Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বাস্তব জীবনের প্রাকৃতিক জোম্বিরা

‘জোম্বি’ শব্দটি কানে এলেই ‘ডন অব দ্য ডেড’, ‘ডেড স্নো’, ‘ডেড এলাইভ’, ‘সিটি অব দ্য লিভিং ডেড’ আর ‘রেসিডেন্ট ইভিল’ এর মতো ভয় ধরানো সিনেমার কথা মাথায় আসে প্রথমেই। এসব সিনেমার বদৌলতে জোম্বি শব্দটির সাথে মোটামুটি সবাই পরিচিত। এর একটি সার্বজনীন সংজ্ঞা এরকম যে, জোম্বি হচ্ছে জীবন্ত ‘মৃত’। অর্থাৎ মৃত কোনো প্রাণী, সেটা মানুষ হোক কিংবা অন্য কোনো প্রাণী হোক, যখন কোনো ভাইরাস বা পরজীবীর আক্রমণে জীবিত হয়ে কুৎসিত, কদাকার চেহারা নিয়ে আবির্ভূত হয়, সেটিই জোম্বি।

কিন্তু বাস্তব জীবনে এই জোম্বির কোনো অস্তিত্ব নেই। নানারকম গুজব আর উপকথায় জোম্বিদের কথা শোনা গেলেও প্রমাণ পাওয়া যায়নি একটিরও। তবে প্রকৃতিতে আছে সিনেমার চেয়েও অদ্ভুত সব জোম্বি, তা কি জানা আছে? চলুন তাহলে কয়েকটি প্রাকৃতিক জোম্বির সাথে পরিচিত হওয়া যাক!

জোম্বি; image source: DesktopBackground.org

জোম্বি অ্যান্ট’ বা জোম্বি পিঁপড়াগুলো বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হাজারো প্রজাতির পিঁপড়ার মতোই কিছু সাধারণ প্রজাতি মাত্র। কিন্তু এরাই জোম্বি হয়ে ওঠে একধরনের বিশেষ ছত্রাক ‘ওফিওকরডাইসেপস’ এর আক্রমণে। এই ছত্রাকের আক্রমণে একটি স্বাভাবিক পিঁপড়া নিজের দেহ ও মনের উপর নিয়ন্ত্রণ হারায়। পিঁপড়াটির দেহের সমস্ত নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় জোম্বি ছত্রাক হিসেবে পরিচিত ছত্রাকটি। আর একবার এই ভয়ানক আণুবীক্ষণিক জীবটির খপ্পরে পড়লে বেচারা পিঁপড়াগুলোর আর নিস্তার নেই। মৃত্যু তাদের জন্য অবধারিত। শুধু মরেই যায় না, সাথে এই ব্যধির সংক্রমণ বৃদ্ধি করে দিয়ে যায়।

সিনেমার জোম্বিরা যেভাবে সুস্থ মানুষকে কামড় দিয়ে সংক্রমণ ছড়ায়, জোম্বি পিঁপড়া তেমনটা করে না। এর ধরণ কিছুটা অন্যরকম। অবশ্য পিঁপড়ার অবদান এখানে সামান্যই। কারণ, সংক্রমিত হবার পর পিঁপড়াটির যাবতীয় কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করে সেই ছত্রাকটিই। একটি সুস্থ স্বাভাবিক পিঁপড়া, যা কিনা খাদ্যের সন্ধানে ইতস্তত ঘুরে বেড়াচ্ছিল, ওফিওকরডাইসেপস দ্বারা সংক্রমিত হতেই এর আচরণ কিছুটা বিকারগ্রস্ত মনে হতে শুরু করে। ছত্রাকের স্পোর ১-২ ঘন্টার মধ্যে পিঁপড়ার সমস্ত দেহে ছড়িয়ে যায় এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। এই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এরা পিঁপড়াটির কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র দখলে নেয়! দখল হোক জমিতে কিংবা স্নায়ুতন্ত্রে, অস্ত্র ছাড়া তা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে ওফিওকরডাইসেপস ছত্রাকটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে শতাধিক পৃথক পৃথক রাসায়নিক দ্রব্য।

