Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

এখনও খেলছেন সেই সব তারকারা!

একসময় লোকের মুখে মুখে ছিলো এসব তারকার নাম। কিন্তু আস্তে আস্তে ইউরোপের বাজারে দর হারিয়ে ফেলা অনেক ফুটবলার যেন হারিয়েই গেছেন। অনেকে মনে করেন, এরা অবসর নিয়ে ফেলেছেন। অনেকে জানেন না কোথায় আছেন।

এমন সব হারিয়ে গিয়েও ফুটবল খেলতে থাকা তারকাদের গল্প শুনুন আজ।

স্যামুয়েল ইতো; Image Source: Goal

স্যামুয়েল ইতো

তার প্রজন্মের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার মনে করা হতো স্যামুয়েল ইতোকে। ক্যামেরুনের এই স্ট্রাইকার শুরু করেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ দিয়ে। তবে নিজেকে পরিচিত করেন মূলত মায়োর্কা ও বার্সেলোনার তারকা হিসেবে। ২০০৯ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে ইন্টার মিলানে যোগ দেন। এরপর চেলসি, এভারটনেও খেলেছেন। তারপরই খবরের বাইরে চলে যেতে শুরু করেন ইতো। যদিও সিরি-আ দল সাম্পোদরিয়ায় একটা মৌসুম খেলেছেন। তারপর থেকে একদমই ইউরোপের ফুটবলে নেই হয়ে গেছেন গত তিন বছর।

অনেকেই ধরে নিয়েছেন, ইতো ফুটবলকে বিদায় বলে দিয়ে কোথাও সুখে-শান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু যারা তার পাড় ভক্ত, তারা নিশ্চয়ই জানেন, ইতো এখন আছেন তুরষ্কে। গত তিন বছর ধরে তুরস্কের বিভিন্ন ক্লাবে খেলে বেড়াচ্ছেন। সর্বশেষ খেলেছেন কনেয়াসপোর ক্লাবের হয়ে। এখন কাতার স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলবেন বলে শোনা যাচ্ছে। যদিও গুঞ্জন ছিলো এ-লিগের কোনো একটা দলে ফিরতে পারেন।

রবি কিন; Image Source: Goal

রবি কিন

ফুটবলের খুব পাগলাটে ভক্ত না হলে রবি কিন যে এখনও ফুটবল খেলেন, এটা জানা একটা শক্ত ব্যাপার। টটেনহ্যাম হটস্পারের কিংবদন্তী ছিলেন এই রবি কিন। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ইন্টার মিলানের হয়েও খেলেছেন। টটেনহামের হয়ে দুই দফা লম্বা সময় কাটানোর পাঝে এক মৌসুম লিভারপুলে খেলে গেছেন। এরপর ২০১১ সালে তিনি ইউরোপের ফুটবল থেকে বিদায় নেন। তারপরও ছিলেন। ছিলেন লস অ্যাঞ্জেলস গ্যালাক্সিতে। কিন্তু ২০১৬ সালে এখান থেকেও বিদায় নেন। তারপরও একদম ফুটবল রাডারের বাইরে চলে যান রবি কিন।

কিন্তু অবাক হয়ে অনেকে তাকে আবিষ্কার করতে পারেন বাড়ির পাশের কলকাতায়। ইন্ডিয়ান সুপার লিগে অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতা ক্লাবে যোগ দেন তিনি ২০১৭ সালে। যদিও প্রথম বছরের বড় একটা সময় তাকে ইনজুরির জন্য আয়ারল্যান্ডেই কাটাতে হয়েছে সময়। এরপর ফিরে এসে কিছু ম্যাচ খেলেছেন। এবার তিনি কোচ-অধিনায়ক দ্বৈত ভূমিকা পালন করছেন কলকাতায়!

