সকল জল্পনা-কল্পনা ছাপিয়ে ১১ই জুন মাঠে গড়াচ্ছে ইউরো-২০২০, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামছে ইউরোপের সব বড় বড় দলগুলি। ১৯৬৬ বিশ্বকাপজয়ী ইংল্যান্ড, গতবারের বিশ্বকাপ রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়ার পাশাপাশি চেক রিপাবলিকসহ স্কটল্যান্ডকে নিয়ে এবারের ইউরোর গ্রুপ ডি।
গত দশ ম্যাচের মধ্যে আট ম্যাচেই জিতেছে ইংল্যান্ড। চেক রিপাবলিক ইউরো শুরু করছে শেষ ১০ ম্যাচে ৫ জয়ের পাশাপাশি ৪ পরাজয় নিয়ে। স্কটল্যান্ডও গত দশ ম্যাচে ৫ জয়ের পাশে হেরেছে ২ ম্যাচে। অন্যদিকে, গত দশ ম্যাচে ৩ জয়ের পাশে ৫ পরাজয় ক্রোয়েশিয়ার। সাম্প্রতিক ফর্ম অনুসারেই কি নির্ধারিত হবে এই গ্রুপের ভাগ্য? নাকি আছে আরো কিছু ফ্যাক্টর? প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যাক, চলুন।
ইংল্যান্ড
গত ২৫ বছরের সর্বোচ্চ ফিফা-র্যাঙ্কিং (৪) নিয়ে এবারের ইউরো শুরু করতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড। তাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে হ্যারি কেইন, ম্যাসন মাউন্ট, ফিল ফোডেনের মতো তারুণ্যনির্ভর মিডফিল্ডার, স্ট্রাইকাররা। দলে তারকার ছড়াছড়ি থাকায় ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেটকে বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে ২৬ জনের দল নির্বাচন করতে। সে কারণে স্কোয়াড থেকে বাদও পড়তে হয়েছে অনেক পরিচিত মুখকে। বিগত সময়ের পারফরম্যান্সের বিচারে এবং গ্রুপ পর্বের সবগুলো ম্যাচই নিজেদের হোম গ্রাউন্ড ওয়েম্বলিতে খেলতে হবে বলে গ্রুপ ডি'র গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে পরিষ্কার ফেভারিট ইংল্যান্ড। শুধু বরাবরের মতো আন্তর্জাতিক ফুটবলের মঞ্চে খেলতে এসে তালগোল না পাকিয়ে ফেললেই হয়!
তারকায় পরিপূর্ণ দলের একাদশ নির্বাচন করতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হবে কোচ গ্যারেথ সাউটগেটকে। গোলবারের নিচে পুরানো সৈনিক পিকফোর্ডের উপরই ভরসা রাখার সম্ভাবনা বেশি। দুই সেন্টারব্যাক হিসেবেও হ্যারি ম্যাগুয়ের এবং জন স্টোনস খেলবেন, এটাও অনেকটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। তবে সাউথগেট যদি থ্রি-ম্যান ব্যাকলাইন খেলান, তবে রাইটব্যাক কাইল ওয়াকার খেলবেন রাইট সেন্টারব্যাক হিসেবে। এক্ষেত্রে রাইট উইংব্যাক হিসেবে খেলবেন রিস-জেমস কিংবা ট্রিপিয়ার। তবে ব্যাক-ফোর সিস্টেমে ওয়াকারের রাইটব্যাক থাকার সম্ভাবনাই বেশি। লেফটব্যাক নির্বাচনে সাউথটগেটের জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হতে পারে টস করে লুক শ কিংবা জেমস চিলওয়েলের মধ্যে একজনকে বাছাই করা।
