Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বার্সেলোনার লিগ জয়ের নেপথ্যে: প্রথম পর্ব

২০২১ সালের নভেম্বরে যখন বার্সেলোনার ম্যানেজার হিসেবে ন্যু ক্যাম্পে পা রাখছেন জাভি হার্নান্দেজ, তার হাতে তখন বিপর্যস্ত, নিজেদের হারিয়ে খুঁজতে থাকা আত্মবিশ্বাসহীন এক স্কোয়াড। আড়াই বছর ধরে লিগ না জেতা দলটার মধ্যে ইউরোপসেরা হওয়া তো দূরের কথা, সহসা স্পেনের সেরা হওয়ারও কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছিল না। ওদিকে চ্যাম্পিয়নস লিগে অব্যাহত ব্যর্থতা তো আছেই। পরপর চার বছরে রোমা-অ্যানফিল্ড-লিসবন-প্যারিস ট্র্যাজেডির শিকার হওয়া কাতালান দলটা ছিল নানা সমস্যায় জর্জরিত। এর সাথে ট্রেনিংয়ে ইন্টেনসিটির অভাব, শৃঙ্খলাজনিত সমস্যার গুঞ্জন – সব মিলিয়ে বার্সার তরুণ খেলোয়াড়রা নিজেদের মেলে ধরার মতো কতটুকু পরিবেশ পাচ্ছেন, সেই প্রশ্নটাও উঠেছিল।

ফাস্ট ফরওয়ার্ড করে চলে আসি ২০২৩ সালের মে মাসে। মাত্রই লা লিগা জিতেছে বার্সেলোনা, সেটাও চার ম্যাচ হাতে রেখে। লিগ জেতা কখনোই সহজ নয়, মাঠের বাইরে ভীষণ বাজে পরিস্থিতিতে থাকা বার্সার জন্য সেটা ছিল আরো কঠিন। তবুও এই কঠিন পথটা কীভাবে পাড়ি দিল মেরুন-নীলের দলটা, কোন কোন অপ্রত্যাশিত অনিশ্চয়তা আর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন তারা, দ্য অ্যাথলেটিক-এর পল বালুস, লাইয়া সেরভেলো হেরেরো এবং ডেরমট করিগান বলেছেন সেই গল্পটাই। তারই প্রথম পর্বে আজ থাকছে বার্সেলোনার ড্রেসিংরুমের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের গল্পগুলো।

Image Source: Getty Images

প্রথম অধ্যায়: অতীত ভুলে ভবিষ্যতের পানে তাকানো

বার্সার ম্যানেজার হয়ে আসার পর জাভি প্রথমেই কথা বলেন তার দলের অধিনায়ক ও সাবেক সতীর্থ সার্জিও বুসকেটসের সাথে। ড্রেসিংরুমে বিদ্যমান নিয়মকানুন নিয়েও কথা হয় দু’জনের মধ্যে। কোচ জাভির নিশ্চয়ই মনে পড়ছিল খেলোয়াড়ি জীবনের কথা, যখন বার্সেলোনার ড্রেসিংরুমে ছিল নিয়মকানুনের কড়াকড়ি, ট্রেনিংয়ে দেরি করে আসলেও যখন জরিমানা গুনতে হতো খেলোয়াড়দের।

Image Source: Getty Images

কিন্তু সেই দিন ফুরিয়েছে অনেক আগেই। জাভির খেলোয়াড়ি জীবন শেষ হয়েছে, আল-সাদ ঘুরে ম্যানেজার হয়েছেন বার্সেলোনার। সেই কড়াকড়ি নিয়মকানুনের দিনও আর নেই। প্রকৃতপক্ষে, ছয় বছর আগে যে ড্রেসিংরুম ছেড়ে গিয়েছিলেন জাভি, ফিরে এসে আর সেটা পাননি। এই বার্সার সাজঘরে কোনো নিয়মকানুনের বালাই ছিল না। বিস্মিত জাভির প্রথম পদক্ষেপ ছিল এই ড্রেসিংরুমকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা, নিয়মকানুনের কড়াকড়ি ফিরিয়ে আনা।