পাতায় মুখ গুঁজে মারা গিয়েছে পিঁপড়াটি, যার দেহে বাসা বেঁধেছে ছত্রাক; image source: bugguide.net

শুধু তা-ই নয়, ওফিওকরডাইসেপস অস্ট্রালিস নামক এক প্রজাতির জোম্বি ছত্রাক তো রীতিমতো হোস্টের দেহে মুক্ত করতে পারে হাজারখানেক রাসায়নিক। এসব রাসায়নিকের অধিকাংশের সাথেই আমাদের পরিচয় নেই। সেগুলো নিয়ে গবেষণাগারে চলছে বিস্তর পরীক্ষানিরীক্ষা। তবে যে ব্যাপারটি জানলে বিস্ময়ের মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তা হচ্ছে এই ক্ষুদ্র আণুবীক্ষণিক জীবের দক্ষতা। এরা কিন্তু সকল প্রকার পিঁপড়ার দেহে আক্রমণ করে না, বরং নির্দিষ্ট কিছু পিঁপড়াকেই বেছে নেয় আক্রমণ করবার জন্য। আবার সকল পিঁপড়ার দেহে এরা একই রাসায়নিক নিঃসরণ করে না, বরং ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির পিঁপড়াকে কাবু করতে এরা বিভিন্ন রকমের রাসায়নিকের সমন্বয় ব্যবহার করে!

যা-ই হোক, ওফিওকরডাইসেপসের রাসায়নিক পিঁপড়ার স্নায়ুতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবার পর সাধারণত পিঁপড়াটি কোনো গাছের পাতা, ঘাস কিংবা পরজীবী ছত্রাকটির নির্ধারণ করা স্থানে গিয়ে মাথা গুঁজে পড়ে থাকে! এটি কোনোরূপ খাদ্যের খোঁজ করে না, সাড়া দেয় না পরিবার পরিজনের ডাকে। এক স্থানে উবু হয়ে থেকেই এর জীবনাবসান ঘটে। ততদিনে এর মাথার ভেতরে ওফিওকরডাইসেপসের শতাধিক নতুন স্পোর সৃষ্টি হয়, যেগুলো যথাসময়ে বেরিয়ে আসে এবং সুযোগ বুঝে নতুন শিকারকে বশীভূত করে। এরপর একই পদ্ধতিতে চলতে থাকে নতুন নতুন সুস্থ পিঁপড়াকে ‘জোম্বিফাই’ করার প্রক্রিয়া।

জোম্বি বোলতা; image source: youtube.com

এ তো গেল পিঁপড়া কথা, বোলতার মতো উড়ুক্কু জীব যখন জোম্বিফাইড হয়, তখন আরো ভয়াবহ ব্যাপার ঘটে। প্রাণীবিদগণ পর্যবেক্ষণ থেকে নিশ্চিত করেছেন যে একটি জোম্বি বোলতা নিজের প্রজাতিকে জোম্বিফাইড করার পাশাপাশি শুঁয়োপোকার মতো বিষাক্ত জীবকেও সংক্রমিত করে! আর এ ব্যাপারটি সম্ভব হয় এ দুটি প্রাণীর মাঝে পরজীবিতার কারণে। যখন দুটি জীবের মধ্যে এমন সম্পর্ক গড়ে ওঠে যে তা থেকে একটি প্রাণী উপকৃত হয় এবং অন্যটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন তাদের মধ্যকার সম্পর্ককে পরজীবীতা বলে। প্রাণীজগতে বোলতা ও শুঁয়োপোকার মধ্যে পরজীবীতার সম্পর্ক অত্যন্ত সাধারণ। বোলতা সাধারণত একটি শুঁয়োপোকার দেহে ডিম পাড়ে। ডিম থেকে লার্ভা বেরিয়ে শুঁয়োপোকার দেহে উৎপন্ন নানা উপাদেয় তরল গ্রহণ করে বড় হতে থাকে। এরপর একপর্যায়ে সেগুলো পিউপায় পরিণত হয়ে পোষক দেহ ক্ষয় করে বাইরে বেরিয়ে এসে গুটি তৈরি করে।

