Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস আবিষ্কারকদের ঝুলিতে ২০২০ সালের চিকিৎসাবিদ্যার নোবেল

হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস, বিশ্বজুড়ে প্রায় সাত কোটির অধিক মানুষ দেহে এটি বাসা বেঁধে আছে, প্রতিবছর লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এই ভাইরাসে। ২০২০ সালের চিকিৎসাবিদ্যার নোবেল পুরষ্কারটি দেওয়া হয়েছে হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস আবিষ্কারে অবদান রাখার জন্য। হার্ভি জে অল্টার, মাইকেল হটন আর চার্লস এম রাইস এই তিন বিজ্ঞানীর কাজের গতিপথ নিয়েই আজকের লেখা।

হেপাটাইটিস কী? 

হেপাটাইটিস রোগটি মূলত মানবদেহের যকৃত বা লিভারের। গ্রীক ভাষায় ‘হেপার’ শব্দটি দিয়েই যকৃতকে বোঝানো হয়ে থাকে, সেই শব্দটি চিকিৎসার পরিভাষায় ‘হেপাটো’তে পরিণত হয়েছে। বাংলায় যকৃত শব্দটি প্রচলিত থাকলেও সাধারণ মানুষের কাছে লিভার হিসেবেই বেশি পরিচিত। হেপাটাইটিসের কারণে লিভারের সংক্রমণ বাংলাদেশেও খুব সাধারণ। সাধারণ সংক্রমণ থেকে শুরু করে ‘জণ্ডিস’, ‘লিভার সিরোসিস’ কিংবা ‘লিভার ক্যান্সারে’র পেছনে হেপাটাইটিস ভাইরাসগুলো দায়ী।

খাবার পরিপাক প্রক্রিয়ার লিভার যুক্ত হয়ে আছে জটিল নেটওয়ার্কে, এর ভূমিকা বলে শেষ করা কঠিন। এটি রোগাক্রান্ত হলে শরীরের অন্যান্য অংশেও মারাত্মক প্রভাব পড়ে। মূলত পাঁচটি ভিন্ন ভাইরাস দিয়ে রোগটি হয়ে থাকে। একেক ভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশ করে একেকভাবে, তবে সবার গন্তব্যই আমাদের লিভার।

পাঁচটি ভাইরাস দায়ী হেপাটাইটিসের পেছনে, ২০২০ সালের চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস আবিষ্কারের জন্য; Image source: dw.com

হেপাটাইটিসের দুই ক্যাটাগরি

চল্লিশের দশকে হেপাটাইটিসের পেছনের কুশীলব ভাইরাসদের আবিষ্কারের আগেই গবেষকরা রোগীদের পর্যবেক্ষণ করে তারা কীভাবে হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং পরিণতি কী হচ্ছে তার ভিত্তিতে রোগকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। সংক্রামক হেপাটাইটিস (ক্যাটাগরি-এ) আর সিরাম হেপাটাইটিস (ক্যাটাগরি-বি)।

প্রথম ক্যাটাগরিতে তাদের ফেলা হয় যারা খাদ্য এবং পানীয়ের মাধ্যমে আক্রান্ত হচ্ছে, এবং এই ক্যাটাগরির হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার পর লক্ষণ প্রকাশ পায় দ্রুত। লক্ষণ প্রকাশের পর রোগী সাধারণ রোগ ভুগে সেরে উঠেন এবং সারাজীবনের জন্যই সুরক্ষিত থাকেন, অর্থাৎ তার ক্যাটাগরি-এ তে আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আর নেই। দ্বিতীয় ক্যাটাগরিকে সিরাম-হেপাটাইটিস নামে শনাক্ত করা হয়ে থাকে। সিরাম শব্দের অর্থই রক্তরস, অর্থাৎ এই ক্যাটাগরির হেপাটাইটিসের সংক্রমণ হয়ে থাকে রক্তের মাধ্যমে। এ ক্যাটাগরির চেয়ে বি ক্যাটাগরির হেপাটাইটিস অনেক বেশি মারাত্মক। এবং আক্রান্ত হলে আস্তে আস্তে লিভারে সংক্রমণ করে ফলে যা লিভার ক্যান্সার বা লিভার বিকল করে দিতে পারে।

হেপাটাইটিস-বি আর সি, দুটি ভাইরাসই রক্তের পরিসঞ্চালনের মাধ্যমেই ছড়িয়ে থাকে প্রধানত; Image source: nobelprize.org

