Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: কারিশমা নাকি স্কোর- কোনটি বেশি কাঙ্ক্ষিত?

আপনি যদি কখনো ইউটিউবে পুরনো দিনের ফুটবল খেলা দেখতে বসেন, তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন ধরনের খেলাটা দেখতে বসেন? ব্যস্ততার এই যুগে বেশিরভাগ মানুষই হাইলাইটস দেখে, বিশেষত গোলের হাইলাইটস। এর মাঝে আবার সুন্দর গোলের হাইলাইটস গুলো একটু বেশিই দেখা হয়। কর্নার কিকে হুট করে জটলার মাঝে গোল করে ফেলা দেখার চাইতে পাঁচজনকে ড্রিবলিংয়ে পরাস্ত করে কিংবা ডি বক্সের অনেক বাইরে থেকে দুর্দান্ত ফ্রি কিকে গোলকিপারকে বোকা বানানো দেখতেই বেশিরভাগ মানুষ আনন্দ লাভ করে।

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো; Source: marca.com

আসলে পেশাদার ফুটবলাররা পেশার তাগিদে ফুটবল খেললেও, দর্শক মূলত ফুটবলটা দেখে আনন্দ পাওয়ার জন্য। এই আনন্দ একেক মানুষ একেক ভাবে পায়, কেউ হয়তো প্রিয় দলকে জিততে দেখে খুশি হয়, কেউ আবার প্রতিদ্বন্দ্বী দলের হার দেখে বেশি আনন্দিত হয়। অনেকে আবার প্রিয় খেলোয়াড় ভালো খেলেও দল হারলে তেমন অখুশি হয় না। তবে স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো সমর্থকের কাছে জয়টাই খুব বেশি মূল্যয়ন পায়। খুব ভালো খেলেও হেরে যাওয়ার চাইতে মোটামুটি খেলে জিততে চাওয়াটাই বেশিরভাগ মানুষ সমর্থন করে।

তবে এর সাথে সাথে মানুষ খেলোয়াড়দের স্কিল তথা দক্ষতাকেও খুব প্রাধান্য দেয়। পেলে, ম্যারাডোনা, জিদান, ক্রুয়েফ, পুসকাস কিংবা স্টেফানো– যারা কিনা সর্বকালের অন্যতম সেরা হিসেবে বিবেচিত হন ফুটবলের ইতিহাসে, তারা যথেষ্ট স্কিলড খেলোয়াড় ছিলেন। আর এই দক্ষতা বিবেচনায় গোলটাই সবসময় মুখ্য নয়।

তবে কোনো খেলোয়াড় যদি স্কিল প্রদর্শনের সাথে সাথে গোলটাও করে যেতে পারেন সমানতালে, তাহলে তিনি ‘এক্সট্রা-অর্ডিনারি’ হবেন। বর্তমানের খেলোয়াড়দের মাঝে মেসি কিংবা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দুজনেই যথেষ্ট দক্ষ তথা স্কিলফুল খেলোয়াড়, সেই সাথে তাদের স্কোরিং ক্ষমতাও অবিশ্বাস্য। তবে গত কয়েক মৌসুম ধরে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো স্কোরিংয়ের দিকে একটু বেশিই মনোযোগী।

গত কয়েক মৌসুম ধরে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো স্কোরিং এর দিকে একটু বেশি মনোযোগী; Source: gq.com

এই ভূমিকায় ক্রিস্টিয়ানো কতটুকু সফল কিংবা বদলে যাওয়া ভূমিকায় ফুটবল ইতিহাস তাকে কতটা স্মরণ রাখবে, সেটাই আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু।

আলোচনা শুরু করার আগে আমাদের বুঝতে হবে যে, স্কিল বলতে আসলে আমরা কোন বিষয়গুলোকে বুঝি?

গোল করাটাও একটা স্কিল, তবে গোল করার সাথে সাথে একজন খেলোয়াড় ম্যাচে কয়টি সুযোগ সৃষ্টি করলেন কিংবা সতীর্থকে কয়টি পাস দিলেন অথবা ড্রিবলিংয়ের মাধ্যমে কয়বার প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করলেন- সেগুলোও স্কিলের মাঝে পড়ে।

রোনালদোর স্কোরিং পরিসংখ্যান প্রমাণ করবে অনেক কিছুই; Source: newsweek.com

ফুটবল ম্যাচে অনেক স্কিলের মাঝে যে বিষয়গুলোকে একটু বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেগুলোতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো গত কয়েক মৌসুমের লা লিগাতে কেমন করেছেন, সেটি একটু লক্ষ্য করা যাক।

কি পাস (Key Pass)

