Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ফুটবলের চোকার্স কারা এবং কেন

মীরজাফর নামটা বললে প্রথমে আপনার মনে কার কথা ভেসে আসে? অবশ্যই একজন বিশ্বাসঘাতকের। কিছু কিছু শব্দ অথবা নাম এমন কিছু বিশেষণের প্রতিশব্দ হয়ে যায় যে সেই নাম অথবা শব্দ শুনলে মনের অজান্তেই অন্য কোনো বিষয়ের কথা মনে উঠে আসে। ক্রিকেটে এরকম একটি শব্দ আছে- ‘চোকার’। ক্রিকেটে শব্দটি বললে প্রথমেই চোখের সামনে ভেসে আসে সাউথ আফ্রিকার নাম। বড় টুর্নামেন্টে সাউথ আফ্রিকার পারফর্মেন্স আসলেই চোকার্সের মতো।

ফুটবলেও কিন্তু একটি দলকে চোকার বলা হয়। ইদানীং অনেকেই অবশ্য আর্জেন্টিনা দলটিকে চোকার বলে। পরপর কয়েকটি বড় টুর্নামেন্টের ফাইনাল হারায় সাময়িকভাবে তাদের চোকার বলাটা হয়তো অস্বাভাবিকও নয়। তবে ফুটবলের মূল চোকার বলা হয় আসলে নেদারল্যান্ডকে।

ক্রুয়েফ, অনেকের মতেই সর্বকালের সেরা ফুটবলার; সোর্সঃ pinterest.com

একটি বড় টুর্নামেন্ট জেতার জন্য কোন কোন বিষয় প্রয়োজন? ভালো দল, ভালো খেলোয়াড়। তবে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি প্রয়োজন তা হচ্ছে ফুটবল ঐতিহ্য। এসব বৈশিষ্ট্য থাকার পরও বিশ্বকাপ পেতে পারে এমন দলগুলোর মাঝে এখন পর্যন্ত নেদারল্যান্ডেরই হাত শূন্য আছে। বড় টুর্নামেন্টগুলোতে লক্ষ্য করবেন ব্রাজিল কিংবা জার্মানী যতই খারাপ খেলুক, সবাই ভালো খেললেও তাদের চেয়ে বেলজিয়াম কিংবা ওয়েলসকেই প্রতিপক্ষ হিসেবে চাইবে। বিষয়টি অযৌক্তিকও নয়। খুব খারাপ শুরু করেও ইতালী ১৯৯৪ সালে কিংবা আর্জেন্টিনা ১৯৯০ সালে ফাইনালে খেলেছে। সেটিও টুর্নামেন্টে ভালো খেলতে থাকা অন্যান্য দলকে হারিয়ে। বড় দলগুলো কোন মুহূর্তে ভালো খেলে সেটি বলা যায় না।

এসি মিলানের হয়ে মাঠ কাঁপানো গুলিত, বাস্তেন আর রাইকার্ড তাদের পারফর্মেন্সটাকে জাতীয় দলে পুরোপুরি আনতে পারেননি। সোর্সঃ pbs.twimg.com

ঐতিহ্য বিবেচনা করলে এখন পর্যন্ত নেদারল্যান্ডের আন্তর্জাতিক সফলতা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। ইউরোপিয়ান দল হলেও এদের খেলায় কীভাবে যেন ল্যাটিন সৌন্দর্যটা ফুটে উঠে। নেদারল্যান্ড ফুটবলকে কম গ্রেট খেলোয়াড় উপহার দেয়নি। ফুটবলের মনোযোগী দর্শকই ক্রুয়েফের বিষয়ে জানেন। বিশ্বকাপ জিতলে হয়তো তাকে পেলে-ম্যারাডোনার চেয়েও উপরে ধরা হতো। ভ্যান বাস্তেন তিনবার ব্যালন পাওয়া খেলোয়াড়, রুড গুলিতও একবার ব্যালন পেয়েছিলেন। ব্যালন না পেলেও রাইকার্ড, এডগার ডেভিডস, সিডর্ফ, বার্গক্যাম্প, রোবেন, স্নাইডার, ওভারমার্স, ভ্যান ডার সার এদের প্রত্যেকেই তাদের সময়কে শাসন করে গিয়েছেন। কিন্তু কোনো এক বিচিত্র কারণে জাতীয় দলের হয়ে সর্বোচ্চ সাফল্যটা পাননি।