একের পর এক পাঁচটি ভাইরাস ভাইরাস আবিষ্কার হওয়ার পরে দেখা গেল, হেপাটাইটিস-এ ভাইরাস এবং হেপাটাইটিস-ই ভাইরাস দায়ী ‘ক্যাটাগরি-এ’র জন্য, আর ‘বি’, ‘সি’ প্রত্যক্ষভাবে এবং ‘ডি’ ভাইরাস পরোক্ষভাবে দায়ী ‘ক্যাটাগরি-বি’ এর পেছনে। এই তথ্যগুলোকে একত্র করতেই বিজ্ঞানীরা কাজ করে গেছেন দিন-রাত।

‘হেপাটাইটিস-বি’র সূত্র ধরেই কাজের শুরু

‘ক্যাটাগরি-এ’ হেপাটাইটিসের রহস্য আগেই উন্মোচন হয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে মলের মাধ্যমে এটি ছড়ায়। ভাইরাস যদি খাদ্যের সাথে কোনোভাবে কেউ গ্রহণ করে তাহলেই সে আক্রান্ত হবে। এই ধরনের সংক্রমণের ধরনকে বলা হয় ‘ফিকাল-ওরাল রুট’। কিন্তু ‘ক্যাটাগরি-বি’ নিয়ে কাজ তখনও বাকি।

ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে মার্কিন গবেষক বারুশ ব্লুমবার্গ কাজ শুরু করেন হেপাটাইটিস ‘ক্যাটাগরি-বি’ এর রহস্য উন্মোচনে। কারণ দেখা যাচ্ছে আপাত সুস্থ ব্যক্তির দেহ থেকে জরুরি প্রয়োজনে রক্ত সঞ্চালন করার ফলে আরেকজন ব্যক্তি হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন, অর্থাৎ আক্রমণের যোগসূত্র রক্ত। কিংবা এমন ঘটনাও দেখা গেছে একই সুঁই-সিরিঞ্জ বা অপারেশনের যন্ত্রপাতি থেকে কেউ কেউ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন হেপাটাইটিসে। দীর্ঘদিন এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করে ব্লুমবার্গ হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস আবিষ্কার করেন। তার আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করে হেপাটাইটিস-বি শনাক্ত করার ‘সেরোলজিক্যাল টেস্ট’ আবিষ্কৃত হয়, রিকম্বিন্যান্ট প্রোটিন নির্মিত টিকাও তৈরি করা হয়। ১৯৭৬ সালে গবেষক বারুশ ব্লুমবার্গ  তার এই কাজের জন্য নোবেল পুরষ্কারেও ভূষিত হয়েছিলেন। 

অর্থাৎ, এখন রক্তদাতার কাছ থেকে রক্ত নেওয়ার আগে এই টেস্ট করলে নিশ্চিত হওয়া যাবে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস রক্তে আছে কি না। এই পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার পরেও দেখা গেল হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের চিহ্ন রক্তে নেই, তবুও বি-ক্যাটাগরির হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। 

এ/বি কোনোটাই নেই, রহস্যের শুরু 

আপাতদৃষ্টিতে বি-ক্যাটাগরির লক্ষণ, কিন্তু সেরোলজিক্যাল টেস্টে ধরা পড়ছে না। বিজ্ঞানীরা ধরে নিয়েছিলেন বি-ক্যাটাগরির পিছনে নতুন এক বা একাধিক ভাইরাস থাকতে পারে। সেখান থেকেই এই রহস্যের যাত্রা শুরু। তরুণ হার্ভি জে অল্টার, আমেরিকার ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথের (NIH) ব্লাড ব্যাংকে কাজ শুরু করেন। রক্ত পরিসঞ্চালনের পর হেপাটাইটিস কীভাবে হতে পারে তা নিয়েই গবেষণা শুরু করেন তিনি।

হার্ভি অল্টার এবং তার সহযোগীদের দীর্ঘদিন গবেষণার পরে একে চিহ্নিত করা হয় ‘non-A, non-B hepatitis (NANBH)’ ভাইরাস হিসেবে, অর্থাৎ এই ভাইরাস যেহেতু আপাত সুস্থ ব্যক্তি থেকে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমেই ছড়াচ্ছে তাই কোনোভাবেই ‘এ ভাইরাস’ হতে পারে না, আবার সেরোলজিক্যাল টেস্টে যেহেতু ধরা পড়ছে না তাহলে ‘বি’ ও হতে পারে না। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথসহ নানা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা প্রচলিত যত প্রক্রিয়া আছে তা ব্যবহার করে ভাইরাসটিকে আলাদা করতে পারছিলেন না।

মাইকেল হটনের কাজের শুরু 

১০ বছরের বেশি সময় ধরে বিজ্ঞানীদের কাছে তখনো ধোঁয়াশা হয়ে আছে প্রত্যাশিত NANBH, তরুণ মাইকেল হটন তখন কাজ করেন Chiron Corporation-এ। তিনি যখন দেখলেন প্রচলিত পদ্ধতি কাজ করছে না, তিনি শুরু করলেন নতুনভাবে। ভাইরাসের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল (ডিএনএ/আরএনএ) খুঁজে বের করতে চেষ্টা শুরু করেন তিনি, কাজ করা হয় ‘কমপ্লিমেন্টারি ডিএনএ লাইব্রেরি’র মাধ্যমে। যেগুলোর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল আক্রান্ত শিম্পাঞ্জী থেকে।  

