Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

জাপ হেইঙ্কেস: ‘ট্রফিহীন চ্যাম্পিয়ন কোচ’ থেকে সর্বজয়ী হবার উপাখ্যান

২০১৩ সালের মে মাসের দিককার কথা। জার্মান লিগের শেষ ম্যাচে বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখের সাথে তাদেরই মাঠে খেলছে বায়ার্ন মিউনিখ, যারা আবার সেই ম্যাচের আগেই লিগ জিতে ফেলেছে। সেই ম্যাচ শেষে ঘরোয়া গ্লাডবাখ ফ্যানরা বায়ার্ন কোচের নামে একটানা কোরাস গাইছিলো, সাথে বায়ার্ন ফ্যানরাও। কিন্তু কেন? ফুটবলে তো সাধারণত প্রতিপক্ষকে দুয়ো দেয়া হয়, চিয়ার করা হয় না। কারণ, উনি আর পাঁচজন কোচের মতো নন। তিনি দুই দলের কাছেই কিংবদন্তী। তিনি জাপ হেইঙ্কেস, ইউরোপের সফলতম কোচদের একজন।

গ্লাডবাখের হয়ে হেইঙ্কেস; Source:clickon

তার জীবনকে দু’ভাগে ভাগ করলে একভাগে থাকবে তার খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার, আর অন্যদিকে তার কোচিং ক্যারিয়ার। তার জীবনের প্রথম ভাগ কেবলই মনশেনগ্লাডবাখময়। ফুটবল ফ্যান মাত্রই গার্ড মুলারের কথা শুনেছেন, জার্মান ইতিহাসের সেরা স্ট্রাইকার। হেইঙ্কেসের কথা কি শুনেছেন কেউ? না। কারণ এই দুর্ভাগার ক্যারিয়ার ঠিক তখনই ফুটতে শুরু করেছে, যখন মুলারের দাপটে অন্যরা ছিলেন ম্রিয়মান।

জার্মান দ্বিতীয় বিভাগ লিগে তার প্রথম যাত্রা শুরু, ক্লাব তারই ছেলেবেলার শহরের গ্লাডবাখে। প্রথম মৌসুমে ২৩টি গোল করে তার নিজের শহরের ক্লাবটিকে তুলে নিয়ে আসলেন জার্মান প্রথম বিভাগে। এরপর রুপকথার আসল যাত্রা শুরু। সদ্য উঠে আসা ক্লাব খেই হারালো না তার গোলমেশিনের ভরসায়। দুই মৌসুমে যেন একাই ক্লাবকে প্রথম বিভাগে ধরে রাখেন। কিন্তু বোর্ডের সাথে কিছু সমস্যার জন্য ক্লাব ছেড়ে আরেক ক্লাব হ্যানোভারে চলে যান। প্রথম মৌসুমে মোটামুটি খেললেও দ্বিতীয় মৌসুমে খাপছাড়া খেলতে থাকেন। ঐদিকে গ্লাডবাখ তাদের ইতিহাসের প্রথমবারের মতো লিগ জিতেছে। দ্বিতীয় বিভাগ থেকে এনে চ্যাম্পিয়ন বানানো অসাধ্য সাধনকারী কোচ ফর্মের জন্য লড়তে থাকা হেইঙ্কেসকে আবার নিয়ে এলেন তার নিজ শহরের ক্লাবে।

আর পেছনে ফিরে তাকানো নয়। তার গোলের মুখ যেন আবারো খুলে গেল। দলকে ২০ গোল করে আবার লিগ জেতালেন হেইঙ্কেস। গ্লাডবাখ জিতে নেয় প্রথম জার্মান ক্লাব হিসেবে প্রথম টানা জয়। সেবার ইউরোপিয়ান কাপে (হালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ) সেমি ফাইনালে হ্যাটট্রিক করে ইন্টার মিলানকে ধসিয়ে দিলেও শৃঙ্খলাজনিত কারণে ম্যাচ বাতিল হয়ে যায়। পরের লেগে ড্র করে বাদ পড়ে যায় তার দল।

খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলেন দুর্ধর্ষ স্ট্রাইকার; Source: Classic UCLA Bruins Rediscovered – WordPress.com

এরপরের বছর তার দল লিগ জিততে না পারলেও তিনি হন সেরা গোলদাতা। তবে একদম খালি হাতে ফেরাননি নিজ শহরের লোকদের। জার্মান কাপ জেতান তার দলকে। তবে সবই যে বীরত্বগাঁথা ছিল তা নয়। সেবার তারই পেনাল্টি মিসের কারণে ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে হেরে যায় গ্লাডবাখ। এরপরের বছরও একই চিত্র। তার গোল মেশিন চলছেই, কিন্তু লিগে রানার আপ আর ইউরোপিয়ান কাপে সেমিফাইনাল থেকেই বাদ। এরপরের বার আর তেমন হয়নি। লিগে ২৭ গোল করে হন সেরা গোলদাতা আর বায়ার্ন আধিপত্য ভেঙে দলকে জেতান জার্মান লিগ। সেবার ২১ ম্যাচে ২৩ গোল করে দলকে এনে দেন ইতিহাসের প্রথম ইউরোপিয়ান ট্রফি, স্থাপন করেন এক গ্লাডবাখ আধিপত্যের। এরপর টানা আরো দুটি লিগ জেতান তার দলকে। ইউরোপিয়ান কাপ আর না জিতলেও সেই সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্লাবগুলোর একটি ছিল তার দল।

লিগ কিংবা ইউরোপিয়ান ট্রফিতে তার চেয়ে ভালো গোল অনুপাত ছিল কেবল মুলারেরই। সেই মুলারের দাপটেই জার্মান জাতীয় দলের মূল স্ট্রাইকারের জায়গাটি তার পাওয়া হয়নি কখনোই। জাতীয় দলের হয়ে ১৯৭২ সালের ইউরো আর ১৯৭৪ সালের বিশ্বকাপ জেতেন এই স্ট্রাইকার। তবে সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হলো, তার ফর্মকে অগ্রাহ্য করতে না পেরে ১৯৭৪ এর বিশ্বকাপে মুলারের সাথে প্রথম দুই ম্যাচ তাকেও নামান কোচ। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি, পড়ে যান ইনজুরিতে। বেঞ্চে বসেই দেখতে হয় দলের বিশ্বকাপ জয়। সেই দুঃখ এখনো যেকোনো সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি। সারাজীবন ছিলেন একজন গ্লাডবাখের সেনানী। তাই সেই ক্লাবের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে আজও তার নাম ধরা হয়। কে জানে, মুলার না থাকলে জার্মানির সেরা স্ট্রাইকারের খেতাবটাও হয়ত তারই থাকত!

বুটজোড়া তুলে রাখার পরও গ্লাডবাখের সাথে তার সম্পর্ক চুকে যায়নি। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে কোচ হন তারই নিজের প্রাণের ক্লাবের। কিন্তু গ্লাডবাখের সেই দাপুটে অবস্থা আর ছিল না তখন। মাঠ কাঁপানো অনেক খেলোয়াড়ই বুড়িয়ে গেছেন। কিন্তু দায়িত্ব নিয়েই প্রায় চমক দেখিয়ে ফেলেছিলেন হেইঙ্কেস। দলকে নিয়ে যান উয়েফা কাপের ফাইনালে। প্রথম লেগ জিতেও দ্বিতীয় লেগ হেরে বঞ্চিত হন ট্রফি থেকে। এই ট্রফিটি হয়তো তার কিছু দুর্বলতা ঢাকতে পারতো। কারণ লিগে তার দলের হাল খুবই সঙ্গীন, তাদের অবস্থান হলো সপ্তম। না, এরপর আর কোনো চমক নেই। আর্থিক দৈন্যে ভুগতে থাকা ক্লাবটি নিয়ে তিনিও ভুগতে থাকেন। এরপরের তিনবার লিগে তার দল যথাক্রমে ষষ্ঠ, সপ্তম ও দ্বাদশ হয়। হেইঙ্কেস ক্রেজ অনেকটাই মিইয়ে গেছে তখন। লিগে দ্বাদশ হলেও তার ক্লাব তার উপর আস্থা হারালো না।

