Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

রোনালদো কি পারবেন স্প্যানিশ দুর্গ জয় করতে?

এবারের বিশ্বকাপে ইতালি, নেদারল্যান্ডস, চিলির মতো দলগুলো না থাকায় গ্রুপপর্বে হাই-ভোল্টেজ ম্যাচের সংখ্যা এমনিতেই কমে গিয়েছে। এই তিনটি দল যদি এবারের বিশ্বকাপে থাকতো তাহলে একই গ্রুপে দুটি বড় দলকে দেখার সম্ভাবনাও বাড়তো। সবকিছু মিলিয়ে এই আসরে গ্রুপপর্বের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত ম্যাচ হতে যাচ্ছে গ্রুপ বি এর পর্তুগাল বনাম স্পেনের ম্যাচটি।

একদিকে বর্তমান ইউরো চ্যাম্পিয়ন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল অন্যদিকে এই শতাব্দীর অন্যতম সফল ও তারকাবহুল দল স্পেন। দুই দলের বিশ্বকাপ অভিযান কেমন হবে তার অনেকটাই নির্ভর করছে এ ম্যাচের উপরেই! প্রথম ম্যাচে হেরে গেলে সবকিছু ঠিক কতটা এলোমেলো হয়ে যায় তার প্রমাণ ২০১৪ বিশ্বকাপে স্পেনের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেওয়া। তাই দুই দলই নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করবে এ ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ অভিযান ভালোভাবে শুরু করতে।

এই মহারণে দুই দলের একাদশ কেমন হতে পারে? দুই দলের কোচই বা কোন ট্যাকটিসে নিজের দলকে খেলাবেন? জয়ের পাল্লা কোন দলের দিকে ভারি? এসব প্রশ্নের উত্তর আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো। 

কেমন হবে একাদশ?

শুরুতেই পর্তুগালের একাদশ নিয়ে আলোচনা করা যাক। ২০১৬ ইউরোজয়ী পর্তুগালের কোচ ফার্নান্দো সান্তোস এই বিশ্বকাপেও পর্তুগাল দলের কোচ হিসেবে আছেন। তবে ইউরোজয়ী দলের বেশ কিছু খেলোয়াড়কেই সান্তোস তার বিশ্বকাপের দলে রাখেননি। রেনেতো সানচেস, ন্যানি কিংবা এডাররা ইউরোজয়ে বড় অবদান রাখলেও খারাপ ফর্মের কারণে দল থেকে বাদ পড়েছেন। তবে দলে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সাথে বার্নার্দো সিলভা, আন্দ্রে সিলভা, গন্সালো গুয়েদেসের মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড় থাকায় এবারো বেশ ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়েই খেলতে এসেছে পর্তুগাল। 

পর্তুগালের ভরসার অনেকটা জুড়ে থাকবেন তাদের কোচ ফার্নান্দো সান্তোস; Image Source : ESPN

ফার্নান্দো সান্তোস তার দলকে ৪-৪-২ ফর্মেশনে খেলান, যেখানে গোলরক্ষক হিসেবে সান্তোসের প্রথম পছন্দ রুই প্যাট্রিসিও। পর্তুগালের ইউরোজয়ে প্যাট্রিসিওর অসাধারণ কিছু সেভ বেশ বড় ভূমিকা রেখেছিলো, অভিজ্ঞ এই গোলরক্ষকের উপরে পর্তুগাল আস্থা রাখতেই পারে। সেন্টারব্যাক হিসেবে পেপে ও জোসে ফন্তেরই একাদশে থাকার সম্ভাবনা বেশি। দুজনই অভিজ্ঞ যোদ্ধা, তবে বয়সের ভারে দুজনের ফর্ম নিয়ে কিছুটা সংশয় থেকেই যায়। রাইটব্যাক হিসেবে সেড্রিক সোয়ারেস ও লেফটব্যাক হিসেবে রাফায়েল গুয়েরেরোর উপরে ফার্নান্দো সান্তোস আস্থা রাখতেই পারেন।

পর্তুগিজদের ইউরোজয়ের অন্যতম নায়ক পেপে ৩৫ বছর বয়সে কতটুকু কি করতে পারবেন সেটাই প্রশ্ন; Image Source: Sportskeeda

