Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

পলিথিন, কাগজ নাকি কাপড়- কীসের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করবেন?

বিশ্বের অনেক দেশেই প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার হ্রাসের উদ্দেশ্যে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবুও আমাদের চারদিকে পলিথিনের ছড়াছড়ি। পলিথিন ও অন্যান্য প্লাস্টিক সামগ্রী পরিবেশের উপর যে বিরূপ প্রভাব ফেলে সে সম্পর্কে আমরা কম-বেশি সবাই অবগত। 

এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে পলিথিন ব্যাগের বিকল্প ব্যবহারের কথা বার বার উঠে এসেছে। অনেকেই প্লাস্টিকের ব্যাগের পরিবর্তে কাপড়, সুতা কিংবা কাগজের ব্যাগ ব্যবহার শুরু করেছেন। তবে কাগজের বা কাপড়ের তৈরি ব্যাগগুলো কি সত্যিই প্লাস্টিকের চেয়ে অধিক পরিবেশবান্ধব? 

Image source: iStock

বিশেষজ্ঞদের মতে, চারটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেতে পারে। সেগুলো হলো-

১. উৎপাদনের সময় ব্যাগ তৈরি করতে কত শক্তি ব্যবহার হয়?
২. ব্যাগ কতটা টেকসই? (অর্থাৎ এটি কতবার পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে?)
৩. রিসাইকেল করা কত সহজ?
৪. ফেলে দেওয়া হলে তা কত দ্রুত পঁচে যায় বা পরিবেশের সাথে মিশে যায়?

চলুন, আমরা বিভিন্ন ধরনের ব্যাগের মধ্যে তুলনা করার পূর্বে এগুলোর সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেই। 

প্লাস্টিক ব্যাগ 

শপিং ব্যাগ হিসেবে পলিথিন ব্যাগ সারা পৃথিবী জুড়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য উপাদান। আমরা জানি, সকল পলিথিন ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহৃত পদার্থ এক নয়। সেসবের মধ্যে বিভিন্ন ধরন রয়েছে এবং পরিবেশে সকল প্লাস্টিকের ক্ষতির মাত্রাও এক নয়। এগুলো ভিন্ন ভিন্ন উপাদান, যেমন- উচ্চ-ঘনত্বের পলিথিন (HDPE), নিম্ন-ঘনত্বের পলিথিন (LDPE) ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হবার কারণে এদের আকার ও আকৃতির মধ্যে তারতম্য দেখা যায়।

উচ্চ-ঘনত্বের পলিথিন ব্যাগ; Image Source : earthbits.com

আমাদের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা, তথাকথিত সুপারমার্কেট প্লাস্টিকের ব্যাগগুলোর অধিকাংশই উচ্চ-ঘনত্বের পলিথিন (HDPE) থেকে তৈরি। ২০১১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংস্থার এক গবেষণা অনুযায়ী, এইচডিপিই ব্যাগে কম কার্বন ফুটপ্রিন্ট রয়েছে। কিন্তু এখানে কার্বন ফুটপ্রিন্ট বলতে আসলে কী বোঝানো হয়েছে? এর অর্থ হলো এই ধরনের প্লাস্টিকের ব্যাগের উৎপাদন কাগজের ব্যাগ বা কাপড়ের তৈরি শপিং ব্যাগের চেয়ে কম কাঁচামাল নির্ভর। এগুলোর উৎপাদন খরচও কম। এছাড়াও, এগুলো যখন পুনঃব্যবহার করা হয়, তখন এতে কার্বন ফুটপ্রিন্ট আরও কমে যায়। 

