কবি সুকান্ত বলেছিলেন, 'এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান।' ফুটবলের বড় মঞ্চগুলো যেমন অনেক তারকার বিদায়ের বিষাদময় সুরে সিক্ত থাকে, তেমনই নতুনের জয়গানের কলরবও কান পাতলেই শোনা যায়। এই ইউরোও তার ব্যতিক্রম নয়। দুর্দান্ত প্রতিভাবান কিছু তরুণের দেশের হয়ে প্রথম বড় কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলার স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে এবারই। তাদের কয়েকজনকে নিয়েই আজকের এই আয়োজন।
জুড বেলিংহ্যাম (ইংল্যান্ড)
বয়স মাত্র ১৭। ইংল্যান্ড দলে জায়গা করে নিয়েছেন ২০২০ ইউরোতেই! ১৭ বছর বয়সী এই ফুটবলারের জন্য এ যেন স্বপ্নের চাইতেও বেশি কিছু। তবে এমনি এমনি দলে জায়গা হয়নি জুডের, প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটিয়েই তার এখানে আসা।
২০২০ সালে মাত্র ১৭ বছর ৭৭ দিনে অভিষেক বেলিংহ্যামের। ডর্টমুন্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড়ই নন তিনি কেবল, সবচেয়ে কম বয়সী গোলস্কোরারও। সেই বছরেই গায়ে চাপিয়েছেন ইংল্যান্ডের জার্সি। থ্রি লায়ন্সদের হয়ে খেলে ফেলেছেন চারটি ম্যাচও। চ্যাম্পিয়নস লিগেও খেলা হয়ে গিয়েছে ইতোমধ্যে। তবে জুড বেলিংহ্যামের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি এত শত ইংলিশ ফুটবলারদের ভিড়ে ইউরোতে জায়গা করে নেওয়া।
প্রত্যাশার চাপ তার উপর নেই এতটুকুও। তাই যখনই সুযোগ পাবেন, নিজের সেরাটাই দিতে চাইবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
জামাল মুসিয়ালা (জার্মানি)
মুসিয়ালার গল্পটাও অনেকটা বেলিংহ্যামের মতোই। হুট করেই ২০২০ সালে লাইমলাইটে। বায়ার্নের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেক হয় ফ্রেইবুর্গের সাথে। ইতোমধ্যেই সিনিয়র ক্যারিয়ারে বায়ার্নের হয়ে ২৭ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৬টি।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বয়সভিত্তিক দলগুলোতে খেলেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে। তবে জন্ম জার্মানিতে বিধায় দিনশেষে জার্মানিকেই বেছে নেন জামাল মুসিয়ালা। 'ডাই মানশাফট'দের হয়ে ২০২১ সালে অভিষেক হওয়া মুসিয়ালা খেলেছেন ৩টি ম্যাচ, সেখানে নিজের মুন্সিয়ানাও দেখিয়েছেন। ইউরোতে মাঠে সুযোগ পেলে সেটিই করে দেখানোর জন্য মুখিয়ে থাকবেন জামাল।
ফেদেরিকো চিয়েসা (ইতালি)
বাবা এনরিকো চিয়েসা খেলেছিলেন ইতালির জাতীয় দলে। সেই পথেই হাটলেন ছেলে ফেদেরিকো চিয়েসাও। গত মৌসুমে ফিওরেন্টিনা থেকে ধারে এসেছিলেন জুভেন্টাসে। ৩১ ম্যাচে ৯ গোল আর ৯ অ্যাসিস্ট করে এই মৌসুমের জুভেন্টাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন চিয়েসা। সেই ফর্মটা নিশ্চয়ই টেনে আনতে চান ইউরোতেও।
ইতালির হয়ে অবশ্য ইতোমধ্যেই খেলে ফেলেছেন ২৫টি ম্যাচ। ২০১৮ সালে আর্জেন্টিনার সাথে অভিষেক হওয়ার পর এই প্রথম বড় মঞ্চে নামবেন চিয়েসা। সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় মাঠে সময় পাওয়ারই কথা তার। সেই সময়েই এবারের শিরোপার অন্যতম দাবিদার ইতালির হয়ে ইউরোতে আলো কাড়তে চাইবেন ফেদেরিকো চিয়েসা।