এবার আসা যাক পর্তুগালের মিডফিল্ড নিয়ে। জোয়াও মারিও ও উইলিয়াম কার্ভালহো দলে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের ভূমিকা পালন করবেন। রাইট মিডফিল্ডার হিসেবে বার্নার্দো সিলভার একাদশে থাকা নিশ্চিত হলেও লেফট মিডফিল্ডার পজিশনে কে থাকবেন সেটা পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। তবে গেলসন মার্টিন্সেরই এই পজিশনে থাকার সম্ভাবনা বেশি। রোনালদো তার প্রিয় লেফট উইঙ্গার পজিশনেই থাকবেন, তবে ফ্রি রোলে পুরো মাঠজুড়েই রোনালদো খেলে যাবেন। রোনালদোর সঙ্গী হিসেবে এতদিন আন্দ্রে সিলভার থাকার সম্ভাবনাই বেশি ছিল। কিন্তু শেষ প্রীতি ম্যাচে আলজেরিয়ার বিপক্ষে গন্সালো গুয়েদেস জোড়া গোল করায় এই পজিশনে তার থাকার সম্ভাবনাই এখন জোরালো হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ পর্তুগালের মূল একাদশ হবে এরকম

পর্তুগাল (৪-৪-২)

রুই প্যাট্রিসিও
সেড্রিক সোয়ারেস, পেপে, জোসে ফন্তে, রাফায়েল গুয়েরেরো
বার্নার্দো সিলভা, উইলিয়াম কার্ভালহো, জোয়াও মারিও, গেলসন মার্টিন্স
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, গন্সালো গুয়েদেস

অন্যদিকে ২০১৬ ইউরোতে ভরাডুবির পর স্পেন দলের কোচ হিসেবে আসেন হুলেন লোপেতেগি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই স্পেন দলকে আবারো সাফল্যের কক্ষপথে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বাছাইপর্বে স্পেনের গ্রুপে ইতালির মতো পরাশক্তি থাকা সত্ত্বেও স্প্যানিশরা বাছাইপর্ব পার করেছিলো দাপটের সাথেই। তার অধীনে খেলা ২০ ম্যাচেই অপরাজিত ছিল স্পেন। স্বাভাবিকভাবেই লোপেতেগির স্পেনকে এই বিশ্বকাপের হট ফেভারিট হিসেবেই সবাই মানছিলো।

কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র দুদিন আগে লোপেতেগির রিয়াল মাদ্রিদে যোগদানের খবর বিনা মেঘে বজ্রপাত হিসেবেই এসেছে। স্প্যানিশ ফুটবল বোর্ড তার এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি। বিশ্বকাপ শুরুর একদিন আগে তাকে কোচের পদ থেকে সরিয়ে দলটির স্পোর্টিং ডিরেক্টর ফার্নান্দো হিয়েরোকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হিয়েরো আগের কোচের ট্যাকটিস ধরে রেখেই দলকে খেলাবেন।

বিশ্বকাপ শুরু একদিন আগে লোপেতেগির এই নাটকীয় প্রস্থান স্পেনকে বেশ বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে; Image Source : Eurosport

যদি তা-ই হয়, তবে পর্তুগালের বিপক্ষে স্পেন তাদের প্রিয় ৪-৩-৩ ফর্মেশনেই খেলতে নামবে। গোলরক্ষক হিসেবে ডেভিড ডি হেয়াকে এই মৌসুমের সেরা গোলরক্ষক বলাই যায়। সেন্টারব্যাক পজিশনে রিয়াল মাদ্রিদের সার্জিও রামোস ও বার্সেলোনার জেরার্ড পিকের মতো পরীক্ষিত দুই সেনানী থাকবে। রাইটব্যাক পজিশনে হিয়েরোর প্রথম পছন্দ কার্ভাহাল এখনো পুরোপুরি ফিট নন, সেক্ষেত্রে রাইটব্যাক হিসেবে অদ্রিয়োজোলাই দলে থাকবেন। আর লেফটব্যাক হিসেবে  দলে থাকবেন বার্সেলোনার জর্দি আলবা। সব মিলিয়ে স্পেনের ডিফেন্সকে কাগজে-কলমে এই বিশ্বকাপের সেরা ডিফেন্স বললেও অত্যুক্তি হবে না।