এখন আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, প্লাস্টিকের ব্যাগ তো পরিবেশের জন্য খারাপ নয়, তাহলে কি এগুলো যত ইচ্ছা ব্যবহার করা যাবে? না, বিষয়টি এমন নয়। গবেষণাপত্রগুলোর ফলাফল শুধু কার্বন ফুটপ্রিন্টের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। কার্বন ফুটপ্রিন্টের বিষয়টি ব্যতীত অন্য সকল ক্ষেত্রের পরীক্ষায় এই ধরনের প্লাস্টিক ব্যাগের স্কোর খুব কম। এগুলোর মধ্যে উৎপাদনে পানির ব্যবহারের পরিমাণ, বায়ুমণ্ডলীয় অম্লতা বৃদ্ধি এবং জলাশয়ের ইউট্রোফিকেশনের মাত্রা ছিল খুব হতাশাজনক। মানবজীবন এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে যার প্রভাব ভয়াবহ। এই ধরনের প্লাস্টিক মানুষের স্বাস্থ্য, সংবেদনশীল বাস্তুসংস্থান, বন এবং জলাধারের অম্লকরণে প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি অধিক জলাশয়ের ইউট্রোফিকেশনের কারণে জলাশয়ে শৈবালের বৃদ্ধি এবং অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পেতে পারে।

এ ধরনের ব্যাগে উৎপাদনের পরে গড় কার্বন ফুটপ্রিন্টের স্তরগুলোর মান খারাপ হতে শুরু করে। তাই একটি ব্যাগকে সর্বোচ্চ কতবার পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে তা-ও আমাদের অবশ্যই জানতে হবে। 

নন-ওভেন পলিপ্রোপিলিন থেকে তৈরি অন্যান্য ব্যাগও রয়েছে যার প্রভাব পরিবেশের উপরে কিছুটা ভিন্ন। পলিপ্রোপিলিন প্লাস্টিকের একটি পলিমার যা পুনর্ব্যবহারযোগ্য, কিন্তু এতে অন্যান্য পণ্য বহন করার সময় এগুলো গলে যেতে পারে। প্রচলিত প্লাস্টিকের পরিবেশগত প্রভাবের কথা চিন্তা করে এই ব্যাগগুলো প্রায় ১০-১১ বার পুনরায় ব্যবহার করা দরকার। কিন্তু এগুলো যদি উৎপাদনের পর সরবরাহ করা এবং বর্জ্য নিষ্কাশনের সময় পরিবেশগত মান মেনে চলা না হয়, তবে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য বিকল্পগুলোর তুলনায় এদের স্থায়িত্বের স্কোর সত্যিই বেশ কমে যায়।

কাপড়ের ব্যাগ বা টোট ব্যাগ

কাপড়ের তৈরি ব্যাগ নিয়ে প্রচুর আলোচনা ও সমালোচনা রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, প্রচলিত সকল ক্যারিয়ার ব্যাগের মধ্যে এটি সর্বোত্তম পরিবেশ-বান্ধব। আবার অনেকেই এক্ষেত্রে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, এ ধরনের ব্যাগ উৎপাদনে কার্বন ফুটপ্রিন্ট অধিক থাকে যা পরিবেশের উপর অধিক চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম। তাহলে এগুলোর মধ্যে কোন বিবৃতিটি সঠিক?

কটনের তৈরি টোট ব্যাগ; Image Source : earthbits.com

প্রচলিত অন্যান্য ক্যারিয়ার ব্যাগের তুলনায় এগুলো সর্বাধিক দৃঢ় এবং টেকসই প্রকৃতির, তাই এগুলো একাধিকবার ব্যবহার করা যায়। কিন্তু জমি থেকে এটি উৎপাদনে ব্যবহৃত ফসলের চাষ থেকে শুরু করে তৈরি ব্যাগ পরিবহন পর্যন্ত অধিক পরিমাণ শক্তি ও অর্থ খরচ হয়। এটি উৎপাদনে যে কাঁচামাল অর্থাৎ ফসল ব্যবহার করা হয় তার মাত্র ৩৩ শতাংশ জমি থেকে কাটার পরে ব্যবহারযোগ্য থাকে। 

