Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ট্রান্সফার মার্কেটে যত ‘অদ্ভুতুড়ে’ অদলবদল গল্প

পুরোটা সময় ধরে ট্রান্সফার মার্কেট গরম করে রেখে শেষ পর্যন্ত পিএসজিতেই থেকে যাচ্ছেন নেইমার। গুঞ্জন মতে, মোটা অঙ্কের টাকার সাথে বার্সেলোনার কাছে পিএসজি চেয়েছিল ডেম্বেলে ও রাকিটিচের মতো খেলোয়াড়ও। তাই শেষ মুহূর্তে পিছু হটেছে বার্সা।

ট্রান্সফার মার্কেটে খেলোয়াড়ের অদলবদল নতুন কিছু নয়। তবে এই অদলবদলেও বেশ কিছু চমক দেখেছে ফুটবল। যেখানে স্পষ্টতই এক দলের লাভের বিপরীতে অন্য দলের হয়েছে সাক্ষাৎ ভরাডুবি। আজ আমরা দেখবো খেলোয়াড় অদলবদলের এইরকম ছয়টি ঘটনা।

আশলি কোলের বিপরীতে উইলিয়াম গ্যালাস

আর্সেনালের হয়ে মাঝারি গোছের কয়েকটি মৌসুম কাটানো উইলিয়াম গ্যালাসের সাথে আশলি কোলের আদতে কোনো তুলনাই হয় না। এই দুই রক্ষণভাগের খেলোয়াড়ের দুই দলের হয়ে সাফল্যই বলে দেয়, তাদের মধ্যে ব্যবধান কতটুকু। অথচ উইলিয়াম গ্যালাস ও তার সাথে মাত্র ৫ মিলিয়নের বিনিময়েই স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে কোলকে উড়িয়ে আনে ‘লা ব্লুজ’রা।

সেই সময় থেকেই চেলসির হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করতে থাকেন কোল। লন্ডনের এই ক্লাবের হয়ে এই লেফট-ব্যাক জিতেছেন চারটি এফএ কাপ, একটি লিগ কাপ, একটি ইউরোপা লিগ ও একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ। সর্বোপরি, সেই সময়টাতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের একক কর্তৃত্বেও ভাগ বসায় চেলসি। অন্যদিকে, নর্থ লন্ডন ক্লাব আর্সেনালের হয়ে উইলিয়াম গ্যালাসের সর্বোচ্চ অর্জন ছিল লিগে তৃতীয় স্থান অর্জন। 

Image Credit: Getty Images

ফ্যাবিও ক্যানাভারোর বিপরীতে ফাবিয়ান কারিনি

বিশ্বখ্যাত রক্ষণদূর্গের অতন্দ্র প্রহরী, নাকি লাতিন এক অখ্যাত গোলরক্ষক? প্রশ্নটা শোনার পর অনেকেই নাক সিঁটকাবেন, ধুর, এমন তুলনা আবার হয় নাকি! 

জুভেন্টাসে থাকাকালীন সময়ে বুফনের ছায়াতেই কাটাতে হয়েছিল ফাবিয়ান কারিনিকে। এই উরুগুইয়ান গোলরক্ষক সিরি আ’তে খেলতে না পেরে দুই বছরের জন্য ধারে যান ‘লিগ টু’তে। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্যি, ইন্টার মিলান কোনো এক অদ্ভুত কারণে ফাবিয়ান কারিনিকে ক্যানাভারোর সমতুল্য ভেবেছিল।

‘নেরাজ্জুরি’রা ক্যানাভারোর বিপরীতে দলে নেয় কারিনিকে। আর ‘তুরিনের বুড়ি’দের দলে এসে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান ক্যানাভারো। পরের দুই সিজনেই ‘স্কুদেত্তো’ জিতে নেয় জুভেন্টাস। তবে ফিক্সিং কেলেঙ্কারির জন্য তাদের স্কুদেত্তো কেড়ে নিয়ে দ্বিতীয় বিভাগে অবনমিত করে দিলে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন ক্যানাভারো। দল ছাড়ার পরও ২০০৬ বিশ্বকাপে ইতালিকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে জেতান স্বপ্নের বিশ্বকাপ। পরবর্তীতে রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হয়েও ফ্যাবিও ক্যানাভারো জেতেন ব্যালন ডি’অর পুরষ্কার।

