Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

পরিসংখ্যানে জেমস অ্যান্ডারসন বনাম গ্লেন ম্যাকগ্রা

টেস্ট ক্রিকেটের ১৪১ বছরের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ২,৯৩২ জন ক্রিকেটার খেলেছেন। তার মধ্যে ২,১৬৫ জন ক্রিকেটার কমপক্ষে এক বল করেছেন। কিন্তু এদের মধ্যে মাত্র চারজন বোলার ৫৬৪ কিংবা তার চেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন। এই চারজনের মধ্যে জেমস অ্যান্ডারসন ছাড়া আর কোনো পেসার নেই।

দ্য ওভালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্ট ম্যাচে মোহাম্মদ শামিকে বোল্ড করে দলের জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি টেস্ট ক্যারিয়ারের ৫৬৪ তম উইকেট শিকার করেন জেমস অ্যান্ডারসন।

মোহাম্মদ শামিকে বোল্ড করে গ্লেন ম্যাকগ্রাকে অতিক্রম করেন জেমস অ্যান্ডারসন; Image Source: Getty Images

ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হওয়ার আগে গ্লেন ম্যাকগ্রার রেকর্ড ভাঙতে ২৪ উইকেটের প্রয়োজন ছিলো অ্যান্ডারসনের। ঠিক ২৪ উইকেট তুলে নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে পেসার হিসেবে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের রেকর্ড নিজের করে নিলেন ইংলিশ এই পেসার।

গ্লেন ম্যাকগ্রা বনাম জেমস অ্যান্ডারসন

গ্লেন ম্যাকগ্রার টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ১৯৯৩ সালের নভেম্বরে। প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচ খেলেন তিনি।

৬ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতাসম্পন্ন ম্যাকগ্রা পিচ থেকে অতিরিক্ত বাউন্স আদায় করে নিতে পারতেন। সেইসাথে দুদিকেই বল সুইং করিয়ে ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলতেন তিনি। লিন্ডওয়াল, ম্যাকেঞ্জি, ডেনিস লিলিদের পরবর্তী যুগে অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণ সামাল দেওয়ার দায়িত্ব পান গ্লেন ম্যাকগ্রা। এরপর এক যুগেরও বেশি সময় ধরে নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন তিনি।

গ্লেন ম্যাকগ্রা ২০০৭ সালের ২রা জানুয়ারি অ্যাশেজ সিরিজের শেষ টেস্ট ম্যাচে হঠাৎ করেই অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ১২৪ ম্যাচে ৫৬৩ উইকেট শিকার করেছিলেন। উইকেট প্রতি গড়ে ২১.৬৪ রান খরচায় এবং ৫১.৯ স্ট্রাইক রেটে তিনি ৫৬৩ উইকেট শিকার করেছেন।

Image Source: Espn Cricinfo

জেমস অ্যান্ডারসন ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে উইকেটের উপর বেশি নির্ভর ছিলেন। পেস সহায়ক উইকেটে তার ধ্বংসাত্মক সুইংয়ে ব্যাটসম্যানরা কোণঠাসা হয়ে পড়তেন। এরপর কঠোর পরিশ্রমে করে তিনি বর্তমানে এখন পরিপূর্ণ বোলার।

অ্যান্ডারসনের টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ২০০৩ সালের ২২ মে। লর্ডসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচেই পাঁচ উইকেট শিকার করেন তিনি। পরবর্তী পাঁচ বছরে দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন অ্যান্ডারসন। স্টিভ হার্মিসন, ম্যাথু হগার্ড এবং জোন্স ইংল্যান্ডের বোলিং ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব ছাড়ার পর ২০০৮ সাল থেকে ইংল্যান্ড দলের নিয়মিত সদস্যে পরিণত হন অ্যান্ডারসন। দলের যখনই উইকেটের প্রয়োজন পড়ে, তখনই অধিনায়কের প্রথম পছন্দ তিনি।

জেমস অ্যান্ডারসন এখন পর্যন্ত ১৪৩ টেস্টে ৫৬৪ উইকেট শিকার করেছেন। উইকেটপ্রতি গড়ে ২৬.৮৪ গড়ে এবং ৫৫.৮ স্ট্রাইক রেটে তিনি ৫৬৪ উইকেট শিকার করেছেন। কঠোর পরিশ্রম করে তিনি এখনও তার ফিটনেস ধরে রেখেছেন। ক্যারিয়ার শেষে উইকেটের সংখ্যা আরও বাড়বে যে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