মিডফিল্ডে ডেক্লান রাইসের খেলাটা অনেকটা নিশ্চিতই বলা যায়। সাউথগেট ডাবল পিভট খেলালে রাইসের পিভট পার্টনার হতে পারেন লিডসের কেলভিন ফিলিপস। অভিজ্ঞতার বিচারে জর্দান হেন্ডারসনকেও খেলাতে পারেন সাউথগেট। তবে মিডফিল্ডকে একটু আক্রমণাত্মক খেলাতে চাইলে খেলতে পারেন বেলিংহাম। মিডফিল্ডে 'নাম্বার টেন' হিসেবে ম্যাসন মাউন্ট খেলবেন, সেটাও নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
আক্রমণে 'নাম্বার নাইন' হিসেবে থাকবেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন। তার দু'পাশে থাকতে পারেন ফিল ফোডেন এবং মার্কাস রাশফোর্ড। প্রতিপক্ষ দল লো ব্লক ডিফেন্স করলে এবং স্পিড দিয়ে ডিফেন্স ব্রেক করার প্রয়োজন হলে খেলতে পারেন রাহিম স্টার্লিং এবং বাতাসে শক্তিমত্তার জন্য তখন 'নাম্বার নাইন' হিসেবে থাকতে পারেন ডমিনিক কালভার্ট-লুইন।
মূল তারকা
এই সিজনে টটেনহ্যামের হয়ে লিগে ২৩ গোল এবং ১৪ অ্যাসিস্ট করে হয়েছেন একই সাথে লিগের সর্বোচ্চ গোল এবং অ্যাসিস্টদাতা। এক কথায় স্বপ্নের মতো একটা সিজন কাটিয়েছেন কেইন। টটেনহ্যামের ফর্মের ধারাবাহিকতা জাতীয় দলের হয়েও বজায় রাখতে চাইবেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক। কেইন জ্বলে উঠলে দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ফুটবলে শিরোপাখরা ঘুচেও যেতে পারে ইংলিশদের।
হেড টু হেড রেকর্ড
বনাম ক্রোয়েশিয়া (৫ জয়, ২ ড্র, ৩ পরাজয়)
বনাম স্কটল্যান্ড (৪৮ জয়, ২৪ ড্র, ৪১ পরাজয়)
বনাম চেক রিপাবলিক (১১ জয়, ৪ ড্র, ৩ পরাজয়)
সম্ভাবনা
গ্রুপ ডি'র অন্যান্য দলগুলোর তুলনায় শক্তিমত্তায় বেশ এগিয়ে ইংলিশরা। তাই কোনোরকম অঘটন না ঘটলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই রাউন্ড অব সিক্সটিনে পৌছাবে ইংল্যান্ড।
ক্রোয়েশিয়া
চার মিলিয়ন মানুষের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নভঙ্গ ঘোচাতে ক্রোয়েশিয়া চাইবে এবারের ইউরোতে ভালো কিছু করতে। ২০১৮ বিশ্বকাপের ফাইনালিস্টরা বর্তমানে কিছুটা ভাঙাগড়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বকাপে দলের সাফল্যে সামনে থেকে অবদান রাখা রাকিটিচ, সুবাসিচ, মানজুকিচরা আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিয়েছেন। তারপরও এইবারের দলটা কোয়ালিটি এবং অভিজ্ঞতা উভয় বিচারেই বেশ ভারসাম্যপূর্ণ।
দলের গুরুত্বপূর্ণ মিডফিল্ডার ইভান রাকিটিচের অবসরের পরও ক্রোয়েশিয়া এবারেরর ইউরোর অন্যতম সেরা মিডফিল্ড লাইনআপ নিয়ে মাঠে নামবে। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গত সিজনে লুকা মদরিচ ছিলেন ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ফর্মে। ইউরোতেও দলের মিডফিল্ডের ভারসাম্য বজায় রেখে আক্রমণ রচনার দায়ভারও থাকবে তার কাঁধেই। রাকিটিচ-মদরিচ মিডফিল্ড-ডুয়োর কারণে জাতীয় দলের হয়ে বরাবরই আড়ালে থাকা মার্সেলো ব্রোজোভিচও দলে সুযোগ পেয়ে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করছেন নিয়মিতই। এমনকি চেলসির হয়ে গত সিজনে বেশ ভালো পারফর্ম করা মাতেও কোভাচিচও দলের প্রয়োজনে নিজের সেরাটা দিতে প্রস্তুত, সেটা সুযোগ পেলেই জানান দিয়ে চলেছেন। তাই ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডকে থামানোই হবে প্রতিপক্ষ দলগুলোর জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজ।
মিডফিল্ডের মতো অন্যান্য পজিশনগুলোতেও ক্রোয়েশিয়া টেকনিক্যালি দক্ষ খেলোয়াড় দিয়ে পরিপূর্ণ। ক্রোয়েশিয়ান কোচ দালিচ তার দলকে সাধারণত ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে খেলান। এক্ষেত্রে গোলবারের নিচে তার প্রথম পছন্দ ডায়নামো জাগরেবের ডমিনিক লিভাকোভিচ। দুই সেন্টারব্যাক হিসেবে খেলবেন লভরেন এবং ভিদা, তাদের পাশে ফুলব্যাক হিসেবে থাকবেন বারিসিচ এবং ভ্রসালিয়াকো।
মিডফিল্ডে মূল ভূমিকায় খেলবেন দলের প্রধান তারকা লুকা মদরিচ। তার পাশে ডাবল পিভটে খেলবেন ইন্টারের হয়ে দুর্দান্ত সিজন কাটানো মার্সেলো ব্রোজোভিচ। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার রোলে খেলবেন সিএসকে মস্কোর নিকোলা ভ্লাসিচ এবং তার দুই পাশে উইঙ্গার রোলে খেলবেন ইভান পেরিসিচ এবং আন্তে রেবিচ। নাম্বার নাইন রোলে খেলবেন ব্রুনো পেতকোভিচ।
মূল তারকা
নিঃসন্দেহে ২০১৮ ব্যালন ডি'অর জয়ী তারকা এবং বর্তমানে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ নেতৃত্বদানকারী খেলোয়াড় মদরিচ৷ শুধুমাত্র অধিনায়ক হিসেবেই নয়, ক্রোয়েশিয়াকে ভালো করতে হলে দলের মূল তারকা হিসেবে পারফরম্যান্স দিয়েও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে মদরিচকে।
হেড টু হেড রেকর্ড
বনাম ইংল্যান্ড (৩ জয়, ২ ড্র, ৫ পরাজয়)
বনাম স্কটল্যান্ড (০ জয়, ৩ ড্র, ২ পরাজয়)
বনাম চেক রিপাবলিক (১ জয়, ২ ড্র, ০ পরাজয়)
সম্ভাবনা
গ্রুপে ইংল্যান্ডের পর ক্রোয়াটরাই সবচেয়ে শক্তিশালী দল। তাই কোনোরকম অঘটন না ঘটলে তাদের এই গ্রুপ থেকে সেকেন্ড রাউন্ডে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত।
চেক রিপাবলিক
ফুটবল পাড়ায় পুরনো দাপট না থাকলেও চেক রিপাবলিকানরা ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৪০তম স্থানে থেকে ইউরোতে অংশগ্রহণ করছে। এবারের ইউরোতে বাজিমাত করতে তারাও প্রস্তুত। চেক রিপাবলিক দলে হয়তো অতীতের মতো কোয়ালিটিসম্পন্ন ফুটবলার নেই আর, তবে গত ২-৩ বছরে তারা বেশ ধারাবাহিকভাবেই উন্নতি করছে। এবারের ইউরো দলটিতেও নেই কোনো নামিদামি তারকা, কিন্তু দলের সবার দল হয়ে পারফর্ম করা এবং হারবার আগে হার না মানার মানসিকতা নিয়েই তারা ইউরোতে লড়াই করতে আসছে।