ল্যান্ডন ডনোভান; Image Source: Si

ল্যান্ডন ডনোভান

ইউরোপিয়ান ফুটবলে কখনোই বড় কোনো নাম ছিলেন না ডনোভান। মূলত এলএ গ্যালাক্সির খেলোয়াড় ছিলেন জীবনের বেশিরভাগ সময় ধরে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সোনালী একটা প্রজন্মের খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত নাম ছিলেন।

ক্যারিয়ারের শুরু করেছিলেন বায়ার লেভারকুসেনে। এরপর সান হোসে আর্থকোয়াকসে ধারে খেলেন। আর ২০০৫ সাল থেকে এলএ গ্যালাক্সিতেই ছিলেন। সেখান থেকেই ধারে বায়ার্ন মিউনিখে এক মৌসুম ও এভারটনে দুই মৌসুম খেলেছেন। ২০১৬ সালে এলএ গ্যালাক্সিতে ফেরার পর আর চুক্তি নবায়ন করেনি ক্লাবটি। ফলে মনে হয়েছিলো এখানেই ফুটবলকে বিদায় জানাচ্ছেন ডনোভান। কিন্তু তিনি লড়াইটা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন।

একেবারে না চেনা ক্লাব মেক্সিকোর ‘ক্লাব লিওন’-এ ফুটবল খেলছেন এখন ডনোভান। এই ক্লাবটিও আর ধরে রাখতে চাইছে না তাকে। এখন নতুন ক্লাবের সন্ধানে আছেন তিনি।

লুকাস পোডলস্কি; Image Source: Tribuna

লুকাস পোডলস্কি

জার্মান দলের বিরাট তারকা লুকাস পোডলস্কি। এফসি কোলনের দ্বিতীয় দল দিয়ে পেশাদার ফুটবলের শুরু। আর ওই দলের সিনিয়র দলেই নিজেকে প্রথম তারকা করে তোলেন। এরপর নামটা তার আরও বড় হয় বায়ার্ন মিউনিখে এসে। তবে কোলনে ফিরে গিয়েছিলেন আবার। দুই দফায় ৬ বছর কাটিয়েছেন কোলনে। আর এখান থেকে দ্বিতীয় দফায় বের হয়েই আসলে ক্যারিয়ারটা শেষ হতে শুরু করে।

২০১২ সালে আর্সেনালে যোগ দেন। এখানে শেষটা একদম ভালো হয়নি। ফলে ইউরোপের সেরা লিগগুলো থেকে সরে যান। নাম লেখান তুরষ্কের গ্যালাতাসারাইতে। সেখানেও বেশ ছিলেন। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে একদম আলোচনার বাইরে চলে গেছেন। পোডলস্কিকে তার জার্মান ভক্তরা ছাড়া খুঁজেই পাওয়া কঠিন ছিলো। তিনি এখন আছেন ভিসেল কোবেতে। জাপানের এই ক্লাবের হয়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।

ওয়েসলি স্নেইডার; Image Source: Goal

ওয়েসলি স্নেইডার

একটা সময় বিশ্বের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার হিসেবে বিবেচিত হতেন। আয়াক্সের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। এরপর রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মহাতারকা হয়ে ওঠেন। আর ইন্টার মিলানে নিজেকে আরও মেলে ধরেন। ইউরোপের সেরা এই তিনটি ক্লাবে ক্যারিয়ারের সোনালী সময়টা কাটানোর পর ২০১২ সাল থেকেই পতনের শুরু হয় স্নেইডারের। তারপরও টিকে ছিলেন গ্যালাতাসারাইয়ের হয়ে। কিন্তু ২০১৭ সালে সেখান থেকেও বিদায় নেন। এই সময় থেকেই একদম খবরের বাইরে চলে যান নেদারল্যান্ডের সাবেক এই তারকা।

খবরের বাইরে গেলেও খেলার বাইরে নেই তিনি। একটা মৌসুম খেলেছেন নিসেতে। এরপর এই বছর চলে গেছেন কাতারে। সেখানে আল-গারাফা ক্লাবে এখন একাধারে অধিনায়ক ও দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর কিছু না হোক, খেলার মধ্যে আছেন।

মাইকেল এসিয়েন; Image Source: The Sun

মাইকেল এসিয়েন

ঘানার এই তারকা একসময় ছিলেন চেলসির সুপরিচিত তারকা। চেলসিতে যে ৯ বছর কাটিয়েছেন, সেটা ছিলো তার ক্যারিয়ারের সোনালী সময়।

ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ফরাসি ক্লাব বাস্তিয়ার হয়ে। এরপর ফ্রান্সেরই বিখ্যাত দল লিঁওর হয়ে খেলেছেন। তারপর এসেছেন চেলসিতে। এরপর দুটি মৌসুম রিয়াল মাদ্রিদ ও মিলানে খেলেছেন। এর মধ্যে রিয়ালে এসেছিলেন ধারে। কিন্তু ২০১৫ সালে মিলান ছাড়ার পরই বাস্তবিক অর্থে সেরা সময় থেকে সরে যেতে শুরু করেন।

২০১৫-১৬ মৌসুমে গ্রিক ক্লাব প্যানাথিনাইকোসের হয়ে খেলেছেন। এরপর এখন খেলছেন ইন্দোনেশিয়ায়। পার্সিব বান্দুং নামে একটি ক্লাবের হয়ে এখনও ফুটবল খেলে চলেছেন। মাইকেল এসিয়েনের ভক্তরা অন্তত স্বস্তি পাচ্ছেন যে, তিনি খেলার মধ্যে আছেন।

দিদিয়ের দ্রগবা; Image Source: Goal

দিদিয়ের দ্রগবা

আইভরি কোস্টের তারকা হিসেবে যত লোকে চিনতো, তার চেয়ে বেশি লোকে জানতো দ্রগবা চেলসির একজন মহাতারকা। চেলসির এই সুপারস্টারের ভক্ত বাংলাদেশেও কম ছিলো না। ছোট ছোট কিছু ক্লাবের হয়ে খেলে মার্শেইতে এসে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা শুরু করেন। তবে ২০০৪ সাল থেকে চেলসিতে ৮ বছরের এক সময়কালই দ্রগবাকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলে। এরপর একটু পথ হারিয়ে ফেলেছিলেন। শাংহাই শেনহুয়া ও গ্যালাতাসারাইতে চলে গিয়েছিলেন। পরে ২০১৪-১৫ মৌসুমে আবার চেলসিতে ফিরেছিলেন। ফেরাটা সুখকর হয়নি। ওই মৌসুমেই ইউরোপের সেরা ফুটবলের স্বাদ নেওয়া শেষ করেছেন।

২০১৫ সাল থেকে হারিয়েই গিয়েছিলেন। তবে ছিলেন মন্ট্রিয়াল ইমপ্যাক্ট ক্লাবে। ২০১৭ সাল থেকে আছেন ফোনিক্স রাইজিং ক্লাবে। এই ৪০ বছর বয়সেও যুক্তরাষ্ট্রে চেষ্টা করছেন আলো ছড়ানোর।

দিয়েগো ফোরলান; Image Source: ESPN

দিয়েগো ফোরলান

উরুগুয়ের এই তারকা নিজেকে জনপ্রিয় করেছিলেন মূলত অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে। কিন্তু গত বছর চারেক ধরেই ইউরোপে নেই তিনি। এটা মনে করাটা অস্বাভাবিক নয় যে, ফোরলান এরই মাঝে কবে অবসর নিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু না, ফোরলান এই ৩৯ বছর বয়সেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খেলে বেড়াচ্ছেন।

শুরু করেছিলেন ইন্ডিপেন্ডেন্টের হয়ে। এরপর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে দুটি মৌসুম কাটিয়ে চলে ‍যান ভিলারিয়ালে। আর সেখান থেকে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।

অ্যাটলেটিকো তাদের রীতি অনুযায়ী সেরা ফর্মে থাকা অবস্থায়ই ফোরলানকে বেচে দেয়। কিন্তু ইন্টার মিলানে গিয়ে খুব সুবিধা করতে পারেননি তিনি। এরপর ইউরোপ ছাড়েন। চলে যান ব্রাজিলের ক্লাব ইন্টারন্যাসিওনালে। আর সেখান থেকে আরও পেছাতে থাকেন। সেরেজো ওসাকা, পেনারোল, মুম্বাই সিটি হয়ে এখন আছেন হংকংয়ের এক ক্লাব কিচেতে। এখানেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ফোরলান।

Related Articles