Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

স্কুল থেকেই ঝরে পড়া যে নারীর চোখে প্রথম ধরা পড়ে করোনাভাইরাস

বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে আজ কান পাতলে শুধু একটিই আতঙ্কের নাম শোনা যায়- ‘করোনাভাইরাস’। ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহান শহরে সর্বপ্রথম আবির্ভূত হয় নভেল করোনাভাইরাস বা সার্স কোভ-২। অবশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নাম দিয়েছে ‘কোভিড-১৯’। সেই দিন থেকে প্রায় সাড়ে চার মাসের ব্যবধানে করোনাভাইরাস গোত্রের সপ্তম প্রজাতির ভাইরাসটি ইতিমধ্যে প্রায় পুরো পৃথিবী ভ্রমণ করে ফেলেছে। মৃত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

নভেল করোনাভাইরাসের ত্রিমাত্রিক মডেল; Image source: wikimedia commons

অনেকটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য, যে করোনাভাইরাস আজ সকল জীবাণুবিদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে, তার আবিষ্কারক ছিলেন এমন এক নারী, যার বিদ্যার দৌড় স্কুলের গণ্ডিও পার করতে পারেনি! কে সেই নারী? কীভাবে তিনি অতি ক্ষুদ্র করোনাভাইরাসকে সর্বপ্রথম শনাক্ত করেছিলেন? প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই কীভাবে তিনি দৃশ্যপটে আসতে সক্ষম হন? সেসব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই আজকের এই লেখা।

পরিচয় এবং শিক্ষা জীবন

অদম্য ও প্রতিভাবান সেই নারীর নাম জুন ডালজিয়েল আলমেইডা। তিনি ১৯৩০ সালের ৫ অক্টোবর তৎকালীন স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের সময় তার নাম রাখা হয় জুন হার্ট। তার বাবা ছিলেন একজন বাস ড্রাইভার। গ্লাসগো শহরের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অ্যালেক্সান্দ্রা পার্কের নিকটে ভাড়া করা এক অ্যাপার্টমেন্টে কাটে তার শৈশব।

জুন ডালজিয়েল আলমেইডা; Image source: oxibuzz.com

ছাত্রী হিসেবে তিনি বেশ মেধাবীই ছিলেন। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া ছিল তার জীবনের একমাত্র স্বপ্ন। কিন্তু দারিদ্র্যের কাছে তার স্বপ্ন হেরে যায়। তার বাবার পক্ষে মেয়ের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দেয়া সম্ভব ছিল না। তাই মাত্র ১৬ বছর বয়সে যৎসামান্য লেখাপড়া করেই বিদ্যালয়ের পাট চুকিয়ে ফেলেন জুন

কর্মজীবনের সূত্রপাত

জীবিকার তাগিদে জুন ১৯৪৭ সালে গ্লাসগো রয়্যাল হাসপাতালে ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে যোগ দেন। তিনি সেখানে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে বিভিন্ন টিস্যুর নমুনা বিশ্লেষণের কাজ করতেন। 

বিয়ে ও গবেষণায় হাতেখড়ি

কর্মক্ষেত্রে আরও সাফল্যের আশায় তিনি লন্ডনে পাড়ি জমান এবং সেন্ট বারথেলোমেউ হাসপাতালে টেকনিশিয়ানের কাজে যোগ দেন। সেখানে এনরিক্স আলমেইডা নামক ভেনিজুয়েলার এক চিত্রশিল্পীর সাথে তার দেখা হয়। দুজন একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেন এবং ১৯৫৪ সালে বিয়েটাও সেরে নেন। এরপর ১৯৫৪ সালের শেষভাগে জুন তার স্বামী এবং সদ্য ভূমিষ্ট কন্যাকে নিয়ে কানাডার টরোন্টোতে চলে যান। সেখানে তিনি অন্টারিও ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের কৌশলী হিসেবে যোগদান করেন।

সেখানে তিনি মাইক্রোস্কোপ বিষয়ক যাবতীয় বিষয় নিয়ে কাজ করেন। এমনকি অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে পূর্বে অদেখা বিভিন্ন ভাইরাসের গঠন পর্যবেক্ষণের নতুন নতুন উপায় তিনি আবিষ্কার করেন। সেসব পর্যবেক্ষণ তিনি গবেষণাপত্র আকারে প্রকাশও করেন।