মাইলফলক স্পর্শ

বড় মাইলফলকগুলো স্পর্শ করার ক্ষেত্রে জেমস অ্যান্ডারসনের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। বোলিং গড়, স্ট্রাইক রেট- সব দিক দিয়েই অ্যান্ডারসনের চেয়ে অনেক এগিয়ে ম্যাকগ্রা। কিন্তু পেসার হয়েও বছরের পর বছর দলের হয়ে অবদান রেখে চলছেন অ্যান্ডারসন। বর্তমানে তিনি শুধুমাত্র টেস্ট ক্রিকেটের দিকে মনোযোগী। ২০১৫ সালের পর ইংল্যান্ডের হয়ে সীমিত ওভারের ম্যাচ খেলেননি ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের সর্বকালের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি অ্যান্ডারসন।

ভারতের বিপক্ষে পাঁচ টেস্টে ২৪ উইকেট শিকার করেন জেমস অ্যান্ডারসন; Image Source: Getty Images

ক্যারিয়ারের প্রায় এক দশক অ্যান্ডারসনের বোলিং গড় ত্রিশের উপর ছিলো, যা তার নামের পাশে বড্ড বেমানান। কিন্তু ২০১৫ সালের পর থেকে অভিজ্ঞ এবং বয়সকে শুধুমাত্র সংখ্যা হিসাবে দেখা অ্যান্ডারসন আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৪৪টি টেস্ট ম্যাচে মাত্র ২০.৮৯ বোলিং গড়ে ১৮৪ উইকেট শিকার করেছেন, যার কারণে তার বর্তমান বোলিং গড় কমে ২৬.৮৪-তে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে টেস্ট ক্রিকেটে তার চেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন শুধুমাত্র রাবিচন্দ্রন আশ্বিন। তিনি ২০৮ উইকেট শিকার করেছেন। এরপরে আছেন অ্যান্ডারসনের বোলিং পার্টনার স্টুয়ার্ড ব্রড। তার উইকেট সংখ্যা ১৬৯টি।

গত দুই বছরে জো রুটের নেতৃত্বে জেমস অ্যান্ডারসন ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটাচ্ছেন। রুটের অধীনে এখন পর্যন্ত ২১ ম্যাচ খেলে মাত্র ১৮.৮৬ বোলিং গড়ে ৯৭ উইকেট শিকার করেছেন।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে অ্যান্ডারসন আরও কার্যকরী বোলারে পরিণত হচ্ছেন। ৩০ বছর বয়স হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৭২টি টেস্টে ২৩.৬৪ বোলিং গড়ে ২৯৬ উইকেট শিকার করেছেন। ৩০ বছর বয়সের পর পেসারদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন বর্তমানে বাংলাদেশের বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ। তার উইকেট সংখ্যা ছিলো ৩৪১টি।

জেমস অ্যান্ডারসন ৩০ বছর হওয়ার আগে ৭১টি টেস্ট ম্যাচে ৩০.৩৭ বোলিং গড়ে ২৬৮টি উইকেট শিকার করেছিলেন। যে বয়সে পেসাররা অবসরের কথা ভাবেন, সেই বয়সে এসে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অ্যান্ডারসন নির্বাচকদের বলেন তাকে বিশ্রাম না দেওয়ার জন্য।

গ্লেন ম্যাকগ্রা; Image Source: Getty Images

অন্যদিকে গ্লেন ম্যাকগ্রা তার সেরা সময় কাটিয়েছেন ১৯৯৫ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ২০০২ সালের ঘরোয়া মৌসুম পর্যন্ত। এই সময়ে তিনি ২০.৪০ বোলিং গড়ে ৩৯৭ উইকেট শিকার করেছিলেন। অন্য কোনো বোলারই তার চেয়ে বেশি উইকেট শিকার করতে পারেননি। সেই সময়ে পেসারদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করা শন পোলকের উইকেট সংখ্যা ছিলো ২৭৩টি।

দ্য অ্যাশেজ

অ্যাশেজ সিরিজে জেমস অ্যান্ডারসনের চেয়ে বড় ব্যবধানে এগিয়ে আছেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। পেসার হিসাবে দুই দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি ৩০ ম্যাচ খেলে ২০.৯২ বোলিং গড়ে এবং ৪৬.৩ স্ট্রাইক রেটে ১৫৭ উইকেট শিকার করেছেন। ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন ১০বার।  ১৯৯৪/৯৫ মৌসুমে প্রথম অ্যাশেজ খেলা গ্লেন ম্যাকগ্রা নিজের প্রত্যেক অ্যাশেজ সিরিজে কমপক্ষে ১৯ উইকেট শিকার করেছেন এবং তার বোলিং গড় কখনও ২৪ এর উপরে ওঠেনি।