একইসাথে ওয়াশিং, ব্লিচিং, ডাইং, প্রিন্টিং এবং অন্যান্য প্রক্রিয়ায় প্রচুর পরিমাণে পানি এবং বিদ্যুৎ খরচ হয়। ড্যানিশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাগুলোতে বলা হয়েছে, সুতির টোট এবং কাপড়ের ব্যাগ তৈরিতে প্রচলিত সকল ব্যাগের তুলনায় অধিক শক্তি খরচ হয়। তাই এগুলো পরিবেশের উপর সর্বাধিক চাপ সৃষ্টি করে। তদতিরিক্ত, এগুলো পুনর্ব্যবহার করা খুব কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ। এমনকি ২০১৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত টেক্সটাইলের কেবলমাত্র ১৫.৩ শতাংশ পুনর্ব্যবহৃত হয়েছিল। 

জৈব কটন দিয়ে তৈরি ব্যাগ কীটনাশক ছাড়াই জন্মে, কিন্তু এটি পরিবেশের জন্য আরও খারাপ। যেহেতু জৈব কটনে ফলন প্রচলিত তুলার তুলনায় ৩০ শতাংশ কম, তাই প্রচলিত কটনের সমান পরিমাণ উৎপাদন করতে এদের ৩০ শতাংশ বেশি জল এবং জমি প্রয়োজন।

কাগজের ব্যাগ

কাগজের ব্যাগগুলো বেশ বিতর্কিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কাগজের ব্যাগের জনপ্রিয়তা রয়েছে, কিন্তু ১৯৭০ এর দশকে যুক্তরাজ্যের বাজারে কাগজ দিয়ে তৈরি ব্যাগের জনপ্রিয়তা কমে যায়। কারণ প্লাস্টিক ব্যাগকে আরও বেশি টেকসই উপাদান হিসেবে দেখা হত। যুক্তরাজ্যের এক সমীক্ষা অনুসারে, একটি কাগজের ব্যাগের পরিবেশগত ফুটপ্রিন্ট শোষণের উপর ভিত্তি করে কমপক্ষে চারবার পুনরায় ব্যবহার করা দরকার।

কাগজের জন্য ব্যাগ উৎপাদন করতে বেশি গাছ কেটে ফেলার দরকার হয়। কারণ কাগজের ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহৃত সকল উপাদান বন থেকে সংগ্রহ করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ১০ মিলিয়নের বেশি কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করা হয়, যার জন্য ১৪ মিলিয়ন গাছ কাটা দরকার হয়। আর বৃক্ষ নিধনের ফলে পরিবেশে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে যায়। 

এই ব্যাগ তৈরির ফলে শুধু যে কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধি পায় তা নয়, বরং এর উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় পানি খরচ এবং কাঁচামাল বৃদ্ধির জন্য সার ব্যবহারও এর খরচের তালিকাভুক্ত। নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড অ্যাসেম্বলির গবেষণাপত্র অনুযায়ী, প্রক্রিয়া অনুসারে কাগজের ব্যাগের উৎপাদন প্রক্রিয়াটি একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির তুলনায় উচ্চ ঘনত্বের বিষাক্ত রাসায়নিক উৎপাদন করে। এছাড়াও এর কাঁচামাল উৎপাদন বৃদ্ধিতে গাছ চাষের জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এগুলো অম্লীয় বৃষ্টিপাত সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন জলাশয়ের পানির সাথে মিশে পানি দূষণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম।

কাগজের ব্যাগ; Image Source : earthbits.com

একটি কাগজের ব্যাগ তৈরির ক্ষেত্রে, একটি প্লাস্টিকের ক্যারিয়ার ব্যাগের তুলনায় প্রায় ৪ গুণ বেশি পানি লাগে। অন্যদিকে, কাগজের ব্যাগগুলো অন্যান্য ধরনের ব্যাগের চেয়ে কম টেকসই। সুতরাং গ্রাহকদের যদি ঘন ঘন তাদের কাগজের ব্যাগগুলো পরিবর্তন করতে হয় তবে তা পরিবেশের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করবে। 

