থ্রি লায়ন্সের বিখ্যাত নীল ক্যাপ জ্যাক লিচের মাথায় উঠেছে খুব বেশিদিন হয়নি। টেস্ট ক্যারিয়ারের বয়স তো দুই বছরই পেরোয়নি এখনো! তবে ক্যারিয়ারের হাঁটি-হাঁটি-পা-পা'র এই সময়েও যদি লিচের টেস্ট ক্যারিয়ার থেমে যায়, লিচ খুব একটা আক্ষেপে পুড়বেন বলে মনে হয় না। ৯ টেস্টের ছোট্ট ক্যারিয়ারেই তো জমা করেছেন নাতি-নাতনীদের মাঝে গল্প করার জন্যে ঢের রসদ। শুধু নিজের জন্যে বলাটা বোধহয় ভুলই হলো, ২৬ আগস্ট হেডিংলিতে চোখ রাখা সকল দর্শকের মনেই তো লিচ তৈরি করে দিয়েছেন এক অবিস্মরণীয় গল্প। যে গল্পে বারেবারেই ঘুরেফিরে আসবেন বেন স্টোকস, ফিরে আসবে নাথান লায়নের রানআউট মিস আর ফিরে আসবে চশমা চোখের জ্যাক লিচের অপরাজিত ১ রান। যে ১ রান লিচকে পাইয়ে দিয়েছে অমরত্বের চিঠি।
পাঠক, লিচের এই এক রানের ইনিংসের স্মৃতি টাটকা থাকতে থাকতেই চলুন ঘুরে আসি ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে থাকা আরও কিছু ইনিংসে, যে ইনিংসগুলো দুই অঙ্কের ঘরে পা না রেখেও দাগ কেটেছে ইতিহাসে।
জিওফ অ্যালট, ০ (৭৭) - প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা
১৯৯৯ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী ছিলেন জিওফ অ্যালট। নিজের সময়ে নতুন বল হাতে ব্ল্যাক ক্যাপসদের মূল ভরসা ছিলেন এই কিউই ভদ্রলোক। অবশ্য বল হাতে যতটা স্বচ্ছন্দ দেখাতো, ব্যাট হাতে ছিলেন পুরোই বিপরীত। খোদ নিউজিল্যান্ড ড্রেসিংরুমেই তো এ নিয়ে রসিকতা চালু হয়েছিল, 'প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অ্যালটের মোট রান একশো ছুঁতে পারবে, নাকি এর আগেই পৌঁছে যাবেন শত উইকেটের মাইলফলকে!'
ক্যারিয়ার অবশ্য উইকেটের চেয়ে রানসংখ্যা বেশি নিয়েই শেষ করেছিলেন। কতটা বেশি? ১০৭ রানের বিপরীতে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে উইকেট পেয়েছিলেন ১০২টি।
এই ১০৭ রানের মাঝে ২৭ রান এসেছিল টেস্ট ক্রিকেটে। তবে টেস্ট আঙিনায় তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন যে ইনিংসের জন্য, সে ইনিংসে তিনি কোনো রানই করেননি।
তা ১৫ ইনিংস ব্যাট করে ৬টি শূন্য রানের মালিকের কোন শূন্যটি এত বিখ্যাত? তা অমন ৭৭ বল খেলেও রানের খাতায় দাগ কাটতে না পারলে তা বিখ্যাত বনে যেতে বাধ্য!