সেখান থেকে পোষকের লিভারের ডিএনএ বাদ দিয়ে শুধু ভাইরাসের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল আলাদা করাই হয় প্রধান বাধা। দীর্ঘ পরীক্ষা নিরীক্ষার পর সেই বাধা অতিক্রম করে ‘হেপাটাইটিস-সি’ ভাইরাসের জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালকে শনাক্ত করা হয়। এটি ছিল ‘পজেটিভ স্ট্যান্ড আরএনএ’ ভাইরাস, নতুন এই ভাইরাসকে ফ্ল্যাভিভিরিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

মাইকেল হটন এবং তার দলের গবেষণায় আবিষ্কৃত হয় হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল; Image source: nobelprize.org

মাইকেল হটন ভাইরাস শনাক্ত করার পর, একে শনাক্ত করার জন্য একটি টেস্ট ‘ইম্যুনোএসে’ তৈরি করেন, যা দিয়ে রক্তদাতার শরীরে হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস আছে কি না শনাক্ত করা যায়। হার্ভি অল্টার যে কাজের সূচনা করেন তার আংশিক পরিপূর্ণতা পায় মাইকেল হটনের কাজের মধ্য দিয়েই। NANBH এবং হেপাটাইটিস-সি নামে যাকে সন্দেহ করা হচ্ছিলো দীর্ঘদিন ধরে তার মাঝে আপাত যোগসূত্র স্থাপিত হয়।

চার্লস রাইসের কাজ 

তবে বিজ্ঞানী এবং রক্ত পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই ধারণা করছিলেন যে, হেপাটাইটিস আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে কি ভাইরাস ব্যতীত অন্য কোনো উপাদান (Co-factor) থাকতে পারে কি না যার ফলেই এই রোগ হচ্ছে। অর্থাৎ, NANBH এর জন্য ভাইরাস সম্পূর্ণরূপে দায়ী কি না বিজ্ঞানীরা তা নিশ্চিত হতে পারছিলেন না। এর জন্য দরকার ভাইরাসকে আলাদা করে, একে গবেষণাগারে পর্যবেক্ষণ করে সুস্থ কোনো প্রাণীদেহে প্রবেশ করিয়ে দেখা। যদি দেখা যায় NANBH এবং নতুন শনাক্তকৃত ভাইরাসের লক্ষণের মাঝে মিল বিদ্যমান তাহলেই পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

কাজটি যত সহজ শোনা যায় ততটা সহজ নয়, কারণ ভাইরাসটির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল শনাক্ত করা গেলেও ভাইরাসটিকে আলাদা করে একে ল্যাবে প্রজনন করানো তখনও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে এই কাজ শুরু করেন বিজ্ঞানী চার্লস রাইস, টোকিওর ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার রিসার্চ ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানী কুনিতাদা শিমোতোহনো প্রায় একই কাজ শুরু করেছিলেন। চার্লস রাইসের দল গবেষণাগারেই এই ভাইরাসের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল বানালেন (জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ার্ড আরএনএ) এবং শিম্পাঞ্জীর লিভারে প্রবেশ করালেন।

হার্ভি জে অল্টার যে কাজ শুরু করেছিলেন তার পরিপূর্ণতা পায় মাইকেল হটন আর চার্লস রাইসের গবেষণার মধ্য দিয়ে; Image source: nobelprize.org

শুনে সহজ মনে হলেও এর জন্য চার্লস রাইসকে দীর্ঘ পরিশ্রম করতে হয়েছে, শেষপর্যন্ত রাইসের গবেষণা থেকে প্রমাণিত হয় ভাইরাস একাই কো-ফ্যাক্টর ছাড়াই এই হেপাটাইটিসের সংক্রমণের জন্য দায়ী। অর্থাৎ হার্ভি জে অল্টার, মাইকেল হটনের গবেষণার পরিপূর্ণতা পায় চার্লস রাইসের গবেষণার মাধ্যমে। তাদের কাজের উপর ভিত্তি করে হেপাটাইটিস-সি’র বিরুদ্ধে এন্টিভাইরাল ওষুধের ব্যবহার শুরু হয়। এই ওষুধগুলোর সমন্বয়কে সাধারণভাবে বলা হয়ে থাকে ‘Directly Acting Antivirals (DAA)’, এই এন্টিভাইরাল ওষুধগুলোর কারণে মানুষের দুর্দশা অনেকাংশে কমে এসেছে। তবে এই ওষুধের উচ্চমূল্যের কারণে অনেকের কাছেই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে হেপাটাইটিস-সি এর চিকিৎসা। 