কাগজের ব্যাগের স্থায়িত্ব কম হাওয়া সত্ত্বেও এর একটি সুবিধা হলো এটি প্লাস্টিকের চেয়ে অনেক দ্রুত পচে যায়। এছাড়াও কাগজের ব্যাগ ব্যাপকভাবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য। অন্যদিকে, প্লাস্টিকের ব্যাগগুলো পচতে যেতে প্রায় ৪০০-১,০০০ বছর পর্যন্ত সময়ের প্রয়োজন হয়। ২০১১ সালে প্রকাশিত নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড অ্যাসেম্বলির প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র বলছে, “একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির তুলনায় একটি কাগজের ব্যাগ তৈরি করতে চারগুণ বেশি শক্তি খরচ হয়।” আর কাগজের ব্যাগের পরিবহন খরচও তুলনামূলক অনেক বেশি। কারণ কাগজের ব্যাগের ওজন প্লাস্টিকের ব্যাগের চেয়ে বেশি। তাই এর পরিবহনের জন্য আরও বেশি শক্তির প্রয়োজন। 

যদিও এটি পলিথিন বা কাপড়ের মতো প্রতিরোধী না, তবে এর সম্পর্কে ইতিবাচক বিষয়টি হচ্ছে এটি সহজেই মাটির সাথে মিশে যায়। তাই এগুলোকে বাগানে সার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কাগজ এছাড়াও ব্যাপকভাবে পুনর্ব্যবহৃত হয়, যা অবশ্যই এর ব্যবহারের পক্ষে একটি যুক্তি হতে পারে।

কোনটি ব্যবহার করবেন

গবেষণায় দেখা গেছে, একটি প্লাস্টিকের ব্যাগের বিপরীতে প্রতিটি কাগজের ব্যাগ কমপক্ষে তিনবার পুনঃব্যবহার করা দরকার। এখানে আরেকটি লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে- একটি প্লাস্টিকের ব্যাগের বিপরীতে কাপড়ের তৈরি একটি ব্যাগ সর্বাধিক সংখ্যক ১৩১ বার পুনর্ব্যবহার ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া কাপড়ের ব্যাগ উৎপাদনে যে ফসল ব্যবহৃত হয় তার উৎপাদনে নিবিড় পরিচর্যার দরকার হয়, যা এর উৎপাদন খরচ বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।

Image Source: bbc.com

কাগজের ব্যাগ প্লাস্টিকের ব্যাগের মতো টেকসই নয়, এর ছিড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি, বিশেষত যদি এগুলো কোনোভাবে পানিতে ভিজে যায়। কম স্থায়িত্বের কারণে কাগজের তৈরি একটি ব্যাগ নিয়মিত প্রয়োজনীয় সংখ্যকবার পুনরায় ব্যবহার করা সম্ভব নয়। যদিও এটি কাগজের ব্যাগটি কীভাবে ব্যবহার করা হবে তার উপর নির্ভর করে, তবুও এটি প্লাস্টিক ব্যাগের ন্যায় অনেকবার ব্যবহার করা যাবে না। অন্যদিকে, কাপড়ের ব্যাগ উৎপাদন সবচেয়ে বেশি কার্বন-নিবিড় হওয়া সত্ত্বেও এটি সর্বাধিক টেকসই। 

নর্থহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অধ্যাপক মার্গারেট বেটসের মতে, পরিবেশের ওপর ব্যবহার্য সকল ধরনের ব্যাগের প্রভাব হ্রাস করার মূল চাবিকাঠি হলো সেগুলো যেভাবেই তৈরি করা হোক না কেন, তাদের যথাসম্ভব পুনরায় ব্যবহার নিশ্চিত করা।

যেকোনো একটি ব্যাগের অধিক ব্যবহার, তা কাগজ, প্লাস্টিক বা কাপড়ের তৈরি ব্যাগ যা-ই হোক না কেন, পরিবেশে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে বাধ্য। কারণ এতে পরিবেশের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়। তাই একটি ব্যাগ যা দিয়েই তৈরি হোক না কেন এর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ফলে একবার ব্যবহার করা যায় এমন ব্যাগের পরিবর্তে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য যেকোনো ব্যাগ ব্যবহার করুন।

 

Related Articles