এমনিতে ওই ম্যাচকে মনে রাখার কোনো কারণ নেই। ড্যারিল কুলিনানের অপরাজিত ২৭৫ রানের পরেই নিশ্চিত হয়েছিল, অকল্যান্ড টেস্টে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা হারছে না। কুলিনানের সাথে সাথে গ্যারি কারস্টেনের ১২৮ আর জন্টি রোডস, শন পোলকের অর্ধশতকে দক্ষিণ আফ্রিকা যে পৌঁছেছিল ৬২৮ রানের পাহাড়ে। ইডেন পার্কে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের জন্য তাই ড্র করাই ছিল জয়ের সমান।
নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরাও তা বুঝতে পেরে ব্যাট করতে শুরু করেছিলেন শম্বুকগতিতে। প্রথম ইনিংসে পঞ্চাশ ছাড়ানো স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছিলেন একজনই, দশ নম্বরে নামা সাইমন ডুল। কী অদ্ভুত বৈপরীত্য দেখুন, ডুল আউট হতেই যিনি ক্রিজে নেমেছিলেন, সেই জিওফ অ্যালট ব্যাট করেছিলেন পুরো দলের মাঝে সর্বনিম্ন স্ট্রাইক রেটে। শূন্য রানে আউট হলে তো কোনো স্ট্রাইক রেট থাকে না!
অবশ্য আউট হবার আগে যে ৭৭ বল খেলেছিলেন, তাতেই ঢুকে গিয়েছিলেন ইতিহাসে। ইংল্যান্ডের রিচার্ড এলিসনকে হটিয়ে বনে গেলেন রান না করে সবচেয়ে বেশি বল মোকাবেলা করা ক্রিকেটার।
তার এমন ব্যাটিং বীরত্বে, নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসের শেষ উইকেটে যোগ করেছিল ৩২ রান, যার পুরোটাই এসেছিল হ্যারিসের ব্যাটে। যদিও ফলো-অন এড়ানো যায়নি ওই জুটিতে, তবে একশো মিনিটের বেশি স্থায়িত্বে হ্যারিস-অ্যালট জুটি নিশ্চিত করেছিল, দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচ বাঁচানোর চাপ কিছুটা হলেও কমবে দলের বাকি ব্যাটসম্যানদের।
কিউই ব্যাটসম্যানরা তা পেরেছিলেন। শেষদিনে আর ক্রিজে নামতে হয়নি অ্যালটকে। পঞ্চম দিনে ৮৩ ওভার ব্যাট করে প্রথম চার কিউই ব্যাটসম্যানই নিশ্চিত করেছিলেন ম্যাচের ফলাফলের ঘরে 'ড্র' লেখা। জিওফ অ্যালটও তাই হাসিমুখে তার ইনিংসকে স্বীকৃতি দিতে পেরেছিলেন, 'নিজের ক্যারিয়ার-সেরা ডাকের!'
কোনো টেস্ট ইনিংসেই এর আগে ২০ বল মোকাবেলা না করা এক ক্রিকেটারের জন্যে এ দাবি অতিশয়োক্তি নয় মোটেই।
মন্টি পানেসার, ৭* (৩৫) - প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া
ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের অফিসিয়াল ইউটিউব পেজে এই টেস্টকে স্বীকৃতি দিয়েছে 'দ্য গ্রেট এসকেপ' নামে। তা কানের পাশ গিয়ে শোঁ শব্দে গুলি চলে গেলে এমন স্বীকৃতি দেয়াই যায়।
ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা, এমন সব বিশেষণে বিশেষায়িত করে ক্রিকেটকে যতই গৌরবান্বিত করার চেষ্টা চলুক, ওই ম্যাচের ফল থেকে ইংল্যান্ডের জয়ের সম্ভাবনা তো শূন্য হয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ৬৭৪ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করার পরেই। প্রথম ইনিংসের পরে দ্বিতীয় ইনিংসের প্রচেষ্টাতেও যখন ছোঁয়া গেল না অস্ট্রেলিয়ার পাহাড়সম রান, ম্যাচ বাঁচানোর জন্যে ইংল্যান্ডের সামনে কেবল একটিই উপায় বাকি ছিল, কোনোরকমে সময় কাটিয়ে দেয়া।
