Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ: রিয়ালের জন্য সফল নাকি ব্যর্থ প্রেসিডেন্ট?

স্পেনের এক বিখ্যাত সাংবাদিক একবার বলেছিলেন, “স্পেন কেবল টেলিফোন দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।” কথাটির মাজেজা এমন যে, স্পেনে যার যত বেশি মানুষের সাথে সম্পর্ক সে তত প্রভাবশালী। ঠিক এই শ্রেণীর সবচেয়ে সফল ও প্রভাবশালী লোকটিই বোধহয় রিয়াল মাদ্রিদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র। খুব দারুণ ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন কি? না। এরপর তার পদার্পণ হয় রাজনৈতিক অঙ্গনে, সেখানেও কি সফল কেউ? না। প্রেসিডেন্ট হিসেবেও কি সততা বা আদর্শের প্রতিভূ? না। তবে কেন তিনি আজকের ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ, ফুটবল জগতের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব? এই বিষয়টি নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।

মাদ্রিদ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের পুরকৌশলের স্নাতক তিনি। শুরুটা করেছিলেন মাদ্রিদ সিটি কাউন্সিলের চাকুরি দিয়ে। তার বাবার বড় ব্যবসা থাকলেও তিনি সেই পথ মাপেননি। নিজ গরজেই তাই সিটি কাউন্সিলে যোগদান করেন। অল্পদিনের মধ্যেই পদোন্নতি এলো। গণযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতি প্রাপ্ত হলেন কিন্তু তার লক্ষ্য আরো বড় কিছুর দিকে। অন্য তরুণরা যখন এমন একটি চাকরি পেলে বর্তে যায়, তিনি সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে রাজনীতির ময়দানে নামেন। ডেমোক্রেটিক রিফর্মিস্ট পার্টি নামক এক দলে যোগ দেন। ব্যক্তিগত কারিশমার জোরে অল্প কয়েকদিনের মাঝেই সেই দলের সাধারণ সম্পাদক হয়ে যান। কিন্তু রাজনৈতিক ময়দানে ধাক্কা খান ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে যখন তার দলের মারাত্মক ভরাডুবি হয় তখন। সব ব্যর্থতার দায়ভার মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেন। এবার গন্তব্য ব্যবসা জগতে।

প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ; Source:QuirkyByte

ব্যবসায় ন্যুনতম জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা ছাড়াই কয়েকজন বন্ধুসমেত ‘পাডরোস’ নামে একটি দেউলিয়া আবাসন কোম্পানি খুব অল্প দামে কিনে নেন। সৌভাগ্যবশত সেই সময় থেকেই স্পেনের আবাসন খাতের চাকা ঘুরতে শুরু করে। দেউলিয়া কোম্পানিকে প্রথম বছরই লাভের মুখ দেখান পেরেজ। আবাসন খাতের সুবাতাসের সবচেয়ে বেশী ফায়দা নিয়ে মাত্রই ব্যবসায় নামা পেরেজ দেউলিয়া পাডরোস কোম্পানিকে নিয়ে আসেন স্পেনের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির অবস্থানে। এই সময়েই তার বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি হতে থাকে। ১৯৯৩ সালে অন্য একটি বড় কোম্পানির সাথে একীভূত হয়ে পাডরোস পরিণত হয় ‘এসিএস’ নামে এক কোম্পানিতে যেটি হয়ে ওঠে বিশ্ব আবাসন ব্যবসায় প্রথিতযশা এক নাম। বছরের পর বছর স্পেনে এই কোম্পানিটি আবাসন খাতে রাজত্ব করছে। ১৯৯৫ সালে পেরেজ তার পরবর্তী লক্ষ্য স্থির করেন ক্রীড়াজগতে নিজের অবস্থান জানান দিতে।

রিয়াল মাদ্রিদে পেরেজের আগমন

১৯৯৫ সালে রিয়ালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ান পেরেজ। রেমন মেনডোজার কাছে ৬৯৯ ভোটে হেরে যান তিনি। দমে যাননি, ২০০০ সালে আবার নির্বাচনে দাঁড়ান তিনি। ভাবা হচ্ছিল বরাবরের মতো আবারও তার নির্বাচন-ভাগ্য তার বিরুদ্ধাচরণ করবে। ঠিক তখনই তার জীবনের সেরা ‘মাস্টারস্ট্রোক’ খেললেন। তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট লোরেঞ্জোও প্রার্থী, তার আমলে শেষ ৩ বছরে রিয়াল ২টি চ্যাম্পিয়নস লীগ জিতেছে। এই সাফল্যে গদগদ হয়ে তিনি ভাবলেন তার জয় ঠেকায় কে! তখনই পেরেজ সেরা চালটি চাললেন। ঘোষণা দিলেন, তিনি জিতলে বার্সা থেকে ফিগোকে রিয়ালে নিয়ে আসবেন। ফিগো তখন বার্সার সেরা খেলোয়াড়, বার্সার অধিনায়ক। তার ভাষায় ফিগোকে আনাটা ছিল বার্সা থেকে তাদের ‘আত্মা ছিনিয়ে নিয়ে আসা’। সবাই ভাবলো ভুয়া প্রতিশ্রুতি। কিন্তু তিনি বলে বসলেন তিনি যদি জেতেন আর ফিগোকে না আনতে পারেন, তবে সব মাদ্রিদিস্তাকে ফ্রিতে বার্নাব্যুতে একবছর খেলা দেখতে দেবেন!

