দ্য কোড অব পুতিনইজম: পুতিনের অধীনে শৃঙ্খলা আর আনুগত্যের রাশিয়া

রাশিয়াতে কয়েকশো বছরের জার শাসনের বিলুপ্তি ঘটে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের মাধ্যমে; ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে রাশিয়াতে কমিউনিজম প্রতিষ্ঠিত হয় অক্টোবর বিপ্লবের মাধ্যমে। কমিউনিস্ট রেজিমে পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে গঠিত হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন, স্নায়ুযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয় কমিউনিস্ট ব্লককে। নব্বইয়ের দশকে গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে হেরে যায় কমিউনিস্ট বিশ্ব, রাশিয়া আত্মপ্রকাশ করে একটি রিপাবলিক হিসেবে।

নব্বইয়ের দশকে রাশিয়া ক্যাপিটালিস্ট ব্লকে প্রবেশ করলেও দুর্বল সোভিয়েত অর্থনীতির লিগ্যাসি রাশিয়াকে নির্ভরশীল করে তোলে তেল আর গ্যাসের উপর। শিল্প-কারখানার অবস্থান আর উৎপাদন পদ্ধতি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাশিয়াকে করে তুলেছিল দুর্বল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে। অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা আর রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যেই ২০০০ সালের শুরুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন পুতিন

রাশিয়ার রিপাবলিকান কাঠামোর মধ্যেই পুতিন শাসনব্যবস্থার একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলেছেন; Image Source: The Japan Times.

পরবর্তী দুই দশক রাশিয়াকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পুতিন, কখনো প্রেসিডেন্ট, কখনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। রাশিয়ার রিপাবলিকান কাঠামোর মধ্যেই পুতিন শাসনব্যবস্থার একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলেছেন, নতুন শাসনতান্ত্রিক দর্শনটি অনুসরণ করছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের রাষ্ট্রপ্রধানরা। পুতিনের শাসনতান্ত্রিক দর্শন পরিচিতি পেয়েছে পুতিনইজম হিসেবে, পুতিনইজমের চর্চা করা রাষ্ট্রগুলো পরিচিতি পেয়েছে পুতিনিস্ট রাষ্ট্র হিসেবে।

নিয়ন্ত্রণ

পুতিন বিশ্বাস করেন, অধিকাংশ মানুষের কর্মকাণ্ড অন্যদের দ্বারা চালিত হয়, অন্যদের দ্বারা প্রভাবিত হয়। কিছু মানুষ আছে যারা প্রকৃতিগতভাবেই দুর্বল, তাদেরকে সহজেই ম্যানিপুলেট করা যায়, নিয়ে আসা যায় নিজের নেতৃত্বে। কেজিবির একজন সাবেক এজেন্ট আর বর্তমান প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুতিনের ধারণা- রাশিয়ার নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। ক্রেমলিন তাদের নিয়ন্ত্রণ না করলে পশ্চিমা দেশগুলো তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করবে। একইসাথে, পুতিন মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত কার্যক্রমে বিশ্বাস করেন না, বিশ্বাস করেন না নিয়ন্ত্রণের মধ্যে না থাকা মানুষকে। মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা এভাবেই পুতিনইজমের কেন্দ্রীয় দর্শনে স্থান করে নিয়েছে।

ভ্লাদিমির পুতিন; Image Source: AP.

মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করার ইচ্ছার পেছনে পুতিনের শৈশব ভূমিকা রাখছে, ভূমিকা রাখছে কর্মজীবনের অভিজ্ঞতাও। শৈশবে পুতিন মার্শাল আর্ট শেখেন, লেনিনগ্রাদে ছিলেন স্থানীয় প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়নও। মার্শাল আর্টে পুতিন ব্ল্যাক বেল্ট অর্জন করেন। তিনি পরবর্তীতে বলেছেন, জুডো একটি দর্শন, যেটি আন্তঃনিয়ন্ত্রণ শেখায়। কর্মজীবনে কেজিবিতেও সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিলেন পুতিন, প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় কেজিবির ট্রেনিংয়ের কার্যকারিতা প্রশ্নাতীত। সোভিয়েত-উত্তর যুগে পুতিন কাজ করেছেন এফএসবির প্রধান হিসেবে, সেখানেও ছিল সুনির্দিষ্ট পদসোপান। এভাবেই পুতিনের মধ্যে নিয়ন্ত্রণের ধারণা প্রতিষ্ঠা লাভ করে, পরবর্তীতে যেটি পুতিনইজমের আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