১৯৬৩ সালে অন্টারিও ক্যান্সার ইনস্টিটিটিউটে ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ নিয়ে কর্মরত জুন আলমেইডা; Image source: getty images

আণুবীক্ষণিক পর্যবেক্ষণের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন

আলমেইডার আবিষ্কারটি ছিল বেশ সরল। তবে জীবাণুবিদ্যার জগতে তার উদ্ভাবন এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসে।

আণুবীক্ষণিক কণা নিয়ে কাজ করার মূল সমস্যা হলো কোন জিনিসটা খুঁজতে হবে তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করা। ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ একটি নমুনার দিকে ইলেকট্রন বিম বা দ্রুতগতির ইলেকট্রন কণার স্রোত নিক্ষেপ করে। এরপর সেই নমুনার তলের সাথে ইলেকট্রনের মিথস্ক্রিয়াকে রেকর্ড করে রাখে। ইলেকট্রনের তরঙ্গদৈর্ঘ্য(১.২৩ ন্যানোমিটার) দৃশ্যমান আলোর (৪০০-৭০০ ন্যানোমিটার) চেয়ে অনেক ছোট হওয়ার কারণে বিজ্ঞানীরা এই মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে নমুনা তলের আরও সূক্ষ্ম ও নিখুঁত ছবি পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হন। কিন্তু এরপরেও সমস্যা থেকেই যায়। মাইক্রোস্কোপ থেকে পাওয়া ছবিতে ছোট ছোট বিন্দুর মতো অংশ নিয়ে গবেষকরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকেন। সেগুলো কি কোষ নাকি ভাইরাস না অন্য কিছু সেটা নিয়ে তারা একমত হতে পারছিলেন না।

এই সমস্যার সমাধানে কাজ শুরু করেন জুন আলমেইডা। তিনি অনুধাবন করেন, কোনো ভাইরাসকে সঠিকভাবে শনাক্ত করার জন্য সেই ভাইরাসে পূর্বে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির দেহের অ্যান্টিবডি ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ তিনি জানতেন, কোনো ভাইরাসের অ্যান্টিবডি তার প্রতিযোগী অ্যান্টিজেনকে ধ্বংসের জন্য তার দিকে ধাবিত হয়। তাই অ্যান্টিবডি আক্রমণের সময় শুধুমাত্র ভাইরাসের অ্যান্টিজেনের চারপাশেই সমবেত হয় এবং তার উপস্থিতি সহজেই মাইক্রোস্কোপে ধরা পড়ে। মোদ্দা কথায়, জুন অ্যান্টিবডির সাহায্য নিয়ে ভাইরাস শনাক্তের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। অনেকটা কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতো কাজ। এই পদ্ধতি আবিষ্কারের মাধ্যমে চিকিৎসকরা রোগীর দেহের ভাইরাসের সংক্রমণ পরীক্ষার জন্য ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের প্রচলন শুরু করে।

এই আবিষ্কারের মাধ্যমে আলমেইডারের সামনে সাফল্যের রাস্তা খুলে যায়। তিনি তার পদ্ধতি ব্যবহার করে বিভিন্ন ভাইরাস এবং এর পোষকদেহ খুঁজে পান। এর মধ্যে রুবেল্লা (Rubella) ভাইরাস উল্লেখযোগ্য। এই ভাইরাসের সংক্রমণে নারীদের গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। বিজ্ঞানীদের কাছে এটি ‘তিন দিনের হাম’ বা ‘Three Day Measles’ নামে সুপরিচিত। জীবাণুবিদেরা কয়েক দশক ধরে এই ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছিলেন। কিন্তু সেটি মাইক্রোস্কোপের নীচে প্রথমবারের মতো দেখেন জুন।

করোনাভাইরাস আবিষ্কার

জুনের বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে যুক্তরাজ্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেখানে তিনি ১৯৬৪ সালে লন্ডনের বিখ্যাত সেন্ট থমাস হসপিটাল মেডিকেল স্কুলে কাজ শুরু করেন। নামটা অনেকেই শুনে থাকতে পারেন। কারণ ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছিলেন।