গোল সৃষ্টির পেছনে Key Pass একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সতীর্থর কাছ থেকে পাওয়া সর্বশেষ যে পাসটি গোল অভিমুখে মারা হয় তাকেই Key Pass বলে। এই পাসটিতে যদি গোল সম্পন্ন হয় তাহলে সেটি অ্যাসিস্ট হিসেব গণ্য করা হয়। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর এই কি পাসের হার দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। একটা সময়ে যা কিনা ২ এর উপরে কিংবা কাছাকাছি ছিল, সেটি গত মৌসুমে নেমে এসেছে ১ এর ঘরে।


ম্যাচ প্রতি শট (Shots per Game)

গোল করতে হলে গোল পোস্টে শট নিতে হয়। নিচের ছকটিতে লক্ষ্য করলে প্রতি মৌসুমে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ম্যাচ প্রতি গোল অভিমুখে শটের পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে। এর মাঝে কতগুলোতে তিনি ডি বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়েছেন, কতগুলো বক্সের ভিতর থেকে নিয়েছেন আর কতগুলো ছোট বক্সের ভেতর থেকে নিয়েছেন সেটিও দেখানো হলো।

ডি বক্সের বাইরে থেকে শট

পেনাল্টি এরিয়ার ভেতর থেকে শট

ছোট বক্সের ভেতর থেকে শট

উপরের পরিসংখ্যান দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ধীরে ধীরে অন্যান্য স্কিলের দিকে নজর কমিয়ে গোলের দিকেই নজর বাড়িয়েছেন।

ম্যাচ প্রতি ড্রিবল (Dribbles per Game)

ড্রিবলিং হচ্ছে ফুটবলের অন্যতম সেরা একটি স্কিল। প্রতিপক্ষকে ড্রিবলিং দিয়ে নাস্তানাবুদ করার দৃশ্যটা ক্ষেত্র বিশেষে গোল করার চেয়েও আকর্ষণীয় হয়। রোনালদোর প্রতি ম্যাচে ড্রিবলিংয়ের হিসেব দেখুন।

ম্যাচ প্রতি গড় পাস (Average Passes per Game)

একজন খেলোয়াড় একটি ম্যাচে কতগুলো পাস সম্পন্ন করেছেন, সেটা থেকে তার দলীয় খেলার দক্ষতা আঁচ করা যায়। গত কয়েক মৌসুমে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ম্যাচ প্রতি পাসের সংখ্যাও কমেছে।

 

পরিসংখ্যান দেখে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে, রনের স্কিল আগের চেয়ে অনেকাংশেই কমেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, স্কিল কি তার কমেছে নাকি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এটি ইচ্ছে করে কমিয়ে নিয়ে এসেছেন? যদি ইচ্ছে করে কমিয়ে নিয়ে আসেন, তাহলে সেটার কারণই বা কী? ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর একটি বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে, এটি তার এবং তার দলের সচেতন সিদ্ধান্ত।

স্কিল কি তার কমেছে নাকি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এটি ইচ্ছে করে কমিয়ে নিয়ে এসেছেন?; Source: stylebistro.com

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকা অবস্থাতেও ক্রিস্টিয়ানো যথেষ্ট স্কিল প্রদর্শন করেছেন। এমনকি রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম ১/২ মৌসুমেও তিনি গোলের প্রতি এতটা মনোযোগী ছিলেন না। কিন্তু এক পর্যায়ে তার মনে হলো, খেলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটাই হচ্ছে জয় এবং গোলটা জয় পেতে সাহায্য করে।

এ প্রসঙ্গে তার নিজের বক্তব্য হচ্ছে,

আমি এখনও স্কিল প্রদর্শন করি। হয়তো ম্যানচেস্টারে যা করতাম তেমনটা না, কিন্তু এখনও করি। বর্তমানে আমি প্রথমে গোল করাটাকেই প্রাধান্য দেই, দ্বিতীয়ত অধিক গোল করার দিকে লক্ষ্য রাখি, স্কিল প্রদর্শনের বিষয়টা আসে ৩ নম্বরে।

কাজেই এটা স্পষ্ট যে, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কাছে এই মূহুর্তে গোল করাটাই প্রাধান্য পায়। এখন কথা হচ্ছে, রোনালদো চাইলো আর রিয়াল মাদ্রিদের মতো দলের ম্যানেজমেন্ট সেটা মেনে নিল– বিষয়টা কি এতটাই সহজ?

