Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

যেভাবে সাদার বদলে হলুদ হয়ে উঠল ব্রাজিলের জার্সির রঙ

ফুটবল ইতিহাসের সফলতম দল ব্রাজিল, পাঁচবার বিশ্বকাপজয় সাথে সুন্দর ফুটবলের অনুসারী হওয়ায় বিশ্বজুড়ে দলটির জনপ্রিয়তাও সবচেয়ে বেশি। তবে এই সাফল্যের পথটি মোটেও মসৃণ ছিল না। আজ যে হলুদ জার্সিতে গৌরবান্বিত পাঁচটি তারকা দেখা যায়, প্রতিটি তারকা অর্জনের পিছনেই আছে অজস্র গল্প। মজার কথা হচ্ছে, শুরুর দিকে ব্রাজিলের কিন্তু এই হলুদ জার্সিটিও ছিল না! ১৯১৪ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক ঘটার সময়ে ব্রাজিলের জার্সির রঙ ছিল সাদা, সেখানে কলার ও হাতার শেষপ্রান্ত ছিল নীল। এই জার্সি পরে ১৯১৯ সালে ঘরের মাঠে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতে নেয় ব্রাজিল, যেটি ছিল ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসের প্রথম শিরোপা।

শুরুর সেই সাদা জার্সি বদলে আজকের এই হলুদ জার্সিতে কেন রূপান্তরিত হলো ব্রাজিল দল?

কারণ খুঁজতে গেলে চলে যেতে হবে বিশ্বকাপের একদম শুরুর সময়ে। ১৯৩০ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপ থেকেই এই আসরে নিয়মিত খেলে আসছিল ব্রাজিল। প্রথম দুই বিশ্বকাপে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও লিওনিদাসের কল্যাণে তৃতীয় আসরে বেশ ভালো খেলছিল তারা। সেমিফাইনালে আগেরবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালির মুখোমুখি হয় সেলেসাওরা। 

ব্রাজিলের প্রথম বিশ্বকাপের জার্সি; Image Source: AFP/Getty Images & FIFA

কিন্তু এই মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তৎকালীন ব্রাজিল কোচ পিমেন্তা আদেমার অদ্ভুতুড়ে এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেন। ফাইনালের কথা ভেবে তিনি ওই আসরে দুর্দান্ত খেলতে থাকা লিওনিদাসকে বিশ্রামে পাঠিয়ে একাদশ সাজান! কোচের এই চরম ভুল সিদ্ধান্তের বড় মাশুল গোণে ব্রাজিল, ইতালির কাছে ২-১ গোলে হেরে বিদায় নিতে হয় সেমিফাইনাল থেকে। যে ফাইনালের কথা ভেবে লিওনিদাসকে বিশ্রামে পাঠিয়েছিলেন পিমেন্তা, সেই ফাইনালই আর খেলা হলো না তাদের।

শুধুমাত্র কোচের ভুলে এভাবে বাদ পড়াটা ব্রাজিলিয়ানদের মনে বেশ বড় একটা ক্ষতের সৃষ্টি করে। এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ১৯৪২ ও ১৯৪৬ সালে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে পারেনি, দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ১৯৫০ সালে আবারও ফিরে আসে বিশ্বকাপ। এবার আয়োজকের দায়িত্ব পায় ব্রাজিল, এক যুগ আগের সেই দুঃখ ভোলার সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে এই আসরটি আসে। আয়োজক হওয়ার সুবাদে সেই মহাকাঙ্ক্ষিত ট্রফির ছোঁয়া পাবে নিজের দেশ, এমন স্বপ্নে পুরো ব্রাজিল বিভোর ছিল। 

আসরে সেলেসাওদের শুরুটাও অবশ্য আশা-জাগানিয়া ছিল, গ্রুপপর্বে দুই ম্যাচ জিতে ও এক ম্যাচ ড্র করে পেয়ে যায় শেষ চারের টিকেট। সেই বিশ্বকাপের ফরম্যাট অবশ্য খুবই অদ্ভুতুড়ে ছিল, শেষ চার দলকে নিয়ে নক-আউট পর্ব আয়োজন না করে আবারও তাদের নিয়ে লিগ পর্বের আয়োজন করা হয়। নিয়ম অনুসারে, এই চার দল একে অপরের মুখোমুখি হওয়ার পর যাদের পয়েন্ট বেশি হবে, তারাই হবে চ্যাম্পিয়ন।

নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে স্পেন ও সুইডেনকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌঁড়ে বেশ এগিয়ে যায় ব্রাজিল। অন্যদিকে, সুইডেনকে হারালেও স্পেনের সাথে ড্র করায় কিছুটা পিছিয়ে ছিল উরুগুয়ে। তাই শেষ ম্যাচ পরিণত হয় অলিখিত ফাইনালে, যেখানে ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত ব্রাজিল। 

১৯৫০ বিশ্বকাপের জার্সি; Image Source: Bob Thomas/Popperfoto via Getty Images & FIFA

সেদিন মারাকানার স্টেডিয়ামের পুরো গ্যালারি কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। প্রায় দুই লক্ষ দর্শক সেদিন ঘরের মাঠে নিজ দেশকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখার স্বপ্নে বিভোর ছিল। খেলার ৪৭ মিনিটে ফ্রিয়াসার গোলে এগিয়েও যায় স্বাগতিকরা, তখন স্টেডিয়ামে ইতঃমধ্যে অগ্রিম বিজয়ের উৎসব শুরু হয়ে গেছে। তবে ৬৬ মিনিটে শিয়াফিনোর গোলে উরুগুয়ে সমতায় ফিরলে সেই উৎসবে কিছুটা ছন্দপতন ঘটে। যেহেতু ড্র করলেও চ্যাম্পিয়ন হতো ব্রাজিল, তাই তখনও সেভাবে ভয়ের বার্তা ছড়িয়ে পড়েনি।

কিন্তু খেলার ৭৯ মিনিটে ঘিঘিয়ার গোলে ২-১ ব্যবধানে উরুগুয়ে এগিয়ে গেলে পুরো স্টেডিয়ামে যেন শ্মশানের নীরবতা নেমে আসে। বহু চেষ্টা করেও খেলায় আর সমতা ফেরাতে পারেনি সেলেসাওরা, পুরো ব্রাজিলকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় উরুগুয়ে। 

এই একটি গোল পুরো ব্রাজিলকে শোকে স্তব্ধ করে দেয়; Image Source: STAFF/AFP/Getty Images

এই অপ্রত্যাশিত হার কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না ব্রাজিলিয়ানরা, ম্যাচের প্রতিটি খেলোয়াড়কে তারা দুষতে থাকে। খেলোয়াড়দের দেশের প্রতি তেমন ভালোবাসা নেই – এই অভিযোগে সবাই সেই বিশ্বকাপের সদস্যদের দিকে আঙুল তুলতে থাকে। সবকিছু দেখে নীরব অভিমানে একে একে জাতীয় দল থেকে প্রায় প্রতিটি সদস্য অবসর নিতে থাকেন। তাতেও অবশ্য ক্ষিপ্ত জনতা ক্ষান্ত হয়নি, খেলোয়াড়েরা অবসরে যাওয়ার পর তাদের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে সেই সময়ের জার্সির ওপর!

তাদের মতে, সেই সময়ের সাদা রঙের জার্সিটি দেশের পতাকাকে কোনোভাবেই প্রতিনিধিত্ব করে না, তাই খেলোয়াড়রা এই জার্সি পরে তেমন উজ্জীবিত হতে পারছে না। তাছাড়া সাদা জার্সি পরে টানা দুই বিশ্বকাপে এভাবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিদায় নেওয়ায় তারা জার্সিটিকে অপয়া বলে চিহ্নিত করে। জনগণের চাওয়া পূরণ করে জার্সির রঙ বদলের সিদ্ধান্ত নেয় ফেডারেশন। তাদের অনুমতি নিয়ে ‘কোরিও ডা মানহা’ নামক একটি সংবাদপত্র জার্সি ডিজাইনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। 