কাগজে-কলমে সবচেয়ে শক্তিশালী রক্ষণভাগ স্পেনের; Image Source : Deccan Chronicle

হোল্ডিং মিডফিল্ডে সার্জিও বুস্কেটসের থাকাটা নিশ্চিত। মিডফিল্ডে তার সঙ্গী হবেন থিয়াগো আলকান্তারা ও আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। তবে আলকান্তারার বদলে কোচ চাইলে কোকেকেও নামাতে পারেন। আক্রমণভাগে কস্তাকে সামনে রেখে তার পিছনেই থাকবেন ডেভিড সিলভা ও ইস্কো। তবে স্পেন যদি ফলস নাইন সিস্টেমে খেলতে চায় তাহলে দিয়েগো কস্তার বদলে ইয়াগো আসপাস বা মার্কো অ্যাসেন্সিও খেলতে পারেন। সব মিলিয়ে দল হিসেবে এই স্পেন ভীষণ ভারসাম্যপূর্ণ। চলুন, একনজরে স্পেনের মূল একাদশ দেখে নিই-

স্পেন (৪-৩-৩)
ডেভিড ডি হেয়া
অড্রিয়োজোলা, সার্জিও রামোস, জেরার্ড পিকে, জর্দি আলবা
থিয়াগো আলকান্তারা, সার্জিও বুস্কেটস, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা
ডেভিড সিলভা, দিয়েগো কস্তা, ইস্কো

কেমন হবে দুই দলের ট্যাকটিস?

শুরুতেই স্পেনের ট্যাকটিস নিয়ে আলোচনা করা যাক। আগেই বলা হয়েছে, স্পেন ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেলবে। কিন্তু খেয়াল করলেই দেখা যাবে যে এই ফর্মেশনে স্প্যানিশ আক্রমণভাগের দুই উইংয়ে রয়েছেন ইস্কো ও ডেভিড সিলভা, যারা কেউই প্রথাগত উইঙ্গার নন। এক্ষেত্রে দুই উইংব্যাক অড্রিয়োজোলা ও আলবা ওভারল্যাপ করে উপরে উঠে যাবেন। সেক্ষেত্রে বুস্কেটসের সাথে আলকান্তারাও একটু নিচে নেমে এসে অড্রিয়োজোলা ও আলবার রেখে যাওয়া স্পেস কাভার করবেন। ইস্কো খেলবেন সম্পূর্ণ ফ্রি রোলে আর স্পেনের আক্রমণভাগে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অস্ত্রই হচ্ছেন ফ্রি রোলের ইস্কো।

ইনিয়েস্তার উপর দায়িত্ব থাকবে মিডফিল্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মাঝমাঠ থেকে গোলের সুযোগ তৈরি করা। প্রথাগত স্ট্রাইকারদের মতো দিয়েগো কস্তার কাজ হবে ডি-বক্সে আসা সুযোগগুলো কাজে লাগানো। তবে পর্তুগালের দুই সেন্টারব্যাকই বয়সের ভারে কিছুটা ধীরগতির হয়ে গিয়েছেন, এই দুর্বলতা কাজে লাগাতে কোচ কস্তার বদলে আসপাসকে ফলস নাইন হিসেবে নামাতে পারবেন। সাবস্টিটিউট হিসেবে হিয়েরোর তুরুপের তাস হবেন মার্কো অ্যাসেন্সিও। বদলি হিসেবে নেমে শেষ ২০ মিনিটে অ্যাসেন্সিও খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। 

সাম্প্রতিক সময়ে স্পেনের জার্সিতে দারুণ ফর্মে রয়েছেন ইস্কো; Image Source: djaildo