ফিগোকে কেনার জন্য তার এজেন্টকে পেরেজ প্রায় ২ মিলিয়ন ডলার দেন, বলেন তিনি জিতলে রিয়ালে আসতে হবে আর হারলে টাকা ফেরত দিতে হবে না। সবার মতো তারাও ভেবেছিলেন আর যা-ই হোক পেরেজ জিতবেন না। তাই টাকাটা নেন, কিন্তু বড় ব্যবধানে পেরেজ জিতেই যান। সেই চুক্তিতে আরেকটা ধারা ছিল যে, না আসলে ১৯ মিলিয়ন ডলার ফেরত দিতে হবে! পেরেজের জয় সব এলোমেলো করে দেয়, অসম্ভবকে সম্ভব করে নিয়ে আসেন বার্সা অধিনায়ক ফিগোকে। শুরু হলো রিয়ালে নতুন এক ধারা, ‘গ্যালাকটিকো’ বা ‘তারার মেলা’।

প্রায় অসাধ্য সাইনিং এর পর পেরেজ; Source: irishmirror.ie

অর্থনৈতিক সংস্কারে পেরেজ

পেরেজ যখন আসেন তখন রিয়াল ঋণের ভারে জর্জরিত, ৩০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ। পেরেজ এসেছিলেন তার ব্যবসায়িক মস্তিস্ক কাজে লাগিয়ে রিয়ালকে আর্থিক দৈন্য থেকে উদ্ধার করতে। শুরুতেই কিছু কড়া সিদ্ধান্ত নেন। রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাবটি মাদ্রিদের একদম প্রাণকেন্দ্রে, সেই সম্পত্তি তিনি এসেই ৫০০ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে দেন। এই সিদ্ধান্তের এখনো অনেক সমালোচক আছে। পেরেজের আপাদমস্তক চিন্তা ছিল আর্থিক সংস্কার। রিয়াল এমন সব খেলোয়াড় কিনতে থাকে যারা তাদের সেরা সময়ে আছেন, যাদের দর্শকপ্রিয়তা তুঙ্গে, যাদের বিপণন মূল্য অনেক বেশী। তাদের ক্যারিয়ার শেষের দিকে কিন্তু পেরেজের কাছে তারা ছিলেন সাফল্যের নিশ্চয়তা এবং অতি অবশ্যই বাণিজ্য!

আর্থিক দৈন্যদশায় থাকা একটি ক্লাবে ফিগো, রোনালদো, জিদান, ওয়েন এর মতো তারকাদের নিয়ে আসেন। বহুল প্রচলিত একটি গুজব হলো, তিনি নাকি রোনালদিনহোকে কেনেননি কেবল তার স্মার্টনেসের অভাবের জন্য! উদাহরণস্বরূপ, সেই যুগের সবচেয়ে বেশী বিপণনযোগ্য খেলোয়াড় ছিলেন ডেভিড বেকহ্যাম। তাকে দলে ভেড়ানোর মানেই ছিল তার ছবিস্বত্ব, বিপণনস্বত্ব – সব মিলিয়ে ট্রান্সফার ফি উঠে এসেও আরো লাভ থাকতো রিয়ালের। সব ছবিস্বত্ব, বাণিজ্যস্বত্ব এসব থেকে রিয়ালের প্রচুর অর্থ আসতে থাকে। রিয়াল পরিণত হয় আর্থিকভাবেও প্রভাবশালী এক ক্লাবে।

