Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ফারলান্ড মেন্ডি: হুইলচেয়ার থেকে রিয়াল মাদ্রিদ

বয়সসংক্রান্ত কারণে রিয়াল মাদ্রিদের দীর্ঘদিনের রক্ষণ আস্থা মার্সেলোর আগের মতো ধার আর নেই। জিনেদিন জিদান ফিরে আসার পর নিজের মতো দল সাজানোর পরিকল্পনা করেছিলেন, সে পরিকল্পনা অনুযায়ী মার্সেলোকে প্রধান লেফটব্যাক রেখে এগিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। মার্সেলোর একজন প্রতিদ্বন্দ্বী দরকার, যে মার্সেলোর বিদায়ের পর তার স্থান নেবার মতো উপযুক্ত হবেন। এমনকি খেলার ধরনও মার্সেলোর মতো হলে জিদানের আরও বেশি সুবিধা হয়। দলে থিও হার্নান্দেজ ও রিয়ালের অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসা সার্জিও রেগুইলেন আছেন। কিন্তু মার্সেলোর বিকল্প হিসেবে জিদানের পছন্দ অন্য এক ফরাসি, লিগ ওয়ানে টানা দুই মৌসুম সেরা একাদশে স্থান পাওয়া লেফটব্যাক ফারলান্ড মেন্ডি। যিনি মাত্র ১৪ বছর বয়সে ভয়ংকর ইনজুরিতে পড়ে হুইল চেয়ারে ছয় মাস কাটিয়েছিলেন, যিনি কঠিন ইনজুরির সাথে যুদ্ধ করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

ফ্রান্সের ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ;Photo Credit : FRANCK FIFE/AFP/Getty Images)

স্টেদ দে ফ্রান্স স্টেডিয়ামে ফ্রান্স বনাম উরুগুয়ের প্রীতি ম্যাচ চলছে। ১-০ গোলে ম্যাচে জয়ের জন্য এগিয়ে আছে ফরাসিরা। এই ম্যাচে অভিষেক হয়েছে অলিম্পিক লিঁও’র তরুণ লেফটব্যাক ফারলান্ড মেন্ডির। মাঠের বামপাশের রক্ষণ অঞ্চলে খেলা মেন্ডি বরাবরই ক্ষিপ্রতার সাথে দৌড়ে আক্রমণাত্মক অঞ্চলে চলে যাচ্ছেন আক্রমণের খেলোয়াড়দের সাথে আক্রমণে ভূমিকা রাখতে। আবার বল পাস করে মুহূর্তেই ফিরে আসছেন নিজের পজিশনে। লেফটব্যাকে নামলেও পুরো বাম পাশ যেন তার দখলে। আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রথমবার নেমে এমন আক্রমণাত্মক খেলায় একবিন্দু ভুল করেননি মেন্ডি। মনে হবার কোনো অবকাশ নেই যে, ফ্রান্সের হয়ে প্রথমবার নেমেছেন তিনি।

ম্যাচের এক পর্যায়ে বামপাশের কোনো এক অঞ্চলে রদ্রিগো বেন্টানকুর অনেকটা বন্দি করে ফেলেন মেন্ডিকে। মেন্ডি ‘ক্রুইফ টার্ন’ নেন এবং বল নিয়ে নিজের ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন। সামনে উরুগুয়ের জিয়ানলুইজি ডি আরানকস্তা তার কাছ থেকে বল নেবার জন্য স্লাইড দিয়ে বসেন। কিন্তু মেন্ডি এই অবস্থায় ঠান্ডা মাথায় গতিময় অথচ নিয়ন্ত্রণের সাথে আরানকস্তাকে পাশ কাটিয়ে বল পাস দেন আদিল রামির উদ্দেশ্যে। আশেপাশে উরুগুয়ের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়, রামি কোনোকিছু না ভেবে সোজা ব্যাক-হিল করে বল গোলরক্ষক হুগো লরিসের কাছে পাঠিয়ে দেয়। মাঠের দর্শকেরা মেন্ডি ও রামির এই খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু ডি-বক্সে এমন সাহসিকতা তেমন পছন্দ হয়নি কোচ দিদিয়ের দেশমের।