শৃঙ্খলা

ভ্লাদিমির পুতিন তার কর্মজীবনের বড় একটা অংশই কাটিয়েছেন আমলাতন্ত্রে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমেই তার প্রকৃত রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়, শুরু হয় পাবলিক অফিস সামলানো। রাজনৈতিক দায়িত্বে এসেও পুতিন তার অর্ধশতাব্দীর জীবনে শেখা শৃঙ্খলার দীক্ষা ভুলে যাননি। ফেডারেল সিকিউরিটি ব্যুরোর চিফ হিসেবে তিনি যেমন স্থিতিশীলতা আর শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবেও চেয়েছেন স্থিতিশীলতা আর শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে। স্থিতিশীলতা আর শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা থেকেই পুতিন রাশিয়ানদের কাছে নিজেকে তৈরি করেছেন এক অভিভাবকসুলভ চরিত্র হিসেবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, এমন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেন পুতিন।

স্থিতিশীলতা আর শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন পুতিন; Image Source: Atlantic Council.

শৃঙ্খলার প্রতি পুতিনের প্রাধান্যই তাকে বিপ্লবের বিরোধিতাকারী হিসেবে গড়ে তুলেছে। পুতিন মনে করেন, বিপ্লব স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে না। বরং, বিপ্লব প্রভাবিত হয় বিভিন্ন ধরনের স্বার্থগোষ্ঠী দ্বারা, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপের মতো বাইরের শক্তি দ্বারা। ২০০১ সালে স্টেট অব দ্য নেশন বক্তব্যে পুতিন নব্বইয়ের দশকের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সমাপ্তি টানতে আহবান জানান, আহবান জানান শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য বিপ্লবের সমাপ্তি টানার। উল্লেখ্য, নব্বইয়ের দশকে রাশিয়াতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকাশ শুরু হয়।

২০১৪ সালে কিয়েভে গণতন্ত্রপন্থীরা যে গণঅভ্যুত্থান ঘটায়, পুতিন সেটি দেখেন ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবিত রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে। পূর্ব ইউরোপে হওয়া রঙিন বিপ্লবকেও পুতিন দেখেন বাইরের শক্তির প্রভাবিত রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে। অর্থাৎ, পুতিনিস্টরা বিপ্লবকে অপছন্দ করেন, দেখেন স্থিতিশীলতা আর শৃঙ্খলা নষ্ট করার প্রভাবক হিসেবে।

একত্ববাদ

পুতিনইজম প্রথাগত সাংস্কৃতিক মূল্যবোধগুলোকে গুরুত্ব দেয়, গুরুত্ব দেয় সমাজের রক্ষণশীল অংশের মূল্যবোধকে। গর্ভপাতের অধিকার, সমলিঙ্গের বিবাহের মতো যেসব লিবারেল মূল্যবোধের বিকাশ পশ্চিমা দেশগুলোতে ঘটেছেম পুতিনইজ, সেগুলোকে সমাজের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি মনে করে। পুতিনইজম বরং বিশ্বাস করে একক মূল্যবোধ আর রাজনৈতিক সম্মিলনে। ১৯৯৯ সালের আগস্টে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালনকালে ডুমায় ভাষণ দেওয়ার সময় ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, রাষ্ট্রের সকল বিভাগের ক্ষমতা একীভূত করা উচিত যাতে রাশিয়ার ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়, অর্জিত হয় সকল রাশিয়ানের অন্তর্ভুক্তি।

Image Source: Cristian Science Monitor.