পরেরবার আস্থার প্রতিদান প্রায় দিয়েই ফেলেছিলেন। খুব কাছে এসেও সমান পয়েন্ট নিয়ে কেবল গোল ব্যবধানে লিগ হেরে যান। লিগ কাপের ফাইনালে হারেন বায়ার্নের কাছে। এর পরেরবারও ট্রফি ও তার মধ্যে বাধা হয়ে দাড়ায় সেই বায়ার্ন। সেবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট ম্যাচে রিয়ালকে নিজ মাঠে ৫-১ এ হারান, কিন্তু ফিরতি ম্যাচে রিয়াল তার দলকে ৪-০ তে বিধ্বস্ত করে বিদায় করে দেয়। কিন্তু ইতিহাসের কী নিয়তি, যে রিয়াল আর বায়ার্ন তাকে সাফল্যবঞ্চিত করেছে, সেই তাদেরই তিনি দিয়েছেন দু’হাত ভরে!

গ্লাডবাখের ডাগআউটে হেইঙ্কেস; Source: Sportbuzzer

না, গ্লাডবাখে নাটকীয় আর কিছু হয়নি। কম বাজেট, ধুঁকতে থাকা দলকে রেগুলার টপ ফোরে ধরে রেখেছেন, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলিয়েছেন, ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার সেমি ফাইনালে খেলিয়েছেন দু’বার। ততদিনে জার্মানি বুঝে গেছে তার প্রতিভা। তার নাম জুটে যায় ‘চ্যাম্পিয়ন উইদাউট ট্রফি’!

তবে এই খেতাব বেশিদিন থাকেনি তার বায়ার্নে যোগ দেওয়ার পর। বায়ার্ন তখন চাইছে এমন কাউকে, যে জার্মান লিগে আবার বায়ার্নকে আধিপত্য এনে দেবে। সুপারকাপের শিরোপা জেতান তিনি কয়েকদিনের মধ্যেই। এটা আসলে আগের বছরের লিগজয়ী আর লিগকাপ জয়ীদের মধ্যে দুই লেগের একটি টুর্নামেন্ট, বড় কোনো প্রতিযোগিতা না। সে বছর বায়ার্নকে নিয়েও কোন মেজর ট্রফি পাননি তিনি। আবার আগের খেতাবটা তার নামের পাশে সেটে যায়!

এরপর ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে সব ভোজবাজির মতো উড়ে যায়। দাপটের সঙ্গে বায়ার্ন জিতে নেয় লিগ। সেবার ইউরোপিয়ান কাপের সেমিতে উঠলেও বাদ পড়ে যায় তারা। ঘরোয়া দাপটের রাশ এর পরেও ছাড়েননি হেইঙ্কেস। আবারো বায়ার্নকে লিগ এনে দেন এবং একইভাবে এরপর ইউরোপিয়ান কাপের সেমিতে বাদ! বায়ার্ন চেয়েছিল এমন একজন, যিনি ঘরোয়াভাবে বায়ার্নকে আধিপত্য এনে দেবে, দিয়েছেনও হেইঙ্কেস। টানা তিনবার ইউরোপিয়ান কাপের সেমিফাইনালে তুলেছেন দলকে। যাদের কাছে বাদ পড়েছেন, তারাই ছিল প্রতিযোগিতার বিজয়ী। ১৯৯১ সালে ভুল করে বসলেন বায়ার্ন প্রেসিডেন্ট উলি হোয়েনেস। খারাপভাবে লিগ শুরু করায় হেইঙ্কেসকে বরখাস্ত করেন তিনি।

বায়ার্ন ফ্যানদের কাছে তিনি সব সময়ই ছিলেন এক প্রিয় মুখ; Source: Evening Standard

