Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ইতিহাসের সেরা ফুটবল দলের সন্ধানে

ফুটবল একটি দলীয় খেলা। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের দ্বারা একজন খেলোয়াড় নিজেকে যতটাই বাকি দশজনের চেয়ে আলাদা করুন না কেন, শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য থাকে দলের উন্নতিই। প্রশ্ন হচ্ছে- এই উন্নতির নির্ধারক কি কেবলই শিরোপা জেতা? কেবল শিরোপা জেতার কারণেই কি কোনো দল মহাকালের বিচারে স্মরণীয় হয়ে থাকে?

বিশ্বকাপ কিংবা পুরো ফুটবল ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা দল হচ্ছে পুসকাসের হাঙ্গেরি, যারা কিনা বড় ধরনের কোনো প্রতিযোগীতায় কেবলমাত্র ১টি বিশ্বকাপে (১৯৫৪) রানার্স আপ হয়েছিল। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় ধরনের কোনো শিরোপা না জেতার কারণেও তারা ফুটবল বোদ্ধাদের কাছে যুগে যুগে মুগ্ধতার কারণ হয়ে রয়েছে। শিরোপা জয় অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এর বাইরেও আরো কয়েকটি বিষয় থাকে। এই কারণেই অনেক শিরোপাজয়ী দলের চেয়েও বিশেষজ্ঞদের কাছে অনেক শিরোপাহীন কিছু দলও এগিয়ে থাকে।  

তাহলে সেরা দল হবার জন্য বিবেচ্য বিষয় কোনগুলো? তাছাড়া, শ্রেষ্ঠত্ব বিচারের ক্ষেত্রে ক্লাব দল আর জাতীয় দলের মাঝে কোনটাকে এগিয়ে রাখা হবে?

সেটা জানার আগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্বাচিত সেরা দলের কয়েকটি তালিকার দিকে একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।

শুধুমাত্র ক্লাব ফুটবল দলকে নিয়ে ২০১৭ এর ১৩ এপ্রিল Paste Magazine এর তালিকা-

Paste magazine এর চোখে ইতিহাসের সেরা ১০ ক্লাব দল

ক্লাব এবং জাতীয় দলকে বিবেচনায় নিয়ে ২০১৮ এর ৩১ আগস্ট How they play এর করা তালিকা-  

How the play এর দৃষ্টিতে ইতিহাসের সেরা ১০ টি ফুটবল দল

 ক্লাব এবং জাতীয় দলকে বিবেচনায় নিয়ে Sportskeeda এর করা তালিকা, বিশ্বকাপ ২০১৮ এর সময় প্রকাশিত- 

Sportskeeda এর দৃষ্টিতে ইতিহাসের সেরা ১০টি ফুটবল দল

ক্লাব এবং জাতীয় দলকে বিবেচনায় নিয়ে ২০১৬ সালে করা ফোর ফোর টু’র একটি তালিকা-

Four Four Two এর দৃষ্টিতে ইতিহাসের সেরা ১০টি ফুটবল দল

ক্লাব এবং জাতীয় দলকে বিবেচনায় নিয়ে ২০০৯ সালে ডেইলি মেইলের করা তালিকা-

Daily Mail এর দৃষ্টিতে ইতিহাসের সেরা ১০টি ফুটবল দল

ক্লাব এবং জাতীয় দলকে বিবেচনায় নিয়ে ওয়ান ফুটবলের তৈরিকৃত তালিকা-

One football এর দৃষ্টিতে ইতিহাসের সেরা ১০টি ফুটবল দল

শুধুমাত্র জাতীয় দলকে বিবেচনায় নিয়ে ২০১৩ সালের নভেম্বরে Bleacher Report এর তৈরি তালিকা-

Bleacher Report এর দৃষ্টিতে কেবলমাত্র জাতীয় দল বিবেচনায় সেরা ১০ ফুটবল দল

এই তালিকাগুলোকে নিখুঁত ভাবার কোনো প্রয়োজন নেই। তাছাড়া তালিকাগুলো ঠিক কোন পদ্ধতিতে করা হয়েছে সেই সম্পর্কেও পুরোপুরি বলা হয়নি। হতে পারে কোনো পত্রিকায় ব্যক্তিগতভাবে একজন ফিচার রাইটার তালিকা তৈরি করেছেন, দর্শকদের ভোটে হয়েছে কিংবা বিশেষজ্ঞদের ভোটে। তবে এই তালিকাগুলো থেকে সবচেয়ে সেরা দল সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া গেলেও সেরাদের সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া সম্ভব। 