এই তিনজনের গবেষণার উপর ভিত্তি করে বর্তমানে এন্টিভাইরাল ওষুধের ব্যবহার শুরু হয়েছে, যদিও উচ্চদামের কারণে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের নাগালের বাইরে সেই ওষুধ; Image source: nobelprize.org

নোবেলজয়ীদের কথা 

ড. হার্ভি জে অল্টারের জন্ম ১৯৩৫ সালে, নিউ ইয়র্কে বেড়ে ওঠা এই গবেষক রোচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ম্যারিল্যান্ডে অবস্থিত ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথের গবেষক হিসেবে কাজ করার সময়ে তিনি হেপাটাইটিস নিয়ে কাজ শুরু করেন। সেখানেই প্রথম তিনি হেপাটাইটিস আক্রান্তদের উপর গবেষণা করে NANBH নিয়ে প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ করেন।

ড. চার্লস রাইসের জন্ম ক্যালিফোর্নিয়ায়, ১৯৮১ সালে ক্যালটেক থেকে পিএচডি করেন এই গবেষক। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়, রকেফেলার এবং কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে কাজ করেছেন এই বিজ্ঞানী।  

ড. মাইকেল হটনের জন্ম ব্রিটেনে, ১৯৭৭ সালে কিংস কলেজ থেকে পিএইচডি করেন এই গবেষক। দীর্ঘ কর্মজীবনে বিভিন্ন গবেষণাগারে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন এই গবেষক। বর্তমানে কানাডার আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের লি কা শিং এপ্লাইড ভাইরোলজি ইন্সটিটিউটের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কুই-লিম চো, জর্জ কো এবং ড্যানিয়েল ব্র্যাডলির সাথে যৌথভাবে ১৯৮৯ সালে তিনি হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস আবিষ্কারের প্রাথমিক কাজ করেন। তিনি হেপাটাইটিস-ডি ভাইরাসেরও যৌথ আবিষ্কারক।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে নোবেল ঘোষণা এবং অনুষ্ঠানসূচীতে এসেছে পরিবর্তন; Image source: nytimes.com

২০১৩ সালে মাইকেল হটনকে নির্বাচিত করা হয়েছিল ‘কানাডা গার্ডনার ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড’ বিজয়ী হিসেবে। কিন্তু তার সহ-গবেষকদের মনোনীত না করায় তিনি তা নিতে অসম্মতি জানান।

তাই নোবেল পুরষ্কারের বিজয়ী হিসেবে তার সহ-গবেষক কুই-লিম চো, জর্জ কো এবং ড্যানিয়েল ব্র্যাডলিকে বাদ দেওয়ায় তিনি নোবেল প্রত্যাখ্যান করবে কি না সেই প্রশ্ন উঠে আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাই তিনি তার সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন,

“নোবেল প্রত্যাখানের ব্যাপারটি খুবই দাম্ভিক আচরণ হয়ে যাবে।”

তবে এই নোবেল পুরষ্কারের পেছনে বন্ধু সহকর্মীদের ধন্যবাদ দিতে ভুলেননি। বর্তমানে তিনি তার সহকর্মীদের সাথে হেপাটাইটিস-সি’র টিকা নিয়ে কাজ করছেন। এন্টিভাইরাল ওষুধের উচ্চদামের কারণে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষ চিকিৎসা নিতে ব্যর্থ, তাই হেপাটাইটিস-সি’র টিকা আবিষ্কারে সক্ষম হলে তা বিশ্বজুড়ে হেপাটাইটিস-সি নির্মূলে একটি বিশাল পদক্ষেপ হবে। 

চার্লস রাইস এবং হার্ভি অল্টারও তাদের আলাপচারিতায় গুরুত্ব দিয়েছেন বৈজ্ঞানিক বিশ্বে সহযোগিতার ব্যাপারে। পাদপ্রদীপের বাইরে থাকা শত শত বিজ্ঞানীর দিন-রাত গবেষণাকে সম্মান জানাতে গিয়ে চার্লস রাইস বলেছেন,

“আমরা সহস্রের মাঝে কয়েকজন, আমি এই পুরষ্কার পেয়ে খানিকটা সম্মানিত এবং একইসাথে লজ্জিত। আজকের এই অর্জনের সাথে আরো অনেকেই যুক্ত হয়ে আছেন, তাদের জন্যেও দিনটি আনন্দের।” 

This article is about the Nobel Prize in Physiology or Medicine 2020, all the sources are hyperlinked in the main article. 

Featured image source: nobelprize.org

Related Articles