Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

রোর বাংলার দৃষ্টিতে কোপা আমেরিকার সেরা একাদশ

৭ বছর আগে যে মারাকানায় স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়েছিলেন লিওনেল মেসি, সেই মারাকানাতেই শাপমোচন হলো। ২৮ বছরের ট্রফিখরা কিংবা আলবিসেলেস্তেদের টানা সাত ফাইনাল হারের পর এই শিরোপাটি এসেছে তৃষ্ণার্ত পথিকের সামনে আসা পানির মতো হয়ে। কোপা আমেরিকা শেষেও তাই থামছে না মেসি-বন্দনা। তবে চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে সরিয়ে রাখলে বেশ কিছু চমকও দেখতে পাওয়া যাবে টুর্নামেন্টে। হামেসকে ছাড়াই কলম্বিয়ার দুর্দান্ত খেলা, কিংবা উরুগুয়ের মতো দলের নিজেদের হারিয়ে খোঁজা, অথবা পেরুর দৃষ্টিনন্দন আক্রমণও চোখ জুড়িয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের। এসব কিছু মাথায় রেখেই কোপা আমেরিকার এই আসরের সেরা একাদশ বাছাই করার চেষ্টা করে হয়েছে। তাই নিয়েই আজকের এই আয়োজন।

রক্ষণভাগ

প্রথমেই আলোচনায় আসবে গোলকিপারের কথা। এই জায়গাটি নি:সন্দেহে এমিলিয়ানো মার্টিনেজের। অন্যদিকে, সেন্টারব্যাক পজিশনে থাকার মতো বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় রয়েছেন। নিকোলাস ওটামেন্ডি, থিয়াগো সিলভা, মার্কিনোস এবং এডার মিলিতাও দুর্দান্ত খেলেছেন পুরো কোপাজুড়েই। এদের সাথে যোগ করতে পারেন ইয়েরি মিনা ও হোসে মারিয়া গিমেনেজকেও। তবে দলের সাফল্য ও ধারাবাহিকতার বিচারে সেন্টারব্যাকের দুই জায়গায় থাকবেন মার্কিনোস ও নিকোলাস ওটামেন্ডি।

রাইটব্যাকে থাকবেন হুয়ান কুয়াদ্রাদো, যদিও মূল রাইটব্যাক পজিশনে না খেলে রাইট উইংব্যাকেই বেশি খেলেছেন তিনি। তবে কুয়াদ্রাদোর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে এই জায়গাটি তারই প্রাপ্য।

অন্যদিকে, লেফটব্যাক জায়গাটিতে কেউই তেমন আশানুরূপ ভালো না খেলায় মন্দের ভালোর বিচারে আসবেন মার্কোস আকুনা।

এমি মার্টিনেজ (আর্জেন্টিনা)

Image Source : Mundo Albiceleste

একজন ভালো মানের গোলকিপারের অভাবটা বেশ কয়েক বছর ধরেই ভোগাচ্ছিল আর্জেন্টিনাকে। কাবায়েরো থেকে শুরু করে আরমানি, আন্দ্রাদা, মার্চেসিন অনেকেই গোলবারের নিচে দাড়িয়েছেন, কিন্তু বিশ্বস্ত হয়ে উঠতে পারেননি। এই কঠিন সময়টাতেই আগমন এমি মার্টিনেজের। খেলতেন আর্সেনালের দ্বিতীয় গোলকিপার হিসেবে। সেখান থেকে লেনোর ইনজুরির সুবাদে সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন প্রিমিয়ার লিগে। আর গত মৌসুমে তো অ্যাস্টন ভিলার হয়ে কাটিয়েছেন ক্লাবের ইতিহাসের সেরা গোলরক্ষক হয়েই।

ক্লাবের ফর্মটা টেনে আনলেন জাতীয় দলেও। প্রথম ম্যাচেই ভিদালের পেনাল্টি শটটি ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন। তবে ফিরতি শটে গোল খাওয়ায় ক্লিনশিট রাখা আর হয়ে ওঠেনি। ওই গোল বাদে পুরো টুর্নামেন্টে আর একটিই গোল খেয়েছেন তিনি। কলম্বিয়ার সাথে সেই গোল খাওয়ার শোধ তুলেছিলেন টাইব্রেকারে গিয়ে। একে একে আটকে দিয়েছিলেন তিনটি শট। ফাইনালেও ছিলেন দেয়াল হয়ে। পুরো টুর্নামেন্টে মার্টিনেজ সেইভ করেছেন মোট ১২টি।

