Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ক্রিকেটের আলোচিত-সমালোচিত পাঁচ বিতর্কিত ঘটনা

ক্রিকেট খেলাটা পরিচিত ‘জেন্টেলম্যানস গেম’ বা ভদ্রলোকের খেলা হিসেবে। কিন্তু এই ভদ্রলোকের খেলাতেও সময়ে সময়ে এসেছে নানা বিতর্ক। চাঁদের যেমন কলঙ্ক আছে, তেমনি ক্রিকেটের গায়েও লেগেছে অনেক বিতর্ক আর কলঙ্কের আঁচড়। আজকে আলোচনা করা হবে সেরকম কিছু ঘটনা নিয়েই।

বডিলাইন সিরিজ

সিরিজটা ১৯৩২-৩৩ অ্যাশেজ হিসেবে যতটা না পরিচিত, তার চেয়ে বেশি পরিচিত কুখ্যাত ‘বডিলাইন সিরিজ’ নামে। এটা সে সময়ের কথা যখন স্যার ডোনাল্ড ব্র‍্যাডম্যানের ব্যাটে বৃহস্পতি তুঙ্গে, ইনিংস-প্রতি রান করছেন ১২০ গড়ে।

বডিলাইন মূলত ডনের বিধ্বংসী ব্যাটিংকে দমানোর জন্যে ইংল্যান্ড দলের অতি আগ্রাসী পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইংরেজ বোলাররা উইকেট লক্ষ্য করে বোলিং না করে বোলিং করেছিল ব্যাটসম্যানের বুক বরাবর। সেসময় ব্যাটসম্যানরা এখনকার সময়ের মতো এত সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করতেন না। ফলে ব্যাটসম্যানদের জন্য এটা ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক। এমনকি ব্র‍্যাডম্যানের মতো ব্যাটসম্যানেরও যত দ্রুত সম্ভব বলের রাস্তা থেকে সরে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।

ইংল্যান্ড অধিনায়ক ডগলাস জার্ডিন তার দুই বোলার হ্যারল্ড লারউড ও বিল ভোসকে দিয়ে এই বিখ্যাত বডিলাইনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। গ্যালারিতে এতটা তিক্ততা সৃষ্টি হয়েছিল যে অ্যাডিলেড ওভালের ৩য় টেস্টে দর্শকরা হোর্ডিংয়ের উপর দিয়ে লাফিয়ে আসার হুমকি দিয়েছিল।

Image Courtesy: ESPN Cricinfo

অজি অধিনায়ক বিল উডফুলের বুকে বল দুবার বেশ জোরে আঘাত করে এবং উইকেটরক্ষক বার্ট ওল্ডফিল্ডের মাথায় বল লাগায় তাকে অজ্ঞান অবস্থায় মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।

ইংল্যান্ড ৪-১ ব্যবধানে অ্যাশেজ জিতে নেয়। বডিলাইন সিরিজ বাদ দিলে স্যার ডোনাল্ড ব্র‍্যাডম্যানের গড় হতো ১০৪.৭৬।

হ্যান্সি ক্রনিয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ ফিক্সিং:

৭ এপ্রিল, ২০০০; দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার ঈশ্বর সিং রেধু দাবি করেন, তাদের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রনিয়ে ও ভারতের বেটিং সিন্ডিকেটের প্রতিনিধি সঞ্জয় চাওলার মধ্যকার একটি ফোনালাপের রেকর্ডিং রয়েছে, যেখানে তারা ম্যাচ গড়াপেটা নিয়ে কথা বলেছেন। অভিযোগের আঙুল ক্রনিয়ে ছাড়াও হার্শেল গিবস, নিকি বোয়ে ও পিটার স্ট্রাইডমের দিকেও ওঠে।

পরের দিনই ইউনাইটেড ক্রিকেট বোর্ড অফ সাউথ আফ্রিকা তাদের খেলোয়াড়দের উপর আরোপিত অভিযোগ নাকচ করে দেয়। অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রনিয়ে বলেন, “যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।” দুদিন পরেই হ্যান্সি ক্রনিয়েকে অধিনায়কত্ব থেকে বরখাস্ত করা হয়। কারণ আলী ব্যাখারের কাছে তিনি অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেছিলেন, “আমি পুরোপুরি সৎ ছিলাম না।” তিনি আরও জানান, তিনি ১০-১৫ হাজার ডলারের মাঝামাঝি একটা অর্থ লন্ডনের এক বুকির কাছ থেকে নিয়েছিলেন, তবে সেটা ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য নয়, ম্যাচের ফলাফলের ‘পূর্বাভাস’ দেয়ার জন্য।