এরপর প্রথমবারের মতো জার্মানি ছেড়ে স্পেনে যান তিনি। লো প্রোফাইল এথলেটিক বিলবাও-এ। একটু বলে রাখা ভালো, এই ক্লাবটির একটি আদর্শ আছে। তারা নিজ প্রদেশের বাইরের কোনো খেলোয়াড় দলে আনে না! এই সীমাবদ্ধতা নিয়েও ক্লাবকে ইউরোপিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করান হেইঙ্কেস, যে সুযোগ সাধারণত বিলবাও ক্লাবটি ফি বছর পায় না। বিলবাও কোনো ট্রফি জয়ের মতো ক্লাব ছিল না। তবে সীমাবদ্ধতার মধ্যেও হেইঙ্কেস করেছেন নিজের সবটাই। তিনি ফিরে যান আবার জার্মানিতে, এবার ক্লাব ফ্রাঙ্কফুর্ট। সেখানে ছিলেন মাত্র এক বছর। এক বছর পর ক্লাব আর তার সাথে চুক্তি নবায়ন না করায় তিনি চলে যান স্পেনের ছোট ক্লাব টেনেরিফেতে। এই ক্লাবটি সাধারণত লিগে টিকে থাকলেই খুশি থাকত। তিনি ক্লাবটিকে উয়েফা কাপে কোয়ালিফাই করান, যেটি তাদের সেই সময়কার প্রথম। এরপর তাদের নিয়ে যান উয়েফা কাপের সেমিতে! আবার ফুটবল বিশ্বে তার বন্দনা শুরু হয়। ১৯৯১ এ বায়ার্ন থেকে বের হওয়ার পর বারবার ছোট ক্লাবে ঘুরতে থাকা হেইঙ্কেসের ডাক আসে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে।

সেই অধ্যায়ের শুরু আর শেষটা ছিল জঘন্য। প্রথম ম্যাচে সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে হার! এরপর ফিরতি ম্যাচে ঘরের মাঠে বার্সাকে ৪-১ এ উড়িয়ে দিয়ে সুপার কাপ জেতান রিয়ালকে। সালটা ছিল ১৯৯৭। ৩২ বছর ধরে রিয়াল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতেনি। লিগে রিয়াল হলো সপ্তম, কিন্তু উঠে গেল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। ফাইনাল না জিতলে এর পরেরবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ালিফাই করার আর পথ নেই। বহু সেমি ফাইনাল, ফাইনাল হেরেছেন তিনি। এবারে প্রতিপক্ষ সেই আমলের মাঠ কাঁপানো জুভেন্টাস। জানতেন যে, না জিতলে মাদ্রিদে ফেরা লাগবে না আর! ১-০ তে জুভেন্টাসকে হারিয়ে ৩২ বছরের শিরোপা খরা ঘোচান রিয়ালের। মাদ্রিদে সমর্থকরা বরণ করে নিলেও, সপ্তম অবস্থানে থেকে লিগ শেষ করার কারণে সপ্তাহখানেকের মধ্যে তাকে বরখাস্ত করে রিয়াল বোর্ড।

রিয়াল মাদ্রিদকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানোর পর মাদ্রিদে; Source: welt.de

এরপর আবার তার ছোট ক্লাবে যাওয়া শুরু। বেনিফিকা, বিলবাও, গ্লাডবাখ, শালকে, লেভারকুসেন হয়ে যোগ দিলেন বায়ার্নে ৩য় বারের মতো! মাঝে একবার অন্তর্বর্তী ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন। সেবার ৫ ম্যাচ বাকি। চারটিতে জিততে হতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ালিফাই করতে। ধুঁকতে থাকা সেই বায়ার্নকে ঠিকই পৌছে দেন সেই দরজায়। বায়ার্ন প্রেসিডেন্ট হোয়েনেস ১৯৯১ সালে তাকে বরখাস্ত করাটাকে নিজের সবচেয়ে বড় ভুল বলে স্বীকার করেন। তাদের সম্পর্ক ঠিকই ছিল অটুট। ২০১১ সালে বায়ার্নে আসেন ভ্যান গালের ফেলে যাওয়া ঝামেলা ঠিক করতে।