অন্যদিকে জেমস অ্যান্ডারসন অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করলেও প্রত্যাশানুযায়ী নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে পারেননি। তিনি অ্যাশেজে ৩১টি টেস্টে ৩৪.৫৫ বোলিং গড়ে এবং ৬৭.৫ স্ট্রাইক রেটে ১০৪ উইকেট শিকার করেছেন। ম্যাচে দশ উইকেট শিকার করেছেন একবার এবং ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন পাঁচবার।

গ্লেন ম্যাকগ্রা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চারবার ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন। জেমস অ্যান্ডারসন মাত্র একবার ম্যাচসেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

অ্যাশেজে পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন গ্লেন ম্যাকগ্রা; Image Source: Espn Cricinfo

উপমহাদেশের মাটিতে আধিপত্য

গ্লেন ম্যাকগ্রার সবচেয়ে সবচেয়ে বড় গুণ ছিলো যেকোনো পরিস্থিতে তিনি ব্যাটসম্যানদের উপর আধিপত্য চালাতে পারতেন। স্পিন সহায়ক উপমহাদেশের মাটিতেও তিনি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে দাপটের সাথে বোলিং করতেন। ঘরের মাঠের চেয়েও অ্যাওয়ে সিরিজে তার বোলিং নৈপুণ্য ভালো। ঘরের মাটিতে তার বোলিং গড় ২২.৪৩ এবং অ্যাওয়েতে তার বোলিং গড় ২০.৮১। যেকোনো মহাদেশে তার সেরা বোলিং গড় এবং বাজে বোলিং গড়ের মধ্যে ব্যবধান মাত্র ৩.৬৮। সেরা বোলিং গড় ইংল্যান্ডের মাটিতে। ইংল্যান্ডে তিনি ১৪ ম্যাচে ১৯.৩৪ বোলিং গড়ে ৮৭ উইকেট শিকার করেছেন। আর সবচেয়ে বাজে বোলিং গড় উপমহাদেশে। এখানে তিনি ১৯ ম্যাচে ২৩.০২ বোলিং গড়ে ৭২ উইকেট শিকার করেছেন।

উপমহাদেশের মাটিতে শেষ ১২ টেস্টে সফলতার মুখ দেখেছেন অ্যান্ডারসন; Image Source: Getty Images

অন্যদিকে জেমস অ্যান্ডারসনের ঘরের মাঠের পারফরম্যান্স এবং অ্যাওয়েতে পারফরম্যান্সের মধ্যে বড় ব্যবধান রয়েছে। ঘরের মাটিতে তার বোলিং গড় ২৩.৭৬ এবং অ্যাওয়েতে তার বোলিং গড় ৩২.৬৩।  ঘরের মাঠ ছাড়া আর মাত্র দুটি দেশে অ্যান্ডারসনের বোলিং গড় ৩০ এর কম। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৫.৫৪ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে ২৪.৯২। এশিয়ার মাটিতে তার পারফরম্যান্স প্রত্যাশানুযায়ী ছিলো না। তবে শেষ ১২ টেস্টে ২৫.৬৮ বোলিং গড়ে ৩৮ উইকেট শিকার করার ফলে এশিয়ার মাটিতে তার বর্তমান বোলিং গড় ৩০.০০। তিনি এশিয়াতে ২০ ম্যাচে ৩০.০০ বোলিং গড়ে ৫৯ উইকেট শিকার করেছেন।

প্রিয় প্রতিপক্ষ

গ্লেন ম্যাকগ্রা দশটি দেশে টেস্ট ক্রিকেট খেলেছেন। এর মধ্যে মাত্র দুটি দেশে তার বোলিং গড় ২৪.০০ এর বেশি। দুটি দেশই এই উপমহাদেশের। শ্রীলঙ্কার মাটিতে ২৯.২০ এবং পাকিস্তানের মাটিতে ৩১.০০। কমপক্ষে দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন এমন দলগুলোর বিপক্ষে তার সবচেয়ে কম বোলিং গড় ভারতের বিপক্ষে। ভারতের সাথে ১৮.৬৪ বোলিং গড়ে ৫১ উইকেট শিকার করেছেন। এবং সবচেয়ে বেশি বোলিং গড় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ২৭.৩৩ বোলিং গড়ে ৫৭ উইকেট শিকার করেছেন।

গ্লেন ম্যাকগ্রা ইংল্যান্ড ছাড়াও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও শতাধিক উইকেট শিকার করেছেন। তাই তার প্রিয় উইকেটের মধ্যে ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা বেশি রয়েছেন। তিনি মাইকেল অ্যাথারটনকে ১৯ বার, ব্রায়ান লারাকে ১৫ বার, জিমি অ্যাডামসকে ১২ বার, শেরউইন ক্যাম্পবেলকে ১১ বার এবং অ্যালেক স্টুয়ার্টকে ১০ বার আউট করেছেন।