কোপা আমেরিকায় আসার আগে বলেছিলেন, লিওনেল মেসির জন্য কোপা জিততে চান। নিজের সবটুকু উজাড় করে দিতে চেয়েছিলেন। সেই কথা যে তিনি রেখেছেন, তাতে দ্বিমত করার উপায় নেই।

হুয়ান কুয়াদ্রাদো (কলম্বিয়া)

Image Source : Goal.com

হামেস রদ্রিগুয়েজ ছিলেন না। ফ্যালকাও নেই আরো আগে থেকেই। সবার অনুপস্থিতিতে শুধু ক্যাপ্টেনের আর্মব্যান্ডই নয়, প্রত্যাশার চাপও ছিল কুয়াদ্রাদোর উপর। হতাশ করেননি তিনি। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ফ্রি কিক থেকে করেছেন এক দুর্দান্ত গোল। ৬ ম্যাচ খেলে করেছেন এক গোল এক অ্যাসিস্ট। মোট সুযোগ তৈরি করেছেন ১৯টি, সাথে রয়েছে ১৮টি কী-পাস। ১৭টি ড্রিবল সম্পন্ন করা কুয়াদ্রাদোই ছিলেন কলম্বিয়ার আক্রমণের মূল কারিগর।

ক্লাবে রাইটব্যাক হিসেবে খেললেও জাতীয় দলে খেলেছেন রাইট উইংব্যাক হিসেবে। তবে তাতে রক্ষণের কাজ কমাননি, ১০টি ইন্টারসেপশন আর ৯টি সফল ট্যাকলই সাক্ষ্য দেয় তার। তাই কুয়াদ্রাদো জায়গা করে নিয়েছেন কোপা আমেরিকার সেরা একাদশে।

মার্কিনোস (ব্রাজিল)

Image Source : PSG talk

রক্ষণের জন্য বরাবরই সুপরিচিত ব্রাজিল। রক্ষণভাগে তাদের তারকার কমতি কখনোই ছিল না। তবে এবার চাপটা মার্কিনোসের উপর একটু বেশিই ছিল। কারণ, একদিকে বুড়িয়ে যাওয়া সিলভা আর অন্যদিকে তরুণ মিলিতাও। তাই রক্ষণের নেতা হিসেবে আবির্ভাব হওয়ার কথা তারই। সে কাজটি তিনি করেছেন যথার্থভাবেই, যার ফলে পুরো টুর্নামেন্টে ব্রাজিল গোল খেয়েছে মাত্র তিনটি। ৭টি ক্লিয়ারেন্সসহ বল পায়ে রক্ষণ থেকেই দলকে দলকে বল যোগান দিয়েছেন। সাথে হেডে করেছেন একটি গোলও। তাই সেন্টারব্যাক হিসেবে সেরা একাদশে থাকছেন মার্কিনোস।

নিকোলাস ওটামেন্ডি (আর্জেন্টিনা)

Image Source : Mundo Albiceleste

অযাচিত পেনাল্টি উপহার দেওয়ার কারণে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের চক্ষুশূল ছিলেন ওটামেন্ডি। অথচ এই কোপাতে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগের ত্রাতা হয়ে উঠলেন তিনিই। আরেক তরুণ সম্ভাবনাময় ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান রোমেরোর ইনজুরির পর একা হাতেই আর্জেন্টিনার রক্ষণদূর্গ গড়ে তোলেন ওটামেন্ডি। সবসময়ই রক্ষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকা আর্জেন্টিনা এবার পুরো টুর্নামেন্টে গোল খেয়েছে মাত্র ৩টি। দুর্দান্ত ব্রাজিলকেও কোনো গোল করার সুযোগ দেয়নি তারা। আর এর সিংহভাগ কৃতিত্বের দাবিদার একজনই, নিকোলাস ওটামেন্ডি।

কোপা আমেরিকায় ৫ ম্যাচ খেলে ওটামেন্ডি সফল পাস দিয়েছেন ১৭৭টি, বল ক্লিয়ারেন্স করেছেন ৯ বার, সাথে ইন্টারসেপশন করেছেন ১১ বার। তার সফল ট্যাকলের সংখ্যা ৬টি। কোচিং স্টাফ ওয়াল্টার স্যামুয়েল আর রবার্তো আয়ালার সাথে কাজ করে ওটামেন্ডি নিজের সেরাটাই ঢেলে দিয়েছেন, যার বদৌলতে আজ আর্জেন্টিনার ২৮ বছরের ট্রফি খরা কাটলো।