বোলতার গুটি পাহারা দিচ্ছে একটি জোম্বি শুঁয়োপোকা; image source: masterfile.com

এই কষ্টদায়ক প্রক্রিয়ার পরও শুঁয়োপোকাটি আরো কিছুদিন বেঁচে থাকে। কিন্তু এর দেহে পরজীবী হিসেবে ডিম পেড়ে যাওয়া বোলতাটি যদি হয় কোনো জোম্বিফাইড বোলতা, তাহলে প্রক্রিয়ার শেষপর্যায়ে এসে শুঁয়োপোকাটিও জোম্বি হয়ে যায় আর সিনেমার জোম্বিদের মতো ভয়ানক হিংস্র হয়ে ওঠে। তবে কোনো সাধারণ জোম্বি নয়, শুঁয়োপোকাটি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে একজন নিষ্ঠাবান পাহারাদার জোম্বি হিসেবে! ক্ষয়প্রাপ্ত দেহ নিয়ে জোম্বি শুঁয়োপোকাটি নিজের অনাগত মৃত্যুর জন্য দায়ী বোলতার পিউপার গুটিগুলোই পাহারা দেয় জীবন বাজি রেখে! শুঁয়োপোকাটি এ সময় ছানা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো মুরগীর মতোই রাগান্বিত এবং হিংস্র থাকে। যেকোনো পোকামাকড় গুটির ধারে কাছে ঘেঁষলেই সর্বোচ্চ শক্তিমত্তা প্রয়োগ করে আক্রমণ করে।

বোলতার গুটি বা পিত্ত; image source: minnesotaseasons.com

নিজের পোষককে শেষপর্যন্ত হত্যা করা পরজীবীর সংখ্যা প্রকৃতিতে নিছক কম নেই। বোলতার মধ্যে আবার রয়েছে বেশ কয়েক প্রজাতির ‘আত্মহননকারী’ জোম্বি প্রজাতি। একটি উদাহরণ দেয়া যাক। অনেক প্রজাতির বোলতা আছে যেগুলো উদ্ভিদের পাতায় বা সুবিধামতো কোনো শাখায় একপ্রকার পিত্ত তৈরি করে, যার মধ্যে এরা ডিম পাড়ে এবং পূর্ণাঙ্গ বোলতার বেরিয়ে আসবার জন্য একটি ছিদ্র করে রেখে যায়। পিত্তের মধ্যে ডিম থেকে লার্ভা বেরিয়ে উদ্ভিদ থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করে বেড়ে উঠতে থাকে। কিন্তু বি প্যালিডা নামক এক প্রজাতির বোলতার সেই সৌভাগ্য হয় না বা সে নিজে সেই সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হয়। কারণ, বেচারার বংশবৃদ্ধি প্রক্রিয়ায় বাঁধা দেবার জন্য ওঁত পেতে থাকে ‘ক্রিপট কিপার’ নামে পরিচিত বোলতা ই সেট

