Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

জর্জ বেস্ট: ফুটবলের উদাসীন মহাতারকা

আমি কুৎসিত হয়ে জন্মালে তোমরা পেলের নাম শুনতে না’– উক্তিটির সঠিক তথ্যসূত্র খুঁজে পাওয়া যায় না। হয়তো কথাটা কেউ কখনো বলেইনি, একটা উপকথা হিসেবেই প্রচলিত। তবে আপনি যদি ফুটবল ইতিহাসের মনোযোগী পাঠক হন, তাহলে কথাটি শোনার সাথে সাথে বুঝতে পারবেন যে কার কথা বলা হচ্ছে।

যেকোনো বিষয়েই সফল হবার জন্য প্রতিভা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। তবে এর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রতিভার সঠিক পরিচর্যা করে তাকে কাজে লাগানো। ফুটবলের বহু রথী-মহারথী কিংবা বিশ্লেষক এক বাক্যে স্বীকার করে নেন যে, তার মতো প্রতিভার অপচয় খুব কম ফুটবলারই করেছেন। ইতিহাসের এই খেয়ালী ফুটবলারের নাম জর্জ বেস্ট।

খামখেয়ালী সেই ফুটবলার; Source: Colorsport/Stewart Fraser

‘বেস্ট’ নামের সার্থকতা ফুটিয়ে তোলার জন্য সকল উপাদানই তার মাঝে ছিল। কিন্তু কেন তিনি তার স্তরে যেতে পারলেন না সেটি বোঝাতেই উক্তিটির প্রচলন। কুৎসিত হয়ে জন্মালে অসংযমের রাস্তায় যাওয়ার প্রলোভনটা এত বেশি থাকতো না। তখন প্রতিভার সঠিক ব্যবহারটাও হয়তো করতে পারতেন।

চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় হবার একটি অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে নিজেকে সেরা ভাবার সাহসটা থাকতে হবে। এই প্রসঙ্গে কিংবদন্তী খেলোয়াড় মোহাম্মদ আলীর একটি ঘটনা উল্লেখ করা যাক। জনশ্রুতি আছে যে, মোহাম্মদ আলীর জীবনী নিয়ে একটি বই প্রকাশ করার কথা চলছিল। প্রকাশক জানতে চাইলেন, বইয়ের নামটা কী হবে? কোনো সংকোচ ছাড়াই মোহাম্মদ আলী নাকি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘গ্রেটেস্ট’।

মোহাম্মদ আলীর মাহাত্ম্য নিয়ে কারো মনে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তবুও নিজের মুখে নিজেকে গ্রেটেস্ট বলাটা একটু কেমন যেন হয়ে যায় না! আলীকে সেই কথা বলার পর নাকি তিনি বলেন, “আমার মতো কেউ সেরা হলে তার পক্ষে বিনয়ী হওয়াটা খুব কঠিন”। হয়তো আলী এই কথাটি বলেননি। যদি বলতেন, তাহলে কী বলবেন তাকে? অহংকারী নাকি আত্মবিশ্বাসী?

ছোটবেলা থেকে শেখানো হয়েছে, ‘নিজে যাকে বড় বলে বড় সে নয়, লোকে যাকে বড় বলে বড় সেই হয়।’

কিন্তু অনেক খেয়ালী প্রতিভাবানদের ক্ষেত্রে এই বাক্যটি খাটে না। এই ধরনের লোকেরা নিজেরাই নিজেদেরকে বড় বলেছেন এবং তাদের কীর্তির দ্বারা অন্যান্যদের দ্বারাও বড় বলিয়ে ছেড়েছেন।

বেস্ট ছিলেন সেই ঘরানারই একজন খেলোয়াড়। একটি ঘটনা বললে তার আত্মবিশ্বাস সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেতে পারেন।

বেস্ট ছিলেন ভিন্ন ধাতুতে গড়া; Source:Ben Radford/Getty Images

সময়টা ১৯৭৬ সাল। ম্যাচটি ছিল নর্দান আয়ারল্যান্ড বনাম নেদারল্যান্ডের। দুই দলেই দুজন তারকা খেলোয়াড়, ইয়োহান ক্রুয়েফ আর জর্জ বেস্ট। দুজনের ক্যারিয়ারের শুরু এক বছরের ব্যবধানে হলেও ১৯৭৬ সালের দিকে সেরার প্রতিযোগীতায় ক্রুয়েফ অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন।

ম্যাচের শুরুতেই সাংবাদিক বিল এলিয়টের সাথে বেস্টের কথা হচ্ছিল। তখন বিল কথা প্রসঙ্গে বেস্টকে বলেছিলেন, “তুমি কি বিশ্বাস করো যে ক্রুয়েফ তোমার চেয়েও ভালো খেলোয়াড়?