ফিল ফোডেন (ইংল্যান্ড)
গার্দিওলার মতে, ফোডেন নাকি এখনই মেসি রোনালদো সমমানের। খুব অতিরঞ্জিত মনে হলেও অবশ্য ফোডেনের খেলা দেখে থাকলে কথাটিকে একদম ফেলে দিতে ইচ্ছে করবে না। ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে নিয়মিত খেলা ফোডেন এই মৌসুমেও নিজের ক্যারিশমা দেখিয়েছেন প্রিমিয়ার লিগে। সেই সুবাদে আছেন ইউরোর ইংল্যান্ড দলেও।
গত বছর আগস্টে অভিষেক হওয়া ফোডেন থ্রি লায়ন্সদের হয়ে খেলেছেন ৬টি ম্যাচ, তাতে করেছেন ২টি গোলও। সাউথগেট তাকে ইউরোতে খেলাবেন কি না, সেটি নিয়ে সংশয় থাকলেও সাম্প্রতিক ফর্ম ফোডেনের হয়েই কথা বলছে। তবে ইউরো জিততে হলে ফোডেন হতেই পারে সাউথগেটের তুরুপের তাস।
দেজান কুলুসেভস্কি (সুইডেন)
গত মৌসুমে হয়েছিলেন সিরি-আ'র সেরা উদীয়মান তারকা। তবে জুভেন্টাসে এসে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। মৌসুমজুড়ে করেছেন মাত্র চার গোল আর তিন অ্যাসিস্ট। তবে ক্লাব ক্যারিয়ারে যা-ই করুন না কেন, ২১ বছর বয়সী কুলুসেভস্কিকেই ধরা হয় সুইডেনের 'নেক্সট বিগ থিং'।
জাতীয় দলে অভিষেক ২০১৯ সালে। এখন পর্যন্ত খেলেছেন ১৩টি ম্যাচ। তবে এই ইউরোতেই তার উপর প্রত্যাশার চাপ সবচেয়ে বেশি। সুইডেনের আক্রমণভাগের অন্যতম অস্ত্র হয়েই মাঠে নামবেন তিনি। সেই চাপ জয় করে সুইডেনকে আনন্দঘন মুহূর্ত উপহার দিতে পারবেন কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে।
ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং (নেদারল্যান্ড)
ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের নামটা অবশ্য এখানে কিছুটা বেমানান। ডাচদের হয়ে মাঝমাঠের গুরুদায়িত্ব পালন করছেন বেশ কয়েকবছর ধরেই। তবে ইউরোর মতো মঞ্চে ফ্রেঙ্কির উপর লাইমলাইটের আলো থাকবে অন্য সব ডাচদের চেয়ে বেশি। অথচ বড় টুর্নামেন্টে এবারই অভিষেক হতে চলেছে তার।
আয়াক্সের হয়ে নজর কেড়ে বার্সায় আগমন। সেখানেও তাকে নিয়ে তোলা আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। পালাবদলের মধ্য দিয়ে যাওয়া ডাচ ফুটবলেরও নতুন প্রজন্মের ধারক তিনি। দেশের হয়ে ২৭টি ম্যাচ খেলেছেন, তবে ইউরো দিয়েই নতুন প্রজন্মের ডাচদের বিশ্বকে বার্তা দেওয়ার পালা। আর সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দায়িত্বটা থাকবে ডি ইয়ংয়ের কাঁধেই।
পেদ্রি (স্পেন)
এই মৌসুমে বার্সার সবচেয়ে বড় পাওয়া ১৮ বছরের পেদ্রি। দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটানো পেদ্রিকে ইউরোর স্কোয়াডে রাখতে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি লুইস এনরিকেকে। বার্সার হয়ে মাঝমাঠের প্রাণ ছিলেন, স্পেনেও তাকে একই ভূমিকা পালন করতে হতে পারে। যদিও মাঝমাঠের খেলোয়াড়ের প্রাচুর্য স্পেনে; তারপরও শেষ কয়েক ম্যাচে এনরিকে পেদ্রিকে খেলিয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন ইউরোতে শুরু থেকেই দেখা যেতে পারে তাকে।