জুনের ৭ তারিখ বসে কিং কমিশন। পরদিন হার্শেল গিবস তার স্বীকারোক্তিতে বলেন, ক্রনিয়ে তাকে নাগপুরে ৫ম ওয়ানডেতে ২০ এর কম রান করার জন্য ১৫,০০০ পাউন্ড দেয়ার প্রস্তাব দেন। তিনি আরও বলেন, একই ম্যাচে ৫০ এর বেশি রান দেয়ার জন্য হেনরি উইলিয়ামসকেও একই পরিমাণ অর্থ দেয়ার প্রস্তাব দেন ক্রনিয়ে। গিবস ৫৩ বলে ৭৪ রান করায় এবং উইলিয়ামস তাঁর দ্বিতীয় ওভারেই কাঁধের চোটে পড়ায় তারা কেউই কোনো অর্থ পাননি। মামলার অন্যতম সাক্ষী অফ স্পিনার ডেরেক ক্রুকসকে সেদিন বোলিং ওপেন করতে বলায় তিনি নিজেই অবাক হয়ে যান।

জুনের ১৫ তারিখ ক্রনিয়ে তার বয়ান দেন, যাতে বুকিদের সাথে তার সমস্ত যোগাযোগ সামনে চলে আসে। তার ভাষ্যমতে, ১৯৯৬ সালে কানপুরে তৃতীয় টেস্ট চলাকালে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন তাকে মুকেশ গুপ্তর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। গুপ্ত ক্রনিয়েকে ৩০,০০০ ডলার দেন এটা নিশ্চিত করতে যে, টেস্টের শেষ দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারবে। ফিরতি সফরে ক্রনিয়ে আরও ৫০,০০০ ডলার পান দলের খবর প্রকাশ করার জন্য।

২০০০ সালের সেঞ্চুরিয়ন টেস্টেও অনুরূপ ঘটনার প্রমাণ মেলে এবং ক্রনিয়ে বলেন, ওয়ানডে সিরিজের আগে সঞ্জয় চাওলার কাছ থেকে বার বার ফোন কল আসতে থাকে ম্যাচ গড়াপেটার জন্য। তিনি তাকে গিবস, স্ট্রাইডম আর নিকি বোয়ের নাম দেন।

Image Courtesy: Tertius Pickard/Touchline /Allsport

আগস্টের ২৭ তারিখ গিবস ও উইলিয়ামসকে ছয় মাসের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। ১১ অক্টোবর হ্যান্সি ক্রনিয়েকে সব ধরনের ক্রিকেট খেলা ও ক্রিকেট কোচিং থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। পরের বছরের সেপ্টেম্বরে ক্রনিয়ে রায় চ্যালেঞ্জ করলেও ১৭ অক্টোবর, ২০০১ সালে সেটি খারিজ হয়ে যায়।২০০২ সালে এক বিমান দুর্ঘটনায় রহস্যজনক মৃত্যু হয় হ্যান্সি ক্রনিয়ের।

১৯৮১ এর ‘আন্ডারআর্ম’ বিতর্ক

মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বেনসন এন্ড হেজেস ওয়ার্ল্ড সিরিজ কাপের তৃতীয় ম্যাচ। মুখোমুখি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। ম্যাচের শেষ ওভার করছিলেন ট্রেভর চ্যাপেল। শেষ বলে প্রয়োজন ছয় রান। স্ট্রাইক প্রান্তে নিউজিল্যান্ডের দশম ব্যাটসম্যান ব্রায়ান ম্যাককেশনি। অধিনায়ক গ্রেগ চ্যাপেল, ট্রেভরের ভাই, তাকে পরামর্শ দিলেন মাটি গড়িয়ে বল করার তথা ‘আন্ডারআর্ম‘ বল করার। উইকেটরক্ষক রড মার্শ প্রতিবাদ করার পরেও গ্রেগ তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন এবং নিউজিল্যান্ড এই বিতর্কিত ঘটনায় জয়বঞ্চিত হয়।

পরবর্তী বছরগুলোতে গ্রেগ চ্যাপেল স্বীকার করেন, সেসময় তিনি ব্যস্ত ক্রিকেটসূচির কারণে মানসিকভাবে খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং অধিনায়কত্বের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। ৪০ তম ওভারে তিনি মাঠের বাইরে চলে যাওয়ার কথা উইকেটরক্ষক রড মার্শকে বলেন, কারণ এই গরমে দীর্ঘসময় ব্যাটিং ও দশ ওভার বোলিং করার কারণে খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। হয়তো মানসিক এই ক্লান্তিই এমন অখেলোয়াড়সুলভ সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে।