অনুশীলনে দেরি করে আসার জন্য জরিমানার বিধান চালু করা হয়, অন্যান্য শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য শাস্তির নিয়ম করা হয়। পাশাপাশি দলীয় অনুশীলনের অন্তত ৯০ মিনিট আগে যেন সব খেলোয়াড় মাঠে হাজির হন, জাভির চাওয়া ছিল সেটাই। একসাথে খাওয়াদাওয়া ও অনুশীলনের প্রস্তুতি গ্রহণের মাধ্যমে দলের মধ্যে বন্ধন বাড়াতে চেয়েছিলেন জাভি। পাশাপাশি সকাল ও দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের খাদ্যসূচির ওপর ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ আনার ব্যবস্থাও করেছিলেন জাভি।

এই কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। ওদিকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ লা লিগা জিতছে, চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতছে, বার্সেলোনা তখন ঘরের মাঠে হারছে রায়ো ভায়োকানো আর ভিয়ারিয়ালের কাছে। দলের আর্মব্যান্ডও সঠিক মানুষদের বাহুতে বসছে কি না, প্রশ্ন ছিল সেটাও।

অব্যাহত ব্যর্থতার পর বার্সার কর্তাব্যক্তিরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, এবার দলে নতুন মুখ আনার সময় এসেছে। পুরনো খেলোয়াড়দের বেঞ্চে ঠেলে অপেক্ষাকৃত তরুণদের বেশি বেশি সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায়, প্রি-সিজনে জাভি কথা বলেন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার ও অন্যতম মূল খেলোয়াড় জেরার্ড পিকের সাথে। সাফ জানিয়ে দেন, এই মৌসুমে তার গেমটাইম কমছে আগের চেয়ে।

পিকে ভেবেছিলেন, নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে হয়তো জাভিকে বাড়তি গেমটাইমের জন্য রাজি করাতে পারবেন, তাই কোচকে তিনি জানিয়ে দেন, তিনি তার জায়গা অর্জনের জন্য লড়বেন। পাশাপাশি এটাও জানিয়ে দেন, যখনই তার মনে হবে যে তিনি আর দলকে কিছু দিতে পারবেন না, সরে দাঁড়াবেন নিজ থেকেই।

একেবারে এই ঘটনাটাই ঘটলো কিছুদিন পরে। নিয়মিত সেন্টারব্যাকদের ইনজুরির কারণে দলে সুযোগ পেয়েছিলেন জেরার্ড পিকে, আর ঐ পিকের অমার্জনীয় ভুলের খেসারত দিয়েই ইন্টার মিলানের বিপক্ষে জয়বঞ্চিত হলো বার্সেলোনা। যার ফলাফল দাঁড়ায়, টানা দ্বিতীয় মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে বার্সার বিদায়। পিকে হয়তো বুঝে গিয়েছিলেন, এই দলটাকে আর তেমন কিছু দেওয়ার নেই তার। তাই এর সপ্তাহ দুয়েক পরে, নভেম্বরের ৫ তারিখে, ন্যু ক্যাম্পের সবুজ ঘাসে দাঁড়িয়ে ফুটবলকে বিদায় জানিয়ে দেন তিনি।

Image Source: Getty Images

জাভির দলের চার অধিনায়ক ছিলেন যথাক্রমে সার্জিও বুসকেটস, জেরার্ড পিকে, জর্দি আলবা ও সার্জি রবার্তো। পিকের বিদায়ে একটা জায়গা খালি হয়। আলবা আর রবার্তোর পদোন্নতি ঘটে, চতুর্থ অধিনায়ক হন গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগান।

২০১৪ সাল থেকেই বার্সেলোনার জার্সি গায়ে জড়াচ্ছেন টের স্টেগান, ড্রেসিংরুমে তার মতামতের মূল্যও যথেষ্ট। তবে সর্বশেষ বছরগুলোতে তার পারফরম্যান্স ততটা ভালো ছিল না। তিনি নিজেও সেটা জানতেন নিশ্চিত। তবে টের স্টেগানের ক্লাব ছাড়ার অনেক গুঞ্জনের মধ্যেও, জাভি ভরসাটা রেখেছিলেন তার সেরা গোলরক্ষকের ওপরেই।