সদ্য সমাপ্ত সিরিজে বিরাটের উইকেট না পেলেও তাকে মোট পাঁচবার আউট করেছিলেন অ্যান্ডারসন; Image Source: Getty Images

অন্যদিকে জেমস অ্যান্ডারসন তার খেলা নয়টি দেশের বিপক্ষে সবচেয়ে কম বোলিং গড় এবং সবচেয়ে বেশি বোলিং গড়ের মধ্যে পার্থক্য প্রায় অর্ধেক। তার সবচেয়ে কম বোলিং গড় পাকিস্তানের বিপক্ষে। তিনি পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৮.৫৮ বোলিং গড়ে ৬৩ উইকেট শিকার করেছেন। আর সবচেয়ে বেশি বোলিং গড় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৪.৫৫ বোলিং গড়ে ১০৪ উইকেট শিকার করেছেন।

দশটি দেশের মধ্যে তার বোলিং গড়ের পার্থক্যও প্রায় একই। সবচেয়ে কম বোলিং গড় ২০.৫৪ সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং সবচেয়ে বেশি বোলিং গড় ৪০.৭২ শ্রীলঙ্কায়। অ্যান্ডারসন ঘরের মাঠে উপমহাদেশের দেশগুলোর বিপক্ষে ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। তিনি সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন ভারতের বিপক্ষে। ভারতের সাথে ২৭ টেস্টে ১১০ শিকার করেছেন।

জেমস অ্যান্ডারসন প্রতিপক্ষের সেরা ব্যাটসম্যানদের উইকেট শিকার করার ক্ষেত্রে পারদর্শী। গত দশকের সেরা ব্যাটসম্যানদের উইকেট শিকার করার পর বর্তমানে এই দশকের সেরা ব্যাটসম্যানদের উইকেটও শিকার করছেন তিনি।

শচীন টেন্ডুলকারকে নয়বার তার শিকারে পরিণত করেছেন। টেন্ডুলকারকে এর চেয়ে বেশিবার কোনো বোলার আউট করতে পারেননি। এছাড়া জ্যাক ক্যালিস এবং কুমার সাঙ্গাকারাকে সাতবার, গ্রায়েম স্মিথকে ছয়বার এবং রাহুল দ্রাবিড়কে পাঁচবার তার শিকারে পরিণত করেছেন। বর্তমানের সেরা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে স্টিভ স্মিথ এবং কেন উইলিয়ামসনকে ছয়বার আউট করেছেন। এবং বিরাট কোহলিকে ২০১৪ মৌসুমে ৫০ বলে চারবার আউট করার পাশাপাশি মোট পাঁচবার আউট করেছেন।

দুজনের মধ্যে মিল

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, দুজনে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা বোলার। জেমস অ্যান্ডারসন নিজেও গ্লেন ম্যাকগ্রা এবং ডেল স্টেইনকে তার সময়কার সেরা বোলার হিসাবে গণ্য করেন।

জেমস অ্যান্ডারসন; Image Source: Getty Images

গ্লেন ম্যাকগ্রা এবং জেমস অ্যান্ডারসন দুজনেই নতুন বলে অপ্রতিরোধ্য। বিপক্ষে দলের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের কাছে তারা দুজন দুঃস্বপ্নের মতো। বিপক্ষ দলের উদ্বোধনীয় ব্যাটসম্যানদের উইকেট শিকারে তাদের সংখ্যাটা প্রায় সমান। গ্লেন ম্যাকগ্রা ১৫৫ বার এবং অ্যান্ডারসন ১৫৩ বার বিপক্ষ দলের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের উইকেট শিকার করেছেন।

গ্লেন ম্যাকগ্রা ১৭২ বার বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের উইকেট শিকার করেছেন। অ্যান্ডারসন ১৭৮ বার বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের উইকেট তুলে নিয়েছেন। এছাড়া জেমস অ্যান্ডারসনের মোট উইকেটের ৩৬৮টি এসেছে ক্যাচ আউটে। এর মধ্যে ১৫৪টি ক্যাচ ধরেছেন উইকেটরক্ষক। অন্যদিকে গ্লেন ম্যাকগ্রার ৩৭৩টি ক্যাচ আউটের মধ্যে ১৫২টি ধরেছেন উইকেটরক্ষক।

গ্লেন ম্যাকগ্রার মতে, জেমস অ্যান্ডারসনের রেকর্ড আর কেউ টপকাতে পারবে না। দেখা যাক, ব্রড-রাবাদাদের দৌড় কোথায় গিয়ে থামে। তবে ম্যাকগ্রা এবং অ্যান্ডারসন যে টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা দুই পেসার- এতে কোনো সন্দেহ নেই।

Related Articles