Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বিশ্বজুড়ে প্রচলিত অদ্ভুত কিছু কূটনীতি

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়ন, পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখা, স্বার্থরক্ষার বা প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টায় গোটা দুনিয়ার প্রায় সব দেশই জোর দেয় কূটনীতির উপর। কূটনীতির জটিল মারপ্যাঁচ শুধুমাত্র রাষ্ট্রদূত বা রাষ্ট্রপ্রধানদের আলোচনা বা সফরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। রাষ্ট্রের অপরিহার্য এই বিভাগে মানুষ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে বিভিন্ন প্রাণী, খাবার, খেলাধুলা, হুমকি, ঋণ-ফাঁদ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইত্যাদি। উদ্ভট মনে হলেও সত্যি যে, কূটনৈতিক কৌশলে ব্যবহৃত হয়ে আসছে নানা রকমের কৌশল, যা গতানুগতিক ধারার বাইরে। এমন কিছু কূটনীতির কৌশল নিয়েই আজকের আয়োজন।

পাণ্ডা কূটনীতি

প্রায় অর্ধ শতাব্দীর বেশি সময় ধরে অন্যান্য দেশের সাথে সম্পর্কোন্নয়ন বা উন্নয়নের প্রথম ধাপ হিসেবে চীন পাণ্ডা ব্যবহার করে আসছে। ১৯৪১ সালে একজোড়া পাণ্ডা প্রথমবারের মতো উপহার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া হয়। ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বিখ্যাত পাণ্ডা চীন শুধুমাত্র বন্ধুত্ব ও শুভেচ্ছা উপহার হিসেবেই ব্যবহার করত। এরপর থেকে পাণ্ডা একেবারে দিয়ে দেওয়া বন্ধ করে দেয় চীন। এর পরিবর্তে তারা চালু করে লোন বা ধার দেওয়ার পদ্ধতি। চীনের বাইরে চিড়িয়াখানায় তাই যত পাণ্ডা আছে, প্রায় সবই চীনের। চীনের দেওয়া পাণ্ডা থেকে যদি বাচ্চা জন্ম নেয়, এমনকি যদি তা চীনের বাইরেও হয়, তা-ও সেই জন্ম নেওয়া বাচ্চাও চীনের মালিকাধীন

চীনের কূটনীতিতে পাণ্ডার ভূমিকা অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী; Image Source: washingtonpost.com

তবে, সাম্প্রতিক সময়ে পাণ্ডা কূটনীতি ভিন্ন এক ধারায় প্রবেশ করেছে। দেখা গেছে, যখনই চীনের কাছ থেকে অন্য দেশ পাণ্ডা গ্রহণ করেছে, এরপর কাছাকাছি সময়ে কোনো না কোনো চুক্তি সম্পন্ন বা কূটনৈতিক সম্পর্কের অগ্রগতিতে পরিবর্তন এসেছে। যেমন- ২০১১ সালে চীনের কাছ কয়েকটি পাণ্ডা পাওয়ার পরপরই স্কটল্যান্ডের সাথে চীনের ২.৬ বিলিয়ন পাউন্ডের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়! একইসাথে অবশ্য চীনে স্কটল্যান্ডের রপ্তানিও বিগত পাঁচ বছরের তুলনায় দ্বিগুণ আকার লাভ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, লোনে চীনের কাছ থেকে পাণ্ডা নেওয়ার পর, চীনের কাছে কানাডা, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ইউরেনিয়াম বিক্রির চুক্তি করেছে। ২০৫০ সালের মধ্যে পরমাণু সক্ষমতা আরও বৃদ্ধির জন্য চীন ইউরেনিয়ামের মজুদ বৃদ্ধিতে বিশেষ মনোযোগী। এমনকি, ২০১১ সালে চীনের ‘চিরশত্রু’ জাপানও পাণ্ডা পেয়েছে এবং এই লেনদেনের পর দুই দেশই আশা করেছে যে, দ্বীপ নিয়ে বিরোধের জের ধরে তিক্ত সম্পর্কে উন্নয়ন সাধন হবে।

গানবোট কূটনীতি

গানবোট কূটনীতি হলো একরকম, সামরিক আগ্রাসনের ভয়ভীতি দেখানো বা অপেক্ষাকৃত বেশি দুর্বল প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে যুদ্ধ এড়িয়ে সুবিধা আদায় করে নেওয়ার একটি মাধ্যম। এটি মূলত সমুদ্রপথে সংশ্লিষ্ট দেশটির সীমানার আশেপাশে বিভিন্ন যুদ্ধজাহাজ ও নৌবহর পাঠিয়ে চাপে রাখার একটি কৌশল। মূলত দুর্বল ও ছোট দেশগুলোর বিপরীতে এ ধরনের সামরিক শক্তি প্রদর্শন ও আগ্রাসন সম্ভব। উনিশ ও বিশ শতকে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক সামরিক শক্তিধর দেশ এই ধরনের আচরণের মাধ্যমে নিজেদের চাহিদা পূরণের চেষ্টা করেছে।