দুই আম্পায়ারকেই জানানো হয়েছিল যে শেষ বলটা আন্ডারআর্ম হতে যাচ্ছে। বলটা হয়ে যাওয়ার পর পরই কমেন্ট্রি বক্সে থাকা ইয়ান চ্যাপেল বলে ওঠেন, “নো গ্রেগ, ইউ কান্ট ডু দ্যাট“।

Image Courtesy: The West Australian

ব্রায়ান ম্যাককেশনি বলটা মোকাবেলা করে রাগান্বিত হয়ে ব্যাট ছুড়ে ফেলেন। কিউই অধিনায়ক জিওফ হাওয়ার্থ আম্পায়ারদের কাছে ছুটে গিয়ে বলেন, এটা অনৈতিক। ইংল্যান্ডের টুর্নামেন্টগুলোর নিয়ম তো এরকমই।

এই ঘটনার পর নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী রবার্ট মুলডোন ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম ফ্রেজার এই ঘটনার বিরোধিতা ও নিন্দা করেন। চ্যাপেলরা পরবর্তীতে এই ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হন। তবে ম্যাককেশনি বলেন, “আমার সব হতাশা ঐ দিনই শেষ হয়ে গেছিলো।” তথাপি এই ঘটনাটি একটি বিতর্কিত ও সমালোচিত ঘটনা হিসেবে ক্রিকেটপ্রেমীদের সবসময় মনে থাকবে।

মাঙ্কিগেট কেলেঙ্কারি

খুবই বাজে কিছু আম্পায়ারিংয়ের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও যে টেস্ট ম্যাচটা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে ওঠার আভাস দিচ্ছিল, সেই সিডনি টেস্টের তৃতীয় দিন বিকেলটা বিখ্যাত হয়ে আছে এক কুখ্যাত ঘটনার জন্য।

দুটো আম্পায়ারিং সিদ্ধান্ত ভাগ্যক্রমে পক্ষে যাওয়ায় তখনও ব্যাটিং করছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। তার সাথে ছিলেন হরভজন সিং। অষ্টম উইকেট জুটিতে ততক্ষণে একশো রান উঠে গেছে আর ভারতও অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের ৪৬৩ এর কাছাকাছি চলে যাচ্ছিল।

হরভজন ইতিমধ্যে তার টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় অর্ধশতক করে ফেলেছিলেন। ব্রেট লির পাঁজর বরাবর ধেয়ে আসা বলটা স্লিপের উপর দিয়ে তুলে দিলেন; চার!

অজিরা যারপরনাই হতাশ হচ্ছিল। অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের সাথে হরভজনের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হলো। হরভজনের বিরুদ্ধে অজিরা আম্পায়ার মার্ক বেনসনের কাছে অভিযোগ করল সাইমন্ডসকে “মাংকি” বলার। হরভজন জড়িয়ে গেলেন বর্ণবাদসূচক অভিযোগে। অপরদিকে শচীন টেন্ডুলকার আরো একটা সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন। ভারত প্রথম ইনিংসে এগিয়ে গেলো ৬৯ রানে।

চতুর্থ ইনিংসে ভারতকে করতে হতো ৩৩৩। অধিনায়ক অনিল কুম্বলের সাহসী লড়াই সত্ত্বেও স্টিভ বাকনর ও মার্ক বেনসনের দু-দুটো ভুল সিদ্ধান্তের বলি হয়ে দিন শেষ হওয়ার কেবল আধঘণ্টা আগে অলআউট হয় ভারত। ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অজিদের দিকে ইঙ্গিত করে কুম্বলে বলেন, “কেবল এটুকুই বলতে পারি, একটা দলই খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব নিয়ে খেলছিল।

Image Courtesy: Asianet Newsable

শচীন টেন্ডুলকার তার আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেছেন, অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের অবিরাম বাক্যবর্ষণে ক্ষিপ্ত হয়ে সাধারণ ভারতীয়র মতোই হরভজনের মুখ দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল “তেরি মা কি…“, যা শুনে সাইমন্ডস ও অজিরা হরভজনের বিরুদ্ধে “মাংকি” বলা তথা বর্ণবাদসূচক গালি দেয়ার অভিযোগ আনে। শেষ পর্যন্ত হরভজনের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ম্যাচ রেফারি মাইক প্রক্টর হরভজন সিংকে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ করেন। বিসিসিআই মাঝপথে অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল করার হুমকি দেয়। কিন্তু তারা তা করেনি এবং শেষ পর্যন্ত পার্থে চতুর্থ টেস্ট জিতে নেয় ভারত। এই ঘটনা ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যকার সম্পর্কে ব্যাপক টানাপোড়েন সৃষ্টি করে। ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সমালোচিত ঘটনার একটি হিসেবে ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে এই ‘মাঙ্কিগেট কেলেঙ্কারি‘।