Image Credit: FourFourTwo

স্যামুয়েল ইতোর বিপরীতে জ্লা‌তান ইব্রাহিমোভিচ

দু’টি নামই রক্ষণের খেলোয়াড়ের জন্য আতঙ্ক-জাগানিয়া। সেই সময় ইউরোপের অন্যতম পরীক্ষিত সৈনিকের মধ্যে ছিলেন এই দুই স্ট্রাইকার। তবে পেপ গার্দিওলা বার্সেলোনার দায়িত্ব নেওয়ার পর দল থেকে ছেঁটে ফেলেন ইতোকে, আর তার বদলে ন্যু ক্যাম্পে নিয়ে আসেন ২৭ বছর বয়সী জ্লা‌তান ইব্রাহিমোভিচকে। ইন্টার থেকে জ্লা‌তানকে দলে নিতে বার্সেলোনাকে দিতে হয়েছিল ৫৯ মিলিয়ন ইউরো, এর পাশাপাশি ইতোকেও দিতে হয়েছিল ‘নেরাজ্জুরি’দের কাছে।

আর এই চুক্তিতে বেশ বড়সড় লাভই হয় ইন্টার মিলানের। সেই বছরই ইতো মরিনহোর অধীনে ইন্টার মিলানের হয়ে জেতেন ট্রেবল শিরোপা। যদিও চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে কোনো গোল করতে পারেননি ইতো, তবে দলগত দিক দিয়ে সর্বোচ্চ অর্জনই ছিল ইতোর।

আর অন্যদিকে জ্লা‌তানের অবস্থা দাঁড়ায় ঠিক এর বিপরীত। মেসির সাথে সমন্বয় করে খেলতে না পারায় পড়তি ফর্মে চলে যান তিনি। এর পাশাপাশি গার্দিওলার কোচিং স্টাইলের সাথেও নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারেননি এই সুইডিশ স্ট্রাইকার। ফলশ্রুতিতে, মাত্র ১৩ মাসের মাথায় ব্যবসায়িক ও মাঠ দুই দিকের ক্ষতি করেই ইব্রাহিমোভিচকে বিক্রি করে দেয় বার্সেলোনা।

Image Credit : Getty Images

নেমানিয়া মাতিচের বিপরীতে ডেভিড লুইজ

শুধুমাত্র ব্যবসায়িক দিক চিন্তা করলে বেনফিকা এই অদলবদলে বিশাল লাভবান হয়েছিল। চেলসি মালিক রোমান আব্রাহিমোভিচ লুইজকে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে আনতে এক প্রকার উঠেপড়েই লাগেন। তাই মাতিচ ও এর সাথে ২০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ২০১১ সালের শীতকালীন দলবদলে লুইজকে দলে আনেন তিনি। যেহেতু বেনফিকা সেবার ইউরোপা লিগ খেলেছিল, তাই লুইজের চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার কোনো বাধা ছিল না। আর তাতে লুইজ ‘লা ব্লুজ’দের হয়ে সেবার জিতে যান চ্যাম্পিয়ন্স লিগও। বায়ার্নের সাথে পেনাল্টি শুটআউটে জেতা ম্যাচের শুরুর একাদশে ছিলেন লুইজ।

অন্যদিকে, ব্যবসায়িক দিক থেকে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি মাঠেও সাফল্য আসে বেনফিকার। সেবারই ইউরোপা লিগ জিতে নেয় পর্তুগালের এই ক্লাবটি। আর তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন চেলসি থেকে আসা নেমানিয়া মাতিচ।

Image Credit: Chelsea FC

ডেকোর বিপরীতে রিকার্ডো কারেজমা

রিকার্ডো কারেজমার প্রতিভা নিয়ে কোনো সংশয় ছিল না কখনোই। তবে নিজের খামখেয়ালিপনার জন্যই ধারাবাহিকতার বড্ড অভাব ছিল এই পর্তুগিজের। নিজের ক্যারিয়ারের দিকে ফিরে তাকিয়ে হয়তো এখনো আফসোসই করেন কারেজমা। সুবর্ণ সুযোগ ছিল তার কাছে বিশ্বসেরা হওয়ার, ছিলেন বার্সেলোনার মতো ক্লাবের খেলোয়াড়। তবে সেই সময়ে বার্সা কোচ ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড বুঝে গিয়েছিলেন কারেজমার অপারগতা।