অন্যদিকে পর্তুগালের ৪-৪-২ ফর্মেশনে বার্নার্দো সিলভা মিডফিল্ড থেকে উপরে উঠে রাইট উইঙ্গারের কাজটা করে দেয়। এছাড়া পর্তুগালের দুই উইংব্যাকও ওভারল্যাপ করে উপরে উঠে যায়। এক্ষেত্রে দুই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কার্ভালহো ও মারিওর উপরে দায়িত্ব থাকবে উইংব্যাকদের রেখে যাওয়া স্পেস কভার করা। পর্তুগাল মূলত ক্রসনির্ভর ফুটবল খেলে, তবে তারা অধিকাংশ ক্রসই ডি-বক্সের কর্ণার থেকে করে থাকে। স্ট্রাইকাররা পেছন থেকে কিছুটা দৌড়ে এসে এ ধরনের ক্রসে গোল করতে পারে। আর এই ধরনের ক্রসে গোল করার ক্ষেত্রে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো কতটা দক্ষ এটা আমরা মোটামুটি সবাই জানি। যদি গুয়েদেস শুরু করেন, তবে গুয়েদেস অনেকটা ফলস নাইন হিসেবেই খেলবেন। সেক্ষেত্রে এসব ক্রস কাজে লাগানোর মূল দায়িত্বটা রোনালদোর উপরেই থাকবে।

ক্রস থেকে হেডে গোল করায় অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে রোনালদো; Image Source : JOE.co.uk

আর গুয়েদেসের বদলে আন্দ্রে সিলভা যদি নামেন তবে তিনি প্রথাগত স্ট্রাইকারের ভূমিকাই পালন করবেন। সেক্ষেত্রে রোনালদো কিছুটা নিচে নেমে খেলবেন। সাবস্টিটিউট হিসেবে কোচ সান্তোসের তুরুপের তাস হিসেবে থাকবেন রিকার্ডো কোয়ারেজমা। কোয়ারেজমার পারফেক্ট একটি ক্রস যেকোনো মুহূর্তে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, এ ম্যাচে দুই দল দুই ভিন্ন ধরনের ট্যাকটিস নিয়ে নামবে। স্পেনের লক্ষ্য থাকবে মিডফিল্ড দখল করে ছোট ছোট পাসে আক্রমণ সাজানোর, আর পর্তুগালের লক্ষ্য থাকবে জান-প্রাণ দিয়ে রক্ষণভাগ সামলে কাউন্টার অ্যাটাকে ক্রস থেকে গোল করার।

দুই দলের দুর্বলতা

যখন প্রতিপক্ষ ডিপ লাইন ডিফেন্স করে তখন সেই ডিফেন্স ভেঙ্গে গোল করাটা স্প্যানিশ আক্রমণভাগের জন্য কঠিন হয়ে যায়। এ কারণেই অনেক ম্যাচে দেখা যায় যে অধিকাংশ সময়ে নিজেদের দখলে বল রাখা সত্ত্বেও স্পেন সেই অনুযায়ী গোলের দেখা পায়নি। এ ম্যাচেও পর্তুগাল ডিপ লাইন ডিফেন্সই করবে। তাই এটা নিয়ে স্প্যানিশ কোচ হিয়েরোকে ভাবতেই হবে। তাছাড়া দুই উইংব্যাকের সাথে দুই সেন্টারব্যাক রামোস ও পিকেরও আক্রমণে উঠে যাওয়ার অভ্যাস আছে। এক্ষেত্রে লাগাম না টানলে কাউন্টার অ্যাটাকে পর্তুগিজ উইঙ্গাররা বিপদ ঘটাতে পারে।

৪-৪-২ ফর্মেশনে পর্তুগালের এই দুই স্তরের ডিফেন্স ভেদ করে গোল করাটাই স্পেনের জন্য কঠিন এক পরীক্ষা হবে; Image Source : Telegraph

অন্যদিকে পর্তুগাল দলটির সবচেয়ে বড় সমস্যা তারা এক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর উপরে খুব বেশি নির্ভরশীল। দলে বেশ কিছু প্রতিভাবান তরুণ থাকলেও রোনালদো খারাপ খেললে তারাও সেভাবে নিজেদের খেলাটা খেলতে পারেন না। তাছাড়া পেপে ও ফন্তে দুজনের বয়সই ৩৪ ছাড়িয়ে গিয়েছে, তাদের গতিও আগের মতো নেই। স্পেন ইয়াগো আসপাসকে ফলস নাইনে খেলিয়ে পর্তুগালের এই দুর্বলতা কাজে লাগাতে পারে। আর পর্তুগালের অধিকাংশ আক্রমণই ক্রসনির্ভর, কিন্তু স্পেনের দুই সেন্টারব্যাক জেরার্ড পিকে ও সার্জিও রামোস এরিয়াল ডুয়েলে ভীষণ দক্ষ। তাই পর্তুগালের ক্রসনির্ভর আক্রমণ স্প্যানিশ রক্ষণভাগের বিপক্ষে কতটুকু সাফল্য পায় সেটা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