কলিংউড তা কাটিয়েও দিচ্ছিলেন। পুরো দলের ভার একাই বয়ে নিয়ে শেষদিন খেলেছিলেন ২৪৫ বল, ক্রিজে কাটিয়েছিলেন ৩৪৪ মিনিট। পুরো ইনিংসে করা একমাত্র ভুলের খেসারত দিয়ে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে পল কলিংউড যখন আউট হলেন, দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের রান তখন ২৩৩। প্রথম ইনিংসে করা ৪৩৫ রানের পরেও অস্ট্রেলিয়ার চাইতে ইংল্যান্ড পিছিয়ে ৪ রানে।
ইংল্যান্ড সমর্থকদের এ নিয়ে ভাবতে বয়েই গেছে ততক্ষণে। রান-উইকেট ছাপিয়ে ম্যাচের মূল নির্ধারক যে হয়ে উঠেছিল ঘড়ির কাঁটা। কলিংউড আউট হয়ে শেষ জুটি মন্টি পানেসার আর জেমস অ্যান্ডারসনের জন্য বরাদ্দ রেখেছিলেন ৩৭ মিনিট।
জেমস অ্যান্ডারসনকে সাথে নিয়ে মন্টি পানেসার তুলেছিলেন ১৯ রান। কাটিয়ে দিয়েছিলেন সেই ৩৭ মিনিট। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল এভাবে ম্যাচ বাঁচানোয় পানেসার-অ্যান্ডারসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছিল নিশ্চিত, সাথে ধন্যবাদ প্রাপ্য ছিল ইংল্যান্ড দলের দ্বাদশ ক্রিকেটার বিলাল শাফায়াতেরও। কখনো গ্লাভস এনে, কখনো পানি খাওয়ানোর নাম করে মাঠে ঢুকে যে খেয়ে নিয়েছিলেন ৩৭ মিনিটের মাঝে বেশ খানিকটা সময়!
কোর্টনি ওয়ালশ, ০* (৫) - প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া
এমনিতে পাঁচ বল খেলে শূন্য রানে অপরাজিত থাকাটা এমন ঘটা করে বলার মতো ব্যাপার নয়। কিন্তু প্রসঙ্গ যখন টেস্ট ক্রিকেটের অমর এক অঙ্কের ইনিংস, এই ইনিংসের কথা না এলে প্রসঙ্গটাই তো প্রাসঙ্গিকতা হারাবে। ম্যাচটাই তো 'সর্বকালের সেরা' টেস্ট ম্যাচের স্বীকৃতি পায় অনেকের চোখে।
সে ম্যাচে ব্রায়ান লারার অপরাজিত ১৫৩ রানে ভর করে অস্ট্রেলিয়াকে উইন্ডিজ হারিয়েছিল এক উইকেটে। ৩০৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে, অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে নেহেমিয়া পেরি আউট হবার পরে উইন্ডিজের দরকার ছিল ৬০ রান।
দশম ব্যাটসম্যান কার্টলি অ্যামব্রোসকে সাথে নিয়ে লারা ৫৪ রান তুলে ফেলার পরে ম্যাচ যখন উইন্ডিজের পকেটে বলেই ভেবে আকুল হয়েছিলেন উইন্ডিজ সমর্থকেরা তখনই ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো এই ম্যাচে এলো শেষ মোচড়। জেসন গিলেস্পির ব্যক্তিগত ৪৪ তম ওভারের প্রথম বলেই আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে হাঁটা ধরলেন অ্যামব্রোস, আর ওয়ালশ নামলেন তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ বল মোকাবেলা করতে। লেখার এ পর্যায়ে এসে একটি তথ্য জানিয়ে রাখা খুবই জরুরি মনে হচ্ছে, টেস্ট ক্রিকেটের ১৪২ বছরের ইতিহাসে ওয়ালশের চেয়ে বেশিবার শূন্য রানে আউট হননি আর কেউ!