উপরে তালিকা রয়েছে মোট ৭টি। এর মাঝে একটি শুধু ক্লাব ফুটবলকে বিবেচনায় নিয়ে, একটি শুধু জাতীয় দলকে বিবেচনায় নিয়ে এবং পাঁচটি ক্লাব ও জাতীয় দল দুটোই বিবেচনায় নিয়ে। তালিকাগুলো থেকে যে বিষয়গুলো চোখে পড়ে সেই সম্পর্কে কিছু বলা যাক। 

  • ক্লাব বিবেচনা করা হয়েছে এমন ৬টি তালিকার ৪টিতেই সেরা ১০ এ ক্রুয়েফের আয়াক্স জায়গা পেয়েছে। তিনটিতে ১ নম্বরে, আর একটিতে ৫ নম্বরে।
  • মেসির বার্সেলোনা সেরা ১০ এ সুযোগ পেয়েছে ৫টি তালিকায়। অবস্থান ছিল ৪র্থ, ২য়, ১০ম, ৫ম ও ৫ম। যে তালিকায় বাদ পড়েছে সেটা করা হয়েছিল ২০০৯ সালে। অর্থাৎ তারা সফলতা পাবার আগেই।
  • ডি স্টেফেনোর রিয়াল মাদ্রিদ সুযোগ পেয়েছে সেরা ১০ এর ৬টিতেই; অবস্থান ৩য়, ৫ম, ৫ম, ৪র্থ, ৩য় ও ৪র্থ।
  • পেলের সান্তোস সেরা ১০ এ সুযোগ পেয়েছে ২টি তালিকায়। দুটিতেই ৯ম অবস্থানে। আরেকটিতে রয়েছে ১২তম অবস্থানে।
  • জাতীয় দল বিবেচনা করা হয়েছে এমন ৬টি তালিকায় পেলের ‘৭০ এর ব্রাজিল সেরা ১০ এ সুযোগ পেয়েছে ৬টিতেই। অবস্থান ছিল ৩য়, ২য়, ২য়, ১ম, ২য় ও ১ম।
  • পেলের ১৯৫৮-৬২ এর ব্রাজিল সুযোগ পেয়েছে ২টি তালিকায়। অবস্থান ছিল ৪র্থ ও ৩য়।
  • জাতীয় দল বিবেচনা করা হয়েছে এমন ৬টি তালিকার সেরা ১০ এ ৬টিতেই জায়গা পেয়েছে জাভি ইনিয়েস্তার স্পেন। অবস্থান ছিল ১ম, ১ম, ৭ম, ১০ম, ৭ম ও ২য়।
  • জাতীয় দল বিবেচনা করা হয়েছে এমন ৬টি তালিকার সেরা ১০ এ ৪টিতে জায়গা পেয়েছে পুসকাসের হাঙ্গেরি। অবস্থান ছিল ১০ম, ৮ম, ১০ম ও ৮ম।
  • জাতীয় দল বিবেচিত হয়েছে এমন ৬টি তালিকার সেরা ১০ এ ২টিতে সুযোগ পেয়েছে ক্রুয়েফের নেদারল্যান্ড, যার মাঝে একটিতে বিবেচ্য বিষয় ছিল কেবলই জাতীয় দল। অবস্থান ছিল ৯ম ও ৭ম। এছাড়া ফোর ফোর টু’র তালিকায় নেদারল্যান্ডের অবস্থান ছিল ১৯ নম্বরে।

এখন প্রাপ্ত তথ্যগুলোকে একটু বিশ্লেষণ করে সেরা হবার কারণগুলো বের করার চেষ্টা করা যাক।