নৌপথে যুদ্ধ জাহাজ পাঠানোর মাধ্যমে গানবোট কূটনীতি ব্যবহার করে অনেক শক্তিশালী দেশ; Image Source: vestnikkavkaza.net

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট হাইতি, পানামা, কলম্বিয়া এবং নিকারাগুয়ার বিরুদ্ধে এই গানবোট কূটনীতি ব্যবহার করেছিলেন। এমনকি শীতল যুদ্ধের সময়েও দেশটি লাতিন আমেরিকার বেশ কিছু দেশের বিপক্ষে এ ধরনের আগ্রাসন প্রদর্শন করেছিল। তাছাড়া, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়েও পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গানবোট কূটনীতির আশ্রয় নিয়েছিল আমাদের বিপক্ষে, শেষপর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল সেই হীন চেষ্টা।

হাতি কূটনীতি

হাতি উপহার দেওয়ার মাধ্যমে সম্পর্কোন্নয়ন ও স্থাপনের কাজটি শুধুমাত্র করে থাকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা। সাধারণত বন্ধুত্বের নিদর্শন ও গভীর সম্পর্কের প্রতীক হিসেবে শ্রীলঙ্কা বিভিন্ন দেশকে হাতি উপহার হিসেবে দেয়।

শ্রীলঙ্কার কূটনীতিতে হাতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; Image Source: monkeysandmountains.com

২০১০ সালে দক্ষিণ কোরিয়াকে ২টি প্রাপ্ত বয়স্ক হাতি দেয় দেশটি, যেগুলোর একটি পুরুষ ও অন্যটি মেয়ে হাতি ছিল। তাছাড়া জাপান সফরে প্রেসিডেন্ট রাজাপাক্ষে ২টি বাচ্চা হাতি উপহার দেন জাপান সরকারকে। শ্রীলঙ্কার কাছে হাতি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, দেশটি দাবি করে, তারা শুধু ঐসব দেশকেই হাতি দেয়, যাদের তারা বিশেষ বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করে।

ঋণ-ফাঁদ কূটনীতি

বর্তমানে এই ঋণ-ফাঁদের কূটনৈতিক কৌশল চীন এতটাই ‘শিল্পের’ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে যে, অনেক দেশই এখন তাদের কাছ থেকে যেকোনো ধরনের ঋণ নিতে ভয় পায়। ঋণের ফাঁদে অবশ্য তুলনামূলক দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোই বেশি পড়ে, যেখানে শাসকের ‘ফাঁপা’ উন্নয়নের বুলি ও সাময়িক উন্নয়নের জোয়ার বেশি দেখানো হয়। চীন মূলত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন দেশকে ঋণ দিয়ে থাকে এবং উন্নয়নের নামে ঋণ নিতে উৎসাহিতও করে দেশটি। গরীব বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ঋণ অকাতরে দিতে থাকে চীন, এমনকি পূর্বের ঋণ শোধ না হলেও তারা কোনো কার্পণ্য করে না নতুন করে ঋণ দিতে। এই সুবিধা অবশ্য নির্দিষ্ট একটি সময় পর্যন্ত চলে। এরপর যখন ঋণের পরিমাণ এমন একটা পর্যায়ে চলে যায় যে, ঐ দেশ আর তা পরিশোধ করার মতো অবস্থায় থাকে না, ঠিক তখনই চীনের আসল রূপ বেরিয়ে আসে, তৈরি হয় ঋণ-ফাঁদ এবং আদায় করে নেওয়া হয় বিভিন্ন সুবিধা ও অন্যায্য দাবি!

চীনের ঋণ-ফাঁদে আক্রান্ত হয়েছে শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশ; Image Source: Illustration by Andrew Rae/nytimes.com

চীনের ঋণের ফাঁদে পড়ে, ২০১১ সালে তাজিকিস্তান বাধ্য হয়েছে চীনের সাথে বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের দাবি ছেড়ে দিতে। এই ঋণ-ফাঁদের সবচেয়ে বড় শিকার শ্রীলঙ্কা। হাম্বানটোটা সমুদ্র বন্দর নির্মাণের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি চীনের কাছ থেকে ১ বিলিয়ন ডলার নিয়েছিল কোনো শর্ত ছাড়াই। শেষপর্যন্ত সমুদ্র বন্দরটি থেকে পরিকল্পনামাফিক আয় না আসায় এবং বিশাল এই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায়, বিনিময়ে ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাছে বন্দরটি লিজ দিতে বাধ্য হয় শ্রীলঙ্কা।