পাকিস্তান ক্রিকেটের স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারি

আগস্ট ২০১০-এ পাকিস্তান লর্ডসে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ডের। এই টেস্ট ম্যাচে পাকিস্তানের কিছু ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে মাজহার মাজিদ নামের এক বুকির কাছ থেকে টাকা নিয়ে ম্যাচের নির্দিষ্ট কিছু মুহূর্তে ‘আন্ডারপারফর্ম’ করার।

পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনা সর্বপ্রথম সামনে আসে এক স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে। ২০১০-এর আগস্টে ‘নিউজ অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ এর প্রতিবেদকেরা স্পোর্টস এজেন্ট মাজহার মাজিদের সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করে। মাজিদ স্পট ফিক্সিংয়ের সন্দেহের তালিকায় ছিল। নিউজ অফ দ্য ওয়ার্ল্ড এর পোস্ট করা ভিডিওতে মাজিদকে টাকা গুণতে দেখা যায় এবং সে বলে, লর্ডস টেস্টের ৩য় ওভারে মোহাম্মদ আমির বল করবেন আর প্রথম ডেলিভারিটা হবে নো বল।

বাস্তবে হয়েছিলও তা-ই। মাজিদ আরও ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, মোহাম্মদ আসিফের করা ইনিংসের দশম ওভারের শেষ ডেলিভারিটি নো বল হবে এবং এটিও মিলে যায়। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ইজাজ বাট বলে যাচ্ছিলেন, তাদের খেলোয়াড়েরা নির্দোষ। পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান বাট অভিযোগ ওঠার পর অধিনায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে চান, কিন্তু টিম ম্যানেজার ইয়াওয়ার সাঈদ তা নাকচ করে দেন। সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক রশিদ লতিফ বলেন, এই ভিডিও একটা ‘সেট-আপ’ হতে পারে। পাকিস্তান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্য ও ক্রীড়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইকবাল মোহাম্মদ আলী অভিযোগের আঙুল ওঠা খেলোয়াড়দের দলের বাইরে রাখার নির্দেশ দেন।

সালমান বাট, মোহাম্মদ আসিফ ও মোহাম্মদ আমিরের নাম নেয়া হয়েছিল ভিডিওটিতে, যদিও তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করছিলেন। বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় আইসিসি এই তিনজনের খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

তিনজনই তাদের খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করে। আইসিসি ৩০ ও ৩১ অক্টোবর কাতারে শুনানি ধার্য করে। শুনানি শুরুর সাতদিন আগে আসিফ তার আপিল তুলে নেন এই বলে যে, তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো বুঝতে চান!

Image Courtesy: Getty Images

আইসিসি শুনানির স্থান কাতার থেকে সরিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ধার্য করে। ৩১ তারিখ সালমান বাট ও আমিরের আপিল খারিজ হয়ে যায়।

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সালে তিনজন অভিজ্ঞ বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেলের রায় অনুযায়ী আইসিসি তিনজন ক্রিকেটারের উপরেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সালমান বাটকে দশ বছর, আসিফকে সাত বছর (দুই বছর স্থগিত) ও আমিরকে পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।

১ নভেম্বর, ২০১১ সালে সাউথওয়ার্ক ক্রাউন কোর্ট মাজহার মাজিদ, সালমান বাট, আসিফ ও আমিরকে জুয়া ও অনৈতিক অর্থ গ্রহণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে।

৩ নভেম্বর সালমান বাটকে ৩০ মাস, মোহাম্মদ আসিফকে ১ বছর ও মোহাম্মদ আমিরকে ৬ মাসের জেলের সাজা দেয়া হয়। বুকি মাজহার মাজিদকে ২ বছর ৮ মাসের জেল দেয়া হয়। এই ঘটনা পাকিস্তান ক্রিকেট, সর্বোপরি বিশ্ব ক্রিকেটের একটি লজ্জাজনক অধ্যায় হিসেবে লেখা থাকবে।

This is a bengali article describing some of the most debated & scandalous incidents in the history of cricket. Necessary references have been hyperlinked inside the article.

Feature Image: The Union Journal

Related Articles