ম্যাচশেষে দুই ডিফেন্ডারের এমন বিপদজনক সাহসিকতাকে নিন্দা করেন ফরাসিদের কোচ, বিশেষ করে মেন্ডির ঐ সময়ের ‘ক্রুইফ টার্ন’। কিন্তু মেন্ডির তাতে কোনো অনুতাপ হয়নি। ফরাসি এক সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকার দেবার সময় মেন্ডি বলেন,

অনেকে এ সম্পর্কে আমাকে আগে বলেছে। আমি রক্ষণে ড্রিবল করি, আর লোকে বলে এর জন্য আমাকে পস্তাতে হবে। এখন পর্যন্ত রক্ষণ অঞ্চলে ড্রিবল করার জন্য আমি বিপদে পড়িনি। তাই আমি এমনটা চালিয়ে যাব। যদি কখনও এটা কাজ না করে, তখন আমি আমার পরিণতি ভোগ করব।’

বেঞ্জামিন মেন্ডি ও লুকাস হার্নান্দেজের ইনজুরির কারণে হুট করে ফ্রান্স দলে জায়গা হয়েছিলো তার; Photo Credit: FRANCK FIFE/AFP/Getty Images

মেন্ডির বয়স যখন মাত্র ১৪, তখন তিনি পিএসজির অ্যাকাডেমিতে খেলতেন। সে সময়ে দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার নিতম্বের আর্থ্রাইটিস ধরা পড়ে। চিকিৎসকেরা তাকে জানায়, তার ফুটবলার হয়ে ওঠা সম্ভবত আর হবে না। শুধু একজন ফুটবলার হয়ে ওঠা বহুদূরের কথা, হয়তো এমনও হতে পারে, মেন্ডি আর কখনো হাঁটতেই পারবেন না। পিএসজির সাথে ফুটবল ক্যারিয়ার এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সেখানে থমকে যায়। মেন্ডির নতুন জীবন শুরু হয় হুইল চেয়ারের সাথে। ছয় মাস মেন্ডি কাটান হুইল চেয়ারে বসে। ভাগ্য সহায় ছিল বলে তেমন ক্ষতি হয়নি। ছয় মাস পর মেন্ডি নতুন করে হাঁটতে শেখেন, কারণ আর্থ্রাইটিসে ভুগে ও ছয় মাস বিশ্রামে থেকে হুট করে নিজের পায়ে দাঁড়ান সোজা নয়। ১৪ বছর বয়সে তাই মেন্ডি নতুন করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখেন, এবং ধীরে ধীরে ফুটবল দুনিয়ায় ফিরে আসেন। নতুন করে তার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয় লা হারভের সাথে। সেখানে মূল দলে উন্নতি করার পর তাকে কিনে নেয় অলিম্পিক লিঁও। লিঁও’র হয়ে টানা দুই মৌসুমে নিজেকে প্রমাণ করেন মেন্ডি। এরপরই ৪৮ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে রিয়াল মাদ্রিদে স্বপ্নের যাত্রা।

২৪ বছর বয়সী মেন্ডি জাতীয় দলে বেঞ্জামিন মেন্ডির অবর্তমানে তার জায়গা নিয়ে নিয়েছেন। দুর্দান্ত গতি ও শারীরিক দক্ষতা থাকার কারণে অনেক সময় তাকে ‘লেফটব্যাকের এমবাপে’ বলে ডাকা হয়। তবে মেন্ডি নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন, ছেলেবেলায় তিনি যে ধাক্কা খেয়েছেন এবং সেভাবে শিক্ষা নিয়ে সে যাত্রায় মোকাবিলা করেছেন, তা কখনোই ভুলে যাবেন না। এই শিক্ষাকে সর্বদা মনে রেখেই তিনি তার লক্ষ্যে অটুট থাকবেন।