মার্কোস আকুনা (আর্জেন্টিনা)

Image Source : Sportskeeda

লেফটব্যাক পজিশনে কেউই এবারের কোপাতে ঠিক নজরকাড়া পারফর্ম করতে পারেননি। তবে রোর বাংলার দৃষ্টিতে এবার জায়গা করে নিয়েছেন মার্কোস আকুনা। সেভিয়ার এই ডিফেন্ডার অবশ্য সব ম্যাচ খেলেননি। নিকোলাস তাহলিয়াফিকোর সাথে অদল-বদল করেই খেলেছেন তিনি। ৪ ম্যাচে মাঠে থেকে আকুনা খেলেছেন সর্বমোট ৩৬০ মিনিট। তাতে সফল ড্রিবলিংয়ের সংখ্যা ৫টি। সাথে কী-পাস ও সুযোগ তৈরি করেছেন চারটি করে।

মূলত আকুনা রক্ষণভাগের চেয়ে আক্রমণভাগেই আর্জেন্টিনাকে সাহায্য করেছেন বেশি। তারপরও রক্ষণভাগে আকুনার অবদান ঠিক উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। একটি ক্লিয়ারেন্সসহ ইন্টারসেপশন করেছেন ৭টি। তাই রোর বাংলার দৃষ্টিতে লেফটব্যাক পজিশনে সেরা একাদশে থাকবেন আকুনা।

মধ্যভাগ

মাঝমাঠে তিনজনের জায়গা দেওয়া সম্ভবত সবচেয়ে কষ্টসাধ্য ব্যাপার। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল দুই দলের মিডফিল্ডাররাই দুর্দান্ত খেলেছেন পুরো কোপাজুড়েই। একদিকে ব্রাজিলের ফ্রেড-ক্যাসেমিরো-পাকেতা ট্রায়ো, আর অন্যদিকে আর্জেন্টিনার প্যারাদেস-লো সেলসো-ডি পল ট্রায়ো। অন্যান্য দল থেকে নাম না নিলেই নয়, এমন খেলোয়াড়ের সংখ্যাও কম নয় – কলম্বিয়ার লুইস দিয়াজ, পেরুর ইয়োতোন, উরুগুয়ের মাতিয়াস ভেসিনো, প্যারাগুয়ের আলমিরন উল্লেখযোগ্য। সাথে যোগ করুন প্রতি ম্যাচেই বদলি নেমে দুর্দান্ত খেলা আনহেল ডি মারিয়াকেও। তবে ম্যাচে অবদানের কথা চিন্তা করলে ব্রাজিলের ক্যাসেমিরো আর আর্জেন্টিনার ডি পল দলে থাকতে বাধ্য। আর অন্য জায়গাটিতে থাকছেন এই কোপা আমেরিকার নতুন আবিষ্কার লুইস দিয়াজ। 

ক্যাসেমিরো (ব্রাজিল)

Image Source : Goal.com

বরাবরের মতোই ‘ট্যাঙ্ক’ নামে খ্যাত ক্যাসেমিরো উপহার দিয়েছেন তার স্বভাবজাত খেলাটিই। মাঝমাঠে ব্রাজিলের মধ্যমণি হয়ে ছিলেন তিনি। ক্যাসেমিরো খেলেছেন, এমন কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হারেনি সেলেকাওরা। যদিও ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে হারের কারণে এই বিস্ময়কর পরিসংখ্যানটিতে যতি পড়েছে। তবে ক্যাসেমিরো নিজের কাজটি ঠিকঠাকভাবেই করেছিলেন, মেসিকে আটকে রেখেছিলেন পুরো ম্যাচেই। শুধু ফাইনালেই নয়, প্রতিটি ম্যাচেই ক্যাসেমিরো খেলেছেন নিজের স্বাভাবিক খেলাই। কলম্বিয়ার বিপক্ষে অন্তিম মুহূর্তে তো করেছিলেন ম্যাচের জয়সূচক গোলটিও।

এই কোপা আমেরিকায় ক্যাসেমিরো ৬ ম্যাচ খেলে সফল ট্যাকল করেছেন সর্বোচ্চ ৯টি। ১৪টি ইন্টারসেপশনসহ ক্লিয়ারেন্স করেছেন ৩টি। পাশাপাশি আক্রমণেও যোগ দিয়েছেন মাঝে মাঝে। তিনটি করে কী-পাস এবং সুযোগ তৈরিও রয়েছে ক্যাসেমিরোর ঝুলিতে। তাই কোনো সন্দেহ ছাড়াই ডিফেন্সিভ মিডে জায়গা করে নিয়েছেন ক্যাসেমিরো।