ক্লাব কিংবা জাতীয় দল যেটাই বিবেচনায় নেওয়া হোক না কেন, সব ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে সেরা দল হবার ক্ষেত্রে সফলতা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আয়াক্স টানা তিনবারের (১৯৭১-৭৩) চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দল, রিয়াল মাদ্রিদ টানা পাঁচবারের (১৯৫৬-৬০) চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী, ব্রাজিল (১৯৭০) বিশ্বকাপ জয়ী দল, স্পেন ইউরো-বিশ্বকাপ-ইউরো (২০০৮-২০১২) জয়ী দল। তবে জয়ী হবার পরেও কিন্তু সবসময় সেরা দলের তালিকায় অনেকে আসতে পারে না। উদাহরণ দেখতে চাইলে একেবারে সাম্প্রতিক সময়ের রিয়াল মাদ্রিদকেই দেখা যেতে পারে। টানা তিনবার এবং সর্বশেষ পাঁচবারের মাঝে চারবারই চ্যাম্পিয়ন হওয়া রিয়াল মাদ্রিদকে কিন্তু কোনো তালিকাতেই খুঁজে পাওয়া যায় না।    

টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার পরেও সেরার তালিকায় পিছিয়ে থাকে মাদ্রিদ; Image Source: aFootball.net

তবে মাদ্রিদ আসলে গ্রেট দলে ঢুকতে পারবে কি না সেটার জন্য আরেকটু সময় নেওয়া উচিত। এখানে যে তালিকাগুলো দেওয়া হয়েছে তার বেশিরভাগই ২০১৮ সাল কিংবা তার আগে করা। যেহেতু মাদ্রিদের হ্যাটট্রিক শিরোপার বিষয়টি বিবেচনায় আসেনি, কাজেই সেরার তালিকায় তাদের না আসাটাই স্বাভাবিক।

স্টেফানোর মাদ্রিদ কেবল শিরোপাই জেতেনি, বরং প্রতিপক্ষকে অবলীলায় গুড়িয়ে দিয়েছে; Image Source: as.com

তবে ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল যখন পেস্ট ম্যাগাজিন তালিকা তৈরি করেছে, ততদিনে ৩ বছরে ২টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা মাদ্রিদ জিতেছিল। কিন্তু তারপরেও তারা সেরা ২০ এ আসতে পারেনি। সেটা নয়তো বাদ দেওয়া গেল। কিন্তু ২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট হাউ দে প্লে’র দ্বারা যে তালিকা করা হয়েছিল, সেখানেও মাদ্রিদ নেই। ততদিনে মাদ্রিদ হ্যাটট্রিক এবং ৫ বছরে ৪টি ইউসিএল শিরোপা জিতেছে। এমনকি ২০১৭ সালে এক বছরে সম্ভাব্য ৬টি শিরোপার পাঁচটিতেই তারা জয় পেয়েছিল। এরপরেও তারা সেরা ১০ এ আসতে পারেনি। এর কারণটা কী?

সেরা দল হবার জন্য জয়ের সাথে সাথে প্রাধান্য বিস্তারের বিষয়টিও থাকতে হয়। মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতলেও ঘরোয়া লিগ কিংবা ঘরোয়া কাপে তাদের পারফর্মেন্স হতাশাজনকই ছিল। এছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে স্বল্প ব্যবধানে জয় অথবা কিছু কিছু ক্ষেত্রে রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তও তাদের জয়গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

সেরার তালিকায় পেছনে থাকার অন্যতম প্রধান আরেকটি কারণ হচ্ছে খেলার ধরন। বেশিরভাগ দর্শকই ফলনির্ভর বিরক্তিকর খেলা দেখার চাইতে আনন্দদায়ক খেলা দেখতে পছন্দ করে। সেই আনন্দদানের বিষয়টি অনুপস্থিত ছিল মাদ্রিদের খেলায়- এটা অনেক মাদ্রিদ ফ্যানও স্বীকার করে। অবশ্য প্রতিযোগীতায় ক্রমশ পিছিয়ে পড়া একটি দলের একটা মুহূর্তে জয়টাই কাম্য হয়ে দাঁড়ায়। জিনেদিন জিদানের লক্ষ্য ছিল তাই দলকে প্রথমে জয়ের ধারায় ফিরিয়ে আনা।

জাতীয় দলগুলোর মাঝে এই শতাব্দীতে চমক দেখিয়েছে জাভি ইনিয়েস্তার স্পেন; Image Source: AS English – Diario AS 