এই ধরনের প্রশ্নের উত্তরে বেশিরভাগ মানুষ সচরাচর চুপ করেই থাকে। তবে বেস্ট যে ভিন্ন ধাতুতে গড়া ছিলেন! স্বভাবসুলভ হাসিতেই উত্তর দিলেন তিনি,

“তুমি কি শিশুসুলভ কথা বলছো? তুমি শুধু দেখো আমি কী করি। আমি ক্রুয়েফকে নাটমেগ করবো, সেটাও প্রথম সুযোগেই।”

ফুটবল মাঠে নাটমেগের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে যতটা অপমান করা হয়, তার তুল্য আর কিছুই নেই। নাটমেগ হচ্ছে প্রতিপক্ষের দুই পায়ের মাঝে দিয়ে বল নিয়ে বের হয়ে যাওয়া। বলাই বাহুল্য, এ ধরনের কথা বলা যতটা সহজ, কাজটা করা ঠিক ততটাই কঠিন। তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, বেস্ট কাজটা করেছিলেন নিজের কথামতোই।

এই উদাসীন খেলোয়াড়ের জীবনের কিছু গল্পই আজ শোনা যাক।

বেস্টের জন্ম ১৯৪৬ সালে নর্দান আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে। শৈশবে তিনি তার দরিদ্র বাবার সাথেই কাজ করতেন। তবে খেলাধুলাতে খুব ছোটবেলা থেকেই পারদর্শী ছিলেন। স্কুলে তিনি রাগবি খেলাতে পারদর্শী ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে ফুটবলের দিকে তার ঝোঁকটা আসে।

মাত্র ১৫ বছর বয়সেই তার ফুটবল প্রতিভা তৎকালীন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যানেজার ম্যাট বাসবির নজরে পড়ে। ক্লাবের স্কাউট বিশপ বেস্টকে নর্দান আয়ারল্যান্ডের একটি স্থানীয় দলে খেলতে দেখে টেলিগ্রাফে বলেছিলেন, “আমার মনে হয় আমি তোমার জন্য একজন জিনিয়াস খুজে পেয়েছি।”

তবে তার ক্যারিয়ারের শুরুটা এতটা সহজ ছিল না। নর্দান আয়ারল্যান্ডের হওয়াতে ইংলিশ ক্লাবের মূল দলে সুযোগ না পাওয়ায় দুই বছর তাকে অ্যামেচার হিসেবেই খেলে যেতে হয়েছে। ১৭ বছর বয়সেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মূল দলে সুযোগ পেয়ে বেস্ট সেই কথার যথার্থতা প্রমাণ করেন

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের শুরুর সময়ে; Source: Alan Lewis

জর্জ বেস্ট যখন ১৯৬৩ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলা শুরু করেন, তখন ইউনাইটেড ইংলিশ লিগের সেরা দল ছিল না। তাদের ৫টি লিগ শিরোপার চেয়ে আর্সেনাল (৭টি), লিভারপুল (৬টি) এমনকি অ্যাস্টন ভিলা (৬টি) আর এভারটনের (৬টি) লিগও বেশি ছিল

সর্বশেষ লিগ জয়টাও ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে। প্রথম সিজনে বেস্ট খুব বেশি চমক দেখাতে পারেননি। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে অনিয়মিতভাবে ২৬টি ম্যাচ খেলে তিনি গোল করেন ৬টি। লিগ জিততে না পারলেও খুব কাছাকাছি পৌঁছে, লিভারপুলের চেয়ে ৪ পয়েন্ট পেছনে থেকে দ্বিতীয় হয় তারা। তবে পরের মৌসুমে প্রথম একাদশেই সুযোগ পান বেস্ট এবং দলকে পাইয়ে দেন শিরোপার স্বাদ। এই মৌসুমে ৫৯টি ম্যাচ খেলে ১৪টি গোল করেন তিনি।

তবে বেস্ট মিডিয়ার নজরে পড়েন ১৯৬৬ সালের ইউরোপিয়ান কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বেনফিকার বিপক্ষের ম্যাচটিতে। ঘরের মাঠে প্রথম লেগে ৩-২ গোলে জিতলেও ২টি মূল্যবান অ্যাওয়ে গোল দেওয়ার কারণে নিজ মাঠে বেনফিকাই ফেভারিট ছিল। কিন্তু ম্যাচটি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড জিতে নেয় ৫-১ গোলে। মাত্র ১১ মিনিটের মাঝেই ২ গোল করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে এগিয়ে দেন বেস্টই

তবে সেই মৌসুমে বেস্ট ইনজুরিতে পড়ে যান এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও কোনো শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয়। পরের সিজনে (১৯৬৬-৬৭) বেস্ট আবার স্বরূপে ফিরে আসেন এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও আবার শিরোপা জেতে।