একটি দল সবসময়েই নিজেদের স্বার্থটাই আগে দেখবে। কখনোই একজন খেলোয়াড়ের স্বার্থের কথা চিন্তা করে নিজেদের লক্ষ্য পরিবর্তন করবে না। যেকোনো ক্লাবের উদ্দেশ্যই থাকবে খেলোয়াড়দের কাছ থেকে তাদের সেরাটা বের করে দলের সর্বোচ্চ সফলতা নিশ্চিত করা। রিয়াল মাদ্রিদে বর্তমানে অন্যান্য কাজ চালিয়ে নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত খেলোয়াড় রয়েছেন। স্কোর করার মতোও খেলোয়াড় রয়েছেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে জ্বলে উঠার জন্য এই বয়সেও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোই তাদের প্রথম পছন্দ। সেটা পরিসংখ্যান দেখলেও বোঝা যায়।

রোনালদোর কাছে এই মূহুর্তে গোল করাটাই প্রাধান্য পায়; Source: Francois Nel/Getty Images

দর্শক হিসেবে রনের এই পরিবর্তন কারো কাছে অপছন্দের হলেও হতে পারে এবং সেটা অযৌক্তিকও নয়। তবে সত্যি কথা হচ্ছে, এই স্কোরিংই তাকে দীর্ঘ সময় ধরে আরেক গ্রেট মেসির সাথে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রেখেছে। মেসি-রোনালদোর সময়ে রোবেন, হ্যাজার্ড, রিবেরি কিংবা সমসাময়িক নেইমারের মতো আরো অনেক স্কিলফুল খেলোয়াড় ছিলেন। বিশেষত ইনিয়েস্তা ছিলেন অসাধারণ।

কিন্তু এক রন বাদে কেউই গত দশ বছরে মেসির সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারেননি। রন যদি তার স্কিলের দিকে মনোযোগী হতেন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তার ড্রিবলিং কিংবা অন্যান্য স্কিল বাড়তো, অ্যাসিস্টও হয়তো বাড়তো কিন্তু গোল কমে যাবার সম্ভাবনা থাকতো। কে জানে হয়তো তিনিও আরেকজন রোবেন অথবা রিবেরির মতোই হয়ে ক্যারিয়ার শেষ করতেন।

একটি বিষয় লক্ষ্য করলে দেখবেন, গত ২০০৮ সাল থেকে যিনি কিনা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন তিনিই ব্যলন ডি অর কিংবা ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার পেয়েছেন। গোলটা গুরুত্বপূর্ণ, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো যে বছর প্রথমবার বর্ষসেরার পুরস্কার পেলেন সেই মৌসুমেও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন তিনি। এমনকি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার থেকে ৭টি গোল এগিয়ে ছিলেন তিনি। সেই বছরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগেরও সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন রোনালদো।

রন বাদে কেউই গত দশ বছরে মেসির সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারেননি; Source: Clive Rose/Getty Images

সেক্ষেত্রে স্কোরিংয়ের দিকে মনোযোগী না হলে হয়তো প্রথম ব্যালনটাই তার শেষ ব্যালন হয়ে থাকতো। কিন্তু এই স্কোরিংই রনকে একটা দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রেখেছে। এর ফলেই রন হয়তো সর্বকালের সেরা দশে চলে এসেছেন (এমনকি কারো কারো মতে সেরা পাঁচে)।

এমনও হতে পারতো যে, রন একইসাথে স্কোরিং আর স্কিল বাড়ানো দুটোই চালিয়ে গিয়েও সফল হতেন। কিন্তু দলীয় স্বার্থেই তার আজ পরিবর্তিত রুপ। তাছাড়া রোনালদো হয়তো দূরদর্শী চিন্তাও করেছিলেন। বয়স বাড়ছিল, ক্যারিয়ার বড় করতে হলে এক সময় স্কিলের চিন্তা ছাড়তেই হতো। সেই পরীক্ষাটা সময় হাতে থাকতেই শুরু করেছিলেন। যদি ব্যর্থ হতেন, তাহলে আবার আগের জায়গায় ফিরে আসা যেত। কিন্তু ৩২-৩৩ বয়স হয়ে যাবার পর ব্যর্থ হলে চাইলেও আগের জায়গায় আসা যেত না।

তবে এই মূহুর্তে যেহেতু তিনি ব্যক্তিগতভাবে সফল হওয়ার সাথে সাথে দলগতভাবেও সফল, তাই তার এই সিদ্ধান্ত সঠিকই বলতে হবে। মরিনহো থেকে শুরু করে আনচেলেত্তি কিংবা বর্তমানের জিনেদিন জিদান সবাই তার কাছ থেকে গোলই চেয়েছেন। আর রোনালদোও সেটা পূরণ করে গিয়েছেন।