চীনের এই কৌশল ধরতে পেরে অনেক দেশই তাদের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ জানিয়েছিলেন, তিনি চীনের ২০ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন, কারণ তিনি চান না তার দেশ চীনের উপনিবেশে পরিণত হোক। চীনের কাছে ফিজি ৫০০ মিলিয়ন ডলার এবং টোংগা ১৬০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ ঋণী। চীনের পাওনা এই অর্থ টোংগা পরিশোধ করতে পারবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে এবং বেইজিংয়ের কূটনৈতিক চাপে বিরক্ত হয়ে টোংগার প্রধানমন্ত্রী একসময় বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, চীনের কাছ থেকে যেন প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলো কোনো ঋণ না নেয়।

কোয়ালা কূটনীতি

নাদুসনুদুস কোয়ালা অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রাণী, যাদের শুধুমাত্র এই দেশটিতেই পাওয়া যায়। তাই চীনের পাণ্ডার মতো অস্ট্রেলিয়ার কূটনীতিতেও বড় ভূমিকা রেখে চলছে এই প্রাণীগুলো। অস্ট্রেলিয়ার কাছে এই কোয়ালা কূটনীতির গুরুত্ব এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোয়ালা সংক্রান্ত একটি ৬০০ পৃষ্ঠার নির্দেশনা তৈরি করেছে। যেসব দেশ কোয়ালা গ্রহণ করেছে অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে, সেসব দেশ কীভাবে এই কোয়ালাদের লালন পালন করবে তার বর্ণনা রয়েছে নির্দেশনায়।

চীনের মতো অস্ট্রেলিয়াও তাদের আঞ্চলিক প্রাণী কোয়ালা ব্যবহার করে কূটনীতির জন্য; Image Source: imgorta.pw

২০১৪ সালের জি২০ অধিবেশনে কোয়ালা প্রদর্শন করেছিল অস্ট্রেলিয়া, যেখানে ওবামা ও পুতিনের মতো নেতারা এই প্রাণীর সাথে ছবি তুলেছিলেন। তাছাড়া, বন্ধু দেশ জাপান ও সিঙ্গাপুরকে কোয়ালা সরবরাহ করেছে অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য কোয়ালার পেছনে অস্ট্রেলিয়া সরকারের ব্যয় নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে। লেবার পার্টি ২০১৬ সালে অভিযোগ তুলেছিল, সরকার ক্ষমতায় আসার পর কোয়ালার পেছনে প্রায় ৪,০০,০০০ ডলার ব্যয় করেছে। উল্লেখ্য, শুরুতে সিঙ্গাপুরে কোয়ালা পাঠাতে অস্ট্রেলিয়ার ব্যয় হয়েছিল ১,৩৩,০০০ ডলার এবং জি২০ অধিবেশনে কোয়ালার জন্য ইউক্যালিপটাস পাতা সরবরাহ করতে খরচ হয়েছিল ২৪,০০০ ডলার।

পিংপং কূটনীতি

বিশ্ব রাজনীতিতে পিংপং কূটনীতি অত্যন্ত প্রভাব বিস্তারকারী একটি ঘটনা ছিল, যার মাধ্যমে বিশ্ব দেখেছিল এক অভূতপূর্ব কূটনৈতিক সফলতা। পূর্বের সরকারকে উৎখাতের পর, ১৯৪৯ সালে চীনের শাসনভার কমিউনিস্ট সরকারের অধীনে চলে আসলে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সবধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় চীনের। এই অবস্থা বিদ্যমান থাকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত! পরিস্থিতি পরিবর্তনের হাওয়া লাগে জাপানে অনুষ্ঠিত বিশ্ব টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপের মধ্য দিয়ে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের টেবিল টেনিস দলকে আমন্ত্রণ জানায় চীনের দলটি। শুরুতে অবশ্য কূটনৈতিক সফলতার উদ্দেশ্য নিয়ে এই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, তবে ক্রমেই দুই দেশই বুঝতে পারে সম্পর্ক স্থাপনে দারুণ একটি সুযোগ এসেছে সামনে।  

পিংপং খেলার মাধ্যমেই দীর্ঘদিন পর যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছিল চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে; Image Source: bbc.com