জর্জ বেস্ট তার ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ সফলতা পান ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে। মাত্র ২ পয়েন্টের ব্যবধানে লিগ শিরোপা হারালেও ২৮ গোল করে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন বেস্ট

সেই মৌসুমেই তিনি জিতে নেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা (তৎকালীন ইউরোপিয়ান কাপ)। রিয়াল মাদ্রিদ এবং বেনফিকার মতো জায়ান্ট দলকে হারাতে হয়েছিল তাদেরকে। এর মাঝে ফাইনালে ইউনাইটেড মুখোমুখি হয় ইউসেবিওর বেনফিকার বিপক্ষে। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ১-১ গোলে ড্র হবার পর অতিরিক্ত সময়ে বেস্টই প্রথম গোল করেন ৯২ তম মিনিটে। গোলের পূর্বে বেস্টের দৌড় সবাইকে চমকে দেয় এবং গোলকিপারকে ডামি মুভে পরাস্ত করেন তিনি। এই গোলের পরেই বেনফিকার প্রতিরোধ ভেঙে যায় এবং শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ইউনাইটেড জিতে নেয় ৪-১ গোলে

ব্যক্তিগত এবং দলীয় এই সফলতা তাকে পাইয়ে দেয় ক্যারিয়ারের একমাত্র ব্যালন ডি অর। তখন তার বয়স মাত্র ২২ বছর।

১৯৬৯-৭০ মৌসুমের পর থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড দলের অবনতি শুরু হয়। দল থেকে ম্যানেজার বাসবি অবসর নেন, দলে নতুন কোনো খেলোয়াড় আনা হয় না। এত প্রতিকূলতার মাঝেও বেস্ট ২২ গোল করেন ৫৫ ম্যাচে। একমাত্র ডেনিশ ল ব্যতিত দলের অন্য কোনো খেলোয়াড় সেই মৌসুমে ৬টির বেশি গোল করতে পারেননি। এত কিছুর পরেও ইউনাইটেড লিগ শেষ করে ১১তম অবস্থানে থেকে। পরের মৌসুমে নতুন ম্যানেজারের অধীনে দল কিছুটা উন্নতি করে। বেস্ট ২৩ গোল করেন। এর মাঝে এফ.এ কাপের এক ম্যাচে নর্দাম্পটন টাউনের বিপক্ষে ৬ গোল করে রেকর্ড সৃষ্টি করেন তিনি। এই ম্যাচের পরে এক সাক্ষাৎকারে বেস্ট বলেছিলেন,

“আমি নিজেকে কখনো ফুটবলার মনে করি না, মনে করি একজন বিনোদনদাতা হিসেবে। মানুষ পয়সা খরচ করে অসাধারণ কিছু দেখার জন্য আসে। আমি সবসময় সেটাই করার চেষ্টা করি।”

দুই কিংবদন্তী পাশাপাশি; Source: Getty Images

২০০২ সালে বিবিসির আয়োজিত একটি নির্বাচনে 100 Greatest Sporting Moment-এ বেষ্টের এই পারফর্মেন্সটি দর্শকদের ভোটে ২৬তম হয়।

১৯৭০ সালের পর থেকে বেস্টের অসংযমী জীবন যাপনের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যায়। ১৯৭১ সালে তিনি ট্রেনিং বাদ দিয়ে মিস গ্রেট ব্রিটেন ক্যারোলিন মুরের সাথে সময় কাটান। তবে এত কিছুর পরেও সেই মৌসুমে তিনি ৫৪ ম্যাচে ২৭ গোল করেন এবং টানা ৬ মৌসুমে ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। মনে রাখতে হবে, বেস্ট প্রথাগত স্ট্রাইকার ছিলেন না, মূলত উইঙ্গার হিসেবে তিনি খেলতেন। এই সিজনের পরে বেস্ট আরো দুটো মৌসুম ইউনাইটেডের হয়ে খেলেন। কিন্তু অনিয়মিত হয়ে যাওয়ায় খুব অল্প সংখ্যক ম্যাচ খেলতে পেরেছিলেন তিনি।

১৯৭৪ সালে তিনি তার ১১ বছরের ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটিয়ে ইউনাইটেড থেকে অবসর নেন। মাত্র ২৮ বছর বয়সেই তিনি ক্যারিয়ার শীর্ষ থেকে পতিত হন। এর পরবর্তীতে তিনি বিক্ষিপ্তভাবে আরো প্রায় দশ বছর স্কটল্যান্ড, সাউথ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার বিভিন্ন ছোটখাট ক্লাবে খেলা চালিয়ে যান।

মাত্র ২৮ বছর বয়সেই তিনি ক্যারিয়ার শীর্ষ থেকে পতিত হন; Source: thesefootballtimes.co