সেই নতুন জার্সি; Image Source: Rolls Press/Popperfoto via Getty Images & FIFA

সেই প্রতিযোগিতায় পেলোটাস শহরের আল্ডর গার্সিয়া নামক ১৯ বছরের এক তরুণের ডিজাইন করা জার্সি বিজয়ী হিসেবে মনোনীত হয়। গার্সিয়ার ডিজাইন করা জার্সিতে ব্রাজিলের পতাকার তিনটি রঙ, অর্থাৎ নীল, হলুদ ও সবুজ প্রতিটিই উপস্থিত ছিল। জার্সির মূল রঙ ছিল হলুদ, আর তার সাথে কলার ও গলায় সবুজ রঙ, শর্টসের রঙ হিসেবে নেওয়া হয় নীল রঙকে, যেখানে সাদা রঙের হালকা সীমানা ছিল। তাছাড়া জার্সির স্পন্সর হিসেবে যুক্ত হয় ব্রাজিলিয়ান কোম্পানি অ্যাথলেটা। 

এই নতুন ডিজাইনের জার্সি পরে ১৯৫৪ বিশ্বকাপ খেলতে নামে সেলেসাওরা, তবে জার্সি বদল হলেও সেলেসাওদের ভাগ্যবদল হয়নি। সেই আসরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেয় তারা। পরের আসরেই এই জার্সিটি তার পয়মন্ত রূপ নিয়ে হাজির হয়, দিদি ও গারিঞ্চার সাথে বিস্ময়বালক পেলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভর করে ফাইনালে চলে যায় তারা, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল স্বাগতিক সুইডেন।

গার্সিয়ার ডিজাইনে সেই জার্সি; Image Credit: CURADORIAS/FLICKR

কিন্তু ফাইনাল শুরুর আগেই ঘটে আরেক বিপত্তি। সুইডেনের জার্সির রঙও হলুদ হওয়ায় ব্রাজিলকে অন্য জার্সি পরে নামতে বলা হয়। এদিকে নিজেদের সাথে কোনো অন্য রঙের জার্সিও ব্রাজিলের ছিল না, তাই বাধ্য হয়ে দ্রুত বাজার থেকে নীল রঙের জার্সি কিনে এনে তাতে ফেডারেশনের ব্যাজ সেলাই করে লাগিয়ে জার্সি হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়।

নিজেদের পয়মন্ত হলুদ জার্সি পরে খেলতে না নামায় এমনিতেই একটু চিন্তায় ছিল ব্রাজিলিয়ানরা, ৪ মিনিটে লিয়েডহোলমের গোলে সুইডিশরা এগিয়ে গেলে সেই চিন্তা আরো বেড়ে যায়। তবে এবার আর ভুল করেনি সেলেসাওরা, ভাভা ও পেলের জোড়া গোল এবং জাগালোর এক গোলে ৫-২ ব্যবধানে সুইডেনকে হারিয়ে অবশেষে সেই আরাধ্য ট্রফির স্পর্শ পায় ব্রাজিল। 

নীল জার্সি পরে এলো প্রথম বিশ্বকাপ! Image Source: Central Press/Getty Images

জার্সি নিয়ে যেভাবে পয়মন্ত-তত্ত্ব নিয়ে এসেছিল ব্রাজিলিয়ানরা, সেই তত্ত্ব অনুযায়ী নীল জার্সিটিই কিন্তু সবচেয়ে পয়া জার্সি হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কথা ছিল। সেই হিসেবে হলুদের পরিবর্তে নীল জার্সিটিকেই প্রথম পছন্দের জার্সি করার দাবি ওঠাটাই কিন্তু স্বাভাবিক ছিল। তবে তেমনটা আর হয়নি, হলুদ জার্সিটিকেই প্রথম পছন্দের জার্সি হিসেবে রেখে নীল জার্সিটিকে দেওয়া হয় দ্বিতীয় পছন্দের জার্সির মর্যাদা।  

এরপর মোটামুটি একই ডিজাইনের জার্সি দিয়ে ব্রাজিল পরের তিনটি বিশ্বকাপ খেলে, যার মধ্যে দু’টি বিশ্বকাপেই চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। ১৯৭৪ সালের জার্সির ডিজাইনে হালকা পরিবর্তন আসে, কলারের বদলে দেওয়া হয় গোল গলা। এদিকে দীর্ঘ ২৩ বছর স্পন্সর হিসেবে থাকার পর সরে দাঁড়ায় অ্যাথলেটা, এবার স্পন্সর হিসেবে আসে জগদ্বিখ্যাত জুতা কোম্পানি ‘অ্যাডিডাস’। স্পন্সর হিসেবে এই জার্মান কোম্পানিকে সঙ্গী করে ১৯৭৮ বিশ্বকাপ খেলতে যায় সেলেসাওরা, এবারের জার্সিতে নতুন হিসেবে যোগ হয়ে সবুজ রঙের সীমানা।