পেরেজের প্রভাবশালীদের সাথে যোগাযোগ যেন বহুল প্রচলিত; Source: Diario Gol

গ্যালাকটিকোয় অন্ধকার

রিয়ালের সেই তারকা হাটকে বলা হতো ‘গ্যালাকটিকো’। গ্যালাকটিকোকে নিয়েও বিস্তর সমালোচনা ছিল। পেরেজের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি শোনা যায় দলে হস্তক্ষেপের কথা। ভিসেন্তে দেল বস্ক রিয়ালকে ৫ বছরে ২টি লীগ ও ২টি চ্যাম্পিয়নস লীগ জেতানোর পরেও তাকে রাখতে চাননি পেরেজ। মনোমালিন্যের কারণ হলো, পেরেজের চাহিদা ছিল বিশ্বসেরা সব খেলোয়াড় এনে ভরিয়ে দেয়া পুরো দল, কিন্তু কোচদের দরকার হয় তাদের স্টাইলের সাথে যায় এমন খেলোয়াড়। দেল বস্ক যাওয়ার পরই রিয়ালে নানাবিধ সংকট দেখা দিতে থাকে। পেরেজের হাতে চলতে থাকে একের পর এক কোচের বরখাস্ত। ম্যাকলেলে ছিল সেই আমলের সেরা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। কৃষ্ণকায় এই ফ্রেঞ্চের পায়ে কোনো জাদু ছিল না, কিন্তু ডিফেন্স ও মাঝমাঠকে সযত্নে আগলে রাখতেন এবং এই পজিশনে ছিলেন অদ্বিতীয়। তাকে পেরেজ কোচের মতের বিরুদ্ধে বেচে দেন। এরপরে রিয়াল অনেকদিন আর সেই ভারসাম্য পায়নি তাদের খেলায়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে রিয়ালের দারুণ অগ্রগতি হলেও খেলার ব্যাপারে ছিল অনেক ব্যর্থতা। সেই সব মাথায় রেখেই ২০০৬ সালে পেরেজ রিয়াল ছাড়েন ক্লাবকে অন্য ধারায় চালনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে।

জিদানের সাথে পেরেজ; Source: The Sun

প্রত্যাবর্তন ও সাফল্য

২০০৯ সালে রিয়ালে আবারো প্রত্যাবর্তন হয় তার। দ্বিতীয় মেয়াদের পেরেজ আগের চেয়ে আরো আগ্রাসী হলেও ছিলেন সতর্ক। প্রেসিডেন্ট হয়েই নিয়ে আসেন কাকা, রোনালদো, জাবি আলোন্সোর মতো বিশ্বসেরাদের। কিন্তু পেরেজের দুর্ভাগ্য যে, ঠিক সেই সময়েই পেপ গার্দিওলার অদম্য এক বার্সার উত্থান হয়। তিনি নিজে যেমন উচ্চাকাঙ্ক্ষী তেমনি তার ইচ্ছাও ছিল জোসে মরিনহোকে নিয়ে আসার। তাই ভালো খেলার পরও ট্রফি না জেতার দায়ে পেল্লেগ্রিনিকে এক মৌসুম পরেই বরখাস্ত করেন। মরিনহোর হাত ধরে বার্সার আধিপত্য ভেঙে রিয়াল লীগ জিতলেও চ্যাম্পিয়নস লীগ থেকে যায় অধরা।

দলের অন্তর্কোন্দলে মরিনহো বিদায় নেন, আসেন আঞ্চেলত্তি। পেরেজ আবার ট্রান্সফার রেকর্ড ভেঙে দলে ভেড়ান বেল, ইস্কো ও ইয়ারামেন্দিকে। আঞ্চেলত্তি বহুদিনের অধরা চ্যাম্পিয়নস লীগ সহ কোপা দেল জেতালেও পরের মৌসুমে ট্রফিলেস থাকার কারণে সব সমর্থক, খেলোয়াড়ের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে তাকে বরখাস্ত করেন পেরেজ। নিয়োগ দেন রাফা বেনিতেজকে। রাফার অধীনে আবার যেন অন্ধকার যুগ ফিরে আসে রিয়ালে। টালমাটাল এক সময়ে মাত্র মাস ছয়েকের মাথায় রাফাকে বরখাস্ত করে পেরেজ নিয়োগ দেন জিদানকে। এটা ছিল যেন পাপের প্রায়শ্চিত্ত। বাকি গল্প তো সবারই জানা। পেরেজের দ্বিতীয় মেয়াদের লাগানো গাছের ফল তিনি পেতে শুরু করেন জিদানের হাত ধরে দেরিতে হলেও। কিন্তু এই পেরেজ যেন বদলে যাওয়া এক ব্যক্তি। কিভাবে?

পেরেজের দুই রেকর্ড সাইনিং এর সাথে তিনি; Source: The Sun

পরিণত এক পেরেজ

পেরেজ ছিলেন তার ট্রান্সফার মার্কেটে ঝড়ো সব সাইনিং এর জন্য বিখ্যাত। কিন্তু ট্রান্সফার মার্কেট এত বেশি স্ফীত হয়ে গেল যে, একসময় রিয়াল যে দামে প্লেয়ার কিনলে সবার চোখ ছানাবড়া হয়ে যেত, এখন সেই দামে অনেকেই কিনে। উপরন্তু পেট্রোডলারের আগমনীতে অনেক দলই ট্রান্সফার বাজারে রিয়ালকে পাল্লা দিতে প্রস্তুত। ইংলিশ লীগের টিভিস্বত্ত্ব চুক্তি পর পেরেজ তার সব কৌশল বদলে ফেলেন। পেরেজ জোর দেন যুব প্রতিভা তুলে আনার জন্য। ২৫ বছরে যার দাম ১০০ মিলিয়ন ইউরো হতে পারে তাকে ১৮ বছর বয়সে ১০ মিলিয়নে কিনে আনার মতো নীতি গ্রহণ করেন।