তবে সেবার ওয়ালশ আউট হননি। জেসন গিলেস্পির পাঁচ বল কাটিয়ে দিয়ে বাকিটা ছেড়ে দিয়েছিলেন লারার উদ্দেশ্যে। হেডিংলির বেন স্টোকসের মতোই কাভার দিয়ে চার মেরে লারা নিশ্চিত করেছিলেন উইন্ডিজের জয়, সাথে ব্যক্তিগত ১৫৩ রানে নিশ্চিত করেছিলেন ক্রিকেট ইতিহাসে অমরত্ব।
বিশ্ব ফার্নান্দো ৬*, (২৭) - প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা
আরও এক অপরাজিত ১৫৩ রানের ইনিংস, আরও একবার অবিস্মরণীয় রান তাড়া করার ঘটনা, আরও একবার 'এটাই সর্বকালের সেরা টেস্ট কি না' শিরোনাম নিয়ে সাংবাদিকদের হই-হল্লা এবং আরও একবার শেষ ব্যাটসম্যানের দাঁতে দাঁত চেপে টিকে থাকা। ডারবানে সেদিন কুশল পেরেরা হয়ে গিয়েছিলেন বারবাডোজের ব্রায়ান লারা, আর বিশ্ব ফার্নান্দো হয়েছিলেন সেদিনের অ্যামব্রোস।
চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে নবম উইকেট হিসেবে কশুন রাজিথা যখন প্যাভিলিয়নে ফিরলেন, জয় থেকে শ্রীলংকা তখনও ৭৮ রান দূরে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামার জন্যে বিশ্ব ফার্নান্দো যখন পা বাড়াচ্ছিলেন, শ্রীলংকা দলের বাকি ক্রিকেটাররাও বোধহয় উঠে দাঁড়িয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ম্যাচ শেষের সৌজন্য বিনিময়ের। টেস্ট ক্রিকেটে ১.২৫ গড় যে ব্যাটসম্যানের, ডেল স্টেইন, কাগিসো রাবাদা আর ডুয়ান অলিভিয়েরের সামনে তার থেকে কতটুকু প্রতিরোধের প্রত্যাশাই বা করা যায়!
একের পর এক আত্মবিশ্বাসী ব্লক, লিভ আর ডাকে বিশ্ব ফার্নান্দো বাধ্য করেছিলেন শ্রীলংকা দলকে বিশ্বাস করাতে। পাশাপাশি অপর প্রান্তে কুশল পেরেরার একের পর এক চার-ছয়ে শ্রীলংকা পৌঁছেছিল জয়ের বন্দরে। বিশ্ব ফার্নান্দো তখন ৬ রানে অপরাজিত।
কেবলই জানানোর উদ্দেশ্য থেকে একটি পাদটীকা এখানে জুড়ে দিতে ইচ্ছে করছে। কেননা, এমন অবিস্মরণীয় টেস্ট ম্যাচগুলোতে তো এসব ঘটনা ঘটেই থাকে। ব্যাটসম্যান রানের আশায় পাগলের মতো ছুটবেন, কিছুদূর গিয়ে বুঝবেন, রান নেয়া সম্ভব হবে না, ফেরার চেষ্টা করবেন কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে যাবে। এবং সবশেষে ফিল্ডার রানআউটটি মিস করবেন। এ ঘটনা আপনি কিছুদিন আগে হেডিলংলিতে দেখেছেন, দেখেছিলেন সেদিনের ডারবানেও। এরপরেও এমন ঘটনা ঘটতে দেখলে এই রচনার লেখককে কৃতিত্ব দিতে ভুলবেন না মোটেই!