তবে কেবলমাত্র খেলার ধরনের কারণে তারা সেরার তালিকা থেকে পিছিয়ে পড়েনি। মনোমুগ্ধকর খেলার সাথে সাথে সফল, এমন কিছু দলকেও কিন্তু সেরার তালিকায় পাওয়া যায় না। উদাহরণ হিসেবে দেখানো যায় ১৯৯৪-২০০২ সালের ব্রাজিলকে। এই সময়কালে তিন বিশ্বকাপের তিনটিরই ফাইনাল খেলেছে ব্রাজিল, এর মাঝে দুবার চ্যাম্পিয়ন। এছাড়া কোপা আমেরিকার ৪টি আসরের মাঝে ফাইনাল খেলেছে তিনটি, যার মাঝে দুটিতে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করেছে। তিনটি কনফেডারেশন কাপের আসরের ২টি ফাইনাল খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে একবার। সবমিলিয়ে ১০টি মর্যাদা সম্পন্ন আসরের ৫টিতেই চ্যাম্পিয়ন এবং ৩টিতে রানার্স আপ হয় ব্রাজিল।  

যদি দোষ ধরতেই হয়, তাহলে এই ব্রাজিলের খুঁত ছিল কেবল একটি জায়গাতেই। বেশিরভাগ সফল দলই তাদের সময়ের দ্বিতীয় সেরা দলকেও মোটামুটি হেসে খেলে হারিয়েছে। কিন্তু ব্রাজিলের জয়টা ঠিক তেমন ছিল না। উপরন্তু ১৯৯৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে বেশ বাজেভাবে ফ্রান্সের কাছে হেরে গিয়েছে। এছাড়া ২০০২ বিশ্বকাপেও সেই সময়ের সেরা দল ফ্রান্স এবং আর্জেন্টিনার মুখোমুখি তাদেরকে হতে হয়নি। যদিও সেটা ব্রাজিলের দোষ ছিল না। ফ্রান্স এবং আর্জেন্টিনা টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট হওয়া সত্ত্বেও নিজেদের ব্যর্থতায় প্রথম পর্ব থেকেই বাদ পড়ে যায়। তবে সবচেয়ে সেরা দলের মুখোমুখি না হওয়ার কারণে তারা কিছুটা ভাগ্যবান সেটাও স্বীকার করতে হবে।

এর অর্থ হচ্ছে, সেরা দল হতে হলে নিজেদের খেলায় একটি স্বাতন্ত্র্য রাখার পাশাপাশি প্রতিপক্ষ দলকে গুঁড়িয়ে দেবার একটা ক্ষমতাও থাকতে হবে। রিয়াল মাদ্রিদ এবং ব্রাজিল সফল হলেও তাদের মাঝে সেরা হবার জন্য কিছু বৈশিষ্ট্য অনুপস্থিত ছিল।

ঠিক এই জায়গাগুলোতেই এগিয়ে ছিল পেপ গার্দিওলার বার্সেলোনা (২০০৮-১১)। ইতিহাসের একমাত্র ক্লাব হিসেবে এক বছরে সম্ভাব্য ৬টি শিরোপা জয়, টানা ৩ মৌসুমে লিগ জয় (২০০৯-১১), এল ক্লাসিকোতে প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদকে বাজেভাবে হারানো, ৩ বছরে ২টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়– এসব সফলতা ছাড়া বার্সেলোনার খেলার ধরনও মনোমুগ্ধকর ছিল। টিকিটাকার সেই ছন্দ বিশ্ব ফুটবলে রাজত্বও করেছে বহুদিন।

এই শতাব্দীতে ক্লাবগুলোর মধ্যে বার্সেলোনা টিকিটাকা দিয়ে জাদু দেখিয়েছে; Image Source: Football’s Pollemma

সেরার তালিকায় থাকা স্পেন কিংবা ব্রাজিল দলকে নিয়েও একই কথা বলা যায়। স্পেনও টিকিটাকার মাধ্যমে একটা বড় সময় বিশ্ব ফুটবলে রাজত্ব করে গিয়েছে এবং একইসাথে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে ইউরো-বিশ্বকাপ-ইউরো জয় করার কীর্তি গড়তে পেরেছে। ১৯৭০ এর ব্রাজিলও আধিপত্য বিস্তার করেই বিশ্বকাপ জিতেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম দল হিসেবে টুর্নামেন্টের প্রতিটি ম্যাচ জিতেই বিশ্বকাপ জিতে নেয় তারা। এটা এমন এক কীর্তি, যা ভাঙার সুযোগ কোনো দলের নেই, কেবলমাত্র স্পর্শ করা সম্ভব। ২০০২ সালে সেই কীর্তি স্পর্শ করলো আরেক ব্রাজিল। (পেনাল্টিতে জয় পাওয়া ম্যাচগুলো অফিসিয়ালি ড্র হিসেবে বিবেচিত হয়)।