অ্যাডিডাসের সাথে সম্পর্কটা খুব বেশিদিন টেকেনি ব্রাজিলের, ১৯৮১ সালে স্পন্সর হিসেবে যুক্ত হয় টপার। এই কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ব্রাজিল পরের তিনটি বিশ্বকাপ খেলে, এর মধ্যে ১৯৮২ বিশ্বকাপের জার্সি গোল গলার হলেও পরের দু’টি বিশ্বকাপের জার্সিতে কলার ছিল।

১৯৯১ সালে ব্রাজিলের জার্সির স্পন্সর হয় ব্রিটিশ কোম্পানি ‘আম্ব্রো’। অন্য সবার চেয়ে তারা কিছুটা ব্যতিক্রমী জার্সির ডিজাইন করে, হাতা থেকে সবুজ রঙের সীমানা বাদ দেওয়ার সাথে জার্সির মাঝ বরাবর সিবিএফের লোগোর জলছাপ যুক্ত করা হয়। দৃষ্টিনন্দন এই জার্সি পরে দীর্ঘ ২৪ বছর পর আবারও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। 

অনেকের মতে এটিই ছিল ব্রাজিলের সবচেয়ে সুন্দর জার্সি; Photo by Ben Radford/Getty Images

১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জুতা কোম্পানি নাইকির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় ব্রাজিল। দীর্ঘ ২১ বছর পর আজও সেলেসাওদের জার্সির স্পন্সর হিসেবে এই কোম্পানি নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। নাইকি স্পন্সর হওয়ার পর ব্রাজিলের জার্সিতে সবুজের আধিক্য কিছুটা বেড়ে যায়, ১৯৯৮ এর গোল গলার জার্সিতে হাতার সীমানা ছাড়াও হাতা বরাবর সবুজ রঙের দাগ ছিল। ২০০২ বিশ্বকাপের পুরো হলুদ জার্সিতে সবুজ রঙের হালকা ছটা ছিল, এই জার্সি পরেই পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে নেয় ব্রাজিল। এরপর ২০০৬-২০১৮ পর্যন্ত প্রতিটি বিশ্বকাপে প্রায় একই রকম ডিজাইনের জার্সি পরেই খেলেছে ব্রাজিল। ডিজাইনে নতুনত্ব না আনতে পারায় নাইকির উপর অনেকেই কিছুটা ক্ষিপ্ত।

তবে ২০১৯ সালে ব্যতিক্রমধর্মী এক পদক্ষেপের জন্য প্রশংসিত হয় নাইকি। ব্রাজিলের সেই প্রথম কোপা আমেরিকা জয়ের শতবর্ষ উদযাপনে এবারের কোপায় ব্রাজিলের দ্বিতীয় জার্সি হিসেবে নীল রঙের পরিবর্তে একদম প্রথম দিককার সাদা রঙের জার্সিটিকে ফিরিয়ে আনা হয়। ‘অপয়া’ জার্সির ফিরে আসা নিয়ে কিছু মানুষ শঙ্কিত হলেও তেমন কিছুই ঘটেনি, সেই ১৯১৯ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে আবারও ঘরের মাঠে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতে নেয় ব্রাজিল। এই জয়ের পর অনেকেই এই পয়া-অপয়া তত্ত্ব শিকেয় তুলে সাদা জার্সিটিকেই অ্যাওয়ে জার্সি হিসেবে রাখার অনুরোধ করে।

ভবিষ্যতে সেটা হবে কি না, জানা নেই। তবে হলুদ জার্সির সাথে সেলেসাওদের ফুটবল ঐতিহ্য মিশে গেছে, তাতে এই রঙের জার্সিটি ব্রাজিলের ফুটবলে আরো অনেকদিন টিকে থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।

This article is in Bangla language. It's about the history of Brazil football team's world cup kit. For references, please check the hyperlinks inside the article.

Featured Image: Nike

Related Articles