এই সাফল্য না পাওয়াটা কি তাদের দুর্ভাগ্য? নাকি তারা আসলেই চোকার? এটাই এই লেখায় একটু লক্ষ্য করি।

প্রথম বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ড অংশগ্রহণ করেনি। দ্বিতীয় আর তৃতীয় বিশ্বকাপে প্রথম পর্ব থেকেই বাদ পড়ে। সেই দুই বিশ্বকাপের ফরম্যাটটা ছিল প্রথম পর্ব থেকেই নক আউট ভিত্তিক। দুই টুর্নামেন্টেই মাত্র একটি করে ম্যাচ খেলেই বাদ পড়ে নেদারল্যান্ড। ১৯৫০ আর ১৯৫৪ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ড অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু এরপরের চারটি বিশ্বকাপে বাছাই পর্ব খেলেও বাদ পড়ে যায়।

১৯৭৪ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ড তাদের খেলার স্টাইল দিয়ে পুরো বিশ্বকেই চমকে দেয়। শুরুটা করেছিল ক্লাব ফুটবলে আয়াক্সকে দিয়ে।

নেদারল্যান্ডের ঘরোয়া লীগে আয়াক্স বরাবরই বড় দল ছিল। কিন্তু ইউরোপিয়ান কাপে (বর্তমানে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ) সফলতা পাচ্ছিল না। ‘৭০-এর দশকে এসে রাইনাস মিশেল নামের একজন ট্যাকটেশিয়ানের আবির্ভাব ঘটলো। তিনি আর আরেক গ্রেট ক্রুয়েফ মিলে সম্পূর্ণ নতুনভাবে কিছু চিন্তা করলেন। পুরো বিশ্ব অবাক হয়ে দেখলো ‘টোটাল ফুটবল’ নামের সেই বিস্ময়। পরপর তিনবার ইউরোপিয়ান কাপ জেতার মাঝে টার্গেট নিল জাতীয় দলের হয়ে কিছু করার। ‘মিশেল-ক্রুয়েফ’- সেই একই জুটি, দলের বাকি মূল খেলোয়াড়রাও মোটামুটি একই। দলের পারফর্মেন্সটাও প্রায় একই রকমের ছিল। বাছাই পর্বে কোনো ম্যাচ না হেরেই বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলতে আসলো। পুরো বাছাই পর্বে নেদারল্যান্ড ২৪টি গোল করার বিপরীতে মাত্র ২টি গোল হজম করেছিলো। ‘৭৪ বিশ্বকাপে তাই ফেভারিট হিসেবেই নেদারল্যান্ড মাঠে নামে।

রাইনাস মিশেল এবং ক্রুয়েফ। শুধু নেদারল্যান্ডকেই নন, পুরো ফুটবল বিশ্বকেই নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছিল। সোর্সঃ rondoblaugrana.net

বিশ্বকাপেও সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখে তারা। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মতো বড় বড় দলকে হারিয়েই বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে। ফাইনালের প্রতিপক্ষ ছিল পশ্চিম জার্মানি। তারা গোটা টুর্নামেন্টে যে ফুটবল খেলেছে, ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ পশ্চিম জার্মানি তার অর্ধেকও খেলতে পারেনি। এমনকি পশ্চিম জার্মানি গ্রুপ স্টেজে পূর্ব জার্মানির কাছে হেরে গিয়েছিল, যে পূর্ব জার্মানিকে নেদারল্যান্ড ২-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল তার কিছুদিন পরই।