ক্রুস, ক্যাসেমিরো, লরেন্তে, ভাজকেজ, ভারানে, থিও, সেবায়োস, আসেনসিও, মোরাতাদের যে দামে কেনা তাদের পরিণত অবস্থায় কিনলে তাদের দাম সবমিলিয়ে কমপক্ষে ১০ গুণ বেশী হতো। রিয়াল দেরিতে হলেও যুব প্রতিভাদের তুলে আনার দিকে জোর দিতে থাকে। ব্যাপারটা এমন দাঁড়ায় যে, সেবায়োস রিয়ালে ৫ম মিডফিল্ডার অপশন হিসেবে রিয়ালে আসে যখন তার সামনে সুযোগ ছিল বার্সায় নিয়মিত খেলার। একসময় বার্সা যা করতো যুব খেলোয়াড়দের তুলে এনে, রিয়াল ঠিক তাই-ই করছে এখন। আসলে পরিণত পেরেজ অনেক জিনিসই অন্য অনেকের আগে বুঝে নেন। সবাই যখন কম খরচ করতেন তিনি বাজারে ঝড় তুলতেন, আর এখন যখন বাজারে ঝড় তখন তিনি শান্ত নাবিক।

এই জুটি রিয়ালকে দিয়েছে বহু সাফল্য; Source: The42

পেরেজের আরো অনেক সমালোচনার মধ্যে একটি ছিল তার ব্যবসায়ী, কর্পোরেট বা প্রভাবশালীদের সাথে সম্পর্ক নিয়ে। বার্নাব্যুর ভিআইপি বক্সে প্রায়ই দেখা মেলে স্পেনের তাবৎ ক্ষমতাশালীদের। পেরেজের তাদের সাথে যোগসাজশ অনেকের কাছেই একটি মিথ। এমনকি সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণেও তিনি সিদ্ধহস্ত। অনেক সাংবাদিককেই তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন বার্নাব্যুর ভিআইপি বক্সের টিকিটের মাধ্যমে! হ্যাঁ, আশ্চর্য হবেন না। পেরেজের এসবের কাহিনী স্পেনের অলিগলিতে প্রচলিত। কোনো খেলোয়াড় কেনার দর কষাকষিতে পেরেজ রিয়ালের শেষ অস্ত্র, অনেকটা অব্যর্থ। কোনো খেলোয়াড়কে পেরেজ চাওয়া মানে, তার জন্য তিনি শেষ অবধি লড়বেন। আর এই অনমনীয় মনোভাবই তাকে নিয়ে গেছে আজকের অবস্থানে।

বর্তমানে পেরেজ রিয়ালে মোটামুটি ‘এক ও অদ্বিতীয়’। তবে পেরেজ আসলে কি? একের পর এক কোচ বরখাস্তের দায়, ক্ষমতার অধিক ব্যবহারের দায়, ইচ্ছামতো খেলোয়াড় কেনার দায়- এসব অনেক অভিযোগ আছে তার নামে। কিন্তু দেনাগ্রস্ত এক রিয়ালকে তিনি এমন এক অবস্থানে নিয়ে এসেছেন যেটা ২০০০ সালেও ছিল অকল্পনীয়। এশিয়া অঞ্চলে রিয়ালের প্রসারের একটি বড় কারণ পেরেজ। এটি এমন একটি যুগ যেখানে অর্থই ফুটবলের সবচেয়ে বড় শক্তি আর সেখানে রিয়াল প্রায় অদম্য। রিয়াল সমর্থকরা নিজেদের সৌভাগ্যবান ভাবতেই পারেন ২০০০ সালে এই ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেয়ে, তা না হলে রিয়াল হয়ত তার ‘জায়ান্ট’ স্ট্যাটাস ধরে রাখতে পারতো না। আসলেই পেরেজ কোনো দক্ষ প্রকৌশলী নন, দক্ষ রাজনীতিবিদ নন, জন্মগত ব্যবসায়িক নন। তিনি যেন সবকিছুর এক দারুণ মিশেল। আসলে পেরেজ কী? সফল এক প্রেসিডেন্ট নাকি ক্ষমতার অপব্যবহারকারী উচ্চাকাঙ্ক্ষী এক ব্যবসায়ীমাত্র? সে বিচারের ভার আপনাদেরই।

ফিচার ইমেজ: Diski365

Related Articles