বার্সেলোনা সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছিল ২০১৪-১৫ মৌসুমে, সেই স্বর্ণযুগে গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন টের স্টেগান। দলটার ‘স্বর্গ’ থেকে পতনের পুরো ঘটনাটাই ঘটেছে তার চোখের সামনে। তাই এই ৩১ বছর বয়সী যখন প্রথমবারের মতো আর্মব্যান্ড পেলেন, নিশ্চয়ই সন্তুষ্টচিত্তে বুঝতে পেরেছিলেন তার দায়িত্বের জায়গাটা। হয়তো ঠিক করে নিয়েছিলেন, জাভির বিশ্বাসের প্রতিদান তিনি দেবেন।

Image Source: FC Barcelona

টের স্টেগানের এই সন্তুষ্টি আর বিশ্বাসের প্রতিফলন দেখা গেল মাঠে। লিগে দারুণ একটা মৌসুম কাটাচ্ছেন তিনি। ৩৪ ম্যাচে হজম করেছেন মাত্র ১৩ গোল, ম্যাচপ্রতি মাত্র ০.৩৮টা। ২৬টা ক্লিনশিট রেখে ভেঙেছেন এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ক্লিনশিট রাখার রেকর্ডও। একই সাথে নেতৃত্বদানেও তার উন্নতি লক্ষণীয়। কে জানে, হয়তো অধিনায়কত্বের বাহুবন্ধনীটাই তার ভেতরের কর্তব্যবোধ আর নেতৃত্বকে জাগিয়ে তুলেছে।

Image Source: The Athletic

জাভির অধীনে টের স্টেগান নতুন করে নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন সন্দেহ নেই। তবে দলের এই রূপান্তরের পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নামটা সম্ভবত রবার্ট লেভানডফস্কি, অন্তত এই মৌসুমের শুরুর অর্ধে তো বটেই। এই পোলিশ স্ট্রাইকারকে দলে ভেড়ানোর সময়েই বোঝা যাচ্ছিল, পারফরম্যান্স আর পেশাদারিত্বের এক দারুণ মিশেল যুক্ত হতে যাচ্ছে বার্সার ড্রেসিংরুমে।

এই ধারণার সত্যতা প্রমাণিত হতে সময় লাগেনি। মৌসুমের প্রথমার্ধে, বিশেষ করে বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত, এই স্ট্রাইকার একাই বার্সাকে জিতিয়েছেন অনেকগুলো ম্যাচ। জার্মানি থেকে স্পেনে এসে খুব দ্রুতই মানিয়ে নিয়েছেন, এরপর ছুটিয়েছেন গোলের তুবড়ি। নিজের প্রথম ১২ লা লিগা ম্যাচে করেছিলেন ১৩ গোল, লা লিগার ইতিহাসে কোনো অভিষিক্ত খেলোয়াড়ের জন্য যা সর্বোচ্চ।

লিওনেল মেসির বিদায়ের পরে বার্সেলোনার ড্রেসিংরুমে একজন মহাতারকার অভাব ছিল, লেভানডফস্কি এসে চেষ্টা করেছিলেন সেই জায়গাটা নেওয়ার। পুরোটা পারেননি নিশ্চিতভাবেই, তবে যতটুকু পেরেছেন, সেটাই বার্সাকে লিগ জেতানোর জন্য যথেষ্ট ছিল। জাভি নিজে তার মূল স্ট্রাইকারের সাথে তুলনা করেছিলেন রোনালদিনহোর, কীভাবে একজন খেলোয়াড় একটা দলকে জাগিয়ে তুলতে পারে, বর্ণনা করেছিলেন সেটাও।