রদ্রিগো ডি পল (আর্জেন্টিনা)

Image Source : Goal.com

কোপা আমেরিকায় আসার আগেই বলেছিলেন, লিওনেল মেসির জন্য যুদ্ধেও যেতে রাজি তিনি। আক্ষরিক অর্থেই তা মাঠে করেছেন ডি পল। বিখ্যাত ক্যাচফ্রেজ ‘যেখানেই বল, সেখানেই ডি পল’-ও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই কোপা আমেরিকার পর। ফাইনালের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছাড়াও ডি মারিয়ার করা একমাত্র গোলটিও এসেছে ডি পলের বাড়িয়ে দেওয়া অসাধারণ এক লম্বা পাস থেকে। 

মেসির মতোই মাঝমাঠে আর্জেন্টিনার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিলেন ডি পল। আক্রমণে যেমন সাহায্য করেছেন, একইভাবে রক্ষণেও নেমেছেন। দুর্দান্ত স্ট্যামিনা আর সুঠাম শরীরে অসুরের মতো শক্তি কাজে লাগিয়ে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন মাঠের প্রতিটি ইঞ্চিতে। কোপা আমেরিকায় ১টি করে গোল ও অ্যাসিস্ট ছাড়াও ডি পল ৬ ম্যাচে ৬টি কী-পাস ও ৭টি সুযোগ তৈরি করেছেন। রক্ষণেও অবদান রেখেছেন ৬টি সফল ট্যাকল ও ৮টি ইন্টারসেপশন করে। তাই কোপা আমেরিকার সেরা একাদশে তর্কাতীতভাবেই থাকছেন রদ্রিগো ডি পল। 

লুইস দিয়াজ (কলম্বিয়া)

Image Source : sportsstar

টুর্নামেন্টে যৌথভাবে করেছেন সর্বোচ্চ চার গোল। তার মধ্যে দুর্দান্ত দুইটি গোল করেছেন ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সাথে। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচেও শেষ মুহূর্তের গোলে দলকে জিতিয়েছেন। এত সবকিছুও আসলে লুইস দিয়াজের পারফরমেন্স বোঝাতে ব্যর্থ। আক্রমণে প্রতিটি প্রতিপক্ষের রক্ষণেই ত্রাসের সঞ্চার সৃষ্টি করেছিলেন গতি আর ড্রিবল দিয়ে।

ভেনেজুয়েলার সাথে লাল কার্ড খাওয়াতে টুর্নামেন্টে খেলতে পেরেছেন মাত্র ৫ ম্যাচ, তাতেই চার গোল। ৪টি করে কী-পাস ও সুযোগ তৈরি ছাড়াও সফল ড্রিবলিং করেছেন ২৬টি। এক আর্জেন্টিনার সাথেই সফল ড্রিবলিং করেছেন ৯ বার। তাই কোপা আমেরিকার সেরা একাদশের লেফট মিডে থাকছেন লুইস দিয়াজ।

আক্রমণভাগ

আক্রমণভাগে দুইটি নাম অবিসংবাদিতভাবেই থাকার যোগ্য – লিওনেল মেসি এবং নেইমার। আর স্ট্রাইকার পজিশনে কোপা আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি গোল পাওয়া দুই খেলোয়াড় হলেন লাউতারো মার্টিনেজ আর জিয়ানলুকা লাপাদুলা, দুইজনেই পেয়েছেন ৩টি করে গোল। তবে দল ও গুরুত্ববহ গোলের বিবেচনায় এই জায়গাটিতে থাকছেন পেরুর লাপাদুলা।

নেইমার জুনিয়র (ব্রাজিল)

Image Source : Marca

ব্রাজিলের পোস্টারবয় ছিলেন, প্রত্যাশার চাপও ছিল। সব জয় করে দুর্দান্ত খেলেছেন নেইমার। তবে নিজের সর্বোচ্চটা উজাড় করে দিয়েও শিরোপা জেতা হলো না নেইমারের। আটকে গেলেন মেসির আর্জেন্টিনার কাছে। ফাইনালেও আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগকে নাস্তানাবুদ করেছেন, কিন্তু অন্যান্যদের সহযোগিতার অভাবে হার মেনে নিতে হয় নেইমারের।