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট অনুমোদন দিলে দেশটির টেবিল টেনিস দল চীন ভ্রমণে আসে এবং টেবিল টেনিস খেলে যায়। এরপরই, দুই দেশের সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে এবং কূটনৈতিক দিক দিয়ে যোগাযোগ শুরু হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট হেনরি কিসিঞ্জার চীন সফরে আসেন এবং চীনা দলও যুক্তরাষ্ট্রের আমন্ত্রণে টেবিল টেনিস বা পিংপং খেলতে সফর করেছিলেন উত্তর আমেরিকার দেশটিতে। এরই মাধ্যমে প্রায় দুই যুগ পর নতুন করে শুরু হয় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক যোগাযোগ

রন্ধন সংক্রান্ত কূটনীতি বা গ্যাস্ট্রোডিপ্লোম্যাসি

মানুষের মন জয় করার অন্যতম সহজ উপায় যে খাবার, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। সাধারণের জন্য তো বটেই, অন্য দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও এই খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। রন্ধন বা খাদ্য সংক্রান্ত কূটনীতি অবশ্যই পুরোপুরি একটি দেশের সংস্কৃতির সাথে জড়িত এবং ভিন্নতা ও স্বাদের মাধ্যমে জয় করে নিতে পারে ভিনদেশিদের মনও। ঠিক এই ব্যাপারটিকেই পুঁজি করে গ্যাস্ট্রোডিপ্লোম্যাসি পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা।

গ্যাস্ট্রোডিপ্লোম্যাসি বিশ্ব রাজনীতির একটি অপরিহার্য অংশ; Image Source: npr.org

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেন এত বেশি থাই, কোরিয়ান খাবার জনপ্রিয়? ভেবে দেখেছেন কখনও? এই জনপ্রিয়তার অন্যতম একটি কারণ এই রন্ধন সংক্রান্ত কূটনীতি বা গ্যাস্ট্রোডিপ্লোম্যাসি। অভিনব এই কূটনৈতিক কৌশলের চর্চা সবচেয়ে বেশি হয় যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে এবং এই কূটনীতিতে এগিয়ে আছে থাইল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলো। যদিও এই কৌশল নতুন কিছু নয়, প্রাচীন রোমে এই কূটনীতির প্রচলন ছিল। তখন শত্রুদের খাবারের দাওয়াত দিয়ে সমস্যা সমাধানের একটি চেষ্টা চালানো হতো। 

২০০২ সালে থাইল্যান্ড গ্যাস্ট্রোডিপ্লোম্যাসি সংক্রান্ত একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। তৎকালীন সময়ে গোটা বিশ্বে থাই রেস্টুরেন্টের সংখ্যা ছিল ৫,৫০০টি, কিন্তু থাই সরকারের লক্ষ্য ছিল ২০০৩ সালের মধ্যেই এই সংখ্যা ৮,০০০ এ উত্তীর্ণ করা। উদ্দেশ্য সহজ, থাই খাবারের মাধ্যমে দেশটির প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়িয়ে তোলা এবং অন্য দেশের সাথে সম্পর্ক আরও জোরদার করা।

স্টেডিয়াম কূটনীতি

পরাশক্তি হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় চীন সম্ভাব্য সব ধরনের পন্থা অবলম্বন করে চলেছে এবং বিপুল জনসংখ্যার দেশটির ব্যাপক প্রসারিত অর্থনৈতিক অবস্থার সুযোগ নিয়ে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুদ্ধবিধ্বস্ত ও অস্থিতিশীল আফ্রিকার অবকাঠামো উন্নয়নে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী চীন।

আফ্রিকায় প্রভাব বিস্তারে চীনের অন্যতম অস্ত্র অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সহায়তা; Image Source: worldpolicy.org

চীনের বিনিয়োগের আওতায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ জুড়ে গড়ে উঠেছে প্রায় ৫০টি স্টেডিয়াম। এসব স্টেডিয়াম হয় চীন নিজেদের অর্থায়নে সরাসরি নির্মাণ করে দিয়েছে, না হয় নির্মাণে ঋণ দিয়ে অর্থ সহায়তা করেছে। বিনিময়ে চীন বিভিন্ন সুবিধা আদায় করে নেয়, যেগুলোর ব্যাপারে খুব বেশি কিছু জানা যায় না। তবে আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশের সাথে চীনের সম্পর্ক যেমন গভীর হয়েছে, তেমনি বেড়েছে দেশটির প্রভাব। বিনিয়োগ স্বার্থ ও নাগরিকদের নিরাপত্তার কথা তুলে মহাদেশটির জিবুতিতে একটি সামরিক ঘাটিও স্থাপন করেছে দেশটি।

This article is in Bangla language. It is about some weird diplomacy used around the world. Necessary references have been hyperlinked.

Feature Image: ft.com

Related Articles