সেই সময় ২০০৪ সালে আরেক পর্তুগিজ সেনসেশন ডেকোকে দলে ভেড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করে এই কাতালান ক্লাব। পোর্তো থেকে ডেকোকে আনতে বার্সেলোনার লেগেছিল ১৫ মিলিয়ন ইউরো। আর তার সাথে কারেজমাও গিয়েছিলেন নিজ দেশের ক্লাব পোর্তোতে। পরবর্তীতে ডেকো হয়ে ওঠেন বার্সেলোনার সোনালি সময়ের সারথী। পরের মৌসুমেই ডেকো জিতে নেন চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা।

অন্যদিকে, পোর্তোর এই চুক্তিতে লাভ না হলেও ব্যক্তিগতভাবে কারেজমা লাভবান হয়েছিলেন ঠিকই। পোর্তোতে আগের চেয়ে ধারালো ফর্মে ফিরেছিলেন। তবে পুরো ক্যারিয়ারজুড়েই কখনোই নিজের সামর্থ্যের পুরোটা দিতে পারেননি তিনি।

Image Credit: Associated Press

হেনরিখ মিখিতারিয়ানের বিপরীতে অ্যালেক্সিস সানচেজ

সম্ভবত ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে চুক্তি এটিই। আর্সেনালের হয়ে দুর্দান্ত সময় কাটানো অ্যালেক্সিস সানচেজের প্রতি আগ্রহ ছিল দুই ম্যানচেস্টার ক্লাবেরই। সেক্ষেত্রে টাকা ও রাহিম স্টারলিংকে দিতে চেয়েছিল সিটিজেনরা। অন্যদিকে, টাকা ও মিখিতারিয়ানকে দেওয়ার অফার দিয়েছিল রেড ডেভিলরা। কিন্তু বেশি বেতনের জন্য সানচেজ যোগ দেন ওল্ড ট্র‍্যাফোর্ডে। ৩২ মিলিয়ন ইউরো ও মিখিতারিয়ানের বদলে রেড ডেভিলে আসেন এই চিলিয়ান ফরোয়ার্ড। এর পরের গল্পটা শুধুই হতাশার।

নিজের নামের প্রতি সুবিচার দূরে থাকুক, নিজেকে বরং হারিয়ে খুঁজছিলেন সানচেজ। ম্যানচেস্টারের হয়ে তার গোল অনুপাত প্রতি নয় ম্যাচে একটি করে। বেশিরভাগ সময়েই বেঞ্চে বসে কাটালেও ম্যানচেস্টারকে গুনতে হয়েছে পারিশ্রমিক হিসেবে মোটা অঙ্কের টাকা।

Image Source : Tribuna

অন্যদিকে, মিখিতারিয়ানও সুবিধা করতে পারেনি আর্সেনালে গিয়ে। তবে সানচেজের পরিসংখ্যান থেকে এই আর্মেনিয়ানের পরিসংখ্যান কিছুটা ভালো ছিল। তার গোল অনুপাত ছিল প্রতি ছয় ম্যাচে একটি। তার চেয়ে বড় কথা, মিখিতারিয়ান কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন নিজেকে জানান দেওয়ার, সানচেজ সেটিও করেননি। তাই এই চুক্তিতে কোনো ক্লাবেরই লাভ হয়নি। কিন্তু বড় ক্ষতিটা হয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের।

এই মৌসুমেই ধারে ইন্টার মিলানে গেছেন সানচেজ। তবে মজার ব্যাপার হলো, চুক্তি অনুযায়ী ইন্টারের হয়ে খেলার সময়েও সানচেজের বেতনের চার ভাগের তিন ভাগ বহন করবে রেড ডেভিলরা। অর্থাৎ, এখনো সানচেজ-দুঃস্বপ্ন থেকে বের হতে পারছে না ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

This Bangla article is about the biggest swap deal in transfer market. In this article, the writer recalls the game's most outstanding switch deals in European Transfer Market. Necessary references are hyperlinked inside.

Feature Image : Getty Images

Related Articles