গত মার্চে লা রোহাদের জার্সি গায়ে অভিষিক্ত পেদ্রি স্পেনের হয়ে খেলেছেন চার ম্যাচ। বার্সেলোনার দুর্দান্ত ফর্ম এবার ইউরোতে জাতীয় দলে টেনে আনতে পারলে স্পেনের পরবর্তী মাঝমাঠের ব্যাটন উঠবে পেদ্রির হাতেই।
ম্যাসন মাউন্ট (ইংল্যান্ড)
চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে করেছিলেন এক দুর্দান্ত অ্যাসিস্ট। সেটিই হয়ে আছে ম্যাসন মাউন্টের পুরো সিজনের প্রতিচ্ছবি। চেলসির হয়ে ৩২ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন এই ২২ বছর বয়সী তরুণ। ৬ গোল আর ৫ অ্যাসিস্ট নামের পাশে লেখা থাকলেও এর চেয়ে বেশি কিছু ছিলেন মাউন্ট। তাই ইউরোতে জাতীয় দলে ডাক পেতে বেগ পোহাতে হয়নি তার।
বিশ্বকাপের পরপরই অক্টোবরে জাতীয় দলে প্রথম ম্যাচ খেলেন মাউন্ট। ইতোমধ্যেই ১৬ ম্যাচ খেলে করেছেন ৪ গোল। ইংল্যান্ডের নতুন প্রজন্মের সারথীদের একজন এই ম্যাসন মাউন্ট। তার ক্যারিশমার উপরই অনেকখানি নির্ভর করছে ইংল্যান্ডের ইউরোর পথ।
জোয়াও ফেলিক্স (পর্তুগাল)
১২৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে যোগদানের পর থেকেই ফেলিক্সের উপর চোখ ছিল সবার। প্রত্যাশার পূর্ণ প্রতিদান না দিতে পারলেও প্রতিভা নিয়ে সংশয় নেই। ২১ বছর বয়সী ফেলিক্স চলতি মৌসুমে ১৪ ম্যাচে ছিলেন শুরুর একাদশে, তাতেই ৭ গোল আর ৬ অ্যাসিস্ট।
তবে পর্তুগালের এক দুর্দান্ত স্কোয়াডে সম্ভবত জায়গা হবে না ফেলিক্সের। বদলি নেমেই তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন তিনি, যে ভূমিকায় তাকে দেখা গিয়েছিল এবারের অ্যাটলেটিকোতে। প্রায় দুই বছর আগে পর্তুগালের জার্সি গায়ে অভিষেক হওয়া ফেলিক্স মাঠে নেমেছেন ১৭ ম্যাচে, তাতে গোলসংখ্যা ৩টি। চলতি ইউরোতে সেই পরিসংখ্যান বাড়ানোই হবে ফেলিক্সের কাজ।
ম্যাথিয়াস ডি লিট (নেদারল্যান্ডস)
ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের মতোই ডাচ ফুটবলের নতুন সেনসেশন। পার্থক্য শুধু খেলার পজিশনে। রক্ষণভাগে খেলা ডি লিট এরই মধ্যে দারুণ সুখ্যাতি ছড়িয়েছেন, আয়াক্স থেকে পাড়ি জমিয়েছেন তুরিনে। সেখানে মাত্র ২১ বছর বয়সেই রক্ষণভাগে দলের মূল খেলোয়াড়।
তবে ডাচ দলে অভিষেকটা হয়েছে আরো মধুর। মাত্র ১৭ বছর বয়সে খেলেছেন কমলা জার্সি পরে। ইতোমধ্যেই ২৬ ম্যাচ খেলে করেছেন ২টি গোল, রক্ষণেও হয়ে উঠেছেন বড় ভরসা। তবে বড় পরীক্ষা সামনে; চোটের কারণে দলে নেই ভার্জিল ভ্যান ডাইক, তাই ইউরোতে বাঘা বাঘা আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের সামনে ডি লিট কতটা অবিচল থাকেন, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
কাই হাভের্টজ (জার্মানি)
টনি ক্রুসের চোখে পরবর্তী প্রজন্মের জার্মানির সবচেয়ে প্রতিভাবান খেলোয়াড় তিনি। একই সুরে তাল মেলাবেন হয়তো টমাস টুখেলও। তাকে যে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের স্বাদ পাইয়ে দিয়েছেন এই ২২ বছর বয়সী তরুণ! চেলসিতে শুরুতে মানিয়ে নিতে না পারলেও বর্তমানে আছেন দুর্দান্ত ছন্দে। ডাক পেয়েছেন জোয়াখিম লো'র ইউরোর দলেও।