১৯৭৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে পশ্চিম জার্মানীর বিপক্ষে ম্যাচের একটা মুহূর্ত। সোর্সঃ Wikimedia Commons

ফাইনালের মঞ্চ যেন ক্রুইফ মহাকাব্য লেখার জন্য প্রস্তুত। প্রথম সেকেন্ডেই ক্রুইফের জাদুকরি পায়ের স্পর্শ পেল ফাইনালের বলটি। তারপর গুনে গুনে ১৩টি পাসের পর বল ফেরত এল ক্রুইফের কাছে। বল নিয়ে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডিবক্সে ঢুকে পড়লেন ক্রুইফ। গোল করেই ফেলবেন এমন সময় তাকে ফাউল করে তা প্রতিরোধ করা হল। ক্রুইফের কল্যাণে ডাচরা ১ম মিনিটেই পেল পেনাল্টি। ক্রুইফ টুর্নামেন্টে নিজেদের সেরা স্ট্রাইকার জোহান নিসকেনকে পেনাল্টি নিতে দিলেন এবং গোল! নেদারল্যান্ড তাদের ১ম গোল দিয়ে দিল। জার্মানরা তখনও বলে পাও স্পর্শ করাতে পারে নি।

কিন্তু হায়! বিধাতার ইচ্ছেটা বোধহয় অন্যরূপ ছিল। নাটকের শেষটা তিনি করতে চাইলেন নাটকীয়ভাবেই। ২৫ মিনিটে পশ্চিম জার্মানি পেনাল্টি থেকে গোল দিয়ে সমতায় ফেরে। ৪৩ মিনিটে গার্ড মুলারের আরেকটি অসাধারণ গোল। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি নেদারল্যান্ড। হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ডাচদের।

১৯৭৮ বিশ্বকাপেও নেদারল্যান্ড অপরাজিতভাবেই বাছাই পর্ব পার করে। কিন্তু মূল পর্বে তাদের মূল খেলোয়াড় ক্রুয়েফ দল ছেড়ে চলে যান ইউএসএ-তে সকার লীগ খেলার জন্য। এরপরেও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনাল খেলে। কিন্তু এবারও আরেকটি হার। অনেকের ধারণা সেই দুই বিশ্বকাপেই ফাইনালের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক (১৯৭৪ সালে জার্মানী আর ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা) না হলে ফল ভিন্ন হলেও হতে পারতো।

এরপরের দুই বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ড আবারও বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়। এরপর সুযোগ পায় ১৯৯০ বিশ্বকাপে।

নেদারল্যান্ডকে আমি প্রথম ফলো করি ১৯৯০ বিশ্বকাপ থেকে। সেই বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ড দলে ছিল এসি মিলান মাতিয়ে আসা রুড গুলিত, রাইকার্ড আর ভ্যান বাস্তেন এবং বার্সালোনার হয়ে খেলা রোনাল্ড কোম্যানের মতো খেলোয়াড়। তখন পত্রিকায় একটি কলাম এসেছিল, রুড গুলিত নাকি ম্যারাডোনার চেয়েও ভালো ফুটবলার। বিশ্বকাপে তার ছিটেফোঁটাও দেখতে পাইনি। দ্বিতীয় পর্বে জার্মানীর কাছে ২-১ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছিল তার দল। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে অবশ্য একটু ভালো নেদারল্যান্ডের দেখা পেয়েছিলাম। তাদের প্রথম ম্যাচ দেখি কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে। ব্রাজিল সেই বিশ্বকাপে তুখোড় একটা দল, ৫৩ আর ৬৩ মিনিটে দুই স্টার রোমারিও আর বেবেতোর দুই গোলে পিছিয়ে পড়লেও ৬৪ আর ৭৬ মিনিটে গোল শোধ করে ভালোভাবেই ফিরে আসে। কিন্তু ৮১ মিনিটে ব্রাঙ্কোর অসাধারণ গোলে নেদারল্যান্ড বাদ পড়ে যায়।