বেশিরভাগ তালিকাতেই সেরার প্রথম তিনে থাকা একমাত্র দল পেলের ১৯৭০ এর ব্রাজিল; Image Source: Sportsnet

ডি স্টেফানোর রিয়াল মাদ্রিদের টানা পাঁচবার (১৯৫৬-৬০) চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ই বুঝিয়ে দেয়, সেই সময় কতটা দাপুটে ছিল তাদের পারফর্মেন্স। এছাড়া স্টেফানো আর পুসকাসের খেলোয়াড়ি সৌন্দর্যের কথাও আলাদাভাবে উল্লেখ করতে হবে। আয়াক্সের কথাও ভুলে গেলে চলবে না। ১৯৭১-৭৩ পর্যন্ত টানা তিন মৌসুম তারা জিতেছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা। এই সময় তারা দুটো ঘরোয়া লিগ আর দুটো ঘরোয়া কাপও জিতেছিল। একইসাথে রাইনাস মিশেলের টোটাল ফুটবলের ঝলক দিয়ে পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল। খেলোয়াড়ি সৌন্দর্যের পাশাপাশি প্রতিপক্ষের উপর যথেষ্ট প্রাধান্যও বিস্তার করেছিল। ১৯৭১-৭২ এর লিগ জিতেছে ২য় দলের চেয়ে ৮ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে। এছাড়া এই মৌসুমে তারা গোল করেছিল ১০৪টি, যেখানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফেইনুর্দ করেছিল ৭৩টি।

টোটাল ফুটবল দিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল ক্রুয়েফের আয়াক্স; Image Source: WordPress.com

টোটাল ফুটবল দিয়ে আয়াক্স বিশ্ব ফুটবলে সর্বোচ্চ সফলতা পেলেও একই ট্যাকটিক্স এবং প্রায় একই দল নিয়ে খেলা নেদারল্যান্ড দল কিন্তু সর্বোচ্চ সফলতা পায়নি। নেদারল্যান্ডের সেই দল ১৯৭৪ আর ১৯৭৮ সালে বিশ্বকাপে ফাইনাল খেললেও দুই আসরেই স্বাগতিক দলের কাছে পরাজিত হয়। এছাড়া ১৯৭২ এর ইউরোর আসরেও তারা তৃতীয় হয়। কিন্তু এরপরেও তারা বিশ্বফুটবলে স্মরণীয় তাদের খেলার ধারার কারণেই।

বিশেষজ্ঞদের তালিকা দেখে বোঝা যাচ্ছে, তালিকার উপর দিকে থাকার জন্য সফলতা পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও কেবলমাত্র সফলতা দিয়ে সবার মন জয় করা সম্ভব নয়। এর পাশাপাশি প্রয়োজন প্রতিপক্ষের উপর প্রাধান্য বিস্তার করে জয় এবং একইসাথে খেলার নিজস্ব একটি ধারা সৃষ্টি করা।

আর সব ক’টি বৈশিষ্ট্য পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে ব্রাজিল (১৯৭০), স্পেন (২০০৮-১২), ডি স্টেফেনোর রিয়াল মাদ্রিদ (১৯৫৬-৬০) এবং বার্সেলোনাই (২০০৯-২০১১)। এই কারণেই সেরার তালিকার প্রতিটিতেই বেশ উপরের দিকেই তাদের অবস্থান থাকে।

জয় পাওয়ার সাথে সাথে দর্শকদেরকেও তারা আনন্দ দিয়ে গিয়েছে। এই কারণেই যুগের পর যুগ তারা স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।

আসল চ্যাম্পিয়নদের  বৈশিষ্ট্য তো এটাই!

This article is in Bangla language. The article is about the best football team of the history. References are hyperlinked inside.

Feature Image: Goal.com

1. The 20 Greatest Ever Soccer Teams - Paste Magazine 

2. The 10 greatest football teams of all time - Daily Mail

3. The 50 best football teams ever - Four Four Two

4. 10 Greatest National Teams in World Football History - Bleacher Report

5. Top Ten Best Football Teams of All Time - Sportskeeda

6. Top 10 Best Football Teams of All Time - How They Play

Related Articles