সাধারণত, কর্তৃত্ববাদী আর গণতান্ত্রিক, সব ঘরানার শাসকই জাতীয় ঐক্যের উপর গুরুত্ব দেন, গুরুত্ব দেন জাতীয় লক্ষ্যের উপর। ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভের পর বারাক ওবামা যেমন বলেছিলেন, কোনো রক্ষণশীল আমেরিকা নেই, নেই কোনো উদার আমেরিকা। রয়েছে কেবলমাত্র ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা। ২০২০ সালের নির্বাচনে জিতে একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছিলেন জো বাইডেনও। বলেছিলেন, আমেরিকাতে কোনো ব্লু স্টেট নেই, নেই কোনো রেড স্টেট। রয়েছে কেবল ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা।

কিন্তু, পুতিনের জাতীয় ঐক্যের ধারণা ভিন্ন। পুতিন জাতীয় ঐক্য বলতে এমন একটি রাজনৈতিক কাঠামোকে বোঝান, যেখানে নির্বাচনের ফলাফল থাকবে আমলাতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে, বিরোধী দলগুলো রাজনৈতিক বিরোধিতা করার চেয়ে থাকবে সরকারের সহযোগী আর সমর্থক হয়ে। সেখানে পুতিনের বিরোধিতা মানেই অভ্যন্তরীণ সমস্যা তৈরি করা, স্থিতিশীলতা নষ্ট করা। আর স্থিতিশীলতা যারা নষ্ট করে, পুতিন তাদেরকে দেখেন রাষ্ট্রের প্রতি বিশ্বাসঘাতক হিসেবে।

Image Source: The Japan Times.

২০১৫ সালের এক বক্তব্যে পুতিন অভ্যন্তরীণ ভিন্নমতের ব্যাপারে বলেছিলেন, বিদ্রোহ, বিপ্লব আর গৃহযুদ্ধগুলো আমাদের বুঝিয়ে দেয়, অভ্যন্তরীণ ভিন্নমত রাশিয়ার জন্য কতটা ক্ষতিকর। কেবলমাত্র নাগরিকদের মধ্যে ঐক্য আর সামাজিক চুক্তিই রাশিয়ানদের সাফল্যের দিকে নিয়ে যেতে পারে, রাশিয়ার স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে পারে, মোকাবেলা করতে পারে শক্তিশালী আর দুর্দমনীয় শত্রুকে। অর্থাৎ, পুতিনইজম এমন একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে ভিন্নমতের চেয়ে একত্ববাদই মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।

আনুগত্য

পুতিন সবসময় তার বন্ধুদের বন্ধু। বন্ধুত্ব পুতিনের একইসাথে শক্তিশালী আর দুর্বল জায়গা। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে কৈশোর পার করছিলেন পুতিন, কিশোরদের গ্রুপ নিয়ে চলতেন লেনিনগ্রাদে। কিশোরদের এসব গ্রুপে আনুগত্যকে গুরুত্ব দেয়া হতো, গুরুত্ব দেয়া হতো প্রয়োজনে বন্ধুদের পাশে দাঁড়ানোর ব্যাপারেও। কিশোর বয়সে গ্রুপ করে চলার সময়ে পুতিন আনুগত্যের দীক্ষা নেন, সেই আনুগত্যের চর্চা ছিল কেজিবিতে চাকরির সময়ও। পুতিন নিজেকে দেখতেন কেজিবির একজন অনুগত কর্মকর্তা হিসেবে, আনুগত্যের সাথে জড়িয়ে ছিল সম্মানের প্রশ্নও।

ছোটবেলা থেকেই আনুগত্যের দীক্ষা নেন পুতিন; Image Source: detiknews

কেজিবি-উত্তর জীবনেও পুতিন যে আনুগত্যের চর্চা অব্যাহত রেখেছিলেন, তার প্রমাণ পাওয়া যায় ১৯৯৬ সালের এক ঘটনায়। সেন্ট পিটার্সবার্গের মেয়র নির্বাচিত হয়ে ভ্লাদিমির ইকোভলেভ ভ্লাদিমির পুতিনকে মেয়রের অফিসে একটি চাকরির প্রস্তাব দেন। ভ্লাদিমিদ পুতিন আর ভ্লাদিমির ইকোভলেভ, দুজনেই সেন্ট পিটার্সবার্গের সাবেক মেয়র আনাতোলি সবচাকের অধীনে চাকরি করতেন। ভ্লাদিমির ইকোভলেভ যখন সবচাকের বিরুদ্ধে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী হন, পুতিন সেটিকে দেখেছিলেন সবচাকের প্রতি ইকোভলেভের বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে। তিনি তাই চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, “বিশ্বাসঘাতকতা করে মৃত্যুর চেয়ে আনুগত্যের মৃত্যু অনেক সম্মানের।”  