ফলস নাইন হিসেবে আসপাসের এই দৌড় পর্তুগালের দুই বয়স্ক সেন্টারব্যাককে বিপদে ফেলতে পারে; Image Source: Telegraph

মুখোমুখি লড়াইয়ে দুই দলের পরিসংখ্যান

এ পর্যন্ত মোট ৩৬ বার পর্তুগাল ও স্পেন একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে লা ফুরিয়া রোহাদের ১৮ জয়ের বিপরীতে পর্তুগিজরা জিতেছে মাত্র ৬ বার। অন্য ১২টি ম্যাচ শেষ হয়েছে অমীমাংসিতভাবে। বিশ্বকাপে এই দুই দল শেষ মুখোমুখি হয়েছিলো ২০১০ সালে। সেবার ডেভিড ভিয়ার গোলে স্পেনের কাছে হেরেছিলো পর্তুগাল। আর প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে সবশেষ ২০১২ সালের ইউরোর সেমিফাইনালে পর্তুগাল ও স্পেন মুখোমুখি হয়েছিলো। টাইব্রেকারে স্পেনের কাছে ঐ ম্যাচে হেরেছিলো পর্তুগাল। তাই অতীত ইতিহাস কিংবা সাম্প্রতিক সময়ে দুই দলের মুখোমুখি লড়াই- দু’দিকেই পিছিয়ে আছে পর্তুগাল।

ডেভিড ভিয়ার এই গোলে ২০১০ বিশ্বকাপের রাউন্ড অফ সিক্সটিন থেকে বিদায় নিয়েছিলো পর্তুগাল; Image Source: NPR

যদি সম্ভাব্য ফলাফলের কথা বলতে হয়, তাহলে বলতে হবে দুদিন আগেও যে ফলাফল ভাবা হচ্ছিলো, এক লোপেতেগির পদচ্যুতির কারণে অনেক কিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। এখন মাঠের লড়াইয়ের চেয়েও বড় প্রশ্ন হচ্ছে স্পেনের খেলোয়াড়েরা কি পারবে শেষমুহূর্তে কোচকে হারানোর ধাক্কা সামলে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা উপহার দিতে? লোপেতেগির এই হঠাৎ প্রস্থান এ ম্যাচে পর্তুগালের সম্ভাবনা কিছুটা হলেও বাড়িয়ে দিয়েছে এটা বলতেই হবে। তবে এই বাড়তি সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও স্পেন এখনো কিছুটা হলেও পর্তুগালের চেয়ে এগিয়ে থাকবে।

কাগজে-কলমে পর্তুগাল যতই পিছিয়ে থাকুক, পর্তুগাল দলে একজন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো থাকায় সেই ব্যবধান যেকোনো সময়ে মুছে যেতে পারে। আগের বিশ্বকাপগুলোয় রোনালদোর রেকর্ড তার নামের সাথে ঠিক যায় না। তাছাড়া বয়সের কথা বিবেচনা করলে এটাই হয়তো রোনালদোর শেষ বিশ্বকাপ। নিজের শেষ বিশ্বকাপে রোনালদো নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে নিজের রেকর্ডটা রঙ্গিন করতে চাইবেন তা বলাই বাহুল্য। এখন দেখা যাক, রোনালদো কি স্পেনের বাঁধা অতিক্রম করে দলকে সুন্দর একটি সূচনা এনে দিতে পারেন নাকি স্পেন শেষমুহূর্তে তাদের কোচকে হারানোর ধাক্কা ভুলে ফেভারিট হিসেবে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে পারে। তবে ফলাফল যা-ই হোক, আমরা আশা করি বিশ্বকাপের প্রথম হাই ভোল্টেজ ম্যাচে দুই দলই জমজমাট একটি ম্যাচ উপহার দেবে।

ফিচার ইমেজ: footballwood.in

Related Articles