ফরাসি পত্রিকা লাকিপের সাক্ষাৎকার দেবার সময় মেন্ডি বলেন,

‘আমি জানি, আমার সাথে কী ঘটেছে। তবে আমি সবসময় খুশি এবং শান্ত থাকতাম। আপনার জীবনে অনেক কিছু হবে, যা আপনি কখনো আশা করবেন না। কিন্তু আপনার সেটাই করা উচিত, যা আপনি সবসময় করতে চান।’

চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনার বিপক্ষে ম্যাচে মেন্ডি ; Photo Credit : Maja Hitij/Getty Images

ফারলান্ড মেন্ডির জন্ম প্যারিসে। তাই তার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল পিএসজির অ্যাকাডেমির সাথে, যেখানে নয় বছর বয়সে অ্যাকাডেমিতে মেন্ডির কোচ ছিলেন ভেস গেরড। তিনি মেন্ডি সম্পর্কে ব্লিচার রিপোর্টকে বলেছেন,

‘পিএসজির সেই কিশোরদের দলে আমার দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছিল মেন্ডি আর জেমস সিলিকি। প্রথমে মেন্ডি ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলত, পরে রাইট উইংয়ে পরিবর্তিত হয়। যদিও সে পরে থিতু হয়েছে লেফটব্যাক পজিশনে। একদম প্রথমে আমার নজরে আসে তার দক্ষতা ও গতি। মূলত বল পায়ে আসার পর তার ড্রিবলিং আমাকে আকৃষ্ট করে। মেন্ডি তার দক্ষতা ও গতি দিয়ে সবাইকে দ্রুত হারিয়ে দিত। মাত্র ৯ বছরে বয়সে সে খুবই দ্রুত ছিল, যা সবার ভেতর দেখা যায় না।’

মেন্ডি পিএসজির সেই অ্যাকাডেমির পরে অনেক চড়াই-উতরাই পার করে আসলেও জেমস সিলিকি বড় দলে খেলার সুযোগ পাননি। তিনি বর্তমানে আছেন ফরাসি ক্লাব রেঁনেতে। কিন্তুই পিএসজির সেই একই ব্যাচ থেকে ভেস গেরডের হাত ধরে উঠে এসেছে প্রেসনেল কিমপেম্বে, অলিম্পিক লিঁও স্ট্রাইকার মৌসা দেমবেলে ও বায়ার্ন মিউনিখের উইঙ্গার কিংসলে ক্যোমানের মতো তারকা খেলোয়াড়েরা। মেন্ডি এবং এরা সবাই একই সাথে এগিয়ে যাচ্ছিল ফুটবলের মূল মঞ্চের দিকে। কিন্তু ১৪ বছর বয়সে মেন্ডির স্বপ্নের দিক পরিবর্তন হয়ে যায়। পিএসজির ট্রেনিং গ্রাউন্ড থেকে তার জীবন চলে যায় হাসপাতালের সাদা বিছানায়।

নিতম্বের আর্থ্রাইটিস ধরা পড়ার পর প্রথম তিন মাস তার কাটে প্যারিসের নেকার-এনফান্টস মালাদেস হাসপাতালে। এই তিন মাস তিনি বিছানায় কাটিয়েছেন শরীরের নিচের অংশে প্লাস্টারসহ। এই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে মেন্ডি নতুন এক হাসপাতালে ভর্তি হন, যেখানে তাকে হাঁটা-চলা, নতুন জীবনের সাথে অভ্যস্ত করানোর জন্য ছয় মাসের ট্রেনিং সেশন শুরু হয়।

আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হয়ে অল্প বয়সেই ক্যারিয়ার শেষ হতে যাচ্ছিলো তার; Image Source : Alex Grimm/Getty Image

লা পার্সিয়েনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেন্ডি তার ছয় মাসের এ দুর্ভাগ্যজনক জীবনের কথা বলেছেন,