লন্ডনে ফেরার পর তিনি উইল্টসশায়ারের সাধারণ সর্দি-কাশি বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডক্টর ডেভিড টাইরেলের সাথে যুগ্মভাবে গবেষণায় লেগে যান। টাইরেল মূলত জ্বর কিংবা সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীদের নাকের ভেতরের তরল পদার্থ নিয়ে পর্যবেক্ষণ করতেন। তার গবেষক দল সেই তরল পদার্থের নমুনা থেকে সাধারণ সর্দি-কাশি সৃষ্টিকারী বেশ কিছু ভাইরাস ল্যাবে তৈরি করতে সমর্থ হয়। কিন্তু কিছু ভাইরাস ছিল তাদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নমুনার নাম ‘B814’। ১৯৬০ সালে সারে প্রদেশের একটি বোর্ডিং স্কুলের এক ছাত্রের নাসারন্ধ্র থেকে তিনি এই তরল নমুনাটি সংগ্রহ করেন।

ডেভিড টাইরেল; Image Source: royalsocietypublishing.org

বিজ্ঞানীরা অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের দেহে নমুনাটি প্রয়োগ করে সর্দি-কাশির উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারলেন। কিন্তু নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ল্যাবে কোনো কোষের মাঝে ভাইরাসটির বিস্তার ঘটাতে ব্যর্থ হন। অথচ পরীক্ষাগারে তৈরিকৃত কৃত্রিম অঙ্গের মাঝে ভাইরাসটি দিব্যি বিস্তার ঘটিয়ে চলছে। বিষয়টি বেশ ভাবিয়ে তোলে টাইরেলকে। তখন তিনি ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে ভাইরাসটি দেখার শেষ একটা চেষ্টা করার চিন্তা করলেন। তিনি সেই নমুনাটি জুনের কাছে পাঠান। তবে এই পর্যবেক্ষণের বিষয়ে তিনি উচ্চাভিলাষী ছিলেন না। টাইরেল ২০০২ সালে প্রকাশিত তার নিজের লেখা ‘Cold Wars: The Fight Against the Common Cold’- বইটিতে এই নমুনাটির পরীক্ষার বিষয়ে লেখেন, “আমরা খুব বেশি আশাবাদী ছিলাম না। তবে এই চেষ্টাটুকু অন্তত যৌক্তিক ছিল।

আলমেইডার কাছে পরীক্ষণের জন্য খুব সীমিত উপকরণ ছিল। কিন্তু নিরলস পরিশ্রম এবং তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে তিনি যে ফলাফল বের করলেন তা টাইরেলের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে যায়। তিনি  ভাইরাসটি শনাক্ত এবং তার পরিষ্কার ছবি তোলার পাশাপাশি পূর্বে তার আবিষ্কৃত দুটি ভাইরাসের সাথে এর সাদৃশ্য খুঁজে পান। এর মাঝে একটি ছিল মুরগির বাচ্চার ব্রঙ্কাইটিস রোগের ভাইরাস। অপরটি হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত ইঁদুরের যকৃতে প্রদাহ সৃষ্টিকারী ভাইরাস। জুন এই দুটি বিষয়কে ভিত্তি করে একটি রিসার্চ পেপার লিখে ফেলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তার সেই গবেষণাপত্রটি গৃহীত হলো না।

পেপার রিভিউ কমিটির লোকেরা সাফ জানিয়ে দিল, এটা নতুন কোনো ভাইরাস নয়। সম্ভবত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসেরই নিম্ন রেজল্যুশনের ছবি। কিন্তু টাইরেলের নমুনাটি যে নতুন প্রজাতির ভাইরাসের সেই বিষয়ে আলমেইডা শতভাগ নিশ্চিত ছিলেন।  তিনি তাই দমে না গিয়ে পুনরায় গবেষণা চালাতে লাগলেন। ‘B814’ নমুনাটি নিয়ে তার লেখা গবেষণাপত্রটি ১৯৬৫ সালে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হয়। এর দুই বছর পরে জার্নাল অব জেনারেল ভাইরোলজিতে নমুনায় উল্লেখিত ভাইরাসটির প্রথম ছবি ছাপা হয়।

১৯৬৭ সালে জার্নাল অব জেনারেল ভাইরোলজিতে প্রকাশিত হিউম্যান করোনাভাইরাসের প্রথম আণুবীক্ষণিক ছবি