মৌসুমের শুরুর দিকে বার্সার ম্যাচের একটা পরিচিত দৃশ্য ছিল মাঠে লেভানডফস্কির সাথে অন্যান্য খেলোয়াড়দের কথোপকথন। বিশেষ করে, নিজের যথাক্রমে ১৬ ও ১৪ বছরের ছোট গাভি আর পেদ্রির সাথে নিয়মিত কথা বলতে দেখা যেত তাকে। মাঠের বাইরেও তাকে দেখা গেছে গাভিকে বিভিন্ন পরামর্শ দিতে। গাভিকে ইংরেজি ভাষা শেখারও পরামর্শ দিয়েছিলেন লেভানডফস্কি।

Image Source: Getty Images

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেব্রুয়ারিতে মাঠে ফেরার পর প্রথম ম্যাচেই রিয়াল বেটিসের বিপক্ষে গোল করেছিলেন লেভানডফস্কি, ঐ ম্যাচের পরে অনেক বার্সা খেলোয়াড়কেই দেখা গিয়েছিল লেভানডফস্কিকে জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানাতে। সেটি ছিল তার ১৪তম গোল, লিগে শুরুর একাদশে ছিলেন এমন প্রথম ১৬ ম্যাচে। তখন পর্যন্ত এই মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলের অধিকারী হিসেবে তার নামটাই উচ্চারিত হয়েছিল।

সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি এখনও আছেন। কিন্তু ঐ ম্যাচের পরবর্তী ১৩ ম্যাচে তিনি মাত্র ছয়টা গোল পেয়েছেন, একই সাথে মিস করেছেন অনেক গোলের সুযোগও। আর গোল কমে যেতেই যেন লেওয়ীর মাঠের নেতৃত্বের ভূমিকাতেও ছেদ পড়েছে। আগের মতো মাঠে কথা বলতে বা সতীর্থদের পরামর্শ দিতে দেখা যাচ্ছে না তাকে।

বেটিসের বিপক্ষের ঐ ম্যাচের তিন সপ্তাহ পরে ওল্ড ট্র‍্যাফোর্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে হেরে ইউরোপা লিগ থেকে বিদায় নেয় বার্সেলোনা। ঐ ম্যাচের একটা মুহূর্তে দেখা যায়, অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও রবার্ট লেভানডফস্কিকে শট নেওয়ার সুযোগ না দিয়ে নিজেই শট নিয়েছিলেন তরুণ ফরোয়ার্ড আনসু ফাতি, এবং অবশ্যই মিস করেছিলেন। ঘটনাটা এবারই প্রথমবারের মতো ঘটেনি। ম্যাচের পরে ড্রেসিংরুমে ফাতির ওপর হতাশা ঝেড়েছেন লেভানডফস্কি, এমন খবরে তাই অতি আশ্চর্যের কিছু নেই।

এই মৌসুমে বার্সার ড্রেসিংরুমে অস্থিরতার খবর বাতাসে ছড়িয়েছে আরো কয়েকবার। মৌসুমের শুরুতে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং আর উসমান দেম্বেলেকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল বার্সা বোর্ডের এক অংশ, এই নিয়ে তাদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। বুসকেটস, আলবা, পিকেদের মধ্যে অসন্তুষ্টি ছিল, কেননা তাদের বেতন কমানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। পর্যাপ্ত গেমটাইম না পাওয়ায় ফ্রাঙ্ক কেসিও ছিলেন খানিকটা অসন্তুষ্ট। ১৯ বছর বয়সী আলেহান্দ্রো বালদের কাছে জায়গা হারানো নিয়ে জাভির সাথে আলবার বচসার কথাও এসেছিল গণমাধ্যমে।

লা লিগা ট্রফি জেতার পর কি সব অসন্তোষ, অনিশ্চয়তা কেটে গেছে? না, বরং বার্সার সামনে এখন আরো কিছু চ্যালেঞ্জ যুক্ত হয়েছে।

