Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

জুলিয়ান নাগেলসম্যান: ফুটবলের বেবি মরিনহো

২৭ অক্টোবর, ২০১৫। জার্মান বুন্দেসলিগায় খেলা হফেনহেইম করে তাদের নতুন প্রধান কোচ নিয়োগ দিয়ে করলে ফেললো অদ্ভুত, অকল্পনীয়, অবিস্মরণীয় এক কাজ। না, কোচ পরিবর্তন করে নতুন কোচ আনা অবশ্যই কোনো অকল্পনীয় কিছু নয়। কিন্তু যদি সে কোচের বয়স যদি হয় মাত্র ২৮, তাহলে সবার চোখ তো কপালে উঠবেই। জার্মান মিডিয়া তো বলেই দিয়েছিলো “পুরোপুরি পাগলাটে পরিকল্পনা।” পাগলাটে পরিকল্পনা বলায় দোষ যদিও ছিলনা। একে তো তার প্রফেশনাল মূল একাদশের কোচিং অভিজ্ঞতা নেই, তার উপরে এরকম শীর্ষ সারির লিগের একটি দলের দায়িত্ব কিভাবে ২৮ বছর বয়সী একজন যুবকের হাতে যেতে পারে!

তবে পুরো বিশ্বকে অবাক করে বাজিমাত কিন্তু ঠিকই করেছিল হফেনহেইম ম্যানেজমেন্ট। ২৮ বছর বয়সী আনাড়ি খেতাব পাওয়া নতুন কোচ হফেনহেইমকে রেলিগেশন জোন থেকে উদ্ধার করে বুন্দেসলিগায় জায়গা পাকাপোক্ত করেন। বুন্দেসলিগার সর্বকনিষ্ঠ ম্যানেজার হিসেবে খেতাব পাওয়া সেই কোচের নাম জুলিয়ান নাগেলসম্যান।

জুলিয়ান নাগেলসম্যান; Source: BBC

ফুটবল কোচিংয়ে সফলতা পাওয়া কোচদের ফুটবল ক্যারিয়ার তেমন বর্ণাঢ্য থাকে না। এ তত্ত্ব মেনে জুলিয়ান নাগেলসম্যানের ফুটবল ক্যারিয়ারও ছোট্ট এবং এলোমেলো। সেন্টার-ব্যাক পজিশনে খেলতেন অসবুর্গের হয়ে। অসবুর্গের অনুর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে খেলার সময় হাঁটুর মারাত্মক ইনজুরির কারণে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই তার ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতি টানতে হয়।

দুর্ঘটনাবশত প্রায় একই সময় তার বাবা মারা যাওয়াতে ইনজুরি রুখে ফিরে আসার পরিস্থিতিতে তিনি ছিলেন না। তবে ফুটবল থেকে তিনি কখনোই দূরে সরে যেতে চাননি, খেলোয়াড় হতে না পারা আক্ষেপকে দূরে সরিয়ে ম্যানেজার হিসেবে তিনি ফুটবলের সংস্পর্শে থাকতে চাইলেন। বাবা চলে যাবার কিছুদিনের ভেতরই মাকে হারান তিনি। ভয়ংকর সে সময় পার করেছেন আক্ষেপ ও কষ্টের সাথে যুদ্ধ করতে করতে। এক্ষেত্রে তার অভিভাবক ও গুরু হিসেবে সবসময় পাশে পেয়েছিলেন জার্মান কোচ টমাস টুখেলকে। নাগেলসম্যানকে সবসময় তিনিই সাহস জুগিয়েছেন, কোচ হিসেবে ফুটবলের পাশে থাকার বুদ্ধিটাও তার দেওয়া। তিনি জুলিয়ানকে বলেছিলেন,

“তুমি ফুটবলের সাথে থাকতে চাও তো? একটা কাজ তাহলে করতে পারো। তোমার ফুটবলের সাথে বোঝাপড়া ভালো, তাই আমার বিপক্ষ স্কাউট দলে নাম লেখাও আর ফুটবল কোচিং সম্পর্কে  পড়াশোনা কর। এতে তুমি মাঠের ফুটবল না খেলেও ফুটবলকে পাবে।”

টমাস টুখেল ও নাগেলসম্যান; Source: Getty Images

টুখেলের সে উপদেশ মেনেই নাগেলসম্যান ফুটবল কোচিং সম্পৃক্ত পড়াশোনা শেষ করেন। তবে তাকে আরো কিছুটা সময় দিতে হয় উয়েফা আর ফিফার কোচিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য। ২০/২২ বছরের একটা মানুষকে তার ক্যারিয়ারের চিন্তা ও নিজের জীবনের কাজগুলো একইসময়ে করতে ও ভাবতে হচ্ছে বিষয়টা একদমই সহজ নয়। অল্প বয়সেই বাস্তবতাকে চিনতে শেখা নাগেলসম্যান এসব কঠিন অবস্থাকে তেমন পাত্তা দেননি।

ফুটবল কোচিং বিষয়ে সমস্ত পড়ালেখা শেষ করে আবার তিনি পুনরায় ফিরলেন অসবুর্গে। তবে খেলোয়াড় হিসেবে নয়, অসবুর্গে এসে যোগ দেন একজন সহকারী ম্যানেজার হিসেবে। ২০১২/২০১৩ মৌসুমে হফেনহেইম এর অনূর্ধ্ব ১৯ দলের কোচের দায়িত্ব পান এবং পরের মৌসুমে জিতে যান অনূর্ধ্ব ১৯  বুন্দেসলিগা শিরোপা।

সময়টা তখন ২০১৪ এর শেষে, দলের মুল কোচ হাব স্টিভেনস হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে দলের দায়িত্ব ত্যাগ করলে, তৎকালীন হফেনহেইমের স্পোর্টিং ডিরেক্টর অ্যালেক্সান্ডার রোজেন, জুলিয়ান নাগেলসম্যানকে কোচের দায়িত্বে নিয়োগ দেন। হফেনহেইম মূল দলের দায়িত্ব যখন নাগেলসম্যানের হাতে আসে, দলটি তখন ধুঁকছিল লিগ টেবিলের ১৭ নম্বরে, তবে তখনো ম্যাচ বাকি ১৪টি। সেই ১৪ ম্যাচের ৭টিতে জয় তুলে এনে সে বছর রেলিগেশনের হাত থেকে বাঁচান হফেনহেইমকে। তার পরের বছরের গল্প লেস্টার সিটির মতো রূপকথার। তবে লেস্টার সিটির মতো লিগ চ্যাম্পিয়ন না হলেও, নাগেলসম্যানের অসাধারণ কোচিং দক্ষতার উপর ভরসা করে হফেনহেইম মৌসুম শেষ করে চতুর্থ হয়ে এবং প্রথমবারের মতো অর্জন করে নেয় চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার সুযোগ। এটিই হফেনহেইম এর ইতিহাসের বড় অর্জনগুলোর একটি।

সবসময় একটা প্রশ্ন থাকতে পারে- যার জন্ম বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে তার কোচিং দর্শন কেমন হতে পারে বা এত অল্প বয়সে কিভাবে একটি সম্পূর্ণ ফুটবল দলকে নিয়ন্ত্রণ করা তার পক্ষে সম্ভব। ‘বয়স শুধুমাত্র একটি সংখ্যা’ বুড়ো বয়সে অসামান্য ফুটবল খেলে এ কথাটি প্রমাণ করে দিয়েছেন বুফন, টট্টির মতো লিজেন্ডরা। আর এর ঠিক উল্টোটা করে দেখালেন নাগেলসম্যান। এটা সত্য যে, মাত্র ৪ মৌসুম ফুটবল ক্যারিয়ারের তেমন কোনো অর্জন নেই তার। কিন্তু খুবই কম বয়সে মেধা ও কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কোচিং করানোর যে ক্ষমতা তিনি অর্জন করেছেন, সেটা পেশাদার কোচের মধ্যে সচরাচর দেখা যায় না। হফেনহেইম এর কোচ নিয়োগ দেবার কয়েক মাস পরে ক্লাব কর্মকর্তারা বলেছিলেন,”জুলিয়ান একদমই ভিন্ন, বয়সের তুলনায় তিনি অনেক বেশি পরিণত”। ঐ মৌসুম শেষেই ক্লাব কর্মকর্তাদের বলা এ কথাটির প্রমাণ সকলে হাতেনাতে পেয়ে যায়।

নাগেলসম্যানের এমন উদযাপন ছিলো নিয়মিত দৃশ্য; Source: AFP

জুলিয়ানের এই কম বয়সই তার সাফল্যের অন্যতম অস্ত্র। হফেনহেইমের দায়িত্ব নেবার সময় তার থেকে বেশি বয়সের প্লেয়ার ছিলো মাত্র তিনজন। একজন ৫০ বছর বয়সী কোচের সাথে ২৪ বছর বয়সী খেলোয়াড়ের যেমন সম্পর্ক হবে, ৩০ বছর বয়সী কোচের সাথে ২৪ বছর বয়সী খেলোয়াড়ের সম্পর্ক ঠিক তেমনটা কিন্ত হবে না। মাত্র ৬ বছর ব্যবধানে দুজন মানুষের সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বসম। নাগেলসম্যানের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। কম বয়স থাকার কারণে দলের প্রত্যেক প্লেয়ারের সাথে দারুণভাবে যেমন মিশতে পেরেছেন, তেমনি বুঝতে পেরেছেন ফুটবল সম্পর্কে তাদের ধারণা।

হফেনহেইমের হারিয়ে ফেলা আত্নবিশ্বাস তিনি কয়েক মাসের ভেতরই ফিরিয়ে এনেছিলেন। ক্লাবের সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকার বদৌলতে সবাই তাকে বেশ পছন্দ করতো। নাগেলসম্যানও সুযোগটা হাতছাড়া করেননি। নিজের মধ্যে কোনোরকম জড়তা না রেখে তার চিন্তাভাবনা প্লেয়ারদের মধ্যে ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা সবসময় করেছেন। এই সমঝোতা শুধু অনুশীলনের সময়ের ভেতর সীমাবদ্ধ নয়, মাঠের খেলার সময়ও এ সম্পর্কের প্রভাব ম্যাচের ফলাফল ঘুরিয়ে দিতে সহায়তা করেছে।

জুলিয়ান নাগেলসম্যান স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া, বার্সেলোনা ও ইংল্যান্ডের দল আর্সেনালের খেলার পদ্ধতি পছন্দ করেন। তার প্রিয় একজন কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার। আর্সেন ওয়েঙ্গারের ফুটবল দর্শন তিনি নিজেও অনুসরণ করেন, যার দরুন ওয়েঙ্গারের মতো তিনি একাডেমির তরুণ ফুটবলারদের উপর সবসময় বেশি গুরুত্ব দিতে চান। রবার্তো ফিরমিনোর মতো প্লেয়ার দল ছেড়ে চলে যাবার পরও তিনি নতুন কোনো স্টার প্লেয়ার দলে সাইন করাতে রাজি হননি, বরং সুযোগ করে দিয়েছে হফেনহেইমের একাডেমিক ফুটবলারদের। অনুশীলনের সময় তিনি প্লেয়ারদের কয়েকটি সেশনে ভাগ করে কোচিং করান। কয়েক সেশনে ভাগ করে কোচিং করানোর জন্য কোচের সাথে প্লেয়ারদের প্রতিনিয়ত আলাপ আলোচনা হয়, যার কারণে সম্মিলিত থাকার উপকারিতা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন।

এছাড়াও কোন ম্যাচের আগে মাঠে কে উইংয়ে থাকবে, কে বল কাকে পাস দেবে, বল পায়ে না থাকলে কীভাবে খেলতে হবে, কে ট্যাকল কাকে করবে, কে ডিফেন্সিভ এবং অ্যাটাকিং রোল দুটোই পালন করবে, কে কোন প্লেয়ারকে মার্কিং করবে এসব বিষয়গুলো একদম হাতে-কলমে বুঝিয়ে দেওয়া তার বুদ্ধিদীপ্ত ট্যাকটিসগুলোর মধ্যে অন্যতম।

অনুশীলনের সবসময়ের পরিচিত দৃশ্য; Source: Twitter

প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে জুলিয়ান নাগেলসনম্যান মাঠে অভিনব কিছু কৌশল ব্যবহার করেন। নাগেলসম্যানের বদৌলতে বর্তমানে হফেনহেইম ফুটবল মেশিন ব্যবহার করে থাকে। এ মেশিনের কাজ হলো, মেশিনটি একটি বলকে নির্দিষ্ট একটি গতিতে ছুড়ে দেয় এবং প্লেয়ারদের সে বলটি নিজের আয়ত্তে এনে নির্দিষ্ট একটি স্থানে বলটিকে পাঠিতে হয়। এ প্রযুক্তি প্লেয়ারদের বল নিয়ন্ত্রণ ও পাসিংয়ের দক্ষতা বৃদ্ধি পেতে সহায়তা করে। হফেনহেইমের অনুশীলন মাঠে তিনি ৪ কোণায় ৪টি ক্যামেরা লাগানোর ব্যবস্থা করেছেন, যার সাহায্যে তিনি যেকোনো প্লেয়ারের উপর নজর রাখতে পারেন।

কোচিং ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই নাগেলসম্যান সাধারণত ৩-১-৪-২ ফরমেশনে একাদশ সাজাতে পছন্দ করেন। খেলোয়াড় জীবনে একজন ডিফেন্ডার হবার কারণে নাগেলসম্যানের খেলানোর ধরনও রক্ষণাত্মক। একজন আনাড়ি কোচ হয়েও সফল হবার পেছনে লুকিয়ে আছে তার নিজস্ব তিনটি ফুটবল কৌশল। তিনজন ডিফেন্ডার ব্যবহার করে খেলানোর ধরন তার পছন্দ হলেও তিনি সবসময় একাদশ ও পজিশন পরিবর্তন করে খেলানোর মতো বিপজ্জনক পদ্ধতি অনুসরণ করেন।

হফেনহেইম কোচ হবার পরে মেইঞ্চের বিপক্ষে প্রথম জয় পান তিনি, সে ম্যাচে হোফেনহেইমের ফরমেশন ছিল ৪-২-৩-১। পরবর্তী বরুশিয়া ম্যাচেই নাগেলসম্যান ব্যবহার করেন ৫-৪-১ ফর্মেশনে। তার মতে, এতে নিয়মিত খেলা একজন খেলোয়াড়ের খুব তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে ফর্ম হারানো সুযোগ নেই। তার ফুটবল ট্যাকটিসে রক্ষণ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। হফেনহেইমে তিনি সাধারণত করিৎকর্মা ৩ জন ডিফেন্ডারকে ব্যবহার করেন। তিনি প্রথম সিজনে যেমন তার প্রধান দুই স্ট্রাইকার ক্রামারিচ ও ওয়াগনারকে ‘ফ্রি রোল’ দিয়েছিলেন, তেমনি বিপক্ষে টিমের কাছে কোনো ফাঁক রাখতে চাননি। কখনো যদি হঠাৎ করো বিপক্ষে দলের প্লেয়ার কাউন্টার অ্যাটাকে অগ্রসর হয় তবে মিডফিল্ডার দুজন উইংব্যাক পজিশনে রক্ষণের গ্যাপ পূরণ করে। তিনজন ডিফেন্ডার ও দুজন মিডফিল্ডারের সমন্বয়ে বানানো পাঁচজন প্লেয়ারের রক্ষণ ভাঙা কষ্টসাধ্য। যে কারণে ১৬/১৭ সিজনে নাগেলসম্যানের হফেনহেইমের গোল হজম করার পরিমাণ তুলনামূলক কম।

১৬/১৭ হোফেনহেইম ডিফেন্স ছিলো যেন চীনের প্রাচীর; Source: Bayernstrikes

নাগেলসম্যানের ক্ষুরধার মস্তিষ্কের অন্যতম বৈচিত্র্যপূর্ণ উদাহরণ হলো তার সাবস্টিটিউশন দক্ষতা। ম্যাচের যেকোনো সময়ে যদি তার মনে হয় এখনই প্লেয়ার বদল করা প্রয়োজন, তবে তা করতে তিনি দ্বিতীয়বার ভাবেননি। বুন্দেসলিগার দ্রুততম সাবস্টিটিউশনের রেকর্ড তার। ম্যাচের ১০ মিনিটে হোক আর শেষ মুহূর্তের অতিরিক্ত সময়ে হোক তিনি প্লেয়ার বদল করেছেন, যার ফলাফল হফেনহেইম হাতেনাতে পেয়েছে। অধিকাংশ ম্যাচের ভাগ্য ঘুরে গেছে এই সাবস্টিটিউট প্লেয়ারের গোলে। তার এরকম চিন্তাভাবনা আর ক্ষুরধার মস্তিষ্কের কারিশমাতেই মাত্র কয়েক বছরেই তিনি পেয়ে গেছেন হফেনহেইমের সর্বকালের সেরা কোচের খেতাব।

নাগেলসম্যানের সাবস্টিটিউট যেন ম্যাচের ভাগ্য নির্ণায়ক; Source: Alex Grimm

ম্যানচেস্টার সিটি কোচ পেপ গার্দিওলার সাথে জুলিয়ান নাগেলসম্যানের বেশ মিল আছে। তারা দুজনেই কম ট্যাকল, বেশি প্রেসিং নীতিতে বিশ্বাসী। তবে এ জাতীয় ফুটবল কৌশলে সাথে সকল খেলোয়াড় খাপ খাওয়াতে পারে না, যার কারণে ম্যানচেস্টার সিটিতে এসে পেপ গার্দিওয়ালা নতুন করে তার কৌশলের সাথে মানিয়ে নেবার জন্য পুরনো দল অনেকাংশেই বদলে ফেলেছেন। জুলিয়ান নাগেলসম্যান প্রথম দায়িত্ব নেবার পর সৌভাগ্যবশত তার কৌশল অনুযায়ী খেলোয়াড় হফেনহেইমে ছিল। কালের বিবর্তনে তারা সবাই এখন আর দলে নেই। আর হফেনহেইম ধনী ক্লাব নয়, তাই স্যান্ড্রো ওয়াগনার, সেবাস্তিয়ান রুডি, নুয়ান সুলেদের স্থানে যথাযথ ফুটবলার হফেনহেইম ক্লাব ম্যানেজমেন্ট আনতে পারেনি। চলতি মৌসুমে তাই জুলিয়ান নাগেলসম্যানের ফুটবল দর্শন কাজে দিচ্ছে না, হফেনহেইমও নেই পুরনো ছন্দে।

একজন অভিজ্ঞ কোচ যেভাবে ভাবতে পারেন, মাত্র ২৮ বছর বয়সে ঠিক সেভাবে ভেবেছিলেন তিনি। একটি দলকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়ে পুরো বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছেন। সময়ের সাথে সাথে তার ক্ষুরধার মস্তিষ্কের তীক্ষ্ণতা যে আরো বাড়বে সেটা অনুমেয়। দ্বিতীয় মরিনহো, দ্বিতীয় গার্দিওলা বা দ্বিতীয় আর্সেন ওয়েঙ্গার নয়, হয়তো ভবিষ্যৎ ফুটবলে তিনিই হবেন প্রথম নাগেলসম্যান।

তথ্যসূত্র

  1. Julian Nagelsmann – The Tactics Behind a Pioneer
  2. Julian Nagelsmann’s tactical philosophy
  3. Julian Nagelsmann: 10 things on Hoffenheim’s prodigious young coach 

Featured image: Odd ANDERSEN/AFP

Related Articles