একদিন আলমেইডা, ড. টাইরেল এবং আলমেইডারের সুপারভাইজার ও সেন্ট থমাসের পরিচালক প্রফেসর টনি ওয়াটারসন তাদের গবেষণার ফলাফল নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছিলেন। হঠাৎ তারা খেয়াল করলেন, তাদের আবিষ্কৃত ভাইরাসটির এখনও কোনো নাম দেয়া হয়নি। যে-ই ভাবা সেই কাজ। তারা তিনজন এর নাম প্রদানের কাজে লেগে পড়লেন। শেষ পর্যন্ত ভাইরাসের ছবি পর্যবেক্ষণ করে এর দেহের চারদিকের বলয় বা মুকুটসদৃশ অংশের জন্য এর নাম রাখা হয় ‘করোনা’। কারণ ল্যাটিন ভাষায় ‘করোনা’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে ‘মুকুট’। এর মাধ্যমে  করোনাভাইরাসের আবিষ্কারক হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান জুন আলমেইডা।

শুধু তা-ই নয়, জীবাণুবিদ্যায় অনবদ্য অবদানের জন্য ১৯৬৪ সালে লন্ডনের পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিকেল স্কুল তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট অব সায়েন্স ডিগ্রী প্রদান করে।

করোনা পরবর্তী জীবন

কর্মজীবনের গোধূলিলগ্নে আলমেইডা ওয়েলকাম ইনস্টিটিউটে যোগ দেন। সেখানে কতিপয় ভাইরাস আবিষ্কারের জন্য তিনি পেটেন্টও পেয়েছিলেন। ওয়েলকাম ছাড়ার পর তিনি কিছুদিন ইয়োগা প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু আবিষ্কারের নেশা যার মাঝে রয়েছে তিনি কি আর গবেষণা থেকে দূরে থাকতে পারেন? তাই তিনি আবার কাজে যোগ দিলেন। তবে এবার আর গবেষক নয়, সেন্ট থমাসের ভাইরোলজি বিভাগের উপদেষ্টা হিসেবে। আশির দশকের শেষভাগে জীবাণুবিদেরা তার সহায়তায় এইডস রোগের জন্য দায়ী এইচআইভি ভাইরাসের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ছবি প্রকাশে সক্ষম হয়।

বিরল প্রতিভার অধিকারী স্বশিক্ষিত এই নারী ২০০৭ সালের ১ ডিসেম্বর ৭৭ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের বেক্সহিলে মৃত্যুবরণ করেন। আলমেইডার বর্ণিল কর্মজীবনের প্রশংসা করে তার শিক্ষানবিশ ইউনিভার্সিটি অব এবারডিনের ব্যাক্টেরিওলোজি বিভাগের এমিরেটাস অধ্যাপক হিউ পেনিংটন বলেন, “নিঃসন্দেহে তিনি তার সময়ের অন্যতম সেরা একজন স্কটিশ বিজ্ঞানী ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তিনি আজ বিস্মৃতপ্রায়।” দ্য হেরাল্ড পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি আরও বলেন, “ভাগ্যের নির্মম পরিহাস হলেও কোভিড-১৯ এর মহামারী তাণ্ডবের ফলশ্রুতিতে তার কাজের গুরুত্ব পুনরায় প্রতীয়মান হয়েছে।

তার কথাটা নিতান্তই অমূলক নয়। ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল  বিবিসি স্কটল্যান্ড নিউজে জুন আলমেইডাকে নিয়ে একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। সেখানে তাকে করোনাভাইরাসের আবিষ্কারক হিসেবে পূর্ণ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুর ১৩ বছর পরে হলেও তিনি তার প্রাপ্য সম্মানটা পেয়েছেন। গবেষক হতে হলে ভারি ডিগ্রী নয়, প্রবল ইচ্ছাশক্তি প্রয়োজন- এরই এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ ছিলেন জুন আলমেইডা। তিনি নিজে কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েননি। কিন্তু তার আবিষ্কৃত পন্থা অবলম্বন করে আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা গবেষণার মাধ্যমে তাদের স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করছে। ভাইরোলজিস্টরা এখনও কোনো ভাইরাসকে দ্রুততার সাথে সঠিকভাবে শনাক্তের জন্য তার দেখানো পদ্ধতি ব্যবহার করেন। একজন স্বশিক্ষিত গবেষকের জন্য এটিও একটি দুর্লভ অর্জন।

Related Articles