জার্মানিতে তখন বরুশিয়া রাজত্ব, বায়ার্নের হাল করুণ। না, তাদের রাজত্ব এত সহজে ছিনিয়ে নিতে পারেনি কেউ। আট পয়েন্টে লিগ হেরে যান হেইঙ্কেস। লিগ কাপে বরুশিয়া তাকে দেয় লজ্জাজনক ৫-২ এর পরাজয়। কিন্তু তিনি বায়ার্নের খেলার স্টাইলে আনেন দারুণ পরিবর্তন। সেবার রিয়ালকে হারিয়ে ওঠেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। ম্যাচ নিজেদের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায়। সব ব্যর্থতা মাফ হয়ে যেত, যদি সেই ম্যাচটা জিততে পারতো তারা। ভাগ্য সহায় হয়নি। সে এক ম্যাচ ছিল বটে! ৩০ এর বেশি গোলের সুযোগ পেয়ে বায়ার্ন গোল পেল একটি, আর চেলসি এক সুযোগেই গোল! টাইব্রেকারে হেরে যায় বায়ার্ন। না, বায়ার্ন সেবার আর বরখাস্ত করেননি তাকে। ফলও পেল হাতে নাতে।

এর পরের মৌসুমকে বায়ার্ন ইতিহাসের সেরা মৌসুম বলা যায় অনায়াসে। সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ বায়ার্ন দল গড়ে তোলেন তিনি। লিগে, লিগ কাপে সব জায়গায় অদম্য তারা। হেইঙ্কেস জিতে নেন লিগ ও লিগ কাপ দুটোই। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে বার্সেলোনাকে ৭-০ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেন। বরুশিয়ার সাথে ১-০তে এগিয়ে গেলেও যখন গোল খেয়ে বসে বায়ার্ন, তখন আবার একটা ভয় এসে যায় যে, আবার কি তার ফাইনালের দুর্ভাগ্য ফিরে আসছে? ৯০ মিনিটে রোবেনের দেওয়া জয়সূচক গোলে বায়ার্ন ইতিহাসের প্রথম ট্রেবল এনে দেন তিনি। হিজফেল্ড, মরিনহোদের পাশাপাশি ৩য় ম্যানেজার হিসেবে হন ভিন্ন দুটো ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাবার রেকর্ডের অধিকারী।

বায়ার্নে পাওয়া তার ট্রফিগুলোর সাথে হেইঙ্কেস; Source: CNN.com

সেই মৌসুম যারা দেখেছেন তারা জানেন, এরপর তার দেওয়ার আর কিছুই ছিল না, এর চেয়ে ভালো খেলানো ছিল অসম্ভব। খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে সবকিছু জয়ের স্বাদ পাওয়া হেইঙ্কেস সেই ম্যাচ শেষেই অবসরে যান। বলেন, “এটাই আমার শেষ ম্যাচ। আমার ক্যারিয়ারের অন্ত আজই। কিন্তু কখনোই যে ফিরবো না , তা বলতে পারি না!” কথাটা ২০১৩ সালে বলা। আজ ২০১৭ সালে কার্লো আনচেলত্তির বিদায়ের পর টালমাটাল বায়ার্নের হাল ধরতে আবার তার হাতেই ভার তুলে দিল বোর্ড। কারণ দর্শক, খেলোয়াড় কিংবা বোর্ডের সদস্য- এমন কেউ নেই যে তাকে অবিশ্বাস করে! আসলেই তিনি চূড়ান্ত বিদায় বলেননি।

৩৩ বছরের কোচিং ক্যারিয়ার ২০১৩-তে শেষ হয়েও হলো না শেষ। এবার ফিরে বলেছেন, এই মৌসুমের বেশি থাকবেন না বায়ার্নে। কিন্তু কে জানে, এই মহাপ্রাণের কি আদৌ কোনো নিঃশেষ আছে ? চাইলে আরো যে অনেক দেওয়ার আছে তার…

ফিচার ইমেজ- Eurosport

Related Articles