পনেরো বছর মূল দলে খেলার পর বার্সেলোনা ছাড়ছেন অধিনায়ক সার্জিও বুসকেটস। আগস্টে ৩৫ পূর্ণ করতে চলা রবার্ট লেভানডফস্কিই বুসকেটসের পর বর্তমান বার্সার সবচেয়ে সিনিয়র খেলোয়াড়। সামনের মৌসুমে তিনি হতে পারেন চার অধিনায়কের একজন, এমন একটা গুঞ্জনও শোনা যায় বার্সার সাজঘরে কান পাতলে। সহ-অধিনায়ক জর্দি আলবার ভাগ্য নিয়েও আছে দোলাচল। পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে ৩৪ বছর বয়সী এই লেফটব্যাককে ছেড়ে দিতে চায় বার্সেলোনা, এমন একটা খবরও উড়ছে ক্যাম্প ন্যুয়ের বাতাসে। গত সপ্তাহে আলবার প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকেও বসেছিলেন বার্সার ক্রীড়া পরিচালকরা।

বার্সার অটুট রক্ষণের চার কাণ্ডারি; Image Source: FC Barcelona Twitter

তবে যত সমস্যাই থাকুক, জাভির অধীনে বার্সেলোনা সেই সকল সমস্যা কাটিয়ে উঠবে, এমনটা প্রত্যাশা করাই স্বাভাবিক, অন্তত এই মৌসুমের পারফরম্যান্সের সাপেক্ষে। এর অন্যতম কারণ, এই দলের তরুণ খেলোয়াড়েরা। প্রতিভা আর তার প্রয়োগ দিয়ে ইতিমধ্যেই জাভির আস্থার জায়গাটা অর্জন করে নিয়েছেন তাঁরা। গাভি প্রতিনিয়ত নিজের উন্নতি করছেন, পেদ্রিকে ছাড়া তো বার্সার মাঝমাঠ কল্পনাও করা যায় না, লেফটব্যাক পজিশনে আলো ছড়াচ্ছেন বালদে, আর ২৪ বছরের রোনাল্ড আরাউহোর মধ্যে ভবিষ্যতের অধিনায়কের ছাপ দেখছেন অনেকে। ওদিকে আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনও দলে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেছেন চমৎকার পারফরম্যান্স দিয়ে। বালদে-আরাউহো-ক্রিস্টেনসেন-ক্যুন্দের রক্ষণটা বার্সাকে দেখাচ্ছে স্বর্ণালী ভবিষ্যতের স্বপ্ন।

তবে হ্যাঁ, সব কিছু এখনো পারফেক্ট নয়। এই গ্রীষ্মেই আরো একবার দল সাজানোর কাজে নামতে হবে বার্সা বোর্ডকে। বার্সার এই লিগ জয়টা নিশ্চিতভাবেই তাতে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে। তবে আজ থেকে অনেক বছর পর, ২০২২-২৩ মৌসুমের দিকে আরেকবার ফিরে তাকালে, এই মৌসুমটাকে চিহ্নিত করা হবে বার্সার ড্রেসিংরুমে নতুন নেতৃত্বের আগমনী মৌসুম হিসেবে। অন্তত সর্বশেষ কিছু মৌসুমের তুলনায়, বার্সার সাজঘর এখন অনেক শান্ত ও নিয়ন্ত্রিত। জাভিও সম্ভবত খেলোয়াড়দের সেরাটা বের করে আনার পদ্ধতিটা জেনে গেছেন। এমন একটা ড্রেসিংরুমে নিজের অভিষেক ঘটছে বলে পনেরো বছর বয়সী লামিন ইয়ামালও নিশ্চয়ই খুশি, জাভি যাকে অভিহিত করেছেন একটা নতুন যুগের পতাকাবাহী হিসেবে।

[শেষ পর্বে থাকছে জাভির ট্যাকটিকাল পরিবর্তন ও মাঠের বাইরের গল্পগুলো]

This Article is in Bengali language. It is about the background story of the la liga title won by FC Barcelona in 2022-23 season. It is translated from an English article, published in the Athletic.

Necessary Source: The Athletic
Featured Image: Getty Images

Related Articles