টুর্নামেন্টে নেইমার মোট কী-পাস দিয়েছেন ২১টি, যেটি কি না মেসির সাথে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। সুযোগ তৈরি করেছেন ২৪টি। সফল ড্রিবলিংয়ের সংখ্যাও ৩৫টি। নিজে করেছেন ২টি গোল ও ৩টি অ্যাসিস্ট। সব মিলিয়ে ব্রাজিলের সব আক্রমণের হোতাই ছিলেন নেইমার। তাই কোনো সন্দেহ ছাড়াই আক্রমণভাগে লেফট উইঙ্গার হিসেবে দলে থাকবেন নেইমার।

জিয়ানলুকা লাপাদুলা (পেরু)

Image Source : Juniper sports

পেরুর আক্রমণভাগের দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ৩১ বছর বয়সী বেনেভেন্তো স্ট্রাইকার জিয়ানলুকা লাপাদুলা। টুর্নামেন্টে তিনি গোল করেছেন ৩টি, সাথে রয়েছে একটি অ্যাসিস্টও। পাশাপাশি দলের হয়ে সতীর্থদের কী-পাস দিয়েছেন ৬টি। আর সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন ৫টি। রিকার্ডো গ্যারেকার দলকে সেমিফাইনালে তুলতে সব মিলিয়ে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছেন লাপাদুলা। তাই এই দলের স্ট্রাইকার হিসেবে থাকছেন তিনিই।

লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা) – অধিনায়ক

Image Source : The athletic

পুরো টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনা গোল করেছে ১২টি। তার মধ্যে সরাসরি ৯টি গোলেই জড়িত তিনি, যেটি কি না ইন্টারন্যাশনাল টুর্নামেন্টে শতকরা হিসেবে যেকোনো খেলোয়াড়ের জন্য সবচেয়ে বেশি অবদান। শুধু তা-ই নয়, আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে এই প্রথম কোনো খেলোয়াড় সর্বোচ্চ গোল, সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট, গোল্ডেন বুট এবং গোল্ডেন বল – সবগুলোরই মালিক হলেন।

তবুও এসব পরিসংখ্যান লিওনেল মেসির মাহাত্ম্য বুঝাতে ব্যর্থ। আকাশসমান চাপ নিয়ে খেলেছেন ম্যাচগুলো। জানতেন, দেশের হয়ে কিছু জেতার জন্য এটিই হতে পারে তার শেষ সুযোগ। শুধু পারফরম্যান্স নয়, অধিনায়ক হিসেবেও দলকে দিয়েছেন সঠিক নেতৃত্ব।

পরিসংখ্যানের আরো একটু গভীরে গেলে মেসির অবদান ফুটে উঠবে ভালোভাবেই। পুরো টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ কী-পাস দিয়েছেন লিওনেল মেসি। ২১টি কী-পাসের সাথে সুযোগ তৈরিও করেছেন ২৬টি, যেটি কি না টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ। এমনকি ৩৬টি সফল ড্রিবলও পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে আর কেউ করতে পারেননি। সাথে তো চার গোল আর পাঁচ অ্যাসিস্ট আছেই। তাই এই দলের রাইট উইঙ্গার ও অধিনায়ক হিসেবে থাকছেন লিওনেল মেসি।

কোচ: লিওনেল স্কালোনি (আর্জেন্টিনা)

Image Source : Goal.com

স্কালোনি ও তিতে দুইজনই ছিলেন দুর্দান্ত। তবে ফাইনালে ট্যাকটিক্যাল লড়াইয়ে তিতেকে পরাজিত করেই শিরোপা জিতেছেন স্কালোনি। ২৮ বছরের আক্ষেপ শেষ পর্যন্ত ঘুচেছে স্কালোনির হাত ধরেই। আর্জেন্টিনার কোচের মিউজিক্যাল চেয়ারে রদবদল হয়েছে অনেক। অনেক নামীদামি, আরাধ্য কিংবা মিডিওকার ট্যাকটিশিয়ান এসেছেন, চলেও গেছেন। কিন্তু শিরোপা এনে দিতে পারেননি। আর এই জায়গাটিতেই স্কালোনি ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। আর্জেন্টিনার টানা ২১ ম্যাচের ‘আনবিটেন রান’-এর কৃতিত্বও পাবেন তিনি। আর তাই এই একাদশের কোচের দায়িত্বে থাকছেন লিওনেল স্কালোনি।

This Bangla article is about the best eleven of Copa America 2021. 

Feature Image : Mundo albiceleste

Related Articles