প্যালিডার পিত্তে তৈরি করা ছিদ্র কোনোভাবে ছোট করে দেয় ক্রিপট কিপার। কিংবা অধিকাংশ সময় ক্রিপট কিপারের তা করতেও হয় না, প্যালিডা নিজেই ছোট ছিদ্র তৈরি করে চলে যায়। কীভাবে বা কেন এরূপ আত্মঘাতী আচরণ করে প্যালিডা, তা এখনো জানতে পারেননি গবেষকগণ। এরপর কোকিলের কাকের বাসায় ডিম পাড়ার মতো করে প্যালিডার পিত্তে নিজে ডিম পেড়ে যায় ক্রিপট কিপার! পরবর্তী ঘটনা প্যালিডার নতুন জন্ম নেয়া কীটটির জন্য নিছক দুর্ভাগ্যের। পিত্তের ছিদ্র ছোট হওয়ায় সেটি বেরোতে গিয়ে আটকা পড়ে যায়। একস্থানে স্থির হয়ে একদিনের মধ্যেই বোলতাটি মারা যায়। আর তখনই শুরু হয় ক্রিপ্ট কিপার বোলতার রেখে যাওয়া ডিমগুলোর ভেলকি। ডিম থেকে বের হওয়া ক্রিপ্ট কিপারের লার্ভাগুলো আটকে থাকা মৃত প্যালিডা বোলতাটিকে খেতে শুরু করে এবং সেটির দেহের ভেতরেই অবস্থান নেয়। কিছুকাল পর ক্রিপ্ট কিপারগুলো মৃত প্যালিডাটির মাথা ছিদ্র করে বেরিয়ে যায়। জোম্বি পিঁপড়ার চেয়েও এ ব্যাপারটি অধিক বিস্ময়ের। কেননা, ক্রিপ্ট কিপার বোলতাগুলো কোনোরূপ ছত্রাকের আক্রমণে নয়, বরং এরা স্বভাবজাত জোম্বি যারা নিজের প্রজাতির কীটকে ফাঁদে ফেলে ভক্ষণ করে। আবার প্যালিডাও ছিদ্রে আটকে গিয়ে আত্মঘাতী জোম্বির মতো আচরণ করে। কোনো ছত্রাকের আক্রমণে তারা এরূপ আচরণ করছে কিনা তা জানা যায়নি।

ক্রিপট কিপার; image source: minnesotaseasons.com

২০১৬ সালে কোরিয়ান প্রাণীবিদরা খুঁজে পেয়েছেন নতুন একধরনের জোম্বি, যার নাম দেয়া হয়েছে ‘সেক্স জোম্বি’! যদিও এটির উপর এখনো গবেষণা চলছে, তথাপি প্রাথমিক ফলাফল গবেষকদের নিশ্চিত করেছে এই তথ্যটুকু। সেক্স জোম্বির রূপান্তর ঘটে বাট্রাকোকাইট্রিয়াম ডেনড্রোব্যাটিডিস নামক একপ্রকার ছত্রাকের আক্রমণে। উভচরদের জন্য, বিশেষ করে ব্যাঙের ক্ষেত্রে এই ছত্রাক প্রাণনাশী। কিন্তু ব্যতিক্রম হাইলা জ্যাপোনিকা নামক এক প্রজাতির ব্যাঙ যা ‘জাপানিজ ট্রি ফ্রগ’ নামে পরিচিত। অন্যান্য ব্যাঙের মতো এই ব্যাঙ বাট্রাকোকাইট্রিয়ামের আক্রমণে মৃত্যুবরণ করে না, বরং সেক্স জোম্বিতে পরিণত হয়। কীভাবে হয় তা নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। তবে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ থেকে উঠে এসেছে এর বৈশিষ্ট্যের অদ্ভুত পরিবর্তনের তথ্য।

হাইলা জ্যাপোনিকা ব্যাঙ; image source: .flickr.com

পুরুষ ব্যাঙ সাধারণত যৌন মিলনের জন্য উচ্চস্বরে ডাকে। এই ডাক যথেষ্ট আকর্ষণীয় হলেই তবে সে কোনো নারী ব্যাঙকে আকৃষ্ট করতে সমর্থ হয়। সেক্স জোম্বিদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঘটে অতি দ্রুত। এরা অন্যান্য সুস্থ ব্যাঙের চেয়ে অধিক আওয়াজে এবং দ্রুততার সাথে প্রজননের ডাক ডাকতে পারে। ফলে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে যে, জ্যাপোনিকা ব্যাঙগুলো জোম্বিতে পরিণত হবার পর অন্যান্য ব্যাঙের চেয়ে মিলন সঙ্গী পাবার সম্ভাবনা দ্বিগুণ হয়ে যায়! সঙ্গত কারণেই এদের নামকরণ করা হয়েছে সেক্স জোম্বি