জাতীয় দলের হয়ে তিনি ৩৭টি ম্যাচ খেলে ৯টি গোল করেন। কখনোই কোনো বিশ্বকাপ না খেলা খেলোয়াড়দের মাঝে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় বলা হয় জর্জ বেস্টকে, যদিও ১৯৮২ সালে নর্দান আয়ারল্যান্ড বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছিল এবং কোচের বিবেচনাতেও বেস্ট ছিলেন। কিন্তু ৩৬ বছর বয়সী বেস্টের খেলোয়াড়ি দক্ষতায় আঘাত হেনেছিল তার বয়স এবং অতিরিক্ত মদ্যপান। এছাড়া সেসময় জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ ৫ বছর আগে ম্যাচ খেলাটাও জাতীয় দলে ঢোকা থেকে তাকে পিছিয়ে দিয়েছিল।

ড্রিবলিং হলো ফুটবলের একটি অন্যতম দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ। বলা হয়ে থাকে, ড্রিবলিংয়ের ইতিহাসের সর্বকালের সেরাদের একজন হচ্ছেন জর্জ বেস্ট। তবে তার ক্ষমতার পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার হয়নি অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের জন্য।

এই প্রসঙ্গে বেস্টের একটি মন্তব্য থেকেই আপনি তার জীবন যাপন সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেতে পারেন,

“১৯৬৯ সালে আমি নারী আর মদ ছেড়ে দিয়েছিলাম। এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বাজে ২০ মিনিট।”

তবে এত কিছুর পরেও নিজের সামর্থ্যের প্রতি তার যথেষ্ট বিশ্বাস ছিল। পরের বক্তব্যে সেটি খুঁজে পাওয়া যায়,

“আপনাকে যদি বাছাই করতে দেওয়া হয় যে, লিভারপুলের বিপক্ষে চারজনকে কাটিয়ে ৩০ গজ দূর থেকে একটা অসাধারণ গোল করবেন নাকি মিস ওয়ার্ল্ডের সাথে রাত্রি যাপন করবেন- তাহলে নিশ্চিতভাবেই বাছাই করাটা আপনার জন্য কঠিন হবে। সৌভাগ্যবশত আমার দুটোই ছিল।”

ক্যারিয়ারের শেষভাগটা বেস্টের জন্য কষ্টের ছিল। ২০০০ সালে তার লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। জানা যায়, তার লিভার মাত্র ২০% কাজ করতে সক্ষম। লন্ডনে অপারেশনের পর তিনি সুস্থ হন

এত কিছুর পরেও নিজের সামর্থ্যের প্রতি তার যথেষ্ট বিশ্বাস ছিল; Source: Ian Tyas/Keystone/Getty Images

কিন্তু এরপরেও অ্যালকোহলের আসক্তি থেকে তিনি বের হতে পারেননি। ২০০৪ সালে মদ্যপ অবস্থায় ড্রাইভিং করার জন্য ২০ মাসের জন্য তার লাইসেন্স বাতিল করা হয়। শেষ পর্যন্ত ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ২৫শে নভেম্বর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন

‘Maradona Good, Pele better, George best’- খুবই বিখ্যাত একটি উক্তি। অন্তত বেলফাস্টের জনগনের একটি অংশ এই কথাটি মনেপ্রাণেই বিশ্বাস করেন

জর্জ বেস্ট নিঃসন্দেহে একজন সেরা হবার মতোই খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু নর্দান আয়ারল্যান্ডের মতো দেশে জন্মানো কিংবা নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত অবহেলা তাকে অনেকখানিই পিছিয়ে দিয়েছিল। এত কিছু সত্ত্বেও ফুটবলপ্রেমীদের কাছে অনেকের চেয়ে খুব অল্প অর্জন নিয়েও তিনি খুব উঁচু অবস্থানেই রয়েছেন।

নিঃসন্দেহে একজন সেরা হবার মতোই খেলোয়াড় ছিলেন তিনি; Source: kingsreview.co.uk

গত শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় নির্বাচনে ফিফার জুরি বোর্ডের বিবেচনায় তিনি হয়েছিলেন ৫ম। এছাড়া ওয়ার্ল্ড সকারের সেরা ১০০ ফুটবলারে নির্বাচনেও তিনি ৭ম হয়েছিলেন

ক্যারিয়ারটা নিয়ে যদি একটু সিরিয়াস হতেন, তাহলে তার অবস্থান কোথায় থাকতো সেটি ভাবলেও অবাক লাগে। তবে তা না হওয়ায় ফুটবল প্রেমীদের কাছে আক্ষেপের আরেক নাম হয়েই রয়ে গেলেন জর্জ বেস্ট।

ফিচার ইমেজ- scoopwhoop.com

Related Articles