ভ্যান ডার সার, অনেক বয়স পর্যন্ত ক্লাবের হয়ে মাঠ কাঁপালেও সেটা জাতীয় দলে আনতে পারেনি। সোর্সঃ chelsea.in.th

টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়লেও ভালো খেলার সুবাদে আমার মনে জায়গা পেয়ে যায় নেদারল্যান্ড। পরের বিশ্বকাপে এই ভালো লাগাটা আরো বেড়ে যায়। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা হারায় উড়তে থাকা আর্জেন্টিনাকে। মাঝ মাঠ থেকে উচু করে আসা বল থামিয়ে বার্গক্যাম্প যেভাবে গোলটা করলেন তা অবিশ্বাস্য। একজন স্ট্রাইকারের তিনটি গুণ অবশ্যই থাকতে হবে- বল রিসিভিং, কন্ট্রোলিং আর প্লেসিং। বার্গক্যাম্পের মাঝে তিনটিই ছিল। ক্লুইভার্টের প্রথম গোলটিও অসাধারণ ছিল। তবে সেই ম্যাচে আর্জেন্টিনাও দুর্দান্ত খেলেছিল। ওর্তেগা ভুল না করলে হয়তো সেমিতে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ক্লাসিকো দেখতে পেতাম। কিন্তু সব সময় তো আর ইচ্ছে পূরণ হয় না।

সেমিতে নেদারল্যান্ড আবার মুখোমুখি হয় ব্রাজিলের। টাইব্রেকারে হারা সেই ম্যাচেও নেদারল্যান্ড লড়াই করেছে সমানে সমানে। ব্রাজিল অবশ্যই যোগ্য ছিল, তবে আমার বিচারে নেদারল্যান্ড সেই ম্যাচে ব্রাজিলের চেয়েও ভালো খেলেছিল। কিন্তু দিনশেষে সব সময় যোগ্য দল জেতে না।

স্নাইডার; সোর্সঃ iFootball.pro

বর্তমানের আরেক অভিজ্ঞ তারকা রোবেন। সোর্সঃ topsy.one

২০১০ বিশ্বকাপে তো অসাধারণ খেলে কোয়ার্টারে ব্রাজিলকে হারায় তারা। প্রথমেই ১ গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে স্নাইডারের দুই গোলে ব্রাজিলকে হারানো একটি অসাধারণ কামব্যাক ছিল। ফাইনালে স্পেনের কাছে হারটাও অপ্রত্যাশিত নয়, তবে নেদারল্যান্ড জিতলে সেটাও অপ্রত্যাশিত হতো না। এবং জিতে গেলে ফুটবল ইতিহাসটা হয়তো একটু ভিন্নভাবেই লেখা হতো। ২০১৪ বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনার কাছে ট্রাইবেকারে হেরে বাদ পড়ে যায় তারা।

১৯৯০ সাল থেকে নেদারল্যান্ডের খেলা দেখি। এর মধ্যে ২০০২ বিশ্বকাপে তো নেদারল্যান্ড মূল পর্বে খেলতেই পারেনি। এটা বাদ দিলে ২০০৬ বিশ্বকাপ ছাড়া বাকি ৫ বিশ্বকাপেই যে দলের কাছে হেরে নেদারল্যান্ড বাদ পড়েছে সেই দলই ফাইনাল খেলেছে। ১৯৯০, ১৯৯৪, ২০১০ এ তো নেদারল্যান্ডকে হারানো দলই চ্যাম্পিয়ন হয়, ১৯৯৮ আর ২০১৪ বিশ্বকাপে হয় রানার্স আপ। ১৯৭৪ সাল থেকে ৮ বার বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলা নেদারল্যান্ডকে হারানো দলটিই সাত বার হয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, নয়তো রানার্স আপ। এটাকে দুর্ভাগ্য বলবেন, নাকি চোকার সেটা বিবেচনার বিষয়।