উইলফ্রেড রোডস ৬* (অজানা) - প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া
সম্ভবত ইতিহাস সেরা টেস্ট ম্যাচের লড়াইয়ে থাকতে পারতো এই টেস্টটিও। কিন্তু বল-সংখ্যার ঘরে অজানা লেখাটি দেখে বুদ্ধিমান পাঠক নিশ্চিতভাবেই বুঝে নিয়েছেন, সেরার স্বীকৃতির লড়াইয়ে আসার জন্যে প্রয়োজনীয় ইতিহাস সংরক্ষণে করে রাখতে পারেনি এই টেস্ট ম্যাচটি।
যেটুকু ইতিহাস জমা আছে, তা অবশ্য কেবল রোমাঞ্চই জাগায়। ২৬৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইংল্যান্ড ৪৮ রানেই হারিয়েছিল পাঁচ উইকেট। এরপরে গিলবার্ট জেসপ, স্ট্যানলি জ্যাকসনের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ালেও শেষ উইকেটে জয়ের জন্যে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৫ রান। এমন শেষ উইকেটের রোমাঞ্চে দাঁড়িয়েও ইংল্যান্ড যেন বলে-কয়েই জিতেছিল ম্যাচটি। কেননা, শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে উইলফ্রেড রোডস যখন ক্রিজে নামছিলেন, সঙ্গী জর্জ হার্স্ট তাকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, সিঙ্গেলস নিয়েই ম্যাচটি জিতব আমরা।
আর উইজডেনের সে ম্যাচের বিবরণ থেকে জানা যায়, ইংল্যান্ডের জয়সূচক রানটি এসেছিল বোলার আর মিড-অফের মাঝে বল পাঠিয়ে এক রান নিয়েই।
প্রজ্ঞান ওঝা ৫ (১০) - প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া
ইশান্ত শর্মার দুই ঘণ্টা স্থায়ী প্রতিরোধ যখন বেন হিলফেনহাসে ভাঙা পড়লো, ভারত আর জয়ের মাঝে ব্যবধান তখনও ১১ রানের। এগারো নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে নেমেছিলেন প্রজ্ঞান ওঝা। হিলফেনহাসের পরের পাঁচ বলে ওঝা পরাস্ত হলেন ঠিকই, তবে কোনোরকমে কাটিয়ে দিয়েছিলেন সেই ওভারটি।
কিন্তু ওভার শেষে প্রজ্ঞান ওঝা স্বস্তির শ্বাস ছাড়তে পারছিলেন কই! অপর প্রান্তে যদিও ছিলেন ভিভিএস লক্ষ্মণ, কিন্তু তিনি যে খোড়াচ্ছিলেন। এই ম্যাচে তাই ওঝার দায়িত্ব শুধু সঙ্গ দেয়ার মাঝেই আবদ্ধ ছিল না, দায় ছিল কিছু রান করারও। আউট হতে হতে বেঁচে গিয়ে ওঝা তা করেছিলেনও।
এরই মাঝে রায়না (ক্রিকেটে তখনও রানার নেয়া যেত, লক্ষ্মণও নিয়েছিলেন) আর ওঝার ভুল বোঝাবুঝিতে ম্যাচটা তো ভারত হেরেই গিয়েছিল প্রায়। পয়েন্টে বল ঠেলেই ওঝা ছুটেছিলেন রানের জন্যে। কিছুটা এগিয়েই বুঝেছিলেন, এখান থেকে রান নেয়া সম্ভব নয়। ততক্ষণে স্টিভেন স্মিথের করা থ্রো স্ট্যাম্প তো পেরিয়েছিলই, বিপরীত দিকের বাউন্ডারিও পেরিয়ে গেছে। এরপরের বলেই লেগবাই আকারে আসা দুই রানে ভারত পেরিয়ে গিয়েছিল প্রয়োজনীয় লক্ষ্যমাত্রা।
ম্যাচের ফলাফল ছাপিয়ে পাঠক কি স্ট্যাম্পের দশ হাত মতন দূরত্বে দাঁড়িয়ে অমন রান আউট মিসের ব্যাখ্যা খুঁজছেন? এই লেখক তো এর ব্যাখ্যা খানিক আগেই করে এসেছেন!
এ ধরনের আরও তথ্য জানতে পড়ুন এই বইটি-
This article is in Bangla language. This article is on six famous single-digit test score in cricket. Necessary hyperlinks are attached inside.
Image credit © Getty Images.