শুধু গোল করাতেই নয়, পরিসংখ্যান বলছে অ্যাসিস্টেও রোনালদো ভূমিকা রাখছেন। চ্যম্পিয়ন্স লিগের গত আট মৌসুমের হিসেব ধরলে সম্ভবত রনের অ্যাসিস্টই সর্বোচ্চ। ২০০৯-১০ থেকে ২০১৬-১৭ সিজন পর্যন্ত ৮৮টি ম্যাচে রোনালদোর গোল ৯০টি আর অ্যাসিস্ট ২৪টি। ম্যাচ প্রতি গোলের হার ১০২.২৭ আর অ্যাসিস্টের হার ২৭.২৭। ৮৮টি ম্যাচে ১১৪টি গোলে ছিল রনের প্রত্যক্ষ অবদান। ম্যাচ প্রতি গোল আর অ্যাসিস্টের সম্মিলিত হার হচ্ছে ১২৯.২%।

সবাই তার কাছ থেকে গোলই চেয়েছেন; Source: gq.com

রোনালদোর সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী মেসির একই সময়ে ৮১টি ম্যাচ খেলে গোল সংখ্যা ৭৭টি আর অ্যাসিস্ট ১৮টি। বার্সার হয়ে ৮১টি ম্যাচে ৯৫টি গোলে সরাসরি অবদান ছিল মেসির, যার হার কিনা ম্যাচ প্রতি ১১৭.২৮%।

রোনালদো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল করতে পেরেছেন ৬ বার, যার মাঝে চার মৌসুমই হলো নিজেকে পরিবর্তন করার পর। এর মাঝে তিন মৌসুমেই রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। মেসি সর্বোচ্চ স্কোরার হয়েছেন পাঁচ মৌসুমে।

গত ৮ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো 

 

সিজন প্রতি গোল আর অ্যাসিস্টের শতকরা হারের তুলনা

ব্রাজিলের রোনালদোর কোন রূপটি আপনার কাছে প্রিয়? ১৯৯৮ বিশ্বকাপের নাকি ২০০২ বিশ্বকাপের? ১৯৯৮ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে ফ্লপ থাকলেও বেশিরভাগ ফুটবলপ্রেমীর মনে ২০০২ বিশ্বকাপের ডি বক্স খেলোয়াড়ের চেয়ে ৯৮ এর পুরো মাঠ জুড়ে খেলা রোনালদোকেই মনে রাখার কথা। তবে একটি কথা নিশ্চিত থাকতে পারেন, যদি ২০০২ বিশ্বকাপ রোনালদো জেতাতে না পারতেন, তাহলে ব্রাজিলের মানুষ তাকে সেভাবে মনে রাখত না। স্কিলের সাথে সাথে কার্যকারিতার গুরুত্বও তাই কম না।

স্কিলের সাথে সাথে কার্যকারিতার গুরুত্বও তাই কম না; Source: Twitter

একজন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে মানুষ কীভাবে মনে রাখবে, সেটা তার অবসর নেওয়ার পরেই হয়তো বোঝা যাবে। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত যে, সব মানুষ পরিবর্তিত রূপের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে না। আর যারা খাপ খাওয়াতে পারে তারাও সবাই সফল হন না। রোনালদো দুটোই পেরেছেন।

শুধুমাত্র গোল করতে চাওয়ার সুবিধা হচ্ছে, তাতে গোল সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু উলটো পিঠে এর একটা সমস্যাও ছিল। ফুটবল মাঠে সবচেয়ে কঠিন কাজ এই গোল করাটাই। এ কারণে একটি ম্যাচে যতগুলো সুযোগ সৃষ্টি হয়, তার খুব কম সংখ্যকই গোলে পরিণত হয়। তাই গোলবিহীন কিছু ম্যাচে রোনালদোকে কিছুটা মলিন মনে হয়।

কিন্তু এর মাঝেও রন যেভাবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে গোল করে লড়াইটা জিতে চলেছেন, তাতে তিনি বাড়তি একটা কৃতিত্ব অবশ্যই দাবি করতে পারেন। বিশেষত প্রতিদ্বন্দ্বী মেসির পর পর চার বার ব্যালন জেতার পর এভাবে ফিরে আসার মনের জোরটা সবার থাকে না। রোনালদো যেভাবে সফল হয়েছেন, তাতে ইতিহাস তাকে মনে রাখবে সেটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।

ইতিহাস তাকে মনে রাখবে সেটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায়; Source: unilad.co.uk

আপনি এই পরিবর্তিত রূপের জন্য ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সমালোচনা করতে পারেন, তার খেলা আপনাকে আকৃষ্ট না-ও করতে পারে, কিন্তু এই পরিবর্তিত রূপ দিয়েই তিনি রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবের ইতিহাস ভেঙে নতুন করে লিখে চলেছেন। ফুটবল ইতিহাসের খুব উঁচু জায়গাতেই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জন্য একটি স্থান তাই বরাদ্দ থাকবে।

ফিচার ইমেজ- Getty Images

Related Articles