শাসক হিসেবে পুতিন আনুগত্যের চর্চা অব্যাহত রেখেছেন, পুতিনইজমের কেন্দ্রীয় মূল্যবোধ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আনুগত্যের প্রথা। পুতিনের কাছে একই দলে কাজ করা বিশ্বাসঘাতকদের জন্য কোনো ক্ষমা নেই, ক্ষমা নেই রাশিয়ার জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করা ব্যক্তিদেরও। রাশিয়ার রাজনৈতিক কাঠামোতে তাই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, “ও কার অনুগত?” ২০০৮ সালে পুতিন যখন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন, তখন প্রেসিডেন্ট পদে বসান অনুগত মেদভেদেভকে, যাতে তিনি আবার প্রেসিডেন্ট পদে ফিরে আসতে পারেন।

আনুগত্যের প্রশ্নে পুতিন আপোষহীন; Image Source: Vox.

সময়ের সাথে পুতিনের আনুগত্যের ধারায় বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। ২০০০ সাল পর্যন্ত পুতিন নিজে আনুগত্য দেখিয়েছেন তার বসদের প্রতি, ২০১৫ সাল পর্যন্ত আনুগত্য নিয়েছেন নিজের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের কাছ থেকে। আনুগত্যের বিনিময়ে দিয়েছেন অর্থনৈতিক স্বার্থ আদায়ের সুযোগ, দিয়েছেন সরকারি দায়িত্ব। ২০১৫ সালের পরে পুতিন তার নিজের একান্ত অনুগতদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন, বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োগ দিচ্ছেন সাবেক সহকারী আর নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের। তবে, আনুগত্য পুতিনইজমের কেন্দ্রীয় মূল্যবোধ হিসেবেই থাকবে সামনের দিনগুলোতেও।

শক্তিশালী প্রতিচ্ছবি

উইনস্টন চার্চিল রাশিয়ানদের ব্যাপারে নিজের একটি মূল্যায়ন দিয়েছিলেন গত শতাব্দীতে। রাশিয়ানরা শক্তিশালী মানুষকে শ্রদ্ধা করে, অপছন্দ করে দুর্বল মানুষকে। বিশেষত, সামরিক ক্ষেত্রে দুর্বলতা রাশিয়ানরা ঘৃণার চোখে দেখে, দেখে অসম্মানের দৃষ্টিতে। রাশিয়ানদের শক্তিশালী মানুষদের পছন্দ করার প্রভাব রয়েছে পুতিনইজমে, পুতিন নিজেকে সবসময়ই উপস্থাপন করতে চেয়েছেন একজন শক্তিশালী শাসক হিসেবে।

রাশিয়ানরা শক্তিশালী মানুষকে শ্রদ্ধা করে; Image Source: The Moscow Times.

নিজেকে শক্তিশালী শাসক হিসেবে উপস্থাপনের তাড়নায় পুতিন এখনও জুডো চর্চার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন। গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে তার ফাইটার জেট চালানোর ছবি, ঘোড়ার উপরে বসে শিকার করার ছবি, স্নাইপার পরীক্ষা করার ছবি প্রভৃতি। কখনো পুতিন যোগ দিয়েছেন কিশোরদের বাইকার গ্যাংয়ের সাথে। আবার, নিজের দৃষ্টিতে জাতীয় বিশ্বাসঘাতকদের বিভিন্নভাবে শাস্তি দিয়েছেন পুতিন, কঠোরহস্তে দমন করেছেন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ভিন্নমতকে। অর্থাৎ, নিজেকে শক্তিশালী শাসক হিসেবে তুলে ধরার সব চেষ্টাই করেছেন পুতিন।

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে থাকা পুতিনিস্ট শাসকেরাও নিজেদের শক্তিশালী শাসকের প্রতিচ্ছবি গড়ে তোলে, নিজেদেরকে প্রমাণ করে রাষ্ট্রের সকল সমস্যার সমাধান হিসেবে। রাষ্ট্র আর পুতিনিস্ট শাসকেরা তখন একে অন্যের সমার্থক হয়ে ওঠেন।

This article is written in Bangla about the code of Putinism. All the necessary links are hyperlinked inside.

Featured Image: Mikhail Klimentyev, Sputnik, Kremlin Pool Photo via AP

Related Articles