প্রাকৃতিক জোম্বিদের মাঝে আরেক বিস্ময়কর জোম্বি হচ্ছে ‘মিউট্যান্ট জোম্বি’ বা পরিবর্তনশীল জোম্বি। বিজ্ঞানীদের বিস্ময়ের মাত্রা ছাড়িয়ে ছাড়িয়ে যায় এই আবিষ্কারের পর। কেননা মিউট্যান্ট জোম্বি কোনো চলনশীল প্রাণী নয়, নিশ্চল উদ্ভিদ! হ্যাঁ, কীটপতঙ্গের মতো অনেক কম প্রতিরোধক্ষমতা বিশিষ্ট উদ্ভিদও কয়েক প্রকার ব্যাকটেরিয়ার ফাইটোপ্লাজমার আক্রমণে নিজেদের আচরণ বদলে ফেলে জোম্বিতে পরিণত হয়। শুধু আচরণ? মিউট্যান্ট জোম্বিরা নিজেদের দেহের গঠন প্রকৃতিই বদলে ফেলে! আর একবার জোম্বিতে পরিণত হবার পর একটি উদ্ভিদ সেক্স জোম্বির মতো আগের চেয়ে অধিকতর আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে কীটপতঙ্গের জন্য। আর আকৃষ্ট কীটপতঙ্গের মাধ্যমেই এই জোম্বি সংক্রমণ বিস্তার লাভ করে। তবে এই ব্যাকটেরিয়াগুলো বাহক জীবের কোনোরূপ ক্ষতিসাধন করে না।

মিউট্যান্ট জোম্বি উদ্ভিদ; image source: bbc.com

উদ্ভিদকে জোম্বিতে রূপান্তর করার প্রথম ধাপে ব্যাকটেরিয়াটি উদ্ভিদ দেহে একপ্রকার প্রোটিন ক্ষরণ করে। এই প্রোটিন উদ্ভিদের দেহের নিজস্ব প্রোটিনের ট্রান্সক্রিপশনে বাঁধা দেয়। মূলত উদ্ভিদ দেহের যে প্রোটিনগুলো এর জেনেটিক কোডিং সম্পন্ন করে, সেগুলোকে প্রতিস্থাপন করে ফেলে ব্যাকটেরিয়ার নিঃসৃত প্রোটিন। আর জেনেটিক কোডিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয়া মানে আক্ষরিক অর্থে উদ্ভিদের সামগ্রিক দৈহিক কর্মকাণ্ডের উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়া। ফলে উদ্ভিদের ফুলগুলো সবুজ হতে থাকে এবং একসময় পাতায় পরিণত হয়! মজার ব্যাপার হলো, উদ্ভিদের এসব দৈহিক পরিবর্তন একে মেরে ফেলে না বা কোনোরূপ ক্ষতিসাধন করে না। বরং জোম্বিতে রূপান্তরিত হয়ে উদ্ভিদটি আগের চেয়ে আরো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে এবং কীটপতঙ্গ এর প্রতি অধিক আকৃষ্ট হয়। বিশেষ করে ঘাসফড়িং, যা কিনা উদ্ভিদের পাতার রস খেয়ে বেঁচে থাকে। জোম্বিতে পরিণত হওয়া উদ্ভিদের রস গ্রহণ করা ফড়িং অন্য উদ্ভিদের রস গ্রহণ করতে গেলে সেখানেও রেখে আসে খানিকটা সংক্রমণ। আর এভাবে বাড়তে থাকে মিউট্যান্ট জোম্বি উদ্ভিদের সংখ্যা।

ফিচার ছবি: sciencemag.org

Related Articles