‘আমি প্লাস্টার খুলতে পেরেছিলাম ঠিকই, তবে আমি প্রথমেই হাঁটতে পারার মতো উপযুক্ত হতে পারিনি। প্রথমদিকে আমাকে হুইল-চেয়ার ব্যবহার করতে দেয়া হয়েছিল, পরবর্তীতে ট্রলি। তারা আমাকে প্রতিটা দিন ধীরে ধীরে শিখিয়েছেন, কীভাবে আবার হাঁটতে হয়।’

নতুনভাবে নিজের পায়ে ভর দিতে পারা শেখার পর মেন্ডিকে শিখতে হয়েছে, কীভাবে দৌঁড়াতে হয়। এরপর ফুটবল খেলা। সবকিছু নতুনভাবে শিখলেন; শট নেওয়া, ড্রিবল করা বা পাস দেওয়া, সব মেন্ডি শিখলেন নতুনভাবে। নিজেকে সুস্থ করে ফুটবল দুনিয়ায় আবার ফিরতে মেন্ডির লেগে গেল দুই বছর।

এরপর তিনি পিএসজিতে ফিরে গেলেন। অনুর্ধ-১৭ দলের সাথে ট্রেনিং করা শুরু করলেন। কিন্তু কিছুদিনের ভেতর মেন্ডি পরিষ্কার বুঝে গেলেন, পিএসজি আর তাকে চায় না। তার মন ভেঙে যায়। আর্থ্রাইটিসের সাথে যুদ্ধ করে ফিরে এসে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়া তার জন্য সহজ ছিল না। এমন কষ্টকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে যে কেউ খুব দ্রুত হার মেনে নেয়, তবে মেন্ডি মনোবল হারাননি। পিএসজিকে বিদায় বলে এসে খুব দ্রুত স্থানীয় ক্লাব এফসি মান্টেয়িস ‘৭৮ তে যোগ দিলেন। এই ছোট্ট ক্লাবের সাথে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে পুরো একটা মৌসুম খেলে গেলেন মেন্ডি। কোনো অর্থগত কারণ বা ট্রফি জেতার উদ্দেশ্যে নয়। মেন্ডির নিজের উপর আত্মবিশ্বাস ছিল। তিনি জানতেন, তার ভেতর কী প্রতিভা আছে। তাই দুই বছরের অনুপস্থিতির ক্ষতিকে পোষানোর জন্য ছোট দল হলেও তিনি নিয়মিত খেলা চালিয়ে গেলেন।

জোহান লউভেল সে সময়ে লা হারভে’র স্কাউট দলের প্রধান ছিলেন। মেন্ডি তখন ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় প্রতি ম্যাচেই মাঠে তার পায়ের কারুকাজ চোখে পড়ছে। ঠিক এমন সময়ে ফারলান্ড মেন্ডির উপর আগ্রহী হয়ে পড়েন জোহান। খুব দ্রুত তিনি যোগাযোগ করেন ক্লাবের সাথে। ২০১৩ সালে হয়েও যায় সেই চুক্তি। শেষমেশ মেন্ডি চলে এলেন লা হারভে’তে। যদিও প্রথম মৌসুম মেন্ডি লা হারভে ‘বি’ এর হয়ে খেলা শুরু করেন, তবে মূল দলে না খেললেও তার উন্নতি ছিল লক্ষ্যনীয়।

যখন খেলতেন লা হারভে দলের হয়ে ; Image Source ; Getty Image

লউভেল ব্লিচার রিপোর্টকে মেন্ডি সম্পর্কে বলেছেন,

‘সবাই তার জীবনের ভয়াল স্মৃতি বহন করে। ১৫ বা ১৬ বছর বয়সে তাকে বলা হয়েছিল, তার জীবনে ফুটবলের স্বপ্ন শেষ। এরপর লা হারভের হয়ে খেলার দ্বিতীয় সুযোগ তার জন্য অলৌকিক ঘটনা ছিল।’