এডগার ডেভিডস, সানগ্লাস পরে খেলার কারণে নজরে পড়েছিলেন। সোর্সঃ Twitter

ইউরোতে নেদারল্যান্ড অবশ্যই চোক করেছে। নেদারল্যান্ডের উপর সবচেয়ে বিরক্ত লেগেছে ইউরো ২০০০ আর ২০০৮ এ। ইউরো ২০০০ এ নেদারল্যান্ডের গ্রুপে ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, চেক রিপাবলিক আর ডেনমার্ক। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পরের রাউন্ডে উঠার সময় ফ্রান্সকে তারা হারায় ৩-২ গোলে। কোয়ার্টারে যুগোস্লেভিয়াকে ৬-১ গোলে হারিয়ে সেমিতে ইতালীর বিরুদ্ধে ট্রাইবেকারে হেরে যায় তারা।

ইউরো ২০০৮ এ গ্রুপে বাকি দলগুলো ছিল ইতালী, রোমানিয়া আর ফ্রান্স। দ্বিতীয় পর্বে উঠার শঙ্কায় থাকা নেদারল্যান্ড ইতালীকে হারায় ৩-০ গোলে, ফ্রান্সকে হারায় ৪-১ গোলে, আর রোমানিয়াকে হারায় ২-০ গোলে। অথচ দুর্দান্ত খেলতে থাকা এই দল কোয়ার্টারে গিয়ে রাশিয়ার কাছে হারে ৩-১ গোলে।

নেদারল্যান্ডের একমাত্র বড় ধরনের আন্তর্জাতিক শিরোপা; সোর্সঃ LazioWiki

এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফুটবলে নেদারল্যান্ডের সফলতা একটাই, ১৯৮৮ এর ইউরো কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। যদিও রুড গুলিত, কোম্যান, রাইকার্ড, বাস্তেনদের নিয়ে গড়া দলটার বিশ্ব শাসন করার কথা ছিল।

প্রতি বিশ্বকাপ শেষেই চ্যাম্পিয়ন দলের কিছু নতুন সমর্থক সৃষ্টি হয়। নেদারল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হলেও নিশ্চিতভাবে নতুন কিছু সমর্থক তৈরি হবে। কিন্তু বিশ্বকাপ জেতা দূরে থাক, আগামী বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ড বাছাই পর্ব পার হতে পারবে কিনা সেটা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ আছে। নেদারল্যন্ডের গ্রুপে বর্তমানে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম পজিশনে আছে সুইডেন। পরের পজিশনে আছে ফ্রান্স, নেদারল্যনাডের অবস্থান ১০ পয়েন্ট নিয়ে ৩ নম্বরে। ২ নম্বরে থাকতে পারলেও প্লে অফ খেলার একটা সম্ভাবনা থাকবে। এই মুহূর্তে সেটা একটু কঠিনই মনে হচ্ছে।

আমাদের দেশে ল্যাটিনের সমর্থক বেশি থাকায় নেদারল্যান্ডের সমর্থক সেরকম নেই। তবে কখনো যদি নেদারল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হয়, তাহলে আশা করা যায় নেদারল্যন্ডের শৈল্পিক খেলার প্রতি অনেকের নজর পড়বে। তবে দুঃখের কথা হচ্ছে অনেকদিন যাবত নেদারল্যান্ড ফুটবলে সেই অর্থে কোনো বড় তারকা উঠে আসছে না। আগের দুই সেনানী স্নাইডার আর রোবেন বয়সের সাথে লড়াই করছে। অচিরেই তাদের চোকার্স নামটা ঘুচবে সেরকম কোনো সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না।

Related Articles