাড়ি বেড়াতে আসে। তখনকার দিনের রীতি ছিল, ছেলেমেয়ে যত বড়লোকই হোক না কেন, বাবা-মায়ের আদেশ তাদের মানতেই হবে।

সৎ মা টেমকে বললেন তালগাছে উঠে তাল পেড়ে আনতে। রানী হলেও টেমকে তা মানতেই হবে। যখন টেম গাছে উঠল তখন মা নিচে কাস্তে দিয়ে গাছটি কেটে ফেললে টেম গাছসহ পড়ে গিয়ে মারা যায়। সৎ মা তার মেয়ে ক্যামের সাথে রাজার আবার বিয়ে দেন।

এই গল্পে টেম মারা যাওয়ার পরও পুনর্জন্ম লাভ করে। একবার সে হয় রাজার বাগানের চড়ুই পাখি। মিষ্টি গান দিয়ে সে রাজার মন জয় করলে রাজা বুঝতে পারেন এই পাখিটি তার প্রিয়তমা প্রথম স্ত্রী। পাখিটির প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে ক্যাম পাখিটিকে মেরে ফেলে।

পরে টেম আবারো পুনর্জন্ম পায়। এবার হয় একটি বড় সুদর্শন গাছ, যে গাছে একটিই ফল ধরে। কিন্তু ফলটি যেনতেন কোনো ফল নয়, বিশাল, স্বর্ণালী, সুগন্ধভরা এক ফল।

পথে এক বুড়ো মহিলা ফলটি দেখে তার সাথে নিয়ে যায়। সারাদিন কাজ শেষে এসে একদিন সে দেখে তার ঘরদোর ঝকঝক করছে আর টেবিলে গরম খাবার পরিবেশিত আছে। সে বুঝতে পারল না কাজটি কী করে হল!

তো পরদিন পাহারা দিয়ে সে বুঝতে পারল যে ফল থেকে সুন্দর এক মেয়ে বেরিয়ে ওর যাবতীয় কাজ করে দেয়। টেম ধরা পড়ে গত্যন্তর না পেয়ে বুড়িকেই মা মেনে নেয়।

একবার বুড়ির জঙ্গলে শিকার করতে এসে রাজা বিশ্রাম চাইলেন বুড়ির বাড়িতে। বুড়ি থালায় করে পান আর শরবত নিয়ে এল। পান সাজানোর এই নিয়ম দেখে রাজা বুঝলেন যে সাজিয়েছে সে আর কেউ নয়, তার প্রথম স্ত্রী টেম।

বারবার হার মেনে ক্যাম আর পেরে উঠলো না টেমের সাথে। সে জিজ্ঞাসা করল টেমকে, কী করে তার মতো সুন্দর ত্বক পাওয়া যায়। টেম তাকে বুদ্ধি দিল যে ফুটন্ত পানিতে ঝাপ দিলেই তার ত্বক টেমের মতো সুন্দর হয়ে যাবে। বোকা ক্যাম সত্যিই ফুটন্ত পানিতে ঝাপ দিল। মেয়ের মৃত্যুতে মা চোখের জল ফেলতে ফেলতে অন্ধ হয়ে গেলেন। কিছুকাল পরে মারা গেলেন। বেঁচে রইল শুধু টেম।

Featured Image: parsonsthomaskinkadegallery.com

Related Articles