লা হারভের ‘বি’ দলে খেলার কয়েক মাসের ভেতর মেন্ডি তার সক্ষমতাগুলো সম্পূর্ণরূপে ফিরে পান। দুর্দান্ত গতি ও ড্রিবলিং করার দক্ষতা তার ভেতর ফেরত আসতে শুরু করে। কিন্তু লা হারভে’র বি দলের কোচ তাকে একজন পূর্ণাঙ্গ লেফটব্যাক হিসেবে তৈরি করার পরিকল্পনা করেন। এজন্য মেন্ডি রক্ষণাত্মক কৌশলগুলো আয়ত্ব করার জন্য নতুনভাবে ট্রেনিং শুরু করেন। এই সম্পর্কে লউভেল বলেন,

‘মেন্ডি আক্রমণাত্মক ফুটবলে দুর্দান্ত ছিল। কিন্তু তাকে শিখতে হতো, কীভাবে একজন লেফটব্যাক পজিশনে থাকা ফুটবলার খেলেন। এজন্য তার রক্ষণের কলাকৌশলগুলো শেখা প্রয়োজনীয় ছিল। আর আমাদের দলে এসে সে যখন নতুন উদ্যমে খুব দ্রুত উন্নতি করছিল, ঠিক সে সময় আমরা এ বিষয়গুলোর উপর তাকে ট্রেনিং দেয়া শুরু করি।’

লা হারভে’র মূল দলে মেন্ডি জায়গা করে নিয়েছিলেন গোল ও অ্যাসিস্টসহ দুর্দান্ত এক মৌসুম শেষ করে। কিন্তু মূল দলে আসার কিছুদিন পরই তাকে মাত্র ৫ মিলিয়ন ইউরোর বদলে কিনে নেয় লিগ ওয়ানের প্রথম সারির দল অলিম্পিক লিঁও। সেখানে দুইটি দুর্দান্ত মৌসুম পার করার পর মেন্ডি এখন লিঁও ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদের বর্নাঢ্য দলের একজন সদস্য। ফ্রান্স জাতীয় দলে অভিষেকের পর ফারলান্ড মেন্ডি বর্তমান বিশ্বে অন্যতম প্রতিভাবান ফুটবলার।

রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে মেন্ডি; Image Source:  Quality Sport Images/quality Sport Images

রিয়াল মাদ্রিদে আসা প্রসঙ্গে ভেস গেরড বলেছেন,

‘মেন্ডি ধ্বংসস্তুপে পড়ে গিয়েছিল, কিন্তু তার লক্ষ্য ছিল অটুট। এজন্যই লিঁওতে নিজেকে মেলে ধরে সে এখন রিয়াল মাদ্রিদে। খুব অল্প মানুষই এই অবিশ্বাস্য যাত্রার কথা ভাবতে পারে।’

মাত্র ১৪ বছরের একজন কিশোর, যাকে শোনানো হয়েছিল তার ফুটবল খেলার স্বপ্ন ভুলে যেতে। যে নিজের ট্রেনিং ছেড়ে হাসপাতালের সাদা বিছানায় কিংবা হুইল-চেয়ারে যুদ্ধ করছে, কিন্তু আশা ছাড়েনি। ফুটবলে ফিরে আসার সেই মহৎ সংকল্পের উপর ভর করে সেই মেন্ডি এখন রিয়াল মাদ্রিদে। মার্সেলো বছর দুয়েক পরে বিদায় নিলে ‘লস ব্লাংকোস’দের বাম প্রান্তের দায়িত্ব তারই। ফ্রান্স জাতীয় দলে বেঞ্জামিন মেন্ডি ও লুকাস হার্নান্দেজের ইনজুরির পর অভিষেকও তার হয়ে গেছে। কিন্তু ফ্রান্স দলে এই পজিশন ধরে রাখতে তাকে প্রতিনিয়ত লড়ে যেতে হবে। কিন্তু এই লড়াই, এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে গিয়েও মেন্ডির মুখে হয়তো ছোট্ট হাসি ফুটে উঠবে। তিনি যে লড়াই করে ফিরে এসেছেন… যে চ্যালেঞ্জ তিনি নিয়েছিলেন, তার থেকে কঠিন আর কী হতে পারে!

Related Articles