চেক রিপাবলিকান কোচ জারোস্লাভ সিলভা তার দলকে সাধারণত এনার্জেটিক ফুটবল খেলান। তার লক্ষ্য থাকে দ্রুতগতির ট্রানজিশনাল ফুটবল খেলে মিডফিল্ডারদের দিয়ে প্রতিপক্ষ বক্সের আশেপাশে ওভারলোড তৈরি করে প্রতিপক্ষ খেলোয়ারদের ভড়কে দেওয়া। তার এ ধরনের গেমপ্লেতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন থমাস সৌচেক, তিনি ২০২০-২১ মৌসুমে ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডের হয়ে সেন্টার মিডফিল্ডার রোলে খেলে ১০টি ওপেন-প্লে গোল করেছেন।
সিলভা সাধারণত তার দলকে ৪-২-৩-১ কিংবা ৪-১-৪-১ ফর্মেশনে খেলান। এক্ষেত্রে গোলবারের নিচে তার প্রথম পছন্দ টমাস ভাসলিক এবং তার সামনে দুই সেন্টারব্যাক হিসেবে সাধারণত ব্রাবেক এবং সেলুস্তকা খেলে থাকেন। দুই ফুলব্যাক রোলে খেলেন স্লাভিয়া প্রাগের জন বোরিল এবং ওয়েস্টহ্যামের ভ্লাদিমির কুফল।
মিডফিল্ডে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রোলে খেলেন টমাস হোলস এবং তার সামনে খেলে থাকেন অধিনায়ক ভ্লাদিমির দারিদা এবং থমাস সৌচেক। তাদের আক্রমণের শুরু সাধারণত মিডফিল্ড থেকে কুইক মুভমেন্টের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। আক্রমণভাগে দুই উইঙ্গার হিসেবে থাকেন লুকাস মাসোপাস্ট এবং জাকুব জাঙ্কটো। তাদের সামনে দলের মূল স্ট্রাইকার হিসেবে খেলবেন বায়ার লেভারকুসেনের প্যাট্রিক শিক।
মূল তারকা
একজন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হয়েও এক সিজনে ১০ গোল করাটা যে কারো জন্যই ঈর্ষণীয় বলা যায়। তবে দলে সৌচেকের ভূমিকা শুধু গোল দিয়েই বোঝানো যাবে না। বল মাঠের যেখানেই থাকে, সেখানেই সৌচেককে খুঁজে পাওয়া যায়। দলের আক্রমণের সূচনা করতেও মূল ভূমিকা পালন করেন তিনি। তাই চেক রিপাবলিকানরা ইউরোতে কেমন করবেন, তার অনেকটাই নির্ভর করবে সৌচেকের পারফরম্যান্সের উপর।
হেড টু হেড রেকর্ড
বনাম ইংল্যান্ড (৩ জয়, ৪ ড্র, ১১ পরাজয়)
বনাম স্কটল্যান্ড (৪ জয়, ১ ড্র, ৪ পরাজয়)
বনাম ক্রোয়েশিয়া (০ জয়, ২ ড্র, ১ পরাজয়)
সম্ভাবনা
স্কটল্যান্ড বাদে গ্রুপ ডি'র অন্যান্য প্রতিপক্ষগুলো চেক রিপাবলিকের জন্য তুলনামূলক বেশ কঠিন প্রতিপক্ষ। তাই তাদের এই গ্রুপ থেকে তৃতীয় হবার সম্ভাবনাই বেশি। তবে বাছাইপর্বের মতো এবারও যদি ইংল্যান্ডকে হারানোর মতো কোনো অঘটন তারা ঘটিয়ে দেয়, তবে পরবর্তী রাউন্ডে পৌছানোর সুযোগও চলে আসতে পারে তাদের সামনে।
স্কটল্যান্ড
ইউরোর মূলপর্বে কোয়ালিফাই করার মাধ্যমে দীর্ঘ ২৩ বছর পর কোনো আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করার যোগ্যতা অর্জন করলো স্কটল্যান্ড। এমনকি ইউরো বাছাইপর্বের প্লে-অফে ইসরায়েল এবং সার্বিয়াকে পেনাল্টি শুটআউটে পরাজিত করে তাদের মূলপর্বে জায়গা করে নেওয়াটাও কম রোমাঞ্চকর ছিল না। কোনোরকম বড় তারকা খেলোয়াড় ছাড়াই স্কটিশ কোচ স্টিভ ক্লার্ক তার দলটাকে তৈরি করেছেন।
স্টিভ ক্লার্ক সাধারণত স্কটল্যান্ডকে পাঁচজনের ডিফেন্সলাইন নিয়ে খেলান। স্কটল্যান্ড দলের মূল দুই তারকাই হচ্ছেন লেফটব্যাক কাইরেন টিয়েরনি এবং অ্যান্ডি রবার্টসন। এক্ষেত্রে কোচ টিয়েরনিকে থ্রি-ম্যান ব্যাকলাইনের লেফট সেন্টারব্যাক এবং রবার্টসনকে লেফট উইংব্যাক রোলে খেলান। গোলবারের নিচে পুরো বাছাইপর্বজুড়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করায় ক্লার্কের প্রথম পছন্দ ডেভিড মার্সাল। অপর দুই সেন্টারব্যাক রোলে খেলবেন গ্রান্ট হানলে এবং লিয়াম কুপার। রাইট উইংব্যাক রোলে খেলবেন স্টিফেন ও'ডনিল। দুই উইংব্যাকের ক্রমাগত ওভারল্যাপের মাধ্যমেই সাধারণত স্কটল্যান্ডের আক্রমণের সূচনা ঘটে।
থ্রি-ম্যান মিডফিল্ডে স্কট ম্যাকটোমিনে, জন ম্যাকগিন এবং ক্যালাম ম্যাকগ্রেগরের খেলার সম্ভাবনা বেশি। তবে আক্রমণের ধার বাড়াতে মিডফিল্ডে নামতে পারেন সাউদাম্পটনের স্টুয়ার্ট আর্মস্ট্রং কিংবা চেলসির বিলি গিলমোরও। সেক্ষেত্রে বাছাইপর্বের ম্যাচগুলোর মতো ম্যাকটমিনেকে সেন্টারব্যাক রোলে দেখা যেতে পারে। আক্রমণভাগে অ্যাডামস, ডাইকস এবং রায়ান ফ্রেজারের মধ্যে যেকোনো দু'জনের নামার সম্ভাবনা বেশি।
মূল খেলোয়াড়
লিভারপুলের হয়ে আরেকটি দুর্দান্ত সিজন কাটানো রবার্টসন নিজের ক্যারিয়ারের প্রাইম সময়েই আছেন বর্তমানে। লিভারপুলের পাশাপাশি স্কটল্যান্ডেও লেফট উইং দিয়ে গড়ে উঠা সমস্ত আক্রমণের মূল চালিকাশক্তির ভূমিকা পালন করেন এই ২৭ বছর বয়সী ডিফেন্ডার। একইসাথে দলের ডিফেন্স এবং আক্রমণ গড়ে তোলার মূল কারিগর হওয়ায় তার উপরই অনেকটা নির্ভর করছে স্কটল্যান্ডের ইউরো সাফল্য।
হেড টু হেড রেকর্ড
বনাম ক্রোয়েশিয়া (২ জয়, ৩ ড্র, ০ পরাজয়)
বনাম চেক রিপাবলিক (৪ জয়, ১ ড্র, ৪ পরাজয়)
বনাম ইংল্যান্ড (৪ জয়, ২৪ ড্র, ৪৮ পরাজয়)
সম্ভাবনা
কাগজে-কলমে সবচেয়ে ছোট দল হিসেবে ৪৪তম ফিফা-র্যাঙ্কিং নিয়ে গ্রুপ ডি'তে অবস্থান করছে স্কটল্যান্ড। সে হিসেবে তাদের এই গ্রুপের চতুর্থ দল বলা যেতে পারে। তবে ফুটবলকে আনসার্টেইন গেম বলার কারণেই হয়তো তাদেরকে সমীহ করতে বাধ্য হবে গ্রুপের বাকি দলগুলো।
রুনি-বেকহাম'রা যা পারেননি, হ্যারি কেইন-স্টার্লিংরা কি সেটা পারবেন? অভিজ্ঞ ক্রোয়েশিয়া কি বিশ্বকাপে রানার্সআপ হওয়ার কষ্ট ঘোচাতে পারবে এবারের ইউরোতে? চেক রিপাবলিকানরা কি পারবে ঐতিহ্যকে বর্তমানে রূপ দিতে? স্কটল্যান্ড কি বিশ্বমঞ্চে নিজেদের চেনাবে অন্যভাবে? এমন অনেক প্রশ্নে সাজানো এবারের ইউরোর গ্রুপ ডি। ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আর কিছুদিন।
This article is in the Bangla language. It is about group D of Euro Championship 2020.
Feature Image: UEFA EURO
Reference: