২০১৫ বিশ্বকাপের বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচের পরের প্রেস কনফারেন্সের কথা। মাত্রই বাংলাদেশের কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছে ইংলিশরা, সাংবাদিকদের সামনে এসে বসেছেন ইয়োন মরগান, যার অধিনায়কত্বের বয়স তখন মাত্র মাসতিনেক।
সে সময় মরগানের চেহারা দেখে যে কারও মনে হওয়া স্বাভাবিক, মরগানকে শূলে চড়ানো নিয়ে আলাপ চলছে। এমনিতেই মরগান আইরিশ, তাতে দোষটা তার ঘাড়ে তুলে দিতে বিন্দুমাত্র আপত্তি ছিল না ব্রিটিশ মিডিয়ার।
এরপর সাত বছর পেরিয়ে গেছে। ২০২২ এর জুনে এসে মরগান জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আর খেলবেন না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আছে মাসচারেক, ওয়ানডে বিশ্বকাপের বছরখানেকের কম। এমন সিদ্ধান্তে তাই হতবাক হওয়াটাই স্বাভাবিক।
তবে লোকটা মরগান বলেই কেউ অবাক নন। এবং লোকটা ইয়োন মরগান বলেই সমালোচনা ও খুঁত ধরার জন্য কুখ্যাত ব্রিটিশ মিডিয়ায় তার অবসরে কেবল প্রশংসার পুষ্পস্তবক, প্রশ্ন নেই।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মরগানের সময়টা খারাপ যায়নি। ইংল্যান্ডকে অধরা ওয়ানডে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে নিয়েছেন একবার, এবং ওয়ানডেতে ইংলিশদের হয়ে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হয়ে ব্যক্তিগত অর্জনের খাতাটাও ভরেছেন।
তবে বিদায়বেলায় প্রশংসার বন্যায় মরগান কেবল এগুলোর জন্যই ভাসছেন না, তাকে সাদা বলে ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা অধিনায়কের খেতাবটা স্রেফ এগুলোর জন্য দিয়ে দেননি সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসাইন। নাসের হুসাইন - যার ধারাভাষ্যেই মরগ্যানের ইংল্যান্ডের ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে বিদায়,
‘দ্য বাংলাদেশ টাইগার্স হ্যাভ নকড দি ইংলিশ লায়ন্স আউট অফ দ্য ওয়ার্ল্ড কাপ!’
মরগানকে ইংল্যান্ডের সেরা অধিনায়কের তকমাটা দিয়ে দেয়া হচ্ছে, কারণ খোলনলচে ইংলিশ ক্রিকেটকে বদলে ফেলেছেন তিনি; আরও ঠিকভাবে বললে, ওয়ানডে ক্রিকেটকেই। ছোট করে বললে, ওয়ানডে ক্রিকেটকে দুই ভাগ করতে পারে, প্রি-মরগান, আর পোস্ট-মরগান।
২০১৫ বিশ্বকাপের মাত্র তিন মাস আগে দলের দায়িত্ব অ্যালেস্টার কুক থেকে বুঝে পেয়েছিলেন মরগান, বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য যা কোনোভাবেই আদর্শ নয়। আদর্শ ছিল না সেই ইংল্যান্ড দলের খেলার ধরনও। তখনও ইংল্যান্ড খেলে প্রথাগত ওয়ানডে; প্রথম ১০ ওভার দেখেশুনে খেল, তারপরের ৩০ ওভার সিঙ্গেলস-ডাবলসে ভর করে পার করো, শেষ ১০ ওভারে ইচ্ছেমতো মারার চেষ্টা করে স্কোরটাকে বড় করো।
২০১৫ সালের মধ্যে ক্রিকেট ক্রিস গেইল-এবি ডি ভিলিয়ার্সদের দেখে ফেলেছে এক দশক ধরে; এবং অবশ্যই ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে। এবং ২০১৫ বিশ্বকাপে অতি-আক্রমণাত্মক মানসিকতা নিয়ে এসে ‘বাজ’ নিউ জিল্যান্ডের মানসিকতাই বদলে ফেলেছিলেন, তাদের নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বকাপ ফাইনালে।
মরগান যে দল পেলেন সে বিশ্বকাপে, তাতে তখনও ইনিংস ওপেন করেন ইয়ান বেল ও মইন আলী। তিনি, জস বাটলার, অ্যালেক্স হেলসরা আছেন বটে; কিন্তু তাদের পুরো ক্ষমতাটা দেখানোর লাইসেন্স নেই। বোলিংয়েও সেই স্টুয়ার্ট ব্রড, জেমস অ্যান্ডারসন, ক্রিস ওকসদের মতো প্রথাগতরাই।
অতি স্বাভাবিকভাবেই ইংল্যান্ড সে বিশ্বকাপে মুখ থুবড়ে পড়েছিল, ছয় ম্যাচে জিতেছিল মাত্র দু'টিতে। এবং এরপরই মরগানের অধিনায়কত্ব নিয়ে যাবার জন্য জোর আন্দোলন।
তবে তাতে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড টলেনি। ভাগ্যিস!
বিশ্বকাপের পর মরগান তাই শুরু করলেন নতুন পথে হাঁটা, সঙ্গে পেলেন অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসকে। তাদের লক্ষ্য ছিল, ম্যাককালাম নিউ জিল্যান্ডকে যেরকম ভয়ডরহীন আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের রাস্তায় নিয়ে এসেছেন, ইংল্যান্ডকেও সেখানেই নিয়ে আসা।
ইংল্যান্ডের সুবিধে ছিল, তাদের হাতে থাকা খেলোয়াড়রা ঠিক ওই স্টাইলেরই ছিল; বরং তাদের সমস্যা হচ্ছিল ইংল্যান্ডের পুরনো ধারার ক্রিকেট খেলতে। খেলোয়াড়গুলোর নাম দেখুন না - বাটলার, বেন স্টোকস, জনি বেয়ারস্টো, জেসন রয়!
এবং বিশ্বকাপের পর প্রথম সিরিজেই নিউ জিল্যান্ডকে ৩-২ ব্যবধানে হারায় ইংলিশরা, তাতে ছিল মরগানের ‘বল দেখো, বল মারো’ চিন্তাভাবনার পূর্ণ প্রয়োগ।
প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ড করে ৪০৮, দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৯৮ তাড়া করতে গিয়ে ৩৬৫ রানে গুটিয়ে যায়, এবং তৃতীয় ম্যাচে ৪৫.২ ওভারে ৩০২ করে অলআউট, তারপর হার।
মরগান কী চাচ্ছিলেন, সেটি বোঝা যায় ওই ম্যাচশেষে তার কথায়:
“আমাকে এটি হতাশ করে না (পাঁচ ওভার বাকি থাকতে অল আউট হওয়া)। আমি চাই আমরা এই আক্রমণাত্মক চিন্তাধারা নিয়ে এগোই এবং ৫০ ওভার ব্যাট করার চিন্তা না করি, কারণ আমার মনে হয় সেটি ব্যাটসম্যানদের দ্বিধায় ফেলে এবং নিজেদের স্বাভাবিক খেলা থেকে বিরত রাখে। আমি সেটি চাই না।”
ফল দেখা গিয়েছিল পরের ম্যাচেই, ইংল্যান্ড ৩৫০ তাড়া করে ফেলেছিল ছয় ওভার হাতে রেখেই! শেষ ম্যাচটা জিতে নিয়ে সিরিজও পুরেছিল পকেটে।
পরিসংখ্যানের বিস্তর আলাপে যাওয়াটা নেহাত অপ্রয়োজনীয়। ইংল্যান্ডের ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম ৪৪ বছরের সঙ্গে পরের সাত বছরের এত পার্থক্য, পরিসংখ্যান তুলে এনে সেটি পুনরায় প্রমাণ করাটা বাতুলতা। তবুও ছোট দু'টি পরিসংখ্যান না দিলেই নয়।
ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড ৪০০ রানের বেশি করেছে পাঁচবার, সবক'টিই ২০১৫ বিশ্বকাপের পর। ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ ওয়ানডে ইনিংসের তালিকায় প্রথম ১৫টির সব ক'টিও সেই বাংলাদেশ ম্যাচের পরই।
এবং সেই বিশ্বকাপের পর থেকে ইংল্যান্ডের হয়ে ৫০টির বেশি ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কেবল জো রুটের স্ট্রাইকরেটই ৯০ এর নিচে, সেটিও ৮৯.৮২। সর্বোচ্চ বাটলারের ১২৬.৩৯। দুই ওপেনার রয় ও বেয়ারস্টোর যথাক্রমে ১০৭ ও ১০৬।
তবে পার্থক্যটা মরগান এনেছেন শুধু মেরে খেলার স্বাধীনতা দিয়ে নয়, বরং দলে নিয়েছেন স্পেশালিস্টদের। লিয়াম প্লাংকেটের কথাই চিন্তা করুন না!
২০১১ সালে বাদ পড়া প্লাংকেটকে ২০১৫ দলে ফিরিয়েছিলেন মাঝের ওভারে তার কার্যকারিতার জন্য। এবং পরের চার বছরে প্লাংকেট তার প্রতিদানও দেন; ৬০ ম্যাচে ২৮ গড়ে নেন ৯৬ উইকেট। ২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কারটা স্টোকস অতিমানব না হয়ে গেলে প্লাংকেটও পেতে পারতেন; ১০ ওভারে ৪২ রান দিয়ে নিয়েছিলেন হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন, ও জিমি নিশামের উইকেট।
অথবা জোফরা আর্চারের ব্যাপারটাই ভাবুন। বিশ্বকাপের আগে আগেই কেবল ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার অনুমতি মিলেছে, এবং তাকে নিতে হলে বাদ দিতে হবে ডেভিড উইলিকে, যিনি কি না শেষ চার বছরের দলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী।
ইংল্যান্ড উইলিকে বাদই দিল। কারণ নতুন বলের সুইংটা ক্রিস ওকসও পারেন, কিন্তু আর্চারের ওই ভয়ংকর গতি কোথায় পাওয়া যাবে! আর্চারও দেখিয়েছিলেন, ইংল্যান্ড ভুল করেনি।
মরগানের ইংল্যান্ড গতানুগতিক রান-গড়–স্ট্রাইকরেটের হিসেবে না গিয়ে খেলার বিচার করেছে ইমপ্যাক্টের বিচারে। তাতে যে দল তৈরি হয়েছে, সেটিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছিল, এবং বিশ্বকাপ জিতে প্রমাণ করেছিলেন, তারা ঠিক ছিলেন।
বিশ্বকাপ জেতার আগেই মরগান বলেছিলেন,
“আমাদের নিজেদের পরিচয় খুঁজে পেতে সময় লেগেছে। দল হিসেবে এটা করতে সময় লাগে। আপনি যেভাবে খেলছেন, যেটা করছেন, সেটার ওপর বিশ্বাস আসা প্রয়োজন। কয়েক বছর আগে সেটাই হতে শুরু করে, আমরা আক্রমণাত্মক দলে বিবর্তিত হতে থাকি, এবং আমরা দেখার চেষ্টা করি আমরা আসলে কতদূর যেতে পারি। এবং আমরা বুদ্ধিদীপ্ত ক্রিকেটও খেলতে থাকি। আপনি যদি কাউকে জিজ্ঞাসা করেন ইংল্যান্ড থেকে কী আশা করে, উত্তর হিসেবে স্বাধীনতা ও আকর্ষণীয়তা পাবেন।”
এবং সেই স্বাধীনতা এবং আকর্ষণীয় ব্র্যান্ড অফ ক্রিকেটটা নিয়ে মরগান শেষ পর্যন্ত ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরেছিলেন।
আরেকটা বিশ্বকাপ জিতে অমরত্ব পাওয়ার সুযোগ ছিল মরগানের, এবং বিশ্বকাপে তার দল ফেভারিট হিসেবেই যাচ্ছিল। কিন্তু মরগান কেন আলাদা, কেন তার অধীনেই ইংল্যান্ডের এই পরিবর্তন, সেটি তিনি দেখালেন আরো একবার।
ফর্ম ছিল না বেশ কিছুদিন ধরেই, চোট নিয়েও ভুগছেন। এবং জানেন, তাকে খেলানোর জন্য জায়গা দেয়া যাচ্ছে না লিয়াম লিভিংস্টোনদের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মাত্র চার মাস দূরে, ওয়ানডে বিশ্বকাপও হাতের নাগালে, এমন সময়ে যে কেউই হয়তো চাইবেন, শেষ চেষ্টা করে বিশ্বকাপ শেষেই ক্যারিয়ার শেষ করতে।
কিন্তু ইয়োন মরগান যে কেউ নন। তার কাছে সবার আগে দলটাই বড়। এবং বিশ্বকাপের ঠিক আগে আগে দায়িত্ব পেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ার অভিজ্ঞতাটা থেকে জানেন, খোয়ানো প্রতিটা দিনের দাম কত।
তাই মরগান আগেই দায়িত্ব ছাড়েন। বলেন,
“আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উপভোগ্য এবং ফলপ্রসূ সময়ের শেষ টানাটা মোটেই সহজ সিদ্ধান্ত ছিল না। কিন্তু আমি মনে করি এটাই সঠিক সময়, আমার এবং সাদা বলের ইংল্যান্ড দলের জন্য।”
বলেন, আর একটা ম্যাচ খেললেও সেটি দলের প্রতি অবিচার হতো।
“(বিদায়ী ম্যাচ খেললে) এটি সম্পূর্ণভাবে অবিচার হতো, এবং আমি যা যা করেছি, সে সব কিছুর বিরোধী হতো। আমার কেবল নিজেকে একজন প্রতারক মনে হতো।”
শেষ পর্যন্ত মরগান টিমম্যান হিসেবেই ক্রিকেট ছাড়লেন, উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে গেলেন কিংবদন্তীতুল্য দল এবং ক্রিকেটীয় কালচার। মরগানের অবসরের পর সেটি বলতে ভোলেননি ইসিবির ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট, রব কী।
"ইসিবি এবং ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত সকলের তরফ থেকে আমি ইয়োন মরগানকে ক্রিকেটে তার অসামান্য অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই।"
"এটা চিন্তা করা ভুল হবে যে মরগানের লেগ্যাসি কেবল ২০১৯ বিশ্বকাপ জয়। এটা তার থেকেও অনেক বেশি। সব দারুণ খেলোয়াড় ও নেতার মতো, সে ক্রিকেট কীভাবে খেলা হয়, সেটাকে পাল্টে দিয়েছে; এবং সে পালটে দিয়েছে কীভাবে একটি প্রজন্ম ও পরবর্তী প্রজন্মগুলো ক্রিকেট খেলবে। ক্রিকেটে তার লেগ্যাসি টিকে থাকবে বহুদিন।"
“প্রশ্নাতীতভাবে সে আমার দেখা সেরা নেতা। আমি তার জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য শুভকামনা জানাই।”
মরগ্যানের অসামান্য সফলতা বোধহয় এটিই। বিশ্বকাপ জেতাও যখন আপনার সাফল্যের তালিকায় দুই কিংবা তিন নম্বরে আসে, তখন আপনার প্রভাবটা অনুমান করে নেয়াটা আর কঠিন থাকে না।
আরও নয়জন অধিনায়ক বিশ্বকাপ জিতেছেন। অনেকেই খেলাটি নিয়ে চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন এনেছেন। কিন্তু মরগান বাদে কারও জন্য বলতে পারবেন, খেলাটি চিরকালের জন্য বদলে গেছে?
উত্তরটা হ্যাঁ হওয়া অত্যন্ত কঠিন, হবার কথাও বটে। ৪৫০ রানও ওয়ানডেতে নিরাপদ নয়, এ কথা আপনাকে আর কে ভাবাতে পেরেছে! কেবল তার বেলায়ই বলা যাচ্ছে, একটা ফরম্যাট কী করে সম্পূর্ণরূপে পুরো বিশ্বে পালটে ফেলা যায়, সেটি করে দেখিয়েছেন, লেটার মার্কসহ।
বিদায়বেলায় তাই মরগান সবার কুর্নিশই পান। এবং প্রশ্নবোধক ছাড়াই তাকে ইংল্যান্ডের সেরা সাদা বলের অধিনায়কের খেতাবটা দিয়ে দেন। এবং তার এবং ম্যাককালামের ফর্মুলাটা মিলিয়ে ইংল্যান্ডের টেস্ট দল বের হয়ে আসে হারের বৃত্ত থেকে। এসব কিছু হবে, ২০১৫ সালের সেই প্রেস কনফারেন্সে কে ভেবেছিল? কিংবা ২০০৯ সালের ৫ জুনে কি মরগান এসব ভেবেছিলেন, যখন প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের হয়ে নামছিলেন?
ভাবতেও পারেন, শেষ পর্যন্ত তিনি মরগানই তো!
An ode to Eoin Morgan, the former England skipper, who revolutionised the ODI game for the better. On his retirement, the article speaks about the way he changed it.
Feature Photo: Getty Images