জার্মানিতে হাভের্টজের অভিষেক বিশ্বকাপের পরপরই। ১৪ ম্যাচ খেলে করেছেন তিনটি গোল। জার্মানির ইউরো যাত্রা দীর্ঘায়িত হলে মূল দলেও তার এবার সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা হলেও রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতিভার পূর্ণ বিচ্ছুরণটাই মাঠে দেখতে চাইবেন জার্মান সমর্থকেরা। সেটি দেখাতেও প্রস্তুত সদ্যই চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে গোল করা কাই হাভের্টজ।
রুবেন দিয়াজ (পর্তুগাল)
এক রুবেন দিয়াজই পুরো খোলনলচে পাল্টে দিয়েছেন ম্যানসিটির ডিফেন্স। ফলাফল - নির্বাচিত হয়েছেন এই মৌসুমের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে। ২৪ বছর বয়সী দিয়াজের লাইমলাইটে আসাটাও তাই খুব দ্রুতই হয়ে গেল। অবশ্য পর্তুগালের হয়ে খেলছেন ২০১৮ সালের বিশ্বকাপের পর থেকেই।
তবে এই ইউরো চরম পরীক্ষা নিতে পারে দিয়াজের। দুর্দান্ত এক দল নিয়ে পর্তুগাল এবার শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে অন্যতম ফেভারিট। তবে দল পড়েছে গ্রুপ অফ ডেথে, একই গ্রুপে রয়েছে ফ্রান্স আর জার্মানির মতো দুর্দান্ত আগ্রাসী দুই দল। আর তাই দলের রক্ষণভাগের মূল দায়িত্বটা পালন করতে হবে রুবেন দিয়াজকেই। আর গত মৌসুমে সিটিজেনদের হয়ে তার পারফরম্যান্সই বলে দেয়, সে দায়িত্বের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত এই রক্ষণভাগের ত্রানকর্তা।
জ্যাডন সাঞ্চো (ইংল্যান্ড)
তরুন তুর্কি বলা হলেও সম্ভবত এই ইউরোর সবচেয়ে বড় গেমচেঞ্জারদের একজন হতেই এসেছেন সাঞ্চো। ডর্টমুন্ডের হয়ে গোল এবং অ্যাসিস্ট - দুটোতেই সমান তালে রেকর্ড ভাঙাগড়ায় মেতেছেন গত কয়েক বছর। বয়স মাত্র ২১, তাতেই ডর্টমুন্ডের হয়ে ১৫৭ ম্যাচ খেলে করেছেন ৫৫ গোল আর ৬৩ অ্যাসিস্ট!
তবে এবার দেশের হয়ে কিছু দেওয়ার পালা সাঞ্চোর। জাতীয় দলে অভিষেক ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে। ১৯ ম্যাচে ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে করেছেন মাত্র ৩ গোল। সাঞ্চোর আসল পরীক্ষা এবার তাই ইউরো। ইংল্যান্ডের হন্যে হয়ে খোঁজা একটি শিরোপার প্রধান নিয়ামক হয়ে ওঠার সব রসদই আছে সাঞ্চোর ঝুলিতে। সময়মতো সেসব সাঞ্চো আদৌ ব্যবহার করতে পারবেন কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ইউরোর মঞ্চ তো সব তরুণ ফুটবলারদের জন্যই স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন আর চাপের মিশেলে অনেকেই খেই হারিয়ে ফেলেন। আবার অনেকেই জ্বলে ওঠেন অগোচরে। তেমনি আড়ালে থেকে জ্বলে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে আলেক্সান্ডার ইসাক, ফেরান তোরেস, ড্যানিয়েল জেমস কিংবা ওলেক্সান্ডার জিনচেঙ্কো প্রমুখদের। তবে কার জন্য এই ইউরো হতে চলেছে ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট? সে প্রশ্নের উত্তরটা মিলবে খুব দ্রুতই। আপাতত তবে ইউরোতেই চোখ রাখুন!
This article is about the young stars who will play their first international tournament this EURO 2020. Necessary information are hyperlinked in the article.
Feature Image Credit: Redbubble
Background Image Credit: